ভোট চুরির মাধ্যমে এবার ক্ষমতায় যাওয়া যাবে না: আমির খসরু
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, সংবিধানের দোহাই দিয়ে ভোট চুরির মাধ্যমে এবার ক্ষমতায় যাওয়া যাবে না। কোনো সুযোগ নেই। ভোট চোরদের তালিকা করা হচ্ছে, ভোট চোরদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। এবার ভোট চোরদের বিরুদ্ধে দেশের ভিতরে বাহিরে স্যাংশন আসবে। পালিয়ে যাবার কোন সুযোগ নেই।
রবিবার (৯ এপ্রিল) রাজধানীর দারুসসালামস্থ এসএ খালেকের বাসভবনে ঢাকা মহানগর উত্তর দারুসসালাম থানা বিএনপি ও তার অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত ইফতার মাহফিল পূর্ব আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
সরকারকে হুশিয়ারি উচ্চারণ করে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, রাজপথে তীব্র গণআন্দোলনের মাধ্যমে ফয়সালা করে আওয়ামী সরকারকে বিদায় নিতে হবে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে বাংলাদেশে। গণতন্ত্রের সরকার প্রতিষ্ঠা লাভ করবে।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার অত্যন্ত কঠিন সময় পার করছে। এই সরকার সাংবাদিকদের ওপর নিপীড়ন ও নির্যাতন চালাচ্ছে। কিছুদিন আগে সাংবাদিক শামসকে তুলে নিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। তার অপরাধ ছিল তিনি সংবাদে মানুষের পেটে ভাত নাই লিখেছেন। অথচ তার রিপোর্টটি বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের কথা ছিল।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, সাউথ এশিয়ান ইকোনমিক ফোরাম নামে এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে বাংলাদেশে বর্তমানে যেটি চলছে, এটিকে বলে দুর্ভিক্ষ। এর চেয়ে খারাপ কোনো দেশে হতে পারে না। সাংবাদিককে তুলে নিয়ে তারা প্রমাণ করেছে তারা কত কঠিন সময় পার করছে।
আমির খসরু বলেন, সংবিধানের কথা বলে তারা আরেকবার ভোট করার পায়তারা করছে। সংবিধান কি? এই যে শামসুজ্জামানকে নিয়ে গেছেন, এটা কি সংবিধান লঙ্ঘন নয়? এই যে কিছু দিন আগে মহিলাকে তুলে নিয়ে গেছেন, এটা কি সংবিধানের লঙ্ঘন নয়? সারাদেশে গায়েবী মামলা দিয়েছেন, এটা কি সংবিধানের লঙ্ঘন নয়? আপনারা যে সারাদেশে হাজার হাজার মানুষ গুম-খুন-হত্যা করছেন, এগুলো কি সংবিধান লঙ্ঘন নয়? ৩৫ লাখ বিএনপি নেতা-কর্মীর নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে রেখেছেন, এগুলো কি সংবিধান লঙ্ঘন নয়? আপনারা যে চুরি করে ক্ষমতা দখল করে রেখেছেন, এটা কি সংবিধান লঙ্ঘন নয়? সংবিধান কি বলে?
আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি দেশের সমসাময়িক রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে বক্তব্য রাখেন এবং দলীয় নেতা-কর্মী ও ঢাকাবাসীকে সালাম ও ঈদের শুভেচ্ছা জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান বলেন, আজ দেশের অর্জিত স্বাধীনতা নেই। জনগণের ভোটের অধিকার ও মানবাধিকার ভূলুণ্ঠিত। একটা অবৈধ ও অনৈতিক সরকার জোড় করে ক্ষমতা দখল করে রেখেছে। এই অবৈধ আওয়ামী সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করাই আমাদের একমাত্র অঙ্গীকার।
বিএনপির কেন্দ্রীয় ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব ও সাবেক ফুটবলার আমিনুল হক দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, আমাদের যখন আন্দোলনের ডাক আসবে, তখন আমাদের শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রস্তত থাকতে হবে। আন্দোলনের ডাক আসামাত্র সকলকে রাজপথে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমেই এই জুলুমবাজ আওয়ামী সরকারকে পরাজিত করতে হবে।
দারুসসালাম থানা বিএনপির আহ্বায়ক গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী এস এ সিদ্দিক সাজুর সভাপতিত্বে ও সার্বিক তত্বাবধানে ইফতার মাহফিলে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য সাঈদ সোহরাব, মহিলা দলের সুলতানা আহম্মেদ, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার, মহানগর সদস্য হাজী মো. ইউসুফ, হুমায়ুন কবির রওশান, স্বেচ্ছাসেবক দল ঢাকা মহানগর উত্তরের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সাইদুর ইসলাম সাইদুল, মিরপুর থানা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হাজী মো. দেলোয়ার হোসেন দুলু, মহিলা দল নেএী মিসেস রুনা লায়লা রুনা, স্বপ্না আহম্মেদ, দারুসসালাম থানা বিএনপির আরিফ মৃধা, আবু সায়েম মন্ডল, বকুল মিয়া, আলমগীর হোসেন ভুট্টো, এইচ এম ইমরান, হুমায়ুন কবির, আমানুল্লাহ সহ প্রমুখ থানা বিএনপির ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মহানগর বিএনপির সদস্য এবিএমএ রাজ্জাক ও ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি গাজী রেজওয়ানুল হোসন রিয়াজ।
এমএইচ/এসআইএইচ