চলন্তবাসে বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানি, টাঙ্গাইলে গ্রেফতার ৩

ডাকাতি ও নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানির ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী চলন্ত বাসে ডাকাতি ও নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানির ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার সকালে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।
পাশাপাশি এ ঘটনায় মির্জাপুরের ডিউটি অফিসার আতিকুজ্জামানকে বরখাস্ত করা হয়েছে। দায়িত্বে অবহেলার কারণে তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানান এসপি।
গ্রেফতারকৃত হচ্ছেন- মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার লাউতারা গ্রামের মো. বদর উদ্দিন শেখের ছেলে শহিদুল ইসলাম ওরফে মহিদুল ওরফে মুহিত (২৯), শরীয়তপুরের জাজিরা থানার রামকৃষ্ণপুর গ্রামের ইসমাইল মোল্লার ছেলে সবুজ (৩০) এবং ঢাকা জেলার সাভার থানার টানগেন্ডা গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে শরীফুজ্জামান ওরফে শরীফ (২৮)।
টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান সংবাদ সম্মেলনে জানান, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের(ডিবি-উত্তর) অফিসার ইনচার্জ মীর মোশারফ হোসেন, ডিবি-দক্ষিণের অফিসার ইনচার্জ মো. শামসুদ্দোহা, গোয়েন্দা পুলিশের এসআই মো. আহসানুজ্জামান, এসআই নাফিউল ইসলাম ও এসআই সুদীপ বাছাড় একদল চৌকষ গোয়েন্দা সদস্য গুপ্তচরের সদস্য এবং তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানে গত শুক্রবার রাতে ঢাকা জেলার সাভার মডেল থানার গেন্ডা এলাকা থেকে তিন ডাকাতকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে দেশীয় অস্ত্র ছুরি, মোবাইল ফোন ও নগদ ২৯ হাজার ৩৭০ টাকা জব্দ করা হয়।
মিজানুর রহমান জানান, ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে ইউনিক রোড রয়েলসের ‘আমরি ট্রাভেলস’ নামক একটি বাসে ডাকাতি ও নারীর শ্লীলতাহানির ঘটনায় মির্জাপুর থানায় এমটি মামলা (নং-১৭(০২)২৫) দায়ের করা হয়। মামলা দায়ের করার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জেলা পুলিশ তিন ডাকাতকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
গ্রেফতারকৃত শহিদুল ইসলামকে পাঁচ দিন করে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের (রিমান্ড) আবেদন করে আদালতে পাঠানো হচ্ছে। অন্য দুজন আদালতে স্বীকারোক্তী দেওয়ার কথা রয়েছে। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
তিনি আরও জানান, গ্রেফতারকৃত শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া থানায় একটি ও ঢাকার সাভার মডেল থানায় একটি বাস ডাকাতির মামলাসহ মোট পাঁচটি মামলা রয়েছে।
এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই মো. আহসানুজ্জামান জানান, গ্রেফতারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তাদের মধ্যে সবুজ ও শরীফুজ্জামান আদালতে স্বীকারোক্তীমূলক জবানবন্দি দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। অপর আসামি শহিদুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচদিনের অধিকতর জিজ্ঞাসাবের (রিমান্ড) আবেদন করা হবে।
গত সোমবার রাতে ঢাকা থেকে রাজশাহীর উদ্দেশে ছেড়ে আসা একটি বাসে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। সে ঘটনায় শুক্রবার সকালে মির্জাপুর থানায় মামলা করেন বাসে থাকা এক যাত্রী।
ডাকাতির ঘটনায় শুরুতে বাসের সুপারভাইজার, চালক ও চালকের সহকারীকে আটক করা হলেও তাদের জামিন দেন আদালত।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ডাকাতরা অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে মারধর করে যাত্রী কাছ থেকে টাকা, মোবাইল ফোন ও দামী জিনিসপত্র লুট করে নেয়। পরে বাসে থাকা দুজন নারীকে যৌন নিপীড়ন করে ডাকাতেরা।
