প্রেমের টানে ষাটোর্ধ্ব মোতাসিনের কাছে ছুটে এলেন ইউক্রেনের নারী

কুমিল্লা নগরের ব্যবসায়ী মোতাসিন বিল্লাহ চৌধুরীর সঙ্গে ইউক্রেনের নাগরিক সালো নাদিয়া। ছবি: সংগৃহীত
কুমিল্লার চর্থা বড় পুকুরপাড়ের বাসিন্দা মোতাসিন বিল্লাহ চৌধুরী (৬৩) এবং চেক প্রজাতন্ত্রে বসবাস করা ইউক্রেনের নাগরিক সালো নাদিয়ার (৫০) প্রেমের গল্পটা আজ সত্যি হয়ে উঠেছে। পাঁচ বছরের পরিচয়, তিন বছরের প্রেম, এবং অবশেষে বিয়ে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরিচয় হওয়া এই জুটি একে অপরের প্রতি ভালোবাসা এবং বিশ্বাসে পরিণত হয়েছে। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি, নাদিয়া বাংলাদেশে এসে পৌঁছান এবং ২৫ ফেব্রুয়ারি তারা নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে নিজেদের সম্পর্ককে দাম্পত্য জীবনে রূপ দেন। মোতাসিন বিল্লাহ পেশায় ব্যবসায়ী হলেও, তার ভালোবাসার মানুষ সালো নাদিয়া একজন মনোবিদ। বিয়ের পর তারা কুমিল্লায় একত্রে বসবাস শুরু করেন।
মোতাসিন বিল্লাহ জানান, ২০১৯ সালে ফেসবুকে নাদিয়ার সঙ্গে তার পরিচয় হয়। এরপর ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব এবং ভালোবাসা তৈরি হয়। একসময় মোতাসিন নাদিয়াকে প্রেমের প্রস্তাব দিলে নাদিয়া সানন্দে তা গ্রহণ করেন। তাদের মধ্যে সুন্দর বোঝাপড়া এবং সম্পর্কের গভীরতা তৈরি হয়, যা একে অপরের প্রতি বিশ্বাসের ভিত্তি স্থাপন করে।
নাদিয়া ১৫ বছর ধরে চেক প্রজাতন্ত্রের রাজধানী প্রাগে বাস করছেন এবং সেখানে মনোবিদ হিসেবে কাজ করছেন। তিনি ইউক্রেনীয় ও স্প্যানিশ ভাষায় কথা বলতে পারেন, তবে মোতাসিনের সঙ্গে ইংরেজিতে যোগাযোগ করেন। যদিও বাংলায় দক্ষতা নেই, মোতাসিন তার স্ত্রীকে ধীরে ধীরে বাংলার শিক্ষার প্রতি আগ্রহী।
নাদিয়া বাংলাদেশ সম্পর্কে খুবই ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন। তিনি বিশেষভাবে বাংলাদেশের পোশাক এবং কুমিল্লার রসমালাইকে পছন্দ করেন, তবে অতিরিক্ত ঝাল খাবার তাকে একটু অস্বস্তি দেয়। বাংলাদেশে তার কিছুটা অনুকূল নয় এমন দিক হলো এখানে জনসংখ্যার ঘনত্ব এবং জলবায়ু, তবে তিনি এখানকার মানুষের আন্তরিকতা এবং সংস্কৃতি খুবই প্রশংসা করেছেন।
মোতাসিন বিল্লাহ ও সালো নাদিয়া বলেন, তারা একে অপরের সাথে সুখী জীবন কাটাতে চান এবং সবার কাছে তাদের জন্য দোয়া চেয়েছেন। নাদিয়া কিছুদিন বাংলাদেশে থাকবেন, তারপর চেক প্রজাতন্ত্রে ফিরে যাবেন। সেখানে গিয়ে মোতাসিন বিল্লাহ ভিসার জন্য চেষ্টা করবেন, যাতে তিনি তার স্ত্রীর কাছে আসা-যাওয়া করতে পারেন।
