মায়ের পরকীয়ার বলি ৩ বছরের শিশুকন্যা, প্রেমিকের বাড়ি পুড়িয়ে দিল এলাকাবাসী
![](https://admin.dhakaprokash24.com/logo/placeholder.jpg)
প্রেমিকের বাড়ি পুড়িয়ে দিল এলাকাবাসী। ছবি: সংগৃহীত
মায়ের সঙ্গে এক পুরুষের অনৈতিক কর্মকাণ্ড মেনে নিতে না পেরে জীবন দিতে হলো মেয়েকে। তবে বাঁচতে পারলেন না মা-ও। কথিত প্রেমিক মেয়েকে হত্যার পর মাকে হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি। তার মাথাও আলাদা করে নদীতে ফেলে দেয়। লোমহর্ষক এ ঘটনাটি রংপুরের পীরগঞ্জের।
পুলিশ কথিত প্রেমিক আতিকুরকে গ্রেফতার এবং মা ও মেয়ের লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী আতিকুরের বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়েছে।
শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রংপুরের পীরগঞ্জের চাতরা বদনা বাজার এলাকার পুলিশের ক্রাইম সিনের ফরেনসিক টিম পরীক্ষার পরে নিশ্চিত করে নিহতের নাম দেলোয়ারা। এ নিয়ে শুরু হয় তদন্ত। তদন্তের পর এই ঘটনায় শনিবার একই এলাকার আতিকুর রহমান নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে তথ্য।
পুলিশ জানায়, কয়েক মাস আগে যাত্রাদলের নাট্যকর্মী দেলোয়ারাকে স্ত্রী পরিচয়ে বাড়িতে আনে আতিকুর। তার সাথে ছিল ৬ বছর বয়সী মেয়ে সায়মা। মায়ের সাথে আতিকুরকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলে শিশুটি। পরে শিশু সায়মাকে হত্যা করে বাড়ির পাশে পুতে রাখে আতিকুর। এ নিয়ে দ্বন্দ্ব দেখা দিলে শুক্রবার দেলোয়ারাকে গলা কেটে হত্যার পর নদীতে ফেলে দেয়া হয় বিচ্ছিন্ন মাথা। আতিকুরের দেয়া তথ্য অনুযায়ী রোববার শিশুটির মরদেহ ও মায়ের বিচ্ছিন্ন মাথা উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ব্যাপারে রংপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আসিফা আফরোজ আদুরী জানান, আতিকুরকে গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে প্রথমে সে কিছুই বলছিল না। অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের পর সে স্বীকার করে। বাচ্চাটাকে (সায়মাকে) সে মেরে ফেলেছে। প্রথমে প্রচণ্ড মারে। পরে জ্ঞান হারিয়ে ফেললে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে ঘরেই রেখে দেয়। রাতের বেলা বাচ্চাটার লাশ বাড়ির পাশে একটি গর্ত করে রেখে দেয়। এরপর সে স্বাভাবিক ছিল। পরে বাচ্চাটাকে নিয়ে দেলোয়ারার সাথে বিরোধে জড়ায়। এ নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শুক্রবার ভোরে তাকে গলা কেটে হত্যা করে লাশ মাথা পাশের করতোয়া নদীতে ফেলে যায়।
পুলিশ জানায়, আতিকুর এলাকায় জুয়ারী হিসেবে পরিচিত। বিভিন্ন স্থানে যাত্রাগানে জুয়ার আসর বসাতেন তিনি। সেখান থেকেই দেলোয়ারার সাথে পরিচয় ও প্রেম গড়ে ওঠে। দেলোয়ারা একটি যাত্রাগানের নাট্যকর্মী ছিলেন। সেখানে ঝিনুকমালা নামে পরিচিত ছিলেন তিনি। সেই সুবাদেই মাস তিনেক আগে বাসায় এনে রেখেছিলেন দেলোয়ারা ও তার মেয়ে সায়মাকে।
এদিকে ঘটনা প্রকাশ্যে আসলে ক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকাবাসী। রোববার বিকেলে আতিকুরের বাড়ি পুড়িয়ে দেয় তারা।
রংপুরের পুলিশ সুপার আবু সাইম, জানান, নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডে হতবাক পুলিশ। এ ঘটনায় আরও কেউ জড়িত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
![Header Ad](https://admin.dhakaprokash24.com/images/single-post-anniversary.jpeg)