আওয়ামী লীগ ও জাতীয় নাগরিক পার্টির মধ্যে পার্থক্য কোথায়, প্রশ্ন নুরের

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। ছবি: সংগৃহীত
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, আওয়ামী লীগ ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। তার দাবি, সরকারে থাকা অবস্থায় যদি ছাত্রনেতারা একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করেন, তবে এটি সরকারী দলেরই অংশ হবে। এমনকি তিনি প্রশ্ন তোলেন, "তাহলে আওয়ামী লীগের মধ্যে এবং জাতীয়অ নাগরিক পার্টির মধ্যে পার্থক্য কোথায়?"
শনিবার (১ মার্চ) রাজধানীর বিজয়নগরের আল রাজি কমপ্লেক্সে গণঅধিকার পরিষদের একটি সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন নুরুল হক নুর। তিনি আরও বলেন, গণঅভ্যুত্থানের ভূমিকাকে ভুলে গিয়ে একটি নির্দিষ্ট বলয়কেন্দ্রিক সরকার গঠন করা হয়েছে, যা জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা।
নুর সরকারের ছাত্র উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের পদত্যাগের আহ্বান জানিয়ে বলেন, "তারুণ্যের রাজনৈতিক দল হিসেবে গণঅধিকার পরিষদ সবসময় তরুণদের রাজনীতিতে অংশগ্রহণ উৎসাহিত করে এবং নতুন দলকে স্বাগত জানায়। তবে, আন্দোলনের পরিচিত মুখ থেকে যদি ছাত্ররা সরকারে অংশগ্রহণ করে রাজনৈতিক দল গঠন করে, তবে তা সরকারের পক্ষ থেকে জনগণের আস্থা ক্ষুণ্ন করতে পারে।"
তিনি আরও বলেন, সরকারে প্রতিনিধিত্বকারী ছাত্রনেতাদের মধ্যে থেকে কয়েকজন রাজনৈতিক দল গঠন করেছেন, যাদের কারণে জনগণের মধ্যে অস্বস্তি তৈরি হচ্ছে। নুর বলেন, সরকারে থাকা ছাত্রদের উচিত অবিলম্বে পদত্যাগ করা, যাতে সরকারে নিরপেক্ষতা বজায় থাকে এবং জনগণের আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়।
গণহত্যার সঙ্গে জড়িতদের বিচার এবং আহতদের চিকিৎসার প্রসঙ্গে নুর বলেন, এনাফ ইজ এনাফ। যথেষ্ট হয়েছে আমরা আর চুপচাপ থাকব না। গত ছয় মাসে গণহত্যার সঙ্গে জড়িতদের অল্প কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আহতদের চিকিৎসার বিষয়ে ব্যবস্থা নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে সংবাদ সম্মেলন করে আহতদের অবস্থা বলতে হবে এবং আহত ও নিহতদের ক্যাটাগরির ব্যাপারে যে বৈষম্য করা হয়েছে, তা সংশোধন করতে হবে। গত ছয় মাসে বিভিন্ন কমিউনিটির যৌক্তিক দাবি-দাওয়া আমলে নেওয়া হয়নি। সংস্কারের কোনো বাস্তবায়ন দেখছি না। পুরনো ধারায়ই চলছে দেশ। এখন জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে এগিয়ে যাওয়া উচিত।
তিনি আরও বলেন, "জাতীয় নির্বাচন আগে স্থানীয় নির্বাচন প্রয়োজন। গণঅধিকার পরিষদ আগামী জাতীয় নির্বাচনে ৩০০ আসনে লড়বে এবং নির্বাচনের সময় আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের পদ্ধতি চালু করার জন্য প্রয়োজনে আন্দোলনে নামবে।"
এছাড়া, নুরুল হক নুর কিছু গুরুত্বপূর্ণ দাবিও তুলে ধরেন:
১. জাতীয় ঐক্যমতের ভিত্তিতে গণঅভ্যুত্থানের অংশীজনের নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠন।
২. আহতদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসন, শহীদ পরিবারকে ক্ষতিপূরণ।
৩. গণহত্যার বিচার এবং আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ।
৪. রাষ্ট্র সংস্কার শেষ করে দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন।
