ছুটিতে দেখে আসুন চাঁদের মাটি
এ ছুটিতে রাজধানীতে থেকেই দেখে আসতে পারেন চাঁদের মাটি। চাঁদের মাটি মানে চাঁদের মাটিই। শুধু তাই নয়, এ মাটিতে স্পর্শ আছে খোদ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের। আর রাজধানী ঢাকাতেই দেখা মিলছে এ মাটির। দেখার সুযোগ আছে সাধারণ মানুষ ও শিশুদেরও।
রাজধানীর বিজয় সরণীতে অবস্থিত তোশাখানা জাদুঘরে গিয়ে দেখতে পারেন এমন বিরল বস্তু। শুধু তাই নয়। এখানে আরও দেখতে পাবেন- ভুটান কর্তৃক বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রথম স্বীকৃতি বার্তা, বঙ্গবন্ধুর আঙুলের ছাপ বিশিষ্ট পাথর, বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের আবক্ষ ভাস্কর্য, সাপের চামড়া, রুপার তৈরি প্যাগোডা, রুপার তৈরি নৌকা, রুপার তৈরি লাঙল, রুপার তৈরি শাপলা, রুপার তৈরি চাবি, রুপার তৈরি পাত্র ও হাতির দাঁতের তৈরি গরুর গাড়ি ইত্যাদি।
রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাওয়া সাউথ–সাউথ অ্যাওয়ার্ড, চন্দন কাঠের বাক্স, মহাত্মা গান্ধীর ভাস্কর্য, সৈনিকের ডামি, কামানের রেপ্লিকা, সুদৃশ্য ঘড়ি, পালতোলা জাহাজ, বেতের তৈরি নৌকা, তরবারি, ঘোড়ার গাড়ি, কাঠের তৈরি শিল্পকর্ম, রঙিন ফুলদানি, ক্রেস্ট, ওয়ালম্যাট, পেইন্টিং ও বিভিন্ন ধরনের শোপিস ইত্যাদি।
তোশাখানায় রয়েছে বর্তমান ও সাবেক রাষ্ট্রপতিদের পাওয়া উপহার সামগ্রীও। এরমধ্যে রয়েছে পোড়ামাটির ফলক, কাঠের হাতের উপর পাখির শোপিস, বাহারি ফুলদানি, আশোক স্তম্ভ, প্যাগোডার মডেল, শাপলার প্রতীক, ক্রেস্ট, ওয়ালম্যাট ও প্যাইন্টিং ইত্যাদি।
তোশাখানার পরিচালক মো. মনিরুর ইসলাম পাটওয়ারি ঢাকাপ্রকাশকে জানান, তোশাখানায় এ ছাড়াও জাতীয় সংসদের স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রাপ্ত বিভিন্ন দেশি ও বিদেশি মূল্যবান উপহারসামগ্রী প্রদর্শন করা হয়।
তিনি জানান, তোশাখানা জাদুঘরের গ্রাউন্ড ফ্লোরে দেশের বিভিন্ন সংস্থা/সংগঠন থেকে প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া উপহারসামগ্রী জনসাধারণের প্রদর্শনের জন্য রাখা হয়েছে।
পরিচালক মো. মনিরুর ইসলাম পাটওয়ারি চাঁদের মাটি বিষয়ে জানান, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৭৩ সালে এক খণ্ড চাঁদের মাটি প্রদান করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রথম স্বীকৃতি বার্তা প্রসঙ্গে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ২০১৪ সালের ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রথম স্বীকৃতি বার্তার ‘টেক্সট অব ফেলিসিটেশন মেসেজ’ প্রদান করেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং টবগে।
সাউথ–সাউথ অ্যাওয়ার্ড প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দারিদ্র্য বিমোচনে বাংলাদেশ সরকারের অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৩ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সাউথ–সাউথ অ্যাওয়ার্ড দেয় দি ইন্টারন্যাশনাল অরগানাইজেশন ফর সাউথ–সাউথ কোঅপারেশন।
ইন্দিরা গান্ধী শান্তি পুরস্কার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ২০১০ সালের ১২ জানুয়ারি ’ইন্দিরা গান্ধী শান্তি, নিরস্ত্রীকরণ ও উন্নয়ন পুরস্কার–২০১৯’ প্রদান করেন ভারতের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি প্রতিভা দেবীসিংহ পাতিল।
তোশাখানার লেভেল-১ এ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে দেওয়া দেশি ও বিদেশি উপহারসামগ্রী জনসাধারণের প্রদর্শনের জন্য রাখা হয়েছে।
লেভেল – ২ এ বিদেশের বিভিন্ন সংস্থা থেকে প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া উপহারসামগ্রী জনসাধারণের প্রদর্শনের জন্য রাখা হয়েছে। বেইজমেন্ট ১ এ বর্তমান ও সাবেক রাষ্ট্রপতিদের উপহারসামগ্রী জনসাধারণের প্রদর্শনের জন্য রাখা হয়েছে।
তোশাখানা সময়সূচি অনুযায়ী, গ্রীষ্মকালে শনি, রবি, সোম, মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। আর শীতকালে সকাল ১০টায় খুললেও বন্ধ হবে বিকেল ৫টায়। গ্রীষ্মকালে শুক্রবার বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এবং শীতকালে ৫টা পর্যন্ত জাদুঘর খোলা থাকবে।
তোশাখানায় প্রতি বুধবার থাকবে সাপ্তাহিক ছুটি। এ ছাড়া অন্যান্য সরকারি ছুটির দিন জাদুঘর বন্ধ থাকে। তবে ২৬শে মার্চ ও ১৬ই ডিসেম্বর সর্বসাধারণের জন্য জাদুঘর খোলা রাখা হয়। রাজধানীর বিজয় সরণীতে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘরে ৫০ টাকা টিকিট করে প্রবেশ করে একই টিকিটে প্রদর্শন করা যাবে তোশাখানা জাদুঘর।
এমএ/এসএন