শিশুদের নিয়ে ঘুরতে যেতে পারেন জাতীয় চিড়িয়াখানায়
মহামারির কারণে দুই বছর পর ঈদের আনন্দে মেতেছে মুসলিম সম্প্রদায়। যদিও দেশের অধিকাংশ স্থানে বৃষ্টির কারণে ঈদের জামাত ও জামাত পরবর্তী কুশল বিনিময় খানিকটা ব্যাহত হয়েছে। অনেক স্থানেই বৃষ্টির মধ্যেই অনুষ্ঠিত হয়েছে জামাত।
বিকেলের দিকে আকাশ কিছুটা পরিষ্কার হয়। তবুও আবহাওয়ার কারণে অনেকেরই ঈদের পরিকল্পনা বাতিল করতে হয়েছে। আজ বুধবার (৪ মে) সকালের দিকে রাজধানীতে বৃষ্টি হলেও এখন আকাশে ঝলমলে রোদ উঠেছে। তাই গতকালের ভেস্তে যাওয়া পরিকল্পনা আজ পুষিয়ে নিতে পারেন। শিশুকিশোরদের নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন রাজধানীর মিরপুরে অবস্থিত জাতীয় চিড়িয়াখানা থেকে।
দেখে আসতে পারেন দোর্দণ্ড প্রতাপশালী রয়েল বেঙ্গল টাইগার। সাধারণত শিশুদের আগ্রহ থাকে বেশি শক্তিশালী প্রাণীদের প্রতি। এক্ষেত্রে তাদের আগ্রহের তালিকায় থাকে সিংহ, হাতিসহ আকারে বড় নানান ধরনের প্রাণী। ‘সিংহ মামা’র সঙ্গে সরাসরি দেখা করতে খুবই আগ্রহ থাকে শিশু-কিশোরদের।
জাতীয় চিড়িয়াখানায় বাঘ-সিংহের অবস্থান কাছাকাছিই। সিংহের খাঁচা পেরোলেই বাঘের খাঁচা। আবার আর একটু এগোলেই দেখা পেয়ে যাবেন ভালুকের। সেখান থেকে সামান্য দূরত্বেই পেয়ে যাবেন গতিশীল চিতার খাঁচা।
চিড়িয়াখানার উত্তর দিকে কৃত্রিম জলাশয়ে রয়েছে জলহস্তি। বিশাল আকারের অত্যন্ত শান্ত এ প্রাণী অধিকাংশ সময় পানিতে ডুবে থাকে। তবে মাঝে বৃহৎ আকারের শরীর নিয়ে উঠে পানি থেকে। মাঝে মাঝে বিশাল হা- করে জানান দেয় তার অস্তিত্বের কথা।
তবে শক্তিশালী বা হিংস্র না হলেও, গর্জন করতে না পারলেও শিশু-কিশোরদের মাতিয়ে তুলতে জুড়ি নেই বানরের। বাদরামি আর চেঁচামেচি দেখে খিলখিলিয়ে হেসে উঠতে পারে আপনার ছোট্ট সোনামনি। খাঁচার এ মাথা থেকে ও মাথা পর্যন্ত লাফিয়ে লাফিয়ে, একজন আরেকজনকে খুঁচিয়ে, কখনো আবার দর্শনার্থীদের উদ্দেশে মুখ ভেঙচি কেটে নানারকম অঙ্গভঙ্গি করে শিশুদের আনন্দ দেয় বানর। কখনো কখনো দর্শনার্থীদের দেওয়ার খাবার নিয়ে নিজেদের মধ্যে হুল্লোড় শুরু করে। সদা প্রাণচঞ্চল এ প্রাণীর দেখা মিলবে চিড়িয়াখানার মূল ফটক থেকে একটুখানি এগোলেই।
জাতীয় চিড়িয়াখানায় গিয়ে দেখা পাবেন নানা রকম পাখির। আপনার সন্তানকে পরিচয় করিয়ে দিতে পারেন কানিবক, পানকৌড়ি ও মাছরাঙার মতো দেশি পাখিদের সঙ্গে। চিড়িয়াখানায় রয়েছে কয়েকশ প্রজাতির পাখি। এরমধ্যে রয়েছে ফ্লেমিংগো, রঙিন ফিজ্যাণ্ট, বিলুপ্তপ্রায় কুড়া, কাল শকুন, শঙ্খচিল, লাভ বার্ড, মুনিয়া, উটপাখি ও কেশোয়ারী ইত্যাদি।
এ ছাড়া চিড়িয়াখানায় রয়েছে বিলুপ্তপ্রায় নীলগাই, শিম্পাঞ্জী, ভুটানি গরু, মায়া হরিণ, চিত্রা হরিণ, সাম্পার হরিণ, এশিয়াটিক কালো ভল্লুক, জেব্রা।
এখানে রয়েছে ১৯১ প্রজাতির ২ হাজার ১৫০টি প্রাণী। চিড়িয়াখানায় অবস্থিত প্রাণী জাদুঘরে আছে ২৪০ প্রজাতির স্টাফিং করা জীব-জন্তু-পাখি।
চিড়িয়াখানা, পার্ক বা প্রকৃতির মাঝে বের হলে শিশুদের মনে থাকে নানা জিজ্ঞাসা। কোনটা কী পাখি বা প্রাণী, তা কোথায় থাকে, কত বড় হয়, কী খায়- এমন নানা প্রশ্ন থাকে তাদের মনে। এমন কিছু প্রশ্নে জবাব তুলে ধরা হয়েছে চিড়িয়াখানায় ঝুলোনো বিভিন্ন চার্ট থেকে। সেখানে প্রাণীদের খাবারের তালিকা বা কোন জাত অথবা দেশি নাকি বিদেশি প্রাণী এমন অনেক তথ্য থাকে। তা থেকেও শিশু-কিশোরদের জানাতে পারেন এসব তথ্য।
জাতীয় চিড়িয়াখানা গ্রীষ্মকালে পয়লা এপ্রিল থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকে। আর শীতকালীন ১ অক্টোবর থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত খোলা। সাপ্তাহিক বন্ধ প্রতি রবিবার।
এমএ/এসএন