করোনা শেষ হয়নি, আনন্দ যেন বিপদ ডেকে না আনে: রাষ্ট্রপতি
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, `করোনা মাহামারির কারণে বিগত দুই বছর ঈদসহ কোনো সম্প্রদায়ের কোনো ধর্মীয় উৎসবই প্রত্যাশিত আনন্দঘন পরিবেশে উদযাপন ও উপভোগ করা যায়নি।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে করোনা পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে, তাই এবার মানুষের মধ্যে বাঁধভাঙা আনন্দ উপভোগের প্রবণতা দেখা দেবে-এটাই স্বাভাবিক। তবে একটা কথা মনে রাখতে হবে, করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও করোনাভাইরাস পুরোপুরি শেষ হয়ে যায়নি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনার সংক্রমণ আবারও বৃদ্ধি পাচ্ছে।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘চলাফেরা ও জীবনাচারে সাবধানতা অবলম্বন না করলে যেকোনো সময় করোনা পরিস্থিতি খারাপ হয়ে যেতে পারে। আনন্দ করতে গিয়ে যেন আমরা বিপদকে ডেকে না আনি। তাই আসুন স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদ উৎসব পালন করি, দেশকে করোনামুক্ত রাখি।’
মঙ্গলবার (৩ মে) বঙ্গভবন থেকে দেশবাসীর উদ্দেশে এক ভিডিও বার্তায় ঈদের শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে রাষ্ট্রপতি এসব কথা বলেন।
দেশবাসীর উদ্দেশে আবদুল হামিদ বলেন, ‘এক মাস সিয়াম সাধনা এবং আত্মশুদ্ধির ঐকান্তিক প্রচেষ্টার পর মুসলমানদের জন্য আজ একটি খুশির দিন-পবিত্র ঈদুল ফিতর। আমি পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেশবাসীসহ সমগ্র বিশ্ববাসীকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ।
দেশবাসীকে ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে ঈদের আনন্দ সবার সঙ্গে ভাগাভাগি করে উপভোগের আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে খুশি। শুধু নিজেকে বা পরিবারকে নিয়ে নয় বরং আত্মীয়স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশি, বন্ধুবান্ধব সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে ঈদ উৎযাপনের মধ্যেই ঈদের প্রকৃত আনন্দ।’
তিনি বলেন, ‘সরকার দেশের প্রতিটি নাগরিকের মুখে হাসি ফোটাতে নিরন্তর প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। ঈদুল ফিতরের আগে ৩২ হাজার ৯০৪টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে বাড়ি দেওয়া হয়েছে। ক্ষুধা, দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার মাধ্যমে সবার মুখে হাসি ফোটানোই হোক এবারের ঈদুল ফিতরে আমাদের অঙ্গীকার।‘
প্রসঙ্গত, করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছর দেশের ঈদের উৎসব হয়নি। মহামারির ভয়াবহতা পেরিয়ে দুই বছর পর এবার মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর চেনারূপে ফিরেছে।
তবে স্বাস্থ্যবিধির কারণে রাষ্ট্রপতি এবারও জাতীয় ঈদগাহে ঈদের নামাজে অংশ নেননি। তাই এবারও বঙ্গভবনের দরবার হলে ঈদের নামাজ আদায় করেন রাষ্ট্রপতি। তারপর বঙ্গভবনে ফিরে পরিবারের সদস্য এবং কর্মকর্তাদের সঙ্গে তিনি ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এরপর রাষ্ট্রপতি আমন্ত্রিত অতিথিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
প্রসঙ্গত, রেওয়াজ অনুযায়ী সব সময়ই রাষ্ট্রপতি জাতীয় ঈদগাহে ঈদের জামাত আদায় করেন। কিন্তু কোভিড-১৯ এর বিধি নিষেধের কারণে এবারও রাষ্ট্রপতি জাতীয় ঈদগাহে যাননি।
এনএইচবি/এসএন