রাজধানী ও সারাদেশের কোথায় কখন ঈদ জামাত


নাহিদ হাসান খন্দকার। ছবি: সংগৃহীত
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুর মহানগর শাখার মুখপাত্র নাহিদ হাসান খন্দকারের চাঁদা দাবির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। অভ্যুত্থান পরবর্তী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠকের এমন কর্মকাণ্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সচেতনরা। তবে নাহিদের দাবি- তাকে পরিকল্পিতভাবে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হয়েছে।
শনিবার (১ মার্চ) সকালে নাহিদের একটি ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার ঝড় উঠে। ভিডিওতে রংপুর নগরীর গ্রীন সিটি ইকো পার্কের প্রকল্প ব্যবস্থাপক বেলাল হোসেনের সাথে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রংপুর মহানগরের মুখপাত্র নাহিদ হাসান খন্দকারের কথোপকথন শোনা যায়।
এতে নাহিদকে বলতে শোনা যায়, আপনি তো দেখছেন বিষয়টি কোথায় গেছে। আপনি কথা বলেন, যদি আপনার মনে হয় একটু ইয়া করবেন, একটা সংগঠন করতে গেলে কী করতে হয় আপনি তো জানেন। এ হচ্ছে কথা। আমি চাচ্ছি না আপনার কোনো সমস্যা হোক। যদি আপনাদের দিক থেকে মনে হয় কোন সমস্যা হচ্ছে, তাহলে আপনি ভাইয়ের (পার্ক কর্তৃপক্ষ) সাথে কথা বলেন। আপনাদের গলায় পাড়া দিয়ে আমি কিছু করতে পারবো না।
পার্ক ম্যানেজার এক লাখ টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে পাঁচ হাজার টাকা দেওয়ার কথা বলেন। এ সময় নাহিদ তাদের আরও সময় নেওয়ার কথা বলেন।
তবে চাঁদা দাবির বিষয়টি অস্বীকার করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুর মহানগরের মুখপাত্র নাহিদ হাসান খন্দকার। নিজের ফেসবুক আইডিতে বালু উত্তোলনের ৪৪ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ক্লিপ পোস্ট করে সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘একটি পার্কের ভেতরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে এটা জানতে পেরে আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রংপুর মহানগরের একটি প্রতিনিধি টিম আহ্বায়ককে অবগত করে সত্যতা নিশ্চিত করার জন্য ওই বালুমহালে যাই। সেখানে গিয়ে দেখতে পাই তারা অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে। ৩১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি নুলা শাহীন, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ভিটি বাবু, স্টেশনের মহানগর ছাত্রলীগের সেক্রেটারি আসিফের পার্টনার বালুমহালের সম্রাট ভিটি আলম, যুবলীগ নেতা বাশার আর স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা তুহিন পার্কটির অর্থ যোগানদাতা। এরা দীর্ঘদিন যাবত পার্কটি পরিচালনা করে আসছিল। আমরা অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধের পদক্ষেপ নিলে আওয়ামী দোসর এবং তাদের সহযোগীরা মিথ্যা বানোয়াট ভিডিও করে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করে। উল্টো তারাই আমাকে বার বার টাকার প্রলোভন দেখিয়ে ম্যানেজ করার চেষ্টা করে।
নাহিদ হাসান আরও লিখেছেন, আমি কোনো টাকা দাবি করিনি। টাকা দিতে চাইলেও আমরা সেটা গ্রহণ করিনি। কেউ প্রমাণ দিতে পারবে না আমি কারো কাছে এক টাকা নিয়েছি। বালুখেকোরা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সফলতা নষ্ট এবং বিতর্কিত করার জন্য এই সমস্ত বানোয়াট ভিডিও প্রচার করে আসছে। যা আপনারা আওয়ামী লীগ এবং ছাত্রলীগ এর ফেসবুক পেজে গেলে দেখতে পারবেন। আমি কখনো অনৈতিক কোনো কাজে জড়িত ছিলাম না এবং কখনো থাকব না।
স্থানীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাতকারেও নাহিদ হাসান খন্দকার নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন। তিনি বলেন, তিন-চার দিন আগে আমরা জানতে পারি একটি পার্কে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। আমরা সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ৭-৮ জনের একটা টিম সেখানে গিয়ে দেখতে পাই বালু উত্তোলন করে ট্রাকে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আমরা তাদের কাছে জানতে পারি পার্কের ভেতরে পুকুর খনন করে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। সেখানে আমরা একটি রিপোর্ট করি এবং বেশ কিছু ভিডিও করে রাখি। সেখানকার একজন মুরব্বি বেলাল নামে একজনকে ফোন দেন। বেলাল বিএনপির পরিচয় দিয়ে আমাকে শিমুলবাগ কমিউনিটি সেন্টারে ডাকে। তাদের ১০-১২ জনের একটা টিম আমার কাছে আসে। তারা কথাবার্তার মাঝে আমাদেরকে বিভিন্নভাবে অর্থের প্রলোভন দেখায়। আমরা সেটি এড়ানোর চেষ্টা করে দ্রুত সেখান থেকে চলে আসি।
নাহিদ হাসান বলেন, ‘কেউ যদি প্রমাণ করতে পারে আমরা সেখান থেকে এক টাকা নিয়েছি, তাহলে সংগঠন যে শাস্তি দিবে তা আমি মাথা পেতে নেব। আমি সেখানে পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাহিরে মিটিং আছে বলে চলে আসার চেষ্টা করেছি। আমরা যেন তাদের ব্যবসায় হাত দিতে না পারি সেজন্য আমার বিরুদ্ধে অনৈতিকভাবে এআইয়ের মাধ্যমে ভিডিও তৈরি করেছে। যারা এই ভিডিও ছড়িয়েছে তারা আওয়ামী লীগের দোসর। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা ফ্যাসিস্টদের সরিয়েছি, এখন সেই ফ্যাসিস্টদের দোসররা আমাদেরকে বিভিন্নভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছে।
এ ব্যাপারে গ্রীন সিটি ইকো পার্কের প্রকল্প ব্যবস্থাপক বেলাল হোসেন বলেন, আমার পার্কে পুকুর তৈরিতে খনন কার্যক্রম চলছিল। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নাহিদ হাসান খন্দকার অবৈধভাবে বালু উত্তোলন হচ্ছে বলে আমার কাছে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছিলেন। যা ভিডিওতে রয়েছে। এছাড়া তার চাঁদা দাবির অনেক কলরেকর্ড আমার কাছে রয়েছে, যা দ্রুততম সময়ে প্রকাশ করা হবে। এমন চাঁদাবাজ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মতো সংগঠনে থাকতে পারে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রংপুর মহানগর কমিটির আহ্বায়ক ইমতিয়াজ আহম্মেদ ইমতি বলেন, যে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাওয়া যাচ্ছে সেটি নিয়ে আমাদের টিম তদন্ত করছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে কেউ তাকেসহ এই প্ল্যাটফর্মকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য এমন ঘটনা ঘটিয়েছে। ইতোমধ্যেই লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, বাংলাদেশের নিষিদ্ধ ঘোষিত সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগের পেজে এসব বেশি প্রচারণা করা হচ্ছে। অডিও ক্লিপটি আমাদের কাছে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মাধ্যমে তৈরি বলে মনে হচ্ছে। তবে তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হচ্ছে সেটির প্রেক্ষিতে আমরা তাকে শোকজের মাধ্যমে জবাব চেয়েছি এবং এ বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে কোরাম মিটিংয়ের মাধ্যমে নাহিদ হাসান খন্দকারের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত ২৪ নভেম্বর রংপুর মহানগরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৬ মাস মেয়াদি আহ্বায়ক কমিটি প্রকাশ করা হয়। এতে রংপুর ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন অ্যান্ড টেকনোলজির শিক্ষার্থী নাহিদকে মুখপাত্র করা হয়।
পুলিশের অভিযানে ছিনতাইকারী-চাঁদাবাজসহ গ্রেপ্তার ১০। ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ছিনতাইকারী, চাঁদাবাজ ও মাদক কারবারিসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ।
শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) মোহাম্মদপুর থানাধীন বিভিন্ন অপরাধপ্রবণ এলাকায় ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ এর অংশ হিসেবে এই অভিযান চালানো হয়। অভিযানে গ্রেপ্তারকৃতদের হেফাজত থেকে দেশীয় অস্ত্র ও বিভিন্ন মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- লিটন (২৭), জহিরুল (২০), রফিক (৩০), হানিফ (২৪), নুর হোসেন (২২), ইব্রাহিম (২৫), সাইদ (২৫), রুমান (২৫), পারভেজ (৩৫) ও সিয়াম (১৯)।
মোহাম্মদপুর থানা সূত্রে জানা গেছে, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে কয়েকজন চিহ্নিত মাদককারবারি, পেশাদার ছিনতাইকারী ও পরোয়ানাভুক্ত আসামি। তাদের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যেই একাধিক মামলা রয়েছে।
এ বিষয়ে মোহাম্মদপুর থানার এক কর্মকর্তা বলেন, অপরাধ দমনে আমাদের বিশেষ অভিযান অব্যাহত থাকবে। এলাকাবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা নিয়মিতভাবে এমন অভিযান পরিচালনা করবো।
গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত
হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে গত শুক্রবার বৈঠকের সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। এদিকে বাকবিতণ্ডাময় নাটকীয় বৈঠকের পর যুক্তরাষ্ট্রকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
শনিবার (১ মার্চ) পোস্ট করা ওই বার্তায় তিনি লেখেন, "আমেরিকার প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, কংগ্রেস এবং সকল আমেরিকান জনগণকে ধন্যবাদ। বিশেষভাবে যুদ্ধের তিন বছর ধরে যে সমর্থন আমেরিকা আমাদের দিয়েছে, তার জন্য আমরা চিরকাল কৃতজ্ঞ থাকব।" তিনি আরও যোগ করেন, "ইউক্রেনের জনগণ এই সমর্থনের জন্য সবসময় কৃতজ্ঞ থাকবে।"
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের মধ্যে আমেরিকার সমর্থন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এটি জেলেনস্কির সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট থেকে পরিষ্কার হয়ে ওঠে। যদিও বৈঠকে পরিস্থিতি উত্তপ্ত ছিল, তবুও তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে চান। তিনি বলেন, "প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সমর্থন আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি যুদ্ধ শেষ করতে চান, কিন্তু বিশ্বাস করুন, আমরা ইউক্রেনবাসীরা প্রথমে শান্তি চাই। এটি আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধ। আমাদের অস্তিত্ব রক্ষার যুদ্ধ।"
We are very grateful to the United States for all the support. I’m thankful to President Trump, Congress for their bipartisan support, and American people. Ukrainians have always appreciated this support, especially during these three years of full-scale invasion. pic.twitter.com/Z9FlWjF101
— Volodymyr Zelenskyy / Володимир Зеленський (ZelenskyyUa) March 1, 2025
শুক্রবারের বৈঠকে ট্রাম্প ও জেলেনস্কির মধ্যে তীব্র বাকবিতণ্ডার পর, মার্কিন প্রেসিডেন্ট তার এক পোস্টে দাবি করেন, "আমেরিকা শান্তি চাইলেও, জেলেনস্কি শান্তি চান না।"
বৈঠকে তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য দায়ী করেন এবং বলেন, "তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের ঝুঁকি বাড়িয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট আগুন নিয়ে খেলা শুরু করেছেন।"
তবে, জেলেনস্কি পোস্টে ট্রাম্পের সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি আমেরিকার বিরুদ্ধে সরাসরি কিছু না বলার চেষ্টা করেছেন, এবং আলোচনার রাস্তা খুলে রাখতে চেয়েছেন। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের মতে, ইউক্রেন প্রেসিডেন্টের এমন আচরণ তার কূটনৈতিক শিষ্টাচারেরই অংশ, যাতে ভবিষ্যতে আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত রাখা সম্ভব হয়।