কাউন্টারে এলেই মিলছে টিকিট, যাত্রায় নেই ভোগান্তি
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আর একদিন বাদেই ঈদুল ফিতর। তাই শেষ মুহূর্তে ঘরমুখো মানুষ ছুটছে বাস টার্মিনালে। বাসের টিকিট পাওয়া না পাওয়ার শঙ্কা নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে গাবতলী বাস টার্মিনালে পৌঁছানোমাত্র চোখে-মুখে স্বস্তির ছাপ। কারণ আর কিছুই না গাবতলী বাস টার্মিনালে প্রতিটি কাউন্টার ফাঁকা। যখন যে যাত্রী আসছেন হাঁক-ডাক দিয়ে নিজেদের কাউন্টারে টেনে নিতে ব্যস্ত কাউন্টারকর্মীরা।
ঈদের আগ মুহূর্তে যাত্রীদের এরকম কদর অন্য সময় কমই লক্ষ্য করা গেছে। অনেক যাত্রী স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে বলেন ঈদের সময় গাবতলীর এমন চিত্র এবারই প্রথম দেখলাম।
হাসনাত শাহিন সপরিবারে পিতৃভূমি মেহেরপুর যাচ্ছেন। গাবতলী বাস টার্মিনালে পূর্বাশা কাউন্টারের সামনে কথা হয় মিসেস শাহিনের সঙ্গে। তিনি ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, আমি তো ১২ বছর ধরে যাওয়া আসা করি। এবারই দেখলাম কাউন্টারে যাত্রীদের এতো কদর। কোনো অগ্রিম টিকিট লাগেনি এসেই পছন্দমতো গাড়িতে পছন্দমতো সিট পেয়েছি। শুনেছি রাস্তায় যানজটও কম।
যাত্রীদের এই তথ্যের সঙ্গে মিল পাওয়া যায় পরিবহনকর্মীদের কথায়ও। ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী তন্ময় ট্রাভেলসের পরিবহনকর্মী মিথুন সাহা ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, আমি ১৮ বছর ধরে পরিবহন লাইনে চাকরি করি। এবারের মতো এরকম চিত্র কখনই দেখিনি। এবার ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট ভালো তাই রাস্তায় উল্লেখ করার মতো দুর্ভোগ নেই। অন্যান্য সময় গাড়িতে যে সময় লাগে ঈদের সময়ও তাই।
তিনি বলেন, তন্ময় ট্রাভেলসের রাজশাহী মেট্রো-০১৭১ গাড়িটি গেল রাত ১২টা ৪৫ মিনিটে রাজশাহী থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসে। সেই গাড়ি গাবতলী পৌঁছায় সকাল সাড়ে ৬টায়। এখন রাজশাহীর জন্য যাত্রী খোঁজায় ব্যস্ত মিথুন সাহা। গাড়িতে ঢাকা থেকে রাজশাহী পর্যন্ত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ৫০০ টাকা করে।
ওই গাড়ির যাত্রী ফারুক হোসেন বলেন, আমি আগে টিকিট কাটিনি। বাসা থেকে বের হয়ে চিন্তা করছিলাম গাড়ি পাব কি না! ঈদে বাড়ি যেতে পারব কি না এ নিয়ে শঙ্কায় ছিলাম তবে এসেই সিট পেয়েছি এখন ভালো লাগছে। ভাড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ৫০০ টাকা নিয়েছে। অন্য সময় এ লোকাল পরিবহনগুলোর ভাড়া সাড়ে ৩০০ বলে দাবি করেন এ যাত্রী।
তার এ কথার যুক্তি দিয়ে মিথুন সাহা বলেন, অন্য সময় যাত্রী না থাকায় কিলোমিটার প্রতি যে ভাড়া তার চাইতে কম রাখা হয়, তাই ভাড়া কম মনে হয়, এখন প্রকৃত ভাড়া নিচ্ছি যাত্রীদের কাছে বেশি মনে হচ্ছে। আসলে ভাড়া বেশি নিচ্ছি না।
অগ্রিম টিকিট কাটা যাত্রীদের কাউন্টারে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে কারণ তাদের ধারণা ছিল কাউন্টারে পৌঁছাতে সময় লাগবে। কিন্তু ঢাকা ফাঁকা হওয়ায় দ্রুত কাউন্টারে গিয়ে এখন বসে আছেন।
হানিফ পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার জাকির মল্লিক ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, যাত্রীই তো নেই চাপ থাকবে কী? সকাল থেকে বিভিন্ন রুটে আমাদের ১০-১২টি গাড়ি ছেড়ে গেছে। কোনোটার পেছনের দিকের ৪-৫টা সিট ফাঁকা রেখেই গেছে। এবার ঈদের আগে যাত্রীর চাপ নেই বললেই চলে।
গত ২৮ এপ্রিল অফিস টাইমের পর থেকে মূলত ঈদের ছুটি শুরু হয়েছে তাই এবার বাড়ি ফেরার জন্য দীর্ঘ সময় পেয়েছেন যাত্রীরা যে কারণে ভিড় এড়িয়ে যেতে পারছে। এ ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয় ২০ এপ্রিলের পর যে করণে অধিকাংশ মানুষ অনেক আগেই বাড়িতে পৌঁছে গেছে। যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এবার ঈদ যাত্রা অনেক স্বস্তিদায়ক হচ্ছে।
এসএম/এসএন