শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব ২৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান

খাওয়ার বিরতির সময় কাজ যে পর্যায়ে আছে সেখানেই রেখে খেতে বসে যেত তারা। অন্য কারিগরেরাও এসে জড়ো হতো। শীতের সময় কাঠ কিংবা চাঁচনি থেকে জ্বালানো আগুনের পাশে গোল হয়ে বসত সবাই। গরমের সময় বসত ছাদের নিচে। আবদার নামের একজন আরব শ্রমিক ছিল; তার পরনে থাকত আরব দেশের মানুষদের পাজামা, পাজামার পেছনের অংশ ভাঁজ হয়ে ঝুলতে থাকত। পাজামার পা ছিল তার পায়ের গুলের মাঝখান পর্যন্ত। মাথায় একটা কিনারাবিহীন টুপি এবং ছেঁড়া সোয়েটারের ওপরে পরত একটা পুরনো জ্যাকেট। রসিকতা করে সে জ্যাককে ডাকত, আমার সহকর্মী। তার মামা আবদারের সহকর্মী। আর জ্যাকও তার মামার কাজে হাত লাগাত বলেই এরকম সম্বোধন করত সে।

কারখানার মালিকও ছিল একজন বয়স্ক পিপা তৈরিকারী। তার ওই নামহীন কারখানায় সে আসলে নিজের সহকর্মীদের নিয়ে বড় বড় ফরমায়েশী কাজ করত। আরেকজন ইতালীয় শ্রমিক ছিল; সব সময় তার মন খারাপ থাকত এবং ঘন ঘন সর্দি লাগত তার। ওখানে ছিল সার্বক্ষণিক হাসিখুশি ডনিয়েল। জ্যাককে ডেকে নিয়ে হাসি তামাসা আর খেলায় মেতে উঠত সে। জ্যাক কারখানার চারপাশে ঘুরতে ঘুরতে পালিয়ে বেড়ানোর চেষ্টা করত। তার কালো অ্যাপ্রোন করাতের গুঁড়ায় ঢেকে যেত। গরমের দিনে খোলা পায়ে পুরনো স্যান্ডেল মাটি আর চাঁচনির আবরণে ঢেকে যেত। করাতের গুঁড়ার গন্ধ আর নতুন চাঁচনির গন্ধ শুঁকে আগুনের পাশে এসে আগুনের সুগন্ধি ধোঁয়ার স্বাদ নিতে নিতে জ্যাক জিহ্বা চাটত। কিংবা পিপার তলা সমান করার কোনো যন্ত্র নিয়ে এক খণ্ড কাঠের ওপরে গোঁজ হিসেবে ঢুকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করত বাইস। নিজের কায়িক কৌশলে নিজে আনন্দ পেত এবং অন্য শ্রমিকেরা তার প্রশংসা করত।

খাওয়ার এরকম এক বিরতিতে জ্যাক তলা-ভেজা স্যান্ডেল নিয়ে বোকার মতো একটা বেঞ্চের ওপরে উঠে পড়ে। হঠাৎ করে সে সামনের দিকে পিছলে চলে গেলে পায়ের নিচের বেঞ্চটা পেছনের দিকে উল্টে যায়। শরীরের সবটুকু ভরসহ জ্যাক পড়ে যায় বেঞ্চের ওপরেই। তার ডান হাতটা বেঞ্চের নিচে ঘষা খায়। সঙ্গে সঙ্গে বোধহীন একটা ব্যথা চাগিয়ে ওঠে হাতে। তবু সে হাসতে হাসতে উঠে দাঁড়ায়। কারণ ততক্ষণে অন্য শ্রমিকরাও দৌড়ে এসেছে তার পড়ে যাওয়া দেখে। কিন্তু মুখ থেকে তার হাসি মুছে যাওয়ার আগেই, আর্নেস্ট ছুটে এসে তাকে কোলে তুলে নিয়ে সাধ্যের সর্বোচ্চ গতিতে কারখানার বাইরের দিকে ছুটতে থাকে। কণ্ঠ দিয়ে তার তোতলানো কথা বের হচ্ছে, ডাক্তারের কাছে, ডাক্তারের কাছে! তখন জ্যাক দেখতে পায়, তার ডান হাতের মধ্যমার মাথার দিকটা পিষ্ট হয়ে কালো পিণ্ডের মতো হয়ে গেছে। সেখান থেকে রক্ত বের হচ্ছে। জ্যাকের হৃদপিণ্ড একবার লাফিলে উঠলে সে জ্ঞান হারায়। পাঁচ মিনিটের মধ্যে তারা তাদের বাড়ির বিপরীতে রাস্তার অপর পাশে যে ডাক্তার ছিলেন তার কাছে পৌঁছে যায়। ফ্যাকাশে মুখে আর্নেস্ট জিজ্ঞেস করে, কিছু হয়নি তো ডাক্তার? তেমন কিছু না, না?

ডাক্তার বললেন, পাশের রুমে গিয়ে অপেক্ষা করো। বড় হলে ছেলে খুব সাহসী হবে।

হতেই হবে। তার অদ্ভূতভাবে জোড়া লেগে যাওয়া আঙুল এখনই তার প্রমাণ দিচ্ছে। তবে থেঁতলে যাওয়া অংশ জোড়া দেওয়ার পর ডাক্তার তাকে একটা মিষ্টি পানীয় উপহার দিলেন এবং তার সাহসের পুরস্কারস্বরূপ একটা ব্যাজ দিয়ে দিলেন। তার পরও আর্নেস্ট তাকে কোলে করে রাস্তা পার করে দিতে চাইল এবং তাদের বাড়ির সিঁড়ির কাছে গিয়ে ফুপিয়ে কাঁদতে কাঁদতে জ্যাককে বুকে জড়িয়ে নিল। যতক্ষণ না ব্যথা করে ওঠে জ্যাককে সে বুকের ভেতর ধরেই রইল।

জ্যাক বলল, মামণি, কে যেন দরজায় শব্দ করছে।

আর্নেস্ট এসেছে। যা, দরজা খুলে ওকে নিয়ে আয়। চোর ডাকাতের ভয়ে দরজায় আজকাল তালা দিয়ে রাখি।

জ্যাককে দরজায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে আর্নেস্ট বিস্ময়ে ‘হাউ’ করে একটা শব্দ বের করল। সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে জ্যাককে বুকে জড়িয়ে ধরল আর্নেস্ট। চুল সবগুলোই প্রায় সাদা হয়ে গেছে। তবু তার মুখের চেহরাটা বালকসুলভ রয়ে গেছে। মুখের আদল সুগঠিত আছে। তবে তার পা দুখানা যেন আরো বাঁকা হয়ে গেছে। কাঁধ আগের মতোই চওড়া আছে। ভেতরে হেঁটে আসার সময় মনে হলো চার হাত পা যেন দোলাতে দোলাতে হাঁটছে।

জ্যাক বলল, কেমন আছো, মামা?

খুব বেশি ভালো নয়। পেটের পাশে ব্যথা, বাতের ব্যথা। শরীরের অবস্থা খারাপই বলা যায়। আর জ্যাক? হ্যাঁ, ভালোই, ভালো অবস্থাতেই আছে। ক্যাথরিন করমারি তাকে দেখে খুব খুশি হয়েছে। জ্যাকের নানি মারা যাওয়ার পরে, বাচ্চারাও সবাই দূরে চলে গেলে তারা দুভাইবোন এক সঙ্গে আছে। একজনের সাহায্য ছাড়া আরেকজনের চলে না। আর্নেস্টের দেখাশোনা করার জন্য কেউ একজনকে দরকার ছিল। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে ক্যাথরিন তার স্ত্রীর মতো: খাবার রান্না করে দেওয়া, কাপড় চোপড় ধুয়ে ইস্ত্রি করে দেওয়া, প্রয়োজনের সময় তার দেখাশোনা করা– সবই করেছে ক্যাথরিন। আর ক্যাথরিনের যা দরকার ছিল সেটা টাকা পয়সা নয়; তার ছেলেরা তার আর্থিক প্রয়োজন সবই মিটিয়ে থাকে। তার একজন পুরুষ মানুষের সঙ্গ দরকার ছিল এবং আর্নেস্ট তার মতো করে বোনের দেখাশোনা করে আসছে, যখন থেকে তারা অন্যদের থেকে একা হয়ে গেছে।

হ্যাঁ, তারা স্বামী-স্ত্রীর মতোই আছে; শরীরের প্রয়োজনে নয়; রক্তের টানে। প্রতিবন্ধিত্ব যখন খুব কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে ভাঙা ভাঙা বাক্যের ভেতর থেকে জ্বলে ওঠা প্রায় বোবা সংলাপ বিনিময় করে একজন আরেকজনকে বেঁচে থাকতে সাহায্য করেছে। অন্য যেকোনো দম্পতির চেয়ে তারা একজন আরেকজনের সঙ্গে অনেক বেশি ঘনিষ্ঠ এবং একজন আরেকজনের বিষয়ে অনেক বেশি অবগত।

আর্নেস্ট বলল, হ্যাঁ, হ্যাঁ; সব সময় খালি জ্যাক জ্যাক বলে তোর মা।

ঠিক আছে। আমি তো এসে গেছি, জ্যাক বলল। ঠিকই, জ্যাক এসে গেছে। আগের মতোই মা এবং আর্নেস্ট মামার সঙ্গে আছে জ্যাক। জ্যাক তাদের সঙ্গে কখনও কথা বলতে পারেনি। তাদের প্রতি তার ভালোবাসার প্রবাহ কখনও থেমে যায়নি। তাদের প্রতি তার সবচেয়ে বেশি ভালোবাসা। তাদেরকে ভালোবাসতে পারার কারণেই তাদের কথা সব সময় জ্যাকের মনের মধ্যে জেগে ছিল। কারণ যাদের প্রতি জ্যাকের ভালোবাসা দেখানো উচিত ছিল তাদের অনেককেই ভালোবাসতে পারেনি সে।

ডানিয়েল কেমন আছে?

ঠিক আছে, ভালো আছে। আমার মতোই বুড়ো হয়ে গেছে। ওর ভাই পিয়েরোত জেলে।

কিসের জন্য?

ও বলে ইউনিয়নের কারণে। আমি বলি, আমি মনে করি আরবদের সাথে তার যোগাযোগ আছে। বলেই আর্নেস্ট চিন্তিত হয়ে পড়ে। তারপর বলে, এই যে ডাকাতদের কথা, এরকম কি ঠিক আছে?

না, অন্য আরবেরা। হ্যাঁ, ডাকাতেরা নয়।

ঠিক ঠিক, আমি তোর মাকে বলেছি বসেরা সব কড়া। তাদের আচরণ চড়া: কিন্তু ডাকাতদেরও বেশি বেশি।

সেরকমই, জ্যাক বলল। তবে পিয়েরোতের জন্য আমাদেরও কিছু করা উচিত।

ভালো, আমি ডানিয়েলকে জানাব।

ডোনাটের খবর কী? (ডোনাট গ্যাসের কারখানায় কাজ করত আর অবসরে মুষ্টিযুদ্ধে অংশ নিত বাড়তি উপার্জনের জন্য)।

মারা গেছে। ক্যান্সার হয়েছিল। আমরা সবাই বুড়ো হয়ে গেছি।

হ্যাঁ, ডোনাট মারা গেছে। তার মায়ের বোন মার্গারিটে খালা মারা গেছে। রবিবারের বিকেলে তাকে নানি জোর করে টেনে নিয়ে যেত খালার বাসায়। জ্যাকের প্রচণ্ড একঘেয়ে লাগত। আধা অন্ধকার খাবার ঘরের টেবিলে কালো কফি সামনে নিয়ে বসা দুই মহিলার প্যাঁচালে মিশেল খালুও বিরক্ত হতেন। জ্যাককে ওই অবস্থা থেকে রক্ষা করতেন মিশেল খালু তার আস্তাবলে নিয়ে গিয়ে।

বিকেলের আলোয় তখনও রাস্তা বেশ উষ্ণ। ছায়া ছায়া আলোয় জ্যাক প্রথমত ঘোড়ার লোমের গন্ধ, খড়ের গন্ধ এবং ঘোড়ার বিষ্ঠার জৈব সারের গন্ধ পেত। কাঠের জাবনাপাত্রের সঙ্গে ঘোড়ার মুখের শিকলের বাড়ি লাগার শব্দ শুনতে পেত। ঘোড়াগুলো লম্বা ঠুলির আড়াল থেকে তার দিকে মুখ ফিরিয়ে চাইত। দীর্ঘদেহী এবং লম্বা গোঁফের মিশেল খালুর গা থেকেও খড়ের গন্ধ আসত।

তিনি জ্যাককে একটা ঘোড়ার পিঠে বসিয়ে দিতেন। ঘোড়াটা জাবনাপাত্রের ভেতর নাক ডুবিয়ে জই খেত। তখন মিশেল খালু জ্যাককে চকলেটের মতো ক্যারোব খেতে দিতেন। জ্যাক চুষে চুষে মজা করে খেত। খালুর প্রতি জ্যাকের বন্ধুসুলভ একটা টান ছিল। তার ব্যক্তিত্ব জুড়েই ঘোড়ার অস্তিত্ব টের পেত জ্যাক। তার সঙ্গেই তারা পরিবারসহ সবাই ইস্টার সোমবারে মুনাস ওরিলেত্তিস মেলায় অংশ নিতে সিডি ফারুস বন এলাকায় যেত। তারা যে এলাকায় বাস করত সেখান থেকে আলজিয়ার্সের উপশহর পর্যন্ত চলাচলকারী ঘোড়ায় টানা ট্রামের একটা ভাড়া করতেন মিশেল খালু।

জাফরির কাজ করা বড় আকারের ট্রাম, পেছনে পেছন ঠেকিয়ে বসার ব্যবস্থা থাকত ভেতরে। ওই ট্রামের সঙ্গেই ঘোড়া জুড়ে দিয়ে চালানো হতো। সামনের ঘোড়াটা মিশেল খালুর আস্তাবল থেকে বেছে নেওয়া হতো। খুব ভোরে বড় বড় লন্ড্রীর ঝুড়ি, ডিম এবং মাখন সমৃদ্ধ বড় বড় পেস্ট্রি জাতীয় রোল (সেটাকে বলা হতো মুনাস) এবং ছোট মচমচে পেস্ট্রি (এটাকে বলা হতো ওরিলেত্তিস) বোঝাই করে গাড়িতে তোলা হতো। বাড়ির মহিলারা মার্গরিটে খালার ওখানে ওই জিনিসগুলো রওনা হওয়ার দুদিন আগেই তৈরি করে রাখত। একটা ওয়েলক্লথের ওপর লেই বিছিয়ে গোটাটার ওপরে ময়দার গুঁড়ো ছিটিয়ে দেওয়া হতো।

একটু শক্ত হলে বক্সকাঠ দিয়ে কেটে পেস্ট্রির আকার দেওয়া হতো। বাচ্চারা প্লেটে করে নিয়ে গিয়ে ফুটন্ত তেলের একটা দস্তার বেসিনে ফেলে দিত। তারপর ওখান থেকে সারিবদ্ধভাবে পেস্ট্রিগুলো লন্ড্রীর বাক্সে রাখা হতো। বাক্সের ভেতর থেকে চমৎকার ভ্যানিলার গন্ধ ভেসে আসত। সিডি ফারুস পর্যন্ত সারা পথ তারা সেই গন্ধ উপভোগ করতে করতে যেত। রাস্তার ধারে সমুদ্র তীরের সফেনের গন্ধ এসে যোগ হতো পেস্ট্রির গন্ধের সঙ্গে। মনে হতো, ঘোড়াগুলোও প্রাণভরে উপভোগ করছে ওই গন্ধ। লাগাম হাতে মিশেল খালু ঘোড়া চালাতেন।

মাঝে মাঝে তিনি জ্যাকের হাতেও দিতেন লাগাম। ঘুঙুরের জোরালো শব্দে চারটা ঘোড়ার পেছনের পাশ ওঠা নামা দেখে মুগ্ধ হয়ে যেত জ্যাক। ঘোড়ার লেজ ওপরের দিকে উঠে এলে লেজের নিচে গন্ধযুক্ত মল বের হওয়ার এবং মাটিতে পড়ে যাওয়ার আগে আকার ধারণ করতে দেখেও মুগ্ধ হয়ে যেত সে। তখন ঘোড়াগুলোর নালপড়ানো খুর মাটিতে জোরে জোরে আঘাত করতে করতে এগিয়ে যেত। ঘোড়াগুলো পেছনের দিকে মাথা ঝাঁকানি দিলে ঘুঙুরের শব্দ আরো দ্রুত হতো। গন্তব্যে পৌঁছে অন্যরা গাছের নিচে ক্লথ বিছিয়ে ঝুড়িগুলো সাজাতে থাকত।

জ্যাক তখন মিশেল খালুর সঙ্গে ঘোড়াগুলোর গা মুছিয়ে পরিষ্কার করে দিত এবং মুখের সঙ্গে ধূসর বাদামী মোটা কাপড়ের ব্যাগ বেঁধে দিত। ভ্রাতৃসুলভ চোখ বার বার খুলে এবং বন্ধ করে, অস্থির খুরের আঘাতে মাছি তাড়িয়ে ঘোড়াগুলো ব্যাগের ভেতরের জাবনা চিবিয়ে খেতে থাকত। জঙ্গলের জায়গাটাতে লোকে লোকারণ্য: কেউ কেউ পাশাপাশি দাঁড়িয়ে খাচ্ছে। অন্যরা এখানে সেখানে অ্যাকর্ডিয়ন কিংবা গিটারের সুরে নাচছে। পাশেই সমুদ্র গর্জন তুলছে বিশাল শব্দে। সমুদ্রে সাঁতার কাটার মতো গরম তখনও শুরু হয়নি।

তবে অগভীর পানিতে ঢেউয়ের ভেতর দিয়ে খালি পায়ে হেঁটে যাওয়া যেত। কেউ কেউ দুপুরের ঘুমে অচেতন হয়ে পড়ত। সূর্যের আলোর স্পর্শাতীত কোমলতা আকাশের প্রান্তসীমা আরও বিশাল করে তুলত। আকাশের বিশালতা দেখে অদ্ভূত চমৎকার জীবনের জন্য আনন্দ আর কৃতজ্ঞতায় বালক জ্যাকের চোখে জল এসে যেত। কিন্তু মার্গারিটে খালা আর নেই; তার চেহারা কতো সুন্দর ছিল। পোশাকআশাকে ছিমছাম কেতা ছিলো তার। সবাই বলত, কথার মারপ্যাঁচ জানতেন তিনি। তবে তার দোষ দেওয়া যায় না। কিন্তু ডায়াবেটিস তাকে আরাম চেয়ারের সঙ্গে আটকে দিবে; তিনি আরো স্থুল হয়ে যাবেন তা তো কেউ জানত না।

অবহেলিত বাড়িটাতে তিনি এতটাই বিশাল এবং ফাঁপা হয়ে গেলেন যে দেখতে ভয় লাগত। নিঃশ্বাস ফেলতে কষ্ট হতো তার, দেখতেও কুৎসিত হয়ে গেলেন। তার পাশে থাকত তার মেয়েরা এবং খোঁড়া ছেলেটা। তার সেই ছেলেটা জুতা সেলাইয়ের কাজ করত। সবাই গভীরভাবে বেদনাহত হয়ে আশঙ্কায় থাকত, কখন যেন তার দম বের হয়ে যায়। ইনসুলিনে বোঝাই তার শরীর আরো স্থূল হয়ে গেল। সত্যিই একদিন তার দম বন্ধ হয়ে গেল।

চলবে...

এসএ/

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১

Header Ad
Header Ad

নাটকীয়তা শেষে রাতে ফাইনালে মুখোমুখি রিয়াল-বার্সা

ছবি: সংগৃহীত

রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনার মুখোমুখি লড়াই মানেই ফুটবল দুনিয়ায় বাড়তি উত্তেজনা। স্প্যানিশ ফুটবলের এই দুই মহারথীর লড়াই কেবল মাঠের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এতে মিশে আছে স্পেন ও কাতালুনিয়ার জাতিসত্ত্বার লড়াই এবং রক্তাক্ত গৃহযুদ্ধের ইতিহাসও।

এবারের কোপা দেল রে ফাইনালে (শনিবার দিবাগত রাত ২টা, বাংলাদেশ সময়) আবার মুখোমুখি হচ্ছে রিয়াল ও বার্সা। তবে এবারের লড়াইয়ে যোগ হয়েছে ভিন্ন মাত্রা। রেফারিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে রিয়াল মাদ্রিদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে অস্থিরতা। সেভিয়ায় ফাইনালের আগে নির্ধারিত অনুশীলন করেনি রিয়াল, সংবাদ সম্মেলনেও আসেননি কোচ ও খেলোয়াড়রা। এমনকি দুই ক্লাবের কর্মকর্তাদের আনুষ্ঠানিক নৈশভোজেও থাকছেন না রিয়াল প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ। গুঞ্জন উঠেছিল, রিয়াল হয়তো ফাইনাল বয়কটও করতে পারে। তবে শেষ পর্যন্ত ক্লাব কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা খেলবে।

এদিকে, বার্সেলোনার সামনে রয়েছে ট্রেবল জয়ের স্বপ্ন টিকিয়ে রাখার চ্যালেঞ্জ। লা লিগায় শীর্ষে থাকা বার্সা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালেও জায়গা করে নিয়েছে। কোপা দেল রে শিরোপা তাদের ট্রেবল যাত্রার প্রথম ধাপ হতে পারে।

 

ছবি: সংগৃহীত

বার্সার জন্য দুঃসংবাদ, ইনজুরির কারণে দলের নির্ভরযোগ্য স্ট্রাইকার রবার্ট লেভানডফস্কি এই ফাইনালে খেলতে পারবেন না। তার জায়গায় শুরুতে দেখা যেতে পারে ফেরান তোরেসকে। তবে দলের বাকিরা সুস্থ ও প্রস্তুত রয়েছেন। লিগের শেষ ম্যাচে অধিকাংশ মূল খেলোয়াড় বিশ্রামে থাকায় বার্সেলোনা কিছুটা সতেজ ভাবেই নামবে মাঠে।

রিয়াল মাদ্রিদেও রয়েছে ইনজুরি সমস্যা। দলের ফরাসি তারকা কিলিয়ান এমবাপে চোটে পড়েছিলেন আর্সেনালের বিপক্ষে ম্যাচে। শেষ মুহূর্তে তার ফিটনেস দেখে মাঠে নামানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে ডিফেন্ডার ফার্লান্দ মেন্ডি ফাইনালে থাকছেন না, এটা নিশ্চিত।

এখন পর্যন্ত সামগ্রিক এল ক্লাসিকোতে রিয়াল মাদ্রিদ এগিয়ে—১০৫ জয়। বার্সেলোনা জয় পেয়েছে ১০২ ম্যাচে। তবে কোপা দেল রে’র ইতিহাসে এগিয়ে আছে বার্সা। ৩৭ দেখায় বার্সা জিতেছে ১৬ ম্যাচ, রিয়াল ১৩টি। ৮ ম্যাচ ছিল ড্র।

তবে কোপা দেল রে’র ফাইনালে ৭ বার এল ক্লাসিকো অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে রিয়াল জিতেছে ৪ বার এবং বার্সা ৩ বার।

চলতি মৌসুমে দুই দলের দুই দেখায় দুটিতেই বার্সেলোনা জয়ী হয়েছে—লা লিগায় ৪-০ এবং সুপারকোপা দে এস্পানার ফাইনালে ৫-২ ব্যবধানে।

 

স্টেডিয়াম: দে লা কার্তুহা, সেভিল
সময়: বাংলাদেশ সময় শনিবার দিবাগত রাত ২টা

 

Header Ad
Header Ad

মাদকাসক্ত ছেলেকে ত্যাজ্য ঘোষণা করলেন বাবা

ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লার মুরাদনগরে নাঈম সরকার (১৯) নামের এক যুবককে মাদকাসক্তির কারণে ত্যাজ্য ঘোষণা করেছেন তার বাবা মফিজুল ইসলাম। ছেলের মাদকাসক্তি ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের কারণে তিনি এ সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন।

মফিজুল ইসলাম উপজেলার কোম্পানীগঞ্জের নগরপাড় এলাকার বাসিন্দা। তিনি বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) কুমিল্লা নোটারী পাবলিক কার্যালয়ে এক হলফনামার মাধ্যমে ছেলে নাঈমের সঙ্গে পারিবারিক, সামাজিক ও আর্থিক সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করেন।

হলফনামায় মফিজুল উল্লেখ করেন, নাঈম একাদশ শ্রেণির ছাত্র হলেও দীর্ঘদিন ধরে মাদকাসক্ত। সে মদ, গাঁজা, ইয়াবাসহ বিভিন্ন নেশাজাত দ্রব্যে আসক্ত হয়ে পড়েছে। এতে পরিবারে প্রতিনিয়ত অশান্তি সৃষ্টি হচ্ছিল। গভীর রাতে বাড়ি ফেরা, মা-বাবার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা এবং নানা অনৈতিক কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়েছিল নাঈম। পরিবারের মান-মর্যাদা রক্ষার স্বার্থে তার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে মফিজুল ইসলাম বলেন, "সন্তানের এমন বিপথগামী আচরণে আমি অত্যন্ত মর্মাহত। বহু চেষ্টা করেও তাকে সঠিক পথে ফেরাতে ব্যর্থ হয়েছি। অবশেষে পরিবার ও সমাজের সম্মান রক্ষার্থে তার সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করতে বাধ্য হয়েছি।"

Header Ad
Header Ad

গরমে লোডশেডিং নিয়ে সুখবর দিলেন জ্বালানি উপদেষ্টা

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। ছবি: সংগৃহীত

দেশজুড়ে ক্রমাগত গরম বাড়ছে। সামনে তাপমাত্রা আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফলে লোডশেডিং ও ভোগান্তি বেড়ে যাওয়ার শঙ্কায় রয়েছে সাধারণ মানুষ। তবে এ নিয়ে আশার খবর দিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।

তিনি বলেন, "এবারের গরমে লোডশেডিং সহনীয় পর্যায়ে থাকবে। আমরা সীমিত পর্যায়ে তা নিয়ন্ত্রণে রাখার পরিকল্পনা নিয়েছি। আমাদের প্রজেকশনে ১৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য রয়েছে। আশা করছি, অনেকটাই ম্যানেজ করতে পারবো।"

শনিবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনের বিজয় হলে ফোরাম ফর এনার্জি রিপোর্টারস বাংলাদেশ (এফইআরবি) আয়োজিত 'জ্বালানি সংকট উত্তরণের পথ' শীর্ষক সেমিনারে বক্তব্য রাখার সময় তিনি এসব কথা বলেন।

সেমিনারে উপদেষ্টা আরও জানান, লোডশেডিংয়ের ক্ষেত্রে শহর ও গ্রামের মধ্যে সমন্বয় রক্ষা করা হবে। জ্বালানি আমদানি করে বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল রাখতে হবে। এলএনজি আমদানির ক্ষেত্রে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপে (পিপিপি) যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

সরকারের মেয়াদ স্বল্প হওয়ায় কাজের সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করে মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, "জ্বালানির ক্ষেত্রে যেকোনো কাজ সম্পন্ন করতে সময় লাগে। আমরা এমন কিছু হাতে নিচ্ছি না, যা সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে বকেয়া পরিশোধে। বিল পরিশোধ না করলে কোনো দেশ ব্যবসা করবে না।"

তিনি আরও জানান, আগামী দুই মাসের মধ্যে সিস্টেম লস ৫০ শতাংশ কমানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। লাইন লিকেজ ও গ্যাস চুরির বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে বিভিন্ন প্রকল্পে অপ্রয়োজনীয় ব্যয়ও কমিয়ে আনা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "আগামী বছর আর কোনো বকেয়া থাকবে না, শুধুমাত্র কারেন্ট পেমেন্ট দিতে হবে। ভর্তুকি বাড়বে না, বরং কমবে। আমরা যে সংকটের গহ্বরে পড়েছিলাম, সেখান থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছি।"

সাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের বিষয়ে উপদেষ্টা জানান, বিট নিলামে কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে মন্ত্রণালয়ের চূড়ান্ত অনুমোদন শেষে পুনরায় রি-টেন্ডার করা হবে বলেও তিনি আশ্বাস দেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

নাটকীয়তা শেষে রাতে ফাইনালে মুখোমুখি রিয়াল-বার্সা
মাদকাসক্ত ছেলেকে ত্যাজ্য ঘোষণা করলেন বাবা
গরমে লোডশেডিং নিয়ে সুখবর দিলেন জ্বালানি উপদেষ্টা
পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের ক্রিকেটীয় সম্পর্ক ছিন্ন করা উচিত: সৌরভ গাঙ্গুলি
র‍্যাফেল ড্রতে ৯ কোটি টাকা জিতলেন দুই প্রবাসী বাংলাদেশি
৬২ জন পুলিশ সদস্য পাচ্ছেন বিপিএম ও পিপিএম পদক
সিন্ধুতে হয় পানি, না হয় ভারতীয়দের রক্ত বইবে: বিলাওয়াল ভুট্টো
অন্য নারীতে মজেছেন সৃজিত! মিথিলা কোথায়?
৪ মাসে কুরআনের হাফেজ হলেন ১০ বছরের অটিস্টিক শিশু আহমাদ
রাষ্ট্র সংস্কারের যে সুযোগ তৈরি হয়েছে, তা যেন বেহাত না হয়: আলী রীয়াজ
১৪ ব্যাংকে ২৩৮ কোটি টাকা স্থানান্তর, যা বললেন বিসিবি সভাপতি
কাশ্মীর সীমান্তে ফের গোলাগুলি, মুখোমুখি ভারত-পাকিস্তান সেনা
বাইরে থেকে ফিরেই ঠান্ডা গোসল? সাবধান! এই অভ্যাস ডেকে আনতে পারে বিপদ
কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তান-ভারত পাল্টাপাল্টি উত্তেজনা নিয়ে যা বললেন ট্রাম্প
রাঙামাটিতে সিএনজি-পিকআপ সংঘর্ষে নিহত ৫
রেফারির বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছে রিয়াল, ফাইনাল ম্যাচ বয়কটের হুমকি
আইন উপদেষ্টাকে জড়িয়ে ভারতের গণমাধ্যমে মিথ্যা প্রতিবেদন, মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি
নিজ দেশেই বিমান হামলা চালালো ভারত, ‘অসাবধানতা’ বলছে বিমান বাহিনী
গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত আরও ৮৪ ফিলিস্তিনি
আইনি নোটিশ প্রসঙ্গে যা বললেন ডা. তাসনিম জারা