ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব ২৫
দ্য ফার্স্ট ম্যান
খাওয়ার বিরতির সময় কাজ যে পর্যায়ে আছে সেখানেই রেখে খেতে বসে যেত তারা। অন্য কারিগরেরাও এসে জড়ো হতো। শীতের সময় কাঠ কিংবা চাঁচনি থেকে জ্বালানো আগুনের পাশে গোল হয়ে বসত সবাই। গরমের সময় বসত ছাদের নিচে। আবদার নামের একজন আরব শ্রমিক ছিল; তার পরনে থাকত আরব দেশের মানুষদের পাজামা, পাজামার পেছনের অংশ ভাঁজ হয়ে ঝুলতে থাকত। পাজামার পা ছিল তার পায়ের গুলের মাঝখান পর্যন্ত। মাথায় একটা কিনারাবিহীন টুপি এবং ছেঁড়া সোয়েটারের ওপরে পরত একটা পুরনো জ্যাকেট। রসিকতা করে সে জ্যাককে ডাকত, আমার সহকর্মী। তার মামা আবদারের সহকর্মী। আর জ্যাকও তার মামার কাজে হাত লাগাত বলেই এরকম সম্বোধন করত সে।
কারখানার মালিকও ছিল একজন বয়স্ক পিপা তৈরিকারী। তার ওই নামহীন কারখানায় সে আসলে নিজের সহকর্মীদের নিয়ে বড় বড় ফরমায়েশী কাজ করত। আরেকজন ইতালীয় শ্রমিক ছিল; সব সময় তার মন খারাপ থাকত এবং ঘন ঘন সর্দি লাগত তার। ওখানে ছিল সার্বক্ষণিক হাসিখুশি ডনিয়েল। জ্যাককে ডেকে নিয়ে হাসি তামাসা আর খেলায় মেতে উঠত সে। জ্যাক কারখানার চারপাশে ঘুরতে ঘুরতে পালিয়ে বেড়ানোর চেষ্টা করত। তার কালো অ্যাপ্রোন করাতের গুঁড়ায় ঢেকে যেত। গরমের দিনে খোলা পায়ে পুরনো স্যান্ডেল মাটি আর চাঁচনির আবরণে ঢেকে যেত। করাতের গুঁড়ার গন্ধ আর নতুন চাঁচনির গন্ধ শুঁকে আগুনের পাশে এসে আগুনের সুগন্ধি ধোঁয়ার স্বাদ নিতে নিতে জ্যাক জিহ্বা চাটত। কিংবা পিপার তলা সমান করার কোনো যন্ত্র নিয়ে এক খণ্ড কাঠের ওপরে গোঁজ হিসেবে ঢুকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করত বাইস। নিজের কায়িক কৌশলে নিজে আনন্দ পেত এবং অন্য শ্রমিকেরা তার প্রশংসা করত।
খাওয়ার এরকম এক বিরতিতে জ্যাক তলা-ভেজা স্যান্ডেল নিয়ে বোকার মতো একটা বেঞ্চের ওপরে উঠে পড়ে। হঠাৎ করে সে সামনের দিকে পিছলে চলে গেলে পায়ের নিচের বেঞ্চটা পেছনের দিকে উল্টে যায়। শরীরের সবটুকু ভরসহ জ্যাক পড়ে যায় বেঞ্চের ওপরেই। তার ডান হাতটা বেঞ্চের নিচে ঘষা খায়। সঙ্গে সঙ্গে বোধহীন একটা ব্যথা চাগিয়ে ওঠে হাতে। তবু সে হাসতে হাসতে উঠে দাঁড়ায়। কারণ ততক্ষণে অন্য শ্রমিকরাও দৌড়ে এসেছে তার পড়ে যাওয়া দেখে। কিন্তু মুখ থেকে তার হাসি মুছে যাওয়ার আগেই, আর্নেস্ট ছুটে এসে তাকে কোলে তুলে নিয়ে সাধ্যের সর্বোচ্চ গতিতে কারখানার বাইরের দিকে ছুটতে থাকে। কণ্ঠ দিয়ে তার তোতলানো কথা বের হচ্ছে, ডাক্তারের কাছে, ডাক্তারের কাছে! তখন জ্যাক দেখতে পায়, তার ডান হাতের মধ্যমার মাথার দিকটা পিষ্ট হয়ে কালো পিণ্ডের মতো হয়ে গেছে। সেখান থেকে রক্ত বের হচ্ছে। জ্যাকের হৃদপিণ্ড একবার লাফিলে উঠলে সে জ্ঞান হারায়। পাঁচ মিনিটের মধ্যে তারা তাদের বাড়ির বিপরীতে রাস্তার অপর পাশে যে ডাক্তার ছিলেন তার কাছে পৌঁছে যায়। ফ্যাকাশে মুখে আর্নেস্ট জিজ্ঞেস করে, কিছু হয়নি তো ডাক্তার? তেমন কিছু না, না?
ডাক্তার বললেন, পাশের রুমে গিয়ে অপেক্ষা করো। বড় হলে ছেলে খুব সাহসী হবে।
হতেই হবে। তার অদ্ভূতভাবে জোড়া লেগে যাওয়া আঙুল এখনই তার প্রমাণ দিচ্ছে। তবে থেঁতলে যাওয়া অংশ জোড়া দেওয়ার পর ডাক্তার তাকে একটা মিষ্টি পানীয় উপহার দিলেন এবং তার সাহসের পুরস্কারস্বরূপ একটা ব্যাজ দিয়ে দিলেন। তার পরও আর্নেস্ট তাকে কোলে করে রাস্তা পার করে দিতে চাইল এবং তাদের বাড়ির সিঁড়ির কাছে গিয়ে ফুপিয়ে কাঁদতে কাঁদতে জ্যাককে বুকে জড়িয়ে নিল। যতক্ষণ না ব্যথা করে ওঠে জ্যাককে সে বুকের ভেতর ধরেই রইল।
জ্যাক বলল, মামণি, কে যেন দরজায় শব্দ করছে।
আর্নেস্ট এসেছে। যা, দরজা খুলে ওকে নিয়ে আয়। চোর ডাকাতের ভয়ে দরজায় আজকাল তালা দিয়ে রাখি।
জ্যাককে দরজায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে আর্নেস্ট বিস্ময়ে ‘হাউ’ করে একটা শব্দ বের করল। সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে জ্যাককে বুকে জড়িয়ে ধরল আর্নেস্ট। চুল সবগুলোই প্রায় সাদা হয়ে গেছে। তবু তার মুখের চেহরাটা বালকসুলভ রয়ে গেছে। মুখের আদল সুগঠিত আছে। তবে তার পা দুখানা যেন আরো বাঁকা হয়ে গেছে। কাঁধ আগের মতোই চওড়া আছে। ভেতরে হেঁটে আসার সময় মনে হলো চার হাত পা যেন দোলাতে দোলাতে হাঁটছে।
জ্যাক বলল, কেমন আছো, মামা?
খুব বেশি ভালো নয়। পেটের পাশে ব্যথা, বাতের ব্যথা। শরীরের অবস্থা খারাপই বলা যায়। আর জ্যাক? হ্যাঁ, ভালোই, ভালো অবস্থাতেই আছে। ক্যাথরিন করমারি তাকে দেখে খুব খুশি হয়েছে। জ্যাকের নানি মারা যাওয়ার পরে, বাচ্চারাও সবাই দূরে চলে গেলে তারা দুভাইবোন এক সঙ্গে আছে। একজনের সাহায্য ছাড়া আরেকজনের চলে না। আর্নেস্টের দেখাশোনা করার জন্য কেউ একজনকে দরকার ছিল। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে ক্যাথরিন তার স্ত্রীর মতো: খাবার রান্না করে দেওয়া, কাপড় চোপড় ধুয়ে ইস্ত্রি করে দেওয়া, প্রয়োজনের সময় তার দেখাশোনা করা– সবই করেছে ক্যাথরিন। আর ক্যাথরিনের যা দরকার ছিল সেটা টাকা পয়সা নয়; তার ছেলেরা তার আর্থিক প্রয়োজন সবই মিটিয়ে থাকে। তার একজন পুরুষ মানুষের সঙ্গ দরকার ছিল এবং আর্নেস্ট তার মতো করে বোনের দেখাশোনা করে আসছে, যখন থেকে তারা অন্যদের থেকে একা হয়ে গেছে।
হ্যাঁ, তারা স্বামী-স্ত্রীর মতোই আছে; শরীরের প্রয়োজনে নয়; রক্তের টানে। প্রতিবন্ধিত্ব যখন খুব কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে ভাঙা ভাঙা বাক্যের ভেতর থেকে জ্বলে ওঠা প্রায় বোবা সংলাপ বিনিময় করে একজন আরেকজনকে বেঁচে থাকতে সাহায্য করেছে। অন্য যেকোনো দম্পতির চেয়ে তারা একজন আরেকজনের সঙ্গে অনেক বেশি ঘনিষ্ঠ এবং একজন আরেকজনের বিষয়ে অনেক বেশি অবগত।
আর্নেস্ট বলল, হ্যাঁ, হ্যাঁ; সব সময় খালি জ্যাক জ্যাক বলে তোর মা।
ঠিক আছে। আমি তো এসে গেছি, জ্যাক বলল। ঠিকই, জ্যাক এসে গেছে। আগের মতোই মা এবং আর্নেস্ট মামার সঙ্গে আছে জ্যাক। জ্যাক তাদের সঙ্গে কখনও কথা বলতে পারেনি। তাদের প্রতি তার ভালোবাসার প্রবাহ কখনও থেমে যায়নি। তাদের প্রতি তার সবচেয়ে বেশি ভালোবাসা। তাদেরকে ভালোবাসতে পারার কারণেই তাদের কথা সব সময় জ্যাকের মনের মধ্যে জেগে ছিল। কারণ যাদের প্রতি জ্যাকের ভালোবাসা দেখানো উচিত ছিল তাদের অনেককেই ভালোবাসতে পারেনি সে।
ডানিয়েল কেমন আছে?
ঠিক আছে, ভালো আছে। আমার মতোই বুড়ো হয়ে গেছে। ওর ভাই পিয়েরোত জেলে।
কিসের জন্য?
ও বলে ইউনিয়নের কারণে। আমি বলি, আমি মনে করি আরবদের সাথে তার যোগাযোগ আছে। বলেই আর্নেস্ট চিন্তিত হয়ে পড়ে। তারপর বলে, এই যে ডাকাতদের কথা, এরকম কি ঠিক আছে?
না, অন্য আরবেরা। হ্যাঁ, ডাকাতেরা নয়।
ঠিক ঠিক, আমি তোর মাকে বলেছি বসেরা সব কড়া। তাদের আচরণ চড়া: কিন্তু ডাকাতদেরও বেশি বেশি।
সেরকমই, জ্যাক বলল। তবে পিয়েরোতের জন্য আমাদেরও কিছু করা উচিত।
ভালো, আমি ডানিয়েলকে জানাব।
ডোনাটের খবর কী? (ডোনাট গ্যাসের কারখানায় কাজ করত আর অবসরে মুষ্টিযুদ্ধে অংশ নিত বাড়তি উপার্জনের জন্য)।
মারা গেছে। ক্যান্সার হয়েছিল। আমরা সবাই বুড়ো হয়ে গেছি।
হ্যাঁ, ডোনাট মারা গেছে। তার মায়ের বোন মার্গারিটে খালা মারা গেছে। রবিবারের বিকেলে তাকে নানি জোর করে টেনে নিয়ে যেত খালার বাসায়। জ্যাকের প্রচণ্ড একঘেয়ে লাগত। আধা অন্ধকার খাবার ঘরের টেবিলে কালো কফি সামনে নিয়ে বসা দুই মহিলার প্যাঁচালে মিশেল খালুও বিরক্ত হতেন। জ্যাককে ওই অবস্থা থেকে রক্ষা করতেন মিশেল খালু তার আস্তাবলে নিয়ে গিয়ে।
বিকেলের আলোয় তখনও রাস্তা বেশ উষ্ণ। ছায়া ছায়া আলোয় জ্যাক প্রথমত ঘোড়ার লোমের গন্ধ, খড়ের গন্ধ এবং ঘোড়ার বিষ্ঠার জৈব সারের গন্ধ পেত। কাঠের জাবনাপাত্রের সঙ্গে ঘোড়ার মুখের শিকলের বাড়ি লাগার শব্দ শুনতে পেত। ঘোড়াগুলো লম্বা ঠুলির আড়াল থেকে তার দিকে মুখ ফিরিয়ে চাইত। দীর্ঘদেহী এবং লম্বা গোঁফের মিশেল খালুর গা থেকেও খড়ের গন্ধ আসত।
তিনি জ্যাককে একটা ঘোড়ার পিঠে বসিয়ে দিতেন। ঘোড়াটা জাবনাপাত্রের ভেতর নাক ডুবিয়ে জই খেত। তখন মিশেল খালু জ্যাককে চকলেটের মতো ক্যারোব খেতে দিতেন। জ্যাক চুষে চুষে মজা করে খেত। খালুর প্রতি জ্যাকের বন্ধুসুলভ একটা টান ছিল। তার ব্যক্তিত্ব জুড়েই ঘোড়ার অস্তিত্ব টের পেত জ্যাক। তার সঙ্গেই তারা পরিবারসহ সবাই ইস্টার সোমবারে মুনাস ওরিলেত্তিস মেলায় অংশ নিতে সিডি ফারুস বন এলাকায় যেত। তারা যে এলাকায় বাস করত সেখান থেকে আলজিয়ার্সের উপশহর পর্যন্ত চলাচলকারী ঘোড়ায় টানা ট্রামের একটা ভাড়া করতেন মিশেল খালু।
জাফরির কাজ করা বড় আকারের ট্রাম, পেছনে পেছন ঠেকিয়ে বসার ব্যবস্থা থাকত ভেতরে। ওই ট্রামের সঙ্গেই ঘোড়া জুড়ে দিয়ে চালানো হতো। সামনের ঘোড়াটা মিশেল খালুর আস্তাবল থেকে বেছে নেওয়া হতো। খুব ভোরে বড় বড় লন্ড্রীর ঝুড়ি, ডিম এবং মাখন সমৃদ্ধ বড় বড় পেস্ট্রি জাতীয় রোল (সেটাকে বলা হতো মুনাস) এবং ছোট মচমচে পেস্ট্রি (এটাকে বলা হতো ওরিলেত্তিস) বোঝাই করে গাড়িতে তোলা হতো। বাড়ির মহিলারা মার্গরিটে খালার ওখানে ওই জিনিসগুলো রওনা হওয়ার দুদিন আগেই তৈরি করে রাখত। একটা ওয়েলক্লথের ওপর লেই বিছিয়ে গোটাটার ওপরে ময়দার গুঁড়ো ছিটিয়ে দেওয়া হতো।
একটু শক্ত হলে বক্সকাঠ দিয়ে কেটে পেস্ট্রির আকার দেওয়া হতো। বাচ্চারা প্লেটে করে নিয়ে গিয়ে ফুটন্ত তেলের একটা দস্তার বেসিনে ফেলে দিত। তারপর ওখান থেকে সারিবদ্ধভাবে পেস্ট্রিগুলো লন্ড্রীর বাক্সে রাখা হতো। বাক্সের ভেতর থেকে চমৎকার ভ্যানিলার গন্ধ ভেসে আসত। সিডি ফারুস পর্যন্ত সারা পথ তারা সেই গন্ধ উপভোগ করতে করতে যেত। রাস্তার ধারে সমুদ্র তীরের সফেনের গন্ধ এসে যোগ হতো পেস্ট্রির গন্ধের সঙ্গে। মনে হতো, ঘোড়াগুলোও প্রাণভরে উপভোগ করছে ওই গন্ধ। লাগাম হাতে মিশেল খালু ঘোড়া চালাতেন।
মাঝে মাঝে তিনি জ্যাকের হাতেও দিতেন লাগাম। ঘুঙুরের জোরালো শব্দে চারটা ঘোড়ার পেছনের পাশ ওঠা নামা দেখে মুগ্ধ হয়ে যেত জ্যাক। ঘোড়ার লেজ ওপরের দিকে উঠে এলে লেজের নিচে গন্ধযুক্ত মল বের হওয়ার এবং মাটিতে পড়ে যাওয়ার আগে আকার ধারণ করতে দেখেও মুগ্ধ হয়ে যেত সে। তখন ঘোড়াগুলোর নালপড়ানো খুর মাটিতে জোরে জোরে আঘাত করতে করতে এগিয়ে যেত। ঘোড়াগুলো পেছনের দিকে মাথা ঝাঁকানি দিলে ঘুঙুরের শব্দ আরো দ্রুত হতো। গন্তব্যে পৌঁছে অন্যরা গাছের নিচে ক্লথ বিছিয়ে ঝুড়িগুলো সাজাতে থাকত।
জ্যাক তখন মিশেল খালুর সঙ্গে ঘোড়াগুলোর গা মুছিয়ে পরিষ্কার করে দিত এবং মুখের সঙ্গে ধূসর বাদামী মোটা কাপড়ের ব্যাগ বেঁধে দিত। ভ্রাতৃসুলভ চোখ বার বার খুলে এবং বন্ধ করে, অস্থির খুরের আঘাতে মাছি তাড়িয়ে ঘোড়াগুলো ব্যাগের ভেতরের জাবনা চিবিয়ে খেতে থাকত। জঙ্গলের জায়গাটাতে লোকে লোকারণ্য: কেউ কেউ পাশাপাশি দাঁড়িয়ে খাচ্ছে। অন্যরা এখানে সেখানে অ্যাকর্ডিয়ন কিংবা গিটারের সুরে নাচছে। পাশেই সমুদ্র গর্জন তুলছে বিশাল শব্দে। সমুদ্রে সাঁতার কাটার মতো গরম তখনও শুরু হয়নি।
তবে অগভীর পানিতে ঢেউয়ের ভেতর দিয়ে খালি পায়ে হেঁটে যাওয়া যেত। কেউ কেউ দুপুরের ঘুমে অচেতন হয়ে পড়ত। সূর্যের আলোর স্পর্শাতীত কোমলতা আকাশের প্রান্তসীমা আরও বিশাল করে তুলত। আকাশের বিশালতা দেখে অদ্ভূত চমৎকার জীবনের জন্য আনন্দ আর কৃতজ্ঞতায় বালক জ্যাকের চোখে জল এসে যেত। কিন্তু মার্গারিটে খালা আর নেই; তার চেহারা কতো সুন্দর ছিল। পোশাকআশাকে ছিমছাম কেতা ছিলো তার। সবাই বলত, কথার মারপ্যাঁচ জানতেন তিনি। তবে তার দোষ দেওয়া যায় না। কিন্তু ডায়াবেটিস তাকে আরাম চেয়ারের সঙ্গে আটকে দিবে; তিনি আরো স্থুল হয়ে যাবেন তা তো কেউ জানত না।
অবহেলিত বাড়িটাতে তিনি এতটাই বিশাল এবং ফাঁপা হয়ে গেলেন যে দেখতে ভয় লাগত। নিঃশ্বাস ফেলতে কষ্ট হতো তার, দেখতেও কুৎসিত হয়ে গেলেন। তার পাশে থাকত তার মেয়েরা এবং খোঁড়া ছেলেটা। তার সেই ছেলেটা জুতা সেলাইয়ের কাজ করত। সবাই গভীরভাবে বেদনাহত হয়ে আশঙ্কায় থাকত, কখন যেন তার দম বের হয়ে যায়। ইনসুলিনে বোঝাই তার শরীর আরো স্থূল হয়ে গেল। সত্যিই একদিন তার দম বন্ধ হয়ে গেল।
চলবে...
এসএ/