শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব ২৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান

খাওয়ার বিরতির সময় কাজ যে পর্যায়ে আছে সেখানেই রেখে খেতে বসে যেত তারা। অন্য কারিগরেরাও এসে জড়ো হতো। শীতের সময় কাঠ কিংবা চাঁচনি থেকে জ্বালানো আগুনের পাশে গোল হয়ে বসত সবাই। গরমের সময় বসত ছাদের নিচে। আবদার নামের একজন আরব শ্রমিক ছিল; তার পরনে থাকত আরব দেশের মানুষদের পাজামা, পাজামার পেছনের অংশ ভাঁজ হয়ে ঝুলতে থাকত। পাজামার পা ছিল তার পায়ের গুলের মাঝখান পর্যন্ত। মাথায় একটা কিনারাবিহীন টুপি এবং ছেঁড়া সোয়েটারের ওপরে পরত একটা পুরনো জ্যাকেট। রসিকতা করে সে জ্যাককে ডাকত, আমার সহকর্মী। তার মামা আবদারের সহকর্মী। আর জ্যাকও তার মামার কাজে হাত লাগাত বলেই এরকম সম্বোধন করত সে।

কারখানার মালিকও ছিল একজন বয়স্ক পিপা তৈরিকারী। তার ওই নামহীন কারখানায় সে আসলে নিজের সহকর্মীদের নিয়ে বড় বড় ফরমায়েশী কাজ করত। আরেকজন ইতালীয় শ্রমিক ছিল; সব সময় তার মন খারাপ থাকত এবং ঘন ঘন সর্দি লাগত তার। ওখানে ছিল সার্বক্ষণিক হাসিখুশি ডনিয়েল। জ্যাককে ডেকে নিয়ে হাসি তামাসা আর খেলায় মেতে উঠত সে। জ্যাক কারখানার চারপাশে ঘুরতে ঘুরতে পালিয়ে বেড়ানোর চেষ্টা করত। তার কালো অ্যাপ্রোন করাতের গুঁড়ায় ঢেকে যেত। গরমের দিনে খোলা পায়ে পুরনো স্যান্ডেল মাটি আর চাঁচনির আবরণে ঢেকে যেত। করাতের গুঁড়ার গন্ধ আর নতুন চাঁচনির গন্ধ শুঁকে আগুনের পাশে এসে আগুনের সুগন্ধি ধোঁয়ার স্বাদ নিতে নিতে জ্যাক জিহ্বা চাটত। কিংবা পিপার তলা সমান করার কোনো যন্ত্র নিয়ে এক খণ্ড কাঠের ওপরে গোঁজ হিসেবে ঢুকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করত বাইস। নিজের কায়িক কৌশলে নিজে আনন্দ পেত এবং অন্য শ্রমিকেরা তার প্রশংসা করত।

খাওয়ার এরকম এক বিরতিতে জ্যাক তলা-ভেজা স্যান্ডেল নিয়ে বোকার মতো একটা বেঞ্চের ওপরে উঠে পড়ে। হঠাৎ করে সে সামনের দিকে পিছলে চলে গেলে পায়ের নিচের বেঞ্চটা পেছনের দিকে উল্টে যায়। শরীরের সবটুকু ভরসহ জ্যাক পড়ে যায় বেঞ্চের ওপরেই। তার ডান হাতটা বেঞ্চের নিচে ঘষা খায়। সঙ্গে সঙ্গে বোধহীন একটা ব্যথা চাগিয়ে ওঠে হাতে। তবু সে হাসতে হাসতে উঠে দাঁড়ায়। কারণ ততক্ষণে অন্য শ্রমিকরাও দৌড়ে এসেছে তার পড়ে যাওয়া দেখে। কিন্তু মুখ থেকে তার হাসি মুছে যাওয়ার আগেই, আর্নেস্ট ছুটে এসে তাকে কোলে তুলে নিয়ে সাধ্যের সর্বোচ্চ গতিতে কারখানার বাইরের দিকে ছুটতে থাকে। কণ্ঠ দিয়ে তার তোতলানো কথা বের হচ্ছে, ডাক্তারের কাছে, ডাক্তারের কাছে! তখন জ্যাক দেখতে পায়, তার ডান হাতের মধ্যমার মাথার দিকটা পিষ্ট হয়ে কালো পিণ্ডের মতো হয়ে গেছে। সেখান থেকে রক্ত বের হচ্ছে। জ্যাকের হৃদপিণ্ড একবার লাফিলে উঠলে সে জ্ঞান হারায়। পাঁচ মিনিটের মধ্যে তারা তাদের বাড়ির বিপরীতে রাস্তার অপর পাশে যে ডাক্তার ছিলেন তার কাছে পৌঁছে যায়। ফ্যাকাশে মুখে আর্নেস্ট জিজ্ঞেস করে, কিছু হয়নি তো ডাক্তার? তেমন কিছু না, না?

ডাক্তার বললেন, পাশের রুমে গিয়ে অপেক্ষা করো। বড় হলে ছেলে খুব সাহসী হবে।

হতেই হবে। তার অদ্ভূতভাবে জোড়া লেগে যাওয়া আঙুল এখনই তার প্রমাণ দিচ্ছে। তবে থেঁতলে যাওয়া অংশ জোড়া দেওয়ার পর ডাক্তার তাকে একটা মিষ্টি পানীয় উপহার দিলেন এবং তার সাহসের পুরস্কারস্বরূপ একটা ব্যাজ দিয়ে দিলেন। তার পরও আর্নেস্ট তাকে কোলে করে রাস্তা পার করে দিতে চাইল এবং তাদের বাড়ির সিঁড়ির কাছে গিয়ে ফুপিয়ে কাঁদতে কাঁদতে জ্যাককে বুকে জড়িয়ে নিল। যতক্ষণ না ব্যথা করে ওঠে জ্যাককে সে বুকের ভেতর ধরেই রইল।

জ্যাক বলল, মামণি, কে যেন দরজায় শব্দ করছে।

আর্নেস্ট এসেছে। যা, দরজা খুলে ওকে নিয়ে আয়। চোর ডাকাতের ভয়ে দরজায় আজকাল তালা দিয়ে রাখি।

জ্যাককে দরজায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে আর্নেস্ট বিস্ময়ে ‘হাউ’ করে একটা শব্দ বের করল। সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে জ্যাককে বুকে জড়িয়ে ধরল আর্নেস্ট। চুল সবগুলোই প্রায় সাদা হয়ে গেছে। তবু তার মুখের চেহরাটা বালকসুলভ রয়ে গেছে। মুখের আদল সুগঠিত আছে। তবে তার পা দুখানা যেন আরো বাঁকা হয়ে গেছে। কাঁধ আগের মতোই চওড়া আছে। ভেতরে হেঁটে আসার সময় মনে হলো চার হাত পা যেন দোলাতে দোলাতে হাঁটছে।

জ্যাক বলল, কেমন আছো, মামা?

খুব বেশি ভালো নয়। পেটের পাশে ব্যথা, বাতের ব্যথা। শরীরের অবস্থা খারাপই বলা যায়। আর জ্যাক? হ্যাঁ, ভালোই, ভালো অবস্থাতেই আছে। ক্যাথরিন করমারি তাকে দেখে খুব খুশি হয়েছে। জ্যাকের নানি মারা যাওয়ার পরে, বাচ্চারাও সবাই দূরে চলে গেলে তারা দুভাইবোন এক সঙ্গে আছে। একজনের সাহায্য ছাড়া আরেকজনের চলে না। আর্নেস্টের দেখাশোনা করার জন্য কেউ একজনকে দরকার ছিল। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে ক্যাথরিন তার স্ত্রীর মতো: খাবার রান্না করে দেওয়া, কাপড় চোপড় ধুয়ে ইস্ত্রি করে দেওয়া, প্রয়োজনের সময় তার দেখাশোনা করা– সবই করেছে ক্যাথরিন। আর ক্যাথরিনের যা দরকার ছিল সেটা টাকা পয়সা নয়; তার ছেলেরা তার আর্থিক প্রয়োজন সবই মিটিয়ে থাকে। তার একজন পুরুষ মানুষের সঙ্গ দরকার ছিল এবং আর্নেস্ট তার মতো করে বোনের দেখাশোনা করে আসছে, যখন থেকে তারা অন্যদের থেকে একা হয়ে গেছে।

হ্যাঁ, তারা স্বামী-স্ত্রীর মতোই আছে; শরীরের প্রয়োজনে নয়; রক্তের টানে। প্রতিবন্ধিত্ব যখন খুব কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে ভাঙা ভাঙা বাক্যের ভেতর থেকে জ্বলে ওঠা প্রায় বোবা সংলাপ বিনিময় করে একজন আরেকজনকে বেঁচে থাকতে সাহায্য করেছে। অন্য যেকোনো দম্পতির চেয়ে তারা একজন আরেকজনের সঙ্গে অনেক বেশি ঘনিষ্ঠ এবং একজন আরেকজনের বিষয়ে অনেক বেশি অবগত।

আর্নেস্ট বলল, হ্যাঁ, হ্যাঁ; সব সময় খালি জ্যাক জ্যাক বলে তোর মা।

ঠিক আছে। আমি তো এসে গেছি, জ্যাক বলল। ঠিকই, জ্যাক এসে গেছে। আগের মতোই মা এবং আর্নেস্ট মামার সঙ্গে আছে জ্যাক। জ্যাক তাদের সঙ্গে কখনও কথা বলতে পারেনি। তাদের প্রতি তার ভালোবাসার প্রবাহ কখনও থেমে যায়নি। তাদের প্রতি তার সবচেয়ে বেশি ভালোবাসা। তাদেরকে ভালোবাসতে পারার কারণেই তাদের কথা সব সময় জ্যাকের মনের মধ্যে জেগে ছিল। কারণ যাদের প্রতি জ্যাকের ভালোবাসা দেখানো উচিত ছিল তাদের অনেককেই ভালোবাসতে পারেনি সে।

ডানিয়েল কেমন আছে?

ঠিক আছে, ভালো আছে। আমার মতোই বুড়ো হয়ে গেছে। ওর ভাই পিয়েরোত জেলে।

কিসের জন্য?

ও বলে ইউনিয়নের কারণে। আমি বলি, আমি মনে করি আরবদের সাথে তার যোগাযোগ আছে। বলেই আর্নেস্ট চিন্তিত হয়ে পড়ে। তারপর বলে, এই যে ডাকাতদের কথা, এরকম কি ঠিক আছে?

না, অন্য আরবেরা। হ্যাঁ, ডাকাতেরা নয়।

ঠিক ঠিক, আমি তোর মাকে বলেছি বসেরা সব কড়া। তাদের আচরণ চড়া: কিন্তু ডাকাতদেরও বেশি বেশি।

সেরকমই, জ্যাক বলল। তবে পিয়েরোতের জন্য আমাদেরও কিছু করা উচিত।

ভালো, আমি ডানিয়েলকে জানাব।

ডোনাটের খবর কী? (ডোনাট গ্যাসের কারখানায় কাজ করত আর অবসরে মুষ্টিযুদ্ধে অংশ নিত বাড়তি উপার্জনের জন্য)।

মারা গেছে। ক্যান্সার হয়েছিল। আমরা সবাই বুড়ো হয়ে গেছি।

হ্যাঁ, ডোনাট মারা গেছে। তার মায়ের বোন মার্গারিটে খালা মারা গেছে। রবিবারের বিকেলে তাকে নানি জোর করে টেনে নিয়ে যেত খালার বাসায়। জ্যাকের প্রচণ্ড একঘেয়ে লাগত। আধা অন্ধকার খাবার ঘরের টেবিলে কালো কফি সামনে নিয়ে বসা দুই মহিলার প্যাঁচালে মিশেল খালুও বিরক্ত হতেন। জ্যাককে ওই অবস্থা থেকে রক্ষা করতেন মিশেল খালু তার আস্তাবলে নিয়ে গিয়ে।

বিকেলের আলোয় তখনও রাস্তা বেশ উষ্ণ। ছায়া ছায়া আলোয় জ্যাক প্রথমত ঘোড়ার লোমের গন্ধ, খড়ের গন্ধ এবং ঘোড়ার বিষ্ঠার জৈব সারের গন্ধ পেত। কাঠের জাবনাপাত্রের সঙ্গে ঘোড়ার মুখের শিকলের বাড়ি লাগার শব্দ শুনতে পেত। ঘোড়াগুলো লম্বা ঠুলির আড়াল থেকে তার দিকে মুখ ফিরিয়ে চাইত। দীর্ঘদেহী এবং লম্বা গোঁফের মিশেল খালুর গা থেকেও খড়ের গন্ধ আসত।

তিনি জ্যাককে একটা ঘোড়ার পিঠে বসিয়ে দিতেন। ঘোড়াটা জাবনাপাত্রের ভেতর নাক ডুবিয়ে জই খেত। তখন মিশেল খালু জ্যাককে চকলেটের মতো ক্যারোব খেতে দিতেন। জ্যাক চুষে চুষে মজা করে খেত। খালুর প্রতি জ্যাকের বন্ধুসুলভ একটা টান ছিল। তার ব্যক্তিত্ব জুড়েই ঘোড়ার অস্তিত্ব টের পেত জ্যাক। তার সঙ্গেই তারা পরিবারসহ সবাই ইস্টার সোমবারে মুনাস ওরিলেত্তিস মেলায় অংশ নিতে সিডি ফারুস বন এলাকায় যেত। তারা যে এলাকায় বাস করত সেখান থেকে আলজিয়ার্সের উপশহর পর্যন্ত চলাচলকারী ঘোড়ায় টানা ট্রামের একটা ভাড়া করতেন মিশেল খালু।

জাফরির কাজ করা বড় আকারের ট্রাম, পেছনে পেছন ঠেকিয়ে বসার ব্যবস্থা থাকত ভেতরে। ওই ট্রামের সঙ্গেই ঘোড়া জুড়ে দিয়ে চালানো হতো। সামনের ঘোড়াটা মিশেল খালুর আস্তাবল থেকে বেছে নেওয়া হতো। খুব ভোরে বড় বড় লন্ড্রীর ঝুড়ি, ডিম এবং মাখন সমৃদ্ধ বড় বড় পেস্ট্রি জাতীয় রোল (সেটাকে বলা হতো মুনাস) এবং ছোট মচমচে পেস্ট্রি (এটাকে বলা হতো ওরিলেত্তিস) বোঝাই করে গাড়িতে তোলা হতো। বাড়ির মহিলারা মার্গরিটে খালার ওখানে ওই জিনিসগুলো রওনা হওয়ার দুদিন আগেই তৈরি করে রাখত। একটা ওয়েলক্লথের ওপর লেই বিছিয়ে গোটাটার ওপরে ময়দার গুঁড়ো ছিটিয়ে দেওয়া হতো।

একটু শক্ত হলে বক্সকাঠ দিয়ে কেটে পেস্ট্রির আকার দেওয়া হতো। বাচ্চারা প্লেটে করে নিয়ে গিয়ে ফুটন্ত তেলের একটা দস্তার বেসিনে ফেলে দিত। তারপর ওখান থেকে সারিবদ্ধভাবে পেস্ট্রিগুলো লন্ড্রীর বাক্সে রাখা হতো। বাক্সের ভেতর থেকে চমৎকার ভ্যানিলার গন্ধ ভেসে আসত। সিডি ফারুস পর্যন্ত সারা পথ তারা সেই গন্ধ উপভোগ করতে করতে যেত। রাস্তার ধারে সমুদ্র তীরের সফেনের গন্ধ এসে যোগ হতো পেস্ট্রির গন্ধের সঙ্গে। মনে হতো, ঘোড়াগুলোও প্রাণভরে উপভোগ করছে ওই গন্ধ। লাগাম হাতে মিশেল খালু ঘোড়া চালাতেন।

মাঝে মাঝে তিনি জ্যাকের হাতেও দিতেন লাগাম। ঘুঙুরের জোরালো শব্দে চারটা ঘোড়ার পেছনের পাশ ওঠা নামা দেখে মুগ্ধ হয়ে যেত জ্যাক। ঘোড়ার লেজ ওপরের দিকে উঠে এলে লেজের নিচে গন্ধযুক্ত মল বের হওয়ার এবং মাটিতে পড়ে যাওয়ার আগে আকার ধারণ করতে দেখেও মুগ্ধ হয়ে যেত সে। তখন ঘোড়াগুলোর নালপড়ানো খুর মাটিতে জোরে জোরে আঘাত করতে করতে এগিয়ে যেত। ঘোড়াগুলো পেছনের দিকে মাথা ঝাঁকানি দিলে ঘুঙুরের শব্দ আরো দ্রুত হতো। গন্তব্যে পৌঁছে অন্যরা গাছের নিচে ক্লথ বিছিয়ে ঝুড়িগুলো সাজাতে থাকত।

জ্যাক তখন মিশেল খালুর সঙ্গে ঘোড়াগুলোর গা মুছিয়ে পরিষ্কার করে দিত এবং মুখের সঙ্গে ধূসর বাদামী মোটা কাপড়ের ব্যাগ বেঁধে দিত। ভ্রাতৃসুলভ চোখ বার বার খুলে এবং বন্ধ করে, অস্থির খুরের আঘাতে মাছি তাড়িয়ে ঘোড়াগুলো ব্যাগের ভেতরের জাবনা চিবিয়ে খেতে থাকত। জঙ্গলের জায়গাটাতে লোকে লোকারণ্য: কেউ কেউ পাশাপাশি দাঁড়িয়ে খাচ্ছে। অন্যরা এখানে সেখানে অ্যাকর্ডিয়ন কিংবা গিটারের সুরে নাচছে। পাশেই সমুদ্র গর্জন তুলছে বিশাল শব্দে। সমুদ্রে সাঁতার কাটার মতো গরম তখনও শুরু হয়নি।

তবে অগভীর পানিতে ঢেউয়ের ভেতর দিয়ে খালি পায়ে হেঁটে যাওয়া যেত। কেউ কেউ দুপুরের ঘুমে অচেতন হয়ে পড়ত। সূর্যের আলোর স্পর্শাতীত কোমলতা আকাশের প্রান্তসীমা আরও বিশাল করে তুলত। আকাশের বিশালতা দেখে অদ্ভূত চমৎকার জীবনের জন্য আনন্দ আর কৃতজ্ঞতায় বালক জ্যাকের চোখে জল এসে যেত। কিন্তু মার্গারিটে খালা আর নেই; তার চেহারা কতো সুন্দর ছিল। পোশাকআশাকে ছিমছাম কেতা ছিলো তার। সবাই বলত, কথার মারপ্যাঁচ জানতেন তিনি। তবে তার দোষ দেওয়া যায় না। কিন্তু ডায়াবেটিস তাকে আরাম চেয়ারের সঙ্গে আটকে দিবে; তিনি আরো স্থুল হয়ে যাবেন তা তো কেউ জানত না।

অবহেলিত বাড়িটাতে তিনি এতটাই বিশাল এবং ফাঁপা হয়ে গেলেন যে দেখতে ভয় লাগত। নিঃশ্বাস ফেলতে কষ্ট হতো তার, দেখতেও কুৎসিত হয়ে গেলেন। তার পাশে থাকত তার মেয়েরা এবং খোঁড়া ছেলেটা। তার সেই ছেলেটা জুতা সেলাইয়ের কাজ করত। সবাই গভীরভাবে বেদনাহত হয়ে আশঙ্কায় থাকত, কখন যেন তার দম বের হয়ে যায়। ইনসুলিনে বোঝাই তার শরীর আরো স্থূল হয়ে গেল। সত্যিই একদিন তার দম বন্ধ হয়ে গেল।

চলবে...

এসএ/

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১

Header Ad

খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ

ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে কুশল বিনিময় করেছেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে তাদের এ কুশল বিনিময় হয়।

সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়া পৌঁছালে উপস্থিত সবাই তাকে স্বাগত জানান। অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৩ সমন্বয়ক ও সরকারের উপদেষ্টা তার পাশে এসে দাঁড়ান এবং শারীরিক খোঁজখবর নেন। এ সময় খালেদা জিয়া তাদের অভিনন্দন জানান এবং দেশকে এগিয়ে নিতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার পরামর্শ দেন।

এ সময় এই ৩ উপদেষ্টা বিএনপি চেয়ারপারসনের কাছে দোয়া চান এবং সরকারের সংস্কার কাজে তার সর্বাত্মক সহযোগিতা চান।

এদিকে সেনাকুঞ্জে গেলে খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়া এখানে এসেছেন। একযুগ তিনি আসার সুযোগ পাননি। আমরা গর্বিত এই সুযোগ দিতে পেরে। দীর্ঘদিনের অসুস্থতা সত্ত্বেও বিশেষ দিনে সবার সঙ্গে শরিক হওয়ার জন্য আপনাকে আবারও ধন্যবাদ। আপনার আশু রোগমুক্তি কামনা করছি।

Header Ad

দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম

ছবি: সংগৃহীত

আবারও স্বর্ণের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। এবার ভরিতে ১ হাজার ৯৯৪ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা আজকেও ছিল এক লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) থেকেই নতুন এ দাম কার্যকর হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বেড়েছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি ভরি ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩৩ হাজার ৯৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ৮৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯৩ হাজার ৬৭৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস আরও জানায়, স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গয়নার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।

স্বর্ণের দাম কমানো হলেও দেশের বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। দেশে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫৭৮ টাকায়। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ৪৪৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ১১১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫৮৬ টাকায়।

এর আগে, সবশেষ গত ১৯ নভেম্বর দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম সমন্বয় করেছিল বাজুস। সে সময় টানা চার দফা কমার পর ভরিতে ২ হাজার ৯৪০ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা নির্ধারণ করেছিল সংগঠনটি।

এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩১ হাজার ১৯৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১২ হাজার ৪৫৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯২ হাজার ২৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা কার্যকর হয়েছে গত ২০ নভেম্বর থেকে।

এ নিয়ে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত দেশের বাজারে ৫১ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছে। যেখানে ৩০ বার দাম বাড়ানো হয়েছে, আর কমানো হয়েছে ২১ বার।

Header Ad

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

ছবি: সংগৃহীত

দেশের জনপ্রিয় নির্মাতা আশফাক নিপুন। কাজের পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমেও বেশ সরব তিনি। কথা বলেন নানা ইস্যু নিয়ে। সেই ধারাবাহিকতায় সরকার পতনের পর অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনেও বিভিন্ন সময় নিজের আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যেও বিভিন্ন বার্তা দিয়েছেন। এবার এমনি একটি বার্তায় দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনগনের আস্থার বিষয়ে আক্ষেপ জানালেন এই নির্মাতা।

বুধবার (২০ নভেম্বর) আশফাক নিপুন তার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সর্বস্তরের ছাত্র এবং সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল, বাসায় বসে বসে দোয়া করেছিল, যার যা সামর্থ্য দিয়ে সহায়তা করেছিল। কারণ, তারা দেখেছিল লড়াইটা আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসক বনাম সাধারণ ছাত্র-জনতার। এটাও অস্বীকার করার কোনো উপায় নাই যে এই আন্দোলন বেগবান করতে বিরোধী সকল দলের কর্মীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাদের সংগ্রামও গত দেড় দশকের। কিন্তু এটা যদি শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার লড়াই হতো তাহলে সাধারণ মানুষ এই লড়াই থেকে দূরে থাকত। সেই প্রমাণ বিগত ১৫ বছরে আছে।

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ এখনো দেশের কোনো রাজনৈতিক দলকেই পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারে না। এটাই বাস্তবতা। এই বাস্তবতা মেনে সকল রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত কীভাবে সাধারণ জনগণের ভেতর নিজের দলের প্রতি আস্থা তৈরি করা যায় সেই বিষয়ে নিরলস কাজ করা। এই আস্থা ক্ষমতায় গিয়ে অর্জন করা সম্ভব না। কারণ, সাধারণ মানুষ আজীবন এস্টাবলিশমেন্টের বিপক্ষে। এই আস্থা অর্জন করতে হয় ক্ষমতা বলয়ের বাইরে থেকেই।

নিপুন আরও লিখেন, অরাজনৈতিক সরকার দিয়ে দীর্ঘদিন দেশ চালানো যেমন কাজের কথা না ঠিক তেমনি রাজনৈতিক সরকার হতে চাওয়া সকল রাজনৈতিক দলগুলোর বোঝা উচিত মুক্তিযুদ্ধের পরে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে সকল প্রকার পূর্বানুমান (যেমন- বর্ষাকালে আন্দোলন হয় না, নির্বাচনের আগেই কেবল জোরেশোরে আন্দোলন হয়, ঘোষণা দিয়ে বিরোধী সকল পক্ষ আন্দোলনে শামিল না হলে সফল হয় না) অগ্রাহ্য করেই। সেটা সম্ভব হয়েছে সাধারণ মানুষের ন্যায্যতার আকাঙ্ক্ষা থেকেই।

সবশেষ এই নির্মাতা লিখেছেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষার দুই পয়সার দাম দেন নাই। সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষা, ইচ্ছা আর দেশপ্রেমকে পুঁজি করে অরাজনৈতিক এবং রাজনৈতিক যারাই রাজনীতি রাজনীতি খেলতে চাইবে, তাদের দশাও কোন একসময় যেন পলাতক শেখ হাসিনার মতো না হয়, সেই বিষয় নিশ্চিত করতে হবে তাদেরকেই।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ
দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম
‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’
‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী
ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত