শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব ২৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান

তার চুল কাটার ধরনে নানির জন্য অবশ্যই চমক একটা ছিল বটে। নানি তাকে আপাদমস্তক এক নজর দেখে তার ওই অপূরণীয় বিপর্যয় সম্পর্কে এক মুহূর্ত চিন্তা করে জ্যাকের সামনেই তার মাকে উদ্দেশ্য করে শুধু বললেন, তোকে এখন আস্ত একটা বেশ্যার মতো দেখাচ্ছে। কথাগুলো বলেই নানি রান্না ঘরের দিকে চলে গেলেন। ক্যাথরিন করমারির মুখ থেকে হাসি উবে গেল।

সমস্ত পৃথিবীর দুঃখ আর ক্লান্তি এসে জমা হলো তার মুখে। জ্যাকের প্রকাশ-উদ্যত মুখের দিকে তাকিয়ে একটুখানি হাসার চেষ্টা করলেন। কিন্তু তার ঠোঁট কাঁপতে থাকায় মা যেন নিভে গেলেন। কাঁদতে কাঁদতে নিজের শোয়ার ঘরের দিকে দৌড়ে চলে গেলেন। ওটাই তার বিশ্রামের জায়গা, নৈঃসঙ্গের জায়গা, দুঃখ বিলাসের আশ্রয়।

হতবিহ্বল জ্যাক মায়ের পিছে পিছে শোয়ার ঘরে গিয়ে দেখল, মা বালিশে মুখ ডুবিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছেন। তার হালকা পলকা পিঠ কান্নার দমকে দমকে ওঠানামা করছে। চুল ছোট করে ফেলার কারণে মায়ের ঘাড়ের অনেকখানি অনাবৃত।

মাকে হাত দিয়ে আলতো করে ছুঁয়ে জ্যাক ডাক দিল, মামণি, মা। তুমি চুল কাটলেও খুব সুন্দর, মা।

কিন্তু মা মনে হলো শুনলেন না। হাতের ইশারায় তাকে চলে যেতে বললেন। জ্যাক ফিরে এসে দরজার বাজুতে হেলান দিয়ে মায়ের প্রতি ভালোবাসা আর নিজের অসহায়ত্ব নিয়ে নীরবে কাঁদতে শুরু করল।

পরবর্তী কয়েক দিন নানি তার মেয়ের সঙ্গে একটা কথাও বললেন না। আঁতোই লোকটাকেও কেউ আর তেমন উষ্ণতায় গ্রহণ করল না। আর্নেস্ট মামা সদানন্দ স্বভাবের এবং বাচাল হলেও আঁতোইয়ের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রেখে চলল। আঁতোই লোকটা কিছু একটা আঁচ করতে পেরেছিল হয়তো: কী হচ্ছে? জ্যাক বেশ কয়েকবার তার মায়ের সুন্দর চোখ জোড়ায় অশ্রু দেখতে পেয়েছে। আর্নেস্ট সব সময় চুপচাপ নীরবতায় ডুবে রইল এবং কারণে অকারণে ব্রিলিয়ান্টকে মারপিট করতে লাগল। গ্রীষ্মের এক বিকেলে জ্যাক খেয়াল করল, মামা ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে কী যেন দেখার চেষ্টা করছে।

বালক জ্যাক জিজ্ঞেস করল, ডানিয়েল আসছে না কি?

মামা মুখে কিছু না বলে রাগে ঘোঁৎ ঘোঁৎ করতে লাগল। জ্যাক দেখতে পেল, আঁতোই আসছে। বেশ কয়েকদিন আসেনি লোকটা। আর্নেস্ট দ্রুত বের হয়ে গেল এবং কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে সিঁড়ির দিক থেকে ধ্বস্তাধ্বস্তির শব্দ আসতে লাগল। জ্যাক তাড়তাড়ি এগিয়ে গিয়ে দেখল, দুজন অন্ধকারের মধ্যে মারামারি করছে। নিজের দিকে কীভাবে কেমন আঘাত আসছে সেদিকে বিন্দুমাত্র নজর না দিয়ে আর্নেস্ট তার লোহাদণ্ডের মতো শক্ত মুষ্টিতে সমানে ঘুষি চালিয়ে যাচ্ছে। কিছুক্ষণ পরই আঁতোই সিড়ি দিয়ে গড়িয়ে নিচে পড়ে গেল। সে উঠে দাঁড়াতেই দেখা গেল, তার সারা মুখে রক্ত। পকেট থেকে রুমাল বের করে মুখ মুছে নিল সে।

তবে এতক্ষণ আর্নেস্টের ওপর থেকে এক পলকের জন্যও দৃষ্টি সরানোর সাহস পায়নি লোকটা। তখনও আর্নেস্ট উন্মাদের মতো রাগে ফেটে পড়ছে। ভেতরে গিয়ে জ্যাক দেখল, মা নিথর মুখে খাবার টেবিলে বসে আছেন। জ্যাকও চুপ করে বসে রইল তার পাশে। জোরে জোরে গালিগালাজ ঝাড়তে ঝাড়তে আর্নেস্ট ভেতরে চলে এল। পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় বোনের দিকে আগুন দৃষ্টিতে তাকিয়ে গেল শুধু। মুখে কিছু বলল না। রাতের খাবার যথারীতি শেষ হয়ে গেল। মা কিছুই খেলেন না। নানি তাকে খেতে বললে মা শুধু বললেন, আমার ক্ষিধে নেই। সবার খাওয়া শেষ হয়ে গেলে মা উঠে শোয়ার ঘরে চলে গেলেন। রাতে ঘুম ভেঙে গেলে জ্যাক বুঝতে পারল, মা নির্ঘুম বিছানায় এপাশ ওপাশ করছেন। পরদিন সকালেই মা কালো পোশাক পরে নিলেন, শুধু গরীবের পোশাক, আর কিছু নয়। জ্যাকের মনে হলো, মায়ের সৌন্দর্যে ঘাটতি পড়েনি; বরং গরীবের পোশাকে তার সৌন্দর্য আরো বেশি করে ফুটে উঠেছে। কারণ মা আরো দূরবর্তী হয়ে গেছেন, নিজের আত্মার ভেতর গুটিয়ে গেছেন। দারিদ্র, নৈঃসঙ্গ আর আসন্ন বার্ধক্যে থিতু হয়ে গেছেন মা।

আর্নেস্ট মামার প্রতি জ্যাক বেশ কিছুদিন অসন্তোষ পুষে রেখেছিল; তবে কেন পুষে রেখেছিল তার উত্তর জানা ছিল না। আবার এরকমও মনে হয়েছে, মামাকে কিছুতেই দোষ দেয়া যায় না। তাদের পরিবার দারিদ্র, দুর্বলতা আর অতীব প্রয়োজনীয়তার ভেতর জীবন অতিবাহিত করত। সেগুলো যদি কোনো কিছুর সঙ্গেই আপোষ না করত তাহলে পরিবারের যে ব্যক্তিটি ওই অসুবিধাগুলোর শিকার হতো তাকে তারা নিশ্চয়ই বিচারাধীন করতে পারত না কিছুতেই।

তাদের পরিবারের লোকেরা একে অন্যকে আঘাত দিতে বাধ্য হয়েছে নিরুপায় হয়েই। তারা প্রত্যেকেই অন্যকে কষ্ট দিয়েছে শুধু যখন আপাত দায়ী ব্যক্তির প্রতিনিধিত্ব দেখতে পেয়েছে জীবনের অতীব প্রয়োজনীয়তার ভেতর। প্রথমত নানির প্রতি, তারপর তার মায়ের প্রতি এবং তাদের প্রতি মামার গভীর অনুরক্তিতে জ্যাক কখনওই সন্দেহ পোষণ করতে পারেনি। তার প্রতি মামার গভীর অনুরক্তি দেখতে পেয়েছে বিশেষ করে যেদিন মামার কারখানায় সে একটা দুর্ঘটনায় পতিত হয়েছিল সেদিন। জ্যাক প্রতি বৃহষ্পতিবার মামার কারখানায় যেত। অন্যান্য দিন রাস্তায় বন্ধুদের সঙ্গে খেলার জন্য জ্যাক উৎফুল্ল হয়ে ছুটে যেত।

বৃহষ্পতিবার বাড়ির কাজ থাকলে সেগুলো তাড়াতাড়ি গুছিয়ে রেখে মামার কারখানাতেও সেরকম উৎফুল্ল হয়ে ছুটে যেত সে। কারখানাটা ছিল প্যারেড গ্রাউন্ডের পাশেই। কারখানাটা উঠোনের মতো একটা ফাঁকা জায়গায়। ময়লা আবর্জনা, পুরনো চাকার বলয়, ধাতুমল আর নিভিয়ে ফেলা আগুনের ছাইয়ে ভরা। একদিকে সমান দূরত্বের বড় বড় পাথরের থামের মাথার ওপরে তৈরি ইটের ছাদ। পাঁচ ছয়জন কারিগর ওই ছাদের নিচে কাজ করত।

ওইটুকু জায়গার মধ্যেই প্রত্যেকের কাজের আলাদা আলাদা সীমানা ছিল: দেয়াল ঘেঁষা একটা বেঞ্চ, তার সামনে ফাঁকা জায়গা, সেখানে পিপা কিংবা মদের জালা জড়ো করে রাখা যেত এবং পাশের কারিগরের এলাকা থেকে আলাদা করা যায় এমনভাবে খাঁজকাটা বেঞ্চের মতো ছিল। সেটার মধ্যে পিপার মাথা ঢুকিয়ে দেওয়া যেত। তারপর চাকুর মতো একটা অস্ত্র দিয়ে হাতে সেটার আকার দেওয়া হতো।

তবে এর ধারালো পাশটা থাকত কারিগরের দিকে মুখ করা এবং এর হাতল ধরা থাকত কারিগরের হাতে। আসলে এরকম বিন্যাস প্রথম দর্শনে চোখে পড়ার মতো ছিল না। প্রথম থেকে পরিকল্পনা অবশ্য এরকমই ছিল। তবে আস্তে আস্তে বেঞ্চগুলো চারপাশে ছড়িয়ে পড়েছে। বেঞ্চের মাঝখানের জায়গা ভরে উঠেছে চাকার বলয় জমা হয়ে। এখানে ওখানে নাটবল্টুর কেনেস্তারা পড়ে আছে। প্রত্যেক কারিগর নিজ নিজ জায়গার মধ্যে যে সব কাজকর্ম সম্পাদন করছে সেগুলো খুটিয়ে দেখতে গেলে অনেক সময়ের দরকার। মামার খাবার নিয়ে তার কাছে পৌঁছনোর আগে দূর থেকেই জ্যাক চাকার বলয়ের ড্রাইভারের ওপরে হাতুড়ির শব্দ শুনে চিনতে পারত।

কাঠের টুকরোটা ঠিক জায়গায় বসানোর পরে ড্রাইভার যন্ত্রটা দিয়ে ধাতব বলয় পিপার গলায় নামিয়ে দেওয়া হতো এবং কারিগর ড্রাইভার যন্ত্রটির এক প্রান্তে বাড়ি মারতে থাকত এবং অন্য প্রান্ত দক্ষতার সঙ্গে বলয়ের চারপাশে ঘোরাতে থাকত। দূর থেকে আরো বেশি ভারী এবং ধীর পৌনঃপুনিকতার শব্দ শুনে জ্যাক আরো বুঝতে পারত, হয়তো কোনো কারিগর দোকানের বাইসের সঙ্গে আটকানো কোনো বলয়ের সঙ্গে নাটবল্টু সেট করছে। হাতুড়ির কোলাহলের মধ্যে জ্যাক ওখানে গিয়ে পৌঁছনোর সময় তাকে সানন্দে গ্রহণ করা হতো এবং এরপর হাতুড়িগুলোর নাচ আবার শুরু হতো। আর্নেস্টের পরনে থাকত পুরনো তালি মারা নীল ট্রাউজার, ঘুণঢাকা কাপড়ের তৈরি দড়ির তলাঅলা জুতা, হাতাছাড়া ধূসর রঙের শার্ট আর একটা রঙচটা পুরনো কিনারাবিহীন টুপি। টুপিটা তার সুন্দর চুলকে ধূলি আর চাঁচনি থেকে রক্ষা করত।

ওখানে পৌঁছনোর সঙ্গে সঙ্গে মামা জ্যাককে বুকে জড়িয়ে নিত আর মামার কথাবার্তায় জ্যাক বুঝতে পারত, মামার কাজে হাত লাগালে ভালোই হয়। মাঝে মাঝে জ্যাক নেহাইয়ের ওপরে বলয়টাকে ধরে থাকত। আর মামা সেটার সঙ্গে বল্টু লাগানোর জন্য জোরে জোরে বাড়ি মারত। বলয়টা জ্যাকের হাতের মধ্যে কেঁপে কেঁপে উঠত। হাতুড়ির প্রত্যেকটা বাড়ির সঙ্গে সেটা তার তালুতে বসে যেত। কখনও কখনও মামা বেঞ্চের এক প্রান্তে দুপা দুদিকে ছড়িয়ে দিয়ে বসে পড়ত। জ্যাকও একই ভঙ্গিতে অন্য প্রান্তে বসত। জ্যাক পিপার নিচের পাশটা ধরত। আর মামা সেটার আকার দিতে থাকত।

তবে জ্যাকের সবচেয়ে মজা লাগত কাঠের টুকরোগুলো উঠোনের মাঝখানে এনে জড়ো করতে যাতে মামা সেগুলো মোটামুটি চাকার একটা বলয়ের কাছাকাছি সাজিয়ে রাখতে পারে। দুপাশ খোলা পিপার মধ্যে আর্নেস্ট একগাদা চাঁচনি ঢুকিয়ে দিত। আর জ্যাকের দায়িত্ব ছিল সেখানে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া। আাগুনের তাপে লোহা আকারে আরো বেশি বিস্তৃতি লাভ করত এবং আর্নেস্ট সে সুযোগে হাতুড়ির সজোর আঘাতে বলয়টাকে বসিয়ে দিত।

এই কাজে ধোঁয়ার কারণে দুজনেরই চোখ জুড়ে অশ্রু নামতে থাকত। বলয়টা জায়গা মতো বসিয়ে দেওয়া হয়ে গেলে জ্যাক উঠোনের কোণের কল থেকে পানি ভরে রাখা কাঠের বালতি নিয়ে আসত। বালতি নামিয়ে দিয়ে জ্যাক খানিকটা সরে দাঁড়াত এবং আর্নেস্ট পিপার ওপরে সজোরে পানি ঢেলে দিত। বলয় ঠাণ্ডা হতে হতে সংকুচিত হয়ে কাঠের ভেতরে ঢুকে পড়ত। সঙ্গে সঙ্গে ওপরের দিকে বাষ্পের কুণ্ডলী উঠে আসত।

চলবে...

এসএ/

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১

Header Ad
Header Ad

নাটকীয়তা শেষে রাতে ফাইনালে মুখোমুখি রিয়াল-বার্সা

ছবি: সংগৃহীত

রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনার মুখোমুখি লড়াই মানেই ফুটবল দুনিয়ায় বাড়তি উত্তেজনা। স্প্যানিশ ফুটবলের এই দুই মহারথীর লড়াই কেবল মাঠের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এতে মিশে আছে স্পেন ও কাতালুনিয়ার জাতিসত্ত্বার লড়াই এবং রক্তাক্ত গৃহযুদ্ধের ইতিহাসও।

এবারের কোপা দেল রে ফাইনালে (শনিবার দিবাগত রাত ২টা, বাংলাদেশ সময়) আবার মুখোমুখি হচ্ছে রিয়াল ও বার্সা। তবে এবারের লড়াইয়ে যোগ হয়েছে ভিন্ন মাত্রা। রেফারিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে রিয়াল মাদ্রিদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে অস্থিরতা। সেভিয়ায় ফাইনালের আগে নির্ধারিত অনুশীলন করেনি রিয়াল, সংবাদ সম্মেলনেও আসেননি কোচ ও খেলোয়াড়রা। এমনকি দুই ক্লাবের কর্মকর্তাদের আনুষ্ঠানিক নৈশভোজেও থাকছেন না রিয়াল প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ। গুঞ্জন উঠেছিল, রিয়াল হয়তো ফাইনাল বয়কটও করতে পারে। তবে শেষ পর্যন্ত ক্লাব কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা খেলবে।

এদিকে, বার্সেলোনার সামনে রয়েছে ট্রেবল জয়ের স্বপ্ন টিকিয়ে রাখার চ্যালেঞ্জ। লা লিগায় শীর্ষে থাকা বার্সা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালেও জায়গা করে নিয়েছে। কোপা দেল রে শিরোপা তাদের ট্রেবল যাত্রার প্রথম ধাপ হতে পারে।

 

ছবি: সংগৃহীত

বার্সার জন্য দুঃসংবাদ, ইনজুরির কারণে দলের নির্ভরযোগ্য স্ট্রাইকার রবার্ট লেভানডফস্কি এই ফাইনালে খেলতে পারবেন না। তার জায়গায় শুরুতে দেখা যেতে পারে ফেরান তোরেসকে। তবে দলের বাকিরা সুস্থ ও প্রস্তুত রয়েছেন। লিগের শেষ ম্যাচে অধিকাংশ মূল খেলোয়াড় বিশ্রামে থাকায় বার্সেলোনা কিছুটা সতেজ ভাবেই নামবে মাঠে।

রিয়াল মাদ্রিদেও রয়েছে ইনজুরি সমস্যা। দলের ফরাসি তারকা কিলিয়ান এমবাপে চোটে পড়েছিলেন আর্সেনালের বিপক্ষে ম্যাচে। শেষ মুহূর্তে তার ফিটনেস দেখে মাঠে নামানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে ডিফেন্ডার ফার্লান্দ মেন্ডি ফাইনালে থাকছেন না, এটা নিশ্চিত।

এখন পর্যন্ত সামগ্রিক এল ক্লাসিকোতে রিয়াল মাদ্রিদ এগিয়ে—১০৫ জয়। বার্সেলোনা জয় পেয়েছে ১০২ ম্যাচে। তবে কোপা দেল রে’র ইতিহাসে এগিয়ে আছে বার্সা। ৩৭ দেখায় বার্সা জিতেছে ১৬ ম্যাচ, রিয়াল ১৩টি। ৮ ম্যাচ ছিল ড্র।

তবে কোপা দেল রে’র ফাইনালে ৭ বার এল ক্লাসিকো অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে রিয়াল জিতেছে ৪ বার এবং বার্সা ৩ বার।

চলতি মৌসুমে দুই দলের দুই দেখায় দুটিতেই বার্সেলোনা জয়ী হয়েছে—লা লিগায় ৪-০ এবং সুপারকোপা দে এস্পানার ফাইনালে ৫-২ ব্যবধানে।

 

স্টেডিয়াম: দে লা কার্তুহা, সেভিল
সময়: বাংলাদেশ সময় শনিবার দিবাগত রাত ২টা

 

Header Ad
Header Ad

মাদকাসক্ত ছেলেকে ত্যাজ্য ঘোষণা করলেন বাবা

ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লার মুরাদনগরে নাঈম সরকার (১৯) নামের এক যুবককে মাদকাসক্তির কারণে ত্যাজ্য ঘোষণা করেছেন তার বাবা মফিজুল ইসলাম। ছেলের মাদকাসক্তি ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের কারণে তিনি এ সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন।

মফিজুল ইসলাম উপজেলার কোম্পানীগঞ্জের নগরপাড় এলাকার বাসিন্দা। তিনি বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) কুমিল্লা নোটারী পাবলিক কার্যালয়ে এক হলফনামার মাধ্যমে ছেলে নাঈমের সঙ্গে পারিবারিক, সামাজিক ও আর্থিক সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করেন।

হলফনামায় মফিজুল উল্লেখ করেন, নাঈম একাদশ শ্রেণির ছাত্র হলেও দীর্ঘদিন ধরে মাদকাসক্ত। সে মদ, গাঁজা, ইয়াবাসহ বিভিন্ন নেশাজাত দ্রব্যে আসক্ত হয়ে পড়েছে। এতে পরিবারে প্রতিনিয়ত অশান্তি সৃষ্টি হচ্ছিল। গভীর রাতে বাড়ি ফেরা, মা-বাবার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা এবং নানা অনৈতিক কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়েছিল নাঈম। পরিবারের মান-মর্যাদা রক্ষার স্বার্থে তার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে মফিজুল ইসলাম বলেন, "সন্তানের এমন বিপথগামী আচরণে আমি অত্যন্ত মর্মাহত। বহু চেষ্টা করেও তাকে সঠিক পথে ফেরাতে ব্যর্থ হয়েছি। অবশেষে পরিবার ও সমাজের সম্মান রক্ষার্থে তার সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করতে বাধ্য হয়েছি।"

Header Ad
Header Ad

গরমে লোডশেডিং নিয়ে সুখবর দিলেন জ্বালানি উপদেষ্টা

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। ছবি: সংগৃহীত

দেশজুড়ে ক্রমাগত গরম বাড়ছে। সামনে তাপমাত্রা আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফলে লোডশেডিং ও ভোগান্তি বেড়ে যাওয়ার শঙ্কায় রয়েছে সাধারণ মানুষ। তবে এ নিয়ে আশার খবর দিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।

তিনি বলেন, "এবারের গরমে লোডশেডিং সহনীয় পর্যায়ে থাকবে। আমরা সীমিত পর্যায়ে তা নিয়ন্ত্রণে রাখার পরিকল্পনা নিয়েছি। আমাদের প্রজেকশনে ১৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য রয়েছে। আশা করছি, অনেকটাই ম্যানেজ করতে পারবো।"

শনিবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনের বিজয় হলে ফোরাম ফর এনার্জি রিপোর্টারস বাংলাদেশ (এফইআরবি) আয়োজিত 'জ্বালানি সংকট উত্তরণের পথ' শীর্ষক সেমিনারে বক্তব্য রাখার সময় তিনি এসব কথা বলেন।

সেমিনারে উপদেষ্টা আরও জানান, লোডশেডিংয়ের ক্ষেত্রে শহর ও গ্রামের মধ্যে সমন্বয় রক্ষা করা হবে। জ্বালানি আমদানি করে বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল রাখতে হবে। এলএনজি আমদানির ক্ষেত্রে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপে (পিপিপি) যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

সরকারের মেয়াদ স্বল্প হওয়ায় কাজের সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করে মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, "জ্বালানির ক্ষেত্রে যেকোনো কাজ সম্পন্ন করতে সময় লাগে। আমরা এমন কিছু হাতে নিচ্ছি না, যা সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে বকেয়া পরিশোধে। বিল পরিশোধ না করলে কোনো দেশ ব্যবসা করবে না।"

তিনি আরও জানান, আগামী দুই মাসের মধ্যে সিস্টেম লস ৫০ শতাংশ কমানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। লাইন লিকেজ ও গ্যাস চুরির বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে বিভিন্ন প্রকল্পে অপ্রয়োজনীয় ব্যয়ও কমিয়ে আনা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "আগামী বছর আর কোনো বকেয়া থাকবে না, শুধুমাত্র কারেন্ট পেমেন্ট দিতে হবে। ভর্তুকি বাড়বে না, বরং কমবে। আমরা যে সংকটের গহ্বরে পড়েছিলাম, সেখান থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছি।"

সাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের বিষয়ে উপদেষ্টা জানান, বিট নিলামে কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে মন্ত্রণালয়ের চূড়ান্ত অনুমোদন শেষে পুনরায় রি-টেন্ডার করা হবে বলেও তিনি আশ্বাস দেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

নাটকীয়তা শেষে রাতে ফাইনালে মুখোমুখি রিয়াল-বার্সা
মাদকাসক্ত ছেলেকে ত্যাজ্য ঘোষণা করলেন বাবা
গরমে লোডশেডিং নিয়ে সুখবর দিলেন জ্বালানি উপদেষ্টা
পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের ক্রিকেটীয় সম্পর্ক ছিন্ন করা উচিত: সৌরভ গাঙ্গুলি
র‍্যাফেল ড্রতে ৯ কোটি টাকা জিতলেন দুই প্রবাসী বাংলাদেশি
৬২ জন পুলিশ সদস্য পাচ্ছেন বিপিএম ও পিপিএম পদক
সিন্ধুতে হয় পানি, না হয় ভারতীয়দের রক্ত বইবে: বিলাওয়াল ভুট্টো
অন্য নারীতে মজেছেন সৃজিত! মিথিলা কোথায়?
৪ মাসে কুরআনের হাফেজ হলেন ১০ বছরের অটিস্টিক শিশু আহমাদ
রাষ্ট্র সংস্কারের যে সুযোগ তৈরি হয়েছে, তা যেন বেহাত না হয়: আলী রীয়াজ
১৪ ব্যাংকে ২৩৮ কোটি টাকা স্থানান্তর, যা বললেন বিসিবি সভাপতি
কাশ্মীর সীমান্তে ফের গোলাগুলি, মুখোমুখি ভারত-পাকিস্তান সেনা
বাইরে থেকে ফিরেই ঠান্ডা গোসল? সাবধান! এই অভ্যাস ডেকে আনতে পারে বিপদ
কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তান-ভারত পাল্টাপাল্টি উত্তেজনা নিয়ে যা বললেন ট্রাম্প
রাঙামাটিতে সিএনজি-পিকআপ সংঘর্ষে নিহত ৫
রেফারির বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছে রিয়াল, ফাইনাল ম্যাচ বয়কটের হুমকি
আইন উপদেষ্টাকে জড়িয়ে ভারতের গণমাধ্যমে মিথ্যা প্রতিবেদন, মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি
নিজ দেশেই বিমান হামলা চালালো ভারত, ‘অসাবধানতা’ বলছে বিমান বাহিনী
গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত আরও ৮৪ ফিলিস্তিনি
আইনি নোটিশ প্রসঙ্গে যা বললেন ডা. তাসনিম জারা