শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব ২২

দ্য ফার্স্ট ম্যান

শিকারিরা দুপুরের খাবারের জন্য পূর্ব-নির্ধারিত জায়গায় আসার সময় এদিক ওদিক ফিরে ফিরে তাকায়– যদি কোনো শিকার চোখে পড়ে। তবে মন আর শিকারে নেই; তারা খুব ক্ষুধার্ত। পা টলতে টলতে, চোখ মুখের ঘাম মুছতে মুছতে তারা ফিরে আসে। দুজন দুজন করে ফিরে আসার সময় দূর থেকে নিজেদের শিকার দেখাতে দেখাতে আসে। কেউ কেউ শিকার রাখার শূন্য ব্যাগ তাচ্ছিল্যের সঙ্গে ছুড়ে ফেলে দেয় আর বর্ণনা করে কীভাবে ওই ব্যাগ সারাক্ষণ শূন্যই ছিল। একই সময় সবাই সমবেত শিকারগুলো গুণে দেখে। প্রত্যেকেরই কিছু না কিছু বলার থাকেই।

তবে সবচেয়ে আড়ম্বরপূর্ণ বর্ণনা আসে আর্নেস্টের কাছ থেকে। হাত মুখ ঘুরিয়ে ফিরিয়ে যে বর্ণনা সে দেয় সে বর্ণনাকে মুকাভিনয় বলাই উত্তম। অন্যদের তরফে সামান্যতম অবিশ্বাস যেন না থাকে সেজন্য তার সব বর্ণনার জ্যান্ত সাক্ষী রাখে ডানিয়েল এবং জ্যাককে। আর্নেস্ট বর্ণনা করতে থাকে কীভাবে তিতির পাখিটা উড়ে যাচ্ছিল, কীভাবে খরগোশটা বার দুয়েক মাটি ছুঁয়ে ছুটে চলার পর হঠাৎ উল্টে পড়ে গেল রাগবি খোলোয়ারের মতো। ততক্ষণে সৃশৃঙ্খল পিয়েরে সবার কাছ থেকে নেওয়া ধাতব পাত্রে এনিসেট ঢেলে দিয়ে পাত্রগুলো বিশুদ্ধ পানিতে পূর্ণ করার জন্য পাইন ঝোপের শেষ প্রান্তে ক্ষীণ ধারায় বয়ে যাওয়া ঝরনার কাছে চলে যায়। সবাই মিলে একটা ভ্রাম্যমাণ টেবিল পেতে তার ওপরে টেবিলক্লথ বিছিয়ে দেয় এবং প্রত্যেকে নিজ নিজ ব্যাগ থেকে যা যা এনেছে ঢেলে দেয়। তবে তাদের মধ্যে সবচেয়ে মেধাবী বাবুর্চি হিসেবে খ্যাতি আর্নেস্টের। গ্রীষ্মকালে তাদের মাছ ধরা অভিযানে খাবারের শুরুতে থাকত দক্ষিণ ফ্রান্সের মসলাযুক্ত স্যুপ। তাৎক্ষণিকভাবে ধরা মাছ এবং হাতের কাছে পাওয়া মসলা দিয়ে আর্নেস্ট সেই স্যুপ তৈরি করত। কোনো কোনো মসলা সে এত বেশি উদারভাবে মেশাত যে, মনে হতো কোনো কচ্ছপের জিহ্বাও পুড়ে যাবে।

যা-ই হোক, সেদিন আর্নেস্ট কয়েকটা কাঠি ভালো করে, একেবারে সুচালো করে চেছে সেগুলোর সঙ্গে বাড়ি থেকে নিয়ে আসা সোব্রাসাডাগুলো গেঁথে দিল। তারপর কাঠের অল্প আগুনে ঝলসে নিল। আগুনের তাপে ফোঁটায় ফোঁটায় তরল গলে পড়তে লাগল নিচের আগুনে এবং সেখানে হিস হিস আওয়াজ তোলার সঙ্গে আগুনের ফুলকি উঠতে লাগল। দুটুকরো রুটির মধ্যে ফুটন্ত এবং সুগন্ধযুক্ত সস ভরে আর্নেস্ট অন্যদের হাতে দিয়ে দিল। সুগন্ধি মদের মধ্যে চুবিয়ে আনন্দে আত্মহারা হওয়ার মতো শব্দ করতে করতে সবাই গোগ্রাসে গিলতে লাগল সেগুলো। তারপর কিছুক্ষণ চলল হাসি তামাসা, কাজকর্ম সম্পর্কিত গল্পগুজব আর কৌতুক। তবে অপরিষ্কার ক্লান্ত শরীরে জ্যাক তাদের গল্পে খুব বেশি মনোযোগ দিতে পারল না। কারণ তার খুব ঘুম পাচ্ছিল। অবশ্য অন্যদেরও কারো কারো ঘুম পাচ্ছিল। কেউ কেউ আবার নিচে সমতলভূমির ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া সবুজের দিকে শূন্য চোখে তাকিয়ে রইল। কিংবা রুমাল দিয়ে মুখ ঢেকে কেউ কেউ আর্নেস্টের মতো একটা লম্বা ঘুমই দিয়ে দিল। যা হোক, সাড়ে পাঁচটায় যে ট্রেনটা স্টেশনে আসবে সেটা ধরার জন্য তাদের চারটার সময় রওনা দিতে হবে।

ট্রেনে ওঠার পর কম্পার্টমেন্টের মধ্যে ক্লান্তির সঙ্গে সবাই গাদাগাদি করে বসে পড়ল। কুকুরগুলোর কোনোটা সিটের নিচে, কোনোটা মালিকের পায়ের নিচে ঘুমিয়ে। রক্তপিপাসার স্বপ্ন তাদের ঘুমের মধ্যে আসা যাওয়া করছে। দিনটা শেষ হয়ে যাচ্ছে সমতলভূমির প্রান্তে। এরপর আসে আফ্রিকার আতি সংক্ষিপ্ত গোধূলিবেলা। খোলা প্রান্তরের ওপর উপদ্রবের মতো কোনো রকম ক্রান্তির রেখা না টেনেই নেমে পড়বে রাত। শেষ স্টেশনে গিয়ে বাড়ি পৌঁছনোর তাগিদে তাড়িত হয়ে পড়ে সবাই: বাড়ি গিয়ে তাড়াতাড়ি খেয়েদেয়ে সকাল সকাল ঘুমিয়ে পড়তে হবে, ভোরে উঠেই আবার বের হতে হবে কাজে। সুতরাং তাদের বিদায়পর্ব অন্ধকারেই সাঙ্গ হয়। শুধু বন্ধুত্বের পিঠ চাপড়ানি ছাড়া মুখে কেউ কিছু বলে না।

জ্যাক তাদের চলে যাওয়ার শব্দ এবং উষ্ণ, উত্তাল কণ্ঠ শোনে–তার খুব ভালো লাগে এইসব। তারপর সে আর্নেস্টের চলার গতির সঙ্গে তাল মেলায়। অর্নেস্ট এখনও প্রাণপ্রাচুর্যে ভরা। কিন্তু জ্যাকের পা যেন আর নড়তে চায় না। বাড়ির কাছাকাছি অন্ধকার রাস্তায় পৌঁছে আর্নেস্ট জ্যাকের দিকে ফিরে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে, তুই খুশি হয়েছিস তো? জ্যাক সাড়া দেয় না। আর্নেস্ট উচ্চ শব্দে হেসে কুকুরের উদ্দেশে শিস বাজায়। কয়েক পা এগিয়ে গিয়ে মামার খসখসে হাতের মধ্যে নিজের হাত আস্তে করে ঢুকিয়ে দেয় জ্যাক। মামা জ্যাকের হাতে খুশি আর আদর মেশানো চাপ দেয়। দুজনই নীরবে বাড়ি পৌঁছে।

আনন্দ যেমন তাড়তাড়ি পেত রাগের সময়ও খুব দ্রুত এবং পুরো মাত্রায় আবেগের শিকারে পরিণত হতো আর্নেস্ট। রাগের সময় তাকে যুক্তি দিয়ে কিছু বোঝানো যেত না। তার সঙ্গে কথাও বলা যেতো না। তার রাগকে একটা প্রাকৃতিক ব্যাপার বলেই ধরে নিত সবাই। আকাশে ঝড়ের মেঘ জড়ো হতে দেখলে ঝড় নেমে আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করা ছাড়া আর কিছু করার থাকে না। অন্যসব বধির মানুষের মতোই আর্নেস্টের গন্ধের ইন্দ্রিয় খুব প্রবল ছিল। অবশ্য তার কুকুরের গন্ধের প্রসঙ্গ উঠলে এই কথা প্রযোজ্য নয়।

গন্ধের প্রখর ইন্দ্রিয় আর্নেস্টের জন্য আনন্দ বয়ে নিয়ে আসত: দুভাগ করা মটরের স্যুপ কিংবা সস ওমলেট, নানির হাতের বিশেষ রান্নার পদ গরুর কলিজা আর ফোঁপরার সঙ্গে মিশিয়ে নাড়িভুঁড়ি রান্না– সস্তা হওয়ার কারণে তাদের খাবার টেবিলে প্রায়ই দেখা যেত এই পদ; এটা সহ অন্য যেসব খাবার তার প্রিয় ছিল সেগুলোর সুগন্ধ তার আনন্দের উৎস ছিল। কিংবা রবিবারে মামা যে সস্তা ওডিকলোন মাখত সেটার গন্ধ, কিংবা পম্পেরো নামের লোশন, এটা অবশ্য জ্যাকের মা ও ব্যবহার করতেন, এটার লেবু এবং কমলালেবুর তেলসদৃস সুগন্ধ খাবার ঘরের সবখানে এবং মামার চুলে লেগে থাকত। বোতলের কাছে মুখ নিয়ে মামা শুঁকে দেখত। তবে শুধু আনন্দ নয়, তার প্রখর ইন্দিয়ের কারণে অনেক সময় সমস্যাও হতো।

সাধারণ নাকে ধরা যায় না এমন কিছু গন্ধ তার সহ্যই হতো না। যেমন খাবার শুরু করার আগে সে নিজের প্লেটটা শুঁকে দেখত; প্লেট থেকে যদি তার নাকে ডিমের গন্ধ আসত তাহলে রেগে আগুন হয়ে যেত আর্নেস্ট। সন্দেহযুক্ত প্লেটটা নানি হাতে নিয়ে নিজে শুঁকে দেখতেন এবং বলতেন কোনো গন্ধ পাচ্ছেন না। তারপর তার মেয়ের হাতে দিতেন শুঁকে দেখার জন্য। ক্যাথরিন করমারি প্লেটটা হাতে নিয়ে সেটার ওপর দিয়ে নাক ঘুরিয়ে এমনকি না শুঁকেই বলে দিতেন, না কোনো গন্ধ নেই। তারা অন্য প্লেটগুলো নিয়েও শুঁকে দেখতেন যাতে তাদের পরীক্ষা যথাযথ হয়েছে বলে মতামত প্রতিষ্ঠা করতে পারেন। অবশ্য বাচ্চাদের প্লেট তারা শুঁকতেন না; তাদেরকে খেতে দেওয়া হতো লোহার গামলায়। এর কারণ অবশ্য জ্যাকের কাছে তখন রহস্যময় ছিল। হতে পারে চীনা মাটির প্লেটের অভাব ছিল বাড়িতে, কিংবা নানি যেমন একদিন বললেন– প্লেট যাতে না ভাঙে। তবে জ্যাক এবং তার ভাই চালচলনে বেখেয়াল ছিল না কখনওই। যে কারণই হোক না কেন, পরিবারের কোনো নিয়মের আসলে কোনো ভিত্তি নেই বলেই মনে হয়েছে জ্যাকের।

তবে এতসব আচার আনুষ্ঠানের পেছনেও নৃতাত্ত্বিকগণ কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন; তাদের অনুসন্ধান প্রয়াস দেখলে হাসি পায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মূল রহস্য হলো, আসলে কোনো কারণই নেই। যা হোক, নানি এরপর সোজা সাপটা রায় দিয়ে দিতেন: কোনো গন্ধ নেই প্লেটে। আসলে এরকম রায় ছাড়া নানির আর কোনো উপায় থাকত না। কারণ আগের রাতে থালাবাসন হয়তো তিনি নিজেই ধুয়েছেন। গৃহিনী হিসেবে তিনি কাউকে একচুলও ছাড় দিতে রাজী ছিলেন না। আর তাতেই আর্নেস্টের রাগ আরো বেড়ে যেত এবং রাগ বাড়ার অরেকটা কারণ হলো, রাগের সময় তার দৃঢ় বিশ্বাসটাকে সে প্রকাশ করতে পারত না। তখন তার রাগকে স্বাভাবিক গতিতে চলতে দিতে হতো। খাওয়া বাদ দিয়ে গোমড়া মুখে বসে থাকত; নানি তার প্লেট বদলে দিলেও নিজের প্লেটের দিকে ঘৃণাভরা রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকত, কিংবা টেবিল থেকে উঠে যেতে যেতে রাগ করে বলত সে রেস্তোরাঁয় চলে যাচ্ছে। বলা পর্যন্তই তার ক্ষমতা, জীবনে একবারও ওদিকে পা বাড়ায়নি।

অবশ্য তাদের বাড়ির আর কেউই তেমন কাণ্ড করেনি। খাওয়া নিয়ে কেউ অসন্তুষ্টি প্রকাশ করলে নানি অবশ্য বলতে ছাড়তেন না, রেস্তোরাঁয় গিয়ে খেয়ে আয়। যখন থেকে নানি ওই কথা বলা শুরু করেছেন তখন থেকেই সবার কাছে রেস্তোরাঁ জায়গাটা পাপের এবং প্রলোভনের একটা জায়গা হয়ে দাঁড়িয়েছে যেখানে পয়সা দিতে পারলে সবকিছু সহজেই পাওয়া যায়। তবে সেখানে গেলে একদিন না একদিন তার পরিণাম ভোগ করতেই হবে: নির্ঘাত পেটের পীড়া শুরু হয়ে যাবে। যে ঘটনাতেই রাগ করুক না কেন নানি তার ছোট ছেলের রাগের প্রতি বিন্দুমাত্র পাত্তা দেননি। তার একটা কারণ হলো, তিনি মনে করতেন, ছেলের রাগের প্রতি বেশি নজর দেওয়ার কোনো মানে নেই।

আরেকটা কারণ হলো, ছেলের প্রতি তার একটা দুর্বলতা ছিল: জ্যাকের অনুমানে সেই কারণটা হলো, মামার আংশিক প্রতিবন্দ্বীত্ব। আমরা যতই আমাদের গৎবাঁধা ধারণা আঁকড়ে থাকি না কেন, আমাদের চোখের সামনে এমন অনেক উদাহরণ আছে; বাবা-মা তাদের প্রতিবন্দ্বী সন্তানের দিক থেকেও মুখ ফিরিয়ে নিতে পারেন। অনেক দিন পরে জ্যাক একদিন মামার প্রতি নানির সদা-কড়া চোখে মায়া মমতার একটা চাহনি দেখেছিল, সাধারণত এমনটা কখনও সে আগে দেখেনি। সেদিন ছিল রবিবার। মামা একটা জ্যাকেট পরেছে। কালো জ্যাকেটে মামাকে আরো একটু হালকা পাতলা লাগছে। এমনিতে মামার শরীরিক গঠন ছিল নরম কোমল এবং বালসুলভ। সেদিন মামা মাত্র শেভ করেছে এবং চুলগুলো চমৎকার করে চিরুনি করেছে। তার ওপরে নতুন কলার আর টাইয়ের কারণে মামাকে দেখাচ্ছে ছুটির দিনের পোশাকে গ্রিক রাখাল বালকের মতো। জ্যাকও সেদিন বুঝতে পারে, তার মামার আসল চেহারাই খুব সুন্দর। সেই চেহারাটাই ফুটে উঠেছে তার সুন্দর পোশাকের সঙ্গে।

সেদিনই জ্যাক বুঝতে পারে, নানির ছেলের প্রতি ভালোবাসা ছিল বাহ্যিক সৌন্দর্যের প্রতি ভালোবাসা; নানির ভালোলাগার কারণ আর্নেস্ট মামার সৌন্দর্য এবং শক্তি। সেদিন জ্যাক বুঝতে পেরেছে, আগে যে তার মনে হয়েছিল মামার প্রতি নানির আলাদা একটা টান বা দুর্বলতা আছে সেটা আসলে ঠিক নয়। তার প্রতি নানির দুর্বলতা খুবই স্বাভাবিক একটা বিষয়। সৌন্দর্য আমাদের সবাইকেই কমবেশি দুর্বল করে থাকে। তার ফলেই জগৎ সংসার আমাদের কাছে সহনীয় হয়ে থাকে। সৌন্দর্যের প্রতি আমাদের সবার দুর্বলতা আছে।

চলবে...

এসএ/

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১

Header Ad

খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ

ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে কুশল বিনিময় করেছেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে তাদের এ কুশল বিনিময় হয়।

সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়া পৌঁছালে উপস্থিত সবাই তাকে স্বাগত জানান। অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৩ সমন্বয়ক ও সরকারের উপদেষ্টা তার পাশে এসে দাঁড়ান এবং শারীরিক খোঁজখবর নেন। এ সময় খালেদা জিয়া তাদের অভিনন্দন জানান এবং দেশকে এগিয়ে নিতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার পরামর্শ দেন।

এ সময় এই ৩ উপদেষ্টা বিএনপি চেয়ারপারসনের কাছে দোয়া চান এবং সরকারের সংস্কার কাজে তার সর্বাত্মক সহযোগিতা চান।

এদিকে সেনাকুঞ্জে গেলে খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়া এখানে এসেছেন। একযুগ তিনি আসার সুযোগ পাননি। আমরা গর্বিত এই সুযোগ দিতে পেরে। দীর্ঘদিনের অসুস্থতা সত্ত্বেও বিশেষ দিনে সবার সঙ্গে শরিক হওয়ার জন্য আপনাকে আবারও ধন্যবাদ। আপনার আশু রোগমুক্তি কামনা করছি।

Header Ad

দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম

ছবি: সংগৃহীত

আবারও স্বর্ণের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। এবার ভরিতে ১ হাজার ৯৯৪ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা আজকেও ছিল এক লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) থেকেই নতুন এ দাম কার্যকর হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বেড়েছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি ভরি ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩৩ হাজার ৯৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ৮৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯৩ হাজার ৬৭৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস আরও জানায়, স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গয়নার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।

স্বর্ণের দাম কমানো হলেও দেশের বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। দেশে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫৭৮ টাকায়। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ৪৪৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ১১১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫৮৬ টাকায়।

এর আগে, সবশেষ গত ১৯ নভেম্বর দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম সমন্বয় করেছিল বাজুস। সে সময় টানা চার দফা কমার পর ভরিতে ২ হাজার ৯৪০ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা নির্ধারণ করেছিল সংগঠনটি।

এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩১ হাজার ১৯৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১২ হাজার ৪৫৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯২ হাজার ২৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা কার্যকর হয়েছে গত ২০ নভেম্বর থেকে।

এ নিয়ে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত দেশের বাজারে ৫১ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছে। যেখানে ৩০ বার দাম বাড়ানো হয়েছে, আর কমানো হয়েছে ২১ বার।

Header Ad

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

ছবি: সংগৃহীত

দেশের জনপ্রিয় নির্মাতা আশফাক নিপুন। কাজের পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমেও বেশ সরব তিনি। কথা বলেন নানা ইস্যু নিয়ে। সেই ধারাবাহিকতায় সরকার পতনের পর অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনেও বিভিন্ন সময় নিজের আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যেও বিভিন্ন বার্তা দিয়েছেন। এবার এমনি একটি বার্তায় দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনগনের আস্থার বিষয়ে আক্ষেপ জানালেন এই নির্মাতা।

বুধবার (২০ নভেম্বর) আশফাক নিপুন তার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সর্বস্তরের ছাত্র এবং সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল, বাসায় বসে বসে দোয়া করেছিল, যার যা সামর্থ্য দিয়ে সহায়তা করেছিল। কারণ, তারা দেখেছিল লড়াইটা আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসক বনাম সাধারণ ছাত্র-জনতার। এটাও অস্বীকার করার কোনো উপায় নাই যে এই আন্দোলন বেগবান করতে বিরোধী সকল দলের কর্মীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাদের সংগ্রামও গত দেড় দশকের। কিন্তু এটা যদি শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার লড়াই হতো তাহলে সাধারণ মানুষ এই লড়াই থেকে দূরে থাকত। সেই প্রমাণ বিগত ১৫ বছরে আছে।

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ এখনো দেশের কোনো রাজনৈতিক দলকেই পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারে না। এটাই বাস্তবতা। এই বাস্তবতা মেনে সকল রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত কীভাবে সাধারণ জনগণের ভেতর নিজের দলের প্রতি আস্থা তৈরি করা যায় সেই বিষয়ে নিরলস কাজ করা। এই আস্থা ক্ষমতায় গিয়ে অর্জন করা সম্ভব না। কারণ, সাধারণ মানুষ আজীবন এস্টাবলিশমেন্টের বিপক্ষে। এই আস্থা অর্জন করতে হয় ক্ষমতা বলয়ের বাইরে থেকেই।

নিপুন আরও লিখেন, অরাজনৈতিক সরকার দিয়ে দীর্ঘদিন দেশ চালানো যেমন কাজের কথা না ঠিক তেমনি রাজনৈতিক সরকার হতে চাওয়া সকল রাজনৈতিক দলগুলোর বোঝা উচিত মুক্তিযুদ্ধের পরে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে সকল প্রকার পূর্বানুমান (যেমন- বর্ষাকালে আন্দোলন হয় না, নির্বাচনের আগেই কেবল জোরেশোরে আন্দোলন হয়, ঘোষণা দিয়ে বিরোধী সকল পক্ষ আন্দোলনে শামিল না হলে সফল হয় না) অগ্রাহ্য করেই। সেটা সম্ভব হয়েছে সাধারণ মানুষের ন্যায্যতার আকাঙ্ক্ষা থেকেই।

সবশেষ এই নির্মাতা লিখেছেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষার দুই পয়সার দাম দেন নাই। সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষা, ইচ্ছা আর দেশপ্রেমকে পুঁজি করে অরাজনৈতিক এবং রাজনৈতিক যারাই রাজনীতি রাজনীতি খেলতে চাইবে, তাদের দশাও কোন একসময় যেন পলাতক শেখ হাসিনার মতো না হয়, সেই বিষয় নিশ্চিত করতে হবে তাদেরকেই।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ
দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম
‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’
‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী
ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত