সাকিবের নেতৃত্বে টি-টোয়েন্টিতে ঘুরে দাঁড়ানো
মাহমুদউল্লাহর নেতৃত্বে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশ যখন কঠিন সময় পার করছে, তখন বিসিবি নেতৃত্বে পালাবদল করে সাকিবের হাতে ঝান্ডা তুলে দেয়। সাকিব যখন দায়িত্ব পান, তখন অস্ট্রেলিয়ায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দরজায় কড়া নাড়ছে।
নেতৃ্ত্ব পেয়েই সাকিব দরকে নিয়ে উড়াল দেন নিউজিল্যান্ডে তিন জাতি টি-টোয়েন্টি খেলতে। স্বাগতিকরা ছাড়া অপর দল ছিল পাকিস্তান। সিরিজে বাংলাদেশ কোনো ম্যাচ জিততে না পারলেও বাজে সময় কাটিয়ে ওঠার ইঙ্গিত দিয়েছিল।
এাট যদি হয়ে থাকে সূচনা, তাহলে বিশ্বকাপে গিয়ে পায় আরও কিছু সাফল্য। ২০০৭ সালের পর পেয়েছিল নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে পেয়েছিল প্রথম জয়। পরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেও
ম্যাচ জিতেছিল। এই দুই জয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে সেমি ফাইনালে যাওয়ার রাস্তা তৈরি হয়ে গিয়েছিল। যদিও ম্যাচ জিততে পারেনি। এর আগের ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে বিতর্কিত আম্পায়ারিংয়ের শিকার হয়ে ম্যাচ হেরেছিল মাত্র ৫ রানে। আসরে বাংলাদেশ ৫ ম্যাচ খেলে শুধুমাত্র দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেই ভালো খেলতে পারেনি।
উন্নতির এই চূড়া ছোঁয়ার আকাঙ্ক্ষায় পূর্ণতা আসে ঘরের মাঠে সেই আসরেরই (টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ) চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথমে সিরিজ জয়,পরে হোয়াইটওয়াশ করে।
আগে থেকেই টেস্ট দলের অধিনায়কত্ব পালন করা সাকিব টি-টোয়েন্টি দলের দায়িত্ব পেয়েই সুদক্ষ নেতৃত্ব দলকে ক্রমান্বয়েই উপরের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন। শুরুতে তিনি পেয়েছিলেন শ্রীধরন শ্রীরামকে, এই আসর থেকে চন্ডিকা হাথুরুসিংহেকে। শ্রীধরন ছিলেন তিনটি আসরে (এশিয়া কাপ থেকে বিশ্বকাপ) আর হাথুরুসিংহে মাত্র শুরু করেছেন। এখনো তিনি দলের সবাইকে বুঝে উঠতে পারেননি। বিসিবি সভাপতিও আজ বলেছেন, হাথুরুসিংহে মাত্র শুরু করেছেন। এত জলদি তাকে নিয়ে মন্তব্য করা যাবে না।’ সাকিবই এখানে যোগ্য নেতা হিসেবে দলেকে সামনের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।
সাকিব শুধু নেৃতত্ব দিয়েই নয়, ব্যাটে-বলে ফিল্ডিংয়েও। উইন্ডিজে সিপিএলে খেলার কারণে যথাসময়ে নিউজিল্যান্ডে তিন জাতির আসরে যেতে না পারাতে সাকিব খেলতে পারেননি। এরপর তিনি বাকি তিন ম্যাচ খেলে রান করেছিলেন ৭০, ৬৮ ও ৭। বিশ্বকাপে তার ইনিংসগুলো ছিল ১, ২৩, ১৩, ও ০। এবার ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিনি করেছেন অপরাজিত ৩৪, ০ ও অপরাজিত ৪ রান।
বল হাতে তিনি নিউজিল্যান্ডে তিন জাতির আসরে কোনো উইকেট পাননি। বিশ্বকাপে তিনি উইকেট পেয়েছিলেন ৬টি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রতি ম্যাচেই ১টি করে।
সাকিব দ্বিতীয় দফায় এখন পর্যন্ত ১১ ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়ে জয় পেয়েছেন ৫টিতে। বাকি ৬টিতে হার। সবমিলিয়ে তিনি ৩৪ ম্যাচে অধিনায়কত্ব করে জয় পেয়েছেন ১২টিতে। হার ২২টিতে।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশ দল যে অভাবনীয় সাফল্য পেয়েছে সাকিব কিন্তু সিরিজ শুরুর আগে তা মোটেই ভাবেনি। তার ভাবনায় ছিল ভালো খেলা।
তিনি বলেন, ‘ওইভাবে (হোয়া্টিওয়াশ) ছিল না। আমরা সিরিজ শুরুর আগে আসলে চিন্তাও করিনি ম্যাচ জিততে হবে বা অন্য কিছু। আমরা খুব ভালো ক্রিকেট খেলতে চেয়েছি। তিন ম্যাচেই আমরা চেষ্টা করেছি ব্যাটিংয়ে যার যার জায়গা থেকে সর্বোচ্চটা দেওয়া।’
এমপি/এমএমএ/