বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল ২০২৫ | ২৭ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

সেলফিতে ডিজিটাল প্রতারণার ফাঁদ!

সামজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক জনপ্রিয় হওয়ায় ক্রমেই বাড়ছে সেলফির (নিজের ছবি নিজে তোলা) ব্যবহার। যে কোনো আনন্দঘন মুহূর্ত এক ক্লিকেই ক্যামেরাবন্দী করে রাখে সেলফি প্রেমীরা। আর এই সেলফি সোশ্যাল মিডিয়ায় হাজারও মানুষের ওয়ালে ওয়ালে ভেসে বেড়ায় দিনের পর দিন। দর্শকরা লাইক-কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারে তাদের অনুভূতি। এই জনপ্রিয়তার সুযোগ নিয়ে প্রতারণায় মেতেছে একটি চক্র। বেড়েছে নানা অপরাধ। এমনটাই মনে করেন রাজনীতি ও অপরাধ বিশ্লেষকরা।

তাদের দাবি, অনেক উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা আছেন যারা তাদের কর্মচারীকে চেনেন না। কেউ কেউ তাদের সঙ্গে সেলফি তুলে ফেসবুকে দিয়ে ওই কর্মকর্তার নাম ভাঙিয়ে বিভিন্ন প্রতারণামূলক কাজ করে থাকেন। যে বিষয় ওই কর্মকর্তা নিজেও অবগত নয়। এ ছাড়াও এমন রাজনৈতিক নেতা আছেন যারা তাদের কর্মীকে ভালোভাবে জানেন না। কোনোভাবে তার সঙ্গে ছবি তুলে মানুষের সামনে নিজেকে নেতার খাস লোক বলে পরিচয় দেন। পরে ওই সব ছবি দেখিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেন তারা।

রাজনীতি ও অপরাধ বিশ্লেষকদের মতে, সারাদেশে ২০ শতাংশ মানুষ বর্তমান সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে প্রতারিত হচ্ছে। তা ছাড়া কৌশলে হাই প্রোফাইল মানুষদের সঙ্গে ছবি তুলে প্রতারকরা সরল মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছে।

এদিকে সাধারণ মানুষের দাবি, এসব বিষয়ে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী তৎপর না হলে সাধারণ মানুষ আরও প্রতারিত হতে পারে। তারা মনে করেন, বিশেষ করে প্রভাবশালী মানুষের সঙ্গে ছবি তুলে গ্রামে গিয়ে বা অন্য কোথাও বেড়াতে গিয়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের প্রতারণার চেষ্টা করছে প্রতারকরা।

এমনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়িয়া উপজেলার মোছা. মাকসুদা বেগম। তার প্রতারিত হওয়ার অভিজ্ঞতা শেয়ার করে বলেন, ২০১৫ সালে জাপার নেতা জি এম কাদেরের সঙ্গে এক ভদ্রলোকের (প্রতারক) ছবি দেখেন তিনি। এরপর তাকে ধরেন ইউনিয়ন ব্যাংকের চাকরির জন্য। প্রতারক তাকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে ৫ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। এরপর ভুক্তভোগী মাকসুদাকে এক বছর পরে ভুয়া জয়েন্ট লেটার ধরিয়ে দেয়।

কথা হয় ফুলবাড়িয়ার আরেক ভুক্তভোগী মো. আলামিনের সঙ্গে। তিনিও প্রতারিত হওয়ার ঘটনা তুলে ধরে বলেন, তখন সে ছাত্র অবস্থায় একটি কোম্পানিতে অল্প বেতনে কাজ করতেন। কম বয়সে সরকারি চাকরি ও অতিরিক্ত টাকার নেশায় কোম্পানির চাকরিটা ছেড়ে দেন। প্রতারক কামাল হোসেনের সঙ্গে কথা হলে একটি মন্ত্রণালয়ের চাকরির জন্য ৪ লক্ষ টাকা প্রদান করেন তিনি। অবশেষে কৌশলে টাকা নিয়ে প্রতারক যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। এখন অনিশ্চয়তার মধ্যে টাকার শোকে হতাশায় ডুবছেন আলামিন।

বিভিন্নভাবে এমন প্রতারণার শিকার হন ঢাকা কলেজের ছাত্র নাসিম। তার এলাকার এক ব্যক্তির সঙ্গে তখনকার আইজিপি শহিদুল হকের একটি ছবি দেখেন। বেকারত্ব দূর করার লক্ষ্যে সে বাড়ি থেকে জমি বন্ধক রেখে একটি প্রাইভেট বাংকের চাকরির জন্য ওই প্রতারককে ধরেন, পরে তার কাছ থেকে কৌশলে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। যা এখনও ফেরত পাননি তিনি।

সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে হাইপ্রোফাইল ও বড় বড় প্রভাবশালী নেতাদের সঙ্গে বিভিন্ন প্রোগ্রামের কৌশলে একাধিক ছবি তোলেন প্রতারকরা। নেতাদের সঙ্গে সেলফি থাকায় প্রতারকরা নিজেদেরকে নেতা বলে দাবি করে সাধারণ মানুষকে ফাঁদে ফেলে। এমন প্রতারণার শিকার হওয়া বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা হয়। এসময় ভুক্তভোগীরা বিভিন্ন অভিযোগ করেন।

ভুক্তভোগী বাইজিত আহমেদ নামের এক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, বিএনপির নয়া পল্টন অফিসে কথিত এক সাংবাদিকের সঙ্গে পরিচয় হয়। বিএনপির একাধিক নেতাদের সঙ্গে তার ‘সেলফি’ দেখি। কিশোরগঞ্জ জেলায় দলীয় পোস্ট পাবার আশায় ওই সাংবাদিককে ২০ হাজার টাকা দিয়েছি। মিলছে না কোনো পদ।

এদিকে, বরিশাল জেলার যুবদলের কমিটিতে পদের আশায় মনির নামে এক ব্যক্তি বিএনপির পল্টন অফিসের এক কর্মচারীকে ১৫ হাজার টাকা দিয়েছেন। তিনি বলেন, 'তার নাম বলতে চাই না কারণ আমি টাকা দিয়ে অপরাধ করেছি। তবে আমি তার সঙ্গে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিবের একাধিক ছবি দেখেছি এজন্য তাকে বিশ্বাস করে টাকা দিয়েছিলাম। পরে শুনি সে পল্টন অফিসের কর্মচারী। লজ্জায় আর টাকা ফেরত চাই না।'

তিতুমীর কলেজের মো. আকবর হোসেন নামের এক ছাত্রনেতা কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক হওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা হাফিজকে ৫০ হাজার টাকা দেন, যদিও এর প্রমাণ পাওয়ার পর হাফিজকে ওই পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এদিকে যুবলীগে পদের আশায় গত কমিটিকে এক লক্ষ টাকা দিয়েছেন যশোর জেলার যুবলীগ নেতা ফয়সাল। সে একই সংগঠনের রাজনীতি করতেন। ভালো পদের জন্য টাকা দিয়েছেন। পরে কমিটিতে তার নাম না আশায় সে প্রতারকের কাছে টাকা ফেরত চাইলে তাকে বহিষ্কারের কথা বলেন যুবলীর সাবেক নেতা মনির।

বনানী থানার সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সাবের হোসেন বলেন, যুবলীগের বড় নেতার সঙ্গে অনেক ছবি দেখে নতুন কমিটিতে থাকার জন্য এক প্রতারককে কিছু টাকা দিয়েছিলাম পরে দেখি সে নিজেই পদ পায়নি।

এদিকে, লেখক ও বড় প্রোফাইলের মানুষদের সঙ্গে একাধিক ছবি দেখে পরিবারের খোঁজ-খবর না নিয়ে শামীম নামের এক ছেলের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দেন মহাখালী এলাকার কাজী রফিকুল ইসলাম। পরবর্তীকালে সে জানতে পারে ওই ছেলের গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুর। বাড়িতে শুধু ভিটামাটি ছাড়া আর কিছু নেই। অথচ বিয়ের আগে ওই ছেলে বিভিন্ন প্রভাবশালীদের ছবি দেখিয়ে তার মামা, চাচা, ফুফা বলে পরিচয় দিয়েছেন। ৬ মাস ঘর সংসারের পর ওই ছেলের কাছ থেকে মেয়েকে ডিভোর্স করান তিনি।

বিশেষ করে বর্তমানে দেশের রাজনীতিতে ‘সেলফি’ ইতিবাচকের চেয়ে নেতিবাচকের প্রভাবই বেশি। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ বড় রাজনৈতিক দলগুলোর প্রভাবশালী নেতাদের সঙ্গে সেলফিবাজি করে নিজেকে ‘ত্যাগী’ প্রমাণ করে অনেকে পদ বাগিয়ে নিচ্ছেন। অনেকে আবার ডিজিটালভাবে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। নেতাদের সঙ্গে ব্যক্তিগত সাক্ষাতের সেলফি তুলে নানা মাধ্যমে ছড়িয়ে দলের নীতি নির্ধারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন অনেকে। এই অভিনব কৌশলকে ফাঁদ হিসেবে ব্যবহার করে কেউ কেউ নেমেছেন প্রতারণায়। সহজসরল মানুষকে টার্গেট করে হাতিয়ে নিচ্ছেন বিপুল পরিমাণ অর্থ।

প্রভাবশালী বড় বড় রাজনৈতিক ব্যক্তি ও সরকারি কর্মচারীদের সঙ্গে ছবি তুলে সামাজিক মাধ্যমে ব্যবহার করে প্রতারণার বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ স্থানীয় কর্মকর্তাসহ রাজনৈতিক ও অপরাধ বিশেষজ্ঞগণ বিভিন্ন মত দিয়েছেন।

রাজনৈতিক নেতারা যা বললেন:

এ বিষয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রধান সদস্য নাজমুল হাসান জুয়েল বলেন, 'আমাদের সংগঠনের নিয়ম-শৃঙ্খলা খুবই কড়াকড়ি। কারণ এর আগের কমিটিতে সমালোচনা ছিল। বর্তমান যুবলীগ চেয়ারম্যান স্যার ও সাধারণ সম্পাদকদের নেতৃত্বে খুব সুনাম অর্জন করেছে এবং এটি সুসংগঠিত। এ সংগঠনের পদ-পদবির জন্য কারও নিকট থেকে টাকা নেওয়া হয় না। সাংগঠনিক যোগ্যতায় পদ-পদবির নির্ধারণ করা হয়।

জানতে চাইলে খালেদা জিয়ার প্রেস উইং সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সেলফি বা ছবি থাকতে পারে, এটা স্বাভাবিক। এটা নিয়ে প্রতারণার কিছু নেই। মানুষ সচেতন হলেই হয়।

সেলফি প্রতারণার বিষয়ে অপরাধ বিশেষজ্ঞদের ভাবনা

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিশেষজ্ঞ তহিদুল হক বলেন, সোশ্যাল মিডিয়াতে ছবি দেখিয়ে অথবা রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে সেলফি দেখিয়ে অনেকে প্রতারণা করার চেষ্টা করছে, অনেকে প্রতারিত হচ্ছেনও। কারণ আগের দিনে এই ডিজিটাল ব্যবহার ছিল না এজন্য এটাকে নতুন মাত্রা বলা যায়। যেহেতু এটা নতুন কৌশল, এ কারণে সরল মানুষদের অবশ্যই সতর্ক হতে হবে। কোনো কিছুতে প্রতারণার শিকার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, এমনটা মনে করলে সেই ক্ষেত্রে সচেতন মহলের সহযোগিতা নিতে পারে।

তিনি আরও বলেন, 'এমন ধরনের প্রতারণা করে যারা ধরা পড়ে তারা আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে বের হয়ে যায়। প্রতারকদের দমনে শক্তিশালী কোনো আইন না থাকায় দিন দিন এ অপরাধের সংখ্যা বাড়ছে। যার কারণে অনেক পরিবার অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। প্রযুক্তির যুগে যদি এসব বিষয়ে কঠিন আইন ও শাস্তির বিধান থাকে তাহলে হয়তো এ ধরনের অপরাধ কমে আসবে।'

সারাদেশে কত সংখ্যক মানুষ এমন প্রতারণার শিকার হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'এটা নির্দিষ্ট করে বলা খুবই কঠিন। তবে ২০ শতাংশ মানুষ এমন প্রতারণার শিকার হতে পারেন। এই প্রতারণার শিকার হন সহজ-সরল মানুষ। যদি দুয়েকটা ঘটনার সঠিক মতো বিচার হয় তাহলে এ ধরনের অপরাধ কমে আসবে। সর্বশেষ বলব এসব প্রতারণা থেকে বাঁচতে সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই।'

যা বললেন আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা:

গুরুত্বপূর্ণ ও অভিজাত ব্যক্তিদের সঙ্গে ছবি তুলে ফেসবুকে দিয়ে তাদের নাম ভাঙিয়ে হরহামেশাই প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে প্রতারকরা।

এ বিষয়ে চাইলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, এমন প্রতারণার শিকার যারা হচ্ছেন তাদের অতিরিক্ত লোভ-লালসা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। লোভের কারণে তারা এমন ধরনের অপরাধের শিকার হচ্ছেন। তা ছাড়া যদি কেউ কোনো হাই প্রোফাইল ব্যক্তির ছবি দেখিয়ে চাকরি বা অন্যান্য বিষয়ে সহযোগিতা করতে চায়, আর যদি নিজের সুবিধার জন্য কেউ লেনদেন করে সেক্ষেত্রে প্রতারকরা এর সদ্ব্যবহার করে থাকে।

প্রতারক থেকে এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়ে তিনি আরও বলেন, কেউ যদি এমন অপরাধের শিকার হন, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিন। প্রয়োজনে আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে তাদের পরামর্শ নিতে পারেন। তবে পুলিশের কাছে এমন অভিযোগ এলে পুলিশ সেগুলো আমলে নিয়ে কাজ করে।

জানতে চাইলে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) সহকারী পরিচালক আ ন ম ইমরান খান বলেন, অনেক সময় বিভিন্ন ফাংশনে হাই প্রোফাইল মানুষের সঙ্গে অনেকের দেখা হয় এবং সেখান অনেক মানুষ ছবি তোলেন। ছবি তোলা অন্যায় নয়, তবে এর অপব্যবহার অবশ্যই অন্যায়।

প্রতারক ব্যাপারে সচেতনা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়ে তিনি আরও বলেন, যদি কোনো হাই প্রোফাইল মানুষের সঙ্গে সেলফি দেখে কারো দ্বারা কেউ প্রতারণার শিকার হয় সেক্ষেত্রে দায়ভার ওই প্রতারিত ব্যক্তিরই, কারণ সে সচেতন না। যদি সে আগে থেকে সাবধান থাকত তাহলে হয়তো এ ধরনের প্রতারণার শিকার হতো না। এ ক্ষেত্রে সকলকে সচেতন হতে হবে এবং তাহলেই এ ধরনের ডিজিটাল অপরাধ অনেকটা কমে আসবে।

কেএম/টিটি

Header Ad
Header Ad

জেনে নিন গ্রীষ্মে সুস্বাদু আর উপকারী কাঁচা আমের ১১টি বিস্ময়কর গুণ

কাঁচা আম। ছবি: সংগৃহীত

গ্রীষ্মকাল মানেই কাঁচা আমের মৌসুম। ঝাল-টক স্বাদের এই ফল শুধু স্বাদেই নয়, পুষ্টিগুণেও ভরপুর। অনেকেই কাঁচা আম খেতে পছন্দ করেন, কিন্তু জানেন কি, এই টক-মিষ্টি ফলটির রয়েছে দেহের জন্য একাধিক স্বাস্থ্যকর উপকারিতা? এতে থাকা ভিটামিন সি, এ, কে, বি৬ ও ফোলেট শরীরের নানা গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমে সহায়তা করে। হজম, রক্তচাপ, ত্বক কিংবা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা—সবক্ষেত্রেই কাঁচা আম কাজ করে নিঃশব্দ সহায়কের মতো।

চলুন জেনে নেওয়া যাক কাঁচা আম খাওয়ার ১১টি দারুণ উপকারিতা-

১. গরমে শরীর রাখে ঠান্ডা ও সতেজ

প্রচণ্ড গরমে শরীর যখন পানিশূন্যতায় ভোগে, তখন কাঁচা আমের রস হতে পারে নিখুঁত সমাধান। এটি শরীরে সোডিয়াম ও অন্যান্য ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় রেখে হিটস্ট্রোক প্রতিরোধ করে।

২. হজম শক্তি বাড়ায়

কাঁচা আম পাচক রসের নিঃসরণ বাড়িয়ে হজমে সাহায্য করে। কোষ্ঠকাঠিন্য, গ্যাস, বদহজম, বুক জ্বালাপোড়া এমনকি বমি ভাব দূর করতেও এটি কার্যকর।

৩. হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়ক

এতে থাকা নিয়াসিন ও ফাইবার হৃদরোগ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে। এটি কোলেস্টেরল কমায় এবং রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে।

৪. লিভারকে রাখে সুস্থ

কাঁচা আম পিত্ত নিঃসরণ বাড়িয়ে লিভার পরিষ্কার রাখতে সহায়তা করে। বিষাক্ত পদার্থ শরীর থেকে বের করে দিয়ে এটি লিভারের কর্মক্ষমতা উন্নত করে।

৫. দাঁতের যত্নে দারুণ

মাড়ি থেকে রক্তপাত, মুখে দুর্গন্ধ বা দাঁতের ক্ষয়—এসব সমস্যায় কাঁচা আম বেশ কার্যকর। এটি মুখগহ্বরের ব্যাকটেরিয়া দমন করে।

৬. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়

ভিটামিন সি ও এ-তে ভরপুর কাঁচা আম শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদার করে। সর্দি, কাশি ও মৌসুমি সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে।

৭. রক্তের স্বাস্থ্য উন্নত করে

কাঁচা আম রক্তস্বল্পতা দূর করে, হিমোগ্লোবিন বাড়ায় এবং নতুন রক্তকণিকা তৈরিতে সাহায্য করে। এটি রক্তনালীর স্থিতিস্থাপকতাও বজায় রাখে।

৮. ত্বক ও চুলের যত্নে কার্যকর

এতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন এ ও সি ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়, বলিরেখা প্রতিরোধ করে এবং চুলের গোড়া শক্ত করে চুল পড়া কমায়।

৯. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক

যথোপযুক্ত পরিমাণে কাঁচা আম খাওয়া রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে। এটি ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়াতে সহায়তা করে, তবে অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত থাকা প্রয়োজন।

১০. মেজাজ ভালো করে ও ক্লান্তি দূর করে

কাঁচা আমের ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস মস্তিষ্কে সেরোটোনিন নিঃসরণে সাহায্য করে, যা মেজাজ ভালো রাখে ও গরমে সৃষ্ট অতিরিক্ত ক্লান্তি কমায়।

১১. ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে

কাঁচা আমে থাকা আঁশ ও পানি ওজন কমাতে সহায়তা করে। এটি দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে এবং অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কমায়।

Header Ad
Header Ad

এসএসসি পরীক্ষা না দিয়ে প্রেমিকের বাড়িতে অনশনে কিশোরী

ছবি: সংগৃহীত

বরগুনার আমতলীতে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ না নিয়ে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে অনশনে বসেছেন এক দাখিল পরীক্ষার্থী। আর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিয়ে না করলে আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছেন তিনি। আজ বৃহস্পতিবার উপজেলার পূর্ব চন্দ্রা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, উপজেলার মহিষকাটা এলাকার দাখিল পরীক্ষার্থী এক ছাত্রীর সঙ্গে পার্শ্ববর্তী চাওড়া ইউনিয়নের পূর্ব চন্দ্রা গ্রামের আরিফ মৃধার প্রেমের সম্পর্ক হয়।

গত তিন বছর ধরে তারা প্রেম করছে, এমন দাবি ওই পরীক্ষার্থীর।

প্রেমিক কলেজপড়ুয়া আরিফ মৃধা তাকে বিয়ে না করে কালক্ষেপণ করতে থাকেন। ৩ এপ্রিল আরিফের বাড়ি আসে ওই পরীক্ষার্থী। পরে আরিফের পরিবার বিয়ের আশ্বাস দিয়ে তাকে আমতলী থানায় পাঠায়। পুলিশ তাকে স্থানীয় মনির প্যাদার হেফাজতে দেন। কিন্তু আরিফ তাঁকে বিয়ে করেননি।

আজ তার দাখিল পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল। সে পরীক্ষায় অংশ না নিয়ে আরিফ মৃধার বাড়িতে অনশনে বসেছে। পরে সে ঘোষণা দেয়, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আরিফ তাকে বিয়ে না করলে আত্মহত্যা করবে। অপর দিকে আরিফ মৃধা ও তাঁর পরিবার এলাকা ছেড়ে চলে গেছে।

এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসী ঘটনার সুষ্ঠু সমাধান দাবি করেছেন।

ওই দাখিল পরীক্ষার্থী বলে, ‘আরিফ মৃধা আমার সঙ্গে তিন বছর ধরে প্রেম করছেন। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আমাকে একাধিকবার ধর্ষণ করেছেন। এখন তাঁর পরিবারের কথামতো আমাকে বিয়ে করতে রাজি না। তাই আমি পরীক্ষা দেওয়া বন্ধ করে বিয়ের দাবিতে আরিফের বাড়িতে অনশনে বসেছি। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিয়ে না করলে আমি আত্মহত্যা করব। আমি তো আমার সবই হারিয়েছি। এখন আর কোথাও যাওয়ার সুযোগ নেই।’

ওই পরীক্ষার্থী বলে, ‘৩ এপ্রিল আমি এ বাড়িতে আসার পর আরিফের মা আমাকে তাঁর ছেলের সঙ্গে রাতে থাকতে দিয়েছেন, এখন তাঁরা পালিয়ে গেছেন।’

স্থানীয় ইউপি সদস্য রুহুল আমিন বলেন, ‘দুই পরিবার বসে সমাধান করতে বলেছি। সমাধান হয়েছে কি না, আমি জানি না।’ এ বিষয়ে কথা বলতে আরিফ মৃধা ও তাঁর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাঁদের পাওয়া যায়নি।

আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, ‘বিষয়টি জানি। মেয়ের বিয়ের বয়স হয়নি। তাই আমি একজনের জিম্মায় দিয়েছিলাম।’

ওসি বলেন, মেয়ের পরিবারের লোকজনকে জানানো হয়েছে, কিন্তু তাঁরা মেয়েকে নিতে রাজি নন।

Header Ad
Header Ad

সাধারণ মানুষ চায় এই সরকার আরো ৫ বছর থাকুক: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা (অব.) জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা (অব.) জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ‘দেশের সাধারণ মানুষ চাচ্ছে এই সরকার যেন আরো ৫ বছর রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকে।’ বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) দুপুরে সুনামগঞ্জ জেলার শান্তিগঞ্জ থানা পরিদর্শনে এসে তিনি এ কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মতৎপরতা আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে, আরও বাড়বে। আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার যেন রোধ হয় সে বিষয়ে পুলিশ তৎপর থাকবে। যারা পরিস্থিতির অবনতি করতে চায়, আমরা তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসছি। পরিস্থিতি আস্তে আস্তে আরও উন্নতি হচ্ছে। সাধারণ মানুষ চাচ্ছেন এই সরকার যেন আরও অন্তত ৫ বছর রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকে।

শেখ হাসিনাকে ফেরত আনার বিষয়ের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ক্রিমিনালদের হ্যান্ডওভারের বিষয়ে ভারতের সঙ্গে আমাদের একটি চুক্তি আছে। এই চুক্তির আন্ডারে হয়তো তাকে আনার চেষ্টা করা হবে। ভারতের সঙ্গে আমাদের যুদ্ধের কোনো শঙ্কা নেই।

হাওরের কৃষির উন্নয়নে সরকারের পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘হাওরসহ সারা দেশে অনেক পতিত জমি পড়ে আছে। আমরা এই জমি চাষের আওতায় আনতে ৫০০ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করেছি। যার মাধ্যমে পতিত জমি চাষের আওতায় আনা হবে।’

থানা পরিদর্শনের সময় উপস্থিত ছিলেন সিলেট বিভাগীয় পুলিশ কমিশনার খান মোহাম্মদ রেজাউন্নবী, সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মো. মুশফেকুর রহমান, সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক ড. মুহাম্মদ ইলিয়াছ মিয়া, পুলিশ সুপার তোফায়েল আহম্মদ, শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুকান্ত সাহা, ওসি আকরাম আলী প্রমুখ।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

জেনে নিন গ্রীষ্মে সুস্বাদু আর উপকারী কাঁচা আমের ১১টি বিস্ময়কর গুণ
এসএসসি পরীক্ষা না দিয়ে প্রেমিকের বাড়িতে অনশনে কিশোরী
সাধারণ মানুষ চায় এই সরকার আরো ৫ বছর থাকুক: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে টাঙ্গাইলে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মানববন্ধন
জিয়াউর রহমান বেঁচে থাকলে ইসরায়েল এমন অপকর্মের সাহস পেত না: মির্জা আব্বাস (ভিডিও)
নওগাঁয় গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ২
বাংলাদেশ রেলওয়ের দুই কর্মকর্তাকে পদায়ন ও বদলি
২০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশে হাসপাতাল বানাচ্ছে মার্কিন কোম্পানি
কাদের-কামালসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারি করতে চিঠি
সিলেটে থানায় লালগালিচা দেখে ক্ষোভ ঝাড়লেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
দিল্লিতে লিঙ্গ পরিবর্তনের চিকিৎসা নিতে এসে গ্রেপ্তার ৫ বাংলাদেশি
রবিবার ৩ জেলায় সাধারণ ছুটি, সবমিলিয়ে টানা ৪ দিনের অবকাশ
এসএসসির ফল ৬০ দিনে প্রকাশের চেষ্টা করা হবে: শিক্ষা উপদেষ্টা
পূর্বাচলে প্লট দুর্নীতি: শেখ হাসিনা-পুতুলসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা
যমুনা নদী বাঁধ দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের দায়ে ৭ জনকে কারাদন্ড
ভারত ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করায় ৪ বাংলাদেশি পণ্যবাহী ট্রাক পেট্রাপোল বন্দর থেকে ফেরত
মেয়েকে কেন্দ্রে নেওয়ার পথে অসুস্থ হয়ে বাবার মৃত্যু, পরীক্ষার হলে মেয়ে জানে না মৃত্যুর খবর
‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ’ নয়, ‘বাংলাদেশ জনকল্যাণ রাষ্ট্র’ নাম চায় ইসলামী আন্দোলন
৩১৩ জনকে ডিঙিয়ে আগাম জামিন পেলেন সন্ত্রাসী সাজ্জাদকে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা দিয়ে ছাড়াতে চাওয়া স্ত্রী তামান্না
নিউ জার্সিতে সড়ক দুর্ঘটনায় বাংলাদেশি প্রবাসীসহ মেয়ের মৃত্যু