বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ২২ মাঘ ১৪৩১
Dhaka Prokash

মামলা হলেও বিচার হয় কি?

১০ বছরে কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত ১১৭৬

সম্প্রতি সারাদেশে বিভিন্ন জায়গায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা বেড়ে গেছে। প্রতিদিন কোথাও না কোথাও এমন ঘটনা ঘটছে বলে জানিয়েছেন ফায়ারসার্ভিস। বেশিরভাগ ভুক্তভোগীই সাধারণ মানুষ ও শ্রমিক। দেখা যাচ্ছে, কোথাও গ্যাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়ে আবার কোথাও শর্ট সার্কিট থেকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সাধারণ মানুষ।

সাধারণ মানুষের অভিযোগ, এখন যেমন অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে কয়েক বছর আগে এতটা অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ছিল না। হঠাৎ এত অগ্নিকাণ্ড কেন? এসব বিষয় নিয়ে যাচাই-বাছাই করতে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।

এদিকে বিশ্লেষকরা বলছেন, বিভিন্ন কলকারখানায় শ্রমিকদের জন্য উপযুক্ত কর্ম পরিবেশ এবং অগ্নি নির্বাপক সরঞ্জামাদির পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় কোনোভাবে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে তাৎক্ষণিক অগ্নিনির্বাপনের ব্যবস্থা নেওয়া যায় না যার ফলে অগ্নিকান্ড ভয়াবহ হয়ে ওঠে এবং এতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় শ্রমিকরা।

বিশ্লেষকদের দাবি, সরকারিভাবে প্রত্যেকটা শিল্প-কলকারখানায় তদারকি করতে হবে। উপযুক্ত কর্ম পরিবেশ আছে কি না দেখতে হবে। যদি কোনোভাবে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে তাহলে তারা যাতে অন্তত জীবন নিয়ে ফিরে আসতে পারে এমন ব্যবস্থা করতে হবে।

বিশ্লেষকরা আরও বলছেন, শ্রমিক নিয়ে যেসব মানুষ বা শিল্প কারখানার মালিকেরা খেলা করছেন, শ্রমিকদের উপযুক্ত কর্মপরিবেশের ব্যবস্থা করছেন না, নিয়মনীতি মানছেন না, তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে এবং প্রতিটি ঘটনা সঠিকভাবে তদন্ত করতে হবে তাহলেই অগ্নিকাণ্ড অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আসতে পারে।

সাভার আশুলিয়ায় সবচেয়ে বেশি অগ্নিকাণ্ড

একটি তথ্য বলছে, চলতি বছরের গেল ২৩ ফ্রেব্রুয়ারি সাভারের আশুলিয়া বঙ্গবন্ধু রোডে এশিয়ান ইউনিভার্সিটির সামনে ইউনিওয়ার্ল্ড ফুটওয়্যার কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৩ জন মৃত্যুবরণ করেন এর মধ্যে দু’জন নারী অপর ব্যক্তির লাশ এমনভাবে পুড়ে গেছে চিহ্নিত করার কোনো উপায় নেই বলে জানিয়েছে ফায়ারসার্ভিস। এ ঘটনাটি সারাদেশে নতুন করে ব্যাপকভাবে সমালোচিত হচ্ছে। বলা হচ্ছে, তেমন কোনো কারখানায় শ্রমিকদের জন্য নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেই যার কারণে শ্রমিকদের এভাবে নির্বিচারে প্রাণ দিতে হচ্ছে।

এ ঘটনার পর বিভিন্ন মহল উদ্বেগ প্রকাশ করে। বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন ও সাধারণ মানুষ বলছেন, সম্প্রতি সাভার-আশুলিয়ায় যে ঘটনাটি ঘটেছে সম্পূর্ণ মালিকের অবহেলার কারণে এটি ঘটেছে। অগ্নিকাণ্ড ঘটার পর সেখান থেকে শ্রমিকদের বের হবার যথেষ্ট সময় ছিল এরপরও কেন শ্রমিকরা বের হতে পারেননি? সে বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। তাদের অভিযোগ, অবিলম্বে আগুনে দগ্ধ হয়ে ৩ শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনাটি যাতে সুষ্ঠু তদন্ত হয় এবং এর সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হয়।

বেশ কয়েকটি পরিসংখ্যান বলছে, সাভার আশুলিয়াতেই বেশি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে। কারণ ঢাকার মধ্যে প্রশাসন কড়া নজরদারি রাখে, আশুলিয়া-সাভার ঢাকার বাইরে হওয়ার কারণে সরকারিভাবে নজরদারির ঘাটতি রয়েছে। যার কারণে অতিরিক্ত দুর্ঘটনা ঘটছে এসব এলাকায়।

সাভারে সবচেয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল তাজরীন ফ্যাশন লিমিটেডে

ঢাকার আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুর তাজরীন ফ্যাশনস লিমিটেড কারখানার অগ্নিকাণ্ডে বহু হতাহতের ঘটনাটি এখনো দেশের মানুষের হৃদয়কে নাড়া দেয়। এরপর শিল্প কারখানায় শ্রমিকদের নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও উত্তর মেলেনি সেসব প্রশ্নের। বিগত কয়েক দশকে দেশে বেশ কয়েকটি ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। সেখানে বহু মানুষের প্রাণহানির পাশাপাশি ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও নেহায়েত কম নয়।

সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের দায়িত্বহীনতায় একের পর এক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই কোন মামলা হয়নি। আবার দু-একটি ক্ষেত্রে মামলা হলেও সাজা হয়নি দোষীদের। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দায়ীদের চিহ্নিত করা হলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। মামলার পর নানামুখী চাপে আসামিরা গ্রেপ্তার হলেও কিছুদিন পর জামিন নিয়ে তারা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। একই সঙ্গে রয়েছে নিয়মনীতি না মানা ও নজরদারি না থাকার অভিযোগ এসব কারখানার বিরুদ্ধে। মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে এসব শিল্প কারখানায় কাজ করা শ্রমিকরাই আগুনে দগ্ধ হয়ে বেশি মারা গেলেও তা দেখার কেউ নেই এমনটাই অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।

পরিসংখ্যান বলছে ১০ বছরে অগ্নিকান্ডে ১১৭৬ জন‌ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে

ফায়ার সার্ভিসের পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, ২০১২ সালে কারখানায় আগুনের ঘটনায় ২১০ জন নিহত ও ৮০৩ জন আহত হন, ২০১৩ সালে ১৬১ জন নিহত ও ১ হাজার ৪৭১ জন আহত হন, ২০১৪ সালে ৭০ জন নিহত ও ২৫০ জন আহত হন। একইভাবে ২০১৫ সালে আগুনের ঘটনা ছিল এক হাজার ১৩টি। এত নিহত হন ৬৮ জন।

২০১৬ সালে এক হাজার ১৬৫টি আগুনের ঘটনায় মারা গেছেন ৫২ জন। ২০১৭ সালে ১ হাজার ১৯টি শিল্প কারখানার আগুনে মারা যান ৪৫ জন। ২০১৮ সালে এক হাজার ১৩১টি দুর্ঘটনায় আগুনে পুড়ে মারা যান ১৩০ জন। ২০১৯ সালে ৯৯৭টি আগুনের ঘটনায় মারা যান ১৩৪ জন। ২০২০ সালে ৭৫৬টি আগুনে ১৫৩ জন মারা যান। তথ্য বলছে, ২০২১ সালেই আগুনের ঘটনায় ১৪২ জন মারা যান। যার বেশিরভাগই শ্রমিক। এর মধ্যে ৫৭ জন পুরুষ ও ৮৫ জন নারী।

এদিকে একটি সূত্র জানায়, চলতি বছর ২০২২ এর জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ১১ জন শ্রমিক নিহত হয়েছেন। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ১০ বছরে কারখানায় আগুন লেগে মারা গেছেন ১১৭৫ জন মানুষ। তবে এসব আগুনের ঘটনায় প্রতিষ্ঠানের বিভাগীয় কর্মকর্তা বা কর্মচারীর কোনো আহত বা নিহত হবার কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

রানা প্লাজা ধসের পর কারখানাগুলোর নিরাপত্তা বাড়ানো হলেও বর্তমান তা ঢিলেঢালা

গত এক দশকে তাজরীন ফ্যাশনসের পর বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় শিল্প কারখানার বড় দুর্ঘটনা হলো হাসেম ফুডস লিমিটেড কারখানার আগুন। ২০১২ সালে তাজরীন ফ্যাশনের আগুন এবং পরের বছর রানা প্লাজা ধসের পর পোশাক খাতের কারখানাগুলোর নিরাপত্তা বাড়াতে নানা উদ্যোগ দেখা গেছে।

এক্ষেত্রে ২০১৮ সালের পর থেকে পোশাক কারখানায় অগ্নিকাণ্ড এবং মৃত্যু অনেকটাই কমে এসেছে। কিন্তু একই সময়ে অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের বেশিরভাগ ঘটনাই পোশাক খাতের বাইরে শিল্প কারখানায় ঘটছে। এ সময়ে কয়েক বছর নিরাপত্তা উদ্যোগ থাকলেও বর্তমানে তা ঢিলেঢালা রয়েছে বলে মনে করছেন অনেকেই। তা ছাড়া, গত বছর এবং চলতি বছরে এ অগ্নিকাণ্ড আবারও বেড়েছে বলে মনে করছেন বিশেষ মহল।

অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মামলা হলে যা হয়

ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাগুলোর মধ্যে মাত্র ৪ টি ঘটনায় মামলা হয়। এর মধ্যে তাজরীন ফ্যাশনস কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তদন্ত শেষে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দেওয়া হলেও বিচার কার্যক্রম এখনো শেষ হয়নি। মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে। আর চকবাজারের চুড়িহাট্টা ট্র্যাজেডি ও বনানীর এফআর টাওয়ারের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মামলা হলেও তদন্ত কার্যক্রম শেষ হয়নি। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় সজীব গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান সেজান জুস কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অন্তত ৫২ জন শ্রমিক মারা যায়। এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলা হয়। পরে মালিকসহ ৮জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। কিন্তু এ মামলারও তদন্তকাজ আজও শেষ হয়নি। প্রতিটি মামলায়ই বেশিরভাগ আসামিরা জামিনে রয়েছে বলে জানা গেছে।

২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরের তাজরীন ফ্যাশনস কারখানায় ভয়াবহ আগুনে ১১৭ জনের মৃত্যু ও দুই শতাধিক শ্রমিক আহত হন। ওই দুর্ঘটনায় মামলা হলেও আজও বিচার শেষ হয়নি। ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি চকবাজারের চুড়িহাট্টা মোড়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৭১ জনের প্রাণহানির পর অবহেলাজনিত মৃত্যুর মামলা করার মধ্যেই আইনি প্রক্রিয়া সীমাবদ্ধ রয়েছে। দুই বছরেও তদন্ত শেষ হয়নি।

বনানী আরএফ টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের মামলার তদন্ত এখনও শেষ হয়নি

২০১৯ সালের ২৮ মার্চ রাজধানীর বনানীতে এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলে ২৫ জন ও পরে ১ জনের মৃত্যু হয়। এ ছাড়া এ সময় উদ্ধার অভিযানে আহত উদ্ধারকর্মী ফায়ারম্যান সোহেল চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ ঘটনায় বনানী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মিল্টন দত্ত একই বছরের ৩০ মার্চ বাদী হয়ে মামলা করেন। এ মামলার ও তদন্ত শেষ হয়নি।

যা বলছেন সচেতন মহল-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা

এ বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে এ্যাডভোকেট ফেরদৌস সুলতানা বলেন, অগ্নিকাণ্ডের মামলায় দোষীদের সাজা নিশ্চিত করতে হবে। একইসঙ্গে কারখানাগুলোতে যথাযথ আইন প্রয়োগ করতে হবে। তাহলেই এ ধরনের ঘটনা অনেক কম ঘটবে।

গার্মেন্ট শ্রমিক ঐক্য ফোরামের নেতা মোশরেফা মিশু বলেন, অতি লাভের আশায় মালিকপক্ষ অগ্নিনির্বাপন বা সুরক্ষার দিকে তেমন কোনো নজর দেন না। তাদের অবহেলায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অগ্নিকাণ্ডে শ্রমিকদের প্রাণহানির ঘটনা বাড়ছে। নানামুখী চাপে দু-একটি ক্ষেত্রে মামলা হলেও সাজার কোনো নজির নেই।

তিনি বলেন, ‘উপযুক্ত বিচারের মাধ্যমে দোষীদের সাজার ব্যবস্থা করতে হবে। যদি সেটা না হয় তাহলে শ্রমিকদের জীবনের সুরক্ষার দিকে মালিকরা নজর দেবেন না।’

এ বিষয়ে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের যুগ্ম মহাপরিদর্শক ফরিদ আহমেদ বলেন, ‘পরিদর্শন একদমই যে হয় না, সেটা ঠিক নয়। আমাদের সীমাবদ্ধতাও আছে। আমাদেরকে কর্মীদের কিছু ব্যক্তিগত অভিযোগ অ্যাটেইন করতে হয়।’

তিনি বলেন, ‘আগে আমাদের জনবল ছিল ৩৩৩ জন, এরপরে ৯৩৩ জন হয়েছে। কিন্তু আমাদের রাইজের সঙ্গে তুলনা করলে শিল্পখাতের উন্নয়ন বা কমার্শিয়াল এন্টারপ্রাইজের ডেভলপমেন্ট আরও দ্রুত হচ্ছে। আমরা দ্বিতীয় পর্যায়ে ২ হাজার ৭৮০ জন জনবল চেয়ে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছি। এ ছাড়া আমরা ইন্ডাস্ট্রিয়াল সেফটি ইউনিট গঠনের প্রস্তাব করেছি।’

মামলা না হওয়ায় আরও ভয়াবহ হচ্ছে অগ্নিকাণ্ড

১৯৯৫ সালে ঢাকার ইব্রাহিমপুরের লুসাকা অ্যাপারেলসে অগ্নিকাণ্ডে ১০ জন কর্মী প্রাণ হারান। ১৯৯৬ সালে ঢাকার তাহিদুল ফ্যাশনে ১৪ জন এবং সিনটেক্স লিমিটেডের কারখানায় ১৪ জন পুড়ে মারা যান। ১৯৯৭ সালে মিরপুরের তামান্না গার্মেন্টেসে ২৭ জন এবং মিরপুর-১ নং মাজার রোডের রহমান অ্যান্ড রহমান অ্যাপারেলসে আগুনে ২২ শ্রমিক মারা যান। ২০০০ সালের ২৫ নভেম্বর নরসিংদীর চৌধুরী নিটওয়্যার লিমিটেডে আগুনে ৫৩ জন শ্রমিকের প্রাণহানি ঘটে।

২০০০ সালে বনানীর চেয়ারম্যানবাড়িতে গ্লোব নিটিং ফ্যাশন লিমিটেডে ১২ শ্রমিক অগ্নিকাণ্ডে মারা যায়। ২০০১ সালে মিরপুরের মিকো সোয়েটার লিমিটেডে আগুনের গুজবে পদদলিত হয়ে ২৪ জন শ্রমিক মারা যান। ২০০৫ সালে নারায়ণগঞ্জের গোদনাইলে সান নিটিং গার্মেন্টে আগুনে ২০ জন শ্রমিক মারা যান।

২০১০ সালের ৩ জুন পুরান ঢাকার নিমতলীতে কেমিক্যালের গুদামে ভয়াবহ আগুনে শিশুসহ ১২৫ জন নিহত হয়। এসব ঘটনার একটিতেও মামলা হয়নি। দায়ীরা সবাই রয়ে গেছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে।

এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের উপপরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) দিনমনি শর্মা ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ‘শিল্প কারখানায় আগুন লাগার ঘটনা আগের চেয়ে অনেক কমে গেছে।’

প্রতিবছর আগুনে এত মানুষের মৃত্যুতে মালিকদের অবহেলা থাকলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না কেন?

জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা তো শুধু সেবা দিয়ে থাকি। বিচার করা বা আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া আমাদের কাজ নয়। অগ্নিকাণ্ডের পর আমরা তদন্তকারী সংস্থার কাছে প্রতিবেদন জমা দেই। দোষীদের ব্যবস্থা যারা নেন এ বিষয়টি তারাই বলতে পারবেন। তবে যেকোনো অগ্নিকাণ্ডে ফায়ার সার্ভিস দ্রুত সেবা দিয়ে থাকে।’

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘বাংলাদেশে শিল্প কারখানা স্থাপনে নিয়ম-কানুন আর বিধি-বিধান থাকলেও কোনো বড় দুর্ঘটনা ঘটলেই দেখা গেছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কারাখানা মালিকপক্ষ সেটি অমান্য করেছেন। অতি লাভের আশায় মালিকপক্ষের অবহেলায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অগ্নিকাণ্ডে শ্রমিকদের প্রাণহানির ঘটনা বাড়ছে। আর সেই সাথে সামনে আসে কর্তৃপক্ষের নজরদারির অবহেলার বিষয়টিও। নানামুখী চাপে দু-একটি ক্ষেত্রে মামলা হলেও সাজার কোনো নজির নেই। ফায়ার সেফটি প্রযুক্তি উন্নত করা এবং উপযুক্ত বিচারের মাধ্যমে দোষীদের সাজার ব্যবস্থা করলে এ ধরনের দুর্ঘটনা কমে আসবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বুয়েটের বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ প্রফেসার মো. আশিকুর রহমান ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ‘শিল্প কলকারখানায় যথাযথ মনিটরিং নেই। এবং যথাযথভাবে অগ্নিনির্বাপক সরঞ্জামাদি না থাকায় শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলছে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে মনিটরিং এর অভাব রয়েছে। বিশেষ করে মনিটরিংয়ের দিকে গুরুত্ব দিতে হবে এবং মেয়াদোত্তীর্ণ অগ্নি নির্বাপক সরঞ্জাম সরিয়ে ফেলে সেখানে নতুন করে অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে যাতে শ্রমিকরা অন্তত আগুন ধরলে খুব অল্প সময়ের মধ্যে ফ্যাক্টরি বা গার্মেন্টস কারখানা থেকে বের হতে পারে। তা ছাড়া মালিক এবং শ্রমিকরা একটু যদি সতর্ক থাকে তাহলে ধরনের দুর্ঘটনা অনেকটা কমে আসবে।

এ সম্পর্কে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিশেষজ্ঞ তৌহিদুল হক ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ‘নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে গড়ে ওঠা শিল্প-কারখানাগুলোর বেশিরভাগই নজরদারির বাইরে রয়েছে। আর ছোট-বড় আগুনের ঘটনায় তদন্ত কমিটি হয়। কমিটি প্রতিবেদনও দেয়। তবে সে অনুযায়ী কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। যার ফলে বার বার দুর্ঘটনার বলি হন নিরীহ শ্রমিকরা। আইনের যথাযথ প্রয়োগ থাকলে এ ধরনের ঘটনা কমে আসবে বলে মনে করেন তিনি।

কেএম/এমএমএ/

Header Ad
Header Ad

আমরা কী করলাম, সেটি ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বিচার করবে : প্রধান উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আমরা কী করলাম বা করলাম না- ভবিষ্যৎ প্রজন্ম সেটি দিয়ে আমাদের বিচার করবে।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে জনপ্রশাসন ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন গ্রহণ অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ড. ইউনূস বলেন, দেশের রাজনৈতিক দল ও অংশীজনদের ঐকমত্যে পৌঁছানোর জন্য এসব প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে এবং এর ভিত্তিতেই সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়িত হবে। তিনি আরও বলেন, "এটি জাতির জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ। আমি জাতির পক্ষ থেকে কমিশনের দুই চেয়ারম্যানসহ সকল সদস্যকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।"

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, "এই দুটি প্রতিবেদন দেশের প্রতিটি মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলবে। আপনি দরিদ্র, মধ্যবিত্ত বা ধনী যেই হোন না কেন, এই সংস্কারের প্রভাব থেকে কেউই বাদ যাবেন না।"

তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, "কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়িত হলে নাগরিকরা তাদের প্রকৃত অধিকার ফিরে পাবেন। আমরা যেন সত্যিকারের নাগরিক হিসেবে মর্যাদা পাই, সেটিই আমাদের প্রত্যাশা।"

সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জনগণ, রাজনৈতিক দল ও সিভিল সোসাইটি অর্গানাইজেশনের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে জানান ড. ইউনূস। তিনি বলেন, "যাতে সবাই মনে করতে পারে, এখানে প্রকৃত সত্য বলা হয়েছে, ভুক্তভোগীদের বাস্তব চিত্র উঠে এসেছে। আমাদের তো পণ্ডিত হতে হবে না এটি বোঝার জন্য, কারণ প্রতিদিনই আমরা নানা অবিচারের শিকার হই।"

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, "সংস্কার কমিশনের কাজ শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, এটি বিশ্বব্যাপী গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। বিশ্বের দরবারে এটি তুলে ধরতে হলে এর ইংরেজি অনুবাদ করা প্রয়োজন।"

কমিশনের সদস্যদের প্রশংসা করে তিনি বলেন, "আপনাদের প্রজ্ঞা, অভিজ্ঞতা ও গবেষণার সংমিশ্রণে এই প্রতিবেদন তৈরি হয়েছে, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে এক স্মরণীয় দলিল হয়ে থাকবে।"

তিনি আরও বলেন, "আমরা কী করলাম বা করলাম না, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আমাদের সেই কাজের জন্যই বিচার করবে। তারা প্রশ্ন করতে পারে, আপনারা তো পেয়েছিলেন, তাহলে বাস্তবায়ন করেননি কেন? কারণ, সবকিছু তো বইয়ের পাতায় লেখা আছে। এই কাজ জাতির জন্য এক মূল্যবান স্মারক হয়ে থাকবে।"

Header Ad
Header Ad

হাসিনার বিচারের স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে: তারেক রহমান

সমাবেশে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপির) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার আগে দেশের সবকিছু ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। বিএনপি নেতাকর্মীসহ অসংখ্য মানুষকে গুম ও খুন করে স্বৈরাচার ভারতে পালিয়ে গেছে। যে কোন মূল্যে পালিয়ে যাওয়া স্বৈরাচারের বিচার করতে হবে। এই প্রশ্ন গণতান্ত্রিক সব রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে 'আমরা বিএনপি পরিবারের উদ্যোগে ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলায় জুলাই আগস্ট বিপ্লবে নিহত ৪৫ শহীদ পরিবারকে আর্থিক অনুদান এবং ‌র‌্যাবের গুলিতে নিহত যুবদল নেতা মোহাম্মদ মাসুদের পরিবারকে ঘর উপহার উপলক্ষ্যে সোনাগাজী সরকারি ছাবের পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত সমাবেশে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তারেক রহমান আরও বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংস্কারের কথা বলে যে সময়ক্ষেপণ করছে এবং সংস্কার কাজ দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর করছে, তা কোনো ষড়যন্ত্রের অংশ কি-না সে ব্যাপরে সবাই সজাগ থাকতে হবে।

এ সময় তিনি বলেন, পতিত স্বৈরাচার বিগত ১৭ বছর মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল । সে অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য বিএনপির নেতাকর্মীরা রাজপথে লড়াই করে বুকের তাজা রক্ত বিলিয়ে দিয়েছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধ, বিগত ১৭ বছরের লড়াই এবং ২৪এর জুলাই আগস্টের বিপ্লবের চেতনায় আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মানে সবাইকে সংগ্রাম অব্যাহত রাখতে হবে। এখন দেশে যে সংস্কারের আলোচনা চলছে সেই সংস্কার প্রস্তাব বিগত আড়াই বছর পূ্র্বে আমরাই দিয়েছিলাম। স্বৈরাচার আমাদের সংস্কার প্রস্তাব আমলে নেয়নি। আর সেই বিশ্বাস থেকেই আমরা জাতির সামনে ৩১ দফা উপস্থাপন করেছি। কারণ বিএনপি দেশ ও জনগণ নিয়ে ভাবে। দেশের কল্যাণে কাজ করতে চায়।

দ্রুত জাতীয় নির্বাচনের তাগিদ দিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পেলে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হবে এবং শহীদদের স্বপ্নের দেশ বিনির্মাণ হবে।

বিএনপি দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করতে প্রস্তুত উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, বিএনপি সব সময়ই দেশ ও জনগণের কল্যাণ নিয়ে ভাবে। এর বড় কারণ হলো- দেশের জনগণ বিএনপির উপর আস্থা রাখতে চায়। কীভাবে রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠবে এবং দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজে আসবে নেতাকর্মীদের সে বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে।

আমরা বিএনপি পরিবার কেন্দ্রীয় কমিটির আহবায়ক আতিকুর রহমান রুমনের সভাপতিত্বে ও ফেনী পৌর বিএনপি'র সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন ভূঁইয়া ও আমরা বিএনপি পরিবার কেন্দ্রীয় কমটির সদস্য সচিব মোকছেদুল মোমিন মিথুনের যৌথ পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভেকেট রুহুল কবির রেজভী, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা জয়নাল আবেদীন ফারুক,জয়নাল আবেদীন ভিপি জয়নাল, যুগ্ম-মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, কোষাধ্যক্ষ এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হারুনুর রশিদ হারুন, সহ প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রেহানা আক্তার রানু, নির্বাহী কমিটির সদস্য বেলাল আহমেদ, অ্যাডভোকেট শাহানা আক্তার শানু, আবদুল লতিফ জনি, জালাল আহমদ মজুমদার, মামুনুর রশিদ মামুন, মশিউর রহমান বিপ্লব, ফেনী জজ কোর্টের পিপি অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন খান, জেলা বিএনপির আহবায়ক শেখ ফরিদ বাহার, যুগ্ম আহবায়ক গাজী হাবিব উল্লাহ মানিক, সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন আলাল, সোনাগাজী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক জামাল উদ্দিন সেন্টু, সদস্য সচিব সৈয়দ আলম ভূঞা, শহীদ ছাত্রদল নেতা কাওছার উদ্দিনের পিতা ফিরোজ আলম, শহীদ মেহাম্মদ মাসুদের কন্যা মুনতাহা বিনতে মাসুদ ও শহীদ জাফর আহমদের কন্যা জাহানারা বেগম প্রমুখ।

এসময় ২০১৬ সালের ২৫ জুন র‌্যাবের গুলিতে নিহত মোহাম্মদ মাসুদের পরিবারকে ঘর এবং ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরে চব্বিশের ছাত্র-জনতার গণআন্দোলন চলাকালে নিহত ৪৫ শহীদ পরিবারসহ আহতদের প্রায় ২৫ লাখ টাকার মাঝে আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়।

Header Ad
Header Ad

মুক্তিপনের প্রতিবাদ করায় ছাত্রদল নেতাকে কুড়াল দিয়ে কোপালেন আ'লীগের কর্মিরা

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

নওগাঁর বদলগাছীতে মুক্তিপনের প্রতিবাদ করায় এক ছাত্রদল নেতাকে কুড়াল দিয়ে কুপিয়েছে স্থানীয় আ'লীগের কর্মিরা। মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধায় উপজেলার বিলাশবাড়ী ইউনিয়নের কটকবাড়ি এলাকায় তাকে কুপিয়ে আহত করা হয়। আহত অবস্থায় তাঁকে নওগাঁ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আহত সিহাব নওগাঁ নামাজগড় গাউসুল আজম কামিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও উপজেলার বিলাশবাড়ী ইউনিয়ন ছাত্রদলের সদস্য ও একই এলাকার বাসিন্দা।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, বদলগাছী সদর এলাকার রাসেল ও সাথী নামে দুই যুবক-যুবতী গতকাল বিকালে নওগাঁ থেকে মার্কেট করে ফেরার পথে কটকবাড়ী এলাকায় মোটরসাইকেল থামিয়ে নদীর ধারে ঘোরাঘুরি করছিল। সন্দেহ হলে ঐ এলাকার আওয়ামী লীগের কর্মি প্লাবন,অনিক,আশিক, রাকিব,ইয়াজুলসহ ১০-১৫ জন কর্মি তাদের আটক করে মারধর করে। পরে তাদের নদীর ধারে নির্জন এলাকায় নিয়ে গিয়ে দশ হাজার টাকা মুক্তিপন দাবি করে। বিষয়টি জানাজানি হলে ছাত্রদল কর্মী সিহাব সহ গ্রামবাসি ঐ ছেলে মেয়েকে উদ্ধার করে থানায় খবর দেয়। তাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে আওয়ামী লীগের কর্মি কয়েকজন অতর্কিতভাবে তাঁর ওপর হামলা চালায়। একপর্যায়ে ধারালো কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে সিহাব কে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে স্বজনেরা সেখানে গিয়ে সিহাব কে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে নওগাঁ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে তিনি চিকিৎসাধীন।

বদলগাছি উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য নাহিদ রানা ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ‘হামলাকারীরা আওয়ামী লীগ সমর্থিত নেতা কর্মি। মুক্তিপনের প্রতিবাদ করায় তার ওপরে হামলা করেছে।’

বদলগাছী উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব সুমন হোসেন ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ‘দলের দুঃসময়ের কর্মী সিহাব। ন্যাক্কারজনক এ হামলার ঘটনায় দোষীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি।’

তবে অভিযোগ ওঠা যুবকদের সাথে যোগাযোগ করা না গেলেও তাদের মধ্যে রিয়াজুল নামের এক অভিভাবক দায়সারা জবাব দেন। তিনি বলেন, ওই দুই যুবক-যুবতী অনৈতিক কার্যকলাপ করার জন্য এসেছিল। তাদের সন্দেহ হলে এলাকার ছেলেরা ধরে বিচার করতে চেয়েছিল। সিহাব এখানে এসে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে একটু হাতাহাতি হয়েছে বলে শুনেছি।

এ প্রসঙ্গে বুধবার (৫ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় বদলগাছী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহজাহান আলী ঢাকাপ্রকাশকে বলেন , ‘ছাত্রদল কর্মী চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছে নওগাঁ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এখনো অভিযোগ হাতে আসেনি। তবে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।’

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

আমরা কী করলাম, সেটি ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বিচার করবে : প্রধান উপদেষ্টা
হাসিনার বিচারের স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে: তারেক রহমান
মুক্তিপনের প্রতিবাদ করায় ছাত্রদল নেতাকে কুড়াল দিয়ে কোপালেন আ'লীগের কর্মিরা
খুব দ্রুতই জবি ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত হবে: ছাত্রদল সভাপতি
বগুড়ায় ৫০ টাকা অফারে টি-শার্ট কিনতে গিয়ে হুলস্থুল কান্ড, নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী
নওগাঁ সীমান্তে বাংলাদেশি যুবককে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ
মোহাম্মদপুরে বিড়াল হত্যার অভিযোগে আদালতে মামলা, তদন্তের নির্দেশ
চুয়াডাঙ্গায় সার কাণ্ডে বিএনপি ও যুবদলের ৫ নেতা বহিষ্কার
আজ বন্ধুর সাথে গোসল করার দিন
২ আলাদা বিভাগসহ দেশকে ৪ প্রদেশে ভাগ করার সুপারিশ
শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় হাইকোর্টের রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৯ আসামিসহ সবাই খালাস
হাসিনার লাইভ প্রচারের আগেই নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ফেসবুক পেজ উধাও
হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের ওপর বিএনপি নেতাকর্মীদের হামলা
বিচারবিভাগ ও জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন হস্তান্তর
গাজীপুরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সবজিবাহী পিকআপ খাদে, চালকসহ নিহত ৩
নতুন রাজনৈতিক দল গঠনে জনগনের মতামত চাইলো হাসনাত  
এই ফটো তোলোস কেন? আদালত চত্বরে শাহজাহান ওমর  
মনে হচ্ছে বিবিসি বাংলা গণহত্যাকারী শেখ হাসিনার ভক্ত : প্রেস সচিব  
পটুয়াখালীতে বাংলাভিশনের সাংবাদিককে কুপিয়ে জখম  
উত্তরবঙ্গে অনির্দিষ্টকালের জন্য তেল বিক্রি বন্ধ