রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

মামলা হলেও বিচার হয় কি?

১০ বছরে কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত ১১৭৬

সম্প্রতি সারাদেশে বিভিন্ন জায়গায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা বেড়ে গেছে। প্রতিদিন কোথাও না কোথাও এমন ঘটনা ঘটছে বলে জানিয়েছেন ফায়ারসার্ভিস। বেশিরভাগ ভুক্তভোগীই সাধারণ মানুষ ও শ্রমিক। দেখা যাচ্ছে, কোথাও গ্যাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়ে আবার কোথাও শর্ট সার্কিট থেকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সাধারণ মানুষ।

সাধারণ মানুষের অভিযোগ, এখন যেমন অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে কয়েক বছর আগে এতটা অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ছিল না। হঠাৎ এত অগ্নিকাণ্ড কেন? এসব বিষয় নিয়ে যাচাই-বাছাই করতে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।

এদিকে বিশ্লেষকরা বলছেন, বিভিন্ন কলকারখানায় শ্রমিকদের জন্য উপযুক্ত কর্ম পরিবেশ এবং অগ্নি নির্বাপক সরঞ্জামাদির পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় কোনোভাবে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে তাৎক্ষণিক অগ্নিনির্বাপনের ব্যবস্থা নেওয়া যায় না যার ফলে অগ্নিকান্ড ভয়াবহ হয়ে ওঠে এবং এতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় শ্রমিকরা।

বিশ্লেষকদের দাবি, সরকারিভাবে প্রত্যেকটা শিল্প-কলকারখানায় তদারকি করতে হবে। উপযুক্ত কর্ম পরিবেশ আছে কি না দেখতে হবে। যদি কোনোভাবে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে তাহলে তারা যাতে অন্তত জীবন নিয়ে ফিরে আসতে পারে এমন ব্যবস্থা করতে হবে।

বিশ্লেষকরা আরও বলছেন, শ্রমিক নিয়ে যেসব মানুষ বা শিল্প কারখানার মালিকেরা খেলা করছেন, শ্রমিকদের উপযুক্ত কর্মপরিবেশের ব্যবস্থা করছেন না, নিয়মনীতি মানছেন না, তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে এবং প্রতিটি ঘটনা সঠিকভাবে তদন্ত করতে হবে তাহলেই অগ্নিকাণ্ড অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আসতে পারে।

সাভার আশুলিয়ায় সবচেয়ে বেশি অগ্নিকাণ্ড

একটি তথ্য বলছে, চলতি বছরের গেল ২৩ ফ্রেব্রুয়ারি সাভারের আশুলিয়া বঙ্গবন্ধু রোডে এশিয়ান ইউনিভার্সিটির সামনে ইউনিওয়ার্ল্ড ফুটওয়্যার কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৩ জন মৃত্যুবরণ করেন এর মধ্যে দু’জন নারী অপর ব্যক্তির লাশ এমনভাবে পুড়ে গেছে চিহ্নিত করার কোনো উপায় নেই বলে জানিয়েছে ফায়ারসার্ভিস। এ ঘটনাটি সারাদেশে নতুন করে ব্যাপকভাবে সমালোচিত হচ্ছে। বলা হচ্ছে, তেমন কোনো কারখানায় শ্রমিকদের জন্য নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেই যার কারণে শ্রমিকদের এভাবে নির্বিচারে প্রাণ দিতে হচ্ছে।

এ ঘটনার পর বিভিন্ন মহল উদ্বেগ প্রকাশ করে। বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন ও সাধারণ মানুষ বলছেন, সম্প্রতি সাভার-আশুলিয়ায় যে ঘটনাটি ঘটেছে সম্পূর্ণ মালিকের অবহেলার কারণে এটি ঘটেছে। অগ্নিকাণ্ড ঘটার পর সেখান থেকে শ্রমিকদের বের হবার যথেষ্ট সময় ছিল এরপরও কেন শ্রমিকরা বের হতে পারেননি? সে বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। তাদের অভিযোগ, অবিলম্বে আগুনে দগ্ধ হয়ে ৩ শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনাটি যাতে সুষ্ঠু তদন্ত হয় এবং এর সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হয়।

বেশ কয়েকটি পরিসংখ্যান বলছে, সাভার আশুলিয়াতেই বেশি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে। কারণ ঢাকার মধ্যে প্রশাসন কড়া নজরদারি রাখে, আশুলিয়া-সাভার ঢাকার বাইরে হওয়ার কারণে সরকারিভাবে নজরদারির ঘাটতি রয়েছে। যার কারণে অতিরিক্ত দুর্ঘটনা ঘটছে এসব এলাকায়।

সাভারে সবচেয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল তাজরীন ফ্যাশন লিমিটেডে

ঢাকার আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুর তাজরীন ফ্যাশনস লিমিটেড কারখানার অগ্নিকাণ্ডে বহু হতাহতের ঘটনাটি এখনো দেশের মানুষের হৃদয়কে নাড়া দেয়। এরপর শিল্প কারখানায় শ্রমিকদের নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও উত্তর মেলেনি সেসব প্রশ্নের। বিগত কয়েক দশকে দেশে বেশ কয়েকটি ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। সেখানে বহু মানুষের প্রাণহানির পাশাপাশি ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও নেহায়েত কম নয়।

সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের দায়িত্বহীনতায় একের পর এক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই কোন মামলা হয়নি। আবার দু-একটি ক্ষেত্রে মামলা হলেও সাজা হয়নি দোষীদের। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দায়ীদের চিহ্নিত করা হলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। মামলার পর নানামুখী চাপে আসামিরা গ্রেপ্তার হলেও কিছুদিন পর জামিন নিয়ে তারা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। একই সঙ্গে রয়েছে নিয়মনীতি না মানা ও নজরদারি না থাকার অভিযোগ এসব কারখানার বিরুদ্ধে। মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে এসব শিল্প কারখানায় কাজ করা শ্রমিকরাই আগুনে দগ্ধ হয়ে বেশি মারা গেলেও তা দেখার কেউ নেই এমনটাই অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।

পরিসংখ্যান বলছে ১০ বছরে অগ্নিকান্ডে ১১৭৬ জন‌ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে

ফায়ার সার্ভিসের পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, ২০১২ সালে কারখানায় আগুনের ঘটনায় ২১০ জন নিহত ও ৮০৩ জন আহত হন, ২০১৩ সালে ১৬১ জন নিহত ও ১ হাজার ৪৭১ জন আহত হন, ২০১৪ সালে ৭০ জন নিহত ও ২৫০ জন আহত হন। একইভাবে ২০১৫ সালে আগুনের ঘটনা ছিল এক হাজার ১৩টি। এত নিহত হন ৬৮ জন।

২০১৬ সালে এক হাজার ১৬৫টি আগুনের ঘটনায় মারা গেছেন ৫২ জন। ২০১৭ সালে ১ হাজার ১৯টি শিল্প কারখানার আগুনে মারা যান ৪৫ জন। ২০১৮ সালে এক হাজার ১৩১টি দুর্ঘটনায় আগুনে পুড়ে মারা যান ১৩০ জন। ২০১৯ সালে ৯৯৭টি আগুনের ঘটনায় মারা যান ১৩৪ জন। ২০২০ সালে ৭৫৬টি আগুনে ১৫৩ জন মারা যান। তথ্য বলছে, ২০২১ সালেই আগুনের ঘটনায় ১৪২ জন মারা যান। যার বেশিরভাগই শ্রমিক। এর মধ্যে ৫৭ জন পুরুষ ও ৮৫ জন নারী।

এদিকে একটি সূত্র জানায়, চলতি বছর ২০২২ এর জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ১১ জন শ্রমিক নিহত হয়েছেন। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ১০ বছরে কারখানায় আগুন লেগে মারা গেছেন ১১৭৫ জন মানুষ। তবে এসব আগুনের ঘটনায় প্রতিষ্ঠানের বিভাগীয় কর্মকর্তা বা কর্মচারীর কোনো আহত বা নিহত হবার কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

রানা প্লাজা ধসের পর কারখানাগুলোর নিরাপত্তা বাড়ানো হলেও বর্তমান তা ঢিলেঢালা

গত এক দশকে তাজরীন ফ্যাশনসের পর বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় শিল্প কারখানার বড় দুর্ঘটনা হলো হাসেম ফুডস লিমিটেড কারখানার আগুন। ২০১২ সালে তাজরীন ফ্যাশনের আগুন এবং পরের বছর রানা প্লাজা ধসের পর পোশাক খাতের কারখানাগুলোর নিরাপত্তা বাড়াতে নানা উদ্যোগ দেখা গেছে।

এক্ষেত্রে ২০১৮ সালের পর থেকে পোশাক কারখানায় অগ্নিকাণ্ড এবং মৃত্যু অনেকটাই কমে এসেছে। কিন্তু একই সময়ে অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের বেশিরভাগ ঘটনাই পোশাক খাতের বাইরে শিল্প কারখানায় ঘটছে। এ সময়ে কয়েক বছর নিরাপত্তা উদ্যোগ থাকলেও বর্তমানে তা ঢিলেঢালা রয়েছে বলে মনে করছেন অনেকেই। তা ছাড়া, গত বছর এবং চলতি বছরে এ অগ্নিকাণ্ড আবারও বেড়েছে বলে মনে করছেন বিশেষ মহল।

অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মামলা হলে যা হয়

ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাগুলোর মধ্যে মাত্র ৪ টি ঘটনায় মামলা হয়। এর মধ্যে তাজরীন ফ্যাশনস কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তদন্ত শেষে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দেওয়া হলেও বিচার কার্যক্রম এখনো শেষ হয়নি। মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে। আর চকবাজারের চুড়িহাট্টা ট্র্যাজেডি ও বনানীর এফআর টাওয়ারের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মামলা হলেও তদন্ত কার্যক্রম শেষ হয়নি। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় সজীব গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান সেজান জুস কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অন্তত ৫২ জন শ্রমিক মারা যায়। এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলা হয়। পরে মালিকসহ ৮জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। কিন্তু এ মামলারও তদন্তকাজ আজও শেষ হয়নি। প্রতিটি মামলায়ই বেশিরভাগ আসামিরা জামিনে রয়েছে বলে জানা গেছে।

২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরের তাজরীন ফ্যাশনস কারখানায় ভয়াবহ আগুনে ১১৭ জনের মৃত্যু ও দুই শতাধিক শ্রমিক আহত হন। ওই দুর্ঘটনায় মামলা হলেও আজও বিচার শেষ হয়নি। ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি চকবাজারের চুড়িহাট্টা মোড়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৭১ জনের প্রাণহানির পর অবহেলাজনিত মৃত্যুর মামলা করার মধ্যেই আইনি প্রক্রিয়া সীমাবদ্ধ রয়েছে। দুই বছরেও তদন্ত শেষ হয়নি।

বনানী আরএফ টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের মামলার তদন্ত এখনও শেষ হয়নি

২০১৯ সালের ২৮ মার্চ রাজধানীর বনানীতে এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলে ২৫ জন ও পরে ১ জনের মৃত্যু হয়। এ ছাড়া এ সময় উদ্ধার অভিযানে আহত উদ্ধারকর্মী ফায়ারম্যান সোহেল চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ ঘটনায় বনানী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মিল্টন দত্ত একই বছরের ৩০ মার্চ বাদী হয়ে মামলা করেন। এ মামলার ও তদন্ত শেষ হয়নি।

যা বলছেন সচেতন মহল-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা

এ বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে এ্যাডভোকেট ফেরদৌস সুলতানা বলেন, অগ্নিকাণ্ডের মামলায় দোষীদের সাজা নিশ্চিত করতে হবে। একইসঙ্গে কারখানাগুলোতে যথাযথ আইন প্রয়োগ করতে হবে। তাহলেই এ ধরনের ঘটনা অনেক কম ঘটবে।

গার্মেন্ট শ্রমিক ঐক্য ফোরামের নেতা মোশরেফা মিশু বলেন, অতি লাভের আশায় মালিকপক্ষ অগ্নিনির্বাপন বা সুরক্ষার দিকে তেমন কোনো নজর দেন না। তাদের অবহেলায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অগ্নিকাণ্ডে শ্রমিকদের প্রাণহানির ঘটনা বাড়ছে। নানামুখী চাপে দু-একটি ক্ষেত্রে মামলা হলেও সাজার কোনো নজির নেই।

তিনি বলেন, ‘উপযুক্ত বিচারের মাধ্যমে দোষীদের সাজার ব্যবস্থা করতে হবে। যদি সেটা না হয় তাহলে শ্রমিকদের জীবনের সুরক্ষার দিকে মালিকরা নজর দেবেন না।’

এ বিষয়ে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের যুগ্ম মহাপরিদর্শক ফরিদ আহমেদ বলেন, ‘পরিদর্শন একদমই যে হয় না, সেটা ঠিক নয়। আমাদের সীমাবদ্ধতাও আছে। আমাদেরকে কর্মীদের কিছু ব্যক্তিগত অভিযোগ অ্যাটেইন করতে হয়।’

তিনি বলেন, ‘আগে আমাদের জনবল ছিল ৩৩৩ জন, এরপরে ৯৩৩ জন হয়েছে। কিন্তু আমাদের রাইজের সঙ্গে তুলনা করলে শিল্পখাতের উন্নয়ন বা কমার্শিয়াল এন্টারপ্রাইজের ডেভলপমেন্ট আরও দ্রুত হচ্ছে। আমরা দ্বিতীয় পর্যায়ে ২ হাজার ৭৮০ জন জনবল চেয়ে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছি। এ ছাড়া আমরা ইন্ডাস্ট্রিয়াল সেফটি ইউনিট গঠনের প্রস্তাব করেছি।’

মামলা না হওয়ায় আরও ভয়াবহ হচ্ছে অগ্নিকাণ্ড

১৯৯৫ সালে ঢাকার ইব্রাহিমপুরের লুসাকা অ্যাপারেলসে অগ্নিকাণ্ডে ১০ জন কর্মী প্রাণ হারান। ১৯৯৬ সালে ঢাকার তাহিদুল ফ্যাশনে ১৪ জন এবং সিনটেক্স লিমিটেডের কারখানায় ১৪ জন পুড়ে মারা যান। ১৯৯৭ সালে মিরপুরের তামান্না গার্মেন্টেসে ২৭ জন এবং মিরপুর-১ নং মাজার রোডের রহমান অ্যান্ড রহমান অ্যাপারেলসে আগুনে ২২ শ্রমিক মারা যান। ২০০০ সালের ২৫ নভেম্বর নরসিংদীর চৌধুরী নিটওয়্যার লিমিটেডে আগুনে ৫৩ জন শ্রমিকের প্রাণহানি ঘটে।

২০০০ সালে বনানীর চেয়ারম্যানবাড়িতে গ্লোব নিটিং ফ্যাশন লিমিটেডে ১২ শ্রমিক অগ্নিকাণ্ডে মারা যায়। ২০০১ সালে মিরপুরের মিকো সোয়েটার লিমিটেডে আগুনের গুজবে পদদলিত হয়ে ২৪ জন শ্রমিক মারা যান। ২০০৫ সালে নারায়ণগঞ্জের গোদনাইলে সান নিটিং গার্মেন্টে আগুনে ২০ জন শ্রমিক মারা যান।

২০১০ সালের ৩ জুন পুরান ঢাকার নিমতলীতে কেমিক্যালের গুদামে ভয়াবহ আগুনে শিশুসহ ১২৫ জন নিহত হয়। এসব ঘটনার একটিতেও মামলা হয়নি। দায়ীরা সবাই রয়ে গেছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে।

এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের উপপরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) দিনমনি শর্মা ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ‘শিল্প কারখানায় আগুন লাগার ঘটনা আগের চেয়ে অনেক কমে গেছে।’

প্রতিবছর আগুনে এত মানুষের মৃত্যুতে মালিকদের অবহেলা থাকলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না কেন?

জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা তো শুধু সেবা দিয়ে থাকি। বিচার করা বা আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া আমাদের কাজ নয়। অগ্নিকাণ্ডের পর আমরা তদন্তকারী সংস্থার কাছে প্রতিবেদন জমা দেই। দোষীদের ব্যবস্থা যারা নেন এ বিষয়টি তারাই বলতে পারবেন। তবে যেকোনো অগ্নিকাণ্ডে ফায়ার সার্ভিস দ্রুত সেবা দিয়ে থাকে।’

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘বাংলাদেশে শিল্প কারখানা স্থাপনে নিয়ম-কানুন আর বিধি-বিধান থাকলেও কোনো বড় দুর্ঘটনা ঘটলেই দেখা গেছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কারাখানা মালিকপক্ষ সেটি অমান্য করেছেন। অতি লাভের আশায় মালিকপক্ষের অবহেলায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অগ্নিকাণ্ডে শ্রমিকদের প্রাণহানির ঘটনা বাড়ছে। আর সেই সাথে সামনে আসে কর্তৃপক্ষের নজরদারির অবহেলার বিষয়টিও। নানামুখী চাপে দু-একটি ক্ষেত্রে মামলা হলেও সাজার কোনো নজির নেই। ফায়ার সেফটি প্রযুক্তি উন্নত করা এবং উপযুক্ত বিচারের মাধ্যমে দোষীদের সাজার ব্যবস্থা করলে এ ধরনের দুর্ঘটনা কমে আসবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বুয়েটের বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ প্রফেসার মো. আশিকুর রহমান ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ‘শিল্প কলকারখানায় যথাযথ মনিটরিং নেই। এবং যথাযথভাবে অগ্নিনির্বাপক সরঞ্জামাদি না থাকায় শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলছে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে মনিটরিং এর অভাব রয়েছে। বিশেষ করে মনিটরিংয়ের দিকে গুরুত্ব দিতে হবে এবং মেয়াদোত্তীর্ণ অগ্নি নির্বাপক সরঞ্জাম সরিয়ে ফেলে সেখানে নতুন করে অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে যাতে শ্রমিকরা অন্তত আগুন ধরলে খুব অল্প সময়ের মধ্যে ফ্যাক্টরি বা গার্মেন্টস কারখানা থেকে বের হতে পারে। তা ছাড়া মালিক এবং শ্রমিকরা একটু যদি সতর্ক থাকে তাহলে ধরনের দুর্ঘটনা অনেকটা কমে আসবে।

এ সম্পর্কে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিশেষজ্ঞ তৌহিদুল হক ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ‘নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে গড়ে ওঠা শিল্প-কারখানাগুলোর বেশিরভাগই নজরদারির বাইরে রয়েছে। আর ছোট-বড় আগুনের ঘটনায় তদন্ত কমিটি হয়। কমিটি প্রতিবেদনও দেয়। তবে সে অনুযায়ী কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। যার ফলে বার বার দুর্ঘটনার বলি হন নিরীহ শ্রমিকরা। আইনের যথাযথ প্রয়োগ থাকলে এ ধরনের ঘটনা কমে আসবে বলে মনে করেন তিনি।

কেএম/এমএমএ/

Header Ad

গোপনে দুইজনকে বিয়ে, কাউকেই অধিকার বঞ্চিত করেননি জান্নাতুল

ছবি: সংগৃহীত

একইসঙ্গে দুই স্বামীর সঙ্গেই সংসার করছেন জান্নাতুল ফেরদৌস নামের এক নারী। স্ত্রীর অধিকার থেকে বঞ্চিত করেননি দুই স্বামীর কাউকেই। গোপনে মন জয় করে চলছিলেন দুই স্বামীর। প্রায় দুই বছর দুই স্বামীর সংসার করার পর অবশেষে বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

চার বছরের প্রেমের সম্পর্কের পর ২০২২ সালের ২৭ অক্টোবর নোটারি পাবলিকের কার্যালয়ে হলফনামার মাধ্যমে গোপনে বিয়ে করেন রাজবাড়ী সদরের আলীপুর ইউনিয়নের ইন্দ্রনারায়ণপুর গ্রামের আবু হানিফ শেখের ছেলে ইউটিউবার সাগর শেখ ও আলীপুর গ্রামের নুরুল ইসলাম ভূঁইয়ার মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস।

বাবা, মা ও ভাই প্রবাসে থাকায় বাবার বাড়িতে একাই বসবাস করতেন জান্নাতুল। সেখানে যাতায়াত করতেন স্বামী সাগর শেখ। সংসার জীবন ভালোই চলছিল এ দম্পতির। হঠাৎ জান্নাতুলের বাবা প্রবাস থেকে দেশে ফেরায় শ্বশুরবাড়ি যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায় সাগরের। এরই মধ্যে প্রথম বিয়ের কথা গোপন রেখে পরিবারের সিদ্ধান্তে অন্য এক যুবককে দ্বিতীয় বিয়ে করেন জান্নাতুল।

এদিকে স্ত্রীকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজের বাড়িতে তুলে না নেয়ায় শ্বশুরবাড়ি গিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে নিয়মিত সময় কাটান জান্নাতুলের দ্বিতীয় স্বামী। প্রথম স্বামী সাগরের দাবি, প্রায় দুই বছর ধরে তার সঙ্গেও স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ঠিক রেখে চলছিলেন জান্নাতুল।

স্ত্রীর পরিবার তাকে মেনে না নেয়ায় তার বোনের বাসাসহ বিভিন্ন স্থানে একান্তে সময় কাটাতেন স্বামী-স্ত্রী। চলতি মাসের ২ নভেম্বর তারা একসঙ্গে নিজেদের দ্বিতীয় বিবাহবার্ষিকী পালন করেছেন বলেও দাবি করেন সাগর।

তবে দুই সপ্তাহ আগে স্ত্রীর সঙ্গে দ্বিতীয় স্বামীর ঘনিষ্ঠতার বিষয়ে জানতে পারেন সাগর। আর এতেই বাঁধে বিপত্তি। তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন জান্নাতুল। এখন দ্বিতীয় স্বামী নিয়েই সংসার করতে আগ্রহী তিনি। বাধ্য হয়ে স্ত্রীকে ফিরে পেতে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ দায়েরের পাশাপাশি আদালতে মামলা করেছেন সাগর।

সাগর শেখ বলেন, জান্নাতুল ও আমার বিয়ের বিষয়টি জান্নাতুলের মা ও বোন জানতো। বিয়ের পর আমাদের সংসার জীবন ভালোই কাটছিল। তবে হঠাৎ করে জান্নাতুলের বাবা প্রবাস থেকে দেশে ফেরায় তাদের বাড়িতে আমার যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়। আমাদের বিয়ের চার মাসের মাথায় আমি ভিডিও কন্টেন্ট তৈরির কাজে কয়েকদিনের জন্য রাজবাড়ীর বাইরে যাই।

কাজ থেকে এসে শুনি আমার স্ত্রী জান্নাতুল অন্য এক ছেলেকে বিয়ে করেছে। আমি আমার স্ত্রীকে প্রশ্ন করলে সে বলে, ‘পরিবারের চাপে বিয়ে করেছি। ওই ছেলের সঙ্গে আমার কোন সম্পর্ক হয়নি। আমি তোমার স্ত্রী আছি, তোমারই থাকবো। আমার আম্মু দেশে আসলে আমি তোমার কাছে চলে আসবো।’

সাগর বলেন, ‘আমি জান্নাতুলদের বাড়ি যাতায়াত করতে না পারার কারণে বিভিন্ন সময় আমরা রাজবাড়ী শহরে আমার বোনের বাসায় ঘনিষ্ঠ সময় কাটাতাম। ওর কলেজে আনা-নেয়াসহ সবকিছু আমিই করতাম। এমনকি গত ২ নভেম্বরও আমরা আমার বোনের বাসায় আমাদের দ্বিতীয় বিবাহ বার্ষিকী পালন করেছি।

তবে বিবাহ বার্ষিকী পালনের দুদিন পরে আমি জানতে পারি জান্নাতুলের সঙ্গে ওই ছেলের (দ্বিতীয় স্বামীর) ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক চলছে। ওই ছেলে নিয়মিত জান্নাতুলের বাবার বাড়িতে এসে তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সময় কাটাচ্ছে। এ বিষয়ে আমি জান্নাতুলকে প্রশ্ন করলে সে আমাকে গালাগালি করে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এক পর্যায়ে সে আমার সঙ্গে সংসার করবে না বলেও জানায়।’

তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি জান্নাতুলের মা প্রবাস থেকে দেশে ফিরেছে। তিনিও এখন আমাকে মেয়ের জামাই হিসেবে অস্বীকার করছেন। অথচ তার মেয়ের সঙ্গে আমার প্রেম থেকে শুরু করে বিয়ে পর্যন্ত সবকিছুই তিনি জানতেন।

এখন বাধ্য হয়ে আমি আমার স্ত্রীকে ফিরে পেতে আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে গত ১১ নভেম্বর লিখিত অভিযোগ করেছি। এছাড়া ১৭ নভেম্বর রাজবাড়ীর বিজ্ঞ ১নং আমলি আদালতে মামলা করেছি।’

সাগর আরও বলেন, ‘আমাকে ডিভোর্স না দিয়ে আমার স্ত্রী অন্য আরেকজনকে বিয়ে করে আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। সে আমাকেও ম্যানেজ করে চলেছে, একইভাবে তার দ্বিতীয় স্বামীকেও ম্যানেজ করে চলেছে।

এটা আইন ও ধর্মীয় দুই দিক থেকেই অপরাধ। এছাড়া আমি এ পর্যন্ত আমার স্ত্রীর পেছনে ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা ব্যয় করেছি। তারপরও আমি আমার স্ত্রীকে ফেরত চাই। তাকে আমি আমার জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবাসি।’

এদিকে, বিষয়টি নিয়ে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজী হননি জান্নাতুলের দ্বিতীয় স্বামী। তবে তার দাবি, জান্নাতুলের সঙ্গে সাগরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে তিনি জানতেন। সাগরের সঙ্গে বিয়ের বিষয়টি তিনি জানতেন না।

জান্নতুলের দ্বিতীয় স্বামীর বাবা বলেন, ‘কোন এক সূত্রে আমার শ্বশুর জান্নাতুলদের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে তাকে পছন্দ করে। পরে আমি গিয়ে তার বাবার কাছে বিয়ের প্রস্তাব দিলে বিয়ের দিন ধার্য হয়। বিয়ের আগের দিন সাগর নামে এক ছেলে আমার ছেলেকে ফোন করে বলে জান্নাতুলের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক আছে।

সে জান্নাতুলের সঙ্গে নিজের একটি ছবিও আমার ছেলেকে পাঠায়। এরপর আমি ওই এলাকায় আমার আত্মীয়দের কাছে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি জান্নাতুলের সঙ্গে সাগরের কোন সম্পর্ক ছিল না। এছাড়া জান্নাতুলকেও আমি সরাসরি প্রশ্ন করলে সেও সম্পর্কের বিষয়টি অস্বীকার করে।

পরে ঘরোয়া আয়োজনে জান্নাতুলের সঙ্গে আমার ছেলের বিয়ে হয়। এখন সাগর নামে ছেলেটি জান্নাতুলকে তার স্ত্রী হিসেবে দাবি করছে। আমি যতদূর জেনেছি সাগরের স্ত্রী ও সন্তান আছে। এখন বিষয়টি আইনগতভাবেই সমাধান হবে।

আর জান্নাতুল ফেরদৌসের সঙ্গে কথা বলতে তার বাবার বাড়িতে গেলে ভেতরে ঢোকার অনুমতি মেলেনি।’

বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখে তার মা হাচিনা বেগম বলেন, ‘সাগরের সঙ্গে আমার মেয়ের বিয়ে হয়েছিল৷ তবে বিয়ের দুই মাসের মাথায় তাদের ডিভোর্স হয়ে যায়। আমার মেয়ে তো ছোট বুঝে নাই, যে কারণে সেসময় ওরা ডিভোর্সের কাগজ ছিঁড়ে ফেলেছে। এর ৪/৫ মাস পরে আমার মেয়ের আবার বিয়ে হয়েছে। সাগর আমার মেয়েকে চাপে ফেলে এতোদিন তার সঙ্গে সময় কাটাতে বাধ্য করেছে।’

আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক জানান, ‘সাগর ও জান্নাতুলের বিবাহ বিচ্ছেদ হলে তার নোটিশের একটি কপি ইউনিয়ন পরিষদে আসার কথা। এরকম কোন কপি কখনো পাননি তারা।’

তিনি বলেন, ‘সাগর আমার ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ করেছে। আমিও খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি সাগর জান্নাতুলের প্রথম স্বামী। সে সাগরকে তালাক না দিয়েই বিয়ের চার মাসের মাথায় অন্য এক ছেলেকে বিয়ে করে। প্রায় দুই বছর সে চালাকি করে দুই স্বামীর সঙ্গেই সংসার করেছে। সাগরের কাছ থেকে জান্নাতুল অনেক টাকা-পয়সা খেয়েছে বলেও আমি জানতে পেরেছি।’

আবু বক্কার বলেন, ‘সাগরের অভিযোগের ভিত্তিতে আমি জান্নাতুলের বাবাকে নোটিশের মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদে ডাকি। তবে নোটিশ পেয়ে তিনি তার ছোটভাই ও তাদের এলাকার ইউপি সদস্য আবুল কালামকে সঙ্গে নিয়ে আমার বাড়িতে এসে বলেন, আমি যেন পরিষদে বসে বিষয়টি সমাধান করে দেই। তবে এর ১/২ দিন পরে তিনি জানান, এ বিষয়ে তারা বসতে চান না।

আইনগতভাবে তারা বিষয়টি সমাধান করতে চান। পরে আবার তারা বসতে সম্মত হলে জান্নাতুল ও তার বাবা এবং তাদের এলাকার ইউপি সদস্য আবুল কালামসহ পরিষদের অন্য সদস্যদের নিয়ে বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ইউনিয়ন পরিষদে বসেছিলাম। সাগরও সেখানে ছিল। তবে সেখানে জান্নাতুল বলে দিয়েছে সে কোনভাবেই সাগরের সঙ্গে ঘর সংসার করবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পুরুষ শাসিত সমাজে নারীরা নির্যাতিত হয়। কিন্তু ছেলেরা যে কতোটুকু নির্যাতিত হয় তা এই সম্পর্কের জের দেখলে বোঝা যায়। আমাদের সমাজে ছেলেরা আরও বেশি নির্যাতিত হচ্ছে। সেটা নীরবে নিভৃতে ছেলেরা সহ্য করে যাচ্ছে। আমি আশা করবো আপনারা সাংবাদিক ভাইয়েরা বিষয়টি তুলে ধরবেন।

আপনাদের সংবাদের মাধ্যমে মানুষ যাতে সচেতন হতে পারে। আজকে আমার ইউনিয়নে এমন ঘটনা ঘটেছে। আর কোন ইউনিয়নে যেন এমন ঘটনা কোনদিন না ঘটে।’

Header Ad

শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন

ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

২৪ এর গনঅভূ্থানে ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম যোদ্ধা, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী, শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে যান বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন।

এ সময় মোবাইল ফোনে লাউডস্পিকারে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা.শফিকুর রহমান বলেন, আব্দুল্লাহ দেশের জন্য মানুষের জন্য মানবতার কল্যাণের জন্য জীবনকে উৎস্বর্গ করে আল্লাহর দরবারে চলে গেছেন, আল্লাহ তাকে শহীদ হিসাবে কবুল করুন। শহীদরা মরে না। তারা আল্লাহর জীম্মায় জীবন্ত থাকে। এ সময় শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন তিনি।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুর ১২ টার দিকে যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানার বড় আঁচড়া গ্রামে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন আব্দুল্লাহর বাড়িতে গিয়ে শোকসন্তপ্ত পরিবারের খোঁজ খবর নেন,কবর জিয়ারত করেন এবং তার রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করেন।

এর আগে তিনি নাভারণ দারুল আমান ট্রাষ্টে ওলামা সম্মেলনে যোগদান করেন। পরে ২০১৬ সালে গুম হওয়া ইসলামি ছাত্র শিবিরে নেতা রেজোয়ানের বাড়িতে যান এবং খোঁজ খবর ও সমবেদনা জানান।

এসময় তিনি জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মৃত্যু বরনকারী সকলে ন্যায় বিচার পাবেন বলে পরিবারের সদস্যদের সান্তনা দেন। এবং গনঅভূ্থানে নিহত সকল পরিবারের সাথে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলাম আছে থাকবে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য মাওলানা আজিজুর রহমান, যশোরের জেলা আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা গোলাম রসূল, সাবেক জেলা আমীর মাওলানা হাবীবুর রহমান, জেলা জামায়াতের নেতা মাওলানা আবু জাফর, মাওঃ শিহাব উদ্দিন শার্শা থানা আমীর রেজাউল ইসলাম, সেক্রেটারী মাওলানা ইউসুফ আলী ও ঝিকরগাছা থানা আমীর মাওলানা আসাদুল আলম প্রমূখ।

Header Ad

বিরামপুরে আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার

ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

দিনাজপুরের বিরামপুরে বিশনি পাহান (৫৫) নামের এক আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের ময়না মোড় এলাকার ধানক্ষেত থেকে ওই নারীর হাতবাঁধা লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত বিশনি পাহান উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের বেণুপুর গ্রামের সাধন পাহানের মেয়ে।

নিহতের ভাই চরকা পাহান বলেন, আমার ছোট বোনের স্বামী বিশনি পাহানকে ছেড়ে চলে গেছেন। সে প্রতিরাতেই নেশা করতো। বাবা মারা যাওয়ার পর থেকেই আমার বাড়িতে থাকতো আমার বোন। আমার বোন এলাকায় মানুষের জমিতে কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতো। শুক্রবার বিকেলে এলাকার এক ব্যক্তির জমিতে ধান কাটার কাজ শেষ করে আর বাড়িতে ফেরেননি। রাতে অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তাকে কোথাও পাওয়া যায়নি। শনিবার সকালে ধানক্ষেতে হাতবাঁধা অবস্থায় তার লাশ পাওয়া যায়।

বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক জানান, এলাকাবাসীর দেওয়া খবরে ঘটনাস্থল থেকে আদিবাসী এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে তাকে কে বা কাহারা হত্যা করেছে। তদন্ত করলেই প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

গোপনে দুইজনকে বিয়ে, কাউকেই অধিকার বঞ্চিত করেননি জান্নাতুল
শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন
বিরামপুরে আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার
বিএনপির কাঁধে অনেক দ্বায়িত্ব: তারেক রহমান
'জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন হওয়া উচিত'- তোফায়েল আহমেদ
৩ মাসে জ্বালানি খাতে সাশ্রয় হয়েছে ৩৭০ কোটি টাকা : জ্বালানি উপদেষ্টা
জুটি বাধলেন মিঠুন চক্রবর্তী-আফসানা মিমি
দেশ ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই : তারেক রহমান
২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের আশঙ্কা
অক্টোবরে সড়কে প্রাণ গেছে ৪৭৫ জনের
গায়ানায় দলের সঙ্গে যোগ দিলেন সাকিব
আইপিএল নিলামের আগেই নিষিদ্ধ হলেন ভারতের ২ ক্রিকেটার
গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি