বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল ২০২৫ | ২৭ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

‘ঢাকাই মসলিন’ ফিরছে স্বরূপে

রাজধানীর ফার্মগেট থেকে সুলতানা কামাল সেতুর দূরত্ব ১৫ কিলোমিটার। সেতু থেকে নেমে বাম দিকে শীতলক্ষ্যা নদীর তীর ধরে প্রায় ৩০০ গজ সামনে এগোলেই দেখা মিলবে বিজেএমসি’র বন্ধ জুটো ফাইবার গ্লাস ইন্ডাস্ট্রিজের। এখন যেটি নাম পরিবর্তন করে রূপ নিয়েছে ‘ঢাকাই মসলিন হাউস’-এ।

একেবারে শীতলক্ষ্যা নদীর তীর ঘেঁষে বিজেএমসি’র ২ দশমিক ৮৫৪৬ একর জমির উপর বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের উদ্যোগে নির্মাণ করা হয়েছে ঐতিহ্যবাহী ঢাকাই মসলিনের এই কারখানা। যেটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধনের কথা রয়েছে।

যেভাবে ঢাকাই মসলিনকে পুনরুদ্ধারের উদ্যোগ

২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সচিবালয়ে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে যান। ওই সময়ে প্রধানমন্ত্রী প্রায় নিয়মিতই বিভিন্ন মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে যেতেন। এরই ধারাবাহিকতায় ওই বছরের ১২ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী সচিবালয়ে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় পরিদর্শন করেন। ওই দিন তিনি মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সবাইকে ঐতিহ্যবাহী ঢাকাই মসলিন তৈরির প্রযুক্তি পুনরুদ্ধারের নির্দেশ দেন।

এরপর মসলিন পুনরুদ্ধারে ২০১৮ সালে ১২ কোটি ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প নেওয়া হয়।

প্রধানমন্ত্রীর ওই নির্দেশনার পর শুরু হয় ঢাকাই মসলিন তৈরির প্রযুক্তি পুনুরুদ্ধারের তোড়জোড়। বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের চেয়ারম্যানকে আহবায়ক করে বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড, বিটিএমসি, তুলা উন্নয়ন বোর্ড, বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠন করা হয় বিশেষজ্ঞ কমিটি।

এর পরপরই সারাদেশে ‘ফুটি কার্পাস’ জাতের তুলার অনুসন্ধান শুরু করে গবেষক দল। গাজীপুরের কাপাসিয়া, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, বাগেরহাট সদর, লালমনিরহাটের মোঘলহাট, নীলফামারীর ডিমলা, রাজশাহী, নওগাঁর মান্দা এবং তুলা উন্নয়ন বোর্ডের রংপুর জার্মপ্লাজম সেন্টারে ‘ফুটি কার্পাস’ জাতের তুলার সন্ধান চালিয়ে এসব স্থান থেকে প্রয়োজনীয় ৩৯টি নমুনা তুলা ও জার্মপ্লাজম সংগ্রহ করে চাষাবাদ করা হয়। এই ৩৯টি নমুনা থেকে ৬টি জাত সনাক্ত করা হয়।

এরপর বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্যদের চেষ্টায় বিভিন্ন উৎস হতে চারটি মসলিন কাপড়ের সংগৃহিত নমুনা সুতা এবং ছয়টি জাতের ডিএনএ সিকুয়েন্স বের করা হয়। এরমধ্যে ‘ফুটি কার্পাস’ এর ডিএনএ সিকুয়েন্সের সঙ্গে মসলিন কাপড়ের সুতার ডিএনএ পর্যালোচনা করে মিল পাওয়া যায়।

তারপর সনাক্তকৃত ফুটি কার্পাস জাতের তুলা পরীক্ষামূলকভাবে চাষাবাদ শুরু হয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের গবেষণা মাঠ, তুলা উন্নয়ন বোর্ডের শ্রীপুর খামার এবং বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের নরসিংদীর পলাশে।

চলছে সুতা উৎপাদন

ফুটি কার্পাস জাতের তুলা চাষ করে সেই তুলা থেকে এখন পুরোদমে চলছে সুতা তৈরির কাজ। শীতলক্ষ্যার পাড়ে বিজেএমসি’র যে জমিতে ‘ঢাকাই মসলিন হাউস’ গড়ে তোলা হয়েছে সেখানে ছায়াঘেরা নিবিড় পরিবেশে নারী শ্রমিকরা একমনে সুতা তৈরি করছেন।

কঠিন এবং কঠোর পরিশ্রমের এই কাজ করতে ৩০০ নারীকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। এই নারীদের একটা অংশকে সংগ্রহ করা হয়েছে কুমিল্লার চান্দিনা ও দেবীদ্বার উপজেলা থেকে। আর কিছু স্থানীয় রূপগঞ্জ, তারাবো, নারায়ণগঞ্জ এলাকার।

এসব প্রশিক্ষিত নারীরা মসলিন হাউসের বিশাল শেডের নিচে একটি কক্ষে বিশেষ এক ধরনের চরকা দিয়ে হাতের সাহায্যে মসলিনের সুতা তৈরি করছেন। এজন্য তাদের গভীর মনোযোগ দিতে হয়। একটু অন্যমনস্ক হলেই ছেদ পড়ে সুতা তৈরির কাজে। প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চলে তাদের এই সুতা তৈরির কাজ।

মসলিন শাড়ি তৈরি হচ্ছে যেভাবে

‘ঢাকাই মসলিন হাউস’-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন না হলেও, এমনকি মসলিন হাউসের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তাদের কাজের বিল না পেলেও ইতিমধ্যে মসলিন শাড়ি তৈরির কাজ শুরু হয়ে গেছে পূর্ণ উদ্যোমে।

গত ২ মার্চ শীতলক্ষ্যা তীরের তারবোতে বিজেএমসি’র জমিতে গড়ে উঠা ঢাকাই মসলিন হাউস সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ‘মলমল খাস স্পিনিং ও উইনিং শেড’-এর ভেতর একটা বড় অংশ জুড়ে নির্মাণ করা হয়েছে ২০টি তাঁত। এর মধ্যে ১১টি তাঁত ইতিমধ্যে চালু হয়ে গেছে। একটি তাঁতে একসঙ্গে দুজন তাঁতি কাজ করতে পারেন। অর্থাৎ একটি মসলিন শাড়ি তৈরি করতে দুজন তাঁতি লাগে।

সরেজমিন দেখা গেল, ১১টি তাঁতে একাগ্র চিত্তে শাড়ি তৈরি করছেন ২২ জন তাঁতি। তাদের মধ্যে দুজন নারী।

মসলিনের কারিগররা যা বললেন

একেকটি তাঁতে দুজন করে বসে নিবিড় মনে শাড়ি বুনছেন মসলিনের কারিগররা। অদ্ভুত সুন্দর সব নকশি দেওয়া শাড়ি বুনছেন আপন মনে। মাথার উপর সুতার রোল। শাড়িতে এক পেছ সুতা বুননের সঙ্গে সঙ্গে রোল ঘুরে নেমে আসে আরেক হাত সুতা। খুবই সতর্কতার সঙ্গে সেই সুতা বুনতে হয়। ছিঁড়ে যাওয়ার ভয় থাকে সব সময়।

মফিজুল ইসলাম। বাড়ি সোনারগাঁও। শাড়ি বুনেই পার করে দিয়েছেন ২৪ বছর। এই দীর্ঘ সময়ে তিনি বেশ কিছু মসলিন শাড়ি তৈরি করেছেন। নিজের তাঁত ছিল। পাশাপাশি অসংখ্য জামদানি শাড়ি বুনেছেন। এখন তিনি আবার মসলিন শাড়ি বুননের কাজ করছেন। তাঁত বোর্ডের মসলিন হাউসে তিনি শাড়ি তৈরির একজন কারিগর হিসেবে চাকরি করছেন।

মফিজুল জানালেন, আগে অনেক মসলিন কাপড় তৈরি করে বিক্রি করেছেন। এরপর সুতাসহ অন্য কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়া এবং মসলিন তৈরি করা কঠিন হয়ে পড়ায় তিনি মসলিন তৈরির কাজ বাদ দিয়ে দেন; কিন্তু গত বছরের নভেম্বর মাস থেকে তিনি আবারও সরকারি প্রতিষ্ঠানে মসলিন শাড়ি তৈরির কাজে হাত দিয়েছেন।

মফিজুল জানালেন, নিজের তাঁতে কাজ করার সময় গত দুই যুগে তিনি অন্তত ৮০টি মসলিন শাড়ি তৈরি করেছেন। বেশি নকশা না হলে বছরে অন্তত তিনটা শাড়ি তৈরি করা যায়। বললেন, নিজের তাঁতে কাজ করলেও বেশিরভাগ সময়ই ফরমায়েশি কাজ করেছেন। অনেকে অর্ডার করে শাড়ি তৈরি করাতেন। এতে তার খুব বেশি লাভ হত না। এতে থার্ড পার্টির লাভই বেশি হত। তিনি শুধু শ্রমের মূল্য পেতেন। তিনি আরও জানান, তিনি যখন নিজের তাঁতে মসলিন শাড়ি বুনতেন সেই সময় একেকটা শাড়ি ৪৫ থেকে ৪৮ হাজার টাকায় বিক্রি হত।

মফিজুল এখন সরকারি প্রতিষ্ঠানে মসলিনের একজন কারিগর হিসেবে যোগ দিয়েছেন। গত নভেম্বর থেকে মসলিনের জন্য তৈরি কারখানায় মসলিন শাড়ি বুনার কাজ করছেন। এর আগেও নিজের বাড়িতে বসে বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের হয়ে মসলিন শাড়ি তৈরির কাজ করেছেন।

মসলিন বুনার পাশাপাশি নিজের কষ্টের কথা জানাতেও ভুললেন না মফিজুল। বললেন, ‘একটা শাড়ি বুনতে যে কষ্ট হয়, সেই তুলনায় যে বেতন পাই সেটা দিয়ে সংসার চলে না। ছেলেমেয়েদের লেখাপাড়ার খরচ চালাতে পারি না।’

একেবারে প্রথম তাঁতে আপন মনে শাড়ি বুনছেন আছিয়া বেগম ও সালমা বেগম। আছিয়া বলছিলেন, তিনি একেবারেই নতুন। চার মাস ধরে কাজ করছেন। এর আগে মসলিন কাপড় বুনার প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।

বললেন, দুই বছর ধরে মসলিনের কাপড় তৈরির কাজ করছেন। আর এখানে কাজ করছেন চার মাস ধরে। চার মাসে মাত্র পাঁচ হাত শাড়ি বুনছেন। বাকি সাত হাত বুনতে আরও চার থেকে পাঁচ মাস লাগবে। অর্থাৎ পুরো শাড়িটি তৈরি করতে তাদের দুই জনের সময় লাগবে আট থেকে নয় মাস।

আছিয়া জানালেন, হালকা নকশি বা কম নকশির শাড়ি হলে বছরে দু্ই থেকে তিনটা শাড়ি তৈরি করা যায়। আর যদি গর্জিয়াস বা জাঁকজমকপূর্ণ নকশির হয় তাহলে বছরে একটা শাড়ি তৈরি করা যায়। তাও অনেক কষ্ট হয়।

আছিয়া বলেন, সকাল আটটা থেকে দুপুর দুইটা পর্যন্ত কাজ করেন। মাসিক বেতনে চাকরি করেন। আগে বাড়িতে নিজের তাঁতেই কাজ করতেন। তখন জামদানি শাড়ির পাশাপাশি মসলিনের শাড়ি, ওড়না ও রুমাল তৈরি করতেন।

মসলিন যাবে বর্হিবিশ্বে

ঢাকাই মসলিনকে পুনরুদ্ধার করা হচ্ছে তার রং গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে। আজ থেকে প্রায় ১৭০ বছর আগে এই ‘ঢাকাই মসলিন’ ছিল বাংলাদেশের সোনালী ঐতিহ্য ও বিশ্ববিখ্যাত ব্রান্ড। হারিয়ে যাওয়া সেই ঐতিহ্য আবার ফিরিয়ে আনা হচ্ছে।

মসলিনের অতীত গৌরব ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি বিদেশের বাজারে এর চাহিদা বিবেচনায় রপ্তানি করা হবে। মসলিনের কারিগররা বলছেন, এখন যে মানের মসলিন তৈরি হচ্ছে তাতে একেকটা শাড়ির যে মূল্য পড়বে, সেই হিসেবে দেশের বাজারে এটা খুব একটা বিক্রি করা সম্ভব হবে না। এটা বিক্রি করতে হবে বিদেশের বাজারে।

তাঁতিরা জানান, শাড়ি তৈরি হচ্ছে মূলত বিদেশের বাজারে রপ্তানির জন্য। যার মধ্য দিয়ে ইউরোপ, আমেরিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ‘ঢাকাই মসলিন’ যাবে বাংলাদেশের বিখ্যাত ব্র্যান্ড হিসেবে। বাংলাদেশের সুনাম ছড়িয়ে পড়বে দেশে দেশে। তাঁতিদের আশা, চলতি বছরেই তাদের হাতে বুনা মসলিন যাবে দেশের সীমানা ছাড়িয়ে বিশ্বের নানান দেশে।

যেমন হতে পারে মসলিনের দাম

‘ঢাকাই মসলিন’ শুধু নামে নয়, দামেও থাকবে আকাশ ছোঁয়া। মসলিন এর কারিগররা যেমনটা জানালেন, এখন যে মানের মসলিন তৈরি হচ্ছে তার একেকটির মূল্য সাত-আট লাখ টাকার কম হবে না। তবে সরকার সেটি কি মূল্যে বিদেশে রপ্তানি করবে সেটা নির্ভর করবে রপ্তানির সময় সরকারের সিদ্ধান্তের উপর।

তাঁতিরা জানান, সাধারণ একটি মসলিন যেগুলো খুব একটা নকশা থাকবে না সেগুলোর দাম কম পড়বে। কিন্তু চোখ ধাঁধানো সব নকশি করা ঢাকাই মসলিন এর দাম হবে সাধারণের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। তবে দেশের ভিতরে শুধু সৌখিন ক্রেতারা কিনতে পারবেন।

প্রস্তুত কারখানা, উদ্বোধনের অপেক্ষা

শীতলক্ষ্যার পাড়ে তারাবোতে ‘ঢাকাই মসলিন হাউস’ এখন পুরোদমে প্রস্তুত। রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের অপেক্ষায়। ইতিমধ্যে এই মসলিন হাউসে নির্মাণ করা হয়েছে একটি ‘মলমল খাস স্পিনিং ও উইনিং শেড’। যেখানে ২০টি তাঁত এবং মহিলাদের সুতা তৈরির একটি কক্ষ। থাকবে মসলিনের একটি আধুনিক প্রদর্শনী কেন্দ্র, বেবি ডে-কেয়ার সেন্টার। এ ছাড়া মসলিন হাউসে ঢুকতেই প্রধান ফটকে চোখে পড়বে প্রধানমন্ত্রীর একটি ম্যুরাল। সব মিলিয়ে এখন শুধুই অপেক্ষা ঢাকাই মসলিনের উদ্বোধন এবং তার বাজারজাতকরণের।

এসএ/

Header Ad
Header Ad

জেনে নিন গ্রীষ্মে সুস্বাদু আর উপকারী কাঁচা আমের ১১টি বিস্ময়কর গুণ

কাঁচা আম। ছবি: সংগৃহীত

গ্রীষ্মকাল মানেই কাঁচা আমের মৌসুম। ঝাল-টক স্বাদের এই ফল শুধু স্বাদেই নয়, পুষ্টিগুণেও ভরপুর। অনেকেই কাঁচা আম খেতে পছন্দ করেন, কিন্তু জানেন কি, এই টক-মিষ্টি ফলটির রয়েছে দেহের জন্য একাধিক স্বাস্থ্যকর উপকারিতা? এতে থাকা ভিটামিন সি, এ, কে, বি৬ ও ফোলেট শরীরের নানা গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমে সহায়তা করে। হজম, রক্তচাপ, ত্বক কিংবা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা—সবক্ষেত্রেই কাঁচা আম কাজ করে নিঃশব্দ সহায়কের মতো।

চলুন জেনে নেওয়া যাক কাঁচা আম খাওয়ার ১১টি দারুণ উপকারিতা-

১. গরমে শরীর রাখে ঠান্ডা ও সতেজ

প্রচণ্ড গরমে শরীর যখন পানিশূন্যতায় ভোগে, তখন কাঁচা আমের রস হতে পারে নিখুঁত সমাধান। এটি শরীরে সোডিয়াম ও অন্যান্য ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় রেখে হিটস্ট্রোক প্রতিরোধ করে।

২. হজম শক্তি বাড়ায়

কাঁচা আম পাচক রসের নিঃসরণ বাড়িয়ে হজমে সাহায্য করে। কোষ্ঠকাঠিন্য, গ্যাস, বদহজম, বুক জ্বালাপোড়া এমনকি বমি ভাব দূর করতেও এটি কার্যকর।

৩. হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়ক

এতে থাকা নিয়াসিন ও ফাইবার হৃদরোগ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে। এটি কোলেস্টেরল কমায় এবং রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে।

৪. লিভারকে রাখে সুস্থ

কাঁচা আম পিত্ত নিঃসরণ বাড়িয়ে লিভার পরিষ্কার রাখতে সহায়তা করে। বিষাক্ত পদার্থ শরীর থেকে বের করে দিয়ে এটি লিভারের কর্মক্ষমতা উন্নত করে।

৫. দাঁতের যত্নে দারুণ

মাড়ি থেকে রক্তপাত, মুখে দুর্গন্ধ বা দাঁতের ক্ষয়—এসব সমস্যায় কাঁচা আম বেশ কার্যকর। এটি মুখগহ্বরের ব্যাকটেরিয়া দমন করে।

৬. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়

ভিটামিন সি ও এ-তে ভরপুর কাঁচা আম শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদার করে। সর্দি, কাশি ও মৌসুমি সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে।

৭. রক্তের স্বাস্থ্য উন্নত করে

কাঁচা আম রক্তস্বল্পতা দূর করে, হিমোগ্লোবিন বাড়ায় এবং নতুন রক্তকণিকা তৈরিতে সাহায্য করে। এটি রক্তনালীর স্থিতিস্থাপকতাও বজায় রাখে।

৮. ত্বক ও চুলের যত্নে কার্যকর

এতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন এ ও সি ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়, বলিরেখা প্রতিরোধ করে এবং চুলের গোড়া শক্ত করে চুল পড়া কমায়।

৯. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক

যথোপযুক্ত পরিমাণে কাঁচা আম খাওয়া রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে। এটি ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়াতে সহায়তা করে, তবে অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত থাকা প্রয়োজন।

১০. মেজাজ ভালো করে ও ক্লান্তি দূর করে

কাঁচা আমের ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস মস্তিষ্কে সেরোটোনিন নিঃসরণে সাহায্য করে, যা মেজাজ ভালো রাখে ও গরমে সৃষ্ট অতিরিক্ত ক্লান্তি কমায়।

১১. ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে

কাঁচা আমে থাকা আঁশ ও পানি ওজন কমাতে সহায়তা করে। এটি দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে এবং অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কমায়।

Header Ad
Header Ad

এসএসসি পরীক্ষা না দিয়ে প্রেমিকের বাড়িতে অনশনে কিশোরী

ছবি: সংগৃহীত

বরগুনার আমতলীতে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ না নিয়ে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে অনশনে বসেছেন এক দাখিল পরীক্ষার্থী। আর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিয়ে না করলে আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছেন তিনি। আজ বৃহস্পতিবার উপজেলার পূর্ব চন্দ্রা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, উপজেলার মহিষকাটা এলাকার দাখিল পরীক্ষার্থী এক ছাত্রীর সঙ্গে পার্শ্ববর্তী চাওড়া ইউনিয়নের পূর্ব চন্দ্রা গ্রামের আরিফ মৃধার প্রেমের সম্পর্ক হয়।

গত তিন বছর ধরে তারা প্রেম করছে, এমন দাবি ওই পরীক্ষার্থীর।

প্রেমিক কলেজপড়ুয়া আরিফ মৃধা তাকে বিয়ে না করে কালক্ষেপণ করতে থাকেন। ৩ এপ্রিল আরিফের বাড়ি আসে ওই পরীক্ষার্থী। পরে আরিফের পরিবার বিয়ের আশ্বাস দিয়ে তাকে আমতলী থানায় পাঠায়। পুলিশ তাকে স্থানীয় মনির প্যাদার হেফাজতে দেন। কিন্তু আরিফ তাঁকে বিয়ে করেননি।

আজ তার দাখিল পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল। সে পরীক্ষায় অংশ না নিয়ে আরিফ মৃধার বাড়িতে অনশনে বসেছে। পরে সে ঘোষণা দেয়, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আরিফ তাকে বিয়ে না করলে আত্মহত্যা করবে। অপর দিকে আরিফ মৃধা ও তাঁর পরিবার এলাকা ছেড়ে চলে গেছে।

এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসী ঘটনার সুষ্ঠু সমাধান দাবি করেছেন।

ওই দাখিল পরীক্ষার্থী বলে, ‘আরিফ মৃধা আমার সঙ্গে তিন বছর ধরে প্রেম করছেন। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আমাকে একাধিকবার ধর্ষণ করেছেন। এখন তাঁর পরিবারের কথামতো আমাকে বিয়ে করতে রাজি না। তাই আমি পরীক্ষা দেওয়া বন্ধ করে বিয়ের দাবিতে আরিফের বাড়িতে অনশনে বসেছি। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিয়ে না করলে আমি আত্মহত্যা করব। আমি তো আমার সবই হারিয়েছি। এখন আর কোথাও যাওয়ার সুযোগ নেই।’

ওই পরীক্ষার্থী বলে, ‘৩ এপ্রিল আমি এ বাড়িতে আসার পর আরিফের মা আমাকে তাঁর ছেলের সঙ্গে রাতে থাকতে দিয়েছেন, এখন তাঁরা পালিয়ে গেছেন।’

স্থানীয় ইউপি সদস্য রুহুল আমিন বলেন, ‘দুই পরিবার বসে সমাধান করতে বলেছি। সমাধান হয়েছে কি না, আমি জানি না।’ এ বিষয়ে কথা বলতে আরিফ মৃধা ও তাঁর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাঁদের পাওয়া যায়নি।

আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, ‘বিষয়টি জানি। মেয়ের বিয়ের বয়স হয়নি। তাই আমি একজনের জিম্মায় দিয়েছিলাম।’

ওসি বলেন, মেয়ের পরিবারের লোকজনকে জানানো হয়েছে, কিন্তু তাঁরা মেয়েকে নিতে রাজি নন।

Header Ad
Header Ad

সাধারণ মানুষ চায় এই সরকার আরো ৫ বছর থাকুক: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা (অব.) জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা (অব.) জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ‘দেশের সাধারণ মানুষ চাচ্ছে এই সরকার যেন আরো ৫ বছর রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকে।’ বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) দুপুরে সুনামগঞ্জ জেলার শান্তিগঞ্জ থানা পরিদর্শনে এসে তিনি এ কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মতৎপরতা আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে, আরও বাড়বে। আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার যেন রোধ হয় সে বিষয়ে পুলিশ তৎপর থাকবে। যারা পরিস্থিতির অবনতি করতে চায়, আমরা তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসছি। পরিস্থিতি আস্তে আস্তে আরও উন্নতি হচ্ছে। সাধারণ মানুষ চাচ্ছেন এই সরকার যেন আরও অন্তত ৫ বছর রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকে।

শেখ হাসিনাকে ফেরত আনার বিষয়ের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ক্রিমিনালদের হ্যান্ডওভারের বিষয়ে ভারতের সঙ্গে আমাদের একটি চুক্তি আছে। এই চুক্তির আন্ডারে হয়তো তাকে আনার চেষ্টা করা হবে। ভারতের সঙ্গে আমাদের যুদ্ধের কোনো শঙ্কা নেই।

হাওরের কৃষির উন্নয়নে সরকারের পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘হাওরসহ সারা দেশে অনেক পতিত জমি পড়ে আছে। আমরা এই জমি চাষের আওতায় আনতে ৫০০ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করেছি। যার মাধ্যমে পতিত জমি চাষের আওতায় আনা হবে।’

থানা পরিদর্শনের সময় উপস্থিত ছিলেন সিলেট বিভাগীয় পুলিশ কমিশনার খান মোহাম্মদ রেজাউন্নবী, সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মো. মুশফেকুর রহমান, সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক ড. মুহাম্মদ ইলিয়াছ মিয়া, পুলিশ সুপার তোফায়েল আহম্মদ, শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুকান্ত সাহা, ওসি আকরাম আলী প্রমুখ।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

জেনে নিন গ্রীষ্মে সুস্বাদু আর উপকারী কাঁচা আমের ১১টি বিস্ময়কর গুণ
এসএসসি পরীক্ষা না দিয়ে প্রেমিকের বাড়িতে অনশনে কিশোরী
সাধারণ মানুষ চায় এই সরকার আরো ৫ বছর থাকুক: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে টাঙ্গাইলে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মানববন্ধন
জিয়াউর রহমান বেঁচে থাকলে ইসরায়েল এমন অপকর্মের সাহস পেত না: মির্জা আব্বাস (ভিডিও)
নওগাঁয় গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ২
বাংলাদেশ রেলওয়ের দুই কর্মকর্তাকে পদায়ন ও বদলি
২০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশে হাসপাতাল বানাচ্ছে মার্কিন কোম্পানি
কাদের-কামালসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারি করতে চিঠি
সিলেটে থানায় লালগালিচা দেখে ক্ষোভ ঝাড়লেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
দিল্লিতে লিঙ্গ পরিবর্তনের চিকিৎসা নিতে এসে গ্রেপ্তার ৫ বাংলাদেশি
রবিবার ৩ জেলায় সাধারণ ছুটি, সবমিলিয়ে টানা ৪ দিনের অবকাশ
এসএসসির ফল ৬০ দিনে প্রকাশের চেষ্টা করা হবে: শিক্ষা উপদেষ্টা
পূর্বাচলে প্লট দুর্নীতি: শেখ হাসিনা-পুতুলসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা
যমুনা নদী বাঁধ দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের দায়ে ৭ জনকে কারাদন্ড
ভারত ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করায় ৪ বাংলাদেশি পণ্যবাহী ট্রাক পেট্রাপোল বন্দর থেকে ফেরত
মেয়েকে কেন্দ্রে নেওয়ার পথে অসুস্থ হয়ে বাবার মৃত্যু, পরীক্ষার হলে মেয়ে জানে না মৃত্যুর খবর
‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ’ নয়, ‘বাংলাদেশ জনকল্যাণ রাষ্ট্র’ নাম চায় ইসলামী আন্দোলন
৩১৩ জনকে ডিঙিয়ে আগাম জামিন পেলেন সন্ত্রাসী সাজ্জাদকে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা দিয়ে ছাড়াতে চাওয়া স্ত্রী তামান্না
নিউ জার্সিতে সড়ক দুর্ঘটনায় বাংলাদেশি প্রবাসীসহ মেয়ের মৃত্যু