বিএডিসিকে বীজ দিয়ে বিপাকে নরসিংদীর কৃষকরা
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি)কে ধান ও সরিষা বীজ সরবরাহ করে বিপাকে পড়েছেন নরসিংদীর কৃষকরা। সময় মতো বীজের মূল্য পরিশোধ না করায় বিপাকে পড়েছে কৃষি অফিসও। এতে কৃষকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। কৃষি বিভাগ বলছেন, বীজের মূল্য পরিশোধ করার জন্য তাগাদা দিয়ে যাচ্ছেন তারা।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক এ বছর কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি বীজ সংগ্রহের নির্দেশনা দেওয়া হয়। সেই নিদের্শনা মোতাবেক নরসিংদী জেলার ৬টি উপজেলার বীজ উৎপাদনে সনদপ্রাপ্ত কৃষকদের কাছ থেকে মোট ২৫ হাজার ৪০৮ মেট্রিক টন ধানের বীজ এবং ২০০ কেজি সরিষা বীজ সংগ্রহ করে কৃষি বিভাগ। সংগ্রহের পর এ সকল বীজ বিএডিসিকে বুঝিয়ে দেন কৃষি বিভাগ। কিন্তু বীজ দেওয়ার ৪ মাস পার হওয়ার পরও বীজের মূল্য পরিশোধ করা হয়নি। যার ফলে তাদের পাওনা নিয়ে সংশয় সৃস্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে সদর উপজেলার কৃষক দলনেতা মোহাম্মদ আলী জানান, এতে কৃষি বিভাগের প্রতি কৃষকদের আস্থা হারানোর পাশাপাশি কৃষকদের তোপের মুখে পড়তে হচ্ছে মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তাদেরও। আর প্রথমবারেই সরাসরি বীজ দিয়ে হোচট খাওয়ায় ভবিষ্যতে বীজ বিক্রিতে অনিহা সৃস্টি হবে বলে জানান তিনি।
অপর কৃষক বিল্লাল মিয়া জানান, বিএডিসিকে আমরা বীজ দেইনি। বীজ দিয়েছি কৃষি অফিসকে। তাই আমরা এখন বিএডিসিকে চিনি না। চিনব কৃষি অফিসকে। কৃষি অফিস কোথায় থেকে টাকা দেবে এটা তাদের বিষয়। আর এবার প্রথমবারেই যে শিক্ষা কৃষকদের দেওয়া হয়েছে এতে আগামীতে বীজ কেউ দেবে বলে মনে হয় না।
এ প্রসঙ্গে কৃষি উপ-সহকারী কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, বিএডিসি কৃষকদের বীজের মূল্য পরিশোধ না করায় মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের তোপের মুখে পড়তে হচ্ছে কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কৃষি উপ-সহকারী কর্মকর্তাদের। কারণ মাঠে গেলেই কৃষকরা টাকা চায়। টাকা না দিতে পারলে কৃষকদের তোপের মুখে পড়তে হয়। এতে মান-সম্মানের বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।
এ বিষয়ে নরসিংদী সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মহুয়া শারমীন মুনমুন জানান, বিএডিসি অন্যান্য বছর তাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বীজ সংগ্রহ করে থাকে। এ বছরই প্রথমবারের মতো কৃষি অফিসের মাধ্যমে বাকীতে ধান ও সরিষা বীজ ক্রয় করে। আর বীজ দেওয়ার চার মাস হয়ে গেলেও বীজের মূল্য পরিশোধ না করায় কৃষক দলনেতারা অফিসে এসে ধর্ণা দিচ্ছেন। তাই কৃষকদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে দ্রুত তাদের মূল্য পরিশোধ করতে হবে।
বীজের মূল্য পরিশোধের বিষয়ে নরসিংদী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শষ্য) মো. সালাহ উদ্দিন টিপু বলেন, কৃষকদের এই বীজের মূল্য পরিশোধের জন্য জেলা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে চিঠি পাঠানোর পাশাপাশি বিভিন্ন মিটিং ও ফোরামে উত্থাপিত হচ্ছে। আর দ্রুত তাদের পাওনা পরিশোধের চেস্টা করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে জানতে নরসিংদী জেলা কার্যালয়ে একাধিকবার গিয়েও বিএডিসির উপ-পরিচালক মাহমুদা বেগমকে পাওয়া যায়নি। তার মোবাইলে কল দিলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।
এসআইএইচ