শিক্ষকের জীবনের বিনিময়ে সড়কে গতিরোধক-জেব্রা ক্রসিং!
শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেট এলাকায় মাইক্রোবাসের ধাক্কায় নিহত হন মোটরসাইকেল আরোহী প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আফতাব হোসেন। শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) বেলা দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এরপর বেলা আড়াইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন করা হয়। জানাজায় অংশ নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ অনেকে। চোখের জলে সহপাঠী, সহকর্মী ও শিক্ষার্থীরা স্মরণ করেন তার কথা।
এই সংঘর্ষের পর টনক নড়েছে কর্তৃপক্ষের। শিক্ষকের মৃত্যুর পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেট এলাকায় দুর্ঘটনা এড়াতে সড়কে জেব্রাক্রসিং দেওয়া হয়েছে। গতিরোধকও তৈরি করা হচ্ছে। জেব্রাক্রসিংয়ের কাজ শেষ হয়েছে। আজকের মধ্যে গতিরোধকের নির্মাণকাজ শেষ করার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন হাটহাজারী উপজেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিদুল আলম।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেট এলাকায় সড়কে মৃত্যুর ঘটনা নতুন নয়। গত তিন বছরে চারটি পৃথক দুর্ঘটনায় পাঁচজন নিহত হয়েছেন। ২০২১ সালের ২০ অক্টোবর বাসের ধাক্কায় দুই শ্রমিক নিহত হন। এর পর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ১ নম্বর গেট এলাকায় জেব্রাক্রসিং, ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর রবিউল হাসান ভূঁইয়া জানান, ফুটওভার ব্রিজ করে দেওয়ার জন্য অনেক আগেই সড়ক বিভাগকে দরখাস্ত দেওয়া হয়েছিল। সর্বশেষ তারা ফুটওভার ব্রিজের জন্য বাজেট পাস করেছে বলে জানিয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করা হবে আশ্বাস দিয়েছে তারা।
এদিকে এ ঘটনায় মাইক্রোবাসের চালক মাসুদ পারভেজকে আটক করেছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নগর অভিমুখে যাচ্ছিলেন মোটরসাইকেল আরোহী আফতাব হোসেন। একটি মাইক্রোবাস নগর থেকে হাটহাজারীর দিকে যাচ্ছিল। এ সময় মাইক্রোবাসের সঙ্গে মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে আফতাব হোসেন গুরুতর আহত হন। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আফতাব হোসেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে ২০১১ সালে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। ২০১০ সালে একই বিভাগের শিক্ষক ইসমত আরার সঙ্গে তার বিয়ে হয়৷ তাদের মেহরাব হোসেন নামের আট বছরের একটি ছেলে আছে।