কাতারে বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ, বাংলাদেশি শ্রমিক বহিষ্কার
কাতারে বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করায় বাংলাদেশিসহ একদল বিদেশি শ্রমিককে বহিষ্কার করেছে মালিকপক্ষ। ১৪ আগস্ট আল বান্দারি ইন্টারন্যাশনাল গ্রুপের দোহা অফিসের বাইরে অন্তত ৬০ জন অভিবাসী শ্রমিক সমাবেশ করেছিল। এদের অনেকে সাত মাস ধরে বেতন পাচ্ছিলেন না। ওই সময় বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে আটক ও বহিষ্কার করা হয়। তবে তাদের সংখ্যা কত তা জানা যায়নি। এর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশি শ্রমিকও।
বুধবার (২৪ আগস্ট) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির বাংলা সংস্করণের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে।
খবরে বলা হয়েছে, জানা গেছে, যেসব শ্রমিক প্রতিবাদ করেছিলেন তারা বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, মিসর ও ফিলিপাইনের নাগরিক।
কাতারি সরকার বলছে, যাদের বহিষ্কার করা হয়েছে তারা দেশটির ‘নিরাপত্তা আইন লঙ্ঘন’ করেছেন।
২০১০ সালে কাতার এ বছরের বিশ্বকাপ আয়োজনের দায়িত্ব পাওয়ার পর দেশটিতে স্টেডিয়াম ও অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণের ব্যাপক কর্মযজ্ঞ শুরু হয়। কিন্তু তখন থেকেই এসব নির্মাণের সঙ্গে জড়িত অভিবাসী শ্রমিকদের সঙ্গে কর্তৃপক্ষের আচরণ নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। আল বান্দারি ইন্টারন্যাশনাল গ্রুপ মূলত একটি নির্মাণ ও প্রকৌশল কোম্পানি। তবে বিক্ষোভরত এসব শ্রমিক বিশ্বকাপের প্রস্তুতিতে জড়িত ছিলেন কি না তা জানা যায়নি এবং বিশ্বকাপ আয়োজক কমিটিও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
বিবিসিকে দেওয়া এক বিবৃতিতে কাতার সরকার নিশ্চিত করেছে, দোহায় বিরল বিক্ষোভে অংশ নেওয়া বেশ কয়েকজন কর্মীকে জননিরাপত্তা আইন লঙ্ঘনের জন্য আটক করা হয়েছে।
মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো জানিয়েছে, এদের মধ্যে কাউকে কাউকে এরইমধ্যে কাতার থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।
তবে কাতারি সরকার দাবি করেছে ক্ষতিগ্রস্ত সব শ্রমিকের বকেয়া বেতন ও অন্যান্য পাওনা পরিশোধ করা হবে।
সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শ্রমিকদের বেতন-ভাতা না দেওয়ার জন্য আল বান্দারি গ্রুপের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছিল। দেনা-পাওনা নিষ্পত্তি করার সময়সীমা মানতে ব্যর্থ হওয়ার জন্য এই কোম্পানির বিরুদ্ধে আরও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
শ্রমিকদের প্রতি এই আচরণের বিষয়টি তুলে ধরেছে শ্রম অধিকার বিষয়ক মানবাধিকার সংস্থা ইকুইডেম। এর প্রধান মোস্তফা কাদরি প্রশ্ন তুলেছেন, ‘আমরা সবাই কি কাতার এবং ফিফা দ্বারা প্রতারিত হয়েছি?’
তিনি বেশ ক'জন শ্রমিকের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, কিছু পুলিশ কর্মকর্তা বিক্ষোভকারীদের বলেছেন, তারা যদি গরমের মধ্যে ধর্মঘট করতে পারে, তাহলে তারা এয়ারকন্ডিশন ছাড়াই ঘুমাতে পারে।
কাদরি বলেন, ‘আপনি কি কল্পনা করতে পারেন যে কতটা মরিয়া হলে এসব শ্রমিক ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে প্রতিবাদ করতে পারেন? তারা রাজনীতি করছেন না, তারা কেবল তাদের শ্রমের ন্যায্য মজুরি চাইছেন।’
টিটি/