আওয়ামী লীগ হত্যায় উৎসাহী দল: রিজভী
আওয়ামী লীগের সন্ত্রাস ও অপকীর্তির শেষ নেই। বিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন করতে তারা রক্তাক্ত পথে হাঁটছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের অপকর্ম সম্পন্ন করে অত্যন্ত নিখুঁতভাবে। গতরাতে আওয়ামী দুষ্কৃতিকারীরা বাগেরহাট জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম ভুঁইয়া তানুকে বাগেরহাট শহরে গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। আওয়ামী লীগ হত্যায় উৎসাহী একটি রাজনৈতিক দল।’
শনিবার (১২ নভেম্বর) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
বিরোধী দলের নিরপরাধ লোকদের হত্যার শাস্তি না হওয়ায় দুর্বৃত্তরা সহিংস কার্যাবলি অব্যাহত রেখেছে। ছাত্রলীগ-যুবলীগের মানুষ হত্যার বীরত্বে আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী দারুণ উল্লসিত ও উত্তেজিত। মানুষ হত্যায় এদের কলঙ্কের তীব্রতা এতটাই বেশি যে, তারা আর কোনো কিছু লুকিয়ে রাখতেও লজ্জা পাচ্ছে না, যোগ করেন তিনি।
রিজভী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের শাসনামলে পিলখানার বিডিআর হত্যা, সাংবাদিক হত্যা, শিক্ষক হত্যা, ছাত্র হত্যা, শ্রমিক হত্যা থেকে শুরু করে বিরোধী রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের হত্যা কোনটিরই কমতি করেনি। যাদেরকেই তারা সরকারের বিরোধী মনে করে তাদেরকেই ধরাতল থেকে অদৃশ্য করতে দ্বিধা করে না। সেই ধারাবাহিকতায় গতকাল হত্যা করা হলো স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা নুরে আলম ভুঁইয়া তানুকে।’
শাসকগোষ্ঠী নিজেদের সমষ্টিগত সুখময় জীবন গড়ে তুলতেই বিরোধী পক্ষকে নিশ্চিহ্ন করার এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে অভিযোগ করে সাবেক এই ছাত্র নেতা বলেন, আইন শৃঙ্খলার ধ্বজাধারীরা সরকারের প্রাইভেট বাহিনীর ভূমিকা পালন করতেই ব্যস্ত রয়েছে, যোগ করেন তিনি।
সাধারণ গণতান্ত্রিক নিয়ম পদ্ধতি এবং নির্বাচনী রায়ের মধ্য দিয়ে জনগণের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেওয়ার ক্ষমতাকে আটকিয়ে দিয়ে খুন ও অত্যাচারের পথে হাঁটছে আওয়ামী সরকার। সারাদেশে বিভিন্ন জনপদে যুবলীগ-ছাত্রলীগকে দিয়ে তারা খুনে বাহিনী তৈরি করেছে।
রিজভী বলেন, ‘নির্বিচারে গ্রেপ্তার, ব্যাপকভাবে নির্যাতন, নারকীয় অত্যাচার এবং ভয়ঙ্কর আতঙ্ক সৃষ্টিকারী গুমের নীতির উপর দেশ চালাচ্ছে অবৈধ সরকার। এক শ্বাসরুদ্ধকর গুমোট পরিবেশের মধ্যে গোটা জাতি হাঁসফাঁস করছে। দেশে এখন জঙ্গলের রাজত্ব কায়েম করা হয়েছে।দেশের ভোটারদের প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা করে বিরোধী দলকে নতি স্বীকার করানোর জন্য সরকার গুমের মতো একটি অমানবিক পন্থা চালু রেখেছে। কিন্তু সব স্বৈরাচারী সরকার’রা ভুলে যায় যে, জনগণের শক্তি কত প্রবল।’
তিনি বলেন, শাসকদল নিজেদের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার জন্য দানবীয় চক্রান্ত প্রতিনিয়তই এঁটে চলছে। সংগ্রামী জনগণকে কাবু করতে, জনগণের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক দাবির আন্দোলনকে ধ্বংস করতে অবৈধ শাসকগোষ্ঠী হত্যা ও গুমের মতো কর্মসূচি বেছে নিয়েছে।
ফরিদপুর গণসমাবেশকে বাধা দেওয়ার কমতি করেনি সরকার এমন অভিযোগ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, রাজবাড়ি, ফরিদপুরসহ বিভিন্ন জেলায় বিএনপি নেতা-কর্মীদের খুঁজতে বাড়িতে বাড়িতে পুলিশের হানা দেওয়া, গোপালগঞ্জ থেকে ফরিদপুরগামী এবং ঢাকা থেকে ফরিদপুরগামী বাস বন্ধ করে দেওয়া ইত্যাদি অপকৌশল গ্রহণ করা হয়েছে।
শনিবার সকাল থেকে ফরিদপুর মোবাইলের সব নেটওয়ার্ক, ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সরকারের ইন্ধনেই এই অঘোষিত ধর্মঘট, পুলিশি হয়রানি এবং মোবাইলের নেটওয়ার্ক বন্ধ করা সত্বেও এ মুহূর্ত পর্যন্ত অভাবনীয় লোক সমাগম হতে শুরু করেছে। মানুষ নানাভাবেই নিজেরা বিভিন্ন বাহনে সমাবেশস্থলের দিকে বানের পানির মতো এগিয়ে যাচ্ছে।
এমএইচ/এমএমএ/