লন্ডন সম্মেলনে ইউক্রেনকে সমর্থনে চার পদক্ষেপ

ছবিঃ সংগৃহীত
ইউক্রেন সংকট মোকাবিলায় যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে ইউক্রেনকে সহায়তার জন্য চারটি প্রধান পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছেন ইউরোপের নেতারা। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার জানিয়েছেন, ইউক্রেনের পক্ষে নেওয়া এই পদক্ষেপগুলো দেশটির নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে।
রোববার (২ মার্চ) লন্ডনের ল্যাংকেস্টার হাউসে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের নেতারা এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি অংশ নেন। সম্মেলনের উদ্দেশ্য ছিল ইউক্রেনকে চলমান যুদ্ধে আরও কার্যকর সহায়তা দেওয়া এবং ভবিষ্যতে দেশটির সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। কিয়ার স্টারমার বলেন, ‘আমাদের দায়িত্ব নিতে হবে এবং ইউক্রেনকে সহায়তায় নিজেদের ভূমিকা আরও জোরালো করতে হবে।’
সম্মেলনে ইউক্রেনের জন্য চারটি প্রধান পদক্ষেপ নেওয়া হয়। প্রথমত, যুদ্ধ চলাকালে দেশটিতে সামরিক সহায়তা অব্যাহত রাখা হবে এবং রাশিয়ার ওপর আরও কঠোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে। দ্বিতীয়ত, ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করবে ইউরোপের দেশগুলো। তৃতীয়ত, ভবিষ্যতে ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার সম্ভাব্য হামলা প্রতিহত করতে শান্তিচুক্তির ক্ষেত্রে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হবে। চতুর্থত, ইউক্রেনের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে একটি আন্তর্জাতিক জোট গঠন করা হবে, যা দেশটিতে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখবে।
এছাড়া, যুক্তরাজ্য ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ১৬০ কোটি পাউন্ড সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এই অর্থ ব্যয়ে ইউক্রেনের জন্য পাঁচ হাজারের বেশি ক্ষেপণাস্ত্র কেনা হবে, যা মূলত দেশটির আকাশ প্রতিরক্ষার জন্য ব্যবহার করা হবে।
তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ চললেও সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে পরিবর্তন এসেছে। যুক্তরাষ্ট্র এতদিন ইউক্রেনের প্রধান সহায়তাকারী থাকলেও ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর সেই অবস্থান দুর্বল হয়েছে। সম্প্রতি হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প ও জেলেনস্কির মধ্যে বৈঠকে উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় এবং দুই দেশের নির্ধারিত চুক্তি বাতিল করা হয়। এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের পশ্চিমা মিত্ররা নতুন পরিকল্পনা নিতে বাধ্য হয়েছে।
লন্ডনের এই সম্মেলনে ইউরোপের নেতাদের পাশাপাশি কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোও উপস্থিত ছিলেন। ইউক্রেনের জন্য নেওয়া পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়ন হলে দেশটি আরও শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে। পশ্চিমা বিশ্ব ইউক্রেনের পাশে থাকার বার্তা দিলেও যুদ্ধের সমাপ্তি এখনও অনিশ্চিত রয়ে গেছে।
