১৫ বছর পর শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠের ইমামতি ফেরত পেলেন মুফতি ছাইফুল্লাহ

আবুল খায়ের মোহাম্মদ ছাইফুল্লাহ। ছবি: সংগৃহীত
১৫ বছর পর কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠের ইমামতির দায়িত্ব ফিরে পেলেন মুফতি আবুল খায়ের মোহাম্মদ ছাইফুল্লাহ। আজ রোববার (২ মার্চ) দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে ঈদুল ফিতর উদযাপন উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভায় তাঁকে পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ঈদগাহ মাঠ পরিচালনা কমিটির সদস্যসচিব ও কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এরশাদ মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আবুল খায়ের মোহাম্মদ ছাইফুল্লাহ কিশোরগঞ্জ শহরের বড় বাজার মসজিদের খতিব। তাঁর বাবা আবুল খায়ের মোহাম্মদ নূরুল্লাহ শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠের সাবেক ইমাম ছিলেন এবং তাঁর ভাই ওয়ালিওল্লাহ রাব্বানি জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক।
প্রস্তুতিমূলক সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক ও শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান। সভায় ঈদের জামাত সুষ্ঠুভাবে আয়োজনের জন্য নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এবারও শোলাকিয়ায় ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে। নিরাপত্তায় পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির পাশাপাশি সেনাবাহিনী স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে থাকবে। দূরদূরান্ত থেকে মুসল্লিদের আসার সুবিধার্থে ‘শোলাকিয়া ঈদ স্পেশাল’ নামে দুটি বিশেষ ট্রেন চালু করা হবে।
এ বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী, সেনাবাহিনীর মেজর রায়হান, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তারী কাদেরী, সিভিল সার্জন সাইফুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম, জেলা জামায়াতের আমির রমজান আলী এবং ঈদগাহ মাঠ পরিচালনা কমিটির সদস্যসচিব সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এরশাদ মিয়া।
উল্লেখ্য, হয়বতনগর এ ইউ কামিল মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ আবুল খায়ের মোহাম্মদ নূরুল্লাহ ৩০ বছর ধরে শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠের ইমামতি করেন। ২০০৩ সালে বার্ধক্যের কারণে এ দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ান। এরপর ২০০৪ সালে তাঁর ছেলে আবুল খায়ের মোহাম্মদ ছাইফুল্লাহ ইমামতির দায়িত্ব নেন। তিনি ২০০৯ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন, তবে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার তাঁকে সরিয়ে দেয়। এরপর ইসলাহুল মুসলিমিন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসউদ শোলাকিয়ার ইমাম হন।
২০২৩ সালের ৫ আগস্ট গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পরিস্থিতি পরিবর্তন হয়। ৩ সেপ্টেম্বর রাজধানীর রামপুরা থানায় দায়ের করা একটি হত্যা মামলায় ফরীদ উদ্দীন মাসউদকে আসামি করা হয় এবং তিনি পলাতক রয়েছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৫ বছর পর শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠের ইমামতির দায়িত্ব পুনরায় ফিরে পেলেন মুফতি আবুল খায়ের মোহাম্মদ ছাইফুল্লাহ।
