বুধবার, ২ এপ্রিল ২০২৫ | ১৮ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

জয় বাংলার নবযাত্রা

বাংলাদেশের মন্ত্রীপরিষদ ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রীপরিষদের ২০ ফেব্রুয়ারির বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ থেকে জানানো হয়েছে, এ ব্যাপারে ২০২০ সালে হাইকোর্টের একটি রায় আছে, যেখানে বলা হয়েছে জয় বাংলাকে জাতীয় স্লোগান হিসেবে বিবেচনা করতে হবে এবং সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।

‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান ঘোষণার পর সব সাংবিধানিক পদধারী ব্যক্তি, রাষ্ট্রের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী রাষ্ট্রীয় বা সরকারি অনুষ্ঠানের শেষে ‘জয় বাংলা’ উচ্চারণ করবেন। এ ছাড়া স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, মাদ্রাসাসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যে কোনো ধরনের সভা-সেমিনার শেষে ‘জয় বাংলা’ বলার বাধ্যবাধকতা থাকবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অ্যাসেম্বলিতেও ‘জয় বাংলা’ স্লোগান হবে। অর্থাৎ যে কোনো ধরনের অ্যাসেম্বলি, অনুষ্ঠানে সরকারি-বেসরকারি সবাই ‘জয় বাংলা’ স্লোগানটি জাতীয় স্লোগান হিসেবে ব্যবহার করবেন। জাতীয় দিবসগুলোতে ‘জয় বাংলা’ উচ্চারিত হবে।

তবে সিদ্ধান্তটি কীভাবে বাস্তবায়িত হবে, অর্থাৎ জাতীয় স্লোগান হিসেবে ‘জয় বাংলা’ কখন, কীভাবে ব্যবহৃত হবে, কোথায় বাধ্যতামূলক থাকবে, সে বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন আসবে। স্মরণযোগ্য, জয় বাংলাকে ‘জাতীয় স্লোগান’ হিসেবে ঘোষণা চেয়ে ২০১৭ সালে হাইকোর্টে রিট করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী। ২০২০ সালে ‘জয় বাংলা’ বাংলাদেশের জাতীয় স্লোগান হবে বলে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বাঙালির জন্য, বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্য ‘জয় বাংলা’ এমন একটি স্লোগান–যা গণমানুষকে আত্মসচেতন করে, জাগ্রত করে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় এই স্লোগান বাঙালি জনতাকে পাকিস্তানের শাসন-শোষণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে প্রবলভাবে প্রেরণা যুগিয়েছে। এই একটি মাত্র স্লোগানের মধ্য দিয়ে বাঙালি তার জাতীয় জীবনের সবচাইতে তীব্র, সংহত ও তাৎপর্যপূর্ণ আবেককে ধারণ করতে পেরেছে; দুটি মাত্র শব্দ পাকিস্তানের রাষ্ট্র কাঠামোকে কাঁপিয়ে দিয়েছে, মাত্র দুটি শব্দ সুবিশাল আঙ্গিকে তুলে ধরেছে অসাম্প্রদায়িকতা, বাঙালির অবিভাজ্য সংস্কৃতি এবং ভাষার সৌন্দর্য ও জাতীয় আবেগ।

আমরা যারা ষাট দশকের মাঝামাঝি থেকে মুক্তিযুদ্ধের মাঠ পর্যায়ে যুক্ত থাকার সৌভাগ্য লাভ করেছি, তারা জানি, কীভাবে ‘জয় বাংলা’ স্লোগানটি অধিকার প্রত্যাশি বাঙালিকে সামনে এগুবার শক্তি দিয়েছে। জমলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী ১৯৭১-এর শুরুতে বিভিন্ন সভা সমবেশে ‘স্বাধীন বাংলা জিন্দাবাদ’, ‘আজাদ বাংলা জিন্দাবাদ’–ইত্যাদি স্লোগান ব্যবহার করেছেন। তবে জয় বাংলার প্রবল অগ্রাভিযান সবকিছু ছাপিয়ে গেছে। মূলত ১৯৬৯ সাল থেকে সেদিনের ছাত্র সমাজ বিভিন্ন মিছিল ও সভা সমাবেসে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান ব্যবহার করা শুরু করে। ১৯৭০-এর সাধারণ নির্বাচনের প্রচারাভিযানে ‘জয় বাংলা’ ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে ‘জয় বাংলা’ স্লোগানটি ব্যবহৃত হয় ব্যাপকভাবে।

স্মরণ করা যেতে পারে, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের স্বাক্ষর সংগীত ছিল–‘জয় বাংলা, বাংলার জয়’। ১৯৭১ সালের ১১ এপ্রিল মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ সর্বপ্রথম যে বেতার ভাষণটি দেন, তারও শেষ হয় ‘জয় বাংলা, জয় স্বাধীন বাংলাদেশ’ স্লোগান দিয়ে।

বিভিন্ন মত থাকলেও ‘জয় বাংলা’ স্লোগানের উৎপত্তি প্রথম দেখা যায়, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের সময়। সে সময় ফরিদপুর-মাদারীপুরের স্কুল শিক্ষক স্বাধীনতা সংগ্রামী পূর্ণচন্দ্র দাস ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে জেল-জুলুম-নির্যাতনের শিকার হয়ে প্রবাদ পুরুষে পরিণত হন। একজন বাঙালি বীরের আত্মত্যাগ ও স্বজাত্যবোধে মুগ্ধ হয়ে পূর্ণচন্দ্র দাসের কারামুক্তি উপলক্ষে কাজী নজরুল ইসলাম ‘পূর্ণ-অভিনন্দন’ নামে একটি কবিতা রচনা করেন ১৯২২ সালে। কবিতাটি কবির ‘ভাঙার গান’ কাব্যগ্রন্থে স্থান পায়। ওই কবিতায় কাজী নজরুল সর্বপ্রথম ‘জয় বাংলা’ শব্দ ব্যবহার করেন। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের সাহসী বাঙালি নায়ককে সম্মান জানিয়ে কবি লেখেন– ‘ওগো অতীতের আজো–ধূমায়িত আগ্নেয়গিরি ধূম্রশিখ!/না–আসা–দিনের অতিথি তরুণ তব পানে চেয়ে নিনিমিখ।/জয় বাংলার পূর্ণচন্দ্র, জয় জয় আদী অন্তরীন!/জয় যুগে–যুগে –আসা সেনাপতি, জয় প্রাণ–আদি –অন্তহীন/ স্বাগত ফরিদপুরের ফরিদ, মাদারিপুরের মর্দবীর/ বাংলা–মায়ের বুকের মানিক, মিলন পদ্মা ভাগীরথীর!’

জয় বাংলার উৎপত্তি সম্পর্কে আরও একটি তথ্য পাওয়া যায়। কাজী নজরুল ইসলামের সম্পাদনায় প্রকাশিত নবপর্যায় ‘নবযুগ’ পত্রিকার ৩ বৈশাখ ১৩৪৯ বঙ্গাব্দ (১৯৪২) সংখ্যায় ‘বাঙালির বাঙলা’ নামে প্রকাশিত একটি প্রবন্ধে নজরুল লেখেন, ‘বাঙালিকে, বাঙালির ছেলেমেয়েকে ছেলেবেলা থেকে শুধু এই এক মন্ত্র শেখাও; এই পবিত্র বাংলাদেশ, বাঙালির-আমাদের। দিয়া প্রহারেণ ধনঞ্জয় তাড়াব আমরা করি না ভয় যত পরদেশী দস্যু ডাকাত রামাদের গামা’দেও বাঙলা বাঙালির হোক। বাঙালির জয় হোক। বাঙালির জয় হোক।’

বলা সঙ্গত হবে যে, ১৯৪২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কলকাতায় ছিলেন এবং বিদ্রোহী কবির সেই উদ্দীপ্ত প্রবন্ধ তাকে নিশ্চিতভাবেই উজ্জীবিত করেছিল। আরও স্মরণযোগ্য, বাংলাদেশ স্বাধীন রাষ্ট্র হওয়ার পরপরই বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিগত উদ্যোগে কাজী নজরুল ইসলামকে ভারত থেকে বাংলাদেশে আনা হয় এবং তাকে ও তার পরিবারকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেওয়া হয়।

তবে অধূনাকালে, খুব সম্ভবত ১৯৬৯ সালে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনের সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের একটি সভায় সর্বপ্রথম ‘জয় বাংলা’ স্লোগানের ব্যবহার শুরু হয়। এরপর থেকে প্রায় ব্যাপকভাবেই আন্দোলনরত ছাত্র নেতা-কর্মীরা তাদের বক্তৃতায় ‘জয় বাংলা’ স্লোগান ব্যবহার করতে থাকেন। এটি ব্যবহার হতে থাকে প্রতিটি জাতীয়তাবাদী সভা-সমাবেশে। রমনা রেসকোর্সে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ইতিহাস খ্যাত জনসভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কণ্ঠে ‘জয় বাংলা’ উচ্চারিত হওয়ার ফলে তা ব্যাপকভাবে বাঙালি জনতার প্রাণের স্লোগানে পরিণত হয়। বলা বাহুল্য, বঙ্গবন্ধুর কণ্ঠে উচ্চারিত হওয়ার পর থেকে ‘জয় বাংলা’ গোটা জনপদে জনপ্রিয়তা লাভ করে।

অনস্বীকার্য, জয় বাংলা ১৯৬৯ সালের পাকিস্তানবিরোধী আন্দোলনের প্রতিটি পর্যায়ে জাতীয় প্ররণাশক্তি হয়ে উঠে, হয়ে উঠে জাগরণি স্লোগান। একই সঙ্গে ১৯৭১ সালের রক্তাক্ত মুক্তিযুদ্ধে হানাদার পাকিস্তান বাহিনী ও তাদের দেশীয় অনুচর রাজাকার,আল বদরদের প্রতিরোধে সমর স্লোগান হয়ে ওঠে জয় বাংলা। কারণ এই একটি মাত্র স্লোগানের মধ্য দিয়ে বাঙালি তার জাতীয় জীবনের সবচেয়ে তীব্র, সংহত ও তাৎপর্যপূর্ণ আবেককে উচ্চারণ করতে সক্ষম হয়।

‘জয় বাংলা’ স্লোগানটির প্রধানতম তাৎপর্য হচ্ছে, এর উচ্চারণের মধ্যে বাঙালি একদিকে যেমন নিজের অসাম্প্রদায়িক জাতিসত্তাকে প্রকাশ করে, অন্যদিকে সেই জাতিসত্তার বিরুদ্ধ শক্তিকে প্রতিরোধ করার শক্তি খুঁজে পায়। এই স্লোগান ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ স্লোগানের আবেদনকে কার্যকরভাবে প্রতিরোধ করে, ধর্মভিত্তিক জাতীয়তা, যা ছিল পাকিস্তানি রাষ্ট্রব্যবস্থা বা রাষ্ট্রীয় শোষণের মূল হাতিয়ার, তাকেও প্রতিরোধ করে ‘জয় বাংলা’।

বাংলাদেশ রাষ্ট্র তার স্বাধীনতার ৫০তম বার্ষিকী উদযাপন করেছে। অর্থাৎ যে অসাম্প্রদায়িক জাতীয়তাবোধ উত্তরোত্তর শক্তিশালী হয়ে পাকিস্তানের ধর্মতান্ত্রিক শোষণের রাষ্ট্রকাঠামোকে পরাজিত করেছে, সেই জাতীয় শক্তির মহাবিজয়ের সুবর্ণ জয়ন্তি পালিত হয়েছে। একদিকে থেকে এতে প্রশান্তি লাভের সুযোগ আছে বৈকি। তবে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যাবে, সময়ের ঘূর্ণিপাকে, জয় বাংলার জাতীয়তাবাদ ক্রমান্বয়ে আক্রান্ত হয়েছে, রাজনৈতিক ধর্মবাদীরা নানা অঙ্গনে বিকশিত হয়েছে, ১৯৭১ জাতীয় চেতনাকে ১৯৪৭ এর আবরণে ঢেকে দেওয়ার চেষ্টা করছে। আরও বিস্ময়ের ব্যাপার যে, ধর্মের অন্তরাত্মা নয়, তার লেবাসি বহিরাঙ্গের সম্প্রসারণ ঘটানো হচ্ছে। এবং এই কাজটি চলছে পরিকল্পিত ভাবে এবং সুদূর প্রসারী চিন্তায়। বলা বাহুল্য, ১৯৭১ এর জাতীয় চেতনাকে পরাস্থ করে ১৯৪৭ এর সাম্প্রদায়িক চেতনার এই সম্প্রসারণ কখনো মঙ্গলের হতে পারেনা।

মনে রাখা প্রয়োজন যে, আমাদের জাতীয় জীবনের কয়েকটি জিয়নকাঠি আছে। এর একটি একুশে, একটি একাত্তর এবং একটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব। এসবকে একত্রিত ও গ্রন্থিত করে, এসবের প্রতিপক্ষদের রুখে দাঁড়াবার শক্তি দান করে যা–তা ‘জয় বাংলা’। এ স্লোগান বাঙালিকে ইতিহাসে যেভাবে বুকে বল দিয়েছে, আজও এবং আগামিতেও আত্মশক্তির সেই বল যুগাবে জয় বাংলা। নানা বিভাজনের পরও ‘জয় বাংলা’ বাঙালির শাশ্বত সম্ভ্রমের গৌরবান্বিত শক্তি, বিভ্রম দমিয়ে মানুষ হওয়ার শক্তি। ‘জয় বাংলা’র নবযাত্রাকে স্বাগত জানাই, তাকে আত্মায় ধারণ করতে বলি, কেবল বহিরাঙ্গে নয়।

লেখক: মুক্তিযোদ্ধা, লেখক ও চিন্তাবিদ

এসএ/

Header Ad
Header Ad

বিটিভিতে আজ প্রচারিত হবে ঈদের বিশেষ ‘ইত্যাদি’

উপস্থাপক হানিফ সংকেত। ছবি: সংগৃহীত

জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র ঈদের বিশেষ পর্ব আজ (১ এপ্রিল) বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) রাত ৮টার বাংলা সংবাদের পর প্রচারিত হবে। হানিফ সংকেতের রচনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনায় নির্মিত এই বিশেষ পর্বে থাকছে বর্ণাঢ্য আয়োজন। বরাবরের মতোই অনুষ্ঠানের শুরু হবে কাজী নজরুল ইসলামের কালজয়ী গান ‘ও মন রমজানের ওই রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ’ পরিবেশনের মধ্য দিয়ে।

এবারের ‘ইত্যাদি’তে থাকছে দেশাত্মবোধক গান, যেখানে কিংবদন্তি শিল্পী সৈয়দ আব্দুল হাদী ও সাবিনা ইয়াসমিনের গাওয়া গানের সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়েছেন আরও ১০ জন তরুণ শিল্পী। সংগীত পরিবেশনায় থাকছেন হাবিব ওয়াহিদ ও প্রীতম হাসান। এ ছাড়া সিয়াম আহমেদ ও জান্নাতুল সুমাইয়া হিমিও গানে অংশ নিয়েছেন। বিশেষ নৃত্য পরিবেশন করবেন জনপ্রিয় চার অভিনেত্রী সাফা কবির, সাদিয়া আয়মান, সামিরা খান মাহি ও পারসা ইভানা।

এবারের ‘ইত্যাদি’তে তিন জনপ্রিয় তারকা দম্পতি—শহীদুজ্জামান সেলিম ও রোজী সিদ্দিকী, এফ এস নাঈম ও নাদিয়া আহমেদ, ইন্তেখাব দিনার ও বিজরী বরকতউল্লাহ গানে গানে অনলাইন কেনাকাটার মজার অভিজ্ঞতা তুলে ধরবেন। মধ্যবিত্তের অর্থনৈতিক টানাপোড়েন নিয়ে নির্মিত মিউজিকাল ড্রামাতে অভিনয় করেছেন ফজলুর রহমান বাবু, মোমেনা চৌধুরী, আনোয়ার শাহী ও র‍্যাপ শিল্পী মাহমুদুল হাসান।

বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে থাকছে তৌসিফ মাহবুব ও শবনম বুবলির নৃত্য পরিবেশনা। পাশাপাশি, ‘গুজব’ নামের ছোট নাটিকায় বিদেশি অভিনয়শিল্পীদের অংশগ্রহণ দর্শকদের জন্য বাড়তি চমক হয়ে আসবে। এছাড়াও নিয়মিত চরিত্র নাতি ও কাশেম টিভির রিপোর্টার, সামাজিক অসঙ্গতি ও সমসাময়িক ঘটনাও উঠে আসবে ‘ইত্যাদি’র বিশেষ পর্বে।

অনুষ্ঠানটি প্রযোজনা করেছে ফাগুন অডিও ভিশন এবং রচনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনায় রয়েছেন হানিফ সংকেত। ঈদের আমেজে ভরা ‘ইত্যাদি’র এই বিশেষ পর্ব দর্শকদের জন্য চমক ও বিনোদনে ভরপুর হতে যাচ্ছে।

Header Ad
Header Ad

ঈদের ছুটিতে ফাঁকা ঢাকা, নেই যানজটের চিরচেনা দৃশ্য

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

প্রতিদিন যানজটে নাকাল রাজধানীবাসীর জন্য ঈদের ছুটিতে ঢাকা যেন এক অন্য রকম শহর। কর্মব্যস্ত এই নগরী এখন শান্ত, ফাঁকা ও যানজটমুক্ত। যারা ঈদে ঢাকায় রয়ে গেছেন, তারা উপভোগ করছেন এক ভিন্ন পরিবেশ।

মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) ঈদের দ্বিতীয় দিনেও রাজধানীর প্রধান সড়কগুলোতে যানবাহনের চাপ ছিল কম। অলস দুপুরে ফাঁকা রাস্তায় হালকা বাতাসে খেলা করছিল রোদের ছায়া। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কিছু এলাকায় মানুষের চলাচল বাড়তে দেখা গেছে।

ঈদে যারা ঢাকায় থেকে গেছেন, তারা অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে বেড়িয়েছেন বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে। মিরপুর চিড়িয়াখানা, জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যান, জিয়া উদ্যান, শ্যামলী ওয়ান্ডারল্যান্ডসহ বিভিন্ন পার্ক ও বিনোদন কেন্দ্রে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী রাকিব হাসান জানান, "ঈদের ছুটিতে ঢাকার ফাঁকা রাস্তাগুলোতে ঘুরে বেড়ানোর দারুণ সুযোগ পাওয়া যায়। গতকাল বন্ধুদের সঙ্গে বাইকে পুরো শহরটা ঘুরেছি, দারুণ লেগেছে।"

তবে, কর্মজীবীদের জন্য এই ফাঁকা ঢাকা যেন স্বস্তির নিঃশ্বাস। ব্যাংক কর্মকর্তা রাজিয়া সুলতানা বলেন, "সারা বছর এই যানজট নিয়ে অফিস করতে হয়। কিন্তু ঈদের ছুটিতে ঢাকাকে অন্য রকম মনে হয়। যদি সারা বছর এমন থাকত, তাহলে জীবন আরও সহজ হতো।"

যাত্রী কম থাকায় আয় কমে গেছে রিকশাচালকদের। সায়েন্সল্যাবে অপেক্ষমাণ রিকশাচালক মোহাম্মদ আরিফ জানান, "যাত্রী নেই বললেই চলে। আয় কমেছে, তবে ভালো দিক হলো জ্যাম নেই, রিকশা চালানো সহজ লাগছে।"

অন্যদিকে, সদরঘাট থেকে গুলিস্তানে আসা চালক লোকমান বলেন, "গুলিস্তান ও বাবুবাজার এলাকায় কিছুটা যানজট পেয়েছি, তবে বাকি রাস্তা ফাঁকা ছিল।"

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) জানিয়েছে, ঈদের ছুটিতে বাসাবাড়ি ও অফিস-আদালত ফাঁকা থাকায় অপরাধ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) রেজাউল করিম মল্লিক জানান, "সাইবার মনিটরিংসহ গোয়েন্দা তথ্য বিশ্লেষণ করে ঈদকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের নাশকতার তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে নিরাপত্তা নিশ্চিতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।"

সরকারি চাকরিজীবীরা এবারের ঈদে টানা ৯ দিনের ছুটি উপভোগ করছেন। আগামী ৬ এপ্রিল থেকে অফিস-আদালত খুলবে। তবে অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এর আগেই খুলবে, ফলে ধীরে ধীরে রাজধানী আবার কর্মচঞ্চল হয়ে উঠবে।

Header Ad
Header Ad

মাদারীপুরে তিন মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নিহত ৪, আহত ২

ছবি: সংগৃহীত

মাদারীপুরে পদ্মা সেতু এক্সপ্রেসওয়ের সংলগ্ন সাহেববাজার সড়কে বিপরীতমুখী তিনটি মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে চার যুবক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও দুজন গুরুতর আহত হয়েছেন।

মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) দুপুর দেড়টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতদের পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানা গেছে, নাওডোবা গোলচত্বর থেকে সাহেববাজার সড়কে তিনটি মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুজন নিহত হন। গুরুতর আহত চারজনকে হাসপাতালে নেওয়া হলে আরও দুজনের মৃত্যু হয়।

শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রতন শেখ জানান, দুর্ঘটনাটি জাজিরা থানার অন্তর্ভুক্ত হলেও এটি শিবচরের সীমানা সংলগ্ন। তিনি বলেন, "ঘটনাস্থলেই দুজন নিহত হয়েছেন। আহত চারজনকে হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে আরও দুজনের মৃত্যু হয়। বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও দুই যুবক।"

এদিকে, স্থানীয় প্রশাসন দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখছে এবং নিহতদের পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা করছে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

বিটিভিতে আজ প্রচারিত হবে ঈদের বিশেষ ‘ইত্যাদি’
ঈদের ছুটিতে ফাঁকা ঢাকা, নেই যানজটের চিরচেনা দৃশ্য
মাদারীপুরে তিন মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নিহত ৪, আহত ২
থানায় জিডি করলেন ভোক্তা অধিকারের জব্বার মন্ডল
রাশিয়া আমাদের চিরকালের বন্ধু, কখনো শত্রু নয়: চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান খালেদা জিয়ার
দ্বিতীয় দফায় মিয়ানমারে ত্রাণ সহায়তা পাঠালো বাংলাদেশ
ভারতে প্রশিক্ষণ প্লেন বিধ্বস্ত, পাইলট আহত
এপ্রিলে ঢাকায় আসছে আইএমএফ প্রতিনিধি দল
জাপানে মেগা ভূমিকম্পের শঙ্কা, প্রাণহানি হতে পারে ৩ লাখ
জুলাই কন্যাদের সম্মানজনক পুরস্কার নিয়ে যা জানাল যুক্তরাষ্ট্র
দুপুরের মধ্যে ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের সম্ভাবনা
শান্তিপূর্ণ ঈদ উদযাপনে সেনাবাহিনীর কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়াল
রাজধানীতে মেট্রোরেল ও সারা দেশে আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল শুরু
যমুনা সেতু দিয়ে একসপ্তাহে ২ লাখ ৪৭ হাজার যানবাহন পারাপার, ১৭ কোটি টাকার টোল আদায়
ঈদের দিনে সড়কে মৃত্যুর মিছিল: ১০ জেলায় নিহত ২১
টঙ্গিবাড়ীতে ঈদের দিনে ১০ টাকায় গরুর মাংস বিক্রি, উপকৃত ৪২০ পরিবার
ঈদের দিনেও তাপপ্রবাহ অব্যাহত, এক বিভাগে বৃষ্টির সম্ভাবনা
যশোরের শার্শা সীমান্তে যুবকের লাশ উদ্ধার, আটক ১