শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

শিক্ষার খোলসটা পাল্টানো দরকার


রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৬ বছর বয়সে একটি লেখা লিখেছিলেন ‘মেঘনাদবধ কাব্য’ সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে। সেখানে তিনি একটি বেশ বড়সড় মন্তব্য করেছিলেন। তবে প্রাসঙ্গিক অংশটি ছিল এমন–‘আমাদের দেশে সৃষ্টি ছাড়া এক শিক্ষা প্রণালী প্রচলিত রহিয়াছে। যাহাতে শিক্ষার্থীর রুচিরও পরিবর্তন হয় না, তারা স্বাধীনভাবে চিন্তা করিতেও পারেনা।’ আর ‘শিক্ষার হেরফের’ নামে তার আরেকটি বিখ্যাত প্রবন্ধ আছে। সেখানে তিনি মত প্রকাশ করেন, আমাদের দেশের নিম্নশ্রেণির শিক্ষকরা বাংলা অথবা ইংরেজি কোনোটাই ভালো জানেন না। তারা কি শিখাবেন?

আমি রবীন্দ্রনাথকে অনুসরণ করি সবসময়। কারণ শিক্ষার ব্যাপারে রবীন্দ্রনাথের যে ভাবনা, তা আমরা এখনো ধারণ করতে পারি না বলেই বাংলাদেশের শিক্ষার হ য ব র ল অবস্থা। আমি ৫২ বছরের শিক্ষকতা জীবনে অকপটে স্বীকার করব যে, আমার শিক্ষার্থীদের রুচির কোনো পরিবর্তন আমি করতে পারিনি এবং তাদের স্বাধীন চিন্তার কোনো সুযোগও দেইনি। কারণ আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় তাদের দুটির একটিও উদ্ধৃত হবার নয়। যদি তা না হয়, তবে শিক্ষা কি হলো?

রবীন্দ্রনাথের আরেকটি উদ্ধৃতি দিচ্ছি, ’বিদ্যা সহজ শিক্ষা কঠিন। বিদ্যা আবরণে, শিক্ষা আচরণে।’ আমরা বই থেকে, কাগজ থেকে, টেলিভিশন থেকে,শিক্ষকের মুখ থেকে যা পাই, তা হলো বিদ্যা। বিদ্যাভিত্তিক যে আলোকন, যেখানে মানুষ আলোকিত হয়, সেটি আচরণভিত্তিক। সেই জায়গায় আমাদের ব্যাপক ঘাটতি আছে। আমাদের দেশে অনেক ডিগ্রিধারী মানুষ আছে; কিন্তু আচরণগতভাবে সেই মানুষ নেই। ব্যক্তিগতভাবে একজন মানুষ শিক্ষিত বা আলোকিত কি-না, তার জন্য আমি চারটি বৈশিষ্ট্য খুঁজে বেড়াই। সেগুলো হলো–আচরণ, বচন, বসন, বিচরণ। চারটি মাত্রায় যদি কেউ উতরে যান, আমার কাছে তিনি স্নেহভাজন, শ্রদ্ধাভাজন হবেন। চারটি মাত্রায় না থাকলে আমার কাছে তার কণামাত্র মূল্য নেই। এ কথাগুলো বলছি এজন্য যে, শিক্ষা মানুষকে এই চারটি মাত্রায় আলোকিত করে, যা বাংলাদেশে এখনো নেই।

প্রারম্ভিক কথার পরে আরও একটি কথা আসে–বঙ্গবন্ধু স্বাধীন বাংলাদেশের দ্রষ্টা। তবে এ কথাটি যখন বলি তখন আমাকে মেনে নিতে হবে যে, একজন মানুষ একা একা নেতা হয় না। তার অনুসারী লাগে, অনুগামী লাগে। বাংলাদেশের মানুষ তার অনুসারী এবং অনুগামী হয়েছিলেন বলেই তিনি ইতিহাসের একটি বাঁকবদল ঘটিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি শুধু বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা নয়, বাংলাদেশ গড়ার একটি দিকনির্দেশনাও দিয়েছিলেন। ১০ জানুয়ারি ১৯৭২, তিনি ১৭ মিনিটের এক ভাষণে স্পষ্ট করে বলেছিলেন যে, বাংলাদেশ একটি আদর্শ রাষ্ট্র হবে। বাংলাদেশের ভিত্তি হবে গণতন্ত্র, ধর্ম নিরপেক্ষতা, সমাজতন্ত্র; পরে জাতীয়তাবাদ যুক্ত হয়েছে। এই চারটি রাষ্ট্রীয় মূলনীতি এবং এই আদর্শ রাষ্ট্র কেমন হবে, তা স্পষ্ট করে বলা মুশকিল। পৃথিবীর কোনো রাষ্ট্র আদর্শ কি-না, তা স্পষ্ট করে বলা যায় না।

তবে এটা ঠিক, বঙ্গবন্ধু মানুষের বসবাসযোগ্য একটি রাষ্ট্র গড়তে চেয়েছিলেন। সে কারণে শিক্ষার খোলসও পাল্টানো দরকার ছিল। কারণ ইংরেজ উপনিবেশ আমল এবং পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ উপনিবেশ আমলে যে শিক্ষা ছিল, তা শিক্ষার প্রহসনমাত্র। তিনি ১৯৭২ সালের ২৮ মে শিক্ষা কমিশন করলেন, ড. কুদরাত-ই-খুদা শিক্ষা কমিশন। ১৯৭৪ সালের ৩০ এপ্রিল তারা রিপোর্ট দিলেন। সেই রিপোর্ট দেওয়ার সময় কনিষ্ঠ সদস্য অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেছিলেন যে, এখানে ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকলে আপনি তা দেখে দিবেন। উত্তরে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন যে, আমাদের স্যাররা যা করেছেন, তা পরিবর্তন করার অধিকার কি আমার আছে? এই কথা থেকেই বোঝা যায়–বঙ্গবন্ধু শিক্ষকদের কী পরিমাণ সম্মান করতেন।

আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, ড. কুদরাত-ই-খুদা শিক্ষা কমিশনে যে দিকনির্দেশনা দেওয়া ছিল, সেভাবে যদি বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা হতো, তাহলে বাংলাদেশের শিক্ষা আজ হ য ব র ল হতো না। যে কোনো সরকার আসলেই একটা লোক দেখানো অপচয় করে এমন শিক্ষা কমিশন করে। সর্বসম্মতিতে যে শিক্ষা কমিশন ২০১০ সালে হয়েছিল, তখন আমি সরাসরি চ্যালেঞ্জ করেছিলাম বেশ কয়েকটি টিভি চ্যানেলের সামনে। বলেছিলাম, যারা কমিশনে রয়েছেন তারা সম্মানিত এবং স্নেহভাজন ব্যক্তি; কিন্তু এই সদস্যবৃন্দ কোনোদিনও শিক্ষা নিয়ে ভাবেননি, বলেননি, লেখেননি। তার ফলে যা হওয়ার তা-ই হলো।

আমি নিজেও একটির সদস্য ছিলাম ১৯৯৭ সালে, ড. শামসুল হক শিক্ষা কমিশনে। কুদরাত-ই-খুদা শিক্ষা কমিশনের পর থেকে যতগুলো কমিশন হয়েছে, আমি আমি মনে করি বাংলাদেশে ওই একটিই কার্যকর শিক্ষা কমিশন হয়েছিল। এই একটি শিক্ষা কমিশনের দিক নির্দেশনা বাস্তবায়ন করলে আমরা অনেকদূর এগিয়ে যেতে পারব শিক্ষায়। তবে কোনো সরকারই চায় না শিক্ষার যথার্থ উন্নতি হোক।

সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ ছবিতে একটি সংলাপ আছে, ছবিতে বলা হয়–যে যত বেশি জানে, সে তত কম মানে। কোনো সরকার শিক্ষিত মানবগোষ্ঠীকে নিয়ে স্বস্তিতে থাকতে পারেনা। সেজন্য লোক দেখানো অনেক কিছু করা হয়। যেমন–বর্তমানে আমরা দেখছি, মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিকে গোল্ডেন এ প্লাস পাওয়ার সংখ্যায় বিস্ফোরণ। আর তারাই যখন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দেয়, যেমন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘গ’ ইউনিটে ৮০ ভাগ ফেল করেছে। বুয়েটে ৩৩ ভাগ পাশ করেছে মাত্র। এবং যারা ফেল করেছে তাদের মধ্যে গোল্ডেন এ প্লাস পাওয়া পরীক্ষার্থী আছে। শিক্ষার নিম্নস্তর থেকে সর্বোচ্চ স্তর পর্যন্ত একটা হ য ব র ল অবস্থা চলছে।

বর্তমানে বাংলাদেশে কার্যত কোনো বিশ্ববিদ্যালয় নেই। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে বলা যায়, সেগুলো বিশ্বের বিদ্যালয় প্রাপ্ত হয়েছে। সেখানে উপাচার্য আছে বলে আমি মনে করি না, সবাই উপযাচক। আমার কাছে এমন মনে হয়েছে যে, বাংলাদেশে অর্বাচীনরাই ভিসি অথবা উপাচার্য হয়েছে। আমরা কথ্য ভাষায় ছাত্রজীবনে বলতাম ‘ক্ষ্যাত’। তারাই এখন উপাচার্য হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করছে। কাজেই বিশ্ববিদ্যালয়, মাধ্যমিক, প্রাথমিক স্তর শেষ করার শিক্ষক নাই। সবমিলিয়ে শিক্ষার খোলসও পালটানো দরকার।

পঞ্চাশ বছরে বাংলাদেশের বৈষয়িক প্রবৃদ্ধি হয়েছে; কিন্তু শিক্ষা ধসে গেছে, রাজনীতি ধসে গেছে, সংস্কৃতি উধাও হয়ে গেছে। আজ সংস্কৃতি থাকলে, রাজনীতি থাকলে শিক্ষা এগুতো। বাংলাদেশে, বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে উপাচার্য, প্রো-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ নিয়োগের ক্ষেত্রে ভারতের মতো সার্চ কমিটি গঠন করা দরকার। সার্চ কমিটি রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হতে হবে। সার্চ কমিটির সদস্য যারা, তারা যথার্থ শিক্ষিত মানুষ হতে হবে। পঞ্চাশ বছরে আমরা কিছুটা এগিয়েছি; কিন্তু অনেকটা পিছিয়েছি।

লেখক : শিক্ষাবিদ ও কলামিস্ট
শ্রুতিলিখন: শেহনাজ পূর্ণা

এসএ/

Header Ad
Header Ad

রাঙামাটিতে সিএনজি-পিকআপ সংঘর্ষে নিহত ৫

প্রতীকী ছবি

রাঙামাটির কাউখালীতে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন পাঁচজন। শনিবার (২৬ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার রাবারবাগান এলাকায় একটি পিকআপ ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

তাৎক্ষণিকভাবে নিহতদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কাউখালী উপজেলার বেতবুনিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এফ আই ইসহাক জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে এবং উদ্ধার কার্যক্রম চলছে। দুর্ঘটনার বিস্তারিত এখনও জানা যায়নি।

বিস্তারিত আসছে...

Header Ad
Header Ad

রেফারির বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছে রিয়াল, ফাইনাল ম্যাচ বয়কটের হুমকি

ছবি: সংগৃহীত

কোপা দেল রে ফাইনালের আগে মাঠের লড়াইয়ের আগেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে স্প্যানিশ ফুটবল অঙ্গন। হাইভোল্টেজ এই ম্যাচের রেফারিং নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করে ম্যাচ-পূর্ব সকল আনুষ্ঠানিকতা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। ক্লাবটির ভাষ্য, রেফারিদের সাম্প্রতিক বক্তব্যে "স্পষ্ট বিদ্বেষ ও অসম্মান" ফুটে উঠেছে, যা তাদের পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।

শুক্রবার এক বিবৃতিতে রিয়াল জানায়, তারা ফাইনালের আগে প্রচলিত সকল প্রটোকল—ম্যাচ-পূর্ব প্রেস কনফারেন্স, মিডিয়ায় উন্মুক্ত অনুশীলন, প্রেসিডেন্টদের ডিনার এবং ঐতিহ্যবাহী ফটোসেশন—বর্জন করবে।

উত্তেজনার সূত্রপাত ক্লাবটির নিজস্ব চ্যানেল রিয়াল মাদ্রিদ টিভি-তে সম্প্রচারিত এক ভিডিও ঘিরে। সেখানে ফাইনালের রেফারি রিকার্দো দে বুরগোস বেংগোয়েচিয়ার প্রতি তীব্র সমালোচনা করা হয়। পরে এক সাংবাদিক সম্মেলনে আবেগপ্রবণ রেফারি জানান, এসব সমালোচনার প্রভাব তার ব্যক্তিগত জীবনেও পড়েছে। “যখন আপনার সন্তান স্কুলে গিয়ে শুনে—তার বাবা একজন চোর—তখন সেটা সত্যিই ভয়াবহ অভিজ্ঞতা,” বলেন তিনি, চোখের পানি মুছতে মুছতে।

তবে বিতর্ক এখানেই শেষ হয়নি। ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি (ভিএআর) পাবলো গনসালেস ফুয়ের্তেসের এক মন্তব্যে আরও জ্বালানি পড়ে আগুনে। তিনি বলেন, “রেফারিরা এক হচ্ছেন এবং রিয়াল মাদ্রিদ টিভির চাপ মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।” এই বক্তব্যকেও হুমকি হিসেবে দেখছে রিয়াল।

স্প্যানিশ মিডিয়ায় জল্পনা ছিল—রিয়াল হয়তো ফাইনালেই অংশ নেবে না। তবে ক্লাবের পক্ষ থেকে পরে দ্বিতীয় বিবৃতিতে জানানো হয়, ম্যাচ বর্জনের কোনো পরিকল্পনা নেই। “রিয়াল মাদ্রিদ কখনও ফাইনালে না খেলার কথা বিবেচনা করেনি,” জানানো হয় স্পষ্ট ভাষায়।

এদিকে, লা লিগা প্রেসিডেন্ট হাভিয়ের তেবাস ক্লাবটির এই অবস্থানকে 'ক্ষমতার খেলা' বলে আখ্যায়িত করেছেন। রেফারিরাও ইঙ্গিত দিয়েছেন, রিয়াল মাদ্রিদ টিভির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।

উল্লেখ্য, এ ধরনের বর্জন রিয়ালের জন্য নতুন নয়। গত অক্টোবরে ব্যালন ডি’অর অনুষ্ঠানে ভিনিসিয়ুস জুনিয়রকে যথাযথ সম্মান না জানানোর প্রতিবাদে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান বর্জন করেছিল ক্লাবটি। তাদের ভাষায়, “যেখানে সম্মান নেই, সেখানে রিয়াল মাদ্রিদ যায় না।”

Header Ad
Header Ad

আইন উপদেষ্টাকে জড়িয়ে ভারতের গণমাধ্যমে মিথ্যা প্রতিবেদন, মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি

আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের একটি অনলাইন পোর্টালে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলকে জড়িয়ে প্রকাশিত মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদন নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এ ধরনের প্রতিবেদন সাংবাদিকতার নৈতিকতা ও সত্যের পরিপন্থী বলেও মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) রাতে ওই বিবৃতি গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।

এতে বলা হয়, বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) নিউজ অ্যারেনা ইন্ডিয়া অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সম্পর্কে একাধিক মিথ্যা, মানহানিকর ও দায়িত্বজ্ঞানহীন অভিযোগ উত্থাপন করেছে। প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল, ‘বাংলাদেশ লিগ্যাল অ্যাডভাইজার মিটস টপ লস্কর–ই–তাইয়েবার অপারেটিভ পোস্ট জম্মু অ্যান্ড কাশ্মীর অ্যাটাক’।

প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়, কাশ্মীরের পেহেলগামে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের পর লস্কর-ই-তাইয়েবার একজন শীর্ষ নেতার সঙ্গে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সাক্ষাৎ করেছেন, যা পুরোপুরি ভিত্তিহীন এবং কাল্পনিক।

প্রতিবেদনে হেফাজতে ইসলামের নেতাদের ভুল পরিচয়ে তুলে ধরা হয়েছে। হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশে বৈধভাবে পরিচালিত আলেম ও  ইসলামি সংগঠনগুলোর একটি প্ল্যাটফর্ম। প্রতিবেদনে যাদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, তারা হেফাজতে ইসলামের নেতা, কোনো সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে তারা যুক্ত নন। শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনামলে হাজার হাজার হেফাজত সদস্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যা ও সাজানো মামলার শিকার হন। অন্তর্বর্তী সরকারের বিচার ও আইনি সংস্কারের অঙ্গীকারের অংশ হিসেবে আসিফ নজরুল তার দায়িত্বপূর্ণ পদে থেকে হেফাজতের এই ভুক্তভোগীদের ন্যায়বিচারের আবেদন শুনতে হেফাজতের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেন।

হেফাজতের নেতাদের সঙ্গে আইন উপদেষ্টার বৈঠক যেদিন হয়েছে বলে নিউজ অ্যারেনা ইন্ডিয়া উল্লেখ করেছে, তার অন্তত তিন দিন আগেই ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনার বিষয় ছিল শুধু আইনি প্রক্রিয়া ও মামলার তালিকা হস্তান্তর। বৈঠকের শেষে প্রতিনিধিদলের অনুরোধে একটি ছবি তোলা হয়, যা এমন সভায় প্রচলিত ও স্বাভাবিক রীতি।

হেফাজতের বর্তমান নেতৃত্ব বাংলাদেশের জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের রাজনৈতিক সংলাপে অংশগ্রহণ করে। হেফাজতের নেতারা ঢাকায় পশ্চিমা দেশগুলোর দূতাবাসগুলোর সঙ্গেও নিয়মিত বৈঠক করে থাকেন, যা তাদের রাজনৈতিক বৈধতা ও আন্তর্জাতিক সম্পৃক্ততার বিষয়টিকে প্রতিফলিত করে।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ স্বাধীন মানবাধিকার সংগঠনগুলো পূর্ববর্তী সরকারের দমনমূলক কর্মকাণ্ড ও হেফাজতসহ বিরোধীদলীয় কর্মীদের ওপর নিপীড়নের ঘটনাগুলো নথিবদ্ধ করেছে, সমালোচনাও করেছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলোর সেই প্রতিবেদনগুলো প্রমাণ করে যে হেফাজতের নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে এসব মামলার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ছিল, যা বর্তমান সরকারের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার প্রচেষ্টাকে সমর্থন করে।

ভারতীয় গণমাধ্যমটির প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে যে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল তার ফেসবুক পেজে ভারতের নেতাদের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক মন্তব্য করেছেন। এ বিষয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, আসলে বিষয়টি হলো ওই পোস্ট ছিল একজন ভারতীয়র লেখা, যিনি নিরাপত্তাব্যবস্থার ঘাটতি নিয়ে সমালোচনা করেন। সেই পোস্টটি শেয়ার করে পেহেলগামে হামলার নিন্দা জানান আসিফ নজরুল। পরে সম্ভাব্য বিভ্রান্তির আশঙ্কা করে তিনি স্বেচ্ছায় পোস্টটি কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মুছে ফেলেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা সকল গণমাধ্যমকে অনুরোধ করছি, যেন তারা সংবাদ প্রকাশের আগে যথাযথ যাচাই করে এবং দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার নীতি অনুসরণ করে।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, পেহেলগাম হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়ে, নিহত ব্যক্তিদের প্রতি শ্রদ্ধা ও তাদের স্বজনদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। একই সঙ্গে পেহেলগামের হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানান তিনি।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

রাঙামাটিতে সিএনজি-পিকআপ সংঘর্ষে নিহত ৫
রেফারির বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছে রিয়াল, ফাইনাল ম্যাচ বয়কটের হুমকি
আইন উপদেষ্টাকে জড়িয়ে ভারতের গণমাধ্যমে মিথ্যা প্রতিবেদন, মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি
নিজ দেশেই বিমান হামলা চালালো ভারত, ‘অসাবধানতা’ বলছে বিমান বাহিনী
গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত আরও ৮৪ ফিলিস্তিনি
আইনি নোটিশ প্রসঙ্গে যা বললেন ডা. তাসনিম জারা
ভারত-পাকিস্তান বিরোধে উত্তেজনা, শান্তির বার্তা নিয়ে এগিয়ে এলো ইরান
তারেক রহমানকে নিয়ে দ্য উইকের কাভার স্টোরি ‘নিয়তির সন্তান’
কুয়েটের ভিসি ও প্রো-ভিসিকে অব্যাহতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি
মেধাসম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহারে সবাইকে উদ্যোগী হতে হবে: প্রধান উপদেষ্টা
বেনাপোলে ৬ নারী ছিনতাইকারী গ্রেফতার
‘সংস্কার না নির্বাচন’ এই খেলা বাদ দিয়ে বিচার করুন: সারজিস আলম
যুদ্ধ বন্ধের আলোচনার মধ্যেই মস্কোয় গাড়িবোমা হামলায় রুশ জেনারেল নিহত
পোপ ফ্রান্সিসকে শেষ বিদায় জানাতে রোমে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের 'বি' ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন
পাকিস্তানে বোমা বিস্ফোরণে নিরাপত্তা বাহিনীর ৪ সদস্য নিহত
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিলেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ
নওগাঁয় পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার ১
শিগগিরই স্থলভিত্তিক এলএনজি টার্মিনাল স্থাপন করবে সরকার: প্রেস সচিব
টাঙ্গাইলে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে মাছ ব্যবসায়ী খুন