শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ | ৬ পৌষ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

আইনে পিতামাতার ভরণপোষণের দায়িত্ব

মানবজাতির পৃথিবীতে আগমনের মাধ্যম হলো তার পিতামাতা। তাই মানুষের জীবনে পিতামাতার মর্যাদা ও অধিকার অনেক গুরুত্বপূর্ণ। পৃথিবীতে একজন মানব সন্তানকে পিতামাতা সর্বোচ্চ ভালোবাসা দিয়ে লালন-পালন করেন। সন্তানের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ রচনায় পিতামাতা তিলে তিলে নিজেদের জীবন ও সামর্থ্যকে বিসর্জন করে এক সময় বার্ধক্যে উপনীত হন। কর্মক্ষম শরীর নিশ্চল হয়ে পুরোপুরি নির্ভরশীল হয়ে থাকেন সন্তানের উপর।

তাই সন্তান কর্মক্ষম ও সামর্থ্যবান হওয়ার পর থেকেই পিতামাতার সার্বিক ভরণপোষণ ও সেবাযত্ন করার দায়িত্ব সন্তানদের উপর বর্তায়। নৈতিক, ধর্মীয় বা সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে পিতামাতার অজান্তে সন্তানের ক্ষতি হলেও তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা যাবে না।

সন্তানের কাছ থেকে শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও সদাচরণ পাওয়া পিতামাতার নৈতিক ও আইনগত অধিকার। বিশেষভাবে তারা যখন বৃদ্ধাবস্থায় উপনীত হন এবং কর্মক্ষম থাকেন না, তখন তারা ভরণপোষণ ও সেবাযত্ন পাওয়ার জন্য সন্তানের ওপর নির্ভরশীল হয়ে থাকেন। সন্তানের কর্তব্য, তার পিতামাতার ভরণপোষণের দায়িত্ব গ্রহণ করা, অসুস্থ হলে তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা, তাদের সঙ্গ দেওয়া এবং তাদের মনে কষ্ট পাবার মতো কোনো ব্যবহার না করা।

বর্তমান সমাজে পিতামাতার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করার যথেষ্ট চিত্র রয়েছে। অনেক সন্তানের সক্ষমতা থাকার পরেও তারা আদর্শ শিক্ষা বা সদিচ্ছার অভাবে পিতামাতা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। পিতামাতার ব্যয়ভার বহন না করে তাদের বৃদ্ধাশ্রমে বা রাস্তায়, রেলওয়ে বা বাস স্টেশনে ফেলে যাওয়ার অনেক ঘটনা প্রতিনিয়ত সংঘটিত হচ্ছে, যা চরম অবক্ষয়ের ইঙ্গিত বহন করে। এমন পরিস্থিতি অনুধাবন করে নৈতিক ও মানবিকবোধ থেকে বাংলাদেশ সরকার সন্তান কর্তৃক পিতামাতার ভরণপোষণ নিশ্চিত করার জন্য ২০১৩ সালে পিতামাতার ভরণপোষণ আইন প্রণয়ন করে।

এ আইন তৈরির পূর্বে পিতামাতার দেখোশোনা করা সামাজিক স্বীকৃত রীতি ছিল। সামাজিক বাস্তবতার কারণে প্রবীণ পিতামাতার পরিস্থিতি অমানবিক হওয়ায় সন্তানের দায়-দায়িত্বকে আইনী বাধ্যবাধকতায় আনতে হয়েছে। মানুষ আইনের বিধান সম্পর্কে সচেতন হলে আইনের বাস্তবায়ন সামাজিক দায়বদ্ধতায় পরিণত হবে। এ ছাড়া ইসলাম ধর্মে ও অপরাপর অন্যান্য সব ধর্মে পিতামাতার সার্বিক সেবা-যত্নের প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। আল্লাহ্ তা‘আলা পবিত্র কোরআনে তাঁর ইবাদত করার নির্দেশ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পিতামাতার প্রতি সদাচরণের নির্দেশ দিয়েছেন। পিতামাতার প্রতি সদাচরণের বিষয়টিতে অন্যান্য ধর্মেও গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। সব ধর্মে পিতামাতার সর্বোচ্চ মর্যাদা ও সন্তানদের উপর তাদের অধিকারের কথা ব্যক্ত করা হয়েছে।

ধর্মীয় প্রেক্ষাপটে পিতামাতার প্রতি কর্তব্য

সব ভালোবাসার মধ্যে সীমাবদ্ধতা রয়েছে কিন্তু সন্তানদের প্রতি পিতামাতার ভালোবাসার মধ্যে কোনো সীমাবদ্ধতা নেই। জীবনের শেষ বিন্দু দিয়ে হলেও পিতামাতা সন্তানদের সুখী দেখতে চান। এ কারণে পৃথিবীর সব ধর্মে পিতামাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব পালনের ব্যাপারে সুস্পষ্ট ও বাধ্যকরী নির্দেশনা রয়েছে।

ইসলামসহ অন্যান্য সব ধর্মেই সৃষ্টিকর্তার পরেই পিতামাতার অধিকারের কথা বলা হয়েছে। আল্লাহর ইবাদাতের পরই পিতামাতার প্রতি সদ্ব্যবহারের প্রতি পবিত্র কোরআনে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। পবিত্র কোরআন ও সুন্নাহ্-তে পিতামাতার মর্যাদা ও সদাচরণের বিষয়ে সব সময় গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে।

পিতামাতার প্রতি আচরণ ও ব্যবহার বিষয়ে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন—
‘তোমার রব ফয়সালা করে দিয়েছেন তোমরা তাঁর ইবাদত ছাড়া অন্য কারোর ইবাদত করো না, পিতামাতার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করো। যদি তোমাদের কাছে তাদের কোনো একজন বা উভয় বৃদ্ধ অবস্থায় থাকে, তাহলে তাদের ‘উহ্’ পর্যন্তও বলো না এবং তাদের ধমকের সুরে জবাব দিও না বরং তাদের সঙ্গে সম্মান ও মর্যাদার সঙ্গে কথা বলো। আর দয়া ও কোমলতা সহকারে তাদের সামনে বিনম্র থাকো এবং দোয়া করতে থাকো এই বলে, হে আমার প্রতিপালক! তাদের প্রতি দয়া করো, যেমন তারা (দয়া, মায়া, মমতাসহকারে) শৈশবে আমাকে প্রতিপালন করেছিলেন (আল-কোরআন, ১৭: ২৩-২৪)।

আল্লাহ তা‘আলা পবিত্র কোরআনে বলেছেন, ‘আর আমি মানুষকে তার পিতামাতার সঙ্গে সদ্ব্যবহারের জোর নির্দেশ দিয়েছি। তার মাতা তাকে কষ্টের পর কষ্ট করে গর্ভে ধারণ করেছে এবং ভূমিষ্ঠের পর তার দুধ ছাড়ানোর দুই বছর পর্যন্ত। আমি নির্দেশ দিয়েছি যে, আমার প্রতি ও তোমার পিতামাতার প্রতি কৃতজ্ঞ হও। অবশেষে আমারই কাছে ফিরে আসতে হবে। পিতামাতা যদি তোমাকে আমার সাথে এমন বিষয়কে শরিক স্থাপন করতে পীড়াপীড়ি করে, তবে তুমি তাদের কথা মানবে না এবং দুনিয়াতে তাদের সাথে সদ্ভাবে সহাবস্থান করবে যে আমার অভিমুখী হয়, তার পথ অনুসরণ করবে। অতঃপর তোমাদের প্রত্যাবর্তন আমারই দিকে এবং তোমরা যা করতে, আমি সে বিষয়ে তোমাদেরকে জ্ঞাত করব (আল-কোরআন, ৩৯: ১৪-১৫)।

এতো সব আমলের মধ্যে পিতামাতার প্রতি সদাচরণকে রাসুলুল্লাহ্ (সা.) আল্লাহর কাছে সর্বাধিক প্রিয় আমল বলে ঘোষণা করেছেন। বিশেষ করে সন্তানদের অবশ্যই পিতামাতার সাথে নম্রভাবে কথা বলতে হবে, পিতামাতার আদেশ নির্দেশ যথাযথভাবে মেনে চলতে হবে। পিতামাতার সাথে কোমল ব্যবহার এবং নম্র ভাষায় বিনয়ী হয়ে কথা বলার নির্দেশ দেওয়ার কারণ হলো, বৃদ্ধ বয়সে উপনীত হলে তারা অনেক সময় স্বাভাবিক আচরণ নাও করতে পারেন। তখন তাদের মেজাজ খিটখিটে হয়ে যেতে পারে বা কোনো বিষয়ে অধৈর্য হয়ে পড়তে পারেন। সেই অবস্থায়ও সন্তানদের ধৈর্য ধারণ করতে হবে এবং কোমল ভাষায় কথা বলতে হবে। কেননা, বৃদ্ধ বয়সে সন্তানদের কাছ থেকে ভরণপোষণ ও সেবা-যত্ন পাওয়া পিতামাতার আইনগত ও ধর্মীয় অধিকার।

এ ছাড়া পিতামাতার সেবা-যত্নের গুরুত্ব বিষয়ে একাধিকবার বলা হয়েছে। মহান আল্লাহ্ বলেন, ‘আপনার রব নির্দেশ দিয়েছেন তিনি ব্যতীত অন্য কারো ইবাদত না করতে এবং পিতামাতার প্রতি সদ্ব্যবহার করতে’।

আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, ‘আমি রাসুলুল্লাহ্ (সা.)-এর কাছে জিজ্ঞেস করলাম, কোন কাজ সর্বোত্তম? তিনি বলেন, যথাসময়ে নামাজ পড়া। আমি বললাম, তারপর কোন কাজ? তিনি বলেন, পিতামাতার সঙ্গে সদ্ব্যবহার করা’ (ইমাম বুখারী, আস-সহীহ, হাদিস নং ২৭৮২; মুসলিম: ৮৫)।

ইসলামে এভাবে প্রবীণদের সামাজিক মর্যাদা প্রদান করা হয়েছে। প্রবীণদের অধিকার ও মর্যাদার বিষয়ে আল-কুরআন ও হাদীসে সুবিস্তৃত নির্দেশনা রয়েছে, যাতে জীবনের এ ক্রান্তিকালে প্রবীণদের অবহেলার শিকার হতে না হয়। সমাজের বয়স্ক প্রবীণ জনগোষ্ঠীকে বয়সে ছোটদের সম্মান প্রদর্শনের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। ইসলাম ঘোষণা করেছে সমাজে প্রবীণদের মধ্যে কল্যাণ ও বরকত সুরক্ষিত। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে প্রবীণদের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে হাদীসে এসেছে, আবদুল্লাহ্ ইব্নে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ্ (সা.) বলেন, ‘প্রবীণদের সঙ্গেই রয়েছে তোমাদের জন্য কল্যাণ ও বরকত’।

সনাতন ধর্মে পিতামাতার ভক্তির ওপর জোর তাগিদ দেওয়া হয়েছে। মনুসংহিতায় বলা হয়েছে- ‘দশজন উপধ্যায় থেকে একজন আচার্য উত্তম, শত আচার্যের চেয়েও পিতা উত্তম এবং হাজার পিতার চেয়ে মাতা সম্মানিত।’ তাই আমাদের প্রত্যেকের কর্তব্য হচ্ছে নিজের পিতামাতার প্রতি যথাযথ সম্মান, শ্রদ্ধা ও ভক্তি প্রদর্শন করা।

বৌদ্ধ ধর্ম অনুযায়ী পিতামাতার সন্তুষ্টি অর্জন ব্যতীত কোনো ব্যক্তি স্বর্গে যেতে পারে না। পিতামাতার সাথে অশোভনীয় আচরণ করলে পার্থিব জীবনের দুঃখ-কষ্টের পাশাপাশি পারলৌকিক জীবনেও কঠোর শাস্তি ভোগ করতে হবে। খ্রিস্টান, ইহুদি, জৈন, শিখ, কনফুসীয়ানসহ অন্যান্য ধর্মে পিতামাতার আইনী অধিকার ও মর্যাদা সম্পর্কে নানা দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

আইনে পিতামাতার ভরণপোষণ

বাংলাদেশে পিতামাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব ও কর্তব্য একটি আইনী কাঠামোতে আনা হয়েছে। ২০১৩ সালে গৃহীত পিতামাতার ভরণপোষণ আইনে দায়িত্ব লঙ্ঘনের অপরাধে দণ্ডিত করার সুযোগ রাখা হয়েছে। পিতামাতার ভরণপোষণের দায়িত্ব নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে আইনটি প্রণয়ন করা হয়েছে। বাংলাদেশে এ বিষয়ে প্রণীত এটিই প্রথম আইন। সাধারণ মানুষের মধ্যে পিতামাতার ভরণপোষণের প্রতি অবহেলা ও অসচেতনতা দূর করতে আইনটি প্রণয়ন করা হয়েছে।

এশিয়ায় ভারত ও সিঙ্গাপুরেও পিতামাতার ভরণপোষণের আইন আছে। উভয় দেশেই সন্তানরা পিতামাতার ভরণপোষণ দিতে আইনগতভাবে বাধ্য। তবে পার্থক্য হলো, তাদের আইনে আদালত দেওয়ানী প্রতিকার হিসেবে ভরণপোষণ বাবদ নির্দিষ্ট অর্থ প্রদানের আদেশ দিতে পারেন। কিন্তু আমাদের আইনে ভরণপোষণকে যখন অর্থের পরিবর্তে সেবা দিয়ে সংজ্ঞায়িত করা হচ্ছে এবং আইনের লংঘনকে ফৌজদারী অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। ফলে আইনটি বাস্তবে প্রয়োগ করা সম্ভব হচ্ছে না। এতে বৃদ্ধ পিতামাতার সামাজিক নিরাপত্তা রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়ছে।

এ ধরনের সামাজিক সমস্যার সমাধান করতে হবে সামাজিকভাবেই, কঠোর আইন দিয়ে সব সমস্যার সমাধান করা যায় না। বৃদ্ধ পিতামাতাকে যখন তার সন্তানেরা একাকিত্বে ঠেলে দেন, তখন এর সামাজিক বাস্তবতাকেও বিবেচনায় নিতে হবে। এই পরিস্থিতি সৃষ্টির পেছনে আমাদের দুর্বল সমাজ ও রাষ্ট্র কাঠামোরও দায় রয়েছে। আমাদের চিহ্নিত করতে হবে সমাজ ও রাষ্ট্র কাঠামোর সেই সমস্যাগুলোকে, যা বৃদ্ধ বয়সে পিতামাতাকে সন্তানের মুখাপেক্ষী করতে বাধ্য করে। যে হারে আমাদের বয়স্ক জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বাড়ছে, সেই অনুপাতে বয়স্কভাতা, রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে অর্থনৈতিক নিরাপত্তা, চিকিৎসাসেবা বা অন্যান্য সামাজিক সুরক্ষার ব্যবস্থা করা হচ্ছে না।

বর্তমান সামাজিক প্রেক্ষাপটে পিতামাতার ভরণপোষণ আইন ২০১৩ প্রণয়ন করা হয়েছে। মূলত পিতামাতার প্রতি সদাচরণ যতটা না আইনগত তার চেয়ে বেশি নৈতিক ও ধর্মীয় এবং সামাজিক মূল্যবোধের সাথে সম্পৃক্ত। মৌলিক নৈতিক শিক্ষার অবক্ষয়ে পতিত কোনো সমাজে আইনের মাধ্যমে নৈতিক দায়িত্ব পালনের জন্য জনসাধারণকে বাধ্য করা সম্ভব নয়। বরং সমাজের সর্বস্তরে নৈতিক ও ধর্মীয় শিক্ষার অনুশীলন ও সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। তাই আইন প্রণয়নের পাশাপাশি সমাজের সর্বস্তরে নৈতিক, ধর্মীয় মূল্যবোধ ও জবাবদিহিতার অনুশীলন চর্চা করতে হবে। কারণ, মানুষ আইনের বিধান সম্পর্কে সচেতন হলে আইনের বাস্তবায়ন সামাজিক দায়বদ্ধতায় পরিণত হয়। শিক্ষা ব্যবস্থা সকল স্তরে বিষয়টি পাঠ্যসূচির অন্তর্ভুক্তকরণ এবং রাষ্ট্রীয় প্রচার মাধ্যমে এর গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা প্রচারের মাধ্যমে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা খুবই জরুরি। পাশাপাশি এ বিষয়ে আইনটি আরও সময়োপযোগী ও কার্যকর করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।

ড. নাহিদ ফেরদৌসি: অধ্যাপক, আইন বিভাগ, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়

আরএ/

Header Ad
Header Ad

চুয়াডাঙ্গায় অবৈধ যানবাহন বন্ধ না হলে গণপরিবহন বন্ধের ঘোষণা

চুয়াডাঙ্গায় অবৈধ যানবাহন বন্ধ না হলে গণপরিবহন বন্ধের ঘোষণা। ছবি: সংগৃহীত

চুয়াডাঙ্গায় সকল সড়ক ও আঞ্চলিক মহাসড়কে ব্যাটারিচালিত ভ্যান (পাখিভ্যান) ও  ইজিবাইক চলাচল বন্ধের দাবি জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। আগামীকাল রোববারের মধ্যে প্রশাসন তাদের দাবি বাস্তবায়নে কার্যকর উদ্যোগ না নিলে সোমবার সকাল থেকে জেলার সকল পথে পরিবহন চলাচল বন্ধের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

শনিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে চুয়াডাঙ্গা জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কার্যালয়ে আয়োজিত  এক সংবাদ সম্মেলনে এই হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।  সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক একেএম মঈন উদ্দিন লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন এবং শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি এম জেনারেল ইসলাম কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

এসময় তিনি আরও বলেন, ৫ আগস্টের আগে জেলায় ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক,পাখিভ্যান, থ্রি হুইলার সহ অন্য অবৈধ যানগুলো যেভাবে চলাচল করতো, সেভাবেই তারা চলাচল করুক এই দাবিতে আজকের এই সংবাদ সম্মেলন। প্রশাসন বারবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তারা সেটা রক্ষা করেনি।

কর্মসূচি ঘোষণাকালে বলা হয়, ২৩ ডিসেম্বর সোমবার থেকে টানা দুইদিন পরিবহন চলাচল বন্ধের মধ্যে প্রশাসন যদি বসে সমাধানের উদ্যোগ না নেয়, তাহলে আগামী ২৬ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার থেকে অভ্যন্তরীণ পথের পাশাপাশি দূরপাল্লার সকল রুটে পরিবহন বন্ধ করে দেওয়া হবে। এসময় চুয়াডাঙ্গা জেলা মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সভাপতি হাসান ইমাম বকুল, সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম সহ সকল নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

Header Ad
Header Ad

জুমার দিনে ফিলিস্তিনের মসজিদে আগুন দিল ইসরায়েলিরা

ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বসতকারীরা একটি মসজিদে আগুন লাগিয়ে ভবনের দেওয়ালে বিদ্বেষমূলক স্লোগান লিখে গেছে। শুক্রবার (২১ ডিসেম্বর) জুমার দিন সকালে সালফিতের মারদা গ্রামে বার আল-ওয়ালিদাইন মসজিদে এ ঘটনা ঘটে।

এই ঘটনার ভিডিওতে দেখা যায়, মসজিদের সামনের দেয়ালে হিব্রু ভাষায় ‘প্রতিশোধ’, ‘আরবদের মৃত্যু হোক’সহ বিভিন্ন স্লোগান লিখে রেখেছেন ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীরা। এ ছাড়া উত্তর পশ্চিম তীরের মারদা গ্রামের মসজিদের প্রবেশপথে কালো পোড়া দাগ দেখা গেছে। তবে আগুন বড় আকারে ছড়িয়ে পড়ার আগেই তা নেভানো হয়।

ইসরায়েলি পুলিশ জানিয়েছে, তারা ঘটনাস্থল থেকে সাক্ষ্য ও প্রমাণ সংগ্রহ করছে।

মারদা গ্রাম পরিষদের প্রধান নাসফাত আল-খুফাশ বলেন, শুক্রবার মারদা গ্রাম একটি পরিকল্পিত সন্ত্রাসী হামলায় জেগে উঠল। বসতিস্থাপনকারী গোষ্ঠী বীর আল-ওয়ালিদিন মসজিদে আগুন দেয়। বসতি স্থাপনকারী গোষ্ঠীগুলোর এই ধরনের আক্রমণ ধারাবাহিক ও পরিকল্পিত।

ইসরায়েলি পুলিশ ও নিরাপত্তা সংস্থা শিন বেত এক যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা এই ঘটনাকে অত্যন্ত গুরুতর বলে মনে করে। দোষীদের কঠোর বিচার নিশ্চিত করতে তারা দৃঢ় পদক্ষেপ নেবে।

এদিকে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই আক্রমণকে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের সংঘটিত অপরাধের ধারাবাহিক সর্বশেষ ঘটনা বলে নিন্দা জানিয়েছে। একই সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের সুরক্ষায় সহায়তার জন্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের কাছে আবেদন জানিয়েছে।

জাতিসংঘের তথ্য মতে, অধিকৃত পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে ৩০ লাখ ফিলিস্তিনির মধ্যে ৭ লক্ষাধিক ইসরায়েলি বসবাস করে। ১৯৬৭ সালে এই দুটি অঞ্চল দখল করে নেয় ইসরায়েল। তবে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশ এই দখলকৃত ভূমিতে গড়ে ওঠা ইসরায়েলি বসতিগুলোকে অবৈধ বলে মনে করে।

গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাস যোদ্ধারা দক্ষিণ ইসরায়েলে আক্রমণ চালানোর পর থেকে পশ্চিম তীরে সহিংসতা বৃদ্ধি পেয়েছে।

Header Ad
Header Ad

গাইবান্ধায় বিএনপি-জামায়াত সংঘর্ষ, আহত অন্তত ১০

গাইবান্ধায় বিএনপি-জামায়াত সংঘর্ষ। ছবি: সংগৃহীত

গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলায় ইসলামি জলসাকে কেন্দ্র করে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ছয়জনের অবস্থা গুরুতর বলে জানা গেছে।

শনিবার (২১ ডিসেম্বর) ঘটনাটি ঘটেছে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার পল্টন মোড়ে।

সাবেক ওই আওয়ামী লীগ নেতা বর্তমানে গাইবান্ধা জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি বলে জানা গেছে। এর আগে তিনি বগুড়া শহর যুবলীগের বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।

স্থানীয়রা জানান, সাঘাটা ইউনিয়নের সরদারপাড়া গ্রামে একটি ইসলামি মাহফিলের আয়োজনে অতিথি করাকে কেন্দ্র করে উপজেলার পল্টন মোড়ে জামায়াত-বিএনপির কর্মী সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় সাঘাটা উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব সেলিম আহমেদ তুলিপসহ উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জনের বেশি নেতাকর্মী আহত হন।

পরে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী পৌঁছালে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। আহতদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সাঘাটা উপজেলা ও জেলা বিএনপির সদস্য কামরুজ্জামান সোহাগ বলেন, ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর বিএনপিতে যোগদান করা সাবেক যুবলীগ নেতা নাহিদুজ্জামান নিশাদকে একটি ইসলামি মাহফিলে অতিথি করেন জামায়াতের আয়োজকরা। সেখানে উপজেলা বিএনপির প্রকৃত কোনও নেতাকে অতিথির তালিকায় রাখা হয়নি। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব সেলিম আহমেদ তুলিপকে মারপিট ও মাথায় আঘাত করা হয়। পরে সংঘর্ষ সৃষ্টি হয়।

এ ঘটনায় অভিযোগ দিতে জেলা বিএনপির নেতারা থানায় আসেন বলেও তিনি জানান।

এ বিষয়ে সাঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাদশা আলম জানান, একটি ইসলামি মাহফিলকে কেন্দ্র করে মূলত জামায়াত-বিএনপির কর্মী সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে উভয়পক্ষের ৮ থেকে ১০ জন আহত হওয়ার খবর পেয়েছি। আহতরা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

চুয়াডাঙ্গায় অবৈধ যানবাহন বন্ধ না হলে গণপরিবহন বন্ধের ঘোষণা
জুমার দিনে ফিলিস্তিনের মসজিদে আগুন দিল ইসরায়েলিরা
গাইবান্ধায় বিএনপি-জামায়াত সংঘর্ষ, আহত অন্তত ১০
আশ্বস্ত করছি বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দেবে না: প্রধান উপদেষ্টা
সত্যি কি থাপ্পড় মেরেছিলেন শাহরুখ, ৯ বছর পর মুখ খুললেন হানি সিং
মেয়ে থেকে ছেলেতে রূপান্তর, বগুড়ার শ্রাবণী এখন শ্রাবণ
বাড়ি ফেরার পথে সড়কে ঝরে গেল বাবা-ছেলের প্রাণ
ছাত্রলীগ নেতা মুক্তাদির শিক্ষার্থীদের হাতে আটক, থানায় সোপর্দ
এ দেশে মেজরিটি–মাইনরিটি বলে কিছু নেই: জামায়াতের আমির
আজ বছরের দীর্ঘতম রাত, সবচেয়ে ছোট দিন আগামীকাল
রাজনীতিবিদকে বিয়ে করতে চান ফারজানা সিঁথি
গুমের ঘটনায় ভারতের সম্পৃক্ততা পেয়েছে কমিশন
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ
পাকিস্তানে জঙ্গি হামলায় ১৬ সেনা নিহত
বাধ্যতামূলক অবসরপ্রাপ্ত সচিব ইসমাইল বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার
হামজাকে নিয়ে যা বললেন বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল
বহু ভাষা, বহু সংস্কৃতি, বহু ধর্মের বিকাশে কাজ করতে চায় কমিশন: ফারুকী
অবৈধ অনুপ্রেবেশের অভিযোগে ত্রিপুরায় শিশুসহ ৬ বাংলাদেশি গ্রেফতার
টাঙ্গাইলে বাস-সিএনজির সংঘর্ষ: নিহত ২
চাঁদাবাজদের তালিকা তৈরি, দুদিনের মধ্যে অভিযান: ডিএমপি কমিশনার