শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

শক্তিপীঠ ট্যুরিজম সার্কিট

বিশ্বজনসংখ্যা রিপোর্ট ২০১৯ অনুযায়ী, পৃথিবীর মোট জনসংখ্যা ৭৭১.৫০ কোটি। এর মধ্যে সনাতন হিন্দু জনসংখ্যা প্রায় ১৩০ কোটি। শক্তিপীঠ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মহাপবিত্র ঐতিহ্যস্থান। ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কায় ছড়িয়ে আছে এই ৫১টি শক্তিপীঠ। তাদের ধর্মীয় বিশ্বাস মতে, এই সকল শক্তিপীঠ দর্শন মহাপূণ্যের কাজ। উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশে রয়েছে ৬টি শক্তিপীঠ। পর্যটনস্থান হিসেবে এদের গুরুত্ব অপরিসীম, বিধায় এই দেশে সুপরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলা যায় একটি শক্তিপীঠ ট্যুরিজম সার্কিট। এই সার্কিট একটি বিপুল সংখ্যক মানুষকে ধর্মীয় পর্যটনে আকৃষ্ট করা যেতে পারে। এটি ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো থেকে অর্থনীতি পর্যন্ত সকল ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারে।

পর্যটনে ধর্ম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যা শেষ পর্যন্ত মানব উন্নয়নে অবদান রাখে। ধর্মীয় আকর্ষণ সাংস্কৃতিক উপাদান এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ডের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। ধর্মীয় পর্যটন এলাকা তীর্থস্থানের চেয়ে পর্যটনের মৌলিক ও অপরিহার্য উপাদান হিসেবে অধিক বলে বিবেচিত হয়। তীর্থযাত্রার একটি বস্তুগত এবং আধ্যাত্মিক মূল্য রয়েছে, যা ধর্মীয় তাৎপর্যের সঙ্গে জড়িত। ধর্মীয় পর্যটনে পর্যটকদের কেবল একটি নির্দিষ্ট ধর্মে বিশ্বাসকেই নির্দেশ করে না। সংস্কৃতির ধারণাটি ধর্মীয় পর্যটনকে মৌলিক প্রেরণার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে বিবেচনা করে। ধর্ম, সংস্কৃতির একটি অংশ হিসেবে, সাংস্কৃতিক সংরক্ষণে অবদান রাখতে পারে।

সত্যপুরাণ
সত্য যুগের কোনো এক সময়ে মহাদেবের উপর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য দক্ষ রাজা বৃহস্পতি এক যজ্ঞের আয়োজন করেন। কন্যা সতী দেবী তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে যোগী মহাদেবকে বিবাহ করায় দক্ষ ক্ষুব্ধ ছিলেন। দক্ষ মহাদেব ও সতী দেবী ছাড়া প্রায় সকল দেব-দেবীকে নিমন্ত্রণ করেছিলেন। মহাদেবের অনিচ্ছা সত্ত্বেও সতী দেবী মহাদেবের অনুসারীদের সঙ্গে নিয়ে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন।

কিন্তু সতী দেবী আমন্ত্রিত অতিথি না হওয়ায় তাকে যথাযোগ্য সম্মান দেওয়া হয়নি। অধিকন্তু দক্ষ মহাদেবকে অপমান করেন। সতী দেবী তার স্বামীর প্রতি পিতার এ অপমান সহ্য করতে না পেরে যোগবলে আত্মাহুতি দেন। শোকাহত মহাদেব রাগান্বিত হয়ে দক্ষর যজ্ঞ ভণ্ডুল করেন এবং সতী দেবীর মৃতদেহ কাঁধে নিয়ে বিশ্বব্যাপী প্রলয় নৃত্য শুরু করেন। অন্যান্য দেবতা অনুরোধ করে এই নৃত্য থামাতে। তবে বিষ্ণুদেব তার সুদর্শন চক্র দ্বারা সতী দেবীর মৃতদেহ ৫১ (একান্ন)টি খণ্ডে ছেদন করেন। এতে সতী মাতার দেহখণ্ডসমূহ ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন জায়গায় পড়ে এবং পবিত্র পীঠস্থান বা শক্তিপীঠ হিসেবে পরিচিতি পায়।

ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কায় ছড়িয়ে আছে এই ৫১টি দেহখণ্ড। তন্মধ্যে বাংলাদেশে রয়েছে ৬টি। এরা হলো সুগন্ধা, চন্দ্রনাথ, জয়ন্তীয়া, শ্রীশৈল, ভবানী ও যশোরেশ্বরী শক্তিপীঠ। এই শক্তিপীগুলোর প্রত্যেকটিতে রয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উল্লেখযোগ্য হিন্দু মন্দির।

সুগন্ধা শক্তিপীঠ
বরিশাল জেলা শহর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে গৌরনদী উপজেলার শিকারপুরে সন্ধ্যা নদীর তীরে অবস্থিত। শ্রী বিষ্ণুর সুদর্শন চক্র দ্বারা ছেদনের পর দেবী দাক্ষায়ণী সতীর নাসিকা এই স্থানে পতিত হয়। এখানে তিনি পূজিত হন দেবী সুগন্ধা রূপে এবং পাশে পূজিত হয় মহেশ্বর শিবের অবতার রূপ ত্র্যম্বক নামে।

চন্দ্রনাথ শক্তিপীঠ
চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড উপজেলায় চন্দ্রনাথ পর্বত শিখরে অবস্থিত। শ্রী বিষ্ণুর সুদর্শন চক্র দ্বারা ছেদনের পর দেবী দাক্ষায়ণী সতীর ডান হাত এই স্থানে পতিত হয়। তিনি এখানে দেবী ভবানী রূপে পূজিত হন এবং পাশে পূজিত হয় মহেশ্বর শিবের অবতার রূপ চন্দ্রশেখর নামে।

জয়ন্তীয়া শক্তিপীঠ
সিলেট জেলার জয়ন্তীয়া উপজেলায় কালাজোড় গ্রামে অবস্থিত। শ্রী বিষ্ণুর সুদর্শন চক্র দ্বারা ছেদনের পর দেবী দাক্ষায়ণী বাম জঙ্ঘা এই স্থানে পতিত হয়। এখানে তিনি পূজিত হন দেবী জয়ন্তী রূপে এবং পাশে পূজিত হয় মহেশ্বর শিবের অবতার রূপ ক্রমদীশ্বর নামে।

শ্রীশৈল শক্তিপীঠ
সিলেট জেলার দক্ষিণ সুরমা উপজেলায় শহর থেকে মাত্র ৩ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে জৈনপুর গ্রামে অবস্থিত। শ্রী বিষ্ণুর সুদর্শন চক্র দ্বারা ছেদনের পর দেবী দাক্ষায়ণী গলা এই স্থানে পতিত হয়। তিনি পূজিত হন দেবী মহালক্ষ্মী রূপে এবং পাশে পূজিত হয় মহেশ্বর শিবের অবতার রূপ সম্বরানন্দ নামে।

ভবানী শক্তিপীঠ
বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলা থেকে ২৮ কিলোমিটার দূরে রতোয়া নদীর তীরে অবস্থিত। শ্রী বিষ্ণুর সুদর্শন চক্র দ্বারা ছেদনের পর দেবী দাক্ষায়ণী বাম পায়ের নূপুর এই স্থানে পতিত হয়। এখানে তিনি পূজিত হন দেবী অপর্ণা রূপে এবং পাশে পূজিত হয় মহেশ্বর শিবের অবতার রূপ বামন নামে।

যশোরেশ্বরী শক্তিপীঠ
সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার ঈশ্বরীপুরে অবস্থিত। শ্রী বিষ্ণুর সুদর্শন চক্র দ্বারা ছেদনের পর দেবী দাক্ষায়ণী হাতের তালু ও পায়ের পাতা এই স্থানে পতিত হয়। এখানে তিনি পূজিত হন দেবী যশোরেশ্বরী রূপে এবং পাশে পূজিত হয় মহেশ্বর শিবের অবতার রূপ চণ্ড নামে।

ধর্মীয় পর্যটনের ক্ষেত্রে, একাধিক অনুপ্রেরণা সমানভাবে কাজ করে। ভোক্তা সংস্কৃতির প্রয়োজনীয়তা এবং নতুন অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করার জন্যও এর গুরুত্ব অপরিসীম। সাংস্কৃতিক চাহিদাগুলি বিনোদনের প্রয়োজনের সঙ্গে জড়িত। তাই ধর্মীয় স্থান পরিদর্শন জ্ঞান বৃদ্ধি করে এবং ঐতিহ্য চেতনাকে শাণিত করে। ধর্ম হলো সমাজে শান্তির বড় প্রচারকারী উপাদান। মানুষের মধ্যে ধর্মীয় সহনশীলতা অন্যের বিশ্বাসকে শ্রদ্ধা জানায়। শক্তিপীঠ ট্যুরিজম সার্কিট সমাজের মানুষের মধ্যে বিশ্বাস স্থাপনের মাধ্যমে শান্তি আনবে যে, ধর্ম তাদের নিজস্ব সংস্কৃতির ধারক। ধর্মীয় এলাকাকে পর্যটন গন্তব্যে পরিণত করা একটি চূড়ান্ত পদ্ধতি হতে পারে। ফলে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা হ্রাস পাবে, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করবে এবং কোনো বৈষম্য ছাড়াই সমস্ত বিশ্বাস ও ঐতিহ্যের লোকেদের ধর্মীয় স্বাধীনতা প্রসারিত হবে। ধর্ম, একটি বড় মিশ্রণ হিসাবে অর্থনীতি, সামাজিক সম্প্রীতি এবং পর্যটনের মাধ্যমে মানসম্পন্ন বিশ্বের জন্য সর্বজনীনভাবে কাজ করতে পারে। এটি আর্থ-সামাজিক বাস্তুস্থানের শক্তি ঘর হবে, যা শেষ পর্যন্ত ভবিষ্যতের মানবজাতিকে সংরক্ষণ করবে। এই যাত্রা বাংলাদেশ থেকে হলে ক্ষতি কী?

মোখলেছুর রহমান: রেক্টর, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্যুরিজম স্টাডিজ, ঢাকা

এসএন

 

Header Ad
Header Ad

রাঙামাটিতে সিএনজি-পিকআপ সংঘর্ষে নিহত ৫

প্রতীকী ছবি

রাঙামাটির কাউখালীতে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন পাঁচজন। শনিবার (২৬ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার রাবারবাগান এলাকায় একটি পিকআপ ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

তাৎক্ষণিকভাবে নিহতদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কাউখালী উপজেলার বেতবুনিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এফ আই ইসহাক জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে এবং উদ্ধার কার্যক্রম চলছে। দুর্ঘটনার বিস্তারিত এখনও জানা যায়নি।

বিস্তারিত আসছে...

Header Ad
Header Ad

রেফারির বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছে রিয়াল, ফাইনাল ম্যাচ বয়কটের হুমকি

ছবি: সংগৃহীত

কোপা দেল রে ফাইনালের আগে মাঠের লড়াইয়ের আগেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে স্প্যানিশ ফুটবল অঙ্গন। হাইভোল্টেজ এই ম্যাচের রেফারিং নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করে ম্যাচ-পূর্ব সকল আনুষ্ঠানিকতা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। ক্লাবটির ভাষ্য, রেফারিদের সাম্প্রতিক বক্তব্যে "স্পষ্ট বিদ্বেষ ও অসম্মান" ফুটে উঠেছে, যা তাদের পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।

শুক্রবার এক বিবৃতিতে রিয়াল জানায়, তারা ফাইনালের আগে প্রচলিত সকল প্রটোকল—ম্যাচ-পূর্ব প্রেস কনফারেন্স, মিডিয়ায় উন্মুক্ত অনুশীলন, প্রেসিডেন্টদের ডিনার এবং ঐতিহ্যবাহী ফটোসেশন—বর্জন করবে।

উত্তেজনার সূত্রপাত ক্লাবটির নিজস্ব চ্যানেল রিয়াল মাদ্রিদ টিভি-তে সম্প্রচারিত এক ভিডিও ঘিরে। সেখানে ফাইনালের রেফারি রিকার্দো দে বুরগোস বেংগোয়েচিয়ার প্রতি তীব্র সমালোচনা করা হয়। পরে এক সাংবাদিক সম্মেলনে আবেগপ্রবণ রেফারি জানান, এসব সমালোচনার প্রভাব তার ব্যক্তিগত জীবনেও পড়েছে। “যখন আপনার সন্তান স্কুলে গিয়ে শুনে—তার বাবা একজন চোর—তখন সেটা সত্যিই ভয়াবহ অভিজ্ঞতা,” বলেন তিনি, চোখের পানি মুছতে মুছতে।

তবে বিতর্ক এখানেই শেষ হয়নি। ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি (ভিএআর) পাবলো গনসালেস ফুয়ের্তেসের এক মন্তব্যে আরও জ্বালানি পড়ে আগুনে। তিনি বলেন, “রেফারিরা এক হচ্ছেন এবং রিয়াল মাদ্রিদ টিভির চাপ মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।” এই বক্তব্যকেও হুমকি হিসেবে দেখছে রিয়াল।

স্প্যানিশ মিডিয়ায় জল্পনা ছিল—রিয়াল হয়তো ফাইনালেই অংশ নেবে না। তবে ক্লাবের পক্ষ থেকে পরে দ্বিতীয় বিবৃতিতে জানানো হয়, ম্যাচ বর্জনের কোনো পরিকল্পনা নেই। “রিয়াল মাদ্রিদ কখনও ফাইনালে না খেলার কথা বিবেচনা করেনি,” জানানো হয় স্পষ্ট ভাষায়।

এদিকে, লা লিগা প্রেসিডেন্ট হাভিয়ের তেবাস ক্লাবটির এই অবস্থানকে 'ক্ষমতার খেলা' বলে আখ্যায়িত করেছেন। রেফারিরাও ইঙ্গিত দিয়েছেন, রিয়াল মাদ্রিদ টিভির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।

উল্লেখ্য, এ ধরনের বর্জন রিয়ালের জন্য নতুন নয়। গত অক্টোবরে ব্যালন ডি’অর অনুষ্ঠানে ভিনিসিয়ুস জুনিয়রকে যথাযথ সম্মান না জানানোর প্রতিবাদে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান বর্জন করেছিল ক্লাবটি। তাদের ভাষায়, “যেখানে সম্মান নেই, সেখানে রিয়াল মাদ্রিদ যায় না।”

Header Ad
Header Ad

আইন উপদেষ্টাকে জড়িয়ে ভারতের গণমাধ্যমে মিথ্যা প্রতিবেদন, মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি

আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের একটি অনলাইন পোর্টালে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলকে জড়িয়ে প্রকাশিত মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদন নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এ ধরনের প্রতিবেদন সাংবাদিকতার নৈতিকতা ও সত্যের পরিপন্থী বলেও মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) রাতে ওই বিবৃতি গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।

এতে বলা হয়, বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) নিউজ অ্যারেনা ইন্ডিয়া অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সম্পর্কে একাধিক মিথ্যা, মানহানিকর ও দায়িত্বজ্ঞানহীন অভিযোগ উত্থাপন করেছে। প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল, ‘বাংলাদেশ লিগ্যাল অ্যাডভাইজার মিটস টপ লস্কর–ই–তাইয়েবার অপারেটিভ পোস্ট জম্মু অ্যান্ড কাশ্মীর অ্যাটাক’।

প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়, কাশ্মীরের পেহেলগামে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের পর লস্কর-ই-তাইয়েবার একজন শীর্ষ নেতার সঙ্গে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সাক্ষাৎ করেছেন, যা পুরোপুরি ভিত্তিহীন এবং কাল্পনিক।

প্রতিবেদনে হেফাজতে ইসলামের নেতাদের ভুল পরিচয়ে তুলে ধরা হয়েছে। হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশে বৈধভাবে পরিচালিত আলেম ও  ইসলামি সংগঠনগুলোর একটি প্ল্যাটফর্ম। প্রতিবেদনে যাদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, তারা হেফাজতে ইসলামের নেতা, কোনো সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে তারা যুক্ত নন। শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনামলে হাজার হাজার হেফাজত সদস্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যা ও সাজানো মামলার শিকার হন। অন্তর্বর্তী সরকারের বিচার ও আইনি সংস্কারের অঙ্গীকারের অংশ হিসেবে আসিফ নজরুল তার দায়িত্বপূর্ণ পদে থেকে হেফাজতের এই ভুক্তভোগীদের ন্যায়বিচারের আবেদন শুনতে হেফাজতের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেন।

হেফাজতের নেতাদের সঙ্গে আইন উপদেষ্টার বৈঠক যেদিন হয়েছে বলে নিউজ অ্যারেনা ইন্ডিয়া উল্লেখ করেছে, তার অন্তত তিন দিন আগেই ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনার বিষয় ছিল শুধু আইনি প্রক্রিয়া ও মামলার তালিকা হস্তান্তর। বৈঠকের শেষে প্রতিনিধিদলের অনুরোধে একটি ছবি তোলা হয়, যা এমন সভায় প্রচলিত ও স্বাভাবিক রীতি।

হেফাজতের বর্তমান নেতৃত্ব বাংলাদেশের জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের রাজনৈতিক সংলাপে অংশগ্রহণ করে। হেফাজতের নেতারা ঢাকায় পশ্চিমা দেশগুলোর দূতাবাসগুলোর সঙ্গেও নিয়মিত বৈঠক করে থাকেন, যা তাদের রাজনৈতিক বৈধতা ও আন্তর্জাতিক সম্পৃক্ততার বিষয়টিকে প্রতিফলিত করে।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ স্বাধীন মানবাধিকার সংগঠনগুলো পূর্ববর্তী সরকারের দমনমূলক কর্মকাণ্ড ও হেফাজতসহ বিরোধীদলীয় কর্মীদের ওপর নিপীড়নের ঘটনাগুলো নথিবদ্ধ করেছে, সমালোচনাও করেছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলোর সেই প্রতিবেদনগুলো প্রমাণ করে যে হেফাজতের নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে এসব মামলার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ছিল, যা বর্তমান সরকারের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার প্রচেষ্টাকে সমর্থন করে।

ভারতীয় গণমাধ্যমটির প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে যে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল তার ফেসবুক পেজে ভারতের নেতাদের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক মন্তব্য করেছেন। এ বিষয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, আসলে বিষয়টি হলো ওই পোস্ট ছিল একজন ভারতীয়র লেখা, যিনি নিরাপত্তাব্যবস্থার ঘাটতি নিয়ে সমালোচনা করেন। সেই পোস্টটি শেয়ার করে পেহেলগামে হামলার নিন্দা জানান আসিফ নজরুল। পরে সম্ভাব্য বিভ্রান্তির আশঙ্কা করে তিনি স্বেচ্ছায় পোস্টটি কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মুছে ফেলেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা সকল গণমাধ্যমকে অনুরোধ করছি, যেন তারা সংবাদ প্রকাশের আগে যথাযথ যাচাই করে এবং দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার নীতি অনুসরণ করে।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, পেহেলগাম হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়ে, নিহত ব্যক্তিদের প্রতি শ্রদ্ধা ও তাদের স্বজনদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। একই সঙ্গে পেহেলগামের হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানান তিনি।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

রাঙামাটিতে সিএনজি-পিকআপ সংঘর্ষে নিহত ৫
রেফারির বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছে রিয়াল, ফাইনাল ম্যাচ বয়কটের হুমকি
আইন উপদেষ্টাকে জড়িয়ে ভারতের গণমাধ্যমে মিথ্যা প্রতিবেদন, মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি
নিজ দেশেই বিমান হামলা চালালো ভারত, ‘অসাবধানতা’ বলছে বিমান বাহিনী
গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত আরও ৮৪ ফিলিস্তিনি
আইনি নোটিশ প্রসঙ্গে যা বললেন ডা. তাসনিম জারা
ভারত-পাকিস্তান বিরোধে উত্তেজনা, শান্তির বার্তা নিয়ে এগিয়ে এলো ইরান
তারেক রহমানকে নিয়ে দ্য উইকের কাভার স্টোরি ‘নিয়তির সন্তান’
কুয়েটের ভিসি ও প্রো-ভিসিকে অব্যাহতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি
মেধাসম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহারে সবাইকে উদ্যোগী হতে হবে: প্রধান উপদেষ্টা
বেনাপোলে ৬ নারী ছিনতাইকারী গ্রেফতার
‘সংস্কার না নির্বাচন’ এই খেলা বাদ দিয়ে বিচার করুন: সারজিস আলম
যুদ্ধ বন্ধের আলোচনার মধ্যেই মস্কোয় গাড়িবোমা হামলায় রুশ জেনারেল নিহত
পোপ ফ্রান্সিসকে শেষ বিদায় জানাতে রোমে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের 'বি' ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন
পাকিস্তানে বোমা বিস্ফোরণে নিরাপত্তা বাহিনীর ৪ সদস্য নিহত
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিলেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ
নওগাঁয় পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার ১
শিগগিরই স্থলভিত্তিক এলএনজি টার্মিনাল স্থাপন করবে সরকার: প্রেস সচিব
টাঙ্গাইলে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে মাছ ব্যবসায়ী খুন