বুধবার, ২ এপ্রিল ২০২৫ | ১৯ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

সময় ও পর্যটনের খেলা

পর্যটনকে তিনটি সময়ে ভাগ করা যায়। বর্তমান সময়ের পর্যটন, অতীতের পর্যটন ও ভবিষ্যতের পর্যটন। পর্যটনের উপাদানগুলো একমাত্রিক, দ্বিমাত্রিক কিংবা ত্রিমাত্রিক যা-ই হোক না কেন, সময় আরেকটি মাত্রা হিসেবে যোগ হয়েছে পর্যটনের সঙ্গে।

পদার্থবিজ্ঞানীরা বলেছেন, সময় সরলরৈখিক নয়, বরং সময় স্থান দখল করে থাকে। পর্যটনের সঙ্গে সময় ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে বলেই সময়ের সঙ্গে পর্যটন উপাদানের সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়।

পর্যটনের উপর সময়ের প্রভাব অত্যন্ত বেশি। তাই পর্যটনে পিক সিজন ও অফ পিক সিজন কথাগুলি প্রযোজ্য। সময়ের জন্য পর্যটন পণ্য সংরক্ষণ করা যায় না। পর্যটকদের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে পর্যটন পণ্য ও সেবা উৎপাদন করে অবিলম্বে তা হস্তান্তর করতে হয়। পর্যটকরাও একে সংরক্ষণ করতে পারেন না। এদের চাহিদা সৃষ্টির অব্যবহৃত পরেই উপভোগও করতে চান। তা না হলে এইসব পণ্য ও সেবা নষ্ট হয়ে যায়। এ থেকে পরিষ্কার যে, পর্যটনের উপদান ও উৎপাদিত পণ্য ও সেবার সঙ্গে সময় নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত।

আবার অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের পর্যটনের সঙ্গে সময় একইভাবে সম্পৃক্ত থাকে না। তবে সময়যন্ত্রে চেপে এই তিন সময়ের পর্যটনের অবস্থা প্রত্যক্ষ করা যায়। বর্তমানের পর্যটন দেখতে হলে প্রচলিত যানবাহনের ব্যবহারই যথেষ্ট। তবে অতীতে কিংবা ভবিষ্যতে যেতে হলে পর্যটনের সময়যন্ত্র লাগবে। অতীতে যাওয়ার সময়যন্ত্র এবং ভবিষ্যতে যাওয়ার সময়যন্ত্র এক নয়, ভিন্ন। কারণ, এই দুই সময়যন্ত্রের চালক ও আরোহী আলাদা। অতীতে গমনকারী পর্যটনের সময়যন্ত্রের চালক হলো সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান এবং আরোহী হলো পর্যটক। অন্যদিকে ভবিষ্যতে গমনকারী পর্যটনের সময়যন্ত্রের চালক পর্যটন গবেষক এবং আরোহী হলো নীতিনির্ধারক, রাজনীতিবিদ ও বিনিয়োগকারী। আবার তাদের গতি, অনুসন্ধানরীতি ও পর্যবেক্ষণের কৌশলও এক নয়। উভয় ধরনের সময়যন্ত্রের নির্মাণ, পরিচালনা ও ব্যবহারের উদ্দেশ্য আলাদা হয়ে থাকে।

পর্যটনের সময়যন্ত্রে চেপে অতীতকালের পর্যটনকে অবলোকন করতে না পারলে বর্তমান সময়ের পর্যটকরা পর্যটনের রসাস্বাদন করে তা থেকে বহুমাত্রিক উপকার লাভ করতে পারবেন না। একইভাবে ভবিষ্যৎ সময়ে যেতে না পারলে পর্যটনের ভবিষ্যতের গতি প্রকৃতি নির্ধারণ করাও কঠিন হয়ে পড়বে। ফলে পর্যটনের গতিময়তা কমে যাবে এবং স্থবিরতা চলে আসবে।

দুই
এবার পর্যটনের সঙ্গে বর্তমান সময়ের অন্তঃপ্রবেশ রীতি ও ফলাফল নিয়ে আলোচনা করা যাক। একথা সত্য যে, সময় পর্যটনের ভেতর দিয়ে চলে এবং একইভাবে পর্যটনও সময়ের ভেতর দিয়ে চলে। বিষয়টি পরিষ্কার করা যাক।

সময় পর্যটনের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হলে সে পর্যটনকে তীরবেগে ভেঙে দিয়ে যায়। সময়ের তোড়ে পর্যটনের আকৃতি, অবয়ব ও উপযোগিতার ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে। ফলে তা পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে কিংবা চাহিদা মোতাবেক সেবাদানে ব্যর্থ হতে পারে। তবে রিয়েলিটি পর্যটনের বিষয় বিবেচনা করলে তা ভিন্ন কোনো ধনাত্মক ঘটনাও সৃষ্টি করতে পারে। পর্যটনের ভেতর দিয়ে সময়ের এই প্রবাহকাল, গতি ও বেগ বিবেচনা করতে হবে। সময়ের প্রবাহকাল দীর্ঘ এবং গতি ও বেগ উচ্চ হলে পর্যটনের আকৃতি, অবয়ব ও উপযোগিতার ব্যাপক পরিবর্তন ঘটবে। সেই ক্ষেত্রে সময়ের ঘাত মোকাবিলা ও নিয়মিতভাবে পর্যটনের উপাদানগুলির ব্যবহারের প্রতি অত্যন্ত যত্নশীল হতে হবে। একইভাবে সময়ের ভেতর দিয়ে পর্যটন গমন করলে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পর্যটন তার নিজস্ব অবয়ব পরিবর্তন করতে পারবে। সময়ের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে পর্যটনের অবয়ব ও উপযোগিতা সক্ষম হবে। পর্যটন পরিবেশের সঙ্গে নিজেকে খাপ খাইয়ে চলার সক্ষমতা অর্জন করবে। ক্ষেত্রমতে পর্যটনে নতুন নতুন উদ্ভাবন দেখতে পাওয়া যাবে। গবেষক ও পর্যটন স্টেকহোল্ডারগণ যৌথভাবে চাহিদা নিরূপণ ও বহুমুখী উপায়ে তা পূরণের নতুন পথ খুঁজে বের করবেন। এই ধরনের কার্যকলাপের জন্য বাস্তবে পর্যটনের মাত্রাগত ও গুণগত উন্নয়ন সাধিত হয়।

পর্যটন ও সময়ের অনুপ্রবেশ অনিবার্য। এ থেকে পর্যটনের মুক্তি নেই। ফলে একটি সমস্বত্ত্ব বিন্দু (Equilibrium Point) নির্ণয় করা দরকার। অর্থাৎ পর্যটনের ভেতর দিয়ে সময়ের প্রবাহ ও সময়ের ভেতর দিয়ে পর্যটনের প্রবাহ এমন একটি বিন্দুতে এসে মিলিত হবে, যা হবে এই ২ প্রবাহরেখার মিলিত বিন্দু। এই সমস্বত্ত্ব বিন্দুতে পর্যটনের সবচেয়ে কম পরিবর্তনকে চিহ্নিত করা যাবে একইভাবে সংঘটিত ঋণাত্মক বিষয়গুলিকে মোকাবিলা করা সহজ হবে। এই বিন্দু বিশ্লেষণ করে পর্যটন গবেষকরা পর্যটন পরিবর্তনের ইতিবাচক ও নেতিবাচক বিষয়গুলি তুলে ধরতে পারেন। একইভাবে উদ্ভুত সংকট মোকাবিলায় তারা সঠিক পথকে আগাম ধরিয়ে দিতে পারবেন। রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী নীতি-নির্ধারকমহল ও পর্যটন পরিচালনার সঙ্গে সম্পৃক্ত সব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান তাদের করণীয়গুলি জেনে যাবেন। পর্যটনের সম্পদ ব্যবস্থাপনা, মানবসম্পদ সৃজন পরিকল্পনা, বিনিয়োগ ক্ষেত্র ইত্যাদি সমস্বত্ত্ব বিন্দু থেকে নির্ণয় করা সম্ভব।

সময় ও পর্যটনের এই নিরন্তর খেলা আমাদের জীবনের সব উপাদান নিয়ে প্রস্তুতির জন্য বড় ইঙ্গিত দেয়। পর্যটনের মাধ্যমে দৃশ্যমান ও অদৃশ্য সম্পদের সর্বোচ্চ ও টেকসই ব্যবহার কীভাবে নিশ্চিত করা যায় এবং সম্পদ ব্যবহারের ভারসাম্য রক্ষা করা যায়- তার সব বিষয় এখান থেকে অনুসন্ধান করা যায়।

লেখক: রেক্টর, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্যুরিজম স্টাডিজ, ঢাকা।

এসএন

Header Ad
Header Ad

সেভেন সিস্টার্স নিয়ে ড. ইউনূসের মন্তব্যে ভারতীয় রাজনীতিবিদদের তীব্র প্রতিক্রিয়া

সেভেন সিস্টার্স নিয়ে ড. ইউনূসের মন্তব্যে ভারতীয় রাজনীতিবিদদের তীব্র প্রতিক্রিয়া। ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি চীন সফরে গিয়ে এক বক্তৃতায় ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাতটি রাজ্যকে (সেভেন সিস্টার্স) স্থলবেষ্টিত বলে উল্লেখ করেন এবং বাংলাদেশকে এ অঞ্চলের জন্য সমুদ্রের অভিভাবক হিসেবে বর্ণনা করেন।

ড. ইউনূস তার বক্তব্যে বলেন, ভারতের পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত সেভেন সিস্টার্স নামে পরিচিত সাতটি রাজ্য সম্পূর্ণরূপে স্থলবেষ্টিত। সমুদ্রের সঙ্গে তাদের কোনো সরাসরি সংযোগ নেই। ফলে বাংলাদেশ এই অঞ্চলের জন্য সমুদ্রের একমাত্র প্রবেশদ্বার এবং অভিভাবক হিসেবে ভূমিকা রাখতে পারে।

তার এই মন্তব্য ভারতের রাজনৈতিক নেতা ও কূটনীতিকদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে জানায়, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যকে অনেক ভারতীয় রাজনীতিবিদ হতাশাজনক এবং নিরাপত্তার জন্য চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন।

ভারতের আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা মন্তব্য করেছেন, ড. ইউনূসের বক্তব্য ভারতের ‘চিকেনস নেক’ করিডোরের দুর্বলতা নিয়ে পাকিস্তান ও চীনের দীর্ঘদিনের প্রচারণাকে উসকে দিতে পারে। তিনি আরও বলেন, উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে মূল ভূখণ্ডের সংযোগ আরও জোরদার করতে শক্তিশালী রেল ও সড়ক অবকাঠামো নির্মাণ অত্যন্ত জরুরি।

ত্রিপুরার আদিবাসী দল টিপ্রা মোথার নেতা প্রদ্যোত মানিক্য বলেন, ‘১৯৪৭ সালে চট্টগ্রাম ভারতের অংশ হলে আজ এ সমস্যা হতো না। আমাদের বাংলাদেশের পরিবর্তে নিজস্ব সমুদ্রবন্দর প্রয়োজন।’

বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের সাবেক হাইকমিশনার বীণা সিক্রি বলেন, ‘উত্তর-পূর্ব ভারতের সমুদ্র প্রবেশাধিকার নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে ইতোমধ্যেই চুক্তি রয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের মন্তব্য অত্যন্ত হতাশাজনক এবং তিনি এ ধরনের মন্তব্য করার অধিকার রাখেন না।’

ড. ইউনূসের বক্তব্য নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন একাধিক কংগ্রেস নেতা। কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা পবন খেরা মন্তব্য করেছেন, ‘বাংলাদেশের এ ধরনের অবস্থান উত্তর-পূর্ব ভারতের নিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টি করতে পারে।’

Header Ad
Header Ad

মিয়ানমারের ভূমিকম্পে এক ইমামের ১৭০ স্বজনের মৃত্যু

সাবেক ইমাম সোয়ে নেই ওও। ছবি: সংগৃহীত

পবিত্র ঈদুল ফিতর আসন্ন। বিদায় নিচ্ছে রহমত, বরকত ও মাগফিরাতের মাস রমজান। শেষ জুমার নামাজ আদায় করতে মুসলমানদের মধ্যে আগ্রহ ছিল চরমে। কিন্তু কে জানত, এই জুমাই শত শত মুসল্লির জীবনের শেষ জুমা হয়ে উঠবে!

গত ২৮ মার্চ, শুক্রবার স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ৫১ মিনিটে মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলে ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হানে। সাগাইং অঞ্চলের পাঁচটি মসজিদে তখন নামাজ আদায় করছিলেন অসংখ্য মুসল্লি। শক্তিশালী ভূমিকম্পে তিনটি মসজিদ ধসে পড়ে, যার মধ্যে অন্যতম ছিল মায়োমা মসজিদ। এই মসজিদে নামাজরত প্রায় সবাই প্রাণ হারান।

মায়োমা মসজিদের সাবেক ইমাম সোয়ে নাই ওও তখন মিয়ানমার-থাইল্যান্ড সীমান্তবর্তী শহর মায়ে সোতে অবস্থান করছিলেন। সেখানেও তিনি ভূমিকম্প অনুভব করেন, তবে বুঝতে পারেননি কী পরিমাণ বিপর্যয় তার অপেক্ষায় রয়েছে।

সোয়ে নাই ওও একসময় মিয়ানমারের ইমাম ছিলেন, তবে ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর দেশ ছেড়ে থাইল্যান্ডে পালিয়ে যান এবং বর্তমানে একটি মানবাধিকার সংস্থায় কাজ করছেন। ভূমিকম্পের পরের দিনগুলোতে একের পর এক শোকসংবাদ পেতে থাকেন তিনি। এখন পর্যন্ত তিনি জানতে পেরেছেন, তার প্রায় ১৭০ জন আত্মীয়, বন্ধু ও প্রাক্তন মুসল্লি মারা গেছেন। তাদের বেশিরভাগই মসজিদে অবস্থান করছিলেন, অনেকেই মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে সোয়ে নাই ওও বিবিসিকে বলেন, ‘আমি প্রাণ হারানো সব মানুষের কথা ভাবছি। তাদের শিশুদের কথা ভাবছি... এই শোক সহ্য করা অসম্ভব।’

সাগাইং অঞ্চল মূলত বৌদ্ধ মন্দিরের জন্য পরিচিত হলেও এখানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মুসলমান দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছেন। নানা নিপীড়ন ও নির্যাতন সত্ত্বেও তারা এ অঞ্চলে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছেন।

মিয়ানমারের জান্তা সরকারের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ভূমিকম্পের সময় মসজিদে নামাজরত অবস্থায় প্রায় ৫০০ মুসলমান মারা গেছেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মসজিদ সংলগ্ন মায়োমা স্ট্রিট ও শহরতলি। ভূমিকম্পে বহু ভবন ধসে পড়েছে, রাস্তাঘাট বিধ্বস্ত হয়েছে।

এই ভূমিকম্পে মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর সাগাইং ও মান্দালয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। উদ্ধারকর্মীরা এখনো ধ্বংসস্তূপ থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করছেন। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

দেশটির জান্তা সরকার জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৭১৯ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন ৪৪১ জন এবং আহত হয়েছেন ৪ হাজার ৫২১ জন। জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইং এক টেলিভিশন ভাষণে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, নিহতের সংখ্যা ৩ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে।

মিয়ানমারের ভূমিকম্পটি ছিল ৭ দশমিক ৭ মাত্রার। এর কেন্দ্রস্থল ছিল মান্দালয় শহর থেকে ১৭.২ কিলোমিটার দূরে এবং ভূ-পৃষ্ঠ থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার গভীরে। প্রথম কম্পনের ১২ মিনিট পর ৬ দশমিক ৪ মাত্রার আফটারশক হয়, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে।

এই বিধ্বংসী ভূমিকম্পে দেশজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। উদ্ধারকর্মীরা নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, তবে ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও অনেকের আটকে থাকার আশঙ্কা রয়েছে।

Header Ad
Header Ad

ঈদের আনন্দে যমুনার দুর্গম চরে গ্রাম-বাংলার ঘুড়ি উৎসব, আনন্দে মেতে উঠে বিনোদনপ্রেমীরা!

টাঙ্গাইলের গোপালপুর নলিন এলাকায় যমুনার দুর্গম চরে ঈদ উপলক্ষে ঘুড়ি উৎসব। ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

আবহমান গ্রাম-বাংলা থেকে হারাতে বসেছে শৈশবের চিরচেনা ঘুড়ি উড়ানো উৎসব। আর সেই হারানো ঐতিহ্যকে ফেরাতে ও বর্তমান প্রজন্মের সামনে ঘুড়ি উড়ানোর উৎসবকে তুলে ধরতে ‘এসো উড়াই ঘুড়ি, বাংলার ঐতিহ্য লালন করি’- এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে প্রতি বছরের মতো এবারও ঈদ উদযাপন উপলক্ষে টাঙ্গাইলের গোপালপুরে ঘুড়ি উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (০১ এপ্রিল) বিকালে উপজেলার নলিন বাজারের পাশে যমুনার ধূ-ধূ বালুচরে মুক্তিযোদ্ধা নয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উদ্যোগে এবং স্থানীয় সেচ্ছাসেবী আমরা গোপালপুরবাসী ফেসবুক গ্রুপ ও শুভশক্তি বাংলাদেশের সহযোগিতায় ঘুড়ি উৎসব পালন করা হয়।

এই ঘুড়ি উৎসবে নানা শ্রেণি পেশার মানুষসহ স্কুল পড়ুয়া শিশু শিক্ষার্থী নানা রঙয়ের, নানা বর্ণের রঙিন ঘুড়ি নিয়ে বালুময় চরে বিকাল বেলা সমবেত হয়। পরে একে একে ঘুড়ি উড়ানো ও ঘুড়ির সুতা কাটাকাটি খেলা শুরু হয়। তারপর সন্ধ্যায় বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে বাউল গানের আড্ডায় মেতে ওঠে বিনোদনপ্রেমিরা।

 

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

ঘুড়ি উড়াতে আসা স্কুল শিক্ষার্থী আসফিয়া জান্নাত আদরিতা বলেন- ছোট বেলা শহরে থাকি, এবার পরিবার সঙ্গে ঈদের ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে এসেছি। এর আগে কখনো ঘুড়ি দেখেনি বা ঘুড়ি উড়ানো হয়নি। এবারই প্রথম ঘুড়ি উড়ানো উৎসবে এসেছি এবং উড়িয়েছি। এখানে এসে সত্যিই ভাল লাগছে।

মুক্তিযোদ্ধা নয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের
শিক্ষার্থীরা জানান, কয়েক বছর ধরে আমাদের স্কুল থেকে চরাঞ্চলে ঘুড়ি উৎসবের আয়োজন করছে আসছে। আমরা কয়েক দিন ধরে নানা রঙয়ের বিভিন্ন ঘুড়ি তৈরি করেছি। নদীর পাড়ে বিকাল বেলা এমন উৎসবে অনেক আমাদের অনেক সহপাঠিরা তাদের মা-বাবা নিয়ে আনন্দ উপভোগ করছেন।

ঘুড়ি উৎসবে অংশ নেওয়া স্কুল শিক্ষিকা শামীমা ইয়াসমিন বলেন, কর্ম ব্যবস্ততার কারণে যমুনা চরাঞ্চলে আসার সুযোগ হয় না। বসন্ত বরণ উপলক্ষে গতবারের ন্যায় এবারো ময়না আপার ডাকে ঘুড়ি উৎসব উদযাপনে পরিবার নিয়ে অংশ গ্রহণ করেছি। চরাঞ্চলের এমন উৎসবে আসতে পেরে খুব ভাল লাগছে।

 

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

মুক্তিযোদ্ধা নয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ঘুড়ি উৎসব আয়োজক আঞ্জু আনোয়ারা ময়না বলেন, গ্রাম-বাংলা ঐতিহ্য নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে ২০১৯ সাল থেকে স্কুলের শিশু শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের নিয়ে বিভিন্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে ঘুড়ি উৎসব পালন করে আসছি। এরই ন্যায় এবার ঈদের পর এই আয়োজন করা হয়েছে। বিগত বছরের তুলনায় এ বছর লোকজনের উপস্থিত বেড়েছে। প্রতিবছরই এমন ঘুড়ি উৎসব উদযাপন করা হবে।

গোপালপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি অধ্যাপক জয়নাল আবেদীন বলেন, ছোট বেলা আমি নিজেও ঘুড়ি উড়িয়েছি, এটিতে আলাদা একটি আনন্দ আছে। আমি মনে করি বাঙালির এই ঘুড়ি উড়ানোর মধ্যে দিয়ে সংস্কৃতির যে একটা অতীত সম্বৃদ্ধির অতীতকে স্মরণ করে থাকে। এটি একটি বিশুদ্ধ প্রতিযোগিতা। এমন আয়োজনে অংশ নিতে পেরে ভালো লাগছে।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. নাজমুল হাসান বলেন, ঘুড়ি উৎসব আমাদের প্রাণের একটি উৎসব। এমন পরিবেশে বর্ণিল এই রঙিন ঘুড়ি উৎসব কখনো দেখার সুযোগ হয়নি। দীর্ঘদিন পর এভ ঘুড়ি উৎসবে প্রাণ ফিরেছে সেই শৈশবে। ঈদ আনন্দের দ্বিতীয় দিনে বর্ণিল রঙিন রঙের ছটায় ঘুড়ি হাতে নিয়ে নীল আকাশে উড়িয়েছি। উৎসবে পরিবার নিয়ে অংশ নিতে পেরে আমি আনন্দিত।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

সেভেন সিস্টার্স নিয়ে ড. ইউনূসের মন্তব্যে ভারতীয় রাজনীতিবিদদের তীব্র প্রতিক্রিয়া
মিয়ানমারের ভূমিকম্পে এক ইমামের ১৭০ স্বজনের মৃত্যু
ঈদের আনন্দে যমুনার দুর্গম চরে গ্রাম-বাংলার ঘুড়ি উৎসব, আনন্দে মেতে উঠে বিনোদনপ্রেমীরা!
ইমামকে ঘোড়ার গাড়িতে রাজকীয় বিদায়, দেওয়া হলো ৯ লাখ টাকার সংবর্ধনা
লন্ডনে একসঙ্গে দেখা গেলো সাবেক চার আওয়ামী মন্ত্রীকে
ঢাকায় ফিরছে ঈদযাত্রীরা, অনেকে ছুটছেন শহরের বাইরে
চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় আবারও সড়ক দুর্ঘটনা, নিহত ৭
বিটিভিতে আজ প্রচারিত হবে ঈদের বিশেষ ‘ইত্যাদি’
ঈদের ছুটিতে ফাঁকা ঢাকা, নেই যানজটের চিরচেনা দৃশ্য
মাদারীপুরে তিন মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নিহত ৪, আহত ২
থানায় জিডি করলেন ভোক্তা অধিকারের জব্বার মন্ডল
রাশিয়া আমাদের চিরকালের বন্ধু, কখনো শত্রু নয়: চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান খালেদা জিয়ার
দ্বিতীয় দফায় মিয়ানমারে ত্রাণ সহায়তা পাঠালো বাংলাদেশ
ভারতে প্রশিক্ষণ প্লেন বিধ্বস্ত, পাইলট আহত
এপ্রিলে ঢাকায় আসছে আইএমএফ প্রতিনিধি দল
জাপানে মেগা ভূমিকম্পের শঙ্কা, প্রাণহানি হতে পারে ৩ লাখ
জুলাই কন্যাদের সম্মানজনক পুরস্কার নিয়ে যা জানাল যুক্তরাষ্ট্র
দুপুরের মধ্যে ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের সম্ভাবনা
শান্তিপূর্ণ ঈদ উদযাপনে সেনাবাহিনীর কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা