বিশ্বের ৩৩তম পারমাণবিক শক্তি ব্যবহারকারী দেশ হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ
বিশ্বের ৩৩তম পারমাণবিক শক্তি ব্যবহারকারী দেশ হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যেই রূপপুর কেন্দ্র থেকে মিলবে পরমাণু বিদ্যুৎ।
২০১৭ তে কাজ শুরুর পর দেশের প্রথম পারমাণবিক এই প্রকল্পটি এখন বাংলাদেশের আত্মমর্যাদা আর সক্ষমতার প্রতীক যেন। গত ২৮ সেপ্টেম্বর রাশিয়া থেকে দেশে পৌঁছেছে ইউরেনিয়াম, যা বিদ্যুৎকেন্দ্রের মূল জ্বালানি। কড়া নিরাপত্তায় সেই ফুয়েল এখন রূপপুরের স্টোরেজ ফ্যাসিলিটিতে। বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) রাশিয়ার কাছ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এই ইউরেনিয়াম বুঝে নেবে রূপপুর প্রকল্প। এই আনুষ্ঠানিক হস্তান্তরের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ প্রবেশ করবে বিশ্বের ৩৩তম পারমাণবিক শক্তি ব্যবহারকারী দেশ হিসেবে।
সেই অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তবে ইউরেনিয়াম চলে আসলেও শিগগিরই উৎপাদন শুরু হচ্ছে না এখানে। রাশিয়া থেকে আনা ফ্রেশ নিউক্লিয়ার ফুয়েল বা ইউরেনিয়ামসহ পরমাণু চুল্লির পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলবে এপ্রিল পর্যন্ত। তারপরই প্রথম ইউনিট থেকে জাতীয় গ্রিডে দেয়া শুরু হবে বিদ্যুৎ। কর্তৃপক্ষ বলছে, আরও বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ডামি ফুয়েল দিয়েও অপারেশন করা হবে কিছুদিন।
রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. শৌকত আকবর বলেন, ডামি ফুয়েল দিয়ে আমরা রিয়েক্টর চালানো শুরু করে দেব। আমরা দেখব যে, রিয়েক্টরের সমস্ত ফাংশন ঠিক আছে কিনা। কোল্ড টেস্ট বলেন হট টেস্ট বলেন, যতো ধরনের ফাংশনাল টেস্ট আছে, এগুলো আমরা আগামী এপ্রিল ২০২৪’এর মধ্যে সম্পন্ন করব।
নির্মাণের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত বড় কোনো চ্যালেঞ্জ দেখছেন না প্রকল্প পরিচালক। তিনি বলেন, নিউক্লিয়ার ফুয়েল সেইফ, সিকিউরড এবং সেফগার্ড মেইনটেইন করে এখানে সংরক্ষণ করার মতো সমস্ত ইনফ্রাস্টাকচার, ম্যান পাওয়ার, টেকনিক্যাল মিনস, ফিজিক্যাল প্রটেকশন সিস্টেম রয়েছে। অর্থাৎ, আস্তে আস্তে কনস্ট্রাকশন থেকে অপারেশনে যাওয়ার জন্য যে কন্ডিশনগুলো আছে, সেগুলো আমরা অর্জন করেছি।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান বলছেন, চূড়ান্ত সতর্কতা আর আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা ‘আইএইএ’র প্রটোকল মেনেই বাস্তবায়ন হচ্ছে এই মেগা প্রকল্প। নানা বিতর্ক থাকলেও আর্থিক ও কারিগরি বিবেচনায় দেশের সবচেয়ে বড় এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মূল্যায়ন জাতি করবে বলে আশাবাদী মন্ত্রী। তিনি বলেন, আমরা আমাদের যতোটুকু দেয়ার সম্ভব, মানুষ হিসেবে সৎভাবে সেই চেষ্টাটা করেছি। বাকিটা মূল্যায়ন করবে দেশের মানুষ।
প্রত্যাশা, আমদানি করা ফুয়েল দিয়ে যথাসময়ে উৎপাদনে আসবে প্রথম ইউনিট। আর দ্বিতীয়টির কাজও এগিয়ে চলায় তা নিয়েও আশাবাদী সরকার।