বিবিয়ানা বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ দুই তীর প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা

আগামী বর্ষা মৌসুমের আগে বাস্তবায়ন কাজ শেষ না হলে বিবিয়ানা বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ দুই তীর প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির এক প্রতিবেদনে।
হবিগঞ্জ জেলার কুশিয়ারা নদীর উভয় তীরের ভাঙন রোধে প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নের তাগিদ দেওয়া হয়েছে ওই প্রতিবেদনে। সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সংসদীয় উপ-কমিটির পরিদর্শন প্রতিবেদন নিয়ে আলোচনা শেষে এই তাগিদ দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কমিটির সভাপতি রমেশ চন্দ্র সেন। বৈঠকে কমিটির সদস্য পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক, পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম, সামশুল হক চৌধুরী ও সালমা চৌধুরী এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
কমিটি সূত্র জানায়, ভাঙনের হাত থেকে বিবিয়ানা বিদ্যুৎ কেন্দ্র রক্ষা ও বর্ষা মৌসুমে তিন জেলার ১০টি ইউনিয়নের বন্যা প্রতিরোধে ‘হবিগঞ্জ জেলার বিবিয়ানা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সন্মুখে কুশিয়ারা নদীর উভয় তীরের ভাঙ্গনরোধ’ শীর্ষক প্রকল্প নেওয়া হয়। আগামী জুনে ওই প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও কাজের প্রায় ৪২ শতাংশ এখনো অসমাপ্ত রয়েছে। বাস্তবায়ন কাজের মান নিয়েও নানা অভিযোগ উঠেছে।
এসব অভিযোগ নিয়ে আলোচনা শেষে সংসদীয় কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক সংসদীয় উপ-কমিটির সদস্যরা গত ২৪ ও ২৫ নভেম্বর বিবিয়ানা পাওয়ার প্ল্যান্ট এলাকা সরেজমিন পরিদর্শন করেন। এরপর প্রকল্পের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণসহ ৬ দফা সুপারিশ করে একটি প্রতিবেদন জমা দেয় কমিটি।
সুপারিশে নদীর ঢাল ও নদী তীর প্রতিরক্ষা কাজ অতিদ্রুত সম্পাদনের তাগিদ দেওয়া হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, প্রকল্পের নির্ধারিত সময় আগামী জুন মাস হলেও আগাম বন্যা প্রতিরোধে এপ্রিল মাসের মধ্যেই কাজ শেষ করতে হবে। তা না হলে বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ আশপাশের এলাকা প্লাবিত হয়ে মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। এতে আরও বলা হয়, পানি ধারণ ক্ষমতা বাড়াতে নদীর ড্রেজিং করতে হবে। বিদ্যুৎ প্লান্ট সমূহের সামনে জমে থাকা পলি অপসারণ না করে স্ট্রিম তৈরি ও কুরিং সিস্টেম সচল রাখতে পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে স্বল্প ব্যয়ে দু’টি ইনটেক চ্যানেল নির্মাণ করা যেতে পারে।
বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মালামাল নৌপথে সরবরাহের লক্ষ্যে দু’টি জেটি নির্মাণের ব্যবস্থা করতে হবে। এ ছাড়া, প্রকল্পের প্রতিরক্ষা কাজ টেকসই করতে স্লোপিং ব্লক, ডাম্পিং ব্লক ও জিও টিউবের মান এবং স্থাপন পদ্ধতি নিয়মিত তদারকির সুপারিশ করা হয়েছে।
বৈঠকে পাবনা জেলার বেড়া উপজেলার মুন্সিগঞ্জ হতে খানপুরা এবং কাজিরহাট হতে রাজধরদিয়া পর্যন্ত যমুনা নদীর ডান তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে একটি তথ্যচিত্র উপস্থাপন করা হয়। একইভাবে দিনাজপুর জেলার ঢেপা, পুনর্ভবা ও টাঙ্গন নদীর তীর সংরক্ষণ প্রকল্প এবং কক্সবাজার জেলার বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্তে নিরাপত্তা উন্নত করার জন্য উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায় নাফ নদী বরাবর পোল্ডাসমূহের পুনর্বাসন প্রকল্পের বর্তমান অবস্থা ও সার্বিক অগ্রগতি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে প্রদর্শন করা হয়। ওই প্রকল্পগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়নের তাগিদ দিয়েছে সংসদীয় কমিটি।
এনএইচবি/এমএমএ/
