নিউইয়র্কে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী
ফাইল ফটো
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের শেষকৃত্যানুষ্ঠানে যোগদান শেষে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে পৌঁছেছেন। সেখানে তিনি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনে যোগ দেবেন।
স্থানীয় সময় সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টা ২৪ মিনিটের (বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার সকাল ৮টা ২৪ মিনিট) দিকে নিউইয়র্কের জন এফ কেনেডি বিমানবন্দরে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী বিশেষ ফ্লাইটটি ৪ নম্বর টার্মিনালে যখন অবতরণ করে, তখন বাইরে পক্ষে-বিপক্ষে বিভিন্ন স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে গোটা টার্মিনাল এলাকা। সোমবার সন্ধ্যা থেকেই জন এফ কেনেডি বিমাবন্দরে জড়ো হয় প্রধানমন্ত্রীকে বরণ করতে আসা যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। তারা নানা ধরনের স্লোগান দিতে থাকেন। টার্মিনালের আরেক পাশে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনগুলো প্রতিরোধের লক্ষ্যে প্রতিবাদসহ বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। তবে রাত ৯টা পর্যন্ত সময়সীমা নির্দিষ্ট থাকায় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের নির্দেশে উভয় দলের নেতাকর্মীরা যথা সময়ে ৪ নম্বর টার্মিনালের পার্কিং স্থান ত্যাগ করেন বলে জানা গেছে।
জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ ইমরান এবং জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মুহাম্মদ আব্দুল মুহিত। পরে মোটর শোভাযাত্রা সহকারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ম্যানহাটনের অভিজাত হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়।
এরআগে সোমবার স্থানীয় সময় রাত ৮টায় (বাংলাদেশ সময় রাত ১টা) ইংল্যান্ডের রাজধানী থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিজি-১৯১০ ভিভিআইপি ফ্লাইটে নিউইয়র্কের উদ্দেশে রওনা হন প্রধানমন্ত্রী।
যুক্তরাজ্য ত্যাগের পূর্বে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অন্যান্য বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে দ্বিতীয় রানি এলিজাবেথের শেষকৃত্যানুষ্ঠানে যোগ দেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁসহ শত শত বিশিষ্ট ব্যক্তিরা রানির শেষকৃত্যানুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের শেষকৃত্যানুষ্ঠানে যোগ দিতে শেখ হাসিনা সরকারি সফরে লন্ডন পৌঁছান।
২০ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে শেখ হাসিনা জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেজ আয়োজিত সংবর্ধনায় এবং জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৭তম উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।
এ ছাড়াও তিনি ইউএনএইচসিআর-এর ফিলিপো গ্রান্ডি এবং স্লোলোভেনিয়ার প্রেসিডেন্ট বরুত পাহোরের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। একই দিন তিনি জাতিসংঘে নারী নেত্রীদের প্ল্যাটফর্মেও যোগ দেবেন।
দিনের শেষে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আয়োজিত সংবর্ধনাতেও অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রী। ২১ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ, বতসোয়ানা, স্লোভাক প্রজাতন্ত্র ও জাতিসংঘ আয়োজিত উচ্চ পর্যায়ের টেকসই আবাসন শীর্ষক অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। পরে তিনি ডব্লিউইএফ এর নির্বাহী পরিচালক প্রফেসর শোয়াব ক্লাউসের সঙ্গে একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন এবং গ্লোবাল ক্রাইসিস রেসপন্স গ্রুপ (জিসিআরসি) চ্যাম্পিয়নস মিটিংয়ে যোগ দেবেন।
বিকেলে প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সদরদপ্তরে পদ্মা সেতুর ওপর আলোকচিত্র প্রদর্শনী পরিদর্শন করবেন এবং এরপর কসোভোর প্রেসিডেন্ট ড. ভজোসা ওসমানি-সাদ্রিউ, ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট গুইলারমো লাসো মেন্ডোজা এবং রাবাব ফাতিমার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন।
প্রধানমন্ত্রী ২২ সেপ্টেম্বর দিনটি অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্সের (এএমআর) উপর একটি প্রাতরাশ বৈঠকে অংশ নেবেন এবং আইওএম মহাপরিচালক আন্তোনিও ভিটোরিনোর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। তিনি ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের সঙ্গে একটি উচ্চ পর্যায়ের গোলটেবিল বৈঠকে যোগ দেবেন।
পরে, তিনি কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী সামদেচ আক্কা মোহা সেনা পাদেই টেকো হুন সেন এবং আইসিসির প্রসিকিউটর নিক ক্লেগ এবং করিম খানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন।
২৩ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনে ভাষণ দেবেন। ২৪ সেপ্টেম্বর তিনি প্রবাসী বাংলাদেশিদের নাগরিক সংবর্ধনায় যোগ দেবেন।
আরএ/