গার্ডার ভেঙে যত দুর্ঘটনা

রাজধানীর উত্তরায় বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের গার্ডার ভেঙে পড়ে প্রাইভেট কারে থাকা শিশুসহ ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও দুইজন। আহতদের অবস্থা আশঙ্কা বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সোমবার (১৫ আগস্ট) বিকালে পৌনে ৫টার দিকে উত্তরা জসীম উদ্দীন এলাকার আড়ংয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- রুবেল (৫০), ঝরণা (২৮), জান্নাত (৬) জাকারিয়া (২) ও ফাহিমা। আহত হৃদয় ও রিয়া মনিকে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন জায়গায় গার্ডার পড়ে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। সেগুলো হলো-
গত ১৫ জুলাই ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুর মহানগরীর চৌধুরীবাড়ি এলাকায় বিআরটি প্রকল্পের ফ্লাইওভারের লঞ্চিং গার্ডার গাড়িতে নিয়ে যাওয়ার সময় কাত হয়ে পড়ে জিয়াউর রহমান (৩০) নামে এক নিরাপত্তাকর্মীর মৃত্যু হয়। এ সময় এক পথচারীও আহত হন।
এর আগে ৭ জুন গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলায় নির্মাণাধীন একটি সেতুর গার্ডার ধসে পড়ে লিয়াকত হোসেন (৩৫) নামে এক শ্রমিক নিহত হন। তিনি সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার নাকগুহা এলাকার সাত্তার পরামানিকের ছেলে। কামাল শরিফ নামে এক ঠিকাদারি ব্যবসায়ীর ‘এমটিবি/এমএমই’ (জিবি) নামে একটি কনস্ট্রাকশন ফার্ম সেতুটির নির্মাণ কাজ করছিল।
অন্যদিকে, গত ১৬ জুন সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে নির্মাণাধীন জাদুকাটা সেতুর একটি গার্ডার পিলার ঢলের পানিতে ধসে পড়ার ঘটনা ঘটে। এলজিইডির তত্ত্বাবধানে প্রায় ৮৬ কোটি টাকা নির্মাণ ব্যয়সাপেক্ষে ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পূর্ব প্রতিশ্রুত জাদুকাটা নদীর ওপর তমা কন্সট্রাকশন নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করে। প্রায় ৭৩ শতাংশ কাজ শেষ হওয়ার পর পাহাড়ি ঢলের স্রোতে সেতুর পূর্ব তীরের একটি গার্ডার পিলার ঢালাইসহ ধসে পড়ে।
আবার গত ২৮ এপ্রিল রাঙামাটি-কাপ্তাই সড়কে একটি নির্মাণাধীন সেতুর গার্ডার ধসে একজন শ্রমিক নিহত এবং ১৫ জন আহত হয়।
কয়েক বছর আগে গার্ডার ধসে সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনা ঘটে চট্টগ্রাম নগরীর বহদ্দারহাট এলাকায়। নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারের গার্ডার ধসে মর্মান্তিকভাবে ১৩ জনের মৃত্যু হয়।
গত বছর ২০২১ সালে ১৪ মার্চ ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে নির্মাণাধীন বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের গার্ডার পড়ে চারজন আহত হন।
রাজধানীর উত্তরায় নির্মাণাধীন বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লাইন-৩ এর বক্স গার্ডার পড়ে একটি প্রাইভেট কারের পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। বিষয়টি কীভাবে ঘটল জানতে চাইলে বিআরটি এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনা সত্যিই দুঃখজনক। দুর্ঘটনাটি ঘটেছে ক্রেন ফেল করার কারণে। নির্মাণ এলাকাতেই বক্স গার্ডারটি ক্রেনে করে উপরে উঠাচ্ছিল। কিন্তু ক্রেন হঠাৎ করে ফেল করায় গার্ডার নির্মাণ এলাকার বাইরে রাস্তায় চলে আসে এবং গাড়ির উপর পড়ে।
তিনি আরও বলেন, কী কারণে ক্রেন ফেল করেছে সেটি এখনই বলতে পারছি না। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, ক্রেনে মেকানিক্যাল ত্রুটি হতে পারে। যার ফলে ভারসাম্য হারিয়ে ক্রেনটি উল্টে যায় এবং গার্ডারটি রাস্তার উপরে পড়ে। যদি সোজা থাকত তাহলে নির্মাণ এলাকাতেই পড়ত।
প্রসঙ্গত, এর আগেও গত বছরের ১৪ মার্চ ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে নির্মাণাধীন বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের গার্ডার পড়ে চারজন আহত হন। তাদের মধ্যে ২ জন চীনের নাগরিক ছিলেন।
কেএম/এমএমএ/
