পদ্মা সেতুর বিরোধীতাকারীদের মুখে চুনকালি পড়েছে: রওশন এরশাদ
পদ্মা সেতু বাস্তবায়নে যারা বিরোধীতা করেছে তাদের মুখে চুনকালি পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ।
বুধবার (২৯ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় নিয়ে বিরোধী দলীয় নেতা এসব কথা বলেন। এরমধ্য দিয়ে দীর্ঘ দিন পর বিরোধী দলীয় নেতা সংসদে উপস্থিত হলেন।
বেগম রওশন এরশাদ বলেন, দেশের মানুষের স্বপ্নের পদ্মা সেতু আজ বাস্তবে রূপ নিয়েছে। পদ্মা সেতু শুধু একটি অবকাঠামো নয়, এটি দেশের সক্ষমতা ও আত্মমর্যাদার প্রতীক। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে, এত সমস্যা মোকাবিলা করে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা নির্মাণ সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতু দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জন্য অর্থনৈতিক লাইফ লাইনরূপে কাজ করবে। বাণিজ্য, আঞ্চলিক বাণিজ্য, দক্ষিণ এশিয়ার সংযোগ, শিল্পাঞ্চল গড়ে ওঠা, কৃষি সম্প্রসারণ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিসহ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখবে স্বপ্নের পদ্মা সেতু।
বিরোধীদলীয় নেতা আগামী জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদের বেশীরভাগ সময় আমরা পূর্ণ করেছি। দেশের সবকটি রাজনৈতিক দলই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমি মনে করি, সকল দলের অংশগ্রহণে আগামী নির্বাচনটি হবে সুষ্ঠু, অবাধ ও সুস্থ প্রতিযোগিতা মূলক একটি নির্বাচন, যা গণতন্ত্রের মূলনীতি। দেশের উন্নয়নের জন্য টেকসই গণতন্ত্রের প্রয়োজন। আর সেজন্যই আমাদের সকলকে দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, আমি মনে করি প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়নের বড় চ্যালেঞ্জ। আর সেই চ্যালেঞ্জগুলো হলো-হচ্ছে আমদানিজনিত মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ। তেল, গ্যাস ও সারের মূল্যবৃদ্ধিজনিত বর্ধিত ভর্তুকির জন্য অর্থের সংস্থান। বেসরকারি বিনিয়োগ অব্যাহত রেখে কর্মসৃজন। আমদানি সহনীয় পর্যায়ে রেখে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ স্থিতিশীল রাখা। ব্যাংক ঋণের সুদের হার বর্তমান পর্যায়ে ধরেরাখা। কর এর আওতা বৃদ্ধি করে রাজস্বের পরিমাণ বাড়ানো ও বাজেট ঘাটতি কমিয়ে আনা। কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের বাস্তবায়ন পিছিয়ে দেওয়া এবং সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের আওতা বাড়ানো। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট খাতগুলোতে বরাদ্দ বাড়ানোর পাশাপাশি উৎপাদন বাড়িয়ে আমদানি কমানোর কৌশল নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান তিনি।
বিরোধী দলীয় নেতা বলেন, অতিভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে আকস্মিক ও স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় বড় মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে সিলেট, উত্তরবঙ্গসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। বিপুল সংখ্যক রাস্তা বাড়িঘর এবং ফসলি জমি প্লাবিত হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে মানুষ অবর্ণনীয় কষ্টে আছেন। আমি মনে করি বন্যা মোকাবেলায় স্বল্পমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা, গ্রহণ ও দ্রুত বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন। বন্যা পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারকে জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আমাদের যা দরকার তা হলো সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ, যাতে করে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে অবিলম্বে সাহায্য পৌঁছানো যায়। ত্রাণ ও চিকিৎসা দলগুলোর জন্য পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করে আশ্রয়কেন্দ্রগুলো পাঠানো দরকার। দীর্ঘমেয়াদে বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্যও সরকারের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। সেই সঙ্গে স্থায়ী সমাধানের জন্য বিশেষজ্ঞদের মতামত সাপেক্ষে দীর্ঘমেয়াদী ব্যবস্থা গ্রহণ করার পরমার্শ দেন তিনি।
এসএম/