শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫ | ২৭ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৪৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান

প্রথমত তারা খিলানগুলোর নিচে এবং ভেতরের উঠোনে ঘুরে বেড়াত এবং কিছুক্ষণ পরেই রুটি এবং চকলেটটা খেয়ে ফেলত। কারণ রুটিটাকে মনে হতো ঝামেলাপূর্ণ একটা জিনিস আর চকলেটটা গলে তাদের আঙুলে জড়িয়ে যেত।

এরপর তারা যুদ্ধপ্রবীণদের মুখোমুখি হতো। কারও একটা পা নেই। কারও একটা হাত নেই। কেউ সাইকেলের চাকা লাগানো ছোট গাড়িতে বসা। কারও চেহারা বিকৃত ছিল না। কেউ অন্ধও ছিলেন না। শুধু পঙ্গু ছিলেন তারা। তাদের পোশাক আশাকও ছিল পরিচ্ছন্ন। কারও গলায় ঝুলত পদক। শার্টের, জ্যাকেটের কিংবা পাজামার হাতা গুটিয়ে সেপটিপিন দিয়ে অবশিষ্ট অদৃশ্য কোনো অঙ্গের সঙ্গে বাঁধা থাকত, দেখতে তেমন একটা ভয়াবহ ছিল না। সংখ্যায় তারা অনেক। প্রথম দিন তাদের দেখার পর যেটুকু বিস্ময়বোধ জেগেছিল পিয়েরে এবং জ্যাকের মনে সেটা কাটিয়ে ওঠার পর নতুন কিছু আবিষ্কার করলে জগৎ সম্পর্কিত তাদের নিজস্ব দৃষ্টিতেই যেমন করে দেখে থাকত তেমন করেই দেখেছে ওই মানুষগুলোকেও। পিয়েরের মা তাদের বুঝিয়েছেন, ওই মানুষগুলো যুদ্ধে তাদের হাত কিংবা পা হারিয়েছেন এবং যেহেতু তাদের জগতেরই একটা অংশ ছিল যুদ্ধ এবং যুদ্ধ সম্পর্কে তারা যেহেতু সব সময় শুনে এসেছেন সেহেতু তাদের চারপাশের সবকিছুতেই যুদ্ধের প্রভাব পড়েছে।

তাদের বুঝতে কোনো অসুবিধা হতো না, অন্য যেকোনো মানুষই যেকোনো সময় তাদের হাত কিংবা পা হারাতে পারে। অঙ্গ হারানোর সময়টাও অন্যান্য মুহূর্তের মতোই জীবনের একটা অংশ মাত্র। সে সব কারণেই পিয়েরে এবং জ্যাকের কাছে ওই পঙ্গু মানুষগুলোর জগৎ কখনও দুঃখের বলে মনে হয়নি। তাদের কেউ কেউ খুব চাপা এবং গম্ভীর স্বভাবের ছিলেন। তবে অনেকেই ছিলেন কম বয়সী, হাসিখুশি এমনকি নিজের পঙ্গুত্ব নিয়ে হাসি ঠাট্টা করতেও দ্বিধা করতেন না। শ্বেতকায় সোনালি চুলওয়ালা গোলগাল মুখের এবং উজ্জ্বল স্বাস্থ্যের অধিকারী একজন ছিলেন। তাকে মাঝে মধ্যে লন্ড্রির আশেপাশে প্রায়ই ঘুর ঘুর করতে দেখেছে পিয়েরে এবং জ্যাক। তিনি তাদের বলতেন, আমার একটা পা আছে মাত্র। কিন্তু আমি তোমাদের পাছায় কষে লাথি মারতে পারি। ডান হাত চেয়ারের বেতের উপর রেখে বাম হাত দিয়ে খিলানের পাঁচিল ধরে বেয়ে উঠে তাদের দিকে সত্যিই পা ঝেড়ে লাথি দেওয়ার চেষ্টা করতেন তিনি। তার ভঙ্গি দেখে পিয়েরে এবং জ্যাক হাসতে হাসতে যত দ্রুত সম্ভব তার নাগালের বাইরে দৌড়ে পালাত। মনে হতো, শুধু তারাই দৌড়ে পালাতে পারে। তারাই শুধু হাত পাগুলো ঠিক ঠিক ব্যবহার করতে পারে। একবার ফুটবল খেলতে গিয়ে জ্যাকের পা মচকে গেল। কয়েকদিন খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাটতে হলো। তখন তার মনে হলো, বৃহস্পতিবারে দেখা মানুষগুলো সারা জীবনই দৌড়াতে, ট্রলিবাস ধরতে কিংবা ফুটবলে লাথি মারতে অক্ষম থেকে যাবেন। সে নিজেও ওই কয়েকদিন তাদের মতো অবস্থায় পড়ে গিয়েছিল। শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গের অলৌকিক কার্যকলাপের কথা তার মনের মধ্যে সদা জাগ্রত হয়ে রইল। অমূলক একটা ভয়ও মনের মধ্যে কাজ করতে লাগল। তার নিজেরও তো কখনও অঙ্গহানি ঘটতে পারে। পরে অবশ্য সে এসব ভুলে গেছে।

তারা প্রায়ই ঝাঁপবন্ধ খাবার ঘরের আশপাশে ঘুরে বেড়াত। বড় বড় টেবিল, গোটাটাই চকচকে দস্তায় মোড়ানো; রান্নাঘরে বড় বড় কড়াই এবং অন্যান্য বাসনপত্র। সেখান থেকে সব সময় রান্না করা মাংসের সুগন্ধ ছড়িয়ে পড়ত। শেষ প্রান্তে তারা দেখত শোবার ঘর। সেখানে দুতিনটা বিছানা ধূসর রঙের চাদরে ঢাকা। পাশে কাঠের তৈরি আলমারি। সেখানে বেড়ানো হয়ে গেলে তারা বাগানের দিকে যাওয়ার কয়েকটা বহির্মুখী সিঁড়ি বেয়ে বের হয়ে পড়ত।

যুদ্ধাহত সৈনিকদের আশ্রমের চারপাশ ঘিরে রেখেছিল প্রায় পুরোপুরি অবহেলিত একটা পার্ক। বাসিন্দাদের কয়েকজন সেখানকার বাগানের ফুলতলা আর কয়েকটা গোলাপ ঝাড়ের দেখভাল করার স্বেচ্ছা দায়িত্ব পালন করতেন। বাগানে শুকনো নলখাগড়া আর আগাছার ঝোপঝাড় ঘেরা কিছু অংশে কয়েক পদের শাকসবজির গাছও ছিল। তবে এক সময় খুব চমৎকার চেহারা থাকলেও এখন আর এর বাইরে পার্কের অন্য কোনো জৌলুস নেই; পুরোপুরি প্রকৃতি নির্ভর হয়ে পড়েছে। বড় বড় ইউক্যালিপটাস গাছ, তালগাছ, নারকেলগাছ, মাটির গভীরে শিকড় গাড়া মোটা কাণ্ড আর নিচু হয়ে পড়া ডালপালাসহ রাবার গাছ মিলে গোলকধাঁধার মতো পরিবেশ তৈরি করেছে। ঘন ছায়া আর গভীর গোপনীয়তা এখানে সেখানে। ঘনপাতাওয়ালা মোটা মোটা সাইপ্রেস গাছ, বড় বড় কমলাগাছ, খুব লম্বা গোলাপি আর সাদা লরেলগাছ মিলে এখানকার জনমানবহীন পায়েচলা পথটা ঢেকে দিয়েছে। এখানে সুরকির পথকে গিলে ফেলেছে কাদামাটির আস্তরণ। পথের প্রান্ত ছুঁয়ে আছে সুবাসি সিমরিঙ্গার, জুঁই, বেগুনি বনলতাফুল, প্যাশনফুল, মধুমতি ফুলের ঝোপঝাড়। তবে সেগুলোকে মাটির কাছে ছেয়ে ফেলেছে তিনপাতাওয়ালা ঘাস, ওক্সালিস এবং সব বুনো ঘাসের পুরু আস্তরণ। সুবাসভরা বনজঙ্গলের ভেতর হাঁটা, হামাগুড়ি দিয়ে চলা, ঘাসের সঙ্গে মুখ ছোঁয়ানো, ছুরি হাতে ঘাসের মধ্যে দিয়ে পথ করে চলা, গায়ে মুখে কাদামাটি আর পানি নিয়ে ফিরে আসা এসবই পরমানন্দের বিষয়।

তবে ভয়ঙ্কর বিষের উৎপাদনও তাদের বিকালের অভিযানের একটা বড় অংশ ছিল। পার্কের একটা দেয়ালের গা ঘেঁষা বেঞ্চের নিচে অ্যাসপিরিনের কৌটা, ওষুধের বয়ম, পুরনো কালির দোয়াত, গামলার ভাঙা টুকরো, ভাঙা কাপের টুকরো ইত্যাদি জড়ো করে তাদের গবেষণাগার তৈরি করেছিল পিয়েরে এবং জ্যাক। সবার চোখের আড়ালে, পার্কের সবচেয়ে ঘন ছায়াময় ওই জায়গাটাতে তারা রহস্যজনক উপচার তৈরি করত। তাদের প্রধান হাতিয়ার ছিল করবীগাছ। তারা লোকমুখে শুনেছিল করবী গাছের ছায়া খুব ভয়ঙ্কর; করবী গাছের ছায়ায় কোনো অর্বাচীন লোক ভুলবশত শুয়ে ঘুমিয়ে পড়লে তার ঘুম কখনও ভাঙবে না। সুতরাং তারা করবী গাছের পাতা এবং ফুলের মৌসুমে করবী ফুল তুলে জড়ো করত অশুভ মণ্ড তৈরি করার জন্য। মণ্ডের চেহারা দেখলেই যে কোনো মানুষের মৃত্যু হতে পারে। ওই মণ্ড তারা খোলা জায়গায় রেখে দিত যাতে রংধনুর মতো বিচিত্র রং ধারণ করে। ওই সময় তাদের একজন দৌড়ে বোতল ভরে পানি আনতে যেত। তখন সাইপ্রেস গাছের কাণ্ডের ত্রিভূজাকৃতির মুখগুলো বের হতো। তারা জানত সাইপ্রেস গাছ হলো কবরস্থানের গাছ; এর সঙ্গেও ভয়ের ব্যাপার স্যাপার জড়িয়ে আছে। তারা মাটিতে পড়ে থাকা ফল নিত না। গাছ থেকে ফল তুলে জড়ো করত। নিচে পড়ে থাকা ফলগুলো ভয়ঙ্কর রকমের সুস্বাদু চেহারা লাভ করত বলে সেগুলো তারা জড়ো করত না। তারপর দুটো মণ্ডের জলের সঙ্গে মিশিয়ে আরও পাতলা করা হতো। একটা ময়লা রুমালে ছাঁকা হতো সেটা। তরল পদার্থটার চেহারা হতো গাঢ় সবুজ। কোনো বিষাক্ত পদার্থ নিয়ে কাজ করার সময় মানুষ যেমন সতর্কতা অবলম্বন করে থাকে তেমনি তারাও তরল পদার্থটা নাড়াচাড়া করার সময় খুব সতর্কতা অবলম্বন করত। তাদের কাছে জড়ো করা ওষুধের পাত্রগুলোর ভেতর তরল পদার্থটা ঢেলে মুখ আটকে দিত। তখনও খুব সাবধানে কাজ করত যাতে হাতে ছোঁয়া না লাগে। বাকি আর কোনো উপাদান থাকলে সেগুলোও অন্য কোনো ভয়াবহ বিষ উৎপাদনের জন্য ব্যবহার করত। সবগুলো এভাবে তৈরি হয়ে গেলে সতর্কতার সঙ্গে পাথরের তৈরি বেঞ্চের নিচে রেখে দিত সপ্তাহ খানেক যাতে বিষাক্ত পদার্থটা যথেষ্ট মাত্রায় গাঁজিয়ে উঠতে পারে এবং ভয়ঙ্কর চেহারা ধারণ করতে পারে। এরকম ভয়ঙ্কর কাজ শেষ হলে জ্যাক এবং পিয়েরে বেঞ্চের নিচে জড়ো করে রাখা পাত্রগুলোর সবুজাভ চেহারার দিকে নিবিষ্ট চিত্তে তাকিয়ে থাকত। কখনও কখনও পাত্রগুলো থেকে কটু গন্ধ নিত আনন্দের সঙ্গে। তারা অবশ্য সত্যি সত্যি কারও উপর প্রয়োগ করার জন্য ওই তরল পদার্থ তৈরি করত না। বরং শুধু কল্পনা করে দেখত তাদের ক্ষমতা কত দূর। তারা হিসাব নিকাশ করে দেখেছে, গোটা শহর জনশূন্য করে দেওয়ার মতো বিষ তারা উৎপাদন করে ফেলেছে। তবে তাদের কল্পনায় কখনও আসেনি, কোনো অপছন্দের সহপাঠী কিংবা শিক্ষককে ওই বিষ প্রয়োগে হত্যা করা যেতে পারে। আসলে তাদের অতি অপছন্দের কেউ ছিলই না। বড় হয়ে যে পৃথিবীতে বাস করতে হবে সেখানে তাদের কোনো কাজে বাধা সৃষ্টি করতে পারে তেমন কেউ ছিল না।

চলবে…
আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

দ্য ফার্স্ট ম্যান:পর্ব-৪৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৪৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৪৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৪৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১

আরএ/

Header Ad
Header Ad

জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য দিলশাদ আফরিন বহিষ্কার

দিলশাদ আফরিন। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক কমিটির শৃঙ্খলা ও আদর্শ বিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে সংগঠনটির নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানা শাখার সদস্য দিলশাদ আফরিনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) এই বহিষ্কারাদেশ জারি করা হয়।

বিষয়টি বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) গণমাধ্যমের সামনে আসে।

জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন স্বাক্ষরিত ওই বহিষ্কারাদেশে বলা হয়, ‘এই পত্রের মাধ্যমে আপনাকে জানানো যাচ্ছে যে, জাতীয় নাগরিক কমিটি-এর নিয়ম ও নীতিমালা অনুযায়ী আপনার সাম্প্রতিক কর্মকান্ড আমাদের সংগঠনের শৃঙ্খলা এবং আদর্শের পরিপন্থী বলে প্রতীয়মান হয়েছে। সমস্ত অভিযোগের ভিত্তিতে এবং সংগঠনের শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ও সদস্য সচিব আখতার হোসেন এর অনুরোধক্রমে আপনাকে জাতীয় নাগরিক কমিটি থেকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।’

নারায়ণগঞ্জ জেলার দায়িত্বে থাকা জাতীয় নাগরিক কমিটির সাবেক যুগ্ম সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল আমিন দিলশাদ আফরিনকে বহিষ্কারের বিষয়ে বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ উঠেছিল। জাতীয় নাগরিক কমিটি অভিযোগ তদন্ত করে সত্যতা পাওয়ায় গত ৮ এপ্রিল তাকে দল থেকে বহিষ্কার করে।

আফরিন জাতীয় নাগরিক কমিটির শহীদ আহত কল্যাণ সেলের কোনো দায়িত্বে ছিলেন না। তারপরেও তিনি ব্যক্তিগতভাবে শহীদ ও আহত পরিবারের আর্থিক বিষয় নিয়ে কাজ করেছেন। যা নিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটি অবগত ছিল না বলেও জানান তিনি।

Header Ad
Header Ad

সরকারে এলে প্রথম ১৮ মাসে ১ কোটি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে বিএনপি

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করতে পারলে প্রথম ১৮ মাসে বিএনপি ১ কোটি কর্মসংস্থান বা চাকরির ব্যবস্থা করবে। ২০৩৪ সালে জিডিপির লক্ষ্যমাত্রা ১ ট্রিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করেছে বিএনপি। এ ছাড়া জনগণের ঘাড় থেকে বাড়তি করের লাগাম টেনে ধরা, মানুষের মন থেকে করের ভয় দূর করে কীভাবে কর আহরণ বাড়ানো যায়, তা নিয়েও দলটি কাজ করতে চায়।

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) আয়োজনে বিনিয়োগ সম্মেলন ২০২৫–এ অংশ নিয়ে বিএনপি এসব পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এসব তথ্য জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

‘১ ট্রিলিয়ন ডলার ইকোনমি’ শিরোনামে দেওয়া ওই পোস্টে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর লিখেছেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করতে পারলে প্রথম ১৮ মাসে ১ কোটি কর্মসংস্থান বা চাকরির ব্যবস্থা করবে। প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই)/মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) লক্ষ্যমাত্রার শূন্য দশমিক ৪৫ শতাংশ থেকে জিডিপির ২ দশমিক ৫ শতাংশে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছে বিএনপি। ২০৩৪ সালে জিডিপির লক্ষ্যমাত্রা ১ ট্রিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করেছে বিএনপি। জনগণের ঘাড় থেকে বাড়তি করের লাগাম টেনে ধরা, মানুষের মন থেকে করের ভয় দূর করে কীভাবে কর আহরণ বৃদ্ধি করা যায়, তা নিয়েও কাজ করতে চায় বিএনপি।

বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ বা এফডিআইকে জনপ্রিয় করতে বিএনপি ১১টি রেগুলেটরি পরিবর্তনের প্রস্তাব করেছে বলেও পোস্টে উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল। এর মধ্যে আটটি প্রস্তাবের কথা তুলে ধরেছেন তিনি। এগুলো হলো বিডাকে কার্যকর করা, ভিসা বা ওয়ার্ক পারমিট বিধির আধুনিকীকরণ, বিনিয়োগকারীদের জন্য ২৪x৭ (দিনে ২৪ ঘণ্টা ও সপ্তাহে ৭ দিন) সেবা চালু করা, স্বয়ংক্রিয় মুনাফা প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা, স্থানীয়ভাবে দক্ষ জনশক্তির ব্যবস্থা করা, বিনিয়োগকারীদের নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের সঙ্গে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, মানবসম্পদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির ব্যবস্থা নেওয়া এবং প্রকৃত প্রশিক্ষণ ও প্রণোদনার ব্যবস্থা করে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের পরিমাণ ও আওতা বৃদ্ধি।

সরকার গঠন করতে পারলে দেশের মানবসম্পদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির ব্যবস্থা নেওয়া, প্রকৃত প্রশিক্ষণ ও প্রণোদনার ব্যবস্থা করে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের পরিমাণ ও আওতা বৃদ্ধির জন্য বিএনপি অতীতের চেয়েও ব্যাপক সফলতা অর্জন করতে চায় বলে জানান মির্জা ফখরুল। পোস্টে তিনি জানান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিনিয়োগ সম্মেলন উপলক্ষে এক শুভেচ্ছাবার্তায় তিনটি বিষয় বলেছেন। এগুলো হলো ঐক্যই ভবিষ্যৎ জাতীয় উন্নয়নের সোপান, এফডিআই আকৃষ্ট করতে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সরকার আইন করেছিল এবং দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার সরকারগুলোর বিনিয়োগবান্ধব নীতি ছিল।

Header Ad
Header Ad

চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফের কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত

চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফের কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফ ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) বেলা ১১ টা থেকে ‍দুপুর ১২ টা ২০ মিনিট পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়ন (৬ বিজিবি) এর দায়িত্বপূর্ণ এলাকা মেহেরপুর জেলার ইছাখালি সীমান্ত এলাকার মেইন পিলার ১২৪ এর নিকট শূন্য রেখা বরাবর ভারতীয় পার্শ্বে বিএসএফ নব চন্দ্রপুর ক্যাম্পে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বিজিবি সূত্র জানায়, চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়ন (৬ বিজিবি) এবং প্রতিপক্ষ ৫৬ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের সাথে ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে বিজিবি’র পক্ষে চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়ন (৬ বিজিবি) এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. নাজমুল হাসান স্টাফ অফিসারসহ মোট ৯ সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব প্রদান করেন।

অপরদিকে বিএসএফ এর পক্ষে ৫৬ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের কমান্ড্যান্ট শ্রী বিনয় কুমার তাঁর স্টাফ অফিসারসহ ৮ সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন।

বৈঠকের শুরুতে উভয় পক্ষ ঈদ-উল-ফিতর পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর উভয় ব্যাটালিয়ন কমান্ডার সীমান্ত এলাকায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার লক্ষ্যে চোরাচালান প্রতিরোধ, অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধ, যৌথ টহল তৎপরতা জোরদারকরণ এবং গোয়েন্দা নজরদারির বিষয়সমূহে বিস্তারিত আলোচনা করেন। সীমান্তকে অধিক সুসংহত ও কার্যকরী করার লক্ষ্যে বিজিবি-বিএসএফ যৌথভাবে কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়ে ব্যাটালিয়ন কমান্ডারগণ একমত পোষণ করেন। এছাড়াও, সীমান্তে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে পারস্পরিক সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা ও সীমান্ত সংক্রান্ত যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার তাৎক্ষণিক তথ্য আদান-প্রদানের বিষয়ে উভয় ব্যাটালিয়ন কমান্ডারগণ সম্মত হন।

বৈঠক শেষে উভয় ব্যাটালিয়ন কমান্ডার মেইন পিলার ১২৪ সহ তৎসংলগ্ন সীমান্ত পিলারসমূহ যৌথভাবে পায়ে হেঁটে পরিদর্শন করেন।
দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে বিদ্যমান সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে আন্তরিক ও সদ্ভাবপূর্ণ পরিবেশে বৈঠক শেষ হয়।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য দিলশাদ আফরিন বহিষ্কার
সরকারে এলে প্রথম ১৮ মাসে ১ কোটি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে বিএনপি
চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফের কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত
আবারও চেন্নাইয়ের অধিনায়ক হলেন ধোনি
‘ক্রিম আপা’ খ্যাত কন্টেন্ট ক্রিয়েটর শারমিন শিলা গ্রেফতার
দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দামে সোনা, ভরি ১ লাখ ৫৯ হাজার টাকা
ভিন্ন ধর্মের ছেলের সঙ্গে প্রেম, বাবার হাতে প্রাণ গেল মেয়ের
পোল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত হলেন সাবেক আইজিপি ময়নুল
জেনে নিন গ্রীষ্মে সুস্বাদু আর উপকারী কাঁচা আমের ১১টি বিস্ময়কর গুণ
এসএসসি পরীক্ষা না দিয়ে প্রেমিকের বাড়িতে অনশনে কিশোরী
সাধারণ মানুষ চায় এই সরকার আরো ৫ বছর থাকুক: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে টাঙ্গাইলে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মানববন্ধন (ভিডিও)
জিয়াউর রহমান বেঁচে থাকলে ইসরায়েল এমন অপকর্মের সাহস পেত না: মির্জা আব্বাস (ভিডিও)
নওগাঁয় গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ২
বাংলাদেশ রেলওয়ের দুই কর্মকর্তাকে পদায়ন ও বদলি
২০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশে হাসপাতাল বানাচ্ছে মার্কিন কোম্পানি
কাদের-কামালসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারি করতে চিঠি
সিলেটে থানায় লালগালিচা দেখে ক্ষোভ ঝাড়লেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
দিল্লিতে লিঙ্গ পরিবর্তনের চিকিৎসা নিতে এসে গ্রেপ্তার ৫ বাংলাদেশি
রবিবার ৩ জেলায় সাধারণ ছুটি, সবমিলিয়ে টানা ৪ দিনের অবকাশ