শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২১

বিকেল বেলাটা ব্যালকনিতে বসে কফি খেয়ে কিছুটা আলসেমি করে সময় কাটালাম। অবশ্য বেশিক্ষণ অলস কাটাবার উপায় ছিল না। সন্ধ্যায় সৈয়দ আজিজ এবং মান্নি ভাবির বাসায় দাওয়াতে যেতে হবে। কায়রো আসার পর প্রথম দিনেই পরিচয় ঘটেছে মরুর দেশে এই চমৎকার এক টুকরো বাংলাদেশের সঙ্গে। 

সৌরভ বাসায় ফেরার কিছু পরেই আমরা বেরিয়ে পড়লাম। পথে ফুলের দোকানের পাশে গাড়ি থামিয়ে সৌরভ একগুচ্ছ ফুল কিনে আনলে জিজ্ঞেস করলাম, ‘কোনো উপলক্ষ আছে কিনা? সেক্ষেত্রে আমরাও কিছু একটা নিতে পারতাম।’ সৌরভ জানালো কোনো উপলক্ষ নেই, এমনিতে মাঝে মধ্যে ওরা একত্রিত হয়। ধারণা করলাম, আন্তর্জাতিক সংস্থায় কাজ করা কায়রো নিবাসী বাংলাদেশি এবং সঙ্গে বিদেশি ঘনিষ্ঠজনদের এই ঘরোয়া আয়োজন নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার। এবারে রানাভাইসহ আমাদের সংক্ষিপ্ত মিশর সফর উপলক্ষে আজকের আয়োজন।  

            মোকাত্তম থেকে রাতের কায়রো

সৈয়দ আজিজ কাজ করেন আন্তর্জাতিক রেডক্রসে, বসবাস আপাতত কায়রোতে। বিস্তৃত মরুভূমির দেশে দিনযাপন করেন ব্যস্ততার মধ্যে, কিন্তু সম্ভবত মন পড়ে থাকে সবুজ শ্যামল বাংলাদেশে। বিশ্ববিদ্যালয় জীবন এবং তারুণ্যের উদ্দাম দিনগুলোতে মেতেছিলেন কবিতায়, যুক্ত ছিলেন আবৃত্তি চর্চায়। কণ্ঠশীলনের মতো সংগঠন আর অধ্যাপক নরেন বিশ্বাসের মতো শিক্ষক যে ভিত্তিভূমিতে তাঁকে দাঁড় করিয়ে দিয়েছিলেন তা তিনি শুধু আঁকড়ে ধরে আছেন বললে ভুল বলা হবে। সৈয়দ আজিজ নিজে চর্চা অব্যাহত রেখেছেন, যুক্ত আছেন দেশের কবি ও আবৃত্তি শিল্পীদের সঙ্গে। ‘শব্দরূপ’ ঐতিহ্যের অঙ্গীকার নামে একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে নিয়মিত কবিতা পাঠের অনুষ্ঠান প্রচার করছেন। কায়রোতে বসে দেশের ও পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা কবি ও আবৃত্তিকারদের তিনি যুক্ত করে চলেছেন এই অনুষ্ঠানে। 

           সৈয়দ আজিজ ও মান্নি ভাবির সঙ্গে

বৈমানিক রাজি তাঁর বিদেশিনী স্ত্রী ভ্যালেরি এবং দুই পুত্র কন্যাসহ আমাদের আগেই পৌঁছে গেছেন। তাঁরা ছাড়াও অল্প সময়ের ব্যবধানে আরও কয়েকজন বিদেশি অতিথি এলেন। শাখা প্রশাখা বিস্তার করে আড্ডার গল্প গুজব ছড়িয়ে পড়ল কোভিড পরবর্তী পৃথিবীর বিভিন্ন সংকট, বৈশ্বিক অর্থনীতি ও বাণিজ্য থেকে শুরু করে দেশি-বিদেশি শিল্প-সাহিত্য ও চলচ্চিত্রের নানা প্রসঙ্গে। স্বাভাবিকভাইে আমরা বাংলাদেশ ও বাংলা ভাষার সাম্প্রতিক অবস্থা নিয়ে আলোচনায় ঢুকে পড়ি। সৈয়দ আজিজ আশঙ্কা প্রকাশ করেন, দেশের কিছু সংখ্যক বেতার ও টেলিভিশন চ্যানেল যেভাবে ইংরেজি মেশানো বিকৃত বাংলায় অনুষ্ঠান সম্প্রচার শুরু করেছে, তাতে ভবিষ্যতে প্রমিত বাংলা খুঁজে পাওয়াই কঠিন হবে। আজীবন বিশুদ্ধ বাংলায় নিবেদিত এই আবৃত্তি শিল্পী বাংলাদেশের কয়েকজন লেখক ও চলচ্চিত্র নির্মাতার বিরুদ্ধেও ভাষা বিকৃতির অভিযোগ তুলে ধরেন। সস্তা জনপ্রিয়তার লোভ সংবরণ করতে না পারা লেখক বুদ্ধিজীবী চলচ্চিত্র নির্মাতারা অবলীলায় বিকৃতি ঘটিয়ে বাংলা ভাষার সর্বনাশ করে চলেছেন অথচ তাদের প্রচার প্রপাগান্ডার সুফলভোগী হিসাবে আমরা কেউই তার প্রতিবাদ করছি না। 

           মোকাত্তম পাহাড়ে রেস্তোরাঁর সারি

মান্নি ভাবি যখন তাঁর নিজের হাতে রান্না করা খাবার এনে টেবিল জুড়ে সাজিয়ে রাখছেন সে সময় সৈয়দ আজিজ আমাকে নিয়ে এলেন তাঁর স্টুডিওতে। তাঁর বাসায় একটি ঘরকে পুরোপুরি টেলিভিশন স্টুডিওতে রূপান্তরিত করে ফেলেছেন। এটি একটি ছোট অথচ পূর্ণাঙ্গ প্রফেশনাল অডিও-ভিজ্যুয়াল স্টুডিও। সেট-লাইট-ক্যামেরা-মাইক্রোফান ছাড়াও চমৎকৃত হবার মতো যা দেখেছি তা হলো অডিও ইক্যুয়ালাইজার, ভিডিও সম্পাদনার ব্যবস্থা, এমন কি ক্রোমাকি বা কালার সেপারেশন ওভার-লের সবুজ পর্দা। আমি নিজে দীর্ঘদিন এই মাধ্যমে কাজ করেছি বলে সহজেই বুঝতে পারি এবং বিস্মিত হই কতটা পেশাদারিত্ব এবং কতটা আন্তরিকতার সঙ্গে গড়ে তোলা হয়েছে এই স্টুডিও। 
অধ্যাপক নরেন বিশ্বাসের প্রয়াণ দিবসে ২৭শে নভেম্বর শব্দরূপের পরিবেশনায় প্রচারিত হবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাব্য নাটক ‘বিসর্জন’। তিন দশক আগে ধারণকৃত এই শ্রুতি নাটকের উপদেশক ছিলেন অধ্যাপক আনিসুজ্জামান এবং সার্বিক তত্ত্বাবধান করেছেন আশরাফুল আলম। নাটকটি নির্দেশনা দিয়েছেন স্বয়ং অধ্যাপক নরেন বিশ্বাস। সে সময়ের প্রথিতযথা আবৃত্তিকার এবং অভিনেতাদের অনেকেই হয়তো অনন্তলোকে যাত্রা করেছেন, কিন্তু শ্রুতি নাটকের মধ্য দিয়ে সৈয়দ আজিজ ফিরিয়ে নিয়ে এসেছেন অতীতের সোনালী দিনের একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। শব্দরূপ শুধু কথায় নয় কাজেও ঐতিহ্যের অঙ্গীকার রেখে চলেছে। আমি সৈয়দ আজিজকে বললাম, ‘দেশে ফিরেই আশরাফুল আলম ভাইয়ের সঙ্গে দেখা হলে আপনার উদ্যোগের কথা বলবো।’

                আড্ডা

খাওয়া-দাওয়ার বিপুল আয়োজন শেষ করে সৈয়দ আজিজ মান্নি ভাবির কাছে থেকে বিদায় নিয়ে গাড়িতে উঠার পরে সৌরভ বলল, ‘রাত খুব বেশি হয়নি। মোকাত্তম থেকে ঘুরে আসা যায়।’ কোথায় মোকাত্তম আর কীই বা তার বৈশিষ্ট্য কিছুই জানা নেই। কাজেই সৌরভের পরিকল্পনার কাছে নিজেদের ছেড়ে দিয়ে  আমরা গাড়িতে বসে থাকি। কায়রোর আলোকোজ্জ্বল শহর ছেড়ে এগুতে থাকি আরও দক্ষিণ দিকে। ক্রমেই আলো জ্বলা ঝলমলে শহর নিষ্প্রভ হতে থাকে। শহরের যানবাহন চলাচলের ব্যস্ততা কমে আসে। আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথ ধরে মনে হয়ে আমরা ক্রমেই উপরের দিকে উঠে যাচ্ছি। মিনিট পনের কুড়ি পরে অনেকটা উপরে উঠে গাড়ি পার্ক করে সৌরভ।

                মোকাত্তম পাহাড়ে

এখানেও গাড়ি রাখার জায়গা খুঁজে বের করতে সময় লাগে। নদী তীরের একটি দীর্ঘ বাঁধের মতো উঁচু ছোট ছোট ব্লকে ঘিরে রাখা জায়গায় এসে ঢুকলাম আমরা। এখানে কোথাও কয়েক সারি চেয়ার টেবিল পাতা, কোথাও টেবিল ঘিরে বৃত্তাকারে সাজানো আসনে বসে চলছে তুমুল আড্ডা আবার কোথাও বসার ব্যবস্থা এক একটি বৃত্তাকার সোফার মতো কাপড়ে ঢাকা গদিতে। প্রত্যেকটি বর্গক্ষেত্র বা আয়তক্ষেত্রই এক একটি অস্থায়ী রেস্তোরাঁ। রেস্তোরাঁর সীমানা ঘিরে আলো জ্বলছে, কোথাও ফ্লুরোসেন্ট বাগান বাতি আবার কোথাও রঙিন আলো। তবে প্রায় সব ক্ষেত্রেই ফুটলাইট হিসেবে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে লম্বা নিয়ন বাতি অথবা টিউব লাইট। বাতিগুলো কী সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্যে, নাকি অন্ধকারে অতিথিদের পথ দেখাতে অথবা কেবলই রেস্টুরেন্টের সীমানা নির্ধারণের জন্যে জ্বালানো হয়েছে বুঝতে পারলাম না। কিছু এলাকায় মনে হলো ইচ্ছে করেই খানিকটা আলো আঁধারি ছড়িয়ে রাখা হয়েছে। আমরা বাঁধের কিনারায় তেমনি এক আলো আঁধারিতে ঘেরা জায়গায় এসে বসলাম। বালির চত্বরের উপরে কাপড়ে ঢাকা গোলাকার আসনগুলো দৃষ্টিনন্দন হলেও বসে আরাম নেই। তবে যেখানে বসেছি সেখান থেকে নিচে তাকিয়ে দেখলাম যেমনটা কখনো ভাবিনি তেমনি এক কায়রোকে। দূরে— যতো দূরে দৃষ্টি যায় অলোর মালায় সাজানো কায়রো ঝলমল করছে। আলো অন্ধকারে ঘেরা প্রায় অন্ধকারাচ্ছন্ন শহরটা যে এতোটা আলোর ঝিলিক ছড়াতে পারে তা এই মোকাত্তম পাহাড়ের উচ্চতায় এসে না দাঁড়ালে কখনোই জানা হতো না। 

       রাতের কায়রো টাওয়ার

কায়রো শহরের দক্ষিণে এক সারি পাহাড়ের নাম আল মোকাত্তম। আরবি মোকত্তম বাংলায় রূপান্তর করলে অর্থ দাঁড়ায় ভেঙে ফেলা বা বিচ্ছিন্ন করা। এখানে উঁচু নিচু পাহাড়ের দীর্ঘ বিন্যাস কোনো এক কালে ভেঙে তিনটি টুকরোয় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল, তাই বর্তমান তিন পাহাড়ের নাম হয়ে গেছে মোকাত্তম। আমাদের যেমন ‘দুই পাহাড়ের মাঝে মওলায় মসজিদ বানাইছে’, তেমনি এই তিন পাহাড় নিয়েও গল্প গাথার অভাব নেই। কথিত আছে খ্রিস্টিয় দশম শতকে আলেক্সান্দ্রিয়ার কপটিক পোপ আব্রাহাম তাঁর গুরু সেইন্ট সাইমন ট্যানরের পরামর্শ অনুসারে পাহাড় সংলগ্ন ভূমিতে একটি গণ প্রার্থনার আয়োজন করেন। মিশরের তৎকালীন মুসলিম খলিফার কাছে তিনি প্রমাণ করে দেন, যার মনে শরিষা দানার মতো বিশ্বাস আছে তিনি ইচ্ছা করলে একটি পাহাড়কেও সরিয়ে দিতে পারেন। কপটিট চার্চে এই বিশ্বাস প্রবল হলেও প্রকৃত পক্ষে হাজার বছর ধরে বিভিন্ন যুগে পিরামিড থেকে শুরু করে নানা ধর্মমতের মন্দির মসজিদ ও অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণের চুনাপাথর আহরণের ফলে পাহাড়ের তলদেশে শূন্যতার সৃষ্টি হয়ে হয়তো তিনভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে এই পাহাড় শ্রেণি। মোকাত্তম পাহাড়ের পক্ষে বিপক্ষে বিশ্বাস কিংবা যুক্তি যাই থাকুক, বর্তমানের বাস্তবতা হলো কায়রোর সবচেয়ে গরিব কুড়ি হাজার মানুষের বসবাস ‘গার্বেজ সিটি’ নামে পরিচিত এই মোকাত্তম এলাকায়। 

               মান্নি ভাবির সঙ্গে

সৈয়দ আজিজ মান্নি ভাবির বাসায় রীতিমতো নৈশ্যভোজ শেষ করেই আবার কোনো রেস্টুরেন্টে ঢুকে পড়ার কথা নয়। তবে আমরা তো এখানে খাবার খেতে আসিনি, উপরের পাহাড় থেকে রাত্রিকালীন কায়রোর সৌন্দর্য দেখতে এসেছি। তারপরেও নেহায়েত কিছু অর্ডার না দিলে কেমন হয় বলেই সৌরভ চায়ের কথা বলে এলো। দূরের আলোকিত কায়রোর দিকে তাকিয়ে বোঝার উপায় নেই ঠিক এই পাহাড়ের ভাঁজে অথবা পায়ের কাছে, চড়াই উৎরাইয়ের ফাঁকে দারিদ্রসীমার নিচে বসবাস করে অসংখ্য মানুষ। আবর্জনাই যাদের অধিকাংশের আয়ের একমাত্র উৎস! সারা শহরের বর্জ্য এবং বাতিল জিনিসপত্র থেকে বিক্রয়যোগ্য কিছু খুঁজে বের করাই এদের নিত্যদিনের কাজ। কয়েক মিনিটের ভেতরে আমাদের মাথার উপর দিয়ে আকাশে এক এক করে গোটা তিনের বিমান উড়ে যায়। জনা তিনেক ফেরিওয়ালা তাদের সাম্ভাব্য ক্রেতার সন্ধানে আমাদের সামনে দিয়ে ঘুরে যায়। কায়রো শহরে একটা অদ্ভুত ব্যাপার দেখেছি, ট্রেনে বাসে তো বটেই, কোনো রেস্টুরেন্টে হকারর ফেরিওয়ালা, এমন কি সাহায্যপ্রার্থীরা অবাধে প্রবেশ করতে পারেন, কেউ তাদের বাধা দেন না।

কিছুক্ষণের মধ্যে চা এসে গেলে আমরা হাতে হাতে চায়ের কাপ নিয়ে দূরে তাকিয়ে থাকি। কায়রোর স্বাভাবিক তাপমাত্রার চেয়ে মোকাত্তম পাহাড়ের উচ্চতায় মনে হয় উষ্ণতা কম, মাঝে মাঝে কোথাও থেকে একটু বাতাস বয়ে যায়। সে বাতাস মরুভূমির লু হাওয়া নয়, বসন্তের ঝিরঝিরে হাওয়া। কাজেই চায়ের কাপ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও বেশ কিছু সময় বসে থাকি। এভাবে হয়তো আরও অনেকক্ষণ বসে কাটিয়ে দেওয়া যেতো, কিন্তু পরদিন ভোরে আমাদের আল ফাইয়ুম যাবার কথা। সেই কারণে ইচ্ছে না থাকলেও তাড়াতাড়ি উঠে পড়তে হলো। বাঁধ থেকে বেরিয়ে রাস্তায় উঠে দেখলাম রেস্তোরাঁ এলাকার বাইরেও পাহাড়ের গায়ে বহুতল ভবনের সারি। পাহাড় থেকে নিচে নেমে ফেরার পথে অন্ধকার আবর্জনার স্তূপের ফাঁকে ফাঁকে রাস্তার পাশে চোখে পড়ে হতদরিদ্র মানুষের ভাঙাচোরা বসত বাড়ি। একেই বোধহয় বলে প্রদীপের নিচ অন্ধকার! 

চলবে... 

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১

আরএ/

Header Ad

খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ

ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে কুশল বিনিময় করেছেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে তাদের এ কুশল বিনিময় হয়।

সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়া পৌঁছালে উপস্থিত সবাই তাকে স্বাগত জানান। অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৩ সমন্বয়ক ও সরকারের উপদেষ্টা তার পাশে এসে দাঁড়ান এবং শারীরিক খোঁজখবর নেন। এ সময় খালেদা জিয়া তাদের অভিনন্দন জানান এবং দেশকে এগিয়ে নিতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার পরামর্শ দেন।

এ সময় এই ৩ উপদেষ্টা বিএনপি চেয়ারপারসনের কাছে দোয়া চান এবং সরকারের সংস্কার কাজে তার সর্বাত্মক সহযোগিতা চান।

এদিকে সেনাকুঞ্জে গেলে খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়া এখানে এসেছেন। একযুগ তিনি আসার সুযোগ পাননি। আমরা গর্বিত এই সুযোগ দিতে পেরে। দীর্ঘদিনের অসুস্থতা সত্ত্বেও বিশেষ দিনে সবার সঙ্গে শরিক হওয়ার জন্য আপনাকে আবারও ধন্যবাদ। আপনার আশু রোগমুক্তি কামনা করছি।

Header Ad

দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম

ছবি: সংগৃহীত

আবারও স্বর্ণের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। এবার ভরিতে ১ হাজার ৯৯৪ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা আজকেও ছিল এক লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) থেকেই নতুন এ দাম কার্যকর হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বেড়েছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি ভরি ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩৩ হাজার ৯৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ৮৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯৩ হাজার ৬৭৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস আরও জানায়, স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গয়নার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।

স্বর্ণের দাম কমানো হলেও দেশের বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। দেশে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫৭৮ টাকায়। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ৪৪৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ১১১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫৮৬ টাকায়।

এর আগে, সবশেষ গত ১৯ নভেম্বর দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম সমন্বয় করেছিল বাজুস। সে সময় টানা চার দফা কমার পর ভরিতে ২ হাজার ৯৪০ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা নির্ধারণ করেছিল সংগঠনটি।

এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩১ হাজার ১৯৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১২ হাজার ৪৫৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯২ হাজার ২৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা কার্যকর হয়েছে গত ২০ নভেম্বর থেকে।

এ নিয়ে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত দেশের বাজারে ৫১ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছে। যেখানে ৩০ বার দাম বাড়ানো হয়েছে, আর কমানো হয়েছে ২১ বার।

Header Ad

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

ছবি: সংগৃহীত

দেশের জনপ্রিয় নির্মাতা আশফাক নিপুন। কাজের পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমেও বেশ সরব তিনি। কথা বলেন নানা ইস্যু নিয়ে। সেই ধারাবাহিকতায় সরকার পতনের পর অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনেও বিভিন্ন সময় নিজের আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যেও বিভিন্ন বার্তা দিয়েছেন। এবার এমনি একটি বার্তায় দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনগনের আস্থার বিষয়ে আক্ষেপ জানালেন এই নির্মাতা।

বুধবার (২০ নভেম্বর) আশফাক নিপুন তার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সর্বস্তরের ছাত্র এবং সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল, বাসায় বসে বসে দোয়া করেছিল, যার যা সামর্থ্য দিয়ে সহায়তা করেছিল। কারণ, তারা দেখেছিল লড়াইটা আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসক বনাম সাধারণ ছাত্র-জনতার। এটাও অস্বীকার করার কোনো উপায় নাই যে এই আন্দোলন বেগবান করতে বিরোধী সকল দলের কর্মীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাদের সংগ্রামও গত দেড় দশকের। কিন্তু এটা যদি শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার লড়াই হতো তাহলে সাধারণ মানুষ এই লড়াই থেকে দূরে থাকত। সেই প্রমাণ বিগত ১৫ বছরে আছে।

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ এখনো দেশের কোনো রাজনৈতিক দলকেই পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারে না। এটাই বাস্তবতা। এই বাস্তবতা মেনে সকল রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত কীভাবে সাধারণ জনগণের ভেতর নিজের দলের প্রতি আস্থা তৈরি করা যায় সেই বিষয়ে নিরলস কাজ করা। এই আস্থা ক্ষমতায় গিয়ে অর্জন করা সম্ভব না। কারণ, সাধারণ মানুষ আজীবন এস্টাবলিশমেন্টের বিপক্ষে। এই আস্থা অর্জন করতে হয় ক্ষমতা বলয়ের বাইরে থেকেই।

নিপুন আরও লিখেন, অরাজনৈতিক সরকার দিয়ে দীর্ঘদিন দেশ চালানো যেমন কাজের কথা না ঠিক তেমনি রাজনৈতিক সরকার হতে চাওয়া সকল রাজনৈতিক দলগুলোর বোঝা উচিত মুক্তিযুদ্ধের পরে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে সকল প্রকার পূর্বানুমান (যেমন- বর্ষাকালে আন্দোলন হয় না, নির্বাচনের আগেই কেবল জোরেশোরে আন্দোলন হয়, ঘোষণা দিয়ে বিরোধী সকল পক্ষ আন্দোলনে শামিল না হলে সফল হয় না) অগ্রাহ্য করেই। সেটা সম্ভব হয়েছে সাধারণ মানুষের ন্যায্যতার আকাঙ্ক্ষা থেকেই।

সবশেষ এই নির্মাতা লিখেছেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষার দুই পয়সার দাম দেন নাই। সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষা, ইচ্ছা আর দেশপ্রেমকে পুঁজি করে অরাজনৈতিক এবং রাজনৈতিক যারাই রাজনীতি রাজনীতি খেলতে চাইবে, তাদের দশাও কোন একসময় যেন পলাতক শেখ হাসিনার মতো না হয়, সেই বিষয় নিশ্চিত করতে হবে তাদেরকেই।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ
দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম
‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’
‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী
ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত