শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৫

টুইয়া জাহাজে আমাদের শেষ রাত বলেই কিনা জানি না, ডাইনিং হলে প্রবেশের সময় চণ্ডীদাসের খুড়ো একগাল হেসে দুই হাত বাড়িয়ে দিয়ে সাদর সম্ভাষণ জানালো। ভেতরে চক্কর দিয়ে দেখলাম প্রতিদিনের মতোই বুফে ডিনার সাজানো, খুব আড়ম্বর পূর্ণ কিছু মনে হলো না। খাবারের প্লেট হাতে ফিরে এসে টেবিলে বসার আগে খুড়োকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘আজ তোমাদের ফেয়ারওয়েল ডিনারের কোনো বিশেষ ব্যবস্থা আছে বলে তো মনে হচ্ছে না।’ চণ্ডীদাসের খুড়োর উত্তর প্রস্তুত ছিল। বললো, ‘দেয়ার ইজ গ্রান্ড গালাবাই পার্টি অপস্টেয়ার, প্লিজ জয়েন আফটার দ্য ডিনার।’  এরপরই রানাভাইকে না দেখে জিজ্ঞেস করলো, ‘হোয়ার ইজ ইওর সিনিয়ার ফ্রেন্ড?’ বললাম, তিনি শিগগিরই আমাদের সাথে যোগ দেবেন। আসলে রানাভাই প্রতিদিনই প্রায় প্রতিদিনই শেষ সময়ে আসায় রেস্টুরেন্টের প্রত্যেকে ধরেই নিয়েছিল রানাভাই আসবেন সবার শেষে। কিন্তু চণ্ডীদাসের খুড়োকে অবাক করে দিয়ে রানাভাই কিছুক্ষণের মধ্যে ডিনার টেবিলে আমাদের সাথে এসে বসলেন। ফাইয়াজ নামের যে ছেলেটা আমাদের টেবিলের খোঁজ খবর রাখতো, রানাভাইয়ের সাথে তার বেশ কথাবার্তাও বেশ জমে উঠেছিল। সে একটু রসিকতা করে বললো, ‘টু নাইট ইউ আর টু আর্লি স্যার!’   

টুইয়ার বেলিড্যান্স

ডিনার শেষে আমরা যখন সিঁড়ি বেয়ে উপরের দিকে উঠে যাচ্ছি তখন দোতলার হলঘরে সমবেত যন্ত্রসঙ্গীত বেজে উঠেছে। আগেই খোঁজখবর নিয়ে জেনেছি মিউজিক্যাল পারফর্মেন্স ছাড়াও রয়েছে সুফি ড্যান্স এবং বেলিড্যান্স! এমনিতেই বিস্তর ঘোরাঘুরির ফলে ক্লান্ত ছিলাম, তাছাড়া সস্ত্রীক বসে উদর নৃত্য দেখার মতো উদার চিত্ত না হতে পারার কারণে সোজা উপরে উঠে গেলাম। রানাভাইকে বললাম, পরে একবার এসে ঘুরে যাবো। ঘরে ফিরে বিছানায় পড়ে প্রায় ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। আধাঘণ্টা পরে ভাবলাম গ্রান্ড গালাবাই পার্টিটা কেমন হচ্ছে একবার দেখে আসা যায়। আমি যখন নিচের নাচঘরে পৌছলাম তখন এক বিপুলা তার উদরে ঢেউ তুলে বেলিড্যান্স পরিবেশন করছেন। রীতিমতো উপর পূর্তির পরে উদর নৃত্য দর্শন মন্দ নয়, কিন্তু এ পর্যন্ত টেলিভিশনে বা চলচ্চিত্রে দেখা নৃত্য পটিয়সীদের দেখে যা ধারণা হয়েছিল তার সাথে এর আকার আকৃতির তেমন মিল নেই। এমন স্থূলকায়া রমনীর উদর নৃত্য খুব একটা রমনীয় বলে মনে হলো না। রানাভাই বললেন, ‘আহা আপনি তো সুফি ডান্সের চক্করটা মিস করলেন।’  বললাম, ‘সুফি নাচের ঘুর্ণি না হয় তুর্কিস্থানে খোদ ম্যাওলানা জালালউদ্দিন রুমির মাজার প্রাঙ্গণেই দেখা যাবে। আপাতত বেলিডান্সই দেখা যাক।’ আমাদের দেশে যা মাওলানা, পশ্চিমের দিকে বিশেষ করে তুরস্কে তা লেখা হয় গবাষধহধ। ‘ভি’ এর উচ্চারন ‘ওয়া’র মতো হওয়ায় গবাষধহধ-র উচ্চারণ আসলে মেওলানা বা ম্যাওলানা। যাই হোক বেইলি ডান্সের সাথে মাওলানাদের সুফি নাচ এক কাতারে এনে ফেললে অনেকেই উষ্মা প্রকাশ করতে পারেন। ফলে উদর নৃত্য অসমাপ্ত রেখেই আমি আবার ঘরে ফিরে গেলাম। 

ভ্যালি অফ কিংস

আমাদের সকালের গন্তব্য ‘ভ্যালি অফ কিংস এ্যান্ড কুইন্স’, তবে যাবার অগেই জাহাজের ঘর খালি করে দিয়ে যেতে হবে। রাতেই বাক্স পেটরা গুছিয়ে রেখেছিলাম। শেষবারের মতো টুইয়ার ব্রেকফাস্ট শেষ করে লাগেজ জমা দিয়ে টোকেন নিয়ে নিলাম। পুরো লবি জুড়ে ট্যাগ লাগানো স্যুটকেস, ব্যাগ, ব্যাকপ্যাক, বিভিন্ন ভাগে স্তূপ করে রাখা। বেলা দশটার পর থেকে নতুন যাত্রীর দল জাহাজে এসে উঠতে থাকবে। সন্ধ্যায় নোঙর তুলে জাহাজ আবার যাত্রা শুরু করবে আসোয়ানের পথে। অতএব আমাদের ফিরে আসতে হবে জাহাজ ভেসে যাবার আগেই আর তা না হলে আমরা লুক্সরে থেকে গেলেও আমাদের গাট্টি বোচকা আসোয়ান চলে যাবে। 

সমাধিতে প্রবেশ পথ

নয়টায় বেরোবার কথা থাকলেও মিনিট দশেক পরে আমাদের পুরোনো সহযাত্রীদের নিয়ে যাত্রা শুরু হলো এবং একই সাথে শুরু হলো মোস্তফার আরবি ধারা বিবরণী। নীল নদের পশ্চিম তীরে লুক্সর থেকে প্রায় ত্রিশ কিলোমিটার দূরে ‘ভ্যালি অফ কিংস এ্যান্ড কুইন্স’এর যাত্রা পথের প্রায় পুরোটাই জুড়েই সবুজ ফসলের ক্ষেত। গম ভুট্টা এবং আখক্ষেতের মাঝে মাঝে খেজুর গাছ ছাড়াও সবুজের সমারোহ দেখে মনেই হয় না আমরা প্রকৃতপক্ষে একটি মরুময় দেশের ভেতর দিয়ে যাচ্ছি। মিশরের স্থলভাগের পঁচানব্বই শতাংশই মরুভূমি। নীলের তীর থেকে দূরে সরে যেতে যেতেই সবুজ উধাও হয়ে যায়। তার পরিবর্তে দেখা দেয় উঁচু নিচু ঊসর পাহাড়। এ সব পাহাড়ের গায়ে গাছপালা তো দূরে থাক, সবুজের ছিঁটেফোটাও নেই। ধীরে ধীরে পাথুরে পাহাড়ের সারি বাড়তে থাকে। কোথাও স্তরে স্তরে সাজানো শিলার এবড়ো থেবড়ো ছোট ছোট পাহাড়ের পায়ের কাছে গড়াগড়ি খাচ্ছে ছোট বড় পাথরের চাঁই থেকে শুরু করে অসংখ্য নুড়ি পাথর।  

সমাধি মন্দিরে নামার সিঁড়ি

মাইক্রোবাস থেকে নেমে আসার পরে এবারেই প্রথম একটি নিষেধাজ্ঞা চোখে পড়লো, আর তা হলো ভ্যালি অফ কিংস-এর ভেতরে ছবি তোলা বা ভিডিও চিত্র ধারণ করা নিষেধ! তবে মোবাইল ফোন ব্যবহার করে ছবি তোলা যেতে পারে। আজকাল যে মোবাইল ফোনে প্রফেশনাল স্টিল এবং ভিডিও ধারণ করা যায়, তা সম্ভবত মিশরের প্রত্মতত্ত্ব বিভাগ এখনো জানে না। মোস্তফা প্রবেশপত্র নিয়ে এলে আমরা ক্যামেরা ব্যাগে ঢুকিয়ে নিরাপত্তা তোরণ পার হয়ে ভেতরে প্রবেশ করে দেখলাম পর্যটক বোঝাই দুই ট্রেইলার বিশিষ্ট হলুদ রঙের একটি বাহন ছেড়ে যাচ্ছে। অন্য দিকে দূরে থেকে একই রকমের আরেকটি বাহন ফিরে আসছে। একটু অপেক্ষা করতেই হলুদ গাড়ি একদল দর্শনার্থী নারী পুরুষ নামিয়ে দিলে আমরা বাহনে উঠে পড়লাম।      

দেয়ালে রিলিফের কাজ

রাজা রাণীর উপত্যকা নাম থেকেই ধারণা করা যায় এলাকাটি সুনির্দিষ্টভাবে ফারাও সম্রাট সম্রাজ্ঞীদের বসবাসের জন্যে নির্ধারিত।  তবে এই বসবাস মহামান্যদের জীবদ্দশায় শান শওকতের সাথে কালাতিপাত করার জন্যে নয়। রাজা রাণীর জীবনাবসানের পরেই কেবল এখানে তাঁদের স্থায়ীভাবে বসবাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সাধারণভাবে দেখলে এই উপত্যকা লাল বা হলদে পাথরের ছোট বড় টিলার বেশি কিছু মনে হয় না। কিন্তু এইসব ধূলি ধুসর পাহাড়ের নীচেই রয়েছে প্রাচীন মিশরের ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তেষট্টিজন ফারাও সম্রাটের সমাধি। খ্রিস্টপূর্ব ষোল থেকে এগারো শতক, অর্থাৎ প্রায় পাঁচশ বছর ধরে এই উপত্যকা ব্যবহৃত হয়েছে রাজা এবং রাজ পরিবারের সদস্যদের সমাধিক্ষেত্র হিসাবে। মৃত্যু পরবর্তী জীবনে তাঁদের আরাম আয়েশে যাতে ব্যঘাত না ঘটে কিংবা জাঁক জমকের ঘাটতি না হয় সে জন্যে তাঁরা যথেষ্ট ধন সম্পদ এবং শান্ত্রী-সেপাই, চাকর-নফর সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন। হায় নশ্বর মানুষের অমরত্ব লাভের বিশ্বাস! একবিংশ শতকের এই আধুনিক যুগে এসেও সাড়ে তিন হাজার বছর আগের সেই বিশ্বাসে এতোটুকু চিড় ধরেছে বলে মনে হয় না।  

করিডোরে দেয়াল চিত্র

ফারাও রাজা গজাদের তেষট্টিটি সমাধিস্থলের মাত্র আট-দশটিতে বর্তমানে পর্যটক প্রবেশের অনুমতি রয়েছে। অবশ্য সবগুলোতে ঢুকবার ব্যবস্থা থাকলে তা সাতদিনেও দেখে শেষ করা প্রায় অসম্ভব। প্রতিটি সমাধি মন্দিরই নির্মিত হয়েছে পাহাড়ের তলদেশে সুড়ঙ্গ কেটে মাটির অনেক গভীরে। ভূমিতল থেকে গভীরতম সমাধি মন্দিরটি সম্রাট প্রথম সেতির। এটি সবচেয়ে সুসজ্জিত এবং সুরক্ষিত বলে জানার পরেও সিঁড়ি বেয়ে দুইশ ফুট নিচে নেমে যাবার সাহস হলো না। এ ছাড়া বিশেষ উল্লেখযোগ্য দ্বিতীয় রামেসেসের পুত্র কন্যাদের সমাধিক্ষেত্রটি পঞ্চম গুহায়। উপত্যকার সবচেয়ে বড় এই সমাধিমন্দিরে কক্ষের সংখ্যা মোট একশ ত্রিশটি তবে বর্তমানে সত্তুরটিতে দর্শনার্থী প্রবেশ করতে পারেন। আরো ষাটটির উন্মোচন এখনো সম্পন্ন হয়নি বলে খনন কাজ চলছে। দীর্ঘতম এবং অন্যতম গভীর সুড়ঙ্গে প্রবেশ না করে তুলনামূলকভাবে অগভীর তিন চারটি সমাধি মন্দির দেখেই ভ্যালি অফ দ্য কিংম সফর শেষ করবো বলে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললাম। 

  দেযাল হায়রোগ্লিফিক লিপি

অর্ধবৃত্তাকারে ছড়িয়ে থাকা পাহাড়ের তলায় খানিকটা দূরে দূরে তিনটি চিহ্নিত গুহামুখ দিয়ে প্রবেশ করতে হবে তিন হাজার বছর আগের এক সমৃদ্ধ জগতে। সম্রাট তৃতীয় রামেসেসের সমাধি মন্দিরের প্রবেশ পথের সামনে বোর্ডে লেখা কেভ নং-১১, রামেসেস-৩! গুহামুখের লম্বা বাধানো বেদীতে বসে শর্টস পরা দুই শ্বেতাঙ্গ তরুণ তরুণী পানির বোতল উপর করে গলায় ঢালছে। বাইরে রোদের তাপ আর ভেতরে সিঁড়ি ভাঙার ক্লান্তি দেখে মনে পড়লো হোটেল থেকে পানির বোতল নিয়ে বেরোবার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত ভুলে গেছি,  এখন আর কিছু করার নেই। পাতালরেলের স্টেশনে ঢুকবার মতো খোলা অংশটি দিয়ে ভেতরে ঢুকতেই চোখে পড়লো কাঠের দীর্ঘ সিঁড়ি নিচে নেমে গেছে। রামেসেস থ্রির গভীরতা কম হলেও প্রায় ২৫ মিটার। যেখানে আমাদের ভূগর্ভস্থ রেলস্টেশনগুলোর গভীরতা ১৫ থেকে ২০ মিটারের বেশি নয়, সেখানে আধুনিক প্রযুক্তিবিহীন তিন হাজার বছর আগে প্রাচীন মিশরীয়রা সভ্যতার কোনো স্তরে পৌঁছে মাটির নিচে এই সম্রাজ্য গড়ে তুলেছিল! 

 

সিঁড়ি ভেঙে প্রথম করিডোরে পৌঁছালে দুদিকের দেয়ালে দেবী মাআত হাঁটু গেড়ে বসে অভ্যাগতদের ডানার নিচে আশ্রয় দিচ্ছেন। এরপর থেকে দীর্ঘ দেয়ালে উৎকীর্ণ দেব-দেবী, প্রাণী ও সরিসৃপ এবং দাস দাসীদের চিত্রকর্মে বিষয় এবং রঙের বৈচিত্র্য বিশেষ ভাবে লক্ষণীয়। করিডোরে দর্শনার্থীরা স্রোতের মতো আসা যাওয়া করছে। দ্বিতীয় করিডোর পেরিয়ে বাঁ দিকের তৃতীয় পাশ্ববর্তী কক্ষে দেখা দেন নীল নদের দেবতা। তাঁর মাথার দুদিকে ভুট্টার মতো কান, তিনি আরাও রাজকে সাতটি ঊর্বরতা উপহার দিচ্ছেন। ধারণা করা যায় এখনকার মতো প্রাচীন কালেও নীল নদের দেবতার আশীর্বাদেই চাষাবাদ হতো মিশরের ঊষর মাটিতে! এরপর ডান দিকের চতুর্থ কক্ষটি ছিল সম্রাটের অস্ত্রাগার। তবে অস্ত্রভাণ্ডারও শিল্প সুষমা থেকে বঞ্চিত হয়নি। এখানেও রয়েছে পবিত্র কালো ষাঁড় মেরি এবং কালো গরু হেসির দেয়ালচিত্র।  

 

যদিও গবেষকদের ধারণা অন্য অনেক সুড়ঙ্গ দেয়ালের তুলনায় এগারো নম্বর সমাধি মন্দিরে রিলিফের কাজ তেমন উল্লেখযোগ্য নয়, কিন্তু যে কয়েকটি কাজের নমুনা এখানকার দেয়ালে ছড়িয়ে আছে তার রঙ ও রূপের তুলনাও সারা বিশ্বে খুব একটা নেই। সবচেয়ে বড় বিস্ময়, এখানে দেয়ালে এবং সিলিংয়ে আঁকাআঁকির কাজে যে রঙ ব্যবহার করা হয়েছিল তার উজ্জ্বলতা তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার বছর পরেও এতোটুকু ম্লান হয়নি! 

চতুর্থ করিডোরের দেয়ালে চিত্রিত হয়েছে সূর্যের পথযাত্রা। এই পথে চারটি স্তম্ভের ভেতর দিয়ে ঢালু পথে খানিকটা এগিয়ে গেলেই ষষ্ঠ প্রকোষ্ঠে। এখানে নানা গুণে গুণান্বিত দেবতারা মহামহিম সম্রাটকে ঘিরে রেখেছেন। সপ্তম কক্ষের ডান দিকে রয়েছে থোথের পরিচালনায় ফারাও সম্রাট তৃতীয় রামেসেসের প্রতিকৃতি এবং বাজপাখির মাথাওয়ালা হারখেন তেখতাইয়ের চিত্র। বাঁ দিকের দেয়ালে ফারাও সম্রাট দেবতা ওরিসিসের কাছে উপস্থাপন করছেন সত্যের প্রতিরূপ। দীর্ঘ পথের শেষ প্রান্তে দশম কক্ষে এক সময় ফারাও তৃতীয় রামেসেসের শিলালিপি খোদিত পাথরের শবাধার রক্ষিত ছিল বলে জানা যায়। বর্তমানে সম্রাটের মমিটি মিশরের জাতীয় জাদুঘরে স্থান পেলেও শবাধারটি কোথায় তা জানতে পারিনি। 


আমরা যখন আবার কাঠের সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে এসেছি তখন গুহামুখে এক অশিতিপর বৃদ্ধ দম্পতি নিচে নামবেন কিনা এই দ্বিধা নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। আমাকে পেয়ে জিজ্ঞেস করলেন, ‘ইজ ইট ওয়র্থ ভিজিটিং?’ বললাম, ‘আই থিংক সো। ভ্যালি অফ দ্য কিংস-এ এসে ভূগর্ভের গভীরে অন্তত দু তিনটি সমাধি ক্ষেত্র দেখে না গেলে তোমাদের মিশর ভ্রমণ অসম্পূর্ণ থেকে যাবে।’ ‘উই উইল ট্রাই টু মেক ইট। থ্যাঙ্ক ইউ।’ আমি বললাম, ‘ইউ আর স্টিল ইয়াং এনাফ টু মেক ইট!’


বৃৃদ্ধ দম্পতি খুশি হয়ে নিচে নামতে শুরু করলে আমরা পরবর্তী সমাধি মন্দিরে যাবার পথে ভাবছিলাম, এই যে জীবনের শেষ প্রান্তে এসেও অভিজ্ঞতায় নতুন কিছু যুক্ত করার যে আকাক্সক্ষা এইটুকুই তো জীবন!   

 

 

চলবে...

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১

Header Ad

কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া

ছবি: সংগৃহীত

মিল্ক বিউটিখ্যাত দক্ষিনি অভিনেত্রী তামান্না ভাটিয়া নতুন বছরে তার জীবনের একটি বিশেষ অধ্যায়ে পা রাখতে যাচ্ছেন। খলচরিত্র করে আলোড়ন তোলা অভিনেতা বিজয় ভার্মার সঙ্গে তার প্রেমের গুঞ্জন চলছিল অনেক দিন ধরেই। তবে এ নিয়ে কেউই মুখ খোলেননি। এবার তাদের সম্পর্ক নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন তামান্না। এমনকি ২০২৫ সালে সাতপাকে বাঁধা পড়ার সম্ভাবনা আছে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন।

সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যমের এক প্রোমোশনাল ইন্টারভিউতে তামান্না তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে জানান, প্রেমের সম্পর্কের জন্য জীবনে দুবার হৃদয় ভেঙেছে তার। সেই সময়টা তামান্নার জন্য খুবই ভয়াবহ ছিল।

তিনি আরও জানান, তিনি খুব কম বয়সে একজন ছেলের সঙ্গে প্রথম ভালোবাসায় জড়িয়েছিলেন এবং তার দ্বিতীয় সম্পর্কটি ছিল তার অভিনয় ক্যারিয়ারের শিখরে থাকা অবস্থায়। তবে সে সময় তিনি অনুভব করেন যে, সেই ছেলে তার সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্কের জন্য সঠিক ব্যক্তি নয়।

তবে এত কিছুর পরও বাহুবলিখ্যাত তামান্না প্রেমিকের নাম প্রকাশ করেননি। এর আগে গুঞ্জন ছিল যে, তিনি ভারতীয় অভিনেতা বিজয় ভার্মার সঙ্গে ডেট করছেন। পাপারাজ্জিদের ক্যামেরায় বহুবার ফ্রেমবন্দি হয়েছেন তারা। যদিও নিজেদের এ সম্পর্ক আড়ালে রাখতে বদ্ধপরিকর দুজনই। এখন দেখার অপেক্ষা তামান্না জীবনসঙ্গী হিসেবে কাকে বেছে নেন।

সবশেষ তামান্না ভাটিয়াকে আইটেম গার্ল হিসেবে দেখা যায় অমর কৌশিক পরিচালিত ‘স্ত্রী ২’ সিনেমায়। এ সিনেমায় আরও অভিনয় করেন রাজকুমার রাও, শ্রদ্ধা কাপুর, পঙ্ক ত্রিপাঠিসহ আরও অনেকে।

Header Ad

পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...

ছবি: সংগৃহীত

পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকার বিনিময়ে নয় মাসের শিশু সন্তানকে দত্তক দেন শরীফা খাতুন নামে মানসিক ভারস্যমহীন এক মা। বিষয়টি জানতে পেরে গতকাল শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ওই নবজাতককে উদ্ধার করে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছেন সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশের সহায়তায় ওই শিশুটিকে তার মায়ের কোলে ফেরত দেন।
মানসিক ভারসাম্যহীন নারী শরীফা খাতুন বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী ইউনিয়নের জেমজুট মুসলিমবাগ এলাকায় তিন সন্তানকে নিয়ে ভাড়া বাড়িতে থাকেন। তিনি ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসার চালান।

প্রতিবেশী ও পরিবারের সদস্যরা জানান, গত এক বছর আগে স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় শরীফা খাতুনের। এর পর সন্তানদের নিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করে চলত তার পরিবার।

গত মঙ্গলবার নিজের ৯ মাসের কন্যা সন্তানকে পঞ্চগড় পৌরসভার দক্ষিণ তেলিপাড়া এলাকায় একটি হলুদ খেতে রেখে ভিক্ষা করতে যান শরীফা খাতুন। এ সময় শিশুটিকে দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে স্থানীয় রুনা আক্তার নামে এক নারী; একইসঙ্গে শরীফাকেও নিজ বাড়িতে নেন তিনি। রুনা নামে ওই নারীর নিজ সন্তান না থাকায় শিশুটিকে দত্তক নিতে চাইলে, ৫০০ টাকার বিনিময়ে রেখে চলে যান শরীফা।

এরপর চার দিন পর অবশেষে পুলিশ প্রশাসনের সহায়তায় নিজ পরিবারের কাছে ফিরেছে শিশুটি। বর্তমানে শিশুটিকে দেখভাল করছেন মানসিক ভারসামহীন শরীফার ১৬ বছরের বড় ছেলে নয়ন।

এ বিষয়ে শরীফার ছেলে নয়ন ইসলাম বলেন, গত চার দিন আগে মা বোনকে নিয়ে হঠাৎ পঞ্চগড়ে যান। পরে একসময় বাড়িতে একাই এসে ঘরে তালা লাগিয়ে বন্দি অবস্থায় থাকতে শুরু করেন। বোন কোথায় তা জানতে চাইলে কোনো কিছুই জানাচ্ছিলেন না।

পরে অনেক কৈশলে বোনের অবস্থান জানতে পারি। এরপর সেই বাড়িতে গিয়ে বোনকে ফেরত চাইলে তারা দিতে অস্বীকার করেন। আরও জানতে পারি মা বোনকে নেবেন না বললে তারা ৫০০ টাকা মাকে খেতে দিয়ে একটা কাগজে স্বাক্ষর করে নেন। শুক্রবার সাংবাদিক ও পুলিশ এসে তদন্ত করে আমার বোনকে আনতে নির্দেশ দিলে মাকে সঙ্গে নিয়ে বোনকে বাড়িতে নিয়ে আসি।

স্থানীয় মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, অনেক আগে থেকে ওই নারীকে দেখছি। তিনি ভিক্ষাবৃত্তি করে পরিবার চালান। তবে কয়েকদিন আগে নিজের সন্তানকে মানুষের কাছে দিয়ে প্রায় পাগল হয়ে বেড়াচ্ছিলেন।

কাজলা নামে স্থানীয় এক নারী বলেন, সকালে শরিফা আমার কাছে এসে আমার পা জড়িয়ে ধরেছেন আর বলেছেন আপু যেভাবেই পারো আমার মেয়েকে এনে দাও।

প্রতিবেশীরা বলেন, স্বামী না থাকায় পরিবারটা চালাতে শরীফা খাতুন ভিক্ষা করতেন। এর মাঝে এমন কাণ্ড ঘটে তিনি পাগল হয়ে গেছেন। তার তিনটা সন্তান। একটা ছেলে ও দুটি মেয়ে। এদের কি হবে আমরা জানি না। তবে সরকারি সহায়তা পেলে তাদের গতি হতো।

এ বিষয়ে পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, আগের বিষয়টি আমাদের কেউ জানায়নি। খবর পাওয়ার পর পঞ্চগড় সদর থানার ওসিকে জানানো হয়। বিষয়টি পুলিশের হস্তক্ষেপে সুষ্ঠু সমাধান করে ভারসাম্যহীন নারীর কাছে তার বাচ্চা ফেরত দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, যেহেতু ওই নারীর বাড়ি বোদা উপজেলায়, সেখানকার ইউএনওকে জানিয়ে সরকারি সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে।

Header Ad

অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা

ছবি: সংগৃহীত

অ্যন্টিগার পেস সহায়ক উইকেটে নতুন বলের বাড়তি সুবিধা বেশ ভালোভাবেই কাজে লাগিয়েছিল বাংলাদেশ। দিনের প্রথম সেশনে দ্রুত দুই উইকেট নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে চাপে ফেলেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সময় গড়াতেই বাংলাদেশের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায় দুই ক্যারিবিয়ান ব্যাটার মিকাইল লুইস ও আলিক অ্যাথানেজকে। জুটি গড়ে দুজনের ছুটতে থাকেন শতকের পথে। কিন্তু দুজনের কারও প্রত্যাশা পূরণ হতে দেয়নি বাংলাদেশ। দিনের শেষভাগে নার্ভাস নাইন্টিতে দুজনকে মাঠ ছাড়া করে প্রথম দিনের ইতি টানে বাংলাদেশ।

টস হেরে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে প্রথম দিন শেষে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট হারিয়ে ২৫০ রান করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শেষ দিকে বৃষ্টি হানা দেয় ম্যাচে। বৃষ্টি থামার পর আলোক স্বল্পতায় ৮৪ ওভার হওয়ার পরই দিনের খেলা শেষ করেন আম্পায়াররা।

টস জিতে বোলিংয়ে নেমে মেডেন ওভারে শুরুটা ভালো করেন হাসান মাহমুদ। অন্যপ্রান্তে আরেক পেসার শরিফুল ইসলামও মেডেন ওভার নেন। উইকেটের দেখা না পেলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই ওপেনার কার্লোস ব্রাথওয়েট ও লুইসকে বেশ কয়েকবার পরাস্ত করেন বাংলাদেশের দুই পেসার।

ইনিংসের অষ্টম ওভারে প্রথমবারের মতো বোলিংয়ে আনা হয় তাসকিন আহমেদকে। এই পেসারই প্রথম ব্রেকথ্রু দেন দলকে। ১৪তম ওভারে তাসকিনের অফ স্টাম্পে পড়ে একটু ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিতে ডিফেন্স করেছিলেন ব্রাথওয়েট। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়কের ব্যাটকে ফাঁকি দিয়ে বল আঘাত হানে পায়ে। বাংলাদেশের ফিল্ডারদের আবেদনে আম্পায়ার সাড়া দেন। যদিও তৎক্ষণাৎ রিভিউ নেন ব্রাথওয়েট। তবে সিদ্ধান্তের পরিবর্তন হয়নি।

তিনে নেমে টিকতে পারেননি কেসি কার্টি। ডানহাতি ব্যাটারকেও ফিরিয়েছেন তাসকিন। উইকেটে আসার পর থেকেই তাড়াহুড়ো করছিলেন তিনি। তাসকিনের মিডল এবং লেগ স্টাম্পের লেংথ ডেলিভারিতে ফ্লিক করার চেষ্টায় লিডিং এজ হয়ে মিড অনে থাকা তাইজুল ইসলামকে ক্যাচ দিয়েছেন কার্টি।

২৫ রানে দুই উইকেট হারানোর পর তৃতীয় উইকেট জুটিতে দলকে পথ দেখান লুইস ও কেভম হজ। তবে হজ ২৫ রান করে রান আউট হয়ে সাজঘরে ফিরলে ভাঙে ৫৯ রানের তৃতীয় উইকেট জুটি।

এরপর বাংলাদেশকে বেশ ভুগিয়েছে লুইস ও আথানজে জুটি। দুজনেই সেঞ্চুরির পথে ছিলেন। তবে সম্ভাবনা জাগিয়েও কেউই মাইলফলক ছুঁতে পারেননি।

ইনিংসের ৭৫তম ওভারে মিরাজের বলে বেরিয়ে এসে ছক্কা মারতে গিয়ে টাইমিংয়ে ভুল করেন লুইস। ব্যাটের কানায় লেগে বল যায় স্লিপে। ক্যাচ নিতে ভুল করেননি শাহাদাত হোসেন দিপু। নব্বইয়ের ঘরে ২৬ বল আটকে থেকে আউট হন লুইস। ফলে ভেঙে যায় ২২১ বলে ১৪০ রানের জুটি। ২১৮ বলে এক ছক্কা ও নয় চারে ৯৭ রান করেন এই ওপেনার।

এর কিছুক্ষণ পরই ফিরেছেন আথানজেও। তাইজুলের অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারি স্কুপের মতো খেলেছিলেন আথানজে। যদিও তেমন গতি না থাকায় তার ব্যাটে লেগে বল উপরে উঠে যায়। সহজ ক্যাচ নেন উইকেটরক্ষক লিটন। দশটি চার ও একটি ছক্কায় ১৩০ বলে ৯০ রান আসে বাঁহাতি এই ব্যাটারের ব্যাটে। তিন রানের মধ্যে দুই সেট ব্যাটারকে ফিরিয়ে লড়াইয়ে ফেরার সম্ভাবনা জাগায় বাংলাদেশ।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি
উপদেষ্টাদের যাচ্ছেতাই কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া হবে না: রিজভী
ভিসা কবে উন্মুক্ত করবে সেটা ভারতের নিজস্ব ব্যাপার: হাসান আরিফ
জুরাইন রেলক্রসিং ছাড়লেন রিকশাচালকরা, ৪ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল শুরু
পাঁচ দেশে যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতা
সাফজয়ী নারী ফুটবলার আইরিনকে নওগাঁয় সংবর্ধনা
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ দেবে পাকিস্তান
বেনাপোলে সীমান্ত থেকে বিপুল পরিমাণ ফেনসিডিল উদ্ধার
পুলিশ-অটোরিকশা চালক সংঘর্ষ, ঢাকা-পদ্মা সেতু ট্রেন চলাচল বন্ধ
ভারতীয় সাবমেরিনের সঙ্গে মাছ ধরা নৌকার সংঘর্ষ, নিখোঁজ ২
সংসার ভাঙার দুদিন পরই সুখবর দিলেন এ আর রহমান
ঢাকায় পৌঁছেছেন বাইডেনের বিশেষ প্রতিনিধি
আ.লীগকে নির্বাচনের সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে যা বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ
যুদ্ধবিধ্বস্ত লেবানন থেকে ফিরলেন আরও ৮২ বাংলাদেশি