বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১২

নদীর ঘাটে এসে পৌঁছাবার পরে অশ্ব শকটের কিশোর চালক বখশিশের জন্যে হাত বাড়ালো। পকেট হাতড়ে একটা কুড়ি পাউন্ডের নোট তার হাতে দিলাম। এরপর সে তার ঘোড়া দেখিয়ে আকারে ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিলো, এবারে ঘোড়া জন্যেও কিছু দাও। এমনিতেই আর কোনো ছোট নোট ছিল না, কাজেই আমিও তাকে বাংলায় উচ্চারণ করে এবং হাতের ইশারায় বলে দিলাম, কুড়ি পাউন্ড ঘোড়ার সাথে ভাগাভাগি করে খাও।

টুইয়াতে ওঠার সময় আবার মাথাগুণতির কার্ড জমা দিয়ে একে একে লবিতে এসে জড়ো হবার পরে দেরি না করে সোজা ব্রেকফাস্টের টেবিলে বসে পড়লাম। আমরা যারা এক সাথে এডফু টেম্পল দেখতে গিয়েছিলাম সেই কয়জন ছাড়া রেস্তোঁরা পুরোপুরি খালি। সকাল নয়টাও বাজেনি, এরই মধ্যে নাস্তাপানির পালা শেষ! আমাদের সামনা সামনি একটা টেবিলে একজন সঙ্গীসহ মোস্তফা এবং বিপরীত দিকের একটি টেবিলে টুইয়ার ম্যানেজার নাস্তা খেতে বসেছেন। এটা যে বুফে ব্রেকফাস্ট, বিশেষ করে মোস্তফাকে এজন্য কোনো বিল দিতে হবে না সেটা তার উপচে পড়া প্লেট দেখলেই বোঝা যায়। ম্যানেজার সাহেবের নাস্তাও নিশ্চয়ই ফ্রি। তারপরেও তিনি এতো বেলায় টেবিলে বসে কেন শুধু কয়েকটা শুকনো বনরুটি চিবাচ্ছেন বুঝতে পারলাম না।

ছবি: টুইয়ার শপিং এলাকা

আমরা জাহাজে ওঠার পরপরই নোঙর তুলে যাত্রা শুরু করেছে টুইয়া। ধীরে ধীরে শহর এলাকা ছেড়ে যাবার সময় দেখলাম, আসোয়ানের মতো এখানেও নদীর তীরেই মসজিদসহ অনেকগুলা বহুতল ভবন। খুব দ্রুতই আমরা শহর এলাকা ছাড়িয়ে এক পাশের সারি সারি খেজুর গাছের ওপারে উঁচু নিচু পাহাড় আর অন্যপাশে খেজুর বনের ভেতরে ভেতরে সবুজ ফসলের মাঠ দেখতে দেখতে এগাতে শুরু করলাম। এদিকে সবুজের ছোঁয়া অনেক বেশি, কোথাও কোথাও মনে হলো জমিতে জল জমে আছে।

জাহাজে সম্ভবত আমাদের মতো পনের কুড়িজন হাভাতে টুরিস্ট বাদ দিলে বাকিরা সকলেই অভিজাত শ্রেণির। তারা হয়তো এর আগেও অনেক বার এইপথে আসা যাওয়া করেছে। সেই কারণে তারা প্রত্নতাত্ত্বিক কোনো নিদর্শন, মন্দির-মসজিদ-দুর্গ-দেয়াল কোনোটাই দেখতে যায় না। অনেক সময় জাহাজ থেকে নামেও না। তারা হয়তো এখন শুধু রিলাক্স করতেই নীল নদে ভেসে বেড়াতে এসেছে। এখন উদাস দৃষ্টিতে তাকিয়ে বিয়ারের ক্যান অথবা কফির মগ হাতে ছাদে বসে আছে।

ছবি: জাহাজের সুইমিং পুল

সাড়ে নয়টার দিকে নাস্তা শেষ করে উপরে ওঠার সময় ভাবলাম টুইয়ার শপিং এলাকাটা একবার ঘুরে দেখা যাক। খুব বড় আকারের না হলেও দ্বিতীয় তলার একটা বড় অংশ জুড়ে পর্যটক প্রিয় নানা সামগ্রীর বিশাল সংগ্রহের পশরা সাজানো। সেখানে বিক্রি হচ্ছে মিশরের বিভিন্ন যুগের নানা নিদর্শনের রেপ্লিকা, টি শার্ট-টুপি, মেয়েদের স্কার্ফ-হিজাব, স্কার্ট-শর্টস, ধাতব এবং পাথরের গহনা, এমন কি জুতা স্যান্ডেল, চাদর-বালিশ, ব্যাগ- স্যুটকেস পর্যন্ত। জলযানে ভ্রমণ করতে এসে দাম কিছু বেশি দিয়ে হলেও স্যুভেনিয়ার নিশ্চয়ই কেনা যায়। কিন্তু এখানে যে বিপুল পরিমাণে জিনিসপত্রের সমাবেশ তা কারা যে কিনে নিয়ে যায় আল্লাহ মালুম।

আমরা ঘুরে ফিরে দেখে কিছুই না কিনে ঘরে ঢুকে সকালের বাড়তি জামা কাপড় রেখে সিঁড়ি দিয়ে আপার ডেকে উঠে গেলাম। মাঝে দুই সারিতে চেয়ার টেবিল পাতা থাকলেও আমাদের রানা ভাইসহ মাত্র দু চারজন বসে বই পড়ছেন অথবা বিয়ারের ক্যানে চুমুক দিতে দিতে গল্প করছেন। দুপাশের ডেক চেয়ারেও অলসভঙ্গিতে শুয়ে আছে অনেকেই। জাহাজের সামনের দিকে স্যুইমিং পুলে একটা ফোয়ারা থেকে অবিরাম জল ঝরছে। কিন্তু এই ভাসমান পুলে কাউকেই জলক্রীড়া করতে দেখা গেল না। তবে স্যুইমিং পুলের ওপারে একেবারে সামনের দিকে পাতা ডেক চেয়ারের একটিও খালি নেই। সকলেই সামনে এগিয়ে যাবার দৃশ্য দেখতে চায়। নীলের নিস্তরঙ্গ জল কেটে আমাদের ঠিক পাশাপাশি এগিয়ে যাচ্ছিল ক্রুইজ শিপ এম ভি কংক্রিট! দুই জাহাজের মধ্যে সামানে এগিয়ে যাবার কোনো প্রতিযোগিতা নেই। আমি অনেক্ষণ ধরে পাশ দিয়ে পিছিয়ে যাওয়া খেজুর বনের দৃশ্য দেখছিলাম। তবে দীর্ঘক্ষণ ধরে একই দৃশ্য দেখার একঘেয়েমিতে আক্রান্ত হবার পরে ভাবলাম ঘরে ফিরে স্নান সমাপন করে যথা সময়ে খেতে গেলেই চলবে।

ছবি: তোয়ালের বানর

জাহাজের কক্ষগুলোতে সে সময় ক্লিনিং আওয়ার চলছিল। পরিচ্ছন্নতা অভিযানের কারণে আমাদের কক্ষের দরজা খোলা। ঘরে ঢুকেই একটা অভাবনীয় দৃশ্য চোখে পড়লো। আমাদের কক্ষের বাথরুম এবং বিছানার মাঝখানের খোলা কপাটের উপর থেকে একটা বানর ঝুলছে! না–হাত পা এবং লেজওয়ালা আসল বানর নয়, তোয়ালে দিয়ে তৈরি বানর কাপড় শুকানোর ক্লিপ দিয়ে ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে একটা হ্যাঙ্গারে। রুম সার্ভিসের ছেলেটা একটা নিষ্পাপ হাসি দিয়ে বললো, ‘ডু ইউ লাইক ইট স্যার?’ লাইক না করে আর উপায় কী! মনুষ্যকুলের পূর্ব পুরুষের কথা মনে করিয়ে দেয়াটা কোনো অপরাধের পর্যায়ে পড়ে না। সম্ভবত ঘরের কাজ শেষ করার পরে হাতে সময় থাকায় সে একটু শিল্প চর্চায় মন দিয়েছিল। তাকে আপাতত ধন্যবাদ দিয়ে বিদায় করলাম।

দুপুরে খাবার সময় হঠাৎ একটা বিপত্তি ঘটে গেল। আমাদের তিনজনের টেবিলে দুজন খেতে বসে লাঞ্চ প্রায় শেষ করে ফেলেছি, কিন্তু রানা ভাইয়ের দেখা নেই। ঘরে ফোন করেও তাঁকে পাওয়া গেল না। এদিকে লাঞ্চের সময়ও প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। ভাবলাম প্লেটের খাবার শেষ করেই তাঁকে খুঁজতে ছাদে যাবো। ঠিক এই সময়ে রানা ভাই এসে হাজির। বুফে কাউন্টার থেকে প্লেটে খাবার তুলে নিয়ে এসে টেবিলে রেখে যখন বসতে গেছেন তখন তাড়াহুড়ার কারণে অথবা অসাবধানতা বশত চেয়ারের কিনারায় বসে চেয়ারসহ মেঝেতে পড়ে গেলেন। সঙ্গে সঙ্গেই রেস্তোরাঁর দুজন কর্মী ছুটে এলে আমরা তিনজনে মিলে রানা ভাইকে ধরে টেনে তুলে ফেললাম। তিনি তেমন কোনো আঘাত পাননি, তবে ঘটনাটা মারাত্মক হতে পারতো। লাঞ্চ টাইম শেষ হয়ে গেলেও চণ্ডীদাসের খুড়ো এসে বলে গেলেন, ‘নো হারি, ডোন্ট ওরি। এনজয় ইয়োর লাঞ্চ।’

ছবি: এসনা লক

খুব ভোরে ঘুম থেকে ওঠা, এডফুর মন্দিরে দীর্ঘক্ষণ ঘোরাঘুরি এবং সব শেষে লোভনীয় লাঞ্চ যথেষ্ট পরিমাণে ‘এনজয়’ করার ফলে দুপুরে ঘরে এসেই বিছানায় গড়িয়ে পড়েছিলাম। শুয়ে শুয়ে কিছুক্ষণ নদী তীরের দৃশ্য, খেজুর বাগান আর ফসলের ক্ষেত, পাহাড়ের পাশ দিয়ে ছুটে চলা আন্তনগর ট্রেন এবং পাশ দিয়ে নৌযানের চলাচল দেখতে দেখতে চোখ ধরে এসেছিল। কিছু সময় ঘুমিয়েও নিয়ে মনে হয়। হঠাৎ জাহাজের পাশে বেশ হৈ চৈ শুনে তন্দ্রা ছুটে গেল। উঠে জানালার পাশে এসে দেখলাম আমাদের জাহাজ থেমে গেছে আর তার পাশে কয়েকটা নৌকায় ভাসমান ফেরিওয়ালা হাঁকডাক দিয়ে নদী থেকে জাহাজের আপার ডেক পর্যন্ত পুরো এলাকা সরগরম করে তুলেছে। প্রত্যেক নৌকায় একজন মাঝি হাল ধরে বসে আছে আর একজন ‘হ্যালো স্যার... ওনলি হান্ড্রেড পাউন্ড... গুড কোয়ালিটি... হ্যান্ড মেড স্যার...’ ইত্যাদি বলে সম্ভাব্য ক্রেতা আকর্ষণে ব্যস্ত। আমাদের পাশের ঘর থেকে রানা ভাইয়ের কণ্ঠও শোনা গেল। তিনি ফেরিওয়ালাদের সাথে কথোপকথন শুরু করে দিয়েছেন। একটু পরেই দেখলাম নদী থেকে বিক্রেতা উপরের দিকে কাপড়ের পোটলা ছুঁড়ে মারছে আর একটু পরেই কাপড়ের খালি ব্যাগ উপর থেকে নিচে চলে যাচ্ছে। নৌকায় দাঁড়ানো ফেরিওয়ালা ক্রিকেট বল ধরার মতো করে ব্যাগটা লুফে নিচ্ছে।

বুঝলাম আমাদের জাহাজ এসনায় পৌঁছে গেছে। শহর হিসাবে এসনা প্রাচীন মিশরীয়, টলেমিক, গ্রিকো-রোমান, ইসলামিক এবং একই সাথে বিশ শতকের আধুনিক নগরী। খ্রিস্টপূর্ব তিনশ অব্দে এসনা ছিল সে সময়ের আপার ঈজিপ্টের রাজধানী। নীল নদের উপরে এখানেই রয়েছে বিখ্যাত ‘এসনা লক!’ এডফু থেকে লক্সর অথবা লক্সর থেকে এডফু যাবার ঠিক মাঝখানে এই পথে প্রতিটি টুরিস্ট নৌযানকে একটি দীর্ঘ বাঁধের নিয়ন্ত্রিত অপরিসর পথ পেরিয়ে অপর পারে যেতে হয়। দুশ একুশ মিটার দীর্ঘ পথটুকু পেরোতে কুড়ি মিনিটের বেশি সময় লাগে না, তবে যেহেতু দু পারের নৌযান পারাপারের ক্ষেত্রে এটি একটি ‘ওয়ান ওয়ে’ বা একমুখি পারাপারের ব্যবস্থার কারণে এবং একই সাথে পানির স্তর সম্পর্কিত কৌশলগত সীমাবদ্ধতার ফলে একপাশের জাহাজকে ওপারে যাবার জন্যে অনেক সময় দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। ‘লক’ মানে যখন তালা, তাহলে তালা খুলবার অপেক্ষায় তো থাকতেই হবে। এখন এই তালা খোলার চাবিটি কার হাতে সেটিই হলো আসল কথা।

ছবি: নীল নদের ভাসমান ফেরিওয়ালা

বাঁধ নির্মাণে প্রকৌশলগত উৎকর্ষের দিক থেকে সতের মিটার চওড়া এবং দুশ একুশ মিটার লম্বা ‘এসনা লক’ নিঃসন্দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। আসোয়ান হাইড্যাম থেকে প্রায় একশ সত্তুর কিলোমিটার ভাটিতে নীল নদের গতিপথ পরিবর্তন করিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আসোয়ানের ভাটিতে নির্মিত সাতটি বাঁধের মধ্যে অন্যতম ‘এসনা লক’ নির্মিত হযেছিল নদীর প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ এবং উজানে পানির স্তর স্থিতিশীল রাখার জন্যে। জলের গভীরতা এখানে কম বেশি সাড়ে চৌদ্দ মিটার। ১৯০৬ সালে প্রথমে ব্রিটিশদের তৈরি এই বাঁধের আধুনিকায়ন হয়েছে ১৯৯৬ সালে।

ঐতিহাসিক এসনা লক পারাপারের দৃশ্য নিজের চোখে দেখার জন্যে ক্যামেরা হাতে উপরে উঠে এলাম। এ সময় টুইয়ার আপার ডেকের সামনের দিকে ভিড় করে বিপুল সংখ্যক আর্য নরনারী যেভাবে ক্যামেরা বাগিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন, তাতে খর্বকায় দ্রাবিড়ের পক্ষে সামনে থেকে ছবি তোলা অসম্ভব হয়ে দাঁড়ালো। রানাভাইও তাঁর ভাসমান বাজারের কেনাকাটা শেষ করে উপরে উঠে এসেছেন। জানলাম একশ পাউন্ড দামের একটা শাল দরদাম করে সত্তুর পাউন্ডে কিনেছেন। তবে শেষ পর্যন্ত একটা একশ পাউন্ডের নোট নিচে ছুঁড়ে দিয়ে হাল ধরে থাকা মাঝিকে কুড়ি পাউন্ড দিয়ে দিতে বলেছেন।

ছবি: এসনা লক পারাপার

এখানে অনেক সময় তালা খুলতে দেড় দুই ঘণ্টাও লাগে বলে শুনেছি। আমাদের কপাল ভালো বলে এই অপেক্ষার সময় কুড়ি পঁচিশ মিনিটের বেশি হলো না। একপাশে নদী বন্দর এসনা এবং অন্যদিকে দীর্ঘ বাঁধের দৃশ্য বেশ আকর্ষণীয় বলে ছবি তোলার জন্যে সকলেই ব্যস্ত। আমি এদিক সেদিক ঘুরে আবার যখন জাহাজের সামনের দিকে এসে দাঁড়ালাম তখন অনেকেরই উৎসাহে ভাটা পড়েছে। অতএব টুইয়া পারাপারের অনুমতি পেলে সামনে থেকে এই ‘তালাবদ্ধ’ বাঁধ পেরোবার অসাধারণ দৃশ্যটি ধরে রাখতে সমস্যা হলো না। জাহাজ চলতে শুরু করার পরে প্রায় প্রতি মুহূর্তেই মনে হচ্ছিল, এই বোধহয় একপাশের পাড় বা খুঁটি ছুঁয়ে দিল। কিন্তু না, আমাদের সাড়ে চৌদ্দ মিটার চওড়া এবং বাহাত্তর মিটার লম্বা জাহাজ ধীরে ধীরে বলা যায় অতি ধীরে সরু পথ পাড়ি দিয়ে নির্বিঘ্নে ওপারে পৌঁছে গেল।

এই শীর্ণ নৌপথে যদি এতো বড় জাহাজ পারাপার করতে পারে, তাহলে আমাদের লঞ্চগুলো পদ্মা সেতুর দুই খুঁটির নিচে দিয়ে যাবার সময় যথেষ্ট জায়গা থাকা সত্ত্বেও মাঝে মাঝেই ধাক্কা দেয় কেন! আমাদের আমলা কর্মচারীরা কতো কিছু শিখতে বিদেশে যান, জাহাজ পারাপারের কৌশল শিখতে জাহাজের ক্যাপ্টেন সারেং বা মাস্টারদের নীল নদে পাঠানো যেতে পারে।
এসনা লক পার হয়ে আসার পরে ‘টুইয়া’ আবার পূর্ণ গতিতে ছুটতে শুরু করল।

চলবে...

এসএ/

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১

Header Ad

বৃষ্টি কবে হবে, জানাল আবহাওয়া অফিস

ফাইল ছবি

গরমে জনজীবন বিপর্যস্ত। দেশে চলমান তাপপ্রবাহের মধ্যেই এবার বৃষ্টির সম্ভ্যব্য সময় জানাল আবহাওয়া অফিস। বলা হয়েছে, আগামী ৭২ ঘণ্টার শেষের দিকে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বাড়তে পারে।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সকাল ৯টায় দেওয়া বর্ধিত পাঁচ দিনের আবহাওয়া বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়েছে, তিন দিনের হিট অ্যালার্ট শেষে সামনের সপ্তাহের মাঝামাঝি সময়ে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বাড়তে পারে।

এদিকে আগামী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আবহাওয়াবিদ মো. শাহিনুল ইসলাম জানান, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে এবং সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে।

এ সময়ে সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজ থাকতে পারে বলেও জানান তিনি।

তিনি আরও জানান, খুলনা বিভাগসহ দিনাজপুর, নীলফামারী, রাজশাহী, পাবনা, ফরিদপুর ও গোপালগঞ্জ জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও বান্দরবান জেলাসহ বরিশাল বিভাগ এবং রংপুর, রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।

আগামী দুই দিন সিলেট অঞ্চল ছাড়া দেশের অন্যান্য অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের তেমন সম্ভাবনা নেই। একই সঙ্গে এ সময়ে তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে বলেও পূর্বাভাসে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।

এফডিসিতে ইউটিউবার প্রবেশ নিষিদ্ধ চাইলেন অঞ্জনা

চিত্রনায়িকা অঞ্জনা। ছবি: সংগৃহীত

এফডিসিতে ইউটিউবার ও তথাকথিত নামধারী সাংবাদিকদের প্রবেশ নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছেন চিত্রনায়িকা অঞ্জনা। এক ফেসবুক পোস্টে তিনি এই দাবি জানান। এফডিসির মূল সমস্যার কারণ হিসেবে ইউটিউবারদের দায়ী করেছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) এক ফেসবুক পোস্টে তিনি এই দাবি জানান।

অঞ্জনা তার ফেসবুক পোস্টে বলেন, এফডিসিতে ইউটিউবার ও তথাকথিত নামধারী সাংবাদিকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হোক। এফডিসিতে প্রবেশাধিকার আরো কঠিনতর করা হোক এই দাবি চলচ্চিত্রের সকল শিল্পীদের।

অঞ্জনা বলেন, ‘কেউ না কেউ সাংবাদিক পরিচয়ে প্রবেশ করে শিল্পীদের বিভিন্ন রকমের উদ্ভট প্রশ্ন করে তাদের ক্ষিপ্ত করে তোলে। তখন শিল্পীরা যখন আবেগে দুই একটা কথা বলে ফেলে সেটার সামনের বা পিছনের কথা গুলো বাদ দিয়ে কেটে ভাইরাল ট্রপিক হিসেবে ফেসবুকে ও ইউটিউবে আপলোড করে দিয়ে শিল্পীকে জোকারে পরিণত করে।’

চিত্রনায়িকা অঞ্জনা। ছবি: সংগৃহীত

তিনি বলেন, ‘আমাদের চলচ্চিত্র বিনোদন সাংবাদিকদের ঐতিহ্যবাহী সংগঠন "বাচসাস" রয়েছে সেখানে আমাদের অনেক প্রাণের সাংবাদিক ভাইয়েরা রয়েছে যারা শিক্ষিত এবং মার্জিত তারা কখনোই একজন শিল্পীকে অবান্তর প্রশ্ন করে বিভ্রান্ত করেন না। এছাড়া, সাংবাদিকদের আরো অনেক সংগঠন রয়েছে যেখানে শিক্ষিত ও ভদ্র সাংবাদিকগণ আছেন, তারা সব সময় শিল্পী ও শিল্পের কল্যাণ প্রসারে কাজ করেন।’

এই নায়িকা বলেন, ‘টেলিভিশন মিডিয়ার সাংবাদিক ভাই ও বোনেরা যাদেরকে আমি চিনি ও জানি তারা সবাই যথেষ্ট ব্যাক্তিত্ব সম্পন্ন চলচ্চিত্র শিল্পীদের পাশে তারা সব সময় ছিলেন আছেন ও থাকবেন আশা করি। ছোট্ট একটি ভুল বোঝাবুঝির মাধ্যমে শিল্পী ও সাংবাদিকদের মধ্যকার এতো বছরের সুমিষ্ট একটি সোহার্দপূর্ণ সম্পর্ক নষ্ট হোক সেটা আমার কখনোই কাম্য নয়।

শিল্পী ও সাংবাদিক একে অন্যর পরিপূরক। আসুন সকল মান অভিমান ভুলে গিয়ে আমরা সবাই একে অন্যর ভালোর জন্য উত্তম কাজ করে যাই।’

অনির্দিষ্টকালের জন্য চুয়েট বন্ধ ঘোষণা, ক্ষোভে বাসে আগুন দিল শিক্ষার্থীরা

অনির্দিষ্টকালের জন্য চুয়েট বন্ধ ঘোষণার পর ক্ষোভে বাসে আগুন দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনায় উদ্ভুত পরিস্থিতির কারণে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে চলা বিক্ষোভের ৪ দিনের মাথায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে চুয়েট উপাচার্যের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ১৫১ তম একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রোর (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবিরের সই করা চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, গত ২২ এপ্রিল মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন মেধাবী ছাত্রের অকাল মৃত্যুতে উদ্ভুত পরিস্থিতির কারণে ২৫ এপ্রিল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একাডেমিক কাউন্সিলের ১৫১তম (জরুরি) সভার সিদ্ধান্তক্রমে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক/স্নাতকোত্তর পর্যায়ের সকল একাডেমিক কার্যক্রম (পরীক্ষাসহ) বন্ধ ঘোষণা করা হলো।

এতে আরও বলা হয়, ছাত্রদেরকে বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বিকাল ৫টার মধ্যে এবং ছাত্রীদেরকে আগামিকাল শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সকাল ৯টার মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হলো।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা তাদের কাছে জব্দ থাকা দুটি বাসের একটিতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন। এতে ক্যাম্পাস ও আশেপাশের এলাকায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

উল্লেখ্য, সোমবার (২২ এপ্রিল) বিকাল ৩টার দিকে মোটরসাইকেল নিয়ে ঘুরতে বের হয়ে শাহ আমানত পরিবহনের বাসের ধাক্কায় নিহত হন চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শান্ত সাহা (২২) ও দ্বিতীয় বর্ষের তৌফিক হোসাইন (২১)। এ সময় জাকারিয়া হিমু (২১) নামে আরও এক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন। দুর্ঘটনার বিষয়টি জানার পর থেকেই আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা।

সর্বশেষ সংবাদ

বৃষ্টি কবে হবে, জানাল আবহাওয়া অফিস
এফডিসিতে ইউটিউবার প্রবেশ নিষিদ্ধ চাইলেন অঞ্জনা
অনির্দিষ্টকালের জন্য চুয়েট বন্ধ ঘোষণা, ক্ষোভে বাসে আগুন দিল শিক্ষার্থীরা
থাইল্যান্ডে হিট স্ট্রোকে ৩০ জনের মৃত্যু
বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা
প্রতিটি সংসদীয় এলাকায় ‘এমপিরাজ’ তৈরি হয়েছে: রিজভী
অনুমতি মিললে ঈদের আগেই গরু আমদানি সম্ভব: ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত
আবারও ঢাকাই সিনেমায় কলকাতার পাওলি দাম
ময়মনসিংহে সড়ক দুর্ঘটনায় সাবেক কৃষকলীগ নেতাসহ নিহত ২
গোবিন্দগঞ্জে বৃষ্টির জন্য ইস্তিসকার নামাজ আদায়
বেনজীর ও তার পরিবারের সদস্যদের নগদ অর্থের তথ্য চেয়ে চিঠি দুদকের
ভূমি মন্ত্রণালয়ে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, নেবে ২৩৮ জন
জয়কে আজীবন বয়কট, ২ জনকে সাময়িক বহিষ্কার
বৃষ্টির আশায় নওগাঁর বিভিন্ন উপজেলায় ইসতিসকার নামাজ আদায়
নওগাঁয় ঔষধ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে হয়রানি মূলক মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন
টাঙ্গাইলে পঁচা মাংস বিক্রি, ব্যবসায়ীকে জরিমানা
‘উপজেলা ভোটে ব্যর্থ হলে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা ক্ষুণ্ণ হতে পারে’
শপথ নিলেন আপিল বিভাগের নতুন ৩ বিচারপতি
তীব্র গরমে দুঃসংবাদ দিলো আবহাওয়া অফিস
মনোনয়ন প্রত্যাহার না করা মন্ত্রী-এমপির স্বজনদের সময়মত ব্যবস্থা