বুধবার, ৮ মে ২০২৪ | ২৫ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৯

দিগন্ত বিস্তৃত মরুভূমির ভেতর দিয়ে আমরা সুদান সীমান্তের দিকে এগোচ্ছি। আবু সিম্বেল থেকে সুদানের দূরত্ব মাত্র কুড়ি কিলোমিটার। আসোয়ানে প্রয়োজনীয় অনুমোদন নিয়ে ওয়াদি হালফা সীমান্ত দিয়ে সুদানে ঢুকে পড়া যায়। আমাদের তেমন সুদূর প্রসারী পরিকল্পনা না থাকায় আপাতত দুপাশের মরুভূমি দেখতে দেখতে এগিয়ে যাই আবু সিম্বেলের পথে। মরুভূমিতে হলদে বাদামি ধূসর সারিসারি বালির স্তূপ কোথাও কোথাও বালির পাহাড় হয়ে উঠেছে। মরু প্রান্তরে বিদ্যুতের দীর্ঘ বিদ্যুৎসঞ্চালন লাইন এবং পথের পাশে সাজানো নির্মাণ সামগ্রী থেকে বোঝা যায় আসোয়ান হাই ড্যাম মিশরের মানুষের জীবনে কতোটা ইতিবাচক পরিবর্তন এনেছে। প্রান্তরের মাঝখানে ফসলের সবুজ ক্ষেত এবং রাস্তার পাশে সবুজ গাছের দীর্ঘ সারি দেখে অনুমান করা যায় জলের ছোঁয়ায় ধূসর মরুর ঊসর বুকেও প্রাণের উন্মেষ ঘটেছে। ওসামা জানালেন, দেশের বিদ্যুতের শতকরা পনের ভাগই আসে আসোয়ান ড্যাম থেকে। অন্যদিকে লেক নাসেরের জলে এই অঞ্চলে আবাদি জমির পরিমাণ বেড়েছে। শুধু সেচের পানি নয়, বন্যার সময় উপচে পড়া পানি নীল এবং লেক নাসেরের দুপাশ প্লাবিত করে যাবার পরেই এই অঞ্চলে শুরু হয়ে যায় চাষাবাদ।   মিনিট পঁচিশেক পরে গাড়ির গতি একটু কমে এলে ওসামা জানালেন এখানে একটা চেকপোস্ট আছে। চেকপোস্টে অবশ্য কেউ কিছু চেক করলো না, এমনকি গাড়িও পুরোপুরি থামলো না। শুধু পথে দাঁড়ানো পুলিশ আরবিতে কিছু একটা জিজ্ঞেস করলে ওসামা উত্তর দিলেন, ‘বাংলাদেশে’। বুঝলাম, সাদা সাদা টুরিস্টের ভিড়ে এইসব আধাকালা মানুষের আমদানি কোন দেশ থেকে সেটাই তাদের জিজ্ঞাসার বিষয়। শুধু কৌতূহল নয়, খাতায় দেশের নাম টুকে রাখাও তার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। তবে খাতা লেখা শেষ হবার আগেই আয়মান গাড়ি টান দিলে মনে হলো এদেশের নিরিহ পুলিশকে কেউ খুব বেশি পাত্তা দেয় না। পথের পাশের সরাইখানা থেকে বেরোবার সময় দেখেছি রাস্তায় হাইওয়ে পুলিশ গাড়ি নিয়ে নির্বিকার দাঁড়িয়ে আছে। 

 

 

চেকপোস্ট পার হবার পরে মনে হয়েছিল, আমরা বোধহয় আবু সিম্বেল পৌাঁছে গেছি। আসলে এটি ছিল আবু সিম্বেল এলাকায় প্রবেশ পথ। এরপর থেকেই দুপাশে গাছপালার সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। প্রচুর খেজুর এবং তাল জাতীয় গাছ, পাশাপাশি তুলা, ভুট্টা ও গমের ক্ষেত, ঝোপঝাড় এবং ফুলের দেখা মেলে কোথাও কোথাও। এই বিরাণ ভূমিতে চলছে একটা শহর গড়ে তোলার প্রাণান্ত প্রচেষ্টা। রাস্তাঘাট কারুকাজ করা দেয়াল, আধুনিক ভবন এবং সুদৃশ্য মসজিদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। সাড়ে আটটায় আবু সিম্বেল পৌঁছালে টেম্পলের সংরক্ষিত এলাকার বাইরে একটা গাছের ছায়ায় দাঁড়ালাম। ওসামা প্রবেশপত্র সংগ্রহ করতে গেলে মাথার উপরে পাখির কিচির মিচির শুনে উপরে তাকিয়ে দেখি টুনটুনি জাতীয় ছোট্ট পাখি সবুজ পাতার ফাঁকে বাসা বুনছে। ‘জলই জীবন’ কথাটার সত্যতা আরো একবার উপলব্ধি করলাম। নীল নদের পানি আটকে রাখতে না পারলে কোথায় থাকতো লেক নাসের আর কোথায় থাকতো এই টুনটুনি পাখি! 

 

প্রবেশ পথে পর্যটকদের দীর্ঘ লাইন দেখে একটু ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। ভোর সাড়ে চারটায় রওনা দিয়ে চার ঘণ্টার পথ পাড়ি দিয়ে এসেছি। ফেরার পথে কোথাও যাত্রা বিরতি না দিলেও সাড়ে তিন ঘণ্টা লাগবে। আমাদের জাহাজ ছেড়ে যাবে দুপুর দেড়টায়। রামেসেস এবং নেফারতারির সাথে দেখা সাক্ষাৎ করে সময় মতো ফিরতে পারবো তো! আমাদের অবাক করে দিয়ে অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই ওসামা টিকেটসহ ফিরে  এলে তাকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘কতোক্ষণ সময় পাবো এখানে?’  নির্বিকার ওসামার উত্তর, ‘তোমাদের যতোক্ষণ ইচ্ছে ঘুরে এসো। দু ঘণ্টার বেশি লাগবে না আশা করি।’


দু’ঘণ্টা এখানে কাটালে বেলা সাড়ে দশটা বাজবে, বেলা দুটোর আগে তো ফিরতে পারবো না। তারপরেও ওসমার আশ্বাসে আমরা চমৎকার বাদামি সিরামিক ইটের আধুনিক ভবনের ডিজিটাল নিরাপত্তা প্রহরা পার হয়ে ভেতরে ঢুকে পড়লাম।  প্রবেশ পথের পরে চোখের সামনেই বিশাল পাহাড়। আগেই জানা হয়ে গেছে, যে পাহাড় কেটে রামসেসের রূপ দেয়া হয়েছে, সে পাহাড় আসল পাহাড় নয়। এই কৃত্রিম পাহাড়ের গায়েই বসানো হয়েছে স্থানান্তরিত দুটি মন্দির। রামসেসের মন্দির এবং নেফারতারি মন্দিরে ঢুকতে হলে পাহাড়ের ডান দিক দিয়ে লেক নাসেরের পাড় ধরে বেশ কিছুটা পথ চড়াই উৎরাই পেরিয়ে সামনে পৌঁছাতে হবে। প্রশ্ন হতেই পারে, মন্দির যাত্রীদের পাহাড়ের পেছন দিকে না ঘুরিয়ে সরাসরি মূর্তিসহ মন্দির দুটো এখানে বসিয়ে দিলে কি ক্ষতি হতো? এই প্রশ্নের উত্তরেই রয়েছে সে যুগের স্থপতিদের অসামান্য প্রজ্ঞার প্রমাণ। জ্যোর্তিবিদ্যা ও গাণিতিক হিসাব নিকাশে তাঁরা যে অসাধারণ উৎকর্ষ লাভ করেছিলেন তা সহজেই অনুমান করা যায়। সারা বছর মন্দিরের অভ্যন্তরে সূর্যালোক প্রবেশ না করলেও বছরে দুবার, ২২ শে ফ্রেবুয়ারি রামসেসের জন্ম দিনে এবং ২২ শে অক্টোবর ভোরে সম্রাটের অভিষেকের দিনে সরাসরি সূর্যের আলো এসে পড়ে দ্বিতীয় রামসেসের মুখে। মন্দিরের এই সুনির্দিষ্ট কৌনিক অবস্থান স্থানান্তরের সময়েও যথাযথভাবে বজায় রাখা হয়েছে। এই বিশাল স্থাপনা পরে এক জায়গা থেকে তুলে এনে অক্ষত অবস্থায় একইভাবে নতুন করে বসাবার সময় যে পাঁচ মিলিমিটার এদিক সেদিক হয়েছে হাজার তিনেক বছরের হিসাবে সেটি নগন্য। 

আমরা লেকের ধার দিয়ে হেঁটে  আবু সিম্বেলের প্রথম মন্দিরের সামনে এসে পৌঁছলাম। খাড়া পাহাড়ের শরীরে, সম্রাটের চারটি বিশাল মূর্তি মন্দিরে আগত হাজারো মানুষের মনে হয়তো সম্ভ্রম জাগাতো কিংবা ছড়িয়ে দিতো ভীতি। এখনো উদ্ধত মূর্তিমানরা সর্বময় ক্ষমতার অধিকারি ফারাওয়ের শক্তির পরিচয় দিতেই যেনো জনগণের রক্ষাকর্তা হিসাবে বসে আছেন। ষাট ফুটের চেয়েও দীর্ঘ মূর্তিগুলোর মাঝে ছোট আকারে জায়গা করে নিয়েছে রামসেসের মা রানি টুইয়া, স্ত্রী নেফারতিতি এবং অসংখ্য সন্তানের মধ্যে প্রিয় কয়েকজন। প্রবেশ দ্বারের ঠিক উপরে বসে আছেন বাজপাখির মাথাওয়ালা সূর্যদেব রা-হোরাখথি।


বাইরে কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি করে মূূল মন্দিরে ঢুকবার পথে প্রথমবারের মতো দ্বাররক্ষীদের দ্বারা বাধাগ্রস্ত হলাম। ফারাওর সাক্ষাৎ উত্তর পুরুষ লম্বা জোব্বা এবং মাথায় পাগড়ি পরে দুয়ারে দাঁড়িয়ে ‘লা সুরাতান-লা তসবীর’ বলে আমাদের নিরস্ত করার চেষ্টা করছিলেন। আমাদের চেহারা সুরতে তিনি কী ভেবেছিলেন কে জানে! নব্বই ভাগ মুমিন মুসলমানের দেশের মানুষ হয়েও আমরা যে আরবি জানি না, সে কথা তাকে কে বলবে! অবশ্য বলার আগে তিনি নিশ্চয়ই বুঝে ফেলেছিলেন তাই ‘নো ফটো, নো ভিডিও’ বলে আমাদের বিষয়টা বুঝিয়ে দিলেন। সমস্যা হলো ক্যামেরা রাখবো কোথায়? আমার জিজ্ঞাসার উত্তরে প্রহরী জানালেন ক্যামেরা সাথে নিয়ে যাওয়া যাবে তবে ছবি তোলা যাবে না। আরও একটু আগ বাড়িয়ে বললেন, ‘মোবাইল ফোন ওকে-টেক পিকচার!’ তার অর্থ হলো মোবাইল ফোনে ছবি তুলতে কোনো মানা নেই। বড় হলঘরের দুপাশে আটটি করে কলামের প্রতিটির সামনে দাঁড়িয়ে আছে রামসেসের বিপুলায়তন মূর্তি। দেয়ালে রিলিফের কাজগুলোতে তুলে ধরা হয়েছে যুদ্ধে পরাক্রমশালী ফারাওদের অপ্রতিরোধ্য বিজয়গাথা, শত্রুদের পদানত করে দেবতাদের উপস্থিতিতে তাদের হত্যা করার দৃশ্য। উত্তরের দেয়ালে  হতোদ্যম সেনাবাহিনিকে উজ্জীবীত করে আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ১২৭৪ অব্দের বিখ্যাত কাদেশের যুদ্ধ জয়ের দৃশ্য চিত্রিত। এই দৃশ্যে রথের আরোহী রামসেস তার পলায়নপর শত্রুদের দিকে তীর নিক্ষেপ করছেন! পরের হলটিতে চার স্তম্ভের একটি চত্বরে রামসেস এবং নেফারতারি সিংহাসনে আসীন পবিত্র মন্দিরের তিন মহা-দেবতার সামনে উপস্থিত। দেয়ালগুলোর মতো মন্দিরের সিলিংও বিচিত্র চিত্রকর্মে সাজানো। শকুনরূপী প্রতিরক্ষার দেবী নেখবেত রামসেসের মাথার উপরে সিলিং-এ বসে সম্রাটের প্রতিরক্ষা নিশ্চিত করেছেন। ভেতরের প্রকাণ্ড পাথুরে কলামগুলো দৈর্ঘে প্রস্থে এতোটাই বড় যে এর নির্মাণ শৈলীর কথা ভাবলে শুধু তিনহাজার বছর আগের প্রেক্ষিতে নয় বর্তামানেও আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করেও প্রায় অসম্ভব কাজ বলে মনে হয়। চিত্রিত দেয়ালগুলো জুড়ে আছে দ্বিতীয় রামসেস এবং তার পরিবার পরিজন, মহান দেব দেবী ও সৈন্য-সামন্ত ছাড়াও শিয়াল দেবতা আনুবিসের উদ্দেশ্যে নৈবেদ্য, সারিবদ্ধ শ্রমদাস, সমকালীন জীবন যাপনের চিত্র এবং হাইরোগ্লিফিক লিপিতে লেখা ইতিহাস। বিভিন্ন অংশে ঘুরে ঘুরে দেখার সময় লক্ষ করলাম পশ্চিমা ভ্রাতা-ভগ্নিরা দিব্যি ক্যামেরায় ছবি তুলছেন এবং নিঃশব্দে ভিডিও করে যাচ্ছেন। ধারণা করা যায় এ জন্য জোব্বাধারী দ্বাররক্ষীর হাতে যৎকিঞ্চিত ঈজিপশিয়ান পাউন্ড গুঁজে দিতে হয়েছে। আমাদের গাত্র বর্ণের কারণে মন্দিরের প্রহরী কিছু প্রত্যাশা করেননি, আর আমরাও কিছু দিতেও চাইনি। অতএব মোবাইল ফোনে বেশ কিছু ছবি তুলে বাইরে বেরিয়ে এলাম। 

 

 

পাশের পাহাড়ের ঢালে রামসেসের সবচেয়ে প্রিয় স্ত্রী নেফারতারির উদ্দেশ্যে নির্মিত মন্দির দেখতে যাবার আগে প্রধান মন্দিরের বিশালত্ব বুঝতে হলে বাইরে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা ছাড়া উপায় নেই। একবার ডাইনে একবার বাঁয়ে ছোটাছুটি করে একটু ক্লান্তও হয়ে পড়েছিলাম। মহামন্দির থেকে দুশ গজের মতো দূরে ছোট মন্দিরে যাবার মাঝখানে একটা ছাউনির ছায়ায় বসে অল্প কিছুক্ষণ জিরিয়ে নেয়ার সাথে সাথে ক্যামেরার মেমোরি কার্ড বদলে নিলাম। বেশিক্ষণ বসার উপায় ছিল না। সময় দ্রুত গড়িয়ে যাচ্ছে, কাজেই হাঁটতে শুরু করলাম নেফারতারি দর্শনে।  তুলনামূলকভাবে ছোট হলেও এখানেও মন্দিরের বাইরে চল্লিশ ফুট উঁচু বেদীতে দাঁড়িয়ে আছেন সম্রাট দ্বিতীয় রামসেস ও তাঁর স্ত্রী নেফারতারি। মহান সম্রাট নিজের চারটি এবং প্রিয়তমা স্ত্রীর দুটি  বিশাল মূর্তি স্থাপন করিয়েছেন পাহাড়ের গায়ে। সংখ্যায় দুটি বেশি হলেও উচ্চতায় এখানে দুজনেই সমান। তবে রাজা মশাই বোধহয় নিরাপত্তাজনিত কারণে রাণীমার মূর্তিটি মাঝখানে রেখে নিজে দাঁড়িয়েছেন দুপাশে।  প্রাচীন মিশরের ইতিহাসে নারীদের, এমন কি সম্রাটজ্ঞীদের অনেক ছোট আকারে দেখানো হতো। এখানে দুজনেই বত্রিশ ফুট দীর্ঘ। ফারাওদের রাজত্বে নারীকে সম-মর্যাদা দানের এটি দ্বিতীয় ঘটনা। এর আগে সম্রাট আখেনাতন স্ত্রী নেফারতিতির উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করেছিলেন প্রথম মন্দির। মন্দিরের ভেতরে দেয়াল চিত্রে এখানেও প্রাধান্য পেয়েছে ফারাওদের বিজয় গাথা এবং দেব দেবীর উদ্দেশ্যে নৈবেদ্য, বিশেষ করে দেবী হাথোরের উদ্দেশ্যে সম্রাট ও সম্রাটজ্ঞীর নিবেদনের দৃশ্য। 


আবু সিম্বেল মন্দির প্রাঙ্গনে যে পথে প্রবেশ করেছিলাম, বেরোবার সময় তার বিপরীত দিকের সবুজ গাছপালায় ছাওয়া সুন্দর বাঁধানো পথ দিয়ে লেক নাসের হাতের ডাইনে রেখে পাহাড়ের গায়ে ওড়ানো পতাকার সারি পার হয়ে এলাম। বাইরে বেরিয়ে যাবার আগে বিশ্রাম নেবার জন্যে কয়েকটি সুদৃশ্য ছাউনি থাকলেও আমাদের বসার সময় নেই। আমার রীতিমতো ভাবনা হচ্ছিল, তিনজনকে আসোয়ানে ফেলে রেখেই টুইয়া ভেসে যায় কিনা! কনকোর্সের বাইরে দীর্ঘ সারিতে টুরিস্টদের জন্যে আকর্ষণীয় সব সাজানো সুভ্যেনিয়ার এবং দোকানীদের বিনীত আমন্ত্রণ উপেক্ষা করে আমরা দ্রুত গাড়িতে উঠে বসলাম।  


পথে রানাভাই বলছিলেন রামসেসের জন্মদিন আসলে ২১ ফেব্রুয়ারি আর অভিষেক ২১ অক্টোবর। আবু সিম্বেল স্থানান্তরের পরে পাঁচ মিলিমিটারের গোলমালে এখন দিনের প্রথম সূর্য সম্রাট এবং দেবতাদের অবয়ব আলোকিত করে একদিন পরে একদিন পরে অর্থাৎ ২২ ফেব্রুয়ারি এবং ২২ অক্টোবর। আমি সারাক্ষণ উদ্বেগের মধ্যে থাকায় রানা ভাইয়ের কথাটা তখন খুব ভালো করে উপলব্ধি করতে পারিনি। বেলা সাড়ে এগারোটা বেজে গেছে, আমরা দু ঘণ্টার জায়গায় তিন ঘণ্টা কাটিয়েছি আবু সিম্বেলে। সাড়ে তিন ঘণ্টায় আসোয়ান পৌঁছালেও আড়াইটা বাজবে। তবে আমি টেনশনে থাকলেও ওসামা বেশ নিরুদ্বেগ! আসোয়ানের কাছাকাছি এসে একবার গাড়ি থামিয়ে নিজের এবং রানা ভাইয়ের জন্য অষুধও কিনেছেন। টুইয়া থেকে ভোরে বেরিয়ে যাবার সময় হিসাব রাখার সুবিধার জন্যে আমাদের প্রত্যেকের হাতে একটা করে কার্ড ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। প্রবেশ পথে দাঁড়ানো রিসেপশনিস্ট যখন আমাদের হাত থেকে মাথা গুনতির কার্ড বুঝে নিলেন, তখন ঘড়িতে দুটো বেজে পঁয়ত্রিশ মিনিট। তিনি বিরস বদনে ম্যানেজারকে জানালেন, ‘এখনো পাঁচজনের কোনো খবর নেই।’ আমি ম্যানেজারের উদ্দেশ্যে বললাম, ‘তাহলে আমাদের জন্যে জাহাজ ছাড়তে দেরি হয়নি নিশ্চয়ই।’ ম্যানেজার একটু কাষ্ঠ হাসি দিয়ে বললেন, ‘ইয়া। উই ডোন্ট নো, হাউ লং উই উইল হ্যাভ টু ওয়েট ফর দেম!’ওসামা ঠিকই জানতেন, প্রায় সব সময়েই কেউ না কেউ  দেরি করবেই। মিনিট দশেক পরে সেই শেষ পাঁচজন ফিরে আসার পরে নোঙর তুলে বন্দর ছেড়ে নীল নদের জলে ভেসে চললো টুইয়া। 

 


চলবে...  

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১

Header Ad

দেশব্যাপী প্রথম ধাপে ১৩৯ উপজেলায় ভোটগ্রহণ শুরু

ছবি: সংগৃহীত

দেশব্যাপী ১৩৯টি উপজেলায় ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। বুধবার (৮ মে) সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা চলবে একটানা বিকেল ৪টা পর্যন্ত।

নির্বাচন কমিশন জানায়, প্রথম ধাপে ১৩৯ উপজেলার মধ্যে ২২টিতে ইভিএম ও বাকিগুলোতে ব্যালট পেপারে ভোটগ্রহণ হবে। এই ধাপে মোট ১ হাজার ৬৩৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৫৭০, ভাইস চেয়ারম্যান ৬২৫ এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪৪০ জন প্রার্থী রয়েছেন।

এর মধ্যে বিনা-প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন, ৫ উপজেলার ৮ জন চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১০ জন করে মোট ২৮ জন প্রার্থী।

উপজেলাগুলো হলো, নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলা, মুন্সিগঞ্জ জেলার সদর উপজেলা, বাগেরহাট জেলার সদর উপজেলা, ফেনী জেলার পরশুরাম উপজেলা ও মাদারীপুর জেলার শিবচর।

এছাড়া যৌথবাহিনীর অভিযান চলমান থাকায় পার্বত্য জেলা বান্দরবানে তিনটি উপজেলায় নির্বাচন স্থগিত করেছে ইসি।

ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা

ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা বিবেচনায় গুরুত্বপূর্ণ ও সাধারণ কেন্দ্র বিবেচনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। সেই হিসেবে সাধারণ কেন্দ্রে ১৭ জন ও গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ১৮ বা ১৯ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবেন। এছাড়া দুর্গম এলাকায় সাধারণ কেন্দ্রে ১৯ জন ও গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ২০ বা ২১ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েনের সিদ্ধান্ত জানিয়েছে ইসি। এছাড়া উপজেলার আয়তন, ভোটার সংখ্যা ও ভোটকেন্দ্রের গুরুত্ব বিবেচনায় প্রতি উপজেলায় ২ থেকে ৪ প্লাটুন বিজিবি দায়িত্ব পালন করবেন।

উপকূলীয় এলাকার দ্বীপাঞ্চলে কোস্টগার্ড, মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে। এছাড়াও ভোটারদের নিরাপত্তায় পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবি'র ভ্রাম্যমাণ ও স্ট্রাইকিং ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে। ভোটকেন্দ্রে আনসার ব্যাটালিয়ন মোবাইল/স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে ভোটগ্রহণের আগের দুদিন থেকে, ভোটগ্রহণের দিন ও পরের দুদিনসহ মোট পাঁচদিন নিয়োজিত থাকবেন।

ভোটারের নিরাপত্তায় মাঠে রয়েছেন ১৪ হাজার ৬১০ জন বিজিবি সদস্য, ৪১ হাজার ৫৩০ জন পুলিশ। ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তায় পুলিশের ১১ হাজার ৮৮৩ জন ভ্রাম্যমাণ টিমে রয়েছেন। এছাড়া স্ট্রাইকিং ফোর্স ও অন্যান্য দায়িত্বে রয়েছেন পুলিশের ২৯ হাজার ২২০ জন সদস্য।

অন্যদিকে র‍্যাবের দুই হাজার ৬৪৮ জন ও আনসারের এক লাখ ৫৯ হাজার ৮৭৪ জন সদস্য সার্বিক নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছেন।

এদিকে নির্বাচনি আচরণবিধি প্রতিপালন নিশ্চিত করতে ৪০০ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত আছেন৷ আর বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট রয়েছেন ১৩৯ জন।

অনুপ্রবেশ ঠেকাতে ব্যবস্থা

নির্বাচনের দিন ভোট হওয়া উপজেলাগুলোতে যানচলালে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে ইসি। সেই অনুযায়ী, ভোটগ্রহণের দিন রাত ১২টা পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট নির্বাচনি এলাকায় ট্যাক্সিক্যাব, মাইক্রোবাস, পিকআপ, ট্রাক, লঞ্চ, ইঞ্জিন চালিত বোটসহ অন্যান্য যানবাহন চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এছাড়া ইতোমধ্যে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ রয়েছে। বৃহস্পতিবার মধ্যরাত পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে।

তফসিল ঘোষণার পর থেকে ভোটগ্রহণের তিনদিন পূর্ব পর্যন্ত আচরণবিধি প্রতিপালন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রতি উপজেলায় একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট এবং ভোটগ্রহণের পরের দিন পর্যন্ত প্রতি তিন ইউনিয়নের জন্য একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত থাকছেন। এছাড়া ভোটগ্রহণের দুদিন পূর্ব থেকে ভোট গ্রহণের দুদিন পর পর্যন্ত প্রতি উপজেলায় একজন করে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত থাকছেন।

প্রথম ধাপে ১১ হাজার ৫৫৬ কেন্দ্রের ৮১ হাজার ৮০৪ ভোটকক্ষে ৩ কোটি ১৪ লাখ ৬৮ হাজার ১০২ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে পুরুষ ১ কোটি ৬০ লাখ ২ হাজার ২২৪, নারী ১ কোটি ৫৪ লাখ ৬৫ হাজার ৬৯০ এবং ১৮৮ জন হিজড়া ভোটার রয়েছেন।

মঙ্গলবার (৭ মে) উপজেলা নির্বাচন নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আওয়াল জানান, দলীয় প্রতীকে উপজেলা নির্বাচনের সুযোগ থাকলেও দলীয় মনোনয়ন না থাকায় স্বতন্ত্র হয়ে লড়ছেন প্রার্থীরা। এতে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হবে। স্থানীয় সরকারের ভোট হওয়ায় মন্ত্রী এমপিদের প্রভাব বিস্তার প্রতিরোধে সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছি। প্রভাব বিস্তারের কারণে কিছু কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি।

সিইসি জানান, মাঠ পর্যায়ের পরিস্থিতি প্রতিদিনই সব সময় খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারদের সঙ্গে কথা হচ্ছে। এটা নিশ্চিত করতে হবে নির্বাচনটা যেন অবাধ, নিরপেক্ষ হয়। বিশেষ করে নির্বাচনের দিন কেউ যেন ভোটকেন্দ্রে অনুপ্রবেশ করতে না পারেন এবং সেখানে যেন অনিয়ম না হয়-সে বার্তাটি রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী অনেকে নিবৃত করতে পেরেছি। হয়ত বা অনেকে এলাকায় আছেন। সরকারের তরফ থেকে যতদুর দেখেছি, দলীয়ভাবে হোক বা সরকারের পক্ষ থেকে হোক-যাতে নির্বাচনটা অবাধ, নিরপেক্ষ হয় কেউ যেন প্রভাব বিস্তার না করেন সে বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্তটা স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনে কোনো সংসদ সদস্য প্রভাব বিস্তার করছে কি না, যদি করে থাকেন অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করেছি। ভোটের দিন আমরা সতর্ক থাকবো, কেন্দ্রীয়ভাবে মনিটরিং করবো। প্রভাব বিস্তারের বিষয়টি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে না বলে আশাকরি।

দেশের ৪৯৫টি উপজেলার মধ্যে চার ধাপে ৪৭৬টি উপজেলায় ভোটগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এর মধ্য কিছু উপজেলায় মামলা জটিলতা ও বৈধ প্রার্থীর মৃত্যু ঘটনায় নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। বাকি ১৯টি উপজেলা পরিষদে নির্বাচনের সময় হয়নি, পরবর্তীতে সেসব পরিষদে ভোটগ্রহণ হবে বলে জানায় সংস্থাটি।

ইসি ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, দ্বিতীয় ধাপে ১৬০ উপজেলায় ২১ মে, তৃতীয় ধাপে ১১২ উপজেলায় ২৯ মে ও চতুর্থ ধাপে ৫৫ উপজেলায় ৫ জুন ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম ধাপে ২২টি, দ্বিতীয় ধাপে ২৪টি, তৃতীয় ধাপে ২১ ও চতুর্থ ধাপে দুটি উপজেলায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ করা হবে।

বিমানবন্দরেই মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়েছিল: প্রধানমন্ত্রী

জাতীয় সংসদের অধিবেশনে দেওয়া বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত

তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং আওয়ামী লীগের ভেতর থেকেও ২০০৭ সালের ৭ মে দেশে আসতে বাধা দেওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশে এলে বিমানবন্দরেই মেরে ফেলা হবে, এমন হুমকি দেওয়া হয়েছিল বলে জানান তিনি।

মঙ্গলবার (৭ মে) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে দেওয়া বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। ২০০৭ সালের ৭ মে সব বাধা উপেক্ষা করে দেশে ফেরেন শেখ হাসিনা।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে অনির্ধারিত এই আলোচনার সূত্রপাত করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান। বহুল আলোচিত ওয়ান-ইলেভেনের পর আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষ্যে উত্থাপিত এ আলোচনায় আরও অংশ নেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সংসদ সদস্য আহমদ হোসেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আজকের দিনটা (৭ মে) আমার জীবনের অনন্য দিন, কারণ আমি সেদিন দেশে ফিরে এসেছিলাম শত বাধা অতিক্রম করে। আমাকে সেই সময়ের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অনেক উপদেষ্টাও ফোনে বলেছিল আপনি আসবেন না, আপনি বাইরে থাকেন, যা যা লাগে করব। আবার কেউ কেউ ধমকও দিয়েছিল। এ কথা বলা হয়েছিল, বাংলাদেশে ফিরলে ওই এয়ারপোর্টেই মেরে ফেলে দেবে। আমি বলেছিলাম আলহামদুলিল্লাহ, আমি নিজের দেশের মাটিতেই তো কিন্তু আমি আসব।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সকল এয়ারলাইন্সকে নিষেধ করা হয়েছিল, আমাকে বোর্ডিং পাস যেন না দেওয়া হয়। আমেরিকায় তিন ঘণ্টা এয়ারপোর্টে দাঁড়িয়ে তাদের সঙ্গে ঝগড়া করে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজে লন্ডন পর্যন্ত আসি। লন্ডনে যেদিন আমি বিমানে উঠতে যাব উঠতে দেওয়া হয়নি। সে দিন আমি প্রতিজ্ঞা করেছিলাম যেভাবেই হোক আমি দেশে ফিরব। এমনকি আমি যখন এয়ারপোর্টে রওনা হই, তখন অনেকে আমাকে ফোনে বলেছে আপনি আসবেন না, আসলে আপনাকে মেরে ফেলে দেবে। আমি পরোয়া করিনি। তবে আমি কৃতজ্ঞতা জানাই আমাদের আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ও কর্মী ভাইদের প্রতি।

শেখ হাসিনা বলেন, তখন বলা হয়েছিল যে কেউ যেন এয়ারপোর্ট না যায়। এমনকি আমার দলের ভেতর থেকেও। তখন দলের যিনি সেক্রেটারি ছিলেন তিনি সবাইকে বলে দিয়েছিলেন এয়ারপোর্টে গেলে তাকে বহিষ্কার করা হবে। আর আমাদের নেতা-কর্মী কেউ রাস্তায় থাকতে পারবে না। আমি শুধু একটাই মেসেজ দিয়েছিলাম সবাই থাকবে। আমরা গেরিলা যুদ্ধ করেছি, সবাই থাকবা, তবে ঘাসের সঙ্গে থাকবা, আমি বলেছিলাম আমার প্লেনটা না নামা পর্যন্ত, আমি দরজা খুলে না বের হওয়া পর্যন্ত তোমরা বের হবে না।

তিনি বলেন, আমাকে বলা হয়েছিল, আমি গাড়িতে উঠলে আমাকে একটা অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হবে। আমি ড্রাইভারকে বলেছিলাম যেদিকে মানুষ যাচ্ছে সেদিকে যাবা, ফ্লাইওভারের উপরে উঠবা না। হাজার হাজার মানুষ তখন রাস্তায়। আমার দলের কিছু লোকের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে শুধু সংবর্ধনা নয় আমাকে নিরাপত্তাও দিয়েছে নেতা-কর্মীরা।

তিনি আরও বলেন, সেই সময় কালে ভদ্রে দুই এক জন আমার কাছে আসতে পারত। সাবিনা ইয়াসমিন অসুস্থ, আমি গেরিলা কায়দায় বেরিয়ে গিয়েছিলাম। পুলিশের চোখ এড়িয়ে আমি হাসপাতালে যাই। সেদিন সেখানে আমি খুব কড়া কথা বলি, আমি বলেছিলাম সে সময় দেশ চালাচ্ছে কে? পরের দিন সকালে পুলিশ এসে হাজির। আমাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে আসে সংসদ ভবনের এক পরিত্যক্ত নোংরা ভবনে। সেখানেই আমাকে বন্দি করে রাখা হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধু এই দিন নয়, ৮৩ সালেও এরশাদ সাহেব আমাদের গ্রেপ্তার করে নিয়ে গিয়েছিল ৩০ হেয়ার রোডে লাল দালানে। সেখান থেকে ডিজিএফআই অফিসে নিয়ে যায় জিজ্ঞাসাবাদ করতে। এরশাদ সাহেব আমাকে আরও কয়েকবার গ্রেপ্তার করে। আমি মতিয়া আপা, সাহারা আপা (এখন নেই) আমাদের তিনজনকে এক সঙ্গে নিয়ে কন্ট্রোল রুমে সারা রাত বসিয়ে রাখে। শুধু তাই নয়, বার বার গ্রেপ্তার সরাসরি গুলি বোমা গ্রেনেড সব কিছু অতিক্রম করে আজকে এখানে এসে জনগণের সেবা করতে পারছি। এখন আমি শুধু দাঁড়িয়েছি, বাংলাদেশের জনগণকে কৃতজ্ঞতা জানাতে, দলের নেতা-কর্মীদের কৃতজ্ঞতা জানাতে।

হাত-পা বেঁধে স্বামীর গোপনাঙ্গে সিগারেটের ছ্যাঁকা! সিসিটিভি ফুটেজে পর্দাফাঁস স্ত্রীর

স্বামীকে নির্যাতনের অভিযোগে গ্রেপ্তার স্ত্রী। ছবি: সংগৃহীত

হাত-পা বেঁধে স্বামীর গোপনাঙ্গে সিগারেটের ছ্যাঁকা! শুধু তাই নয়। স্বামীর গোপনাঙ্গে সিগারেটের ছ্যাঁকা দিয়ে তাকে শ্বাসরোধ করে খুনের চেষ্টাও করেন স্ত্রী।

চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের উত্তরপ্রদেশের বিজনোরে। যদিও অভিযুক্ত মহিলার অভিযোগ, স্বামী তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে হেনস্থা করেন। তিনি প্রতিবাদ করলে স্বামী তাকে মেরে ফেলার হুমকিও দেন। যার জেরে নিজের প্রাণ বাঁচাতেই তিনি এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে পুলিসের কাছে দাবি করেছেন অভিযুক্ত স্ত্রী। খবর: জি ২৪ ঘণ্টা

তবে পুলিশ এই ঘটনায় নির্যাতনের অভিযোগে ২৮ বছরের ওই স্ত্রীকে গ্রেফতার করেছে। পুরো ঘটনাটি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে। নির্যাতিত স্বামী বর্তমানে গুরুতর আহত অবস্থায় একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

তার অভিযোগ, অভিযুক্ত মেহের জাহান ২৯ এপ্রিল দুধে নেশার সামগ্রী মিশিয়ে স্বামীকে সেই দুধ পান করতে বাধ্য করেন। এরপর স্বামী বেহুঁশ হয়ে পড়লে স্বামীর হাত-পা বেঁধে তার সারা শরীরে সিগারেটের ছ্যাঁকা দেয়। শুধু তাই নয় সিগারেটের ছ্যাঁকা দিয়ে তার সারা শরীর পুড়িয়ে দেয়। এমনকি গোপনাঙ্গেও ছ্যাঁকা দেয়। গোপনাঙ্গ কেটে ফেলার চেষ্টা করেন বলেও অভিযোগ।

জানা গেছে, গত নভেম্বরের ১৭ তারিখ সেওহারা থানা এলাকার সাফিয়াবাদ গ্রামের বাসিন্দা মেহের জাহানকে বিয়ে করেন মান্নান। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই শুরু হয় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি। স্বামীর অভিযোগ, বিয়ের কয়েকদিন পর তিনি দেখতে পান যে তার স্ত্রী মদ্যপ এবং ধূমপান করেন। তিনি বাধা দিলে স্ত্রী তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেন।

পাল্টা মেহের জাহানেরও অভিযোগ, স্বামী মান্নান তার উপরে নির্যাতন চালান বিবাদের সময়।

সর্বশেষ সংবাদ

দেশব্যাপী প্রথম ধাপে ১৩৯ উপজেলায় ভোটগ্রহণ শুরু
বিমানবন্দরেই মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়েছিল: প্রধানমন্ত্রী
হাত-পা বেঁধে স্বামীর গোপনাঙ্গে সিগারেটের ছ্যাঁকা! সিসিটিভি ফুটেজে পর্দাফাঁস স্ত্রীর
বীর মুক্তিযোদ্ধা খচিত নতুন স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণ শুরু
বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে কড়াকড়ির মানে ‘ডাল মে কুচ কালা হ্যায়’: দেবপ্রিয়
ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে বিমান হামলার সাইরেন
বন্ধুদের আড্ডায় রাসেল ভাইপারের ছোবল, প্রাণ গেল রাবি শিক্ষার্থীর
সিক্স-জি নেটওয়ার্ক নিয়ে হাজির জাপান, গতি ফাইভ-জি’র চেয়ে ২০ গুণ
হ্যাটট্রিক জয়ে সিরিজ নিশ্চিত করল বাংলাদেশ
টাইম ম্যাগাজিনের ১০০ প্রভাবশালীর তালিকায় সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী
তৃতীয় বিয়ের আলোচনার মধ্যে ‘তুফান’ নিয়ে হাজির শাকিব খান
ডেঙ্গুতে আমার মা মারা গেছেন, আর কেউ যেন মারা না যায়: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
সিনেমায় আসছেন সোহেল চৌধুরী–দিতির কন্যা লামিয়া
৬ মাসের মধ্যে শাহজালালের থার্ড টার্মিনাল পুরোপুরি চালু : মন্ত্রী
টানা পঞ্চমবার প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন পুতিন
ডামি ও প্রতারণার উপজেলা নির্বাচনের সঙ্গে জনগণ নেই : রিজভী
কারওয়ান বাজারে হঠাৎ প্রাইভেটকারে আগুন
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে লাগবে ডোপ টেস্ট
ম্যাডোনার কনসার্টে হাজির ১৬ লাখ দর্শক
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে সিঙ্গাপুরের হাইকমিশনারের সাক্ষাৎ