রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৪

কর্নাক থেকে লুক্সর ফেরার পথে মোস্তফা একটা গলি পথে এসে গাড়ি থামিয়ে বললো, ‘ইউ মে হ্যাভ আ লুক!’ আমি নামার আগেই তাকিয়ে দেখলাম নিয়ন সাইনে জ্বলছে ‘নিউ ডেলটা প্যাপিরাস’। বুঝলাম প্যাপিরাসে আঁকা চিত্রকর্মের বিপনী বিতান, সঙ্গে প্যাপিরাস তৈরির কারখানাও থাকতে পারে। নিউ ডেলটা প্যাপিরাসের মতো আলো ঝলমলে দোকানে কিছু কেনা আমাদের সাধ্যে কুলাবে না জেনেও গাড়ি থেকে নেমে ভেতরে ঢুকে পড়লাম। আন্তরিক সম্ভাষণের সঙ্গে শীতল পানীয়ের আপ্যায়ন অনেকটা উপেক্ষা করেই পৌঁছলাম একটা কাউন্টারে। সেখানে সুদর্শন তরুণ সেলসম্যান তাঁর মোটামুটি বোধগম্য ইংরেজিতে প্যাপিরাসের ইতিহাস বর্ণনা শুরু করেছিলেন। বিদেশে গাইডের তত্ত্বাবধানে দল ধরে কোথাও ঘুরতে গেলে এই এক বিড়ম্বনা। সকলেই দাসযুগ থেকে সবকিছুর বিবরণ দিতে শুরু করে। ইংরেজি পেপার শব্দটি যে আসলে প্যাপিরাস থেকেই এসেছে তা আরও একবার তাঁর কাছে শুনলাম। সংক্ষিপ্ত ইতিহাসের পরে তাঁকে থামিয়ে দিলে তিনি প্যাপিরাস গাছের একটি কাণ্ড হাতে তুলে নিয়ে দেখালেন কাগজ তৈরির প্রাগৈতিহাসিক পদ্ধতি।



ঢাকার বলধা গার্ডেনে বছর কুড়ি আগে দু তিনটি প্যাপিরাস গাছ দেখেছিলাম। আমাদের নগরায়নের ঠেলায় সেগুলোর অস্তিত্ব এখনো আছে কিনা আল্লা মালুম। সেই গাছ দেখে আমার ধারণা হয়েছিল কাগজ তৈরি হয় প্যাপিরাস গাছের মণ্ড থেকে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল প্যাপিরাসের সবুজ শরীর থেকে ছুরি দিয়ে পাতলা করে ছাল ছাড়িয়ে পরপর লম্বা করে সাজিয়ে তার উপরে আরেক দফা আড়াআড়ি রেখে চাপ প্রয়োগ করে পরস্পরের সঙ্গে মিলিয়ে দিয়ে তৈরি হয় প্যাপিরাসের ছোট ছোট পাতা। অতীতকালে পাতাগুলো দীর্ঘ সময় ভারি পাথরের নিচে চাপা দিয়ে রাখা হলেও বর্তমানে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে দুটি কাঠের পাটাতনের মাঝে ফেলে যান্ত্রিক চাপে চ্যাপ্টা হয়ে বেরিয়ে আসে এক একটি প্যাপিরাসের কাগজ। আজকাল নাকি কলা গাছের ছাল বাকল তুলেও তৈরি হচ্ছে নকল প্যাপিরাস!

আসল নকলের তফাৎ বোঝাটা আমাদের সাধ্যে কুলাবে না, কিন্তু ‘নিউ ডেলটা প্যাপিরাস’ থেকে তাদের কথিত আসল প্যাপিরাসের চিত্রকর্ম যথোপোযুক্ত মূল্য পরিশোধ করে কেনা যে আমাদের মতো পর্যটকের পক্ষে সম্ভব নয়, তা বুঝতে পেরে দ্রুত বেরিয়ে পড়া ভালো মনে হলো। বেরোতে চাইলেও সহজে বের হওয়া যায় না। অন্ধকার কক্ষে প্যাপিরাসের উপর জ্বলজ্বল করে জ্বলতে থাকা শিল্পকর্ম, আধুনিক ক্যালিগ্রাফি ও হায়রোগ্লিফিক লিপি এবং ফারাও যুগের সম্রাট থেকে ক্রীতদাস পর্যন্ত নানা কথা ও কাহিনির রঙিন দৃশ্যপট এবং তার সঙ্গে বিক্রেতা পক্ষের আহবান কেবলই প্রলুদ্ধ করতে থাকে। তারপরেও শ পাঁচেক ঈজিপশিয়ান পাউন্ডের বিনিময়ে সবচেয়ে ছোট আকারের চিত্রিত প্যাপিরাস সংগ্রহ করা দুঃসাধ্য বলেই শেষ পর্যন্ত বেরিয়ে পড়লাম। শেষতক দেখা গেল বাহরাইন মরোক্কো তো বটেই, দুবাইওয়ালারাও দিরহাম খরচ করে কাগজ কিনতে রাজি নয়। মোস্তফার আধাঘণ্টার ব্যর্থ মিশন শেষে গাড়ি আবার চলতে শুরু করলো লুক্সরের পথে।

রাতের লুক্সরের পথে পথে জ্বলে উঠেছে সন্ধ্যাবাতি। নীল নদের পূর্ব তীর ধরে এক পাশে নদীকে রেখে আমরা শহরের দিকে এগোতে থাকলে ক্রমেই আলোর উজ্জ্বলতা এবং রঙের বৈচিত্র্য বাড়তে থাকে। আলো ঝলমলে বিপনী বিতানগুলো তাদের পশরা সাজিয়ে বাইরে নিয়ন সাইন জ্বালিয়ে আকর্ষণ সৃষ্টি চেষ্টা করলেও ক্রেতার তেমন ভিড় নেই। নীলনদের পশের ফুটপাথে মাথা ভর্তি সবুজ পাতার সারি সারি গাছ এবং ছোট ছোট ছাউনি দেখে নীলের তীর ধরে হাঁটতে ইচ্ছে করে। কিন্তু নদীর পাড়ে পায়ে চলার পথেও তেমন চলাচল চোখে পড়ে না। মিশরীয় তরুণ তরুণীরা কি দুদণ্ড অবসর কাটাতেও এ মুখো হয় না! শহরের পথে ধীর গতির অলস টাঙ্গা এবং মধ্য গতির গাড়ির পাশ কাটিয়ে সামনে এগিয়ে গেলে ফারাও যুগের সারি সারি স্তম্ভ, প্রাচীন ভবনের ধ্বংসাবশেষ এবং পাথরের স্তূপ দেখে লামিয়ার কথার সত্যতা আরও একবার বুঝতে পারি। লুক্সর শহরটা আসলেই বিশ্বের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত মিউজিয়াম।

আধুনিক লুক্সর শহরের প্রাণকেন্দ্রের লুক্সর মন্দিরটি মিশরীয় ভাষায় ‘ইপেত রিসাইত’ নামে পরিচিত, যার অর্থ দাঁড়ায় দক্ষিণের পবিত্রভূমি! যুগে যুগে পবিত্র ভূমি, পবিত্র পীঠ বা পবিত্র উপাসনালয়ের স্থান বদলেছে, সংজ্ঞাও বদলে গেছে। কিন্তু লুক্সর এখনো পবিত্র তো বটেই! তা না হলে শতকরা নব্বই ভাগ সুন্নি মুসলমানের দেশে ফেরাউনের পবিত্র মন্দির এখনো এতো যত্নে এতোটা সতর্কতার সঙ্গে কেউ সংরক্ষণ করে! ফারাও যুগে একটি বার্ষিক উৎসব ছিল এই পবিত্র মন্দিরের প্রধানতম আকর্ষণ। উৎসবের সময় আমুন, মুত ও খনসুর মূর্তি এবং স্ফিংসের সারি কর্নাক থেকে লুক্সরে এনে জড়ো করা হতো। সাধারণত নীল নদের প্লাবনের সময় মূর্তি স্থানান্তরের কাজ করা হলেও সেই অযান্ত্রিক যুগে পাথরের বিশাল মূর্তিগুলো কিভাবে বয়ে আনা হতো, ভাবতেও অবাক লাগে! সারা মিশরের সবগুলো সংরক্ষিত পুরাকীর্তির মধ্যে লুক্সর মন্দিরের সংরক্ষণ কাজ সম্ভবত সবচেয়ে ভালোভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে। তিন হাজার বছর আগের বিস্তৃত অবকাঠামো, সারি সারি দীর্ঘ স্তম্ভ, সুবিশাল মূর্তি এবং চমৎকার খোদাই ও রিলিফের কাজ এখনো পর্যটকদের বিস্ময় জাগায়। লুক্সরের মন্দির না দেখে দেশে ফিরে গেলে আসলে মিশর ভ্রমণ অসম্পূর্ণ থেকে যায়।

আমাদের বাহন এসে লুক্সর মন্দিরের প্রবেশ পথে এসে থামলে আমরা নেমে যাই। অন্য সকল প্রত্নতাত্ত্বিক এলাকায় যেমন ভেতরে প্রবেশের আগে একটা দীর্ঘ চত্বর দেখেছি তেমন কোনো উন্মুক্ত প্রাঙ্গণ এখানে নেই। হতে পারে শহরের একেবারে কেন্দ্রস্থলে বলে বাড়তি জায়গা বের করা সম্ভব হয়নি। কাজেই মোস্তফা টিকেট নিয়ে আসার পরে পায়ে হাঁটার কোনো প্রয়োজন হলো না। আমরা সরাসরি মন্দিরের ভেতরে ঢুকে পড়লাম। ফ্লাড লাইটের উজ্জ্বল আলোয় চারিকি ঝকঝক করছে। তবে সংস্কার কাজের জন্য ভেতরের পায়ে চলার পথের অনেকটাই প্লাস্টিকের চাদরে মোড়া আবার কোথাও পথ বন্ধ করে ডাইনে বাঁয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা দল বেধে ঢুকলেও কিছুক্ষণের মধ্যেই বিচ্ছিন্ন হয়ে যে যার মতো এগোতে থাকি। মূল মন্দিরের বিশাল তোরণ পেরিয়ে ভেতরে প্রবেশের পরে আমার কানে আসে কোরআন থেকে তেলাওয়াতের সুর। দুপাশে দ্বিতীয় রামেসেসের প্রকাণ্ড প্রস্তর মূর্তি রেখে আরও সামনে এগোলে সুরেলা কণ্ঠে কোরআনের পরিচিত সুরার আবৃত্তি স্পষ্ট হতে থাকে।

কোরআন তেলাওয়াতের উৎস খুঁজতে এদিক সেদিক তাকিয়ে চোখে পড়ে এক জায়গায় মন্দিরের একটি অংশে ঢুকে পড়েছে মসজিদ। উঁচু মিনার আলোকমালায় সাজানো আর সেখান থেকেই ভেসে আসছে তেলাওয়াতের সুর। নুবিয়া থেকে বয়ে আনা বেলে পাথরে নির্মিত লুক্সর মন্দিরে চারিদিকে ইটের তৈরি দেয়াল ঈশ্বর এবং মানুষের জগৎকে পৃথক করে রেখেছিল। সম্ভবত মিশরে ইসলামের আবির্ভাবের পরে গড়ে উঠেছিল মসজিদ আর তখনই সেই আভিজাত্যের দেয়াল ভেঙে মন্দিরের ভেতরে ঢুকে পড়েছে মসজিদ। মানুষের প্রার্থনার জন্যে নির্মিত হলেও এটিও তো আসলে ঈশ্বরেরই ঘর। ফারাও দেবতাদের প্রাঙ্গণে ঢুকে পড়ার পরে ইসলামের পতাকাবাহীরা যে পুরো মন্দিরে ধ্বংসযজ্ঞ চালায়নি সে জন্য পুরো মানব সভ্যতা তাদের কাছে কৃতজ্ঞ।

তবে মন্দিরটি প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতার সকল ভাব গাম্ভীর্য এবং বিশালতা নিয়ে নির্মিত হলেও লুক্সরের মন্দিরটি কোনো বিশেষ সম্রাট বা দেবতার উদ্দেশ্যে নিবেদিত নয়, বরং ফারাও রাজত্বের পুনরুত্থানকে মহিমান্বিত করতেই এটি নির্মিত হয়েছিল। অনেক অনেক সম্রাটের অভিষেক হয়েছিল এই মন্দিরে, হয়তো কখনো তা বাস্তবে আবার কখনো কেবলই ধারণায় কল্পিত আনুষ্ঠানিকতায়। অনেকেই দাবী করেন আলেক্সান্ডার দ্য গ্রেটকেও মুকুট পরানো হয়েছিল এখানে লুক্সরের মন্দিরে। কিন্তু বাস্তবতা হলো তিনি কখনোই প্রাচীন নগরী মেমফিস অর্থাৎ বর্তমানের কায়রো শহরের দক্ষিণে আসেননি।

দ্বিতীয় রামেসেসের অতিকায় মূর্তির পায়ের কাছে দাঁড় করিয়ে যখন আমার সফর সঙ্গিনীর ছবি তোলার চেষ্টা করছি তখন একজন জোব্বাধারী একাধিকবার ইশারা করে আমাদেরকে একটু বাঁ দিকে সরে ভেতরের দিকে এসে ছবি তোলার জায়গা দেখিয়ে দিচ্ছিলেন। এই জোব্বাধারীরা আর্কিওলজিক্যাল সাইটের এক ধরনের নিরাপত্তা প্রহরী। রামেসেসের পায়ের কাছে রাতের অপর্যাপ্ত আলোর কারণে ভাবলাম যাই দেখি জোব্বাধারী নির্দেশিত জায়গায়। জায়গাটা আরও বেশি অন্ধকার বলে ছবি তোলার তো প্রশ্নই ওঠে না, কিন্তু রাজ প্রহরী এবারে তার হাতের বৃদ্ধঙ্গুলি এবং তজর্নীতে ঘষা দিয়ে ইশারায় কিঞ্চিত বখশিশ দাবী করে বসলো। জায়গাটা আলো আঁধারি, তাই তাড়াতাড়ি আলোয় এসে বাংলায় বললাম, ‘তোমার উদ্দেশ্য মহৎ হলে কিছু বখশিশ দেওয়া যেতো, কিন্তু তুমি লোকটা খুব সুবিধার না।’ এরপরে দ্রুত তোরণ পার হয়ে পৌঁছলাম পরবর্তী প্রাঙ্গণে।

প্রাচীন মিশরের অন্যতম প্রধান স্থপতি ফারাও তৃতীয় আমেন হোটেপ লুক্সর মন্দিরের নির্মাণ কাজ শুরু করেছিলেন। পরবর্তী ফারাও বংশধরদের মধ্যে তুতেনখামেন এবং হোরেমহেব নির্মাণ এবং সম্প্র্রসারণে যুক্ত থাকলেও কাজটি সম্পন্ন করেছেন আবার সেই দ্বিতীয় রামেসেস। সম্রাট তাঁর দীর্ঘ রাজত্বকালে অনেক প্রকল্প গ্রহণ করেছেন, নতুন নির্মাণ করেছেন, পুরাতনের সংস্কার করেছেন সন্দেহ নেই। তবে তিনি একই সঙ্গে নিজের বীরত্ব, খ্যাতি ও গৌরবগাথা ইতিহাসে যুক্ত করার আকাক্সক্ষা থেকে বিদ্যমান অনেক মূর্তি ও পুরোনো ুনির্মাণ থেকে অন্যদের হটিয়ে দিয়ে নিজের মূর্তি পুনঃস্থাপন করেছেন। ফলে মূর্তি, দেয়াল চিত্র এবং খোদাইয়ের কাজের প্রায় সবটা জুড়েই আছেন দ্বিতীয় রামেসেস। অর্থাৎ ক্ষমতা হাতে পেলে পুরাতন স্থাপনা, সড়ক, সেতু কিংবা মাঠ ময়দানের নাম বদলে দেওয়া বা পুরোনা কীর্তিমানদের ভাস্কর্য সরিয়ে দিয়ে নিজেদের অহংকারের ইতিহাস তুলে ধরার যে সংস্কৃতি চারিদিকে দেখা যাচ্ছে, হাজার বছর আগেও তা বেশ প্রচলিত ছিল বলেই মনে হয়।

লুক্সরের মন্দিরের ভেতরে পুরো চত্বর জুড়ে অস্থায়ী কিছু নির্মাণ কাজ, বা আরও স্পষ্ট করে বললে বলা যায় সাজসজ্জার কাজ চলছে। কাঠের কাঠামো এবং হার্ডবোর্ড ব্যবহার করে তৈরি হচ্ছে তোরণ, আঙ্গিনা জুড়ে পাতা হয়েছে ঢাকনা দেওয়া বিলাসবহুল কুরসি। রাতেও কাজ চলছে বলে মিস্ত্রিদের হাতুড়ি ঠোকাঠুকির শব্দে কারো কথাই ঠিক শোনা যায় না। তাই রানা ভাই যখন বললেন, ‘সিসি আসছেন, তাই সাজ সাজ রব’ কথাটা প্রথমে বুঝতেই পারলাম না। এরপর রানা ভাই কাছে এসে খোলাসা করে বললেন,ও লুক্সর থেকে কর্নাকের প্রাচীন সড়ক সংস্কারের পরে নতুন করে উদ্বোধন করতে মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ সাঈদ হুসেন খলিল এল সিসি মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ সাঈদ হুসেন খলিল এল সিসি লুক্সর আসবেন, তারই প্রস্তুতি চলছে।’ নামের বাহার দেখে মনে হলো প্রেসিডেন্ট হবার উপযুক্ত নামই বটে! যে কোনো মহামহিমের শুভাগমন উপলক্ষে আমাদের দেশে যেমন তোরণ, মঞ্চসজ্জা, ব্যানার ফেস্টুন সামিয়ানা এবং চামচা মোসাহেবদের সদর্প পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে, এ্যারাব রিপাবলিক অফ ঈজিপ্টই বা তার ব্যতিক্রম হতে যাবে কেন!

লুক্সরের মন্দিরটি ফারওদের নব রাজত্বের যুগের অনেক বৈশিষ্ট্য ধারণ করে আছে। বিশাল হল ঘর, তিন দিক বেষ্টিত স্তম্ভের সারি, হল পেরিয়ে অপরিসর প্রবেশ দ্বারের ওপারে পাথরের চওড়া দেয়াল ঘেরা অভ্যন্তরীন কক্ষ। দেয়াল এবং স্তম্ভগুলোর চিত্রমালায় ফুটে উঠেছে সে যুগের বীরত্বগাথা, নানা যুদ্ধ জয়ের কাহিনি। আমরা একের পর এক ছোট বড় নানা প্রাসাদ প্রাকার অতিক্রম করে শেষ প্রান্তে পৌঁছে দেখতে পাই পিলার ঘেরা প্রাসাদের বাইরেও সাজানো রয়েছে হাজার হাজার বছর আগের ছোট বড় ভাস্কর্যের ভগ্নাবশেষ, চিত্রিত প্রস্তর খণ্ডের ছোট বড় টুকরো ও শিলালিপি। অপর্যাপ্ত আলো এবং সময়ের স্বল্পতার জন্যে এই অবহেলিত অংশ পুরোটা ঘুরে দেখা সম্ভব হলো না। মোস্তফার বেধে দেওয়া সময় অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। তারপরেও বাইরে এসে দুই দুবাইবাসীর জন্যে গাড়িতে বসে অপেক্ষা করতে হলো আরও মিনিট দশেক।

চলবে...

এসএ/

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১

Header Ad
Header Ad

টাঙ্গাইলে ট্রাক-সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষে চালকসহ নিহত ২

ছবি: সংগৃহীত

টাঙ্গাইলের মধুপুরে ট্রাক-সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই জন নিহত হয়েছেন। শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০ টার দিকে টাঙ্গাইল-জামালপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের মধুপুর পৌর এলাকার কাইতকাই রূপালী ফিলিং স্টেশনের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- ধনবাড়ী উপজেলা পৌর এলাকার চরভাতকুড়া গ্রামের মৃত হাতেম আলীর ছেলে সিএনজি চালা হেলাল উদ্দিন (৫৫)। অপরজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি। তবে তিনি সিএনজি যাত্রী ছিলেন।

রবিবার (২৭ এপ্রিল) সকালে মধুপুর থানার ডিউটি অফিসার মো. মনজুরুল হক এ বিষয়টি নিশ্চিত করছেন।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, শনিবার রাতে দুর্ঘটনা কবলিত সিএনজি ধনবাড়ীর দিকে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে বিপরীত দিক থেকে আসা দ্রুতগতির ট্রাকের সাথে সংঘর্ষ হয়। এতে সিএনজির চালক ঘটনা স্থলে মারা যান। এ সময় গুরুতর আহত হয় এক যাত্রী।

এরপর তাকে উদ্ধার করে মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। পরে রাতেই হাসপাতালে তিনি মারা যায়।

এ ব্যাপারে মধুপুর থানার ডিউটি অফিসার মো. মনজুরুল হক জানান, নিহত সিএনজি চালকের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

অপরদিকে, অজ্ঞাত ওই যাত্রীর পরিচয় পাওয়া যায়নি, শনাক্তের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় আইনগত বিষয় প্রক্রিয়াধীন।

Header Ad
Header Ad

হজের ফ্লাইট শুরু মঙ্গলবার, উদ্বোধন করবেন ধর্ম উপদেষ্টা

হজের ফ্লাইট শুরু মঙ্গলবার। ছবি: সংগৃহীত

পবিত্র হজ ফ্লাইট শুরু আগামী মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল)। ওই দিন ৪১৯ জন সৌদি আরবের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন। হজের প্রথম ফ্লাইট উদ্বোধন করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন।

চলতি বছর ৮৭ হাজার ১০০ জন পবিত্র হজ পালনে সৌদি আরব যাবেন। এর মধ্যে ৫ হাজার ২০০ জন হজযাত্রী সরকারি ব্যবস্থাপনায় এবং বাকি ৮১ হাজার ৯০০ জন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ পালন করবেন।

প্রথম ফ্লাইটটি রাত ২টা ১৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সৌদি আরবের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। হজ ব্যবস্থাপনাকে নির্বিঘ্ন করতে সরকারি পর্যায়ে ১১২ জন এবং বেসরকারি পর্যায়ে ১ হাজার ৭৪৩ জন গাইড দায়িত্ব পালন করবেন। পাশাপাশি ৭০ জন মোয়াল্লেম হজযাত্রীদের সার্বিক সহায়তা করবেন।

হজযাত্রী পরিবহনের জন্য প্রস্তুত রয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসসহ তিনটি এয়ারলাইনস। ৩১ মে পর্যন্ত হজের ফ্লাইট চলবে। ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে ১০ জুন এবং শেষ হবে ১০ জুলাই।

পবিত্র হজ উপলক্ষে এ বছর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস পরিচালনা করবে ১১৮টি, সাউদিয়া ৮০টি এবং নাস এয়ারলাইনস ৩৪টি ফ্লাইট।

হজের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো আরাফাতের ময়দানে হজের খুতবা, যা ৯ জিলহজ মসজিদে নামিরা থেকে প্রদান করা হয়। এবারও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সরাসরি সম্প্রচারিত হবে হজের খুতবা, এবং তাৎক্ষণিক অনুবাদ করা হবে ২০টি ভাষায়। 

যেসব ভাষায় হজের খুতবা অনুবাদ করা হবে সেগুলো হলো- বাংলা, ফরাসি (ফ্রেঞ্চ), মালয়, উর্দু, ফারসি, চাইনিজ, তুর্কি, রাশিয়ান, হাউসা, ইংরেজি, সুইডিশ, স্প্যানিশ, সোয়াহিলি, আমহারিক, ইতালিয়ান, পর্তুগিজ, বসনিয়ান, মালায়লাম, ফিলিপিনো এবং জার্মান। 

উল্লেখ্য, ১৪৪৬ হিজরির ৯ জিলহজ (চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ২০২৫ সালের ৫ জুন) পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে।

Header Ad
Header Ad

ইরানের বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহত বেড়ে ১৪, আহত সাড়ে ৭ শতাধিক

ছবি: সংগৃহীত

ইরানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বন্দর শহিদ রাজিতে ভয়াবহ রাসায়নিক বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১৪ জন। আহতের সংখ্যা ইতোমধ্যেই ৭৫০ ছাড়িয়ে গেছে। শনিবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে হরমুজগান প্রদেশের রাজধানী বন্দর আব্বাসের কাছে অবস্থিত এই বন্দরে ঘটে বিপর্যয়টি।

ইরানের জরুরি সেবাবিভাগের মুখপাত্র বাবাক ইয়াকতেপেরেস্ট বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আহতদের স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে এখনও উদ্ধার তৎপরতা চলছে, তবে বিষাক্ত ধোঁয়ার কারণে তা ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার মুখপাত্র হোসেন জাফারি জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে নাশকতার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তিনি বার্তাসংস্থা আইএলএনএ-কে জানান, একটি কনটেইনারে থাকা রাসায়নিক পদার্থ থেকেই এই বিস্ফোরণের সূত্রপাত হয়। তিনি বলেন, “বিভিন্ন মাধ্যমে অনেক গুজব ছড়ানো হচ্ছে, তবে সেগুলোতে কান না দিয়ে সরকারি তথ্যের জন্য অপেক্ষা করা উচিত।”

সরকারি বার্তাসংস্থা ফার্স নিউজ জানিয়েছে, ছোট পরিসরে আগুন লাগার পর তা দ্রুত আশপাশে ছড়িয়ে পড়ে এবং একাধিক বিস্ফোরণ ঘটে। স্থানীয় আবহাওয়া ছিল অত্যন্ত গরম এবং পরিবেশে দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুনের তীব্রতা দ্রুত বেড়ে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের অনেকে জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের শক্তি এতটাই প্রবল ছিল যে ৫০ কিলোমিটার দূর থেকেও কম্পন অনুভূত হয়েছে। স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানায়, দুর্ঘটনাকবলিত কনটেইনারগুলোর মধ্যে সালফারজাতীয় রাসায়নিক থাকার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। যদিও কনটেইনারগুলোর সুনির্দিষ্ট উপাদান এখনো প্রকাশ করা হয়নি।

সরকারি বার্তাসংস্থা ইরনার প্রতিবেদনে বলা হয়, শহিদ রাজি বন্দরটি ইরানের সবচেয়ে আধুনিক সামুদ্রিক বন্দরগুলোর একটি। এটি হরমুজ প্রণালির উত্তরে, বন্দর আব্বাস থেকে প্রায় ২৩ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত। এই প্রণালি দিয়েই বিশ্বের মোট উৎপাদিত তেলের পাঁচ ভাগের এক ভাগ পরিবহন করা হয়, ফলে এ বন্দরের নিরাপত্তা আন্তর্জাতিক দৃষ্টিকোণ থেকেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

টাঙ্গাইলে ট্রাক-সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষে চালকসহ নিহত ২
হজের ফ্লাইট শুরু মঙ্গলবার, উদ্বোধন করবেন ধর্ম উপদেষ্টা
ইরানের বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহত বেড়ে ১৪, আহত সাড়ে ৭ শতাধিক
ধর্ষণের শিকার জুলাই আন্দোলনে শহীদের মেয়ের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
সিন্ধুর পানি ছাড়ল ভারত, হঠাৎ বন্যায় ডুবলো পাকিস্তানের কাশ্মীর
রিয়ালের হৃদয়ভাঙা রাত, কোপা দেল রে চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনা
উত্তরায় সেলফি তুলতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় তরুণ-তরুণীর মৃত্যু
জাতীয় গ্রিডে যান্ত্রিক ত্রুটিতে ১০ জেলায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট
আবারও দুই ধাপে ৬ দিনের ছুটি পাচ্ছেন সরকারি চাকরিজীবীরা
পাকিস্তানি হামলার আশঙ্কায় বাঙ্কারে আশ্রয় নিচ্ছেন ভারতীয়রা
চীনা প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করলো বিএনপি
আওয়ামী লীগ ভারতের গোলামী করা দল : নুরুল হক নুর
ইরানের রাজাই বন্দরে শক্তিশালী বিস্ফোরণ, আহত ৫১৬ জন
প্রায় দুই ঘণ্টা পর মেট্রোরেল চলাচল স্বাভাবিক
গোবিন্দগঞ্জে মৃত আওয়ামী লীগ নেতার নামে জামাতের মামলা
গুজরাটে ১ হাজারের বেশি বাংলাদেশি গ্রেফতারের দাবি পুলিশের
নওগাঁর রাণীনগর ও আত্রাই বাসীর গলার কাঁটা ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ অবশেষে সংস্কার
যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে মেট্রোরেল চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ
গোবিন্দগঞ্জে গাঁজাসহ ট্রাকের চালক-হেলপার গ্রেপ্তার
আদমদীঘিতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা তোহা গ্রেপ্তার