রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব ২৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান

লাঠিটা ছিল মোটা বেঁটে একটা কাঠের রুলার। কালি আর দাগদাগালি ভরা। এম বার্নার্ড কোনো এক ছাত্রের কাছ থেকে শাস্তিস্বরূপ কেড়ে নিয়েছিলেন। নিজের জায়গা থেকে উঠে বালক লাঠিটা তুলে দিত এম বার্নার্ডের হাতে। তিনি একটুখানি বিদ্রুপের হাসি ছড়িয়ে লাঠিটা হাতে নিতেন এবং দুপা ছড়িয়ে দাঁড়াতেন। বালকটা শিক্ষকের হাঁটুর মাঝখানে মাথা রাখত। আর তিনি তাকে আটকে রেখে পাছায় কষে বাড়ি মারতেন। আপরাধের মাত্রা বুঝে বাড়ির সংখ্যা নির্ধারিত হতো, দুপাশে সমান সমান। এই শাস্তির প্রতিক্রিয়া ছাত্রের স্বভাবের ওপর নির্ভর করত: কেউ কেউ গায়ে বাড়ি লাগার আগেই কেঁদে ফেলত। এম বার্নার্ড দেখতেন, ছাত্র শাস্তির স্বাদ আগেই পাওয়া শুরু করেছে।

কেউ কেউ হাত দিয়ে পাছা আড়াল করার চেষ্টা করত। তখন তিনি হালকা দুচারটে বাড়ি দিয়ে আগে হাত এক পাশে সরিয়ে দিতেন। কেউ কেউ তীব্র ব্যথায় বেপরোয়াভাবে পিঠ বাঁকিয়ে তুলত। আরেক রকম প্রতিক্রিয়া দেখা যেত অন্যদের বেলায়। এদের মধ্যে ছিল জ্যাক: শুধু ব্যথায় কাঁপতে থাকত, তবে মুখে কোনো রকম ব্যথার উচ্চারণ করত না। অশ্রুর বন্যা ঠেকানোর জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করে যেত। এই শাস্তির সবচেয়ে লক্ষণীয় বিষয় ছিল এর কোনো বিরূপ প্রতিক্রিয়ার প্রকাশ না ঘটা। প্রথমত এই শিশুরা প্রায় সবাই বাড়িতে আচ্ছামতো পিটুনি খেতে খেতে বড় হতো এবং তাদের সবার ধারণাই ছিল ছোটদের বড় করার জন্য মারের দরকার আছে। তাদের বড় করার এটাও একটা পদ্ধতি। আরেকটা কারণ হলো, শিক্ষক সবার প্রতি সমান নজর দিতেন। কাউকে আপন কাউকে পর মনে করতেন না। সবাই আগেই জানত, কোন আইনের বরখেলাপ হলে এরকম শাস্তি পেতে হবে। সাধারণত একই রকম অপরাধের জন্যই এরকম শাস্তি দেওয়া হতো। অর্জিত নম্বর থেকে বাদ দেওয়ার শাস্তি পাওয়ার মতো অপরাধের চেয়ে গুরুতর অপরাধ করলে এই শাস্তি পেতে হবে সেটাও সবাই জানত। সর্বোচ্চ নিরপেক্ষতা বজায় রেখেই এমন শাস্তি দেওয়া হতো।

ক্লাসের সবচেয়ে ভালো ছাত্র থেকে শুরু করে সবচেয়ে খারাপ ছাত্র পর্যন্ত একই রকম শাস্তির বিধান করা হতো। জ্যাককে এম বার্নার্ড খুব ভালোবাসতেন। তবু গুরুতর কোনো অপরাধ করে থাকলে সেও এই শাস্তির শিকার হতো। দেখা যেত, আগের দিন এম বার্নার্ড তার খুব প্রশংসা করেছেন, আবার পরের দিনই তাকে এই শাস্তি পেতে হচ্ছে। একদিন জ্যাক ব্ল্যাকবোর্ডে সঠিক উত্তর লিখলে এম বার্নার্ড জ্যাকের গণ্ডদেশে আদর করে দিলেন। তখনই ক্লাসের ভেতর থেকে কে যেন ফিসফিস করে বলে উঠল, ‘স্যারের পোষা ছাত্র’। তিনি জ্যাককে আরো কাছে টেনে নিয়ে বললেন, হ্যাঁ, আমি করমারির প্রতি পক্ষপাতি। তোমাদের মধ্যে যারা যুদ্ধে বাবাকে হারিয়েছ তাদের সবার প্রতিই আমি সম মাত্রায় পক্ষপাতি। আমি তাদের বাবাদের সঙ্গে যুদ্ধে অংশ নিয়েছি, আমি বেঁচে এসেছি। কাজেই এখানে আমি আমার প্রয়াত বন্ধুদের জায়গায় নিজেকে দেখতে চেষ্টা করি। এরপর যদি কেউ বলতে চাও আমার ‘পোষা’ ছাত্র আছে তাহলে উঠে দাঁড়িয়ে কথা বলো। তার এই কথার উত্তরে শুধু নীরবতা ছাড়া আর কিছু শোনা গেল না। দিনের শেষে জ্যাক জিজ্ঞেস করেছিল, কে তাকে স্যারের পোষা বলে আখ্যা দিয়েছিল। এরকম অপমান নীরবে মেনে নেওয়া মানে সম্মানের হানি করা।

আমি বলেছিলাম, মুনোজ নামের একটা শ্বেতাঙ্গ থলথলে চেহারার বিরস মুখের ছেলে উত্তর দিল। সে অবশ্য সব সময় সবার সামনে নিজেকে জাহির করার মতো ছেলে নয়। তবু সব সময় জ্যাকের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করত।

জ্যাক বলল, ঠিক আছে। তাহলে তোর মা একজন বেশ্যা। কাউকে অপমান করার মতো বহুল প্রচলিত মন্তব্যের অন্যতম ছিল তার মা সম্পর্কে কিংবা মৃত কোনো আত্মীয় সম্পর্কে এরকম মন্তব্য। স্মরণাতীত কাল থেকে ভূমধ্যসাগরের তীরবর্তী এলাকায় প্রচলিত এরকম কটু মন্তব্য বিবাদী দুপক্ষের মধ্যে তাৎক্ষণিকভাবে সংঘর্ষের সূচনা করে দিতে পারে। তবু মুনোজ যেন কিছুটা দ্বিধায় পড়ে রইল। কিন্তু প্রচলিত নিয়ম তো অন্য কিছুর সঙ্গে আপোষ করবে না। অন্যরা তার হয়ে কথা বলতে লাগল, ঠিক আছে, দেখা হবে সবুজ মাঠে। সবুজ মাঠ মানে একটা পড়ো জায়গা। তাদের স্কুল থেকে খুব দূরে নয়। ফেলে দেওয়া লোহার বলয়, টিনের কেনেস্তারা, মরচেপড়া পিপা বোঝাই এবং মামড়ি-পড়া রুগ্ন ঘাস গজানো একটা জায়গা। এখানেই ডোনাদগুলো সংঘটিত হতো। ডোনাদ মানে দ্বন্দ্বযুদ্ধ। এখানে তরবারির জায়গায় থাকে শুধু যোদ্ধার মুষ্টি। তবে তরবারি যুদ্ধের সঙ্গে অন্য সব দিক থেকে মিল আছে এই যুদ্ধের, বিশেষ করে যোদ্ধাদের আত্মিক অবস্থার দিকে থেকে। দুজনের একজনের হয়তো সম্মানে আঘাত লেগেছে। আর সেই আঘাতের ফলে সৃষ্ট ঝগড়ার মীমাংসা করার এটা একটা পদ্ধতি।

এরকম ঝগড়ার অবশ্য অনেক কারণ থাকতে পারে: হয়তো কেউ বাবা মা কিংবা মৃত কোনো আত্মীয়কে তুলে গালি দিয়েছে, জাতি তুলে কথা বলেছে, সরাসরি না হলেও অন্যের মাধ্যমে কারো দ্বারা এরকম কোনো কটুক্তির কথা শুনেছে, কোনো জিনিস চুরি গেছে, কিংবা চুরির অপবাদ দেওয়া হয়েছে, কিংবা আরও কত কী হতে পারে, বিশেষ করে অল্প বয়সীদের সমাজে যেসব হয়ে থাকে আর কী। যখন কারো দ্বারা সরাসরি কেউ অপমানিত হয় কিংবা অন্যের মুখে শুনে থাকে তৃতীয় কোনোজন তাকে এরকম অপমানের কথা বলেছে তখন সেটার একটা হেস্তনেস্ত হতেই হবে। আর মীমাংসার প্রচলিত চ্যালেঞ্জটা হলো, বিকেল চারটেয় সবুজ মাঠে। চ্যালেঞ্জ একবার ঘোষণা হয়ে গেলে মুখে মুখে ছড়ানো উসকানিমূলক কথাবার্তা আপাতত বন্ধ থাকে এবং সব ধরণের চাপা কানাঘুষাও থেমে যায়। প্রতিদ্বন্দ্বী দুজন একজন আরেকজনের থেকে দূরে দূরে থাকে এবং তাদের চারপাশে নিজ নিজ বন্ধু-সহচররা ঘুর ঘুর করতে থাকে।

পরবর্তীতে যেসব ক্লাস হয় সেখানে এক বেঞ্চ থেকে আরেক বেঞ্চে প্রতিদ্বন্দ্বী দুজনের নাম দ্রুত ছড়াতে থাকে। অন্যরা তাদের দিকে আড় চোখে তাকাতে থাকে। তাদের কারণে পৌরুষ জাহির করার জন্য যে চাপা দৃঢ়তা প্রদর্শনের দরকার সেটা নষ্ট হয়ে যায়। তাদের এরকম মুখোমুখি হওয়ার মধ্যে আরেকটা লক্ষণীয় বিষয় হলো প্রতিপক্ষকে মোকাবেলার সময় যতই এগিয়ে আসে তাদের মধ্যে সবচেয়ে সাহসী ব্যক্তিও নিজের কাজকর্মে মাঝে মাঝে বেখেয়াল হয়ে যায়। কারণ তখন তো তাকে সংঘর্ষের মুখোমুখি হতে হবে। তবে প্রতিপক্ষ শিবিরের কাউকে এমন সুযোগ দেওয়া যাবে না যাতে তারা তাচ্ছিল্যের ভাব দেখাতে পারে, কিংবা প্রতিদ্বন্দ্বী ব্যক্তি ঘোষিত সময়কে অসম্মান করেছে বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলতে পারে। নইলে তারা ওকে ‘শালা কাপুরুষ’ বলে গালি দিতেও ছাড়বে না।

মুনোজকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে জ্যাক তার পৌরুষ জাহির করেছে ঠিকই, কিন্তু ভেতরে ভেতরে সে-ও শঙ্কিত বোধ করেছে। আগেও যখন এরকম সংঘর্ষপূর্ণ পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে তখনও শঙ্কিত বোধ করেছে। তবে সময় মতো আবার একাই পরিস্থিতি সামাল দিতে পেরেছে। কিন্তু সিদ্ধান্ত যা নেওয়ার সে নিয়ে ফেলেছে, এখন আর ফেরার প্রশ্নই ওঠে না। সে জানে, এরকম পরিস্থিতির বাস্তবতা; সত্যি সত্যি যখন যুদ্ধে অংশগ্রহণ করবে তখন আগেকার সব আশঙ্কা তার নিজের হিংস্রতার বাতাসেই উড়ে যাবে। আগেও সে দেখেছে, এই হিংস্রতাই তাকে জিতিয়ে দিয়েছে। তবে নিজের এরকম হিংস্রতার কারণেই মনের ভেতর খচখচ করেছে।

সেদিন বিকেলে মুনোজের সঙ্গে দ্বন্দ্বের সবকিছু প্রথা অনুযায়ীই ঘটল। যোদ্ধারা দুজনই তাদের সহযোগীদের সঙ্গে করে মাঠে হাজির হলো। তাদের দুজনের ব্যাগও তাদের সহযোগীরা নিয়ে এল। তাদের পিছে পিছে এসে হাজির হলো উৎসাহী দর্শকদের দল। যুদ্ধক্ষেত্রে যোদ্ধাদের ঘিরে তারা সবাই গোল হয়ে দাঁড়াল। যোদ্ধারা তাদের হাফ প্যান্ট এবং প্রাবার খুলে তাদের সহযোগীদের হাতে দিল। জ্যাকের উত্তুঙ্গ ভাব তার অনুকূলে কাজে দিল: প্রথমেই সে আঘাত হানল এবং আঘাতে মুনোজ পিছু হটতে বাধ্য হলো।

মুনোজ কিছুটা দ্বিধান্বিত হয়ে জ্যাকের আঘাতটা ঠেকিয়ে দিয়ে তার চোয়াল বরাবর একটা ঘুষি মারল। তাতে জ্যাকের ভেতরের অন্ধ ক্রোধ আরো বেড়ে গেল এবং চারপাশের চিৎকার, হাসি আর দর্শকদের ভীড়ের ভেতর থেকে আসা অনুপ্রেরণায় তার ভেতরের শক্তি যেন ফুঁসে উঠল। সর্বশক্তি দিয়ে মুনোজের ওপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে ঘুষির বৃষ্টি নামাতে লাগল সে। বিমূঢ় মুনোজের ওপরে জ্যাক কনুইয়ের একটা ভয়ঙ্কর রকমের আঘাত হানল। তারপর একটা দশাসই ঘুষি বসিয়ে দিল তার হতভাগা প্রতিপক্ষের ডান চোখের ওপরে। পুরোপুরি ভারসাম্যহীন অবস্থায় মুনোজ মাটির ওপরে পাছা ঠেকিয়ে পড়ে গেল। তার এক চোখ বেয়ে অশ্রু গড়াতে শুরু করল। আরেক চোখ সঙ্গে সঙ্গে ফুলে উঠল। জ্যাক এরকম একটা ঘুষি চালাতেই চেয়েছিল। কেননা মুনোজের ফোলা চোখ সামনের বেশ কয়েক দিন জ্যাকের বিজয়ের প্রমাণ বয়ে বেড়াবে। তার চোখের হাল দেখে দর্শকেরা গলা ফাটিয়ে একটা উল্লাসের চিৎকার ছুড়ে দিল। মুনোজ সহজে আর উঠে দাঁড়াতে পরল না। এই ফাঁকে জ্যাকের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু পিয়েরে মুষ্টিযুদ্ধের বৃত্তের ভেতর ঢুকে পড়ে কর্তৃত্বপূর্ণ কণ্ঠে জ্যাককে বিজয়ী ঘোষণা করে দিল। তারপর জ্যাককে জ্যাকেট পরতে এবং প্রাবার কাঁধে রাখতে হাত লাগাল। দেরি না করে পিয়েরে মাঠ ছেড়ে যেতে থাকলে একদল সমর্থক তাদের পিছে পিছে যেতে থাকল। ততক্ষণে মুনোজ উঠে দাঁড়াচ্ছে। তার চারপাশে অল্প কয়েকজন সমর্থক মাত্র; সবার মুখ বিষ্ন্ন। এত বড় বিজয় এত তাড়াতাড়ি আসবে জ্যাক কল্পনাও করতে পারেনি।

বিজয়ের দ্রুততায় তার মাথা যেন এলোমেলো হয়ে গেছে। চারপাশে বন্ধুদের অভিনন্দন এবং যুদ্ধের আলঙ্কারিক বর্ণনা তার কানে খুব একটা ঢোকে না। সে আনন্দিত হতে চেয়েছিল এবং হয়েছে। মনের কোন কোণায় যেন অহংকারের আকাক্সক্ষা যেন পূর্ণ হয়ে গেছে। তবু মাঠ ছাড়ার সময় পিছে ফিরে তাকিয়ে তার নিজের হাতে পরাজিত মুনোজের অন্ধকার মুখটা তার মনটাকে কেমন যেন মিইয়ে দেয়। তখন তার মনে হয়, যুদ্ধ জিনিসটা আসলে ভালো কিছু নয়: কাউকে পরাস্ত করার মধ্যে নিজে পরাস্ত হওয়ার কষ্টটাই থাকে।

চলবে...

এসএ/

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১

Header Ad
Header Ad

উত্তরায় সেলফি তুলতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় তরুণ-তরুণীর মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর উত্তরায় সেলফি তোলার সময় ট্রেনের ধাক্কায় এক তরুণ ও এক তরুণী প্রাণ হারিয়েছেন। শনিবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় উত্তরা পূর্ব থানার ৮ নম্বর সেক্টরের শেষ প্রান্তের রেলক্রসিং এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে তরুণ-তরুণী রেললাইন দিয়ে হাঁটছিলেন এবং সেলফি তুলছিলেন। এ সময় ঢাকাগামী ও টঙ্গীগামী দুটি ট্রেন একযোগে রেলক্রসিং অতিক্রম করছিল। এ সময় টঙ্গীগামী ট্রেনের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই তরুণী মারা যান।

গুরুতর আহত অবস্থায় তরুণটিকে প্রথমে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে নেয়া হয় এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই রাত ৮টার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক জানান, উত্তরা থেকে আহত অবস্থায় এক তরুণকে হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার মরদেহ জরুরি বিভাগে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে রেলওয়ে থানা পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে।

তবে দুর্ঘটনায় নিহতদের নাম-পরিচয় এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Header Ad
Header Ad

জাতীয় গ্রিডে যান্ত্রিক ত্রুটিতে ১০ জেলায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট

ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় গ্রিডে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ১০টি জেলা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। শনিবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় খুলনাসহ দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।

ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো) লিমিটেড সূত্রে জানা গেছে, গোপালগঞ্জের আমিনবাজার এলাকায় জাতীয় গ্রিডে ত্রুটি দেখা দেওয়ায় এই বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়। রাত ৮টার পর থেকে পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হতে শুরু করে এবং পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা হচ্ছে। তবে পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে আরও কিছু সময় লাগবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

বিদ্যুৎ না থাকায় এইসব অঞ্চলের সাধারণ মানুষকে প্রচণ্ড গরমের মধ্যে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। বিদ্যুৎনির্ভর সব ধরনের কাজকর্মও ব্যাহত হয়েছে।

উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৪ সালে দেশে বড় ধরনের একটি গ্রিড বিপর্যয় ঘটেছিল। সেবার ভারত থেকে আসা বিদ্যুৎ সরবরাহ কয়েক সেকেন্ডের জন্য বন্ধ হয়ে পড়ায় সারাদেশ প্রায় ৩০ ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন ছিল।

Header Ad
Header Ad

আবারও দুই ধাপে ৬ দিনের ছুটি পাচ্ছেন সরকারি চাকরিজীবীরা

ছবি: সংগৃহীত

বিভিন্ন দিবস, উৎসব এবং সাপ্তাহিক ছুটির সঙ্গে নির্বাহী আদেশের সুবিধা কাজে লাগিয়ে আবারও ছুটি কাটানোর সুযোগ পাচ্ছেন সরকারি চাকরিজীবীরা। মে মাসে দুই দফায় টানা তিনদিন করে মোট ছয়দিনের ছুটির সুযোগ আসছে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সরকারি ছুটির প্রজ্ঞাপন অনুসারে, আগামী ১ মে (বৃহস্পতিবার) আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষে সরকারি ছুটি থাকবে। এরপর ২ ও ৩ মে যথাক্রমে শুক্রবার ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় সরকারি কর্মচারীরা টানা তিনদিনের ছুটি উপভোগ করতে পারবেন।

এছাড়া, আগামী ১১ মে (রবিবার) বুদ্ধ পূর্ণিমার ছুটি রয়েছে। এর আগে ৯ ও ১০ মে যথাক্রমে শুক্রবার ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় আবারও টানা তিনদিন ছুটি মিলবে।

এর আগে গত মার্চ-এপ্রিল মাসে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সরকারি চাকরিজীবীরা টানা নয়দিন ছুটি কাটানোর সুযোগ পেয়েছিলেন। সরকার ২৮ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত ঈদের ছুটির সঙ্গে নির্বাহী আদেশে আরও একটি অতিরিক্ত ছুটি যুক্ত করেছিল।

ছুটির বিধিমালা অনুযায়ী, দুই ছুটির মাঝে নৈমিত্তিক ছুটি নেওয়ার নিয়ম নেই। তবে অর্জিত ছুটি বা পূর্বনির্ধারিত ঐচ্ছিক ছুটি নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। বছরের শুরুতে নিজ ধর্ম অনুযায়ী তিনদিনের ঐচ্ছিক ছুটি অনুমোদন নিয়ে ভোগ করার নিয়মও চালু আছে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

উত্তরায় সেলফি তুলতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় তরুণ-তরুণীর মৃত্যু
জাতীয় গ্রিডে যান্ত্রিক ত্রুটিতে ১০ জেলায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট
আবারও দুই ধাপে ৬ দিনের ছুটি পাচ্ছেন সরকারি চাকরিজীবীরা
পাকিস্তানি হামলার আশঙ্কায় বাঙ্কারে আশ্রয় নিচ্ছেন ভারতীয়রা
চীনা প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করলো বিএনপি
আওয়ামী লীগ ভারতের গোলামী করা দল : নুরুল হক নুর
ইরানের রাজাই বন্দরে শক্তিশালী বিস্ফোরণ, আহত ৫১৬ জন
প্রায় দুই ঘণ্টা পর মেট্রোরেল চলাচল স্বাভাবিক
গোবিন্দগঞ্জে মৃত আওয়ামী লীগ নেতার নামে জামাতের মামলা
গুজরাটে ১ হাজারের বেশি বাংলাদেশি গ্রেফতারের দাবি পুলিশের
নওগাঁর রাণীনগর ও আত্রাই বাসীর গলার কাঁটা ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ অবশেষে সংস্কার
যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে মেট্রোরেল চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ
গোবিন্দগঞ্জে গাঁজাসহ ট্রাকের চালক-হেলপার গ্রেপ্তার
আদমদীঘিতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা তোহা গ্রেপ্তার
নাটকীয়তা শেষে রাতে ফাইনালে মুখোমুখি রিয়াল-বার্সা
মাদকাসক্ত ছেলেকে ত্যাজ্য ঘোষণা করলেন বাবা
গরমে লোডশেডিং নিয়ে সুখবর দিলেন জ্বালানি উপদেষ্টা
পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের ক্রিকেটীয় সম্পর্ক ছিন্ন করা উচিত: সৌরভ গাঙ্গুলি
র‍্যাফেল ড্রতে ৯ কোটি টাকা জিতলেন দুই প্রবাসী বাংলাদেশি
৬২ জন পুলিশ সদস্য পাচ্ছেন বিপিএম ও পিপিএম পদক