শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব ১৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান

চেয়েছিলেন জ্যাকের বড়ভাই হেনরি যেন বেহালা বাজানো শেখে। বেহালা বাজানো শেখার কাজ এড়িয়ে যাওয়ার জন্য জ্যাক বলেছিল, এই অতিরিক্ত কাজের বোঝা নিয়ে স্কুলে ভালো ফলাফল করতে পারবে না। সুতরাং তার ভাই একটা নিষ্প্রাণ বেহালা থেকে কায়ক্লেশে অতি ভয়ঙ্কর কিছু শব্দ বাজাতে শিখেছিল। সে কয়েকটা নকল সুরে জনপ্রিয় গান বাজাতে পারত। কণ্ঠ ভালো থাকায় জ্যাকও ওই গানগুলো গাইতে পারত। তবে ওই নিষ্পাপ অবসর বিনোদনের ভয়াবহ ফলাফল সম্পর্কে তাদের কোনো ধারণা ছিল না।

নানির বিবাহিত মেয়েদের দুজন তাদের স্বামীদের হারিয়েছিলেন যুদ্ধে। তারা এবং অন্য বিবাহিত মেয়েরা রবিবারে বেড়াতে আসতেন। নানির আরেক বোন ছিলেন। তিনি সাহেলের এক খামারে বাস করতেন এবং স্প্যানিস ভাষার চেয়ে অবলীলায় বরং মাহুন উপভাষায় কথা বলতেন। তারা সবাই রবিবারে কেউ না কেউ আসতেনই। আর তখন নানি তার নাতিদের ডাকতেন তাদের সামনে প্রত্যুৎপন্ন সংগীতের কনসার্টের জন্য। দুরু দুরু বুকে তারা সংগীতের একটা ধাতব স্ট্যান্ড এবং সুপরিচিত সুর সংবলিত খাঁজকাটা দুটো পৃষ্ঠা নিয়ে আসত।

তাদের ওই দায়িত্ব থেকে রেহাই ছিল না বলে হেনরির বেহালার আঁকাবাকা সুরের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আপ্রাণ চেষ্টা করে জ্যাক র‌্যামোনার গান গাইত: র‌্যামোনা, আমি একটা অদ্ভূত স্বপ্ন দেখেছি; শুধু তুমি আর আমি চলে এসেছি, শুধু তুমি আর আমি; কিংবা, নাচো, ও আমার প্রিয়তমা, আজ রাতে শুধু তোমাকেই ভালোবাসবো। কিংবা প্রাচ্যে থেকে যাওয়ার গান: চীনের রাত, আদর সোহাগের রাত, প্রেমের রাত, পরমানন্দের রাত, কোমলতার রাত–ইত্যাদি ইত্যাদি। কোনো সময় নানি তাদেরকে জীবনমুখি গান গাইতে বলতেন। জ্যাক গাইত, প্রিয়তম, সত্যিই এই তুমি কি সেই তুমি যাকে আমি এত ভালোবেসেছি, যে আমাকে কথা দিয়েছিলে। খোদা জানেন, তুমি কথা দিয়েছিলে কখনও কাঁদাবে না আমাকে। এই গানটিই জ্যাক খুব দরদ দিয়ে গাইত। কারণ গানের বিষয়বস্তুর নায়িকা একদল লোকের ভীড়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে মর্মস্পর্শী ধ্রুবপদ বার বার গাইত: তখন তার সামনে যেন তার অবাধ্য প্রেমিককে ফাঁসি দেওয়া হচ্ছে।

তবে নানির পছন্দ ছিল আরেকটা গান; সে গানটার বিষাদময় কোমল সুর যেন তার অন্তর ছুঁয়ে যেত। গানটা ছিল টসেলির সেরেনাদ। সে গানটাতে হেনরি এবং জ্যাক তাদের নিজস্ব ভঙ্গির মিশেল দিত। অবশ্য আলজেরীয় উচ্চারণ গানটির নৈশকালীন মুগ্ধ আবহ ফুটিয়ে তোলার জন্য উপযুক্ত ছিল না। রৌদ্রজ্জ্বল বিকেলে এবড়ো থেবেড়ো করে সাদা রং করা দেয়ালের হতদরিদ্র অবস্থায় সজ্জিত রুমে কালো পোশাক পরিহিত চার পাঁচজন মহিলা স্পেনদেশীয় মহিলাদের মাথা এবং কাঁধ ঢাকার কালো ওড়না দিয়ে তাদের মাথা থেকে নামিয়ে হেনরি এবং জ্যাকের গানের কথা আর সুরের সঙ্গে হালকাভাবে মাথা দোলাতে থাকতেন। নানি অবশ্য অন্যদের মতো কালো ওড়না ব্যবহার করতেন না।

সারেগামার প্রথম সা থেকে শেষের সা পর্যন্ত কোনোটাই তিনি উচ্চারণ করেননি কোনোদিন এবং সুরপরম্পরার সংকেতগুলোর নামও জানতেন না। তবু হঠাৎ যখন তিনি কাঠখোট্টাভাবে বলে উঠতেন, এই যে এখানে ভুল হয়ে গেল, তখনই অন্যদের মাথা দোলানো বন্ধ হয়ে যেত। আর গায়ক এবং বাদকের পালের হাওয়া যেত পড়ে। দুরূহ যাত্রা যখন তার রুচিকে সন্তুষ্ট করার পর্যায়ে চলে এসেছে নানি বলে উঠতেন, আমার ওসব জানা আছে। আবার গান শুরু হলে মহিলারা মাথা দোলানো শুরু করতেন এবং গান শেষে দুজন কলাকোবিদকে বাহবা দিতেন। গায়ক বাদকও তাদের সরঞ্জামাদি তাড়াতাড়ি গুছিয়ে নিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে যোগ দেওয়ার জন্য রাস্তায় বের হয়ে যেত। শুধু ক্যাথরিন করমারি এক কোণে চুপচাপ বসে থাকতেন।

জ্যাকের আজো মনে আছে, একদিন গানের পালা শেষ করে তারা বের হচ্ছে কোনো এক খালা তার গানের প্রশংসায় মাকে কিছু একটা বললেন এবং মা তার জবাবে বললেন, ভালোই পারে। ছেলের বুদ্ধি আছে। কথাটা শুনে জ্যাকের মনে হলো, মায়ের কথাদুটো আলাদা। তবে দুটোর মধ্যে কোথায় যেন একটা সংযোগ আছে। বের হওয়ার সময় পেছন ফিরে তাকিয়ে জ্যাক পরিষ্কার বুঝতে পারল, সংযোগটা কোথায়: মায়ের মুখমণ্ডল জুড়ে শিহরণ, তার শান্ত চোখ জোড়ায় উপচেপড়া ব্যাকুলতা। মায়ের গভীর অর্থময় দৃষ্টি যেন তাকে পিছে টানছে, দ্বিধায় ফেলে দিচ্ছে। এরপর জ্যাক ছুটে বেরিয়ে গেল। মা আমাকে ভালোবাসেন। মা তাহলে ভালোবাসেন আমাকে–সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে নিজেকেই শোনাতে লাগল জ্যাক। একই সময় সে উপলব্ধি করতে পারল, মাকে সেও পাগলের মতো ভালোবাসে, বুঝতে পারল, মায়ের ভালোবাসা পওয়ার জন্য সমস্ত হৃদয় তার ব্যাকুল হয়েছিল এতদিন, আরও বুঝতে পারল, ওই মুহূর্তের আগ পর্যন্ত তার মধ্যে দ্বিধা ছিল, মা সত্যিই তাকে ভালবাসেন কি না।

পাড়ার ছবি ঘরে আরেক আনন্দের উৎস ছিল বালক জ্যাকের জন্য। সেখানেও তার এক বিশেষ ভূমিকা পালন করতে হতো। এই ভূমিকা পালন করতে হতো রবিবার অথবা বৃহষ্পতিবার বিকেলে। পাড়ার সিনেমা হলটা ছিল তাদের বাড়ির ঠিক নিচের রাস্তায়। সিনেমা হল এবং ওই রাস্তার নাম ছিল একজন রোমান্টিক কবির নামে। সিনেমা হলে ঢোকার পথে থাকত আরব ফেরিঅলাদের এলোপাথারিভাবে সাজানো পসরার প্রতিবন্ধকতা: কেউ কেউ বিক্রি করত চীনাবাদাম, লবণ মাখানো শুকনো মটরদানা, এক ধরনের গোখাদ্যের ফল ভাজা, গাঢ় রঙের চিনি মেশানো জবভাজা এবং আঠালো টক লাড্ডু। অন্য কেউ বিক্রি করত জমকালো পেস্ট্রি; সেগুলোর মধ্যে ছেড়ে দেওয়া থাকত গোলাপী রঙের চিনি ছড়ানো পিরামিড সদৃস কুঞ্চন। অন্য কেউ আবার হয়তো বিক্রি করত আরবীয় কায়দায় তেল আর মধুতে ডোবানো ফলের পাতলা টুকরো। মিষ্টি খাদ্যগুলোর দ্বারা আকৃষ্ট হতো দলে দলে মাছি আর ছোট ছেলেমেয়েরা। একে অন্যকে ধাওয়া করার কারণে ভনভনানি আর চিৎকার চেঁচামেচি একাকার হয়ে মিশে যেত ফেরিঅলাদের খিস্তির সঙ্গে।
ফেরিঅলারা নিজ নিজ পসরার খাবারের নিরাপত্তা বিধানের জন্য মাছি আর ছেলেমেয়েদের দলকে একই রকম অঙ্গভঙ্গির দ্বারা তাড়াতে থাকত। কোনো কোনো ফেরিঅলা সিনেমা হলের একপাশে বর্ধিত তাবুর নিচে জায়গা পেত। অন্যরা তাদের আঠালো খাবারের পসরা কড়া সূর্যালোক আর বাচ্চাদের সৃষ্ট ধূলির নিচে ফেলে রাখতে বাধ্য হতো। জ্যাক তার নানিকে সিনেমা হলে নিয়ে যেত। সিনেমায় যাওয়া উপলক্ষে নানির সাদা চুল পেছনের দিকে টেনে মসৃণ করে বাঁধা থাকত আর তার চিরন্তন কালো পোশাক রূপালি পিন দিয়ে আটকানো থাকত। হাউকাউ করা বাচ্চাদের ভীড় অবলীলায় সরিয়ে নানি এক টিকেট কাউন্টারের সামনে গিয়ে ‘সংরক্ষিত’ আসনের টিকেট কিনতেন। ‘সংরক্ষিত’ আসন মানে ভাঁজ করে রাখা চেয়ার যেগুলো খুলে বসার সময় বাজে এক ধরনের শব্দ তৈরি হতো। আরেক ধরনের আসন ছিল বেঞ্চ: সেগুলোতে সাধারণত ছোট ছেলেমেয়েরাই বেশি বসত।

শেষ মুহূর্তে পাশের একটা দরজা খুলে দেওয়া হলে তারা নিজেদের আসন নিয়ে ঝগড়া করতে করতে প্রবেশ করত। আসলে ওই দুধরনের আসন ছাড়া আর কোনো রকমের আসন ব্যবস্থা ছিল না। প্রত্যেক বেঞ্চের শেষ মাথায় একজন করে প্রবেশক থাকত। শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য তার হাতে থাকত চামড়ার চাবুক; প্রায়ই দেখা যেত, সে কোনো বাচ্চাকে কিংবা বয়স্ক কাউকে অমার্জিত আচরণের জন্য সিনেমা হল থেকে বের করে দিচ্ছে। সেকালে সিনেমা থিয়েটারে প্রথমে দেখানো হতো নির্বাকচিত্র, সংবাদচিত্র, তারপর স্বল্পদৈর্ঘ্য কমেডি, সেটাই হতো প্রধান বিষয় এবং সর্বশেষে ধারাবাহিক কাহিনীচিত্র; এরকম কাহিনীর প্রদর্শনী গড়ে সপ্তাহে এক পর্ব দেখানো হতো। নানির বিশেষ পছন্দের ছিল ওই ধারাবাহিকগুলো, বিশেষ করে যেগুলো প্রতিপর্বে শেষ হতো অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে। যেমন পেশীবহুল নায়ক আহত সাদাচুলের নায়িকাকে কোলে নিয়ে গিরিখাতের স্রোতের ওপরে তৈরি লতাগুল্মের সেতু পার হওয়া শুরু করেছে; সাপ্তাহিক পর্বে সর্বশেষ আলোক সম্পাতে দেখা যেত, একটা উল্কি আঁকা হাত একটা ভোতা ছুরি দিয়ে ওই সেতু কেটে দিচ্ছে।

সিনেমা হলের ভেতরের বেঞ্চের দর্শকদের সতর্কবাণী সত্ত্বেও নায়ক তার পথে সগর্বে এগিয়ে যেত। নায়ক-নায়িকা ওখান থেকে পালিয়ে যেতে পারবে কি না সেটা বড় কথা নয়, সন্দেহ নেই পারবেই। আসল কথা হচ্ছে, তারা কীভাবে নিজেদের মুক্ত করবে সেটাই। আর সে কারণেই এত আরব আর ফরাসি দর্শক পরবর্তী সপ্তাহে আসবে এবং দেখবে ঈশ্বর প্রদত্ত কোনো বিশাল গাছ এসে প্রেমিক প্রেমিকাকে ইহপতন থেকে রক্ষা করে দিচ্ছে। গোটা প্রদর্শনী জুড়ে মূল চলচ্চিত্রের সঙ্গে সিনেমা হলের ভেতর থেকে জীবন্ত একজন বয়স্কা অনূঢ়ার পিয়ানো বাদন শোনা যেত। মিনারেল পানির বোতলের মতো পিঠ প্রদর্শন করে সে বেঞ্চে বসা দর্শকদের দাঁত কেলানো হাসির সঙ্গে একাত্বতা প্রকাশ করত। সে সময় জ্যাকের মনে হতো, প্রচণ্ড গরমের ভেতর মহিলার আঙুলবিহীন দস্তানা পরাটা একটা বিশেষ উল্লেখযোগ্য বিষয়। তার কাজটা যে যত সহজই মনে করুক না কেন আসলে খুব সহজ ছিল না। যখন যে দৃশ্য দেখানো হতো সেটার সঙ্গে তাল মিলিয়ে সুর বদল করে বাজাতে হতো।

বসন্ত উৎসবের সঙ্গে প্রাণবন্ত চার কিংবা পাঁচ যুগল নৃত্যের জন্য যে সুর সেখান থেকে চোপিনের চীনে বন্যার কারণে দাফন যাত্রার সুরে যাওয়ার সময় কিংবা জাতীয় অথবা আন্তর্জাতিক মানের কোনো ব্যক্তির দাফন দৃশ্যের সুরে যাওয়ার সময় বিশেষ লক্ষণীয় কোনো ক্রান্তি টানত না সে। সে যে সুরই বাজাত সেটাই অবিচলভাবে বাজাত যেন গোটা দশেক ছোট যান্ত্রিক বাদ্যযন্ত্র চিরতরে ক্ষমতা-প্রাপ্ত ঘড়ির যন্ত্রাংশের মতো ওই পুরনো হলুদ হয়ে যাওয়া কীবোর্ডটা যথাযথভাবে চালিয়ে যাচ্ছে। নামমাত্র দেয়ালঘেরা এবং মেঝেতে চীনাবাদমের খোসা ছড়ানো হলের মধ্যে ক্রেসিলের গন্ধ মিশে যেত মনুষ্য শরীরের কড়া গন্ধের সঙ্গে। হলের মধ্যে কান ঝালাপালা করা হৈচৈ থামানোর জন্য পিয়ানো বাদিকার ভূমিকা ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ: পূর্ণ প্যাডালে গৌরচদ্রিকায় চলে যেত সে এবং এতেই ম্যাটিনি শোর দর্শকদের মধ্যে ভাব চলে আসত।

চলবে...

এসএ/

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১

Header Ad
Header Ad

নাটকীয়তা শেষে রাতে ফাইনালে মুখোমুখি রিয়াল-বার্সা

ছবি: সংগৃহীত

রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনার মুখোমুখি লড়াই মানেই ফুটবল দুনিয়ায় বাড়তি উত্তেজনা। স্প্যানিশ ফুটবলের এই দুই মহারথীর লড়াই কেবল মাঠের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এতে মিশে আছে স্পেন ও কাতালুনিয়ার জাতিসত্ত্বার লড়াই এবং রক্তাক্ত গৃহযুদ্ধের ইতিহাসও।

এবারের কোপা দেল রে ফাইনালে (শনিবার দিবাগত রাত ২টা, বাংলাদেশ সময়) আবার মুখোমুখি হচ্ছে রিয়াল ও বার্সা। তবে এবারের লড়াইয়ে যোগ হয়েছে ভিন্ন মাত্রা। রেফারিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে রিয়াল মাদ্রিদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে অস্থিরতা। সেভিয়ায় ফাইনালের আগে নির্ধারিত অনুশীলন করেনি রিয়াল, সংবাদ সম্মেলনেও আসেননি কোচ ও খেলোয়াড়রা। এমনকি দুই ক্লাবের কর্মকর্তাদের আনুষ্ঠানিক নৈশভোজেও থাকছেন না রিয়াল প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ। গুঞ্জন উঠেছিল, রিয়াল হয়তো ফাইনাল বয়কটও করতে পারে। তবে শেষ পর্যন্ত ক্লাব কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা খেলবে।

এদিকে, বার্সেলোনার সামনে রয়েছে ট্রেবল জয়ের স্বপ্ন টিকিয়ে রাখার চ্যালেঞ্জ। লা লিগায় শীর্ষে থাকা বার্সা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালেও জায়গা করে নিয়েছে। কোপা দেল রে শিরোপা তাদের ট্রেবল যাত্রার প্রথম ধাপ হতে পারে।

 

ছবি: সংগৃহীত

বার্সার জন্য দুঃসংবাদ, ইনজুরির কারণে দলের নির্ভরযোগ্য স্ট্রাইকার রবার্ট লেভানডফস্কি এই ফাইনালে খেলতে পারবেন না। তার জায়গায় শুরুতে দেখা যেতে পারে ফেরান তোরেসকে। তবে দলের বাকিরা সুস্থ ও প্রস্তুত রয়েছেন। লিগের শেষ ম্যাচে অধিকাংশ মূল খেলোয়াড় বিশ্রামে থাকায় বার্সেলোনা কিছুটা সতেজ ভাবেই নামবে মাঠে।

রিয়াল মাদ্রিদেও রয়েছে ইনজুরি সমস্যা। দলের ফরাসি তারকা কিলিয়ান এমবাপে চোটে পড়েছিলেন আর্সেনালের বিপক্ষে ম্যাচে। শেষ মুহূর্তে তার ফিটনেস দেখে মাঠে নামানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে ডিফেন্ডার ফার্লান্দ মেন্ডি ফাইনালে থাকছেন না, এটা নিশ্চিত।

এখন পর্যন্ত সামগ্রিক এল ক্লাসিকোতে রিয়াল মাদ্রিদ এগিয়ে—১০৫ জয়। বার্সেলোনা জয় পেয়েছে ১০২ ম্যাচে। তবে কোপা দেল রে’র ইতিহাসে এগিয়ে আছে বার্সা। ৩৭ দেখায় বার্সা জিতেছে ১৬ ম্যাচ, রিয়াল ১৩টি। ৮ ম্যাচ ছিল ড্র।

তবে কোপা দেল রে’র ফাইনালে ৭ বার এল ক্লাসিকো অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে রিয়াল জিতেছে ৪ বার এবং বার্সা ৩ বার।

চলতি মৌসুমে দুই দলের দুই দেখায় দুটিতেই বার্সেলোনা জয়ী হয়েছে—লা লিগায় ৪-০ এবং সুপারকোপা দে এস্পানার ফাইনালে ৫-২ ব্যবধানে।

 

স্টেডিয়াম: দে লা কার্তুহা, সেভিল
সময়: বাংলাদেশ সময় শনিবার দিবাগত রাত ২টা

 

Header Ad
Header Ad

মাদকাসক্ত ছেলেকে ত্যাজ্য ঘোষণা করলেন বাবা

ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লার মুরাদনগরে নাঈম সরকার (১৯) নামের এক যুবককে মাদকাসক্তির কারণে ত্যাজ্য ঘোষণা করেছেন তার বাবা মফিজুল ইসলাম। ছেলের মাদকাসক্তি ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের কারণে তিনি এ সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন।

মফিজুল ইসলাম উপজেলার কোম্পানীগঞ্জের নগরপাড় এলাকার বাসিন্দা। তিনি বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) কুমিল্লা নোটারী পাবলিক কার্যালয়ে এক হলফনামার মাধ্যমে ছেলে নাঈমের সঙ্গে পারিবারিক, সামাজিক ও আর্থিক সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করেন।

হলফনামায় মফিজুল উল্লেখ করেন, নাঈম একাদশ শ্রেণির ছাত্র হলেও দীর্ঘদিন ধরে মাদকাসক্ত। সে মদ, গাঁজা, ইয়াবাসহ বিভিন্ন নেশাজাত দ্রব্যে আসক্ত হয়ে পড়েছে। এতে পরিবারে প্রতিনিয়ত অশান্তি সৃষ্টি হচ্ছিল। গভীর রাতে বাড়ি ফেরা, মা-বাবার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা এবং নানা অনৈতিক কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়েছিল নাঈম। পরিবারের মান-মর্যাদা রক্ষার স্বার্থে তার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে মফিজুল ইসলাম বলেন, "সন্তানের এমন বিপথগামী আচরণে আমি অত্যন্ত মর্মাহত। বহু চেষ্টা করেও তাকে সঠিক পথে ফেরাতে ব্যর্থ হয়েছি। অবশেষে পরিবার ও সমাজের সম্মান রক্ষার্থে তার সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করতে বাধ্য হয়েছি।"

Header Ad
Header Ad

গরমে লোডশেডিং নিয়ে সুখবর দিলেন জ্বালানি উপদেষ্টা

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। ছবি: সংগৃহীত

দেশজুড়ে ক্রমাগত গরম বাড়ছে। সামনে তাপমাত্রা আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফলে লোডশেডিং ও ভোগান্তি বেড়ে যাওয়ার শঙ্কায় রয়েছে সাধারণ মানুষ। তবে এ নিয়ে আশার খবর দিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।

তিনি বলেন, "এবারের গরমে লোডশেডিং সহনীয় পর্যায়ে থাকবে। আমরা সীমিত পর্যায়ে তা নিয়ন্ত্রণে রাখার পরিকল্পনা নিয়েছি। আমাদের প্রজেকশনে ১৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য রয়েছে। আশা করছি, অনেকটাই ম্যানেজ করতে পারবো।"

শনিবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনের বিজয় হলে ফোরাম ফর এনার্জি রিপোর্টারস বাংলাদেশ (এফইআরবি) আয়োজিত 'জ্বালানি সংকট উত্তরণের পথ' শীর্ষক সেমিনারে বক্তব্য রাখার সময় তিনি এসব কথা বলেন।

সেমিনারে উপদেষ্টা আরও জানান, লোডশেডিংয়ের ক্ষেত্রে শহর ও গ্রামের মধ্যে সমন্বয় রক্ষা করা হবে। জ্বালানি আমদানি করে বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল রাখতে হবে। এলএনজি আমদানির ক্ষেত্রে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপে (পিপিপি) যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

সরকারের মেয়াদ স্বল্প হওয়ায় কাজের সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করে মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, "জ্বালানির ক্ষেত্রে যেকোনো কাজ সম্পন্ন করতে সময় লাগে। আমরা এমন কিছু হাতে নিচ্ছি না, যা সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে বকেয়া পরিশোধে। বিল পরিশোধ না করলে কোনো দেশ ব্যবসা করবে না।"

তিনি আরও জানান, আগামী দুই মাসের মধ্যে সিস্টেম লস ৫০ শতাংশ কমানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। লাইন লিকেজ ও গ্যাস চুরির বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে বিভিন্ন প্রকল্পে অপ্রয়োজনীয় ব্যয়ও কমিয়ে আনা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "আগামী বছর আর কোনো বকেয়া থাকবে না, শুধুমাত্র কারেন্ট পেমেন্ট দিতে হবে। ভর্তুকি বাড়বে না, বরং কমবে। আমরা যে সংকটের গহ্বরে পড়েছিলাম, সেখান থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছি।"

সাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের বিষয়ে উপদেষ্টা জানান, বিট নিলামে কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে মন্ত্রণালয়ের চূড়ান্ত অনুমোদন শেষে পুনরায় রি-টেন্ডার করা হবে বলেও তিনি আশ্বাস দেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

নাটকীয়তা শেষে রাতে ফাইনালে মুখোমুখি রিয়াল-বার্সা
মাদকাসক্ত ছেলেকে ত্যাজ্য ঘোষণা করলেন বাবা
গরমে লোডশেডিং নিয়ে সুখবর দিলেন জ্বালানি উপদেষ্টা
পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের ক্রিকেটীয় সম্পর্ক ছিন্ন করা উচিত: সৌরভ গাঙ্গুলি
র‍্যাফেল ড্রতে ৯ কোটি টাকা জিতলেন দুই প্রবাসী বাংলাদেশি
৬২ জন পুলিশ সদস্য পাচ্ছেন বিপিএম ও পিপিএম পদক
সিন্ধুতে হয় পানি, না হয় ভারতীয়দের রক্ত বইবে: বিলাওয়াল ভুট্টো
অন্য নারীতে মজেছেন সৃজিত! মিথিলা কোথায়?
৪ মাসে কুরআনের হাফেজ হলেন ১০ বছরের অটিস্টিক শিশু আহমাদ
রাষ্ট্র সংস্কারের যে সুযোগ তৈরি হয়েছে, তা যেন বেহাত না হয়: আলী রীয়াজ
১৪ ব্যাংকে ২৩৮ কোটি টাকা স্থানান্তর, যা বললেন বিসিবি সভাপতি
কাশ্মীর সীমান্তে ফের গোলাগুলি, মুখোমুখি ভারত-পাকিস্তান সেনা
বাইরে থেকে ফিরেই ঠান্ডা গোসল? সাবধান! এই অভ্যাস ডেকে আনতে পারে বিপদ
কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তান-ভারত পাল্টাপাল্টি উত্তেজনা নিয়ে যা বললেন ট্রাম্প
রাঙামাটিতে সিএনজি-পিকআপ সংঘর্ষে নিহত ৫
রেফারির বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছে রিয়াল, ফাইনাল ম্যাচ বয়কটের হুমকি
আইন উপদেষ্টাকে জড়িয়ে ভারতের গণমাধ্যমে মিথ্যা প্রতিবেদন, মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি
নিজ দেশেই বিমান হামলা চালালো ভারত, ‘অসাবধানতা’ বলছে বিমান বাহিনী
গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত আরও ৮৪ ফিলিস্তিনি
আইনি নোটিশ প্রসঙ্গে যা বললেন ডা. তাসনিম জারা