খাবারের তালিকায় ফুল
ফুলের নাম করলেই মস্তিষ্কে আগে সৌন্দর্য কথাটিই আসে। বাগানের ফুল প্রকৃতির সৌন্দর্য বাড়ায়। আবার ঘর সাজাতেও প্রথমেই আসে ফুলের নাম। এ ছাড়া না অনুষ্ঠানে সাজসজ্জার জন্য ফুল ছাড়া ভাবা যায় না। নারীর সৌন্দর্যের বর্ণনায়ও কবিরা উপমা দিয়েছেন নানা ফুলের সঙ্গে। কখনো পদ্ম, কখনো মহুয়া, শিউলি, গোলাপের পাঁপড়ির সঙ্গে তুলনা করেছেন নারীর অঙ্গের। তবে সৌন্দর্য বা সাজসজ্জা ছাড়াও ফুলের বড়া অত্যন্ত সুস্বাদু খাবার হিসেবেও ব্যবহার করা হয়। ফুলের বড়া খাওয়ার জন্য উপযুক্ত সময় শীতকাল।
যদিও সৌন্দর্যের সঙ্গে খাওয়া-দাওয়া খানিকটা বেমানান লাগে, তবু ১৪০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ থেকে মানুষ ফুল খাবার হিসেবে ব্যবহার করছে।
আমাদের দেশে খাদ্য হিসেবে বেশি ব্যবহার হওয়া ফুলগুলো হলো কুমড়ো ফুল, বক ফুল, রক্তকাঞ্চন, কচুর ফুল, শাপলা ফুল, কলার মোচা, কচুরিপানার ফুল, মেস্তা ফুল, সজনে ফুল, সরিষা ফুল। এসব ফুলের বেশিরভাগই বড়া খাওয়া হয়। তবে শাপলা ফুলের তরকারি ও গোলাপ ফুলের বড়া ও চা দুটোই খাওয়া হয়। এ ছাড়া অপরাজিতা ও ড্যান্ডেলিওয়ন ফুলের চা শরীরের জন্য বেশ উপকারী। ফুল খাওয়ার প্রচলন সাধারণ ভেষজ গুণাগুণের জন্য শুরু হয়।
* কুমড়ো ফুল, বক ফুল, রক্তকাঞ্চন, গোলাপ, কচুরিপানা, সজনে ও সরিষা ফুল বেসন বা চালের গুঁড়োর মিশ্রণে মেখে ডুবো তেলে বড়া হিসেবে ভেজে খাওয়া হয়।
* যেসব এলাকায় কচুর চাষ হয় সেসব অঞ্চলে কচুর ফুল খাওয়ার প্রচলন রয়েছে। এ ফুলের গর্ভদণ্ড ফেলে দিয়ে পুরো অংশটি তরকারি হিসেবে খাওয়া হয়। এর চাটনি বেশ সুস্বাদু। ব্যাপক জনপ্রিয় ও পুষ্টিমানসমৃদ্ধ একটি খাদ্য কলার মোচা আদতে একটি ফুল। কলার মোচা রান্নার বর্ণনা ফুরোনোর নয়। বড় মাছের মাথাসহযোগে কিংবা আলু দিয়ে রান্না করে অথবা বড়া করে এটি খাওয়া যায়। এ ছাড়া শাপলা ফুল ইলিশ মাছ, চিংড়ি দিয়ে রান্না করে তরকারি হিসেবে খাওয়া যায়।
* মেস্তা ফুল মূলত টক বা চাটনি হিসেবে খাওয়া হয়। পাঁচফোড়নের সম্ভারে মেস্তা ফুলের চাটনি খাদ্য হিসেবে অসাধারণ। এ ছাড়া আমড়া ফুলের চাটনি খুব সুস্বাদু। সবজি খিঁচুড়িতেও এর ব্যবহার লক্ষ্যণীয়।
* পাহাড়ি বা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠির মানুষ হলুদের ফুল, আদার ফুল ও শিমুল ফুল খেতে পছন্দ করে। গারোদের মধ্যে পেঁপের ফুল খাওয়ার প্রচলন রয়েছে। বাঙালিদের মধ্যে এ ফুলগুলো খাদ্য হিসেবে জনপ্রিয় নয়।
*গোলাপ, অপরাজিতা ও ড্যান্ডেলিওয়ন ফুলের চা শরীরের জন্য বেশ উপকারী।
এসএন