শীতে শিশুর জন্য দরকার বাড়তি যত্ন
শীত কারো জন্য উদযাপনের আবার কারো জন্য শঙ্কার। গরমের হাত থেকে রক্ষা পেতে শীতের অপেক্ষায় থাকেন অনেকেই। তবে সবার যে শীত পছন্দ তাও নয়। কারণ শীতে রোগ-জীবানুর আক্রমণ বেড়ে যায়। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে থাকে শিশু ও বয়স্করা। এ ছাড়া তরুণদেরও কেউ কেউ ঠান্ডাজনিত রোগে ঝুঁকিতে থাকেন, তাদের জন্যও শীত অভিশাপস্বরূপ। তাই শীতে অতিরিক্ত সচেতনতা ও যত্নের প্রয়োজন হয়। শিশুদের ক্ষেত্রে যত্নটা আরও বেশি দরকার।
* শীতকালে বাতাসে ধুলাবালুর পরিমাণ তুলনামূলক বেড়ে যায়। শিশুদের ঠান্ডা বাতাস ও ধুলাবালু থেকে দূরে রাখতে বাড়তি সচেনতন হতে হবে। এজন্য শিশুদের খোলা জায়গা, রাস্তাঘাট বা জনসমাগমপূর্ণ জায়গায় কম নেওয়াই ভালো। এ ছাড়া শিশুদের গামছা, রুমাল, তোয়ালে প্রভৃতি আলাদা হওয়া উচিত। আক্রান্ত ব্যক্তির আশপাশে শিশুরা যেন না যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। শিশুদের স্কুলে অথবা জরুরি কাজে বাইরে নিয়ে গেলে মুখে মাস্ক ব্যবহারের অভ্যাস করাতে হবে।
* শিশুদের খ্যাদ্যাভ্যাসে নজর রাখতে হবে। ঠান্ডাজিনত সমস্যায় আদা লেবু চা, গরম পানিতে গড়গড়া, মধু, তুলসী পাতার রস প্রভৃতি খাওয়ানো যেতে পারে। তবে সমস্যা বেশি হলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
* অনেকেই শীতকালে ঠান্ডা বেড়ে যাওয়ার ভয়ে গোসল করাতে চান না শিশুদের। তবে এটি ভুল ধারণা। শীত-গ্রীষ্ম সব সময়ই নিয়মিত গোসল করাতে হবে শিশুদের। এ সময় কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করাতে হবে। একই সঙ্গে দাঁত ব্রাশ করা, হাত-মুখ ধোয়া, খাওয়াসহ শিশুদের নানা কাজে হালকা কুসুম গরম পানি ব্যবহার করা ভালো। তবে নবজাতক কিংবা ঠান্ডার সমস্যা আছে এমন শিশুর ক্ষেত্রে গরম পানিতে কাপড় ভিজিয়ে পুরো শরীর মুছে দেওয়া যেতে পারে। অনেকেই শিশুকে জবজবে করে সরিষার তেল মাখিয়ে গোসল করিয়ে থাকেন। এতে গোসল শেষেও শিশুর চুল ভেজা থাকে ও ঠান্ডা লাগে।
* এ সময় শিশুদের পোশাক নির্বাচনের ক্ষেত্রে নজর রাখতে হবে। শিশুদের অবশ্যই উলের পোশাক পরিয়ে রাখা উচিত। তবে সরাসরি উলের পোশাক পরানো ঠিক নয়। এতে উলের ক্ষুদ্র লোমে শিশুদের অ্যালার্জি দেখা দিতে পারে। সুতি কাপড় পরিয়ে তার উপর উলের পোশাক পরানো উচিত এবং পোশাকটি যেন নরম কাপড়ের হয়। হালকা শীতে বেশি গরম পোশাকের কারণে যেন ঘেমে না যায় তাও খেয়াল রাখতে হয়।
* শীতের সময়টা শিশুদের খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়। ফলে তাদের শরীর খারাপ হয়ে যায়। তাদের ঘন ঘন পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে হবে। শিশুদের ডিমের কুসুম, সবজির স্যুপ এবং ফলের রস খাওয়ানো উচিত। বিশেষ করে গাজর, বিট, টমেটো শিশুদের ত্বকের জন্য বেশ উপকারী। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের শীতের সবজি দিয়ে খিচুড়ি রান্না করে খাওয়াতে পারেন। শিশুরা এ সময় যেন কোনো ধরনের ঠান্ডা খাবার না খায়, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
* শীতকালে সবারই ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। শিশুদের ত্বক বেশি সংবেদনশীল হওয়ায় তাদের ত্বক অনেক বেশি রুক্ষ হয়ে যায়। শিশুর মুখে এবং সারা শরীরে বেবি লোশন, বেবি অয়েল, গ্লিসারিন ইত্যাদি ব্যবহার করা যেতে পারে।
এসএন