রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে রিট খারিজ, রিটকারীকে লাখ টাকা জরিমানা
রিটকারী আইনজীবী এম এ আজিজ খান
মো. সাহাবুদ্দিনকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত ঘোষণা করে ইসির গেজেটের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিট খারিজের আদেশ বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। সেই সঙ্গে অযৌক্তিক রিট করে আদালতের সময় নষ্ট করায় রিটকারী আইনজীবী এম এ আজিজ খানকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ মে) সকালে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আট বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এই আদেশ দেন। বেঞ্চের অন্য সাত জন হলেন- বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান, বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, বিচারপতি বোরহান উদ্দিন, বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম, বিচারতি মো. আশফাকুল ইসলাম, বিচারপতি আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন।
এই খারিজ আদেশের ফলে হাইকোর্টের দেওয়া আগের আদেশেই বহাল রইল। আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন রিটকারি আইনজীবী এম এ আজিজ খান। আর রাষ্ট্র পক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
এর আগে রাষ্ট্রপতি পদে মো. সাহাবুদ্দিনকে নির্বাচিত ঘোষণা করে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন কমিশন প্রজ্ঞাপন জারি করে। এ প্রজ্ঞাপনের কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে ৭ মার্চ একটি রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম এ আজিজ খান।
১২ মার্চ সেই রিট বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানির জন্য আসে। সেদিন বিচারপতি আহমেদ সোহেল এ বিষয়টি শুনানি করতে বিব্রত বোধ করেন।
এরপর রিট শুনতে অপারগতা প্রকাশ করে আদালত প্রয়োজনীয় আদেশের জন্য বিষয়টি প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠান। পরে ১৩ মার্চ প্রধান বিচারপতি এ রিট শুনতে বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের নেতৃত্বাধীন দ্বৈত বেঞ্চে পাঠান।
অন্যদিকে, ১২ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের ছয় আইনজীবী রাষ্ট্রপতি পদে মো. সাহাবুদ্দিনকে নির্বাচিত ঘোষণা করা সংক্রান্ত ইসির প্রজ্ঞাপন নিয়ে আরেকটি রিট করেন। এই রিটটিও বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের নেতৃত্বাধীন দ্বৈত বেঞ্চে জমা দেওয়া হয়।
গত ১৫ মার্চ মো. সাহাবুদ্দিনকে রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচন প্রক্রিয়া বৈধ বলে রায় দেন বিচারপতি খসরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
রিট দায়ের করার কারণ প্রসঙ্গে মার্চে আইনজীবী এম এ আজিজ খান বলেন, রাষ্ট্রপতি বাছাই প্রক্রিয়া সঠিকভাবে হয়নি। যাচাই-বাছাই ঠিকমতো হলে মো. সাহাবুদ্দিনকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করা হতো না। কারণ মো. সাহাবুদ্দিন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক কমিশনার ছিলেন। দুদক আইন ২০০৪ এর ৯ ধারা অনুসারে দুদকের সাবেক কমিশনার লাভজনক কোনো পদে অধিষ্ঠিত হতে পারেন না। এ বিষয়ে যাচাই-বাছাই করা হয়নি।
তিনি বলেন, এছাড়া প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, মো. সাহাবুদ্দিন রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছেন। তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। এ বক্তব্য সঠিক নয়। এক্ষেত্রে নির্বাচন আর নিয়োগের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। এ কারণে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন প্রক্রিয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ ও গেজেটের কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে রিট করেছি।
গত ২৪ এপ্রিল দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন মো. সাহাবুদ্দিন। এইদিন বঙ্গভবনের দরবার হলে তাকে শপথ বাক্য পাঠ করান জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
আরএ/