বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫ | ১০ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

এক টুকরো সাজানো বাগান

যত দূর থেকে চোখে পড়ে মন টানে। মাথার ওপরে এই সড়ক স্থাপনাটির রঙিন মোটা কাঁচ। কেমন যেন অন্যরকম ও নতুন লাগে। কবে তার দেখা পাব, যাব সেখানে এমন বোধ হয়। টিভি ও সংবাদমাধ্যমে যতটুকু বিজ্ঞাপন এবং প্রচার হয়েছে, সেটি নেমে দাঁড়ানোর পর যথেষ্ট মনে হলো না। ঢাকার এমইএসের কোনায় আসার পর চমকে যেতে হলো। এত ভালো, সুন্দর ও দীর্ঘস্থায়ী কাজও করা সম্ভব এই দেশে? পথচারী পারাপারের আন্ডারপাসটি অত্যন্ত যত্নে, দীর্ঘস্থায়িত্ব দিয়ে করা। প্রবেশ পথের আগেই বামে বসার জন্য দুটি স্টিলের আসন সারি পাতা আছে। প্রতিটিতে অন্তত ৫ জন করে বসতে পারেন।

সেগুলোতে বসে তারা উল্টোদিকের মহাসড়কের গাছের সারি ও অক্সিজেন ভান্ডার দেখতে পারবেন। নিয়মকানুনের চাদরে মোড়া, দারুণ চলমান মহাখালী-এয়ারপোর্ট রোডের গাড়ির সারিগুলোকে চলে যেতে ও আসতে দেখবেন। আরো দেখবেন, রোড ডিভাইডারে বাঁধাই করা আছে বড় গাছের সারি। শহরের দুর্লভ বৃক্ষ এখন পথের মাঝে মানুষের মনোযোগ কেড়ে নিচ্ছে বারবার। বলছে, আমাদের বাঁচাও, তোমাদের স্বার্থেই। প্রশস্ত পথচারি হাঁটার পথটি, কোমর সমান উঁচু দালানের প্রাচীরের পেছনে বিরাট চাষের পুকুর, সুরক্ষা প্রাচীরে ঘেরা। এই দালানটি এগিয়ে আন্ডারপাসের দেওয়ালে পরিণত হয়েছে।

উল্টোদিকের ঢাকার এমইএস, সশস্ত্র বাহিনীর মানুষদের বাসাবাড়ি। তার একটু সামনে আর্মড ফোসেস মেডিক্যাল কলেজের সামনে আছে ফ্লাইওভার, তার নীচে এই মহাখালী-বনানী সড়কটি বিরাট। প্রবল ব্যস্ত থাকে সারাক্ষণ। রাতে সড়কবাতি ও গাড়িগুলোর হেডলাইটের আলোতে ঠিক বিদেশের, হলিউডের বা টিভিতে দেখা অন্য কোনো দেশের সড়কের মতো দেখা যায়। মিনিটখানেকের বিরতি নেই কোনো। এখানে অনেক বড় এলাকাজুড়ে রাস্তার মাঝখানের ডিভাইডারগুলোতে শিক দিয়ে উঁচু করে বাঁধানো। বামে এমইএসের সামনে দাঁড়িয়ে মহাখালীর দিকে যেতে ঢাকা-এয়াপোট নামের এই মহাসড়কে শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজ সংলগ্ন পথচারী আন্ডাপাসটি। একেবারেই নতুন সংযোজন এই রাজধানী, মহানগরে।

একই দিন ঢাকা সিলেট সড়ক বাইপাস-গ্যারিসন লেন মহাসড়ক; বালুখালী (কক্সবাজার) ঘুনধুম (বান্দরবান) সীমান্ত সংযোগ সড়ক এবং রাঙ্গামাটি জেলার নানিয়ারচরে চেংগী নদীর উপর ৫শ মিটার দীঘ সেতুর শুভ উদ্বোধন করেছেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্থান-গণভবন, সময়-সকাল ১০টা। তারিখ-১২ জানুয়ারি ২০২২। এই চারটি কাজ করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ ও ৩৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কনষ্ট্রকাশন ব্রিগেড। কাজগুলো সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অধীনে সম্পন্ন করা হয়েছে। ‘মুজিব শতবর্ষ’ উপলক্ষে করা এই কাজটির ওপরেও শেখ সাহেবের শিশুতোষ ছবি আঁকা আছে। বামে আছে বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তী। তাতে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের বিখ্যাত আঙ্গুলটি রয়েছে। নীচে তার ফিদেল কাস্ত্রো ফেইস।

শহীদ রমিজ উদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজের আন্ডারপাসটির ওপরে লেখা-সুস্বাগতম, পথচারী আন্ডারপাস। তার ওপরে সাদা সিম্বলে সাদা একজন মানুষ রাস্তা পেরুচ্ছেন, ছবিটি আঁকা আছে। রাতে বন্ধ রাখার জন্য প্লাস্টিকের কটি রোড ডিভাইডার বামের কোণায় সাজানো আছে। ভেতরে ঢুকলে আধুনিকতা ও মানবিকতার ছড়াছড়ি দেখবেন যেকোনো মানুষ। সবই তার ও তাদের জন্য। আছে হুইল চেয়ারে চলার জন্য সিঁড়ি। প্রতিবন্ধিতায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা সেখানে সহজে পথে চলতে পারবেন। তারা সিঁড়ি বেয়ে নিচের মূল মোজাইকের সমতল পথে চলে আসতে পারবেন একাই, কারো সাহায্য ছাড়াই। ওপরে আছে বনানী, মহাখালীর পথে ওঠার আলাদা চেনার চিহ্ন। সাদা এই আন্ডারপাস পুরোটা। মাথার ওপরে পুরোটাতেই শক্ত কাঁচের ছাউনি। সেগুলোর প্রতিটি আলাদা, আলাদা কাঁচের টুকরো, জোড়া লাগানো হয়েছে। দারুণ সুন্দর ও টেইসই। রোদ এসে পড়ে ভেতরে। ফলে বাতি জ্বালিয়ে পয়সা খরচের কোনো দরকার হয় না। সেনাবাহিনীর সুনাম এখানেও ধরে রেখেছে। আছে ডানে ও বামে কোমর সমান দেওয়াল শুরুতে, খুব মজবুত এবং চওড়া। বহু বছরের উপযোগী আন্ডারপাসটি। সেখানে চেয়ারে বসে আছেন ২৪ ইসিবি ব্রিগেডের সৈনিক মামুন। তিনি কথা বলতে এগিয়ে এলেন। বললেন, ‘আমাদের এখানে অসুস্থদের জন্য লিফট আছে, হুইল চেয়ার আছে প্রতিবন্ধিতায় আক্রান্তদের জন্য। সুস্থ-সবলদের জন্য আছে সিঁড়ি। আমরা সেনাবাহিনীই এই আন্ডাপাসের রক্ষণাবেক্ষণ করি।’ জানালেন, ২০১৮ কী ২০১৯ সালে কাজ শুরু হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় ওপরের দিকে ফলক লাগানো আছে চেনার জন্য-বাহির, একজিট, ধন্যবাদ ইত্যাদি। প্রথম ধাপে ১১টি সিঁড়ি দিয়ে নামতে হয় আন্ডারপাসে, এরপর সামান্য পথ হেঁটে আবার ১১টি সিঁড়ি। এভাবে মোট চারটি ধাপ, শেষটিতে ৪টি সিঁড়ি।

বিরাট উঁচু সাদা মোজাইকের দালান পুরো আন্ডারপাস। নানা জায়গাতে শিল্পকর্মের উদাহরণ হিসেবে বাঁধানো বড় ছবি আছে। প্রথমটি নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ হাওড়। তাতেও বাংলাদেশের অদম্য সাধারণ নারীরা কাজ করছেন। খুব সুন্দর প্রকৃতি ফুটে উঠেছে বড় করতে গিয়ে ফাটিয়ে ফেলা ছবিটিতে। এমন অনেকগুলো ছবি আছে। বেখেয়ালের আদর্শ উদাহরণ কোনো, কোনোটি। প্রথমটি শেখ মোহাম্মদ তৌফিকুল ইসলামের তোলা। এরপরের হিমছড়ি, কক্সবাজারের ছবিটি তুলনায় ভালো। বিরাট এই আন্ডারপাসটি ভালো কাজের অনন্য উদাহরণ। তাতে ওপরে টাঙানো আছে অগ্নিনির্বাপক ব্যাবস্থা। নীচের পুরোটা পথেই কোনা ধরে স্টিলের জলরোধী বিশেষ ব্যবস্থাটিও খুব ভালো। নীচে ড্রেনেজ সিস্টেমে বৃষ্টির পানি নেমে যাবে। ওপরে সাউন্ডবক্সে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কাজের বিবরণ মানুষকে জানানো হচ্ছে। অনেকেই পারাপার হতে ও বেড়াতে এসেছেন। সাউন্ডবক্স বলছে-‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের সেবায় সর্বক্ষণ নিবেদিত।’ এই ছবিটি ভালো-সারি নদী, সিলেট; খুব সুন্দর। মোহাম্মদ আলীর তোলা। প্রতিটি বড় বাঁধাই ছবিতে আলোকচিত্রীর নাম ও মেইল আইডি দেওয়া আছে। মোজাইক করা পুরোটা হাঁটা পথ আন্ডারপাসের। জরুরি প্রয়োজনের কলিংবেল আছে। আরেকটি ছবি আছে-সুনামগঞ্জের লাল শাপলা বিলে নৌকার দুপাশের দুইজন মাঝি জীবিকা উপার্জন করছেন। সবুজ পতাকাটি তাদের বাংলাদেশের পতাকার মতো পত পত করে উড়ছে। এই কাজের কারিগর সেনাবাহিনীর সুরসপ্তকের অফিসারদের ছবি আছে-তারা এই কাজের গর্বিত অংশীদার। এতে প্রাথমিক চিকিৎসার টুল বক্সের সাইন আছে দেওয়ালে। একেবারে শেষে সেই বক্স দেওয়ালে রাখা আছে। পাশে পাসটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সেনা অফিস, পাতাল লিফট রয়েছে। নিজেদের ব্রিগেড, ব্যাটালিয়ন ও ২৫ ইসিবির নাম তারা দেওয়ালে খোদাই করে রেখেছেন ফুলের মতো ভালোবেসে। রাতে বাতি জ্বালানোর বিশেষ ব্যবস্থা ছড়িয়ে আছে। ওপরে আছে সুরক্ষিত বাতির সারির বক্স। বিশেষ ধরণের বাতিগুলো। তারা সবাই রাতের পরিবেশটি অন্যরকম করে ফেলে। তখন ওপরের তারা, চাঁদেরও দেখা মেলে কাঁচের আড়ালে।

ছবি বাঁধানো আছে ঢাকার হোসেনী দালানের ১৯০০ সালের। আজকের সঙ্গে কী মেলে? আছে কোনো ঐতিহ্য সংরক্ষিত? তবে আন্ডারপাসের দেওয়ালের ওপরের দিকে সেন্ট্রাল কারেন্ট বক্স আছে। সুন্দরবনের ছবিটি ভালো নয়, জাভেদ মানিকের তোলা; ফেটেও গিয়েছে। সেনাবাহিনীর খাল, নদী উদ্ধারের ছবি দিয়ে নীচে লেখা-‘সমরে আমরা, শান্তিতে আমরা; সবত্র আমরা দেশের তরে।’ এই ছবিটি ভালো রেজ্যুলেশনের, আশ্চয তো। রায়ের বাজার বধ্যভূমির ছবিটি খুব সুন্দর, মোয়াজ্জেম মোস্তাকিমের তোলা। সিসিটিভিতেও সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে আন্ডারপাসকে। ছবি আছে ঢাকা ক্লাবের প্রথম দিকের-১৮৮০। পুরোনো মডেলের দালানের সামনের ছাউনিটি ছনের ছাউনির মতো। সেনাবাহিনীর বিভিন্ন উন্নয়ন কমকাণ্ডের ছবি আছে শক্তিশালী, সাদা মোজাইকের দালানে। লেখা একটিতে, ‘দেশমাতৃকার সেবায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।’ ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট রেলওয়ে স্টেশনেও তাদের উন্নয়ন কাজের ছবি বাঁধানো আছে। জাভেদ মালিকের সাদাকালো ছবিটি খুব সুন্দর-ঢাকা রংপুর হাইওয়েতে অনেক বছর আগে ছুটে চলছে গাড়ি। আছে পুরোনো আহসান মঞ্জিল।

‘গরমের জন্য স্টিলের বিশেষ ঝুলন্ত ফ্যান এগুলো’-বললেন সেনাবাহিনীর পোশাকের এক অফিসার। লাল রঙের বিরাট ফ্যানের বক্সগুলো। নানা জায়গাতে সুচিন্তিতভাবে লাগানো আছে। অসাধারণ ছবিটি সুন্দরবনে জোয়ার-ভাটায় নৃত্য করছে কয়েকটি ছেলে। দূরে জাহাজ ভাসছে। রেজ্যুলেশন ভালো। আলো চিক, চিক করছে বিরাট জলরাশিতে। সেনাবাহিনীর অফিসের সামনের দালানে ওয়াল টিভিতে দেখানো হচ্ছে আন্ডারপাসের শুরু থেকে শেষ কর্মযজ্ঞ। সেটি দেখতে দেখতে মনে হলো, মাথার ওপরের বিরাট ফ্লাইওভারের নীচে এ এক টুকরো সাজানো বাগান।

সুরসপ্তকের বিশেষ কালো দেওয়াল চিত্রে বঙ্গবন্ধু ও সাত বীরশ্রেষ্ঠের ছবি আঁকা। তিনি সাত মার্চের ভাষণ দিচ্ছেন। সেখানে একটি ছবিতে নোয়াখালীর সুবর্ণচরের সূর্যমুখী বাগানে একটি কিশোরী মাথায় ফুল গুঁজছে। খুব সুন্দর গ্রাম বাংলার অপরূপ ছবিটি। অন্যরকম, অসাধারণ। পাশে বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার দুটি লাইফ সাইজ ছবি। আছে কালো বিরাট আরেকটি দেওয়াল চিত্রে শহীদ মিনার ও স্মৃতিসৌধ এবং উন্নয়ন কমকাণ্ড। পাশে বনানীর মহাসড়কে ওঠার সিঁড়ি। আরো সামনে শহীদ রমিজ উদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজ নামফলক। এটি ধরে উঠে গেলাম। সামনে পড়লো জিয়া কলোনীর সামনের পথ। একেবারেই নিরাপদ। কতবার যে প্রাণ হাতে নিয়ে এই পথে যেতে হয়েছে। আর এখন ভেবে বিরাট এক স্বস্তির নি:শ্বাস বেরিয়ে এলো। ধন্যবাদ সবাইকে।

ঢাকা, ২৪-১-২০২২।

Header Ad
Header Ad

পাকিস্তানিদের বিশেষ ভিসা সুবিধা বাতিল, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ভারত ছাড়ার নির্দেশ

ছবি: সংগৃহীত

ভারত-নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে প্রাণঘাতী সন্ত্রাসী হামলার পর পাকিস্তানিদের জন্য ‘সার্ক ভিসা ছাড়’ সুবিধা বাতিল করেছে ভারত। সেই সঙ্গে ভারতে অবস্থানরত পাকিস্তানি নাগরিকদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দেশ ছাড়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। বুধবার (২৩ এপ্রিল) ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত দেশটির মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটির জরুরি বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে ভারত:

সিদ্ধান্তগুলো হলো:

১. সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত ঘোষণা। ভারত বলছে, পাকিস্তান যতদিন সীমান্তে সন্ত্রাস বন্ধ না করবে এবং সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন ত্যাগ না করবে ততদিন এটি স্থগিত থাকবে। ১৯৬০ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর করাচিতে তৎকালীন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু ও পাকিস্তানি প্রেসিডেন্ট ফিল্ড মার্শাল আইয়ূব খান সিন্ধু পানি বণ্টন চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন। বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় বহুল আলোচিত এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল।

২. অবিলম্বে আটারি-ওয়াঘা সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হবে। যাদের বৈধ নথি রয়েছে তারা ১ মে এর আগে সীমান্ত অতিক্রম করতে পারবেন।

৩. সার্ক ভিসা এক্সেম্পশন স্কিম (এসভিইএস) এর আওতায় পাকিস্তানি নাগরিকদের ভারতে ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া হবে না। পাকিস্তানি নাগরিকদের অতীতে জারি করা যেকোনো এসভিইএস ভিসা বাতিল বলে গণ্য হবে। এসভিইএস ভিসায় বর্তমানে ভারতে থাকা পাকিস্তানি নাগরিকদেরও ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ভারত ছাড়তে বলা হয়েছে।

৪. নয়াদিল্লিতে পাকিস্তানি হাইকমিশনের সামরিক, নৌ ও বিমান উপদেষ্টাদের ‘পার্সোনা নন গ্রাটা’ ঘোষণা করা হয়েছে। ভারত ছাড়ার জন্য এক সপ্তাহ সময় পাবেন তারা। ইসলামাবাদের ভারতীয় হাইকমিশন থেকে প্রতিরক্ষা, নৌ ও বিমান উপদেষ্টাদের প্রত্যাহার করে নিচ্ছে ভারত। সংশ্লিষ্ট হাইকমিশনের এই পদগুলো বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। উভয় হাইকমিশন থেকে সার্ভিস অ্যাডভাইজারের পাঁচজন সাপোর্ট স্টাফকেও প্রত্যাহার করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

৫. হাইকমিশনের সামগ্রিক জনশক্তি ৫৫ থেকে কমিয়ে ৩০ জনে নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। যা ১ মে এর মধ্যে কার্যকর হবে।

মঙ্গলবার বিকালে কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা হয়। অস্ত্রধারীরা জঙ্গল থেকে বের হয়ে পর্যটকদের ওপর গুলি চালাতে থাকেন। হামলায় ঠিক কতজন নিহত হয়েছেন, তা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি। তবে নিরাপত্তা বাহিনীর সূত্র বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছে, নিহত ব্যক্তির সংখ্যা অন্তত ২৬।

পাকিস্তানভিত্তিক নিষিদ্ধ সংগঠন লস্কর–ই–তৈয়েবার সহযোগী সংগঠন দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) মঙ্গলবার বিকালের হামলার দায় স্বীকার করেছে।

এদিকে এ ঘটনায় পাকিস্তানের পক্ষ থেকেও নিন্দা প্রকাশ করা হয়েছে। দেশটির গণমাধ্যম জিও নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘অবৈধভাবে দখলকৃত জম্মু-কাশ্মীর’র পেহেলগামে হামলার ঘটনায় পাকিস্তান উদ্বিগ্ন। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানিয়েছেন, পেহেলগামে হামলায় ২৬ জন নিহতের ঘটনায় পাকিস্তান নিন্দা প্রকাশ করছে। নিহতের পরিবারের প্রতিও সমবেদনা প্রকাশ করছে পাকিস্তান।

এ হামলাকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ আখ্যা দিয়ে এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উদ্দেশে বার্তা দিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বার্তায় তিনি বলেন, কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণহানির ঘটনায় আমার গভীর সমবেদনা গ্রহণ করুন। আমরা এ জঘন্য হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা আবারও নিশ্চিত করছি যে, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের অবস্থান সবসময় দৃঢ়।

Header Ad
Header Ad

বিএনপি সরকার গঠন করলে শিক্ষিত বেকারদের জন্য চালু হবে ভাতা: তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত

দেশে সরকার পরিবর্তন হলে শিক্ষিত বেকারদের জন্য বিশেষ ভাতা চালু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি জানিয়েছেন, সরকার গঠনের পর যারা চাকরি খুঁজেও পাচ্ছেন না, তাদের জন্য এক বছরের ‘শিক্ষিত বেকার ভাতা’ চালু করার বিষয়টি বিবেচনায় রয়েছে। এ সময়ের মধ্যেই তাদের কর্মসংস্থানে সহায়তা করবে সরকার।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) বিকেলে রংপুর, নীলফামারী ও সৈয়দপুর জেলা বিএনপির নেতাদের অংশগ্রহণে আয়োজিত এক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তিনি। বিএনপির ৩১ দফা রাষ্ট্রকাঠামো মেরামত পরিকল্পনা নিয়ে কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়।

তারেক রহমান বলেন, “আমরা একটি পরিকল্পনা করছি—যাতে যারা এখনো চাকরি পাননি, তারা যেন সরকারের সহযোগিতায় একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সহায়তা পান। এই সময়টিতে সরকার ও ব্যক্তিগত পর্যায়ে উভয়ের উদ্যোগেই কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা হবে।”

তিনি আরও অভিযোগ করেন, বিগত সময়ে সরকারি ও আধা-সরকারি চাকরিতে ব্যাপক দলীয়করণ হয়েছে। বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলের অনেক তরুণ নেতাকর্মী, যাঁরা আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন, তারা বয়স পার করে ফেললেও কোনো চাকরি পাননি। “শুধু ছাত্রদল নয়, আরও অনেক সাধারণ মানুষ আছেন যারা সরকারের অনুগত না হওয়ায় চাকরির সুযোগ হারিয়েছেন। এ বাস্তবতা বিবেচনায় নিতে হবে,” বলেন তারেক।

বাংলাদেশে সর্বজনীন স্বাস্থ্যবিমা চালু করার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তারেক রহমান বলেন, “২০ কোটির বেশি মানুষের জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা বিশাল বাজেট ও কাঠামোগত পরিকল্পনা দাবি করে। এটা অব্যবস্থাপনার জায়গা নয়, এটা করতে হলে বাস্তবতা মাথায় রেখে ধাপে ধাপে এগোতে হবে।”

তিস্তা নদী ঘিরে রংপুর অঞ্চলের মানুষদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণে বিএনপির পরিকল্পনার কথা জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, “তিস্তা শুধু নদী নয়, রংপুর বিভাগের অর্থনীতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। অতীতে তিস্তাকে কেন্দ্র করে রাজনীতি হয়েছে, কিন্তু মানুষের জীবনে কোনো পরিবর্তন আসেনি। বিএনপি সরকারে গেলে তিস্তা সমস্যা সমাধানে বাস্তব ভিত্তিক ও জনগণকেন্দ্রিক প্রকল্প গ্রহণ করবে।”

বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণবিষয়ক কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত এ প্রশিক্ষণ কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন রংপুর জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতারা। কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শামসুজ্জামান সামু এবং উদ্বোধনী বক্তব্য দেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু। সঞ্চালনায় ছিলেন নির্বাহী কমিটির সদস্য আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী।

Header Ad
Header Ad

এস আলমের ৪০৭ কোটি টাকার ১৫৯ একর জমি ক্রোকের নির্দেশ

ছবি: সংগৃহীত

এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলমের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা ১৫৯ একর জমি ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। জমিগুলোর আনুমানিক বাজারমূল্য ৪০৭ কোটি টাকা বলে জানিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এসব জমি ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসেন এই আদেশ দেন। আদালতে দুদকের পক্ষে আবেদন করেন উপপরিচালক তাহাসিন মুনাবীল হক। শুনানি শেষে আদালত আবেদন মঞ্জুর করেন। বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম।

দুদকের আবেদনে বলা হয়, এস আলম ও তার ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে চলমান তদন্তে দেখা যায়, তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে বিপুল পরিমাণ জমি ও স্থাবর সম্পদ রয়েছে। এসব সম্পদ তারা অন্যত্র বিক্রি বা হস্তান্তরের চেষ্টা করছে বলে গোপন সূত্রে জানা যায়। ফলে তদন্ত সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার স্বার্থে এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ সুরক্ষায় এসব জমি ক্রোকের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়।

জমিগুলো যেসব প্রতিষ্ঠানের নামে রয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে ক্রিস্টাল ক্লিয়ার ট্রেড লিংক, ইভেন্ট টাইটান ইন্টারন্যাশনাল, পাইথন ট্রেডিং কর্নার, ইসলাম ট্রেডার্স, ডায়মন্ড বিজনেস হাউস, এএইচ সেন্টারসহ আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। দুদকের ভাষ্য অনুযায়ী, এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মোহাম্মদ সাইফুল আলমের সরাসরি আর্থিক ও ব্যবসায়িক সম্পর্ক রয়েছে।

এর আগেও এস আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে একাধিক দফায় আদালত সম্পদ ও শেয়ার অবরুদ্ধ এবং দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। গত বছরের অক্টোবর থেকে শুরু করে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে তার ও তার ঘনিষ্ঠজনদের নামে থাকা শেয়ার, জমি ও ব্যাংক হিসাব পর্যায়ক্রমে অবরুদ্ধ ও ক্রোক করে আদালত।

এস আলমের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে এখন পর্যন্ত ১৩০০-এর বেশি ব্যাংক হিসাব, হাজার একরের বেশি জমি এবং কয়েক হাজার কোটি টাকার শেয়ার নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। দুদক জানিয়েছে, তদন্তে আরও নতুন সম্পদের তথ্য পাওয়া যেতে পারে।

দুদক বলছে, মানি লন্ডারিং ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে এই তদন্ত চলমান রয়েছে এবং প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

পাকিস্তানিদের বিশেষ ভিসা সুবিধা বাতিল, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ভারত ছাড়ার নির্দেশ
বিএনপি সরকার গঠন করলে শিক্ষিত বেকারদের জন্য চালু হবে ভাতা: তারেক রহমান
এস আলমের ৪০৭ কোটি টাকার ১৫৯ একর জমি ক্রোকের নির্দেশ
সীমান্তের সব ভিডিও সত্য নয়, আবার সবটা যে মিথ্যা তাও নয়: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
আন্দোলনের নামে রাস্তা অবরোধ না করার অনুরোধ ডিএমপির
টাঙ্গাইলে বেড়েছে গরমের তীব্রতা, বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ
সরকার সরিয়ে না দিলে পদত্যাগ করব না: কুয়েট ভিসি
বিরামপুরে ছিনতাইকালে পুলিশের হাতে 'ভুয়া সেনাসদস্য' আটক
হাসিনাকে যারা খুনি হতে সাহায্য করেছে, তাদেরও বিচার করতে হবে: সারজিস আলম
কুয়েটের ৩৭ শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার, খুললো আবাসিক হল
কাশ্মীরে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’, মসজিদে ঘোষণার পর বিক্ষোভ শুরু
ইতিহাস গড়ল জিম্বাবুয়ে, ঘরের মাঠে লজ্জার হার বাংলাদেশের
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের 'এ' ইউনিটে প্রথম আব্দুল্লাহ
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র পারভেজ হত্যা: প্রধান আসামি মেহরাজ গ্রেপ্তার
তুরস্কের ইস্তানবুলে একের পর এক ভূমিকম্প
এবার সেই গৃহকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করলেন পরীমণি
দ্রুত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন না হলে পুরো অঞ্চল অস্থিতিশীল হয়ে উঠবে: প্রধান উপদেষ্টা
আমরা সংস্কারও চাই, নির্বাচনও চাই: মির্জা আব্বাস
কাশ্মীরের হামলা ‘সাজানো’ দাবি পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমের
ভাইরাল ভিডিও সমন্বয়ক রুবাইয়ার নয়, দাবি এনসিপি নেতার