বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫ | ১০ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

কার্টুনদের কাছে ফিরলেন নারায়ণ দেবনাথ

 

বাংলার প্রথম পেশাদার পূর্ণাঙ্গ কাটুন স্রষ্টা, সবচেয়ে নামকরা এই ভুবনে বলতে গেলে নারায়ণ দেবনাথ’র নামটি চলে আসে শ্রদ্ধায়। অনেকগুলো তুমুল খ্যাতিমান সিরিজের তিনি জনক। কোনটির না না বলি? হাঁদা-ভোঁদা, বাঁটুল দি গ্রেট, নন্টে-ফন্টে জনক তিনি। চলে গেলেন ওপারে। তাকে মনে রাখবে বহুকাল বাঙালি শিশুরা ও শিশুতোষ মনের বুড়োরা। রুচি বদলেছেন বলে, আধুনিকতায় যাত্রা শুরু করিয়ে দিয়েছিলেন নব একটি মাধ্যমে। ভারত সরকার তাকে উপহার দিয়েছে ‘পদ্মশ্রী’।

নারায়ণ দেবনাথের জন্ম হয়েছিল ১৯২৫ সালের ২৫ নভেম্বর। ১৮ জানুয়ারি, গতকাল চলে গেলেন। তবে এই বিরাট জীবনে বিপুলভাবে আনন্দ দিয়েছেন বাঙালি শিশুদের। তাকে বড় হয়ে যাওয়া শিশুরাও মনে রাখবে। কেননা, প্রথম কাহিনী ‘হাঁদা ভোঁদার কাণ্ডকারখানা’ শুরু করেছিলেন ১৯৬২ সালে। আজ থেকে ৬০ বছর আগে, নিজের ৩৭ বছর বয়সে। নিজেকে কেবল এই একটি কার্টুন সিরিজে আটকে রাখেননি অমিত প্রতিভাধর ভারতীয় বাঙালি এই কমিক আর্টিস্ট, শিশুদের জন্য হয়েছেন লেখক ও ইলাসট্রেটর। আরো তৈরি করেছেন ‘বাঁটুল দি গ্রেট’। প্রথমটির তিনটি বছর পর এর শুরু। তার সবচেয়ে বিখ্যাত সিরিজ হলো বোধহয় কলকাতার বাংলা ভাষার বিখ্যাত কমিক প্রকাশনী ডায়মন্ড ওয়াল্ডসের সৌজন্যে বেরুনো আরেকটি সিরিজ ‘নন্টে-ফন্টে’। আরও তিনটি বছর সিরিজটির শুরু। গিনেজ বুকে রেকর্ড গড়েছেন বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বছর-টানা ৫৩ বছর হাঁদা, ভোঁদা সিরিজটি চালু রাখার জন্য।

তিনিই পুরো ভারতের এবং বাংলা ভাষার একমাত্র কমিক চরিত্র লেখক যিনি ‘ডি-লিট’ উপাধি লাভ করেছেন। ভারত সরকার তার বিখ্যাত মানুষটিকে ‘পদ্মশ্রী’তে সম্মানিত করেছে। এটি ভারতের চতুথ সবচেয়ে বড় বেসামরিক পদক। ৯৬-এ পা রেখে গতবছর তিনি সম্মাননাটি লাভ করেছেন। আরো কাজ আছে কিন্তু নারায়ণ দেবনাথের। সেটির একটি হলো ‘রবি-ছবি’। ১৯৬১ সালে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শতবর্ষ পালনের উপলক্ষে তিনি নিজেকে এভাবে নিবেদন করেছেন সে বছরের মে মাসে। এটি বেরিয়েছিল ভারতের সবচেয়ে বিখ্যাত বাংলা ভাষার প্রকাশনী আনন্দমেলার ওই বিশেষ সংখ্যায়। পুরো ৫০ পৃষ্ঠার সম্পূর্ণ কমিক সিরিজটি বানারসের সর্বোদয় সাহিত্য প্রকাশন থেকে প্রকাশিত। মহান বাঙালি সমাজ সংস্কারক স্বামী বিবেকান্দের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে ১৯৬২ সালে তার জন্মবার্ষিকীটির আগের বছর তিনি কমিক সিরিজ লিখেছেন ‘রাজার রাজা’। এটির চিত্রনাট্য বাঙালি সাহিত্যিক বিমল ঘোষের।

এমন মানুষের জন্ম হয়েছিল উত্তাল এক সময়ে। তখন ব্রিটিশদের আমল। পুরোনো আর প্রাচীনে পড়ে আছে বাঙালি সমাজ। সেখানেই একটি নতুন ছেলের জন্ম হলো পশ্চিম বাংলার হাওড়া জেলার শিবপুর উপজেলাতে। তবে তাদের বাড়ি কিন্তু এই বাংলাদেশে। বিক্রমপুরে আদিবাড়ি। তার জন্মের আগে তারা চলে গিয়েছেন ওপারে। বিখ্যাত এই কমিক শিল্পী তার নারায়ণ দেবনাথ কমিক সমগ্রতে স্বীকার বলেছেন, একেবারে ছোট থেকে তিনি লোকশিল্পের নানা ভুবনের প্রতি আগ্রহী হয়ে পড়েন। তখন তো আর টিভি ছিল না। অন্যকিছু তো দূরের কথা। ফলে রেডিও নয়, তার ভালোবাসা ছিল গ্রামের কীর্তন, লোকগান, লোককবি, ছড়া আর প্রবাদের ওপর। নানা গ্রামের খেলাতেও মুগ্ধ ছিলেন এই সৃজনশীল মানুষটি। সেখানে তিনি আরো বলেছেন, তাদের স্বর্ণের দোকান ছিল। পেশায় তারা স্বর্ণকার বা বণিক ছিলেন। নানা ধরণের স্বর্ণগয়নার তিনি ডিজাইন করার যথেষ্ট সুযোগ পেয়েছিলেন তখন। এই বিদ্যেও জীবনে নারায়ণের খুব কাজে লেগেছে। লেখাপড়া করতে গিয়ে তার ছবি আঁকার দিকে মন চলে গেল। গ্রামের অবারিত প্রকৃতি আর নির্মল জীবন তাকে গড়ে দিয়েছিল অনেকটা। তাতে অবশ্য পরিবার মোটেও অবাক হয়নি। তারাও তো তাকে গড়েছেন। ফলে যখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কাল, ইন্ডিয়ান আর্ট কলেজে (কলকাতা আর্ট কলেজ নামেও পরিচিত) পড়তে চলে গেলেন তিনি।

তাদের ফাইন আর্টস পড়ানো হতো। টানা পাঁচটি বছর সেথায় পড়তে গিয়েছিলেন নারায়ণ। তবে তিনি পড়ালেখা চালিয়ে যাননি। শেষ বছরে পড়া ছেড়ে দিলেন খেয়ালী ও প্রতিভাবান এই শিল্পী ছাত্র। এর পরের কটি বছর কলকাতার টালিউডের সিনেমা শিল্পে অবদান রাখেন তিনি। কাজ করতেন পয়সার বিনিময়ে বিজ্ঞাপনী সংস্থাগুলোতে সিনেমার স্লাইড ও লোগো বানানোয়। নারায়ণ তার নারায়ণ দেবনাথ কমিক সমগ্র-২তে বলেছেন, যেদিন তার বিয়ে হয়েছে, সেদিনই ‘বাপুজী’ মহাত্মা গান্ধী আততায়ীর হাতে নিহত হয়েছেন। ফলে বিয়ের উৎসব তার মাটি হয়ে গিয়েছে শোকে ভেসে। তাতে বিয়ের অতিথিদের খুব অসুবিধা হয়েছিল মনে আছে বরের। তার ওই চারখন্ডের সমগ্রে সিরিজগুলোর লেখক ও শিল্পীর জীবনের খুব ভালো, ভালো তথ্য আছে।

ফ্রিল্যান্স এই শিল্পী ১৯৫০ সালে চলে যেতে পারলেন দেব সাহিত্য কুটিরের কাছে। সে আমলেই অন্যতম সেরা শিশুতোষ ভুবনের অধিকারী ছিলেন তারা। নামজাদা এই প্রকাশনী সংস্থাতে তাকে নিয়ে গিয়েছিলেন একজন বন্ধু। প্রতুলচন্দ্র ব্যানার্জি, শৈল চক্রবতী, বলাইবন্ধু রায়, পূর্ণচন্দ্র চক্রবর্তীর মতো মানুষরা তখন প্রকাশনীটিতে কাজ করতেন নানাভাবে। টানা ১০টি বছর তাদের সান্নিধ্যে থাকার দুর্লভ সৌভাগ্য হলো নারায়ণের ওখানে। ১৯৬১ সাল পযন্ত অনেকগুলো শিশুদের বইয়ের প্রচ্ছদের শিল্পী ও ইলাসট্রেটরের কাজ করেছেন। সেগুলোর মধ্যে আছে অভিযানের কাহিনীগুলো, পশ্চিমের শিশুদের উপযোগী সাহিত্যের অনুবাদ। কমিক সিরিজে চলে এলেন এই অবিস্মরণীয় শিল্পী ১৯৬২ সালে শুকতারার হাঁদা-ভোঁদার মাধ্যমে। একজন ফ্রিল্যান্স কমিক আর্টিষ্ট হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করলেও সেখানে ফল পেতে তার দেরি হলো না। নিজের ভুবন খুঁজে পেলেন তিনি। যখন খেয়ে না খেয়ে কাজ করতে হতো, তখন প্রকাশক তাকে বলেছিলেন সহজে ও ভালোভাবে ব্যবসা করতে উন্নতমানের বিদেশী কমিকগুলোকে বাংলাতে অনুবাদ কর। এভাবেও তার প্রতিভাকে চিনতে পেরেছিলেন তারা। বাংলা ভাষা পেয়েছিল নিজের প্রথম কমিক স্রষ্টাকে। যার সমতুল্য আজও নেই।

বাংলার এই বিরল প্রতিভাকে দেব সাহিত্য কুটিরের সম্পাদকরা বাংলায় কমিক লিখতে বলেছিলেন। তারাই ‘হাঁদা-ভোঁদার কাণ্ডকারখানা’ নামটি সিরিজের দিয়ে তাকে শুরু করিয়ে দিয়েছিলেন এই পথে। আস্তে, আস্তে ভালোবাসা গাঢ় থেকে গাঢ়তর হতে থাকলো। তাতে বিদেশী কমিগুলো তার হাতের তালুতে চলে এলো। এর আগে যুগান্তর পত্রিকাতে কমিক লিখতেন প্রতুলচন্দ্র লাহিড়ী। সেটির নাম হলো বিখ্যাত ‘শিয়াল পন্ডিত’ সিরিজ। এটিই প্রথম দিকের কমিক সিরিজগুলোর অন্যতম। তবে তারটি শুরু থেকেই সাফল্য পেতে থাকে। তাতে প্রতি মাসেই শুকতারা সিরিজটি বের করেছে। শুরুতে পেন্সিলে আঁকতেন তিনি। কালি ব্যবহার করতেন সেখানে ঝর্ণা কলমের। কোনো রঙিন ফ্রেম দিতে পারেননি। এরপর সিরিজটিকে গ্রে-স্কেলে প্রকাশ করতে পেরেছেন নারায়ণ দেবনাথ।

তার প্রথম রঙিন কমিক সিরিজ হলো চরিত্র নির্ভর ‘বাটুল দি গ্রেট’। এটি বই আকারেও ওভাবে শুরু হয়েছে। এই সুপার হিরোর আইডিয়াটি তিনি পেয়েছিলেন বিখ্যাত কলেজ স্ট্রিট থেকে ফেরার সময়। সুপার হিরোর নামটি ও একটি কাহিনী মাথায় আসার পর তখনই তিনি নামটি পেয়ে গিয়েছিলেন। লাল ও কালো কালিতে আঁকা এবং লেখা সিরিজটিরও শুরু হলো শুকতারা নামের সেই শিশুদের বিখ্যাত প্রতি মাসের সাময়িকীর বৈশাখ সংখ্যাতে। সেটি প্রকাশিত হয়েছে ১৯৬৫ সালের মে-জুন সংখ্যায়; বিশেষ সংখ্যা ছিল ওটি-বাঙালি বৈশাখ। প্রকাশ করতো দেব সাহিত্য কুটিরই। তার রবীন্দ্রনাথের জন্মশতবর্ষের বিশেষ নিবেদনের কাজটি রবীন্দ্রনাথের শিশু বয়স নিয়ে করা। আর ‘রাজার রাজা’ বা ‘ছবিতে বিবেকানন্দ’ স্বামীজির জীবন ও কর্মের ওপর করা। ১৯৬২ সালে আরেকটি কাজ করেছেন তিনি-‘চিত্রে দুর্গেশনন্দিনী’। সেটি চমকে দেবার তথ্য দেয়, বিখ্যাত বাঙালি লেখক বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের আরো বিখ্যাত দুর্গেশনন্দিনীর চিত্রময় উপন্যাসরূপ হলো এটি। ফলে এই কাজে তিনি অন্যতম পুরোধা বলা চলে এক মুহূর্তে।

হাঁদা-ভোঁদা, নন্টে-ফন্টে ও শুটকি আর মুটকি (১৯৬৪ সালে শুরু) বাংলার কমিকের ধারাতে রীতিমত বিপ্লব করে। এর বাদে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ যখন তুমুল অবস্থায় চলে গেল, উদ্দীপ্ত নারায়ণ দেবনাথ বিভিন্ন সংবাদপত্র, সাময়িকী ও প্রকাশকদের অনুরোধ করলেন তাতে আভা ও বাঙালিদের নানাভাবে সাহায্য করতে। নিজেও তার সুপার হিরো বাটুলকে নিয়ে এলেন ট্যাংক, যুদ্ধবিমান ও মিসাইল নিয়ে। সে এমনকী বুলেটকেও ঠেকিয়ে দিচ্ছে তখন। এভাবেই পূর্বপুরুষের ঋণশোধ করলেন নারায়ণ দেবনাথ নামের এপার বাংলার ছেলেটি। তখনও শুকতারাতে বেরুতো বাটুল।

তার নিজের নামে করা আরেকটি কাটুন সিরিজ ‘নন্টে-ফন্টে’ও তুমুল বিখ্যাত। সেটি প্রকাশ হয়েছে কিশোর ভারতীতে নিয়মিত। এবার বলি, শুকতারার জন্য ১৯৫০ সালে যে ফ্রিল্যান্স আর্টিস্ট হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন নারায়ণ দেবনাথ, সেই কার্টুন নিমাতার জীবন পুরো বাংলার সবচেয়ে বেশি ইলাসট্রেশনের আঁকিয়ে হিসেবে রেকর্ডের মালিক করেছিল তাকে। নিজের সময়ের সবচেয়ে খ্যাতিমান ইলাসট্রেটর আর্টিস্টও ছিলেন তিনি। এমনকী তিনি টারজান সিরিজটি অনুবাদ করেছেন টানা ৪২ বছর। বিদেশী সাহিত্যের বাংলায় অনুবাদ করেছেন লেখক হিসেবে।

এই মহান ও অতি বিখ্যাত কার্টুন চরিত্র নির্মাতা অসুখে ভুগে ২০২১ সালের ২৪ ডিসেম্বর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। হৃদরোগের অসুখে ভুগে নারায়ণ দেবনাথ তার কার্টুনদের কাছে ফিরে গেলেন ১৮ জানুয়ারি ২০২২ সালে, কলকাতা শহরে। চরিত্রগুলোর মতো তারও বয়স হয়েছিল অনেক-৯৬ বছর। বেশি তবে খুব বেশি নয়! তার কার্টুন সিরিজগুলোও কালকে জয় করেছে, তার মতোই। তিনিও হয়েছেন বহুকালের স্বাক্ষী।

(উইকিপিডিয়া থেকে অনুবাদ, ১৮-১-২০২২)

Header Ad
Header Ad

পাকিস্তানিদের বিশেষ ভিসা সুবিধা বাতিল, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ভারত ছাড়ার নির্দেশ

ছবি: সংগৃহীত

ভারত-নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে প্রাণঘাতী সন্ত্রাসী হামলার পর পাকিস্তানিদের জন্য ‘সার্ক ভিসা ছাড়’ সুবিধা বাতিল করেছে ভারত। সেই সঙ্গে ভারতে অবস্থানরত পাকিস্তানি নাগরিকদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দেশ ছাড়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। বুধবার (২৩ এপ্রিল) ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত দেশটির মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটির জরুরি বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে ভারত:

সিদ্ধান্তগুলো হলো:

১. সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত ঘোষণা। ভারত বলছে, পাকিস্তান যতদিন সীমান্তে সন্ত্রাস বন্ধ না করবে এবং সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন ত্যাগ না করবে ততদিন এটি স্থগিত থাকবে। ১৯৬০ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর করাচিতে তৎকালীন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু ও পাকিস্তানি প্রেসিডেন্ট ফিল্ড মার্শাল আইয়ূব খান সিন্ধু পানি বণ্টন চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন। বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় বহুল আলোচিত এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল।

২. অবিলম্বে আটারি-ওয়াঘা সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হবে। যাদের বৈধ নথি রয়েছে তারা ১ মে এর আগে সীমান্ত অতিক্রম করতে পারবেন।

৩. সার্ক ভিসা এক্সেম্পশন স্কিম (এসভিইএস) এর আওতায় পাকিস্তানি নাগরিকদের ভারতে ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া হবে না। পাকিস্তানি নাগরিকদের অতীতে জারি করা যেকোনো এসভিইএস ভিসা বাতিল বলে গণ্য হবে। এসভিইএস ভিসায় বর্তমানে ভারতে থাকা পাকিস্তানি নাগরিকদেরও ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ভারত ছাড়তে বলা হয়েছে।

৪. নয়াদিল্লিতে পাকিস্তানি হাইকমিশনের সামরিক, নৌ ও বিমান উপদেষ্টাদের ‘পার্সোনা নন গ্রাটা’ ঘোষণা করা হয়েছে। ভারত ছাড়ার জন্য এক সপ্তাহ সময় পাবেন তারা। ইসলামাবাদের ভারতীয় হাইকমিশন থেকে প্রতিরক্ষা, নৌ ও বিমান উপদেষ্টাদের প্রত্যাহার করে নিচ্ছে ভারত। সংশ্লিষ্ট হাইকমিশনের এই পদগুলো বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। উভয় হাইকমিশন থেকে সার্ভিস অ্যাডভাইজারের পাঁচজন সাপোর্ট স্টাফকেও প্রত্যাহার করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

৫. হাইকমিশনের সামগ্রিক জনশক্তি ৫৫ থেকে কমিয়ে ৩০ জনে নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। যা ১ মে এর মধ্যে কার্যকর হবে।

মঙ্গলবার বিকালে কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা হয়। অস্ত্রধারীরা জঙ্গল থেকে বের হয়ে পর্যটকদের ওপর গুলি চালাতে থাকেন। হামলায় ঠিক কতজন নিহত হয়েছেন, তা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি। তবে নিরাপত্তা বাহিনীর সূত্র বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছে, নিহত ব্যক্তির সংখ্যা অন্তত ২৬।

পাকিস্তানভিত্তিক নিষিদ্ধ সংগঠন লস্কর–ই–তৈয়েবার সহযোগী সংগঠন দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) মঙ্গলবার বিকালের হামলার দায় স্বীকার করেছে।

এদিকে এ ঘটনায় পাকিস্তানের পক্ষ থেকেও নিন্দা প্রকাশ করা হয়েছে। দেশটির গণমাধ্যম জিও নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘অবৈধভাবে দখলকৃত জম্মু-কাশ্মীর’র পেহেলগামে হামলার ঘটনায় পাকিস্তান উদ্বিগ্ন। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানিয়েছেন, পেহেলগামে হামলায় ২৬ জন নিহতের ঘটনায় পাকিস্তান নিন্দা প্রকাশ করছে। নিহতের পরিবারের প্রতিও সমবেদনা প্রকাশ করছে পাকিস্তান।

এ হামলাকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ আখ্যা দিয়ে এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উদ্দেশে বার্তা দিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বার্তায় তিনি বলেন, কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণহানির ঘটনায় আমার গভীর সমবেদনা গ্রহণ করুন। আমরা এ জঘন্য হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা আবারও নিশ্চিত করছি যে, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের অবস্থান সবসময় দৃঢ়।

Header Ad
Header Ad

বিএনপি সরকার গঠন করলে শিক্ষিত বেকারদের জন্য চালু হবে ভাতা: তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত

দেশে সরকার পরিবর্তন হলে শিক্ষিত বেকারদের জন্য বিশেষ ভাতা চালু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি জানিয়েছেন, সরকার গঠনের পর যারা চাকরি খুঁজেও পাচ্ছেন না, তাদের জন্য এক বছরের ‘শিক্ষিত বেকার ভাতা’ চালু করার বিষয়টি বিবেচনায় রয়েছে। এ সময়ের মধ্যেই তাদের কর্মসংস্থানে সহায়তা করবে সরকার।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) বিকেলে রংপুর, নীলফামারী ও সৈয়দপুর জেলা বিএনপির নেতাদের অংশগ্রহণে আয়োজিত এক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তিনি। বিএনপির ৩১ দফা রাষ্ট্রকাঠামো মেরামত পরিকল্পনা নিয়ে কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়।

তারেক রহমান বলেন, “আমরা একটি পরিকল্পনা করছি—যাতে যারা এখনো চাকরি পাননি, তারা যেন সরকারের সহযোগিতায় একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সহায়তা পান। এই সময়টিতে সরকার ও ব্যক্তিগত পর্যায়ে উভয়ের উদ্যোগেই কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা হবে।”

তিনি আরও অভিযোগ করেন, বিগত সময়ে সরকারি ও আধা-সরকারি চাকরিতে ব্যাপক দলীয়করণ হয়েছে। বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলের অনেক তরুণ নেতাকর্মী, যাঁরা আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন, তারা বয়স পার করে ফেললেও কোনো চাকরি পাননি। “শুধু ছাত্রদল নয়, আরও অনেক সাধারণ মানুষ আছেন যারা সরকারের অনুগত না হওয়ায় চাকরির সুযোগ হারিয়েছেন। এ বাস্তবতা বিবেচনায় নিতে হবে,” বলেন তারেক।

বাংলাদেশে সর্বজনীন স্বাস্থ্যবিমা চালু করার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তারেক রহমান বলেন, “২০ কোটির বেশি মানুষের জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা বিশাল বাজেট ও কাঠামোগত পরিকল্পনা দাবি করে। এটা অব্যবস্থাপনার জায়গা নয়, এটা করতে হলে বাস্তবতা মাথায় রেখে ধাপে ধাপে এগোতে হবে।”

তিস্তা নদী ঘিরে রংপুর অঞ্চলের মানুষদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণে বিএনপির পরিকল্পনার কথা জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, “তিস্তা শুধু নদী নয়, রংপুর বিভাগের অর্থনীতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। অতীতে তিস্তাকে কেন্দ্র করে রাজনীতি হয়েছে, কিন্তু মানুষের জীবনে কোনো পরিবর্তন আসেনি। বিএনপি সরকারে গেলে তিস্তা সমস্যা সমাধানে বাস্তব ভিত্তিক ও জনগণকেন্দ্রিক প্রকল্প গ্রহণ করবে।”

বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণবিষয়ক কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত এ প্রশিক্ষণ কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন রংপুর জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতারা। কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শামসুজ্জামান সামু এবং উদ্বোধনী বক্তব্য দেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু। সঞ্চালনায় ছিলেন নির্বাহী কমিটির সদস্য আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী।

Header Ad
Header Ad

এস আলমের ৪০৭ কোটি টাকার ১৫৯ একর জমি ক্রোকের নির্দেশ

ছবি: সংগৃহীত

এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলমের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা ১৫৯ একর জমি ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। জমিগুলোর আনুমানিক বাজারমূল্য ৪০৭ কোটি টাকা বলে জানিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এসব জমি ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসেন এই আদেশ দেন। আদালতে দুদকের পক্ষে আবেদন করেন উপপরিচালক তাহাসিন মুনাবীল হক। শুনানি শেষে আদালত আবেদন মঞ্জুর করেন। বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম।

দুদকের আবেদনে বলা হয়, এস আলম ও তার ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে চলমান তদন্তে দেখা যায়, তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে বিপুল পরিমাণ জমি ও স্থাবর সম্পদ রয়েছে। এসব সম্পদ তারা অন্যত্র বিক্রি বা হস্তান্তরের চেষ্টা করছে বলে গোপন সূত্রে জানা যায়। ফলে তদন্ত সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার স্বার্থে এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ সুরক্ষায় এসব জমি ক্রোকের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়।

জমিগুলো যেসব প্রতিষ্ঠানের নামে রয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে ক্রিস্টাল ক্লিয়ার ট্রেড লিংক, ইভেন্ট টাইটান ইন্টারন্যাশনাল, পাইথন ট্রেডিং কর্নার, ইসলাম ট্রেডার্স, ডায়মন্ড বিজনেস হাউস, এএইচ সেন্টারসহ আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। দুদকের ভাষ্য অনুযায়ী, এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মোহাম্মদ সাইফুল আলমের সরাসরি আর্থিক ও ব্যবসায়িক সম্পর্ক রয়েছে।

এর আগেও এস আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে একাধিক দফায় আদালত সম্পদ ও শেয়ার অবরুদ্ধ এবং দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। গত বছরের অক্টোবর থেকে শুরু করে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে তার ও তার ঘনিষ্ঠজনদের নামে থাকা শেয়ার, জমি ও ব্যাংক হিসাব পর্যায়ক্রমে অবরুদ্ধ ও ক্রোক করে আদালত।

এস আলমের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে এখন পর্যন্ত ১৩০০-এর বেশি ব্যাংক হিসাব, হাজার একরের বেশি জমি এবং কয়েক হাজার কোটি টাকার শেয়ার নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। দুদক জানিয়েছে, তদন্তে আরও নতুন সম্পদের তথ্য পাওয়া যেতে পারে।

দুদক বলছে, মানি লন্ডারিং ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে এই তদন্ত চলমান রয়েছে এবং প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

পাকিস্তানিদের বিশেষ ভিসা সুবিধা বাতিল, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ভারত ছাড়ার নির্দেশ
বিএনপি সরকার গঠন করলে শিক্ষিত বেকারদের জন্য চালু হবে ভাতা: তারেক রহমান
এস আলমের ৪০৭ কোটি টাকার ১৫৯ একর জমি ক্রোকের নির্দেশ
সীমান্তের সব ভিডিও সত্য নয়, আবার সবটা যে মিথ্যা তাও নয়: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
আন্দোলনের নামে রাস্তা অবরোধ না করার অনুরোধ ডিএমপির
টাঙ্গাইলে বেড়েছে গরমের তীব্রতা, বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ
সরকার সরিয়ে না দিলে পদত্যাগ করব না: কুয়েট ভিসি
বিরামপুরে ছিনতাইকালে পুলিশের হাতে 'ভুয়া সেনাসদস্য' আটক
হাসিনাকে যারা খুনি হতে সাহায্য করেছে, তাদেরও বিচার করতে হবে: সারজিস আলম
কুয়েটের ৩৭ শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার, খুললো আবাসিক হল
কাশ্মীরে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’, মসজিদে ঘোষণার পর বিক্ষোভ শুরু
ইতিহাস গড়ল জিম্বাবুয়ে, ঘরের মাঠে লজ্জার হার বাংলাদেশের
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের 'এ' ইউনিটে প্রথম আব্দুল্লাহ
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র পারভেজ হত্যা: প্রধান আসামি মেহরাজ গ্রেপ্তার
তুরস্কের ইস্তানবুলে একের পর এক ভূমিকম্প
এবার সেই গৃহকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করলেন পরীমণি
দ্রুত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন না হলে পুরো অঞ্চল অস্থিতিশীল হয়ে উঠবে: প্রধান উপদেষ্টা
আমরা সংস্কারও চাই, নির্বাচনও চাই: মির্জা আব্বাস
কাশ্মীরের হামলা ‘সাজানো’ দাবি পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমের
ভাইরাল ভিডিও সমন্বয়ক রুবাইয়ার নয়, দাবি এনসিপি নেতার