বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

রক্তাক্ত দ্বি-খণ্ডিত পাথর থেকে যেভাবে দেবী সোমেশ্বরী

ফাইল ফটো

সুনামগঞ্জ জেলার উল্লেখযোগ্য একটি উপজেলা শাল্লা। কোনো অঞ্চলের সংস্কৃতি নিয়ে পর্যালোচনা করতে হলে ওই অঞ্চলের নৃতাত্বিক স্বকীয়তা, আঞ্চলিক বিশেষত্ব, ভাষার স্বতন্ত্র ইত্যাদি নিয়েই কাজ করতে হয়। এই উপজেলার কোথাও কোনো প্রকার শিলালিপি, দস্তাবেজ, আদিম মানুষের কঙ্কাল এমন কিছু পাওয়া যায়নি। সঙ্গত কারণে এই উপজেলার সংস্কৃতি স্থানীয় ভাষার প্রতি দৃষ্টি দিয়েই বুঝে নিতে হবে। এখানকার ভাষায় বিভিন্ন অঞ্চলের বিশেষ করে সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ এবং ময়মনসিংহ অঞ্চলের ভাষার সংমিশ্রণ রয়েছে।

শাল্লা উপজেলার লোক সংস্কৃতি নিয়ে আলোচনা করলে দেখা যায় এই এলাকায় এক সময় পীরবাদ বা মুর্শিদবাদ, দেবদেবী, জীন-ভূত, দৈত্য, দানব, লৌকিক ক্রীয়কর্ম ও জাদু-মন্ত্রের প্রতি লোকজনের বিশ্বাস ছিল খুব বেশি। এখানে দেব-দেবী, জীন-ভূত, দৈত্য দানব, পীর ইত্যাদি ক্ষেত্রে তাবিজ-কবচ, ঝাঁড়-ফুঁক, পানি পড়া ইত্যাদির প্রভাব ছিল। শাল্লা উপজেলার কোনো কোনো এলাকায় বর্তমানেও এই প্রভাব রয়েছে। এক সময় এখানকার মানুষ চাষাবাদের প্রয়োজনে বিভিন্ন ঋতুতে বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠানের আয়োজন করত। পাশাপাশি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কারণে শিরনি মানতের মাধ্যমে নানান অলৌকিক দেবতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকত। শাল্লার এমনি এক অলৌকিক দেবী হচ্ছেন সোমেশ্বরী।

আনুমানিক ২৫০ বছর আগেরকার ঘটনা। অগ্রহায়ন মাসের কোনো এক সকাল বেলা। গ্রামের স্থানীয় এক কৃষক বাড়ির সামনের নলখাগড়া কাটতে গিয়ে ঘটে এক অলৌকিক কাণ্ড। তিনি নলখাগড়া কাটতে গিয়ে তার দায়ের কোপ গিয়ে পড়ে একটি পাথর খণ্ডে। তখনই দায়ের কোপে দ্বি-খণ্ডিত হওয়া পাথর থেকে আকস্মিকভাবে রক্ত ঝরতে থাকে বিরামহীন। ভয়ে ওই কৃষকের জ্বর আসতে থাকে। অগত্যা তিনি বাড়ি গিয়ে কাঁথা গায়ে জড়িয়ে শোয়ে পড়েন। ঘুমের মধ্যেই তিনি শোনতে পান, ‘তুই আমার গায়ে আঘাত করে রক্ত জড়িয়েছিস,আমি দেবী সোমেশ্বরী। আজ থেকে এই গ্রামের কোথাও আমাকে প্রতিষ্ঠা করে পূজা শুরু করতে হবে।’ তারপর ঘুম ভেঙে যায় কৃষকের। তিনি স্বপ্নের বিষয়টি নিয়ে সাহায্য চান গ্রামবাসীর কাছে। কৃষকের স্বপ্ন এবং দেবী সোমেশ্বরীর বিষয়টি ছড়িয়ে ইতিমধ্যে ছড়িয়ে পড়ে পার্শ্ববর্তী আরও ৪টি গ্রামে। সেই থেকে উদ্যোগ। অবশেষে স্বপ্নে সুমেশ্বরী দেবীর আদেশ অনুযায়ী বাহাড়া গ্রামের একটি উচুঁ স্থানে সেই কৃষকের হাত ধরেই পাথর খণ্ডে পূজা হচ্ছে দেবী সুমেশ্বরীর। এখানেই শেষ নয়, দ্বি-খণ্ডিত সেই একটি পাথর খণ্ডসহ অলৌকিকভাবে সেখানে স্থান হয় আরও ৩০ থেকে ৪০টি পাথর/ শিলার। তাঁরাও পূজিত হচ্ছেন সুমেশ্বরী মন্দিরে। তবে কবে এবং কিভাবে এই পাথর/শিলাগুলোর মন্দিরে স্থান হলো তার সুনির্দীষ্ট তথ্য কারোর কাছে নেই। কিন্তু বাকী পাথরখন্ড কিংবা শিলাগুলো সোমেশ্বরী দেবীর বোন হিসেবে মন্দিরে আগমন ঘটে-এমন বিষয়টি লোকমুখে বেশি প্রচারিত।

সেই থেকে সোমেশ্বরী দেবীর আগমন উপলক্ষে প্রতি বছর চৈত্র মাসের প্রথম রবিবার ও সোমবার বাহাড়া গ্রামে মেল বন্ধন শুরু হয় ভক্তদের। ভক্তদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠে মন্দির প্রাঙ্গন। মেলা এবং পূজানুষ্ঠান পরিচালনা করেন বাহাড়া গ্রামসহ পাঁচ গ্রামের মানুষ। এই অনুষ্ঠানের আয়োজক বাহাড়া, রঘুনাথপুর, শিবপুর, যাত্রাপুর ও পোড়ারপাড় গ্রামের লোকজন। অনুষ্ঠান উপলক্ষে প্রতি বছর প্রায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লাখো ভক্তের ঢল নামে।

স্থানীয়ভাবে সোমেশ্বরী মেলা বারনি হিসেবেও পরিচিত। গ্রামের দাড়াইন নদীর তীরে প্রথম দিনের মেলাটি ‘বেল-কুইশ্যার (ইক্ষু)’ মেলা হিসেবে পরিচিত। চৈত্রের প্রথম রবিবার বেল, আখ ও লাঠির মেলা বসে নদীর তীরে। পরদিন একই স্থানে বসে সোমেশ্বরীর মেলা। সোমেশ্বরী মন্দিরে আসা লোকজন মেলা থেকে ঐতিহ্য ও পূণ্যবস্তু হিসেবে আখ, বেল ও লাঠি নিয়ে বাড়ি ফেরেন।

শাস্ত্রীয় দেবী হিসেবে এই দেবীর কোনো অস্তিত্ব পাওয়া না গেলেও অলৌকিক দেবি হিসেবে বাহাড়া গ্রামে প্রতিষ্ঠিত সোমেশ্বরী দেবীর পূজা নিয়ে বিভিন্ন জনের সঙ্গে কথা বলে বিভিন্ন তথ্য পাওয়া গেছে। কারো কারোর মতে, প্রায় তিন শতাধিক বছর আগে থেকে সুমেশ্বরী দেবীর পূজানুষ্ঠান হচ্ছে। আবার কেউ বলছেন, দেড়শো বছর আগের ঘটনা। তবে অধিকাংশ প্রবীন লোক জানিয়েছেন, অন্তত ২৫০ বছর থেকে বাহাড়া গ্রামে দেবি সুমেশ্বরী পূজা হচ্ছে। এই সময়ে মহিষ বলি দেওয়া সুমেশ্বরী পূজার অন্যতম একটি রেওয়াজ। বলির পর মহিষটাকে ফেলে দেওয়া হয় পানিতে। এর আগে মহিষের রক্ত মিশ্রিত মাটি ভক্তি সহকারে সংগ্রহ করেন ভক্তরা। রক্ত মিশ্রিত সেই মাটি কেউ গায়ে মাখেন, কেউ ভালো ফসলের জন্য জমিতে ফেলেন আবার কেউ শারীরিক সুস্থতা কামনায়ও ভক্তি সহকারে মাটি গায়ে মাখেন।

সোমেশ্বরী দেবীর পূজাকালীন আরও একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা হচ্ছে-মহিষ বলিদানের আগ পর্যন্ত ওই ৫ গ্রামসহ পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলোতেও চুলোয় আগুন জ্বালানো হয় না। রেওয়াজ অনুযায়ী-বলিদান শেষে রান্নার যাবতীয় সরঞ্জাম ধুয়ে মুছে তারপর শুরু হয় রান্নার কাজ।

দেবি সুমেশ্বরী পূজায় অলৌকিক কাণ্ডের নানা তথ্য জানা গেছে লোকমুখে। নিয়ম অনুযায়ী বলি না হলে মন্দির প্রাঙ্গনে নানা ভুতুড়ে কাণ্ড ঘটতে থাকে। এমনকি বলির জন্য মহিষ প্রাপ্ত বয়স্ক না হলে বারবার চেষ্টা করেও বলিদান সম্পন্ন করা যায় না-এমন তথ্যও জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন। ফলে সুমেশ্বরী পূজা অনুষ্ঠান করার আগে সবাইকে একনিষ্ট এবং গভীর শ্রদ্ধায় মায়ের কাছে মাথা নত করে পূজা সম্পন্ন করতে হয়। এ ছাড়াও স্থানীয়দের বিশ্বাস, সুমেশ্বরী দেবীর সন্তুষ্টি আদায় করতে পারলে অকাল বন্যার কবল থেকে হাওরের বোরো ফসল রক্ষা করা খুবই সহজ হবে। ফলে কৃষি নির্ভর শাল্লা অঞ্চলের মানুষ গভীর শ্রদ্ধায় মহা আড়ম্বরে মাতা সোমেশ্বরী দেবীর পূজার্চনা করে আসছে।

হাওরাঞ্চলের মানুষ লোকজ বিশ্বাস ও লোকজ প্রথায় প্রবলভাবে বিশ্বাসী। শাল্লায় তার ব্যত্যয় ঘটেনি। সংস্কার-কুসংস্কার বৈজ্ঞানিক বা যৌক্তিকভাবে উঠে গেলেও এক শ্রেণির মানুষের কাছে তা এখনও রয়ে গেছে। যেমন-বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য চৌক্কা গোটা (একজাতীয় গুল্ম) কাইতনে (কালো রঙ্গের মসৃন সুতা) বেঁধে তার সঙ্গে ইমাম বা পীর ফকিরের দেওয়া তাবিজ গলায়, কোমরে, পায়ে, হাতের কব্জিতে বেঁধে রাখা। শিশুর চেহারা লাল-নীল হওয়া কিংবা খিচুনী হওয়া থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য কোমরে বাইট্যা (কালো রঙ্গের মোটা সুতা) বেঁধে দেওয়ায়। টাউকরা-টাউকরি ধরলে শিশুর চেহারা লাল-নীল হয়। এতে শিশুর মৃত্যু হতে পারে। কোনো কারণে শিশুর চেহারা লাল-নীল হলে কবিরাজের মাধ্যমে লোহার বড়শী আগুনে পুড়িয়ে লাল করে শিশুর কপালে বা বুকে ছেক দেওয়া। লোকজনের বিশ্বাসের মধ্যে আরও একটি অন্যতম প্রথা ছিল, স্বামীর নাম মুখে আনলে অমঙ্গল হয়। হাতে চুঁড়ি না থাকলে স্বামীকে খাবার পানি দিতে নেই। ৮/১০ বছরের বাচ্চা ঘুমন্ত অবস্থায় বিছানায় প্রশ্রাব করলে ঘুম থেকে ওঠার পর ওই স্থানে চাল ফেলে জিহ্বা দিয়ে চেঁটে চেঁটে খাওয়ানো ইত্যাদি।

সোমেশ্বরী দেবী ভক্ত ও সোমেশ্বরী সংগঠনের সদস্য বাহাড়া গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক রবীন্দ্র চন্দ্র দাস (৭৫) জানান, ছোট বেলায় তিনি দেখেছেন তার দাদু-দিদা, মা-বাবাসহ স্বজনরা সোমেশ্বরী দেবীকে এসে পূজা দিতেন। তিনিও তাদের পথ ধরে প্রতি বছর পূজা দেন। এ উপলক্ষে দেবীর মন্দির ঘিরে মেলাও বসে।
তিনি আরও জানান, এই মেলা ও পূজার বয়স আনুমানিক ৫ শত বছর হবে।

সুমেশ্বরী মেলা বিষয়ে গ্রামের প্রবীন মুরুব্বী নিবরস রায় জানান, পূর্বসূরীদের ঐতিহ্য হিসেবে প্রতি বছর চৈত্র মাসে দেবী সোমেম্বরী এখানে পূজিত হচ্ছেন। মেলায় ধর্মীয় ভাবগম্ভীর্য ও পবিত্রতা রক্ষায় পরিচালনা কমিটি সুশৃঙ্খলভাবে দায়িত্ব পালন করে।

তিনি বলেন, সোমেশ্বরী দেবী এই অঞ্চলের মানুষের ফসল ও জীবন-জীবিকা রক্ষার অবলম্বন-এমন বিশ্বাস থেকে গভীর শ্রদ্ধায় ও ভক্তি সহকারে দেবির পূজার্চনা সম্পন্ন হয়।

শাল্লা উপজেলার চেয়ারম্যান চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জানান, শাল্লায় দীর্ঘদিন থেকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিরাজমান। ফলে যেকোনো ধর্মের ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলো শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়।

তিনি বলেন, দেবি সোমেশ্বরী এই অঞ্চলের ফসল রক্ষার প্রতীক হিসেবে সকল ধর্মের মানুষের কাছে পূজনীয়। ফলে মেলায় সকল ধর্মের মানুষের ভক্তি সহকারে সহাবস্থান মেলার আরও একটি অসাম্প্রদায়িকতার নিদর্শন।

এ ব্যাপারে সোমেশ্বরী মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান গনেন্দ্র চন্দ্র সরকার বলেন, মন্দির পরিচালনা কমিটির সার্বিক তত্বাবধানে প্রতি বছর দুই দিনব্যাপী মেলা ও পূজানুষ্ঠান সম্পন্ন হয়।

তিনি বলেন, মেলায় বেল ও কুইশ্যারের ক্রেতা হিসেবে সনাতন ধর্মের পাশাপাশি মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজনের অংশগ্রহণ মেলার আরও একটি উল্লেখযোগ্য দিক। এর ফলে সোমেশ্বরী মেলায় কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার সৃষ্টি হয়নি।

এসআইএইচ

Header Ad

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

ছবি: সংগৃহীত

দেশের জনপ্রিয় নির্মাতা আশফাক নিপুন। কাজের পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমেও বেশ সরব তিনি। কথা বলেন নানা ইস্যু নিয়ে। সেই ধারাবাহিকতায় সরকার পতনের পর অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনেও বিভিন্ন সময় নিজের আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যেও বিভিন্ন বার্তা দিয়েছেন। এবার এমনি একটি বার্তায় দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনগনের আস্থার বিষয়ে আক্ষেপ জানালেন এই নির্মাতা।

বুধবার (২০ নভেম্বর) আশফাক নিপুন তার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সর্বস্তরের ছাত্র এবং সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল, বাসায় বসে বসে দোয়া করেছিল, যার যা সামর্থ্য দিয়ে সহায়তা করেছিল। কারণ, তারা দেখেছিল লড়াইটা আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসক বনাম সাধারণ ছাত্র-জনতার। এটাও অস্বীকার করার কোনো উপায় নাই যে এই আন্দোলন বেগবান করতে বিরোধী সকল দলের কর্মীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাদের সংগ্রামও গত দেড় দশকের। কিন্তু এটা যদি শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার লড়াই হতো তাহলে সাধারণ মানুষ এই লড়াই থেকে দূরে থাকত। সেই প্রমাণ বিগত ১৫ বছরে আছে।

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ এখনো দেশের কোনো রাজনৈতিক দলকেই পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারে না। এটাই বাস্তবতা। এই বাস্তবতা মেনে সকল রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত কীভাবে সাধারণ জনগণের ভেতর নিজের দলের প্রতি আস্থা তৈরি করা যায় সেই বিষয়ে নিরলস কাজ করা। এই আস্থা ক্ষমতায় গিয়ে অর্জন করা সম্ভব না। কারণ, সাধারণ মানুষ আজীবন এস্টাবলিশমেন্টের বিপক্ষে। এই আস্থা অর্জন করতে হয় ক্ষমতা বলয়ের বাইরে থেকেই।

নিপুন আরও লিখেন, অরাজনৈতিক সরকার দিয়ে দীর্ঘদিন দেশ চালানো যেমন কাজের কথা না ঠিক তেমনি রাজনৈতিক সরকার হতে চাওয়া সকল রাজনৈতিক দলগুলোর বোঝা উচিত মুক্তিযুদ্ধের পরে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে সকল প্রকার পূর্বানুমান (যেমন- বর্ষাকালে আন্দোলন হয় না, নির্বাচনের আগেই কেবল জোরেশোরে আন্দোলন হয়, ঘোষণা দিয়ে বিরোধী সকল পক্ষ আন্দোলনে শামিল না হলে সফল হয় না) অগ্রাহ্য করেই। সেটা সম্ভব হয়েছে সাধারণ মানুষের ন্যায্যতার আকাঙ্ক্ষা থেকেই।

সবশেষ এই নির্মাতা লিখেছেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষার দুই পয়সার দাম দেন নাই। সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষা, ইচ্ছা আর দেশপ্রেমকে পুঁজি করে অরাজনৈতিক এবং রাজনৈতিক যারাই রাজনীতি রাজনীতি খেলতে চাইবে, তাদের দশাও কোন একসময় যেন পলাতক শেখ হাসিনার মতো না হয়, সেই বিষয় নিশ্চিত করতে হবে তাদেরকেই।

Header Ad

‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা

ফাইল ছবি

জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবস ২০২৪ উপলক্ষে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, জুলাই-আগস্ট ছাত্র জনতার বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে আমরা নতুন বাংলাদেশের সূচনা করেছি। এ নতুন দেশে আমাদের দায়িত্ব সকল মানুষকে এক বৃহত্তর পরিবারের বন্ধনে আবদ্ধ করা। কেউ কারো উপরে না, আবার কেউ কারো নিচেও না, এই ধারণা আমরা আমাদের জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।

তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে সুযোগ ছাত্র-জনতার সাহস ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে সম্প্রতি আমরা অর্জন করেছি, সেটাকে কাজে লাগিয়ে আমাদের সুন্দর ও সমৃদ্ধশালী ভবিষ্যৎ গড়তে হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ, আহত এবং জীবিত ছাত্র-জনতার কাছে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকতে চাই। যে সুযোগ তারা আমাদের দিয়েছে, তার মাধ্যমে আমাদের দেশকে পৃথিবীর সামনে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী দেশে পরিণত করতে আমরা শপথ নিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, ছাত্র আন্দোলনে জীবন উৎসর্গ করে যারা দেশ গঠনের সুযোগ করে দিয়েছে জাতি তাদের সারা জীবন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।

বক্তব্য শেষে সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা। পরে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

Header Ad

নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু

ছবি: সংগৃহীত

নওগাঁ শহরে যানযট নিরসন ও শৃঙ্খলা ফেরাতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ, পৌর কর্তৃপক্ষ ও রিকশা মালিক-শ্রমিকদের যৌথ উদ্যোগে বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। এতে শহরে শৃঙ্খলা ফিরবে বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) অভিযানের উদ্বোধন করেন নওগাঁ পৌরসভার প্রশাসক ও স্থানীয় সরকারের উপ পরিচালক টি.এম.এ মমিন। এ সময় নওগাঁ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট জিয়া উদ্দিন, নওগাঁ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন, নওগাঁ জেলা ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক আফজাল হোসেন ও অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

অভিযান শুরুর পর থেকেই শহরের বরুনকান্দি, মশরপুর, তাজের মোড় ও কালীতলাসহ মোট ৮ টি প্রবেশদ্বারে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। চেক পোষ্টগুলোতে ২ জন পুলিশ সদস্য, ২ জন ছাত্র সমন্বয়ক, ৪ জন রোভার স্কাউট সদস্য ও ২ জন রিকশা মালিক শ্রমিক প্রতিনিধিসহ মোট ১২ জন করে কাজ করছেন।

পৌর প্রশাসক জানান, নওগাঁ শহরে বৈধ যানবাহনের সংখ্যা ৪ হাজার। কিন্তু প্রতিদিন পার্শবতী বিভিন্ন এলাকা থেকে অন্তত ১০ হাজার রিকশা, ব্যাটারী চালিত অটো রিকশা ও ইজিবাইক শহরে প্রবেশ করে। এতে তীব্র যানযট ও জন মানুষের ভোগান্তি তৈরী হয়। এই দূর্ভোগ লাঘোবে জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল ও পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিনের দিক নির্দেশনায় যানবাহন নিয়ন্ত্রনসহ বিশেষ অভিযানের সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। বৈধ চালকদের চিহ্নিত করতে তাদের মাঝে পরিধেয় বিশেষ ধরনের জ্যাকেট প্রদান করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

নওগাঁর পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিন বলেন, নওগাঁ শহরের যানযট দীর্ঘদিনের সমস্যা। পরিকল্পিত ভাবে এই সমস্যা দূর করতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগের উদ্যোগে পৌর কর্তৃপক্ষ ও রিকশা মালিক শ্রমিক নেতৃবৃন্দদের সমন্বয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে স্থানীয় বাসিন্দা ও বিভিন্ন ষ্টেক হোল্ডারদের পরামর্শ নিয়ে একটি কর্ম পরিকল্পনা গ্রহক করা হয়েছে।

এ বিষয়ে নওগাঁর জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল বলেন, অভিযান সফল ভাবে বাস্তবায়ন হলে শহরে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। জনগন এর সুফল পাবেন। সকলকে এই কার্যক্রমে সহযোগিতা প্রদানের আহবান জানান তিনি।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’
‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী
ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত
সাবেক এমপি শাহজাহান ওমরের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর
১২ বছর পর সেনাকুঞ্জে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া