শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

উল্টে দিচ্ছেন পুরোনো ভুবনের পাতা

নাইরোবির নতুন অধ্যায় শুরু হয়েছে বইয়ের ভুবনে। পড়ে থাকা ও চিরকালের মতো হারিয়ে যেতে থাকা কেনিয়ার রাজধানীর গ্রন্থাগারগুলোকে বাঁচিয়ে তোলার কাজ শুরু করেছেন দুজন নারী। তাদের এই প্রকল্পের নাম ‘বুক ব্যাংক’। স্থানীয় সরকারের সাহায্য নিয়ে তারা উপনিবেশিক আমলের গ্রন্থাগারগুলোকে পুণরুদ্ধার ও জীর্ণতা থেকে বাঁচাচ্ছেন। সেগুলোতে রাখছেন আফ্রিকার ইতিহাস। যেগুলো স্বযত্নে এখানেও মুছে ফেলা হয়েছে।

তারা বইয়ের লোক
আফ্রিকা মহাদেশের কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবির গ্রন্থাগারগুলো আবার বেঁচে ওঠার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছেন দুইজন নারীকে। তারা পুরোনো পাতাগুলোকে উল্টে দিচ্ছেন। তারা কেবল গ্রন্থাগারগুলোর ভেতরের বইগুলোকে ভবিষ্যত প্রদান করছেন না, সেগুলোর আশপাশের সমাজগুলোকেও পাল্টে দিচ্ছেন। তাদের এই প্রতিষ্ঠানটির নাম ‘বুক ব্যাংক’। প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ২০১৭ সালে। এটি গড়ে তুলেছেন দুজন, একজনের নাম অ্যাঙ্গেলা ওয়াচুকা, তিনি পেশায় প্রকাশক। অন্যজন হলেন ওয়ানজিরু কনিয়াঙ্গে, লেখক। তাদের এই প্রতিষ্ঠানটি অলাভজনক ও স্বেচ্ছাসেবী। তারা এর মাধ্যমে পুরো শহরের গ্রন্থাগারগুলোকে একে, একে অবকাঠামোগতভাবে উন্নয়ন ও বইগুলোকে আরো উন্নত মান প্রদানের কাজ করে চলেছেন। এছাড়াও গ্রন্থাগারগুলোকে নানা ধরণের অনুষ্ঠান আয়োজনের স্থানে পরিণত করতে সাহায্য করছেন। যাতে সেখানে ভাবনার বিকাশে সহযোগিতা ও লেখালেখিকে উদ্যাপন করা সম্ভব হয়। সেজন্য আয়োজন করছেন ‘নাইরোবি লিটারেচার ফেস্টিভ্যাল’ বা ‘নাইরোবি সাহিত্য উৎসব’।

নিজেদের এই কাজের পেছনের দিনগুলোর কথা বলতে গিয়ে কনিয়াঙ্গে বলেছেন, ‘আসলে আমাদের আগে ও শুরুতে বিপুল পরিমাণ প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছে। তার মধ্যে আছে লাইব্রেরিগুলো কেন? তারা আসলে কী করতে পারে? কীভাবে তারা মানুষকে পুরোপুরি সাহায্য করতে পারে?’ আসলে গ্রন্থাগারগুলো যেসব ভবনে আছে, সেগুলো কদিন আগেও ভুতুড়ে ভবন হিসেবে পড়ে ছিল। প্রায় সব ভবনই ছিল ভাঙাচোরা। সেগুলো এই এমন একটি দেশে, যে কেনিয়া ১৮৯৫ সাল থেকে ব্রিটিশদের শাসনাধীনে ছিল। তারা একে উপনিবেশ হিসেবে ২৫টি বছর পর স্বীকৃতি দিয়েছেন-১৯২০ সালে। এরপর থেকে ৪০ বছরও বেশি সময় ধরে তারা শাসন করেছেন এখানে।

দেশটির রাজধানীর সবচেয়ে পুরোনো গ্রন্থাগারটি হলো ‘ম্যাকমিলান মেমোরিয়াল লাইব্রেরি’ বা ম্যাকমিলান স্মৃতি গ্রন্থাগার। এটিই বুক ব্যাংকের সাম্প্রতিক প্রকল্প। গ্রন্থাগারটি বহু পুরোনো, ১৯৩১ সালে তৈরি করা হয়েছে। তারপর থেকে তিনটি দশক এই বইয়ের ভবনে কেবল আসতে পারতেন সাদা চামড়ার উপনিবেশ স্থাপনকারীরা। এমনকী গ্রন্থাগারটির নামটিও তার ইতিহাসকে মনে করিয়ে দেয়। এটির অনুমোদন দিয়েছিলেন লেডি লুইস ম্যাকমিলান ও তার স্বামী নতুন উন্নয়নশীল দেশে বসত করতে আসা মাকিন উইলিয়াম নথরাপ ম্যাকমিলানের একটি স্মারক হিসেবে উৎসগ করেছেন। আগে সিংহরা প্রবেশদ্বারে পাহারা দিত। এর কারণ হলো, তার স্বামীর সিংহের প্রতি মুগ্ধতা। এর বাদেই সেই সময়গুলোর চমকপ্রদ উদাহরণ হলো এর ভেতরের বইগুলো। তারাসহ পুরো প্রতিষ্ঠানটিই উপনিবেশ আমলের উৎকৃষ্ট উদাহরণ হয়ে আছে। বুক ব্যাংকের আরেক উদ্যোক্তা ওয়াচুকা বলেছেন, ‘আপনি যখন এই সংগ্রহশালার দিকে চোখ ফেরাবেন, জানবেন একটি বিশেষ ধরণের মতবাদকে প্রকাশ করে সে। সেটি কিন্তু খুবই সমস্যাগ্রস্থ চিন্তাধারা।’

উপনিবেশিক গ্রস্থাগারকে উন্নয়ন
২০১৮ সালে বুক ব্যাংক নাইরোবির স্থানীয় সরকারের সঙ্গে একটি অংশীদারিত্ব চুক্তি সম্পাদন করে ও উন্নয়ন কাজ শুরু করে। সেখানে তাদের শহরের গ্রন্থাগারগুলোকে পুণ প্রতিষ্ঠার কাজে নেতৃত্ব দানের সুযোগ এনে দেয়। তারপর থেকে কাজ শুরু করেন তারা। তাদের প্রতিষ্ঠানটি দাতা ও অংশীদারদের ওপর প্রকল্পগুলো সফল করার জন্য নিভরশীল। তাদের আছে নিবেদিতপ্রাণ কমী ও স্বেচ্ছাসেবী। কমীদের বেতন দেন তারা। ওয়াচুকা ও কনিয়াঙ্গের মোট ৩০ জন ইন্টানকে নিয়ে টানা নয়টি মাস কাজ করেছেন ম্যাকমিলান মেমোরিয়াল লাইব্রেরিতে। কেননা, সেখানে বই আছে মোট ১ লাখ ৩৭ হাজার ৭শ ৫টি। সংগ্রহশালাটি আসলেই বিরাট ও বিপুল। এই বইগুলো প্রধানত ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক বসতকারী ও শাসকদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা। এখন এই বইগুলোর কোনগুলোকে রাখা হবে বা আগামীতে প্রয়োজন পড়বে সেই কাজটি করছেন তারা। বাকি কাজগুলো শেষ হয়ে গিয়েছে। ওয়াচুকা বলেছেন, ‘আসলে এখানে যেসব বই আছে সেগুলো আমরা কেনিয়ানরা কারা বা আমাদের ইতিহাস কেমন তাকে প্রকাশ করে না, তুলে ধরে না। তবে এই ইতিহাসের পুরো সময় ধরে কীভাবে আমাদের দেখা হয়েছে বা সাদাদের চোখে আমরা কেমন ছিলাম, সেটিকে জানার একটি গুরুত্বপূণ উপাদান হলো এই বইগুলো।’

দি ম্যাকমিলান লাইব্রেরি নামেও খ্যাত এই গ্রন্থভুবন বুক ব্যাংকের তৃতীয় গ্রন্থাগার পুর্ণরুদ্ধার প্রকল্প। এর আগে তারা পুর্ণজীবন দান করেছেন পূব নাইরোবির ইষ্টল্যান্ডস লাইব্রেরিকে। কাজ করেছেন আরো কেন্দ্রের কালোলেনি লাইব্রেরিকে। তারা এখন কাজ করছেন বইগুলোকে ডিজিটাইজ করতে ও অন্য উপাদানগুলোকে সংরক্ষণের কাজ করে চলেছেন। সেগুলোর মধ্যে আছে সাময়িকীগুলোকেও এমনভাবে সাজানো যাতে কম্পিউটারে ক্লিক করার পর সেগুলো ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় উঠে আসে। লাইব্রেরিতে বইগুলোকে তাকে, তাকে শ্রেণীবিন্যাস করার সময় তারা খেয়াল করেছেন তিনটি গ্রন্থাগারেই একটি বড় পাথক্য আছে। উপনিবেশিক সংগ্রহশালা যেমন আছে, ঠিক তেমনি অভাব আছে আফ্রিকানবাদী সংগ্রহশালার। তার মানে উপনিবেশকারীরা এই মহাদেশের লেখাগুলোকে রাখতে রাজি হননি। কনিয়াঙ্গে এই বিষয়ে বলেছেন, ‘আমি শতভাগ নিশ্চিত যে আমাদের মানুষের চাহিদাকে প্রকাশ করে এমন বইগুলো যদি কোনো তাকেও থাকতো, তাহলে সেগুলো শেলফটি থেকে লাফিয়ে নামতো। এই গ্রন্থাগারগুলো কেনিয়াতে ব্যবহার না হওয়ার এটিও একটি বড় কারণ।’

তিনি বলেছেন, ‘গ্রন্থাগারগুলো হলো এমন একটি জায়গা বা স্থান, যেখানে আপনি যা কিছুই চান না কেন, পেতে পারেন। এটি কোনো কারণ হতে পারে না যে আপনি কে বা কী চাইছেন?’ তাদের প্রতিষ্ঠানটি পরিকল্পনা করছে, আফ্রিকানদের লেখা ও তাদের সম্পকে তৈরি বইগুলোকে সন্নিবেশ বা যুক্ত করার। আরো থাকবে অভিবাসী এবং কালো মানুষদের অভিজ্ঞতার বই। কেবল বইয়ের ভান্ডারগুলোকে তারা তৈরি করে দিচ্ছেন না বা গ্রন্থাগারগুলোকে বাঁচিয়ে ব্যবহার উপযোগী করছেন না; বুক ব্যাংক থেকে তারা বইও প্রকাশ করছেন। সেগুলোর মধ্যে আছে কেনিয়ার অভিনেত্রী লুপিটা নাইয়োঙ্গ’ও’র শিশুতোষ বই ‘সুলউই’। এটির তারা পূব আফ্রিকান সংস্করণ বের করেছেন। সেটি প্রকাশিত হয়েছে ও সহজলভ্য আছে-ইংরেজি, সোহাইলি এবং লুউতে (এই ভাষাটি কেনিয়ার চতুর্থ আদিবাসী গোষ্ঠীটির ভাষা। তারাই প্রধানত এই ভাষায় কথা বলেন।)

একত্রে হবার আহবান করা একটি খোলা জায়গা
গ্রন্থাগারগুলোকে চারপাশের মানুষরা কাজের জায়গা হিসেবে ব্যবহার করেন। কনিয়াঙ্গা আরো বলেছেন, গড়ে প্রতিদিন ৩শ মানুষ লাইব্রেরিগুলোর আশপাশে জায়গাগুলো ব্যবহার করতেন। তবে বুক ব্যাংক সেগুলোকে গড়ে তোলার আগে ইস্টন্যান্ডস ও কালোলেনি গ্রন্থাগার ভবনে খাওয়ার, ব্যবহারের কোনো পানীয় জলের সুবিধা ছিল না। এগুলোতে ব্যবহারযোগ্য কোনো পয়:নিস্কাষন ব্যবস্থাও ছিল না। ম্যাকমিলানে কোনোমতে কাজ করতে পারে এমন একটি বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা ছিল। তবে তারপরও সূযালোক চলে গেলে গ্রন্থাগারটিকে বন্ধ করে দিতে হতো।

তবে এই গ্রন্থাগার ব্যবস্থার পেছনে হুট করে নেমে পড়েনি বুক ব্যাংক। তারা গ্রন্থাগারগুলোকে পুর্ণগঠনের আগে কয়েক মাস সময় কাটিয়েছেন স্থানীয় জনসমাজগুলোকে জরিপের কাজে। তাতে তারা দেখার চেষ্টা করেছেন কোন সেবাগুলো বা কী সেবাগুলো প্রদান করলে তাদের সবচেয়ে উপকার হবে। তাদের লোকেরা আরো অনুরোধ করেছেন, ইন্টারনেট সুবিধাসহ ওয়াইফাইয়ের, উন্নত ও মানসম্পন্ন বাথরুমের, বাড়তি সময় খোলা রাখার সুবিধা, স্থানীয় সমাজগুলোর ব্যবহারের জন্য আলাদা জায়গা এবং নানা ধরণের মজার কাজের ব্যবস্থা রাখা। তাদের কথাগুলো শুনেছেন দুই উদ্যোক্তা ও বন্ধু। এখন কালোলেনির একটি শিশুদের জন্যই শুধু গ্রন্থাগার আছে।

ইষ্টল্যান্ডসে তারা গড়ে দিয়েছেন একটি খোলা জায়গা বিনোদনের জন্য। সেখানে নানা ধরণের শিল্পকর্ম আছে, উন্মুক্ত মঞ্চাভিনয়ের ব্যবস্থা রেখেছেন। তাতে নাইরোবি লিটারেচার ফেষ্টিভ্যালের অংশ হিসেবে কেনিয়ান গায়ক ও গীতিকার সানাইপেই টান্ডে সম্প্রতি গান করেছেন। সেগুলো রেকড করা হয়েছে।

বুক ব্যাংক এখন লাইব্রেরিগুলোর বাইরের অংশগুলোকে তৈরি করার জন্য কাজ করছে। তার বাদেও অবকাঠামো, দেয়ালগুলোতে ওয়াইফাইয়ের জন্য বাধাগুলোকে দূর করতে কাজ করছেন। আলাদা করে লোহার পাত বসাচ্ছেন। তারা এমন একটি জায়গা রাখছেন যেটি এই গ্রন্থাগারগুলোতে কোনোদিনও তাদের জন্য করা হয়নি। এমন অনুভূতি তৈরি হচ্ছে মানুষগুলোর মধ্যে। কনিয়াঙ্গে বিশ্বাস করেন এসব কাজ কেনিয়া, আফ্রিকা মহাদেশ ও কালো মানুষগুলোর ভুবনের ইতিহাসকে দাঁড় করিয়ে দেবার জন্য গুরুত্বপূণ। তারা এভাবে রেখে যাচ্ছেন ভবিষ্যতের জন্য উন্নত প্রচেষ্টা।

তিনি বলেছেন, ‘আমি মনে করি-কষ্টের বিষয়গুলো খুব দ্রুত ঘষে তুলে ফেলার কাজগুলো এভাবে আমরা কেনিয়ানরা করেছি। অন্যদেরও এমন পথে এগিয়ে আসা প্রয়োজন। এটি উপকারী নয়, যেহেতু আপনি এমন ইতিহাসকে ঘষে নিশ্চিহ্ন করে ফেলতে চাইছেন। যদি এমন করেন; তাহলে আপনি সেটি ভুলে যাবার কাজ করেন; এরপর এমন কাজ বারবার ঘটে। তাহলে আমরা সেটি আবার সুন্দর করে তুলি। আপনি সেই পথে কেবল ভবনগুলোকে আবার আগের অবস্থায় ফিরে আনার কাজে নয়, ভবনগুলো কেনিয়ানদের জন্য কী মানে নিয়ে আসে এবং আরো দীঘস্থায়ী কীভাবে তাদের জন্য হতে পারে তেমন একটি পথ খুঁজে পাচ্ছেন।’

নাইরোবির গ্রন্থাগারগুলোতে তারা অনেক কাজ করেছেন এরই মধ্যে। মোটে তিনটি হলেও ইস্টল্যান্ডস লাইব্রেরিতে যে খোলা জায়গা তারা রেখেছেন, সেখানে ওপরে পাতলা পলিথিন দিয়েছেন, যাতে সূযের আলো প্রবেশ করতে পারে ও বাতি ব্যবহার করতে না হয়। তাছাড়াও সেখানে তারা মেঝেতে ছোট, ছোট সবুজ ঘাসের চত্বর করেছেন। তার পাশে আবার রেখেছেন মোজাইকের মেঝে। নান্দনিক এই মেঝেতে তাকিয়েও মন ভালো হয়ে যায় সবার। আরো রেখেছেন দেয়ালে সুন্দর বাঁধাই করা শিল্পকর্ম। ভেতরের দেয়ালে সার বেঁধে বই আছে বিরাট এক সেলফ। একটিতেই মোট আটটি তাক। ম্যাকমিলান মেমোরিয়াল লাইব্রেরি হলো বিরাট এক ভবন। ঔপনিবেশ আমলের স্বাক্ষ্য দিয়ে চলেছে। চারপাশে লোহার রেলিং আলাদা করেছে তাকে। ভেতরে লোহার আংটার ঝুলন্ত ঝাড়বাতির আছে অনেকগুলো, আলো দেয় পাঠক ও কর্মীদের। আছে জাগুয়ারের বিরাট আবক্ষমূতি। হিংস্রতার অনিন্দ্য উদাহরণ হয়ে চিরকাল ভয় ধরিয়ে দেয়। পুরোনো আমলের স্থাপত্যরীতিতে গড়া এই ভবনের দেয়ালগুলো। দরজাগুলো বিরাট ও সুন্দর। সেখানেও তাদের কাজ অন্যরকম।

(সিএনএন অবলম্বনে ১৮-১-২০২২)

 

Header Ad

গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুরের শ্রীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের উদয়খালী গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

মৃত তিন শিক্ষার্থী হলেন- মোজাম্মেল হোসেন নাঈম (২৪), মোস্তাকিম রহমান মাহিন (২২) ও জোবায়ের আলম সাকিব (২২)।

জানা গেছে, শনিবার সকালে গাজীপুর মহানগরের বোর্ড বাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজির মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের প্রায় ৪৬০ জন শিক্ষার্থী বিআরটিসির ৬টি ডাবল ডেকার বাস ও ৩টি মাইক্রোবাসে করে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের উত্তর পেলাইদ গ্রামের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামীণ আঞ্চলিক সড়ক ধরে রিসোর্টের উদ্দেশ্যে যাওয়ার সময় উত্তর পেলাইদ গ্রামের উদয়খালী বাজারে পৌঁছালে বিআরটিসির ডাবল ডেকার একটি বাস পল্লী বিদ্যুতের তারের স্পর্শে আসে। এ সময় বাসটি বিদ্যুতায়িত হলে কয়েকজন শিক্ষার্থী বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। তাদের উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক জাকিউল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, তিনজনকেই মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। আহত সংখ্যা এখনও নিশ্চিত হতে পারিনি। আমরা জরুরি বিভাগে যাচ্ছি।

Header Ad

কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া

ছবি: সংগৃহীত

মিল্ক বিউটিখ্যাত দক্ষিনি অভিনেত্রী তামান্না ভাটিয়া নতুন বছরে তার জীবনের একটি বিশেষ অধ্যায়ে পা রাখতে যাচ্ছেন। খলচরিত্র করে আলোড়ন তোলা অভিনেতা বিজয় ভার্মার সঙ্গে তার প্রেমের গুঞ্জন চলছিল অনেক দিন ধরেই। তবে এ নিয়ে কেউই মুখ খোলেননি। এবার তাদের সম্পর্ক নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন তামান্না। এমনকি ২০২৫ সালে সাতপাকে বাঁধা পড়ার সম্ভাবনা আছে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন।

সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যমের এক প্রোমোশনাল ইন্টারভিউতে তামান্না তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে জানান, প্রেমের সম্পর্কের জন্য জীবনে দুবার হৃদয় ভেঙেছে তার। সেই সময়টা তামান্নার জন্য খুবই ভয়াবহ ছিল।

তিনি আরও জানান, তিনি খুব কম বয়সে একজন ছেলের সঙ্গে প্রথম ভালোবাসায় জড়িয়েছিলেন এবং তার দ্বিতীয় সম্পর্কটি ছিল তার অভিনয় ক্যারিয়ারের শিখরে থাকা অবস্থায়। তবে সে সময় তিনি অনুভব করেন যে, সেই ছেলে তার সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্কের জন্য সঠিক ব্যক্তি নয়।

তবে এত কিছুর পরও বাহুবলিখ্যাত তামান্না প্রেমিকের নাম প্রকাশ করেননি। এর আগে গুঞ্জন ছিল যে, তিনি ভারতীয় অভিনেতা বিজয় ভার্মার সঙ্গে ডেট করছেন। পাপারাজ্জিদের ক্যামেরায় বহুবার ফ্রেমবন্দি হয়েছেন তারা। যদিও নিজেদের এ সম্পর্ক আড়ালে রাখতে বদ্ধপরিকর দুজনই। এখন দেখার অপেক্ষা তামান্না জীবনসঙ্গী হিসেবে কাকে বেছে নেন।

সবশেষ তামান্না ভাটিয়াকে আইটেম গার্ল হিসেবে দেখা যায় অমর কৌশিক পরিচালিত ‘স্ত্রী ২’ সিনেমায়। এ সিনেমায় আরও অভিনয় করেন রাজকুমার রাও, শ্রদ্ধা কাপুর, পঙ্ক ত্রিপাঠিসহ আরও অনেকে।

Header Ad

পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...

ছবি: সংগৃহীত

পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকার বিনিময়ে নয় মাসের শিশু সন্তানকে দত্তক দেন শরীফা খাতুন নামে মানসিক ভারস্যমহীন এক মা। বিষয়টি জানতে পেরে গতকাল শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ওই নবজাতককে উদ্ধার করে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছেন সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশের সহায়তায় ওই শিশুটিকে তার মায়ের কোলে ফেরত দেন।
মানসিক ভারসাম্যহীন নারী শরীফা খাতুন বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী ইউনিয়নের জেমজুট মুসলিমবাগ এলাকায় তিন সন্তানকে নিয়ে ভাড়া বাড়িতে থাকেন। তিনি ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসার চালান।

প্রতিবেশী ও পরিবারের সদস্যরা জানান, গত এক বছর আগে স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় শরীফা খাতুনের। এর পর সন্তানদের নিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করে চলত তার পরিবার।

গত মঙ্গলবার নিজের ৯ মাসের কন্যা সন্তানকে পঞ্চগড় পৌরসভার দক্ষিণ তেলিপাড়া এলাকায় একটি হলুদ খেতে রেখে ভিক্ষা করতে যান শরীফা খাতুন। এ সময় শিশুটিকে দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে স্থানীয় রুনা আক্তার নামে এক নারী; একইসঙ্গে শরীফাকেও নিজ বাড়িতে নেন তিনি। রুনা নামে ওই নারীর নিজ সন্তান না থাকায় শিশুটিকে দত্তক নিতে চাইলে, ৫০০ টাকার বিনিময়ে রেখে চলে যান শরীফা।

এরপর চার দিন পর অবশেষে পুলিশ প্রশাসনের সহায়তায় নিজ পরিবারের কাছে ফিরেছে শিশুটি। বর্তমানে শিশুটিকে দেখভাল করছেন মানসিক ভারসামহীন শরীফার ১৬ বছরের বড় ছেলে নয়ন।

এ বিষয়ে শরীফার ছেলে নয়ন ইসলাম বলেন, গত চার দিন আগে মা বোনকে নিয়ে হঠাৎ পঞ্চগড়ে যান। পরে একসময় বাড়িতে একাই এসে ঘরে তালা লাগিয়ে বন্দি অবস্থায় থাকতে শুরু করেন। বোন কোথায় তা জানতে চাইলে কোনো কিছুই জানাচ্ছিলেন না।

পরে অনেক কৈশলে বোনের অবস্থান জানতে পারি। এরপর সেই বাড়িতে গিয়ে বোনকে ফেরত চাইলে তারা দিতে অস্বীকার করেন। আরও জানতে পারি মা বোনকে নেবেন না বললে তারা ৫০০ টাকা মাকে খেতে দিয়ে একটা কাগজে স্বাক্ষর করে নেন। শুক্রবার সাংবাদিক ও পুলিশ এসে তদন্ত করে আমার বোনকে আনতে নির্দেশ দিলে মাকে সঙ্গে নিয়ে বোনকে বাড়িতে নিয়ে আসি।

স্থানীয় মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, অনেক আগে থেকে ওই নারীকে দেখছি। তিনি ভিক্ষাবৃত্তি করে পরিবার চালান। তবে কয়েকদিন আগে নিজের সন্তানকে মানুষের কাছে দিয়ে প্রায় পাগল হয়ে বেড়াচ্ছিলেন।

কাজলা নামে স্থানীয় এক নারী বলেন, সকালে শরিফা আমার কাছে এসে আমার পা জড়িয়ে ধরেছেন আর বলেছেন আপু যেভাবেই পারো আমার মেয়েকে এনে দাও।

প্রতিবেশীরা বলেন, স্বামী না থাকায় পরিবারটা চালাতে শরীফা খাতুন ভিক্ষা করতেন। এর মাঝে এমন কাণ্ড ঘটে তিনি পাগল হয়ে গেছেন। তার তিনটা সন্তান। একটা ছেলে ও দুটি মেয়ে। এদের কি হবে আমরা জানি না। তবে সরকারি সহায়তা পেলে তাদের গতি হতো।

এ বিষয়ে পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, আগের বিষয়টি আমাদের কেউ জানায়নি। খবর পাওয়ার পর পঞ্চগড় সদর থানার ওসিকে জানানো হয়। বিষয়টি পুলিশের হস্তক্ষেপে সুষ্ঠু সমাধান করে ভারসাম্যহীন নারীর কাছে তার বাচ্চা ফেরত দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, যেহেতু ওই নারীর বাড়ি বোদা উপজেলায়, সেখানকার ইউএনওকে জানিয়ে সরকারি সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি
উপদেষ্টাদের যাচ্ছেতাই কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া হবে না: রিজভী
ভিসা কবে উন্মুক্ত করবে সেটা ভারতের নিজস্ব ব্যাপার: হাসান আরিফ
জুরাইন রেলক্রসিং ছাড়লেন রিকশাচালকরা, ৪ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল শুরু
পাঁচ দেশে যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতা
সাফজয়ী নারী ফুটবলার আইরিনকে নওগাঁয় সংবর্ধনা
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ দেবে পাকিস্তান
বেনাপোলে সীমান্ত থেকে বিপুল পরিমাণ ফেনসিডিল উদ্ধার
পুলিশ-অটোরিকশা চালক সংঘর্ষ, ঢাকা-পদ্মা সেতু ট্রেন চলাচল বন্ধ
ভারতীয় সাবমেরিনের সঙ্গে মাছ ধরা নৌকার সংঘর্ষ, নিখোঁজ ২
সংসার ভাঙার দুদিন পরই সুখবর দিলেন এ আর রহমান
ঢাকায় পৌঁছেছেন বাইডেনের বিশেষ প্রতিনিধি
আ.লীগকে নির্বাচনের সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে যা বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ