বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫ | ১০ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

তারুণ্যের ভাবনায় নারী দিবস

বর্তমান সমাজে পুরুষের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নারীরাও এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক সব ক্ষেত্রে নারীর অবদান ঈর্ষণীয়। তবুও নারীরা আজ ভুগছে নিরাপত্তাহীনতায়, দিন দিন বেড়েই চলছে নারীর প্রতি সহিংসতা। ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস। নারীদের উপর হওয়া বৈষম্য, নির্যাতনের বিরুদ্ধে তাদের জাগ্রত করাই নারী দিবস পালনের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। নারীদের প্রতি শ্রদ্ধা, তাদের কাজের প্রশংসা, ভালোবাসা প্রকাশ করে এই দিনটিকে পালন করা হয়। নারী দিবস উপলক্ষে নারীর চাওয়া-পাওয়া ও স্বাধীনতা নিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত কয়েকজন নারী শিক্ষার্থীর ভাবনা ও মতামত তুলে ধরা হলো-

নারীর উন্নয়নেই মিলবে মুক্তি

সমাজের উন্নয়নে নারীরা পুরুষের সঙ্গে সমানতালে এগিয়ে যাচ্ছে। তবুও সমাজের বিভিন্ন স্তরে নারীকে হতে হচ্ছে হেয়প্রতিপন্ন, নির্যাতনের শিকার, ধর্ষণের শিকার। সমাজে নারীর প্রতি সব বৈষম্য-অসম্মান বোধ দূর করতে প্রয়োজন নারীর ক্ষমতায়ন। নারীর ক্ষমতায়ন পুরুষের হাত ধরে নয়, প্রকৃত ক্ষমতা নিজেই গড়তে হবে। সুশিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে। নিজেদের অধিকার আদায়ে সোচ্চার হতে হবে। পরাধীনতার শেকল ভেঙে বেড়িয়ে আসবে নারী। নারীর কর্মসংস্থান ও সামাজিক অবস্থান ঠিক করতে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। একটি দেশের-সমাজের উন্নয়নে নারীর ভূমিকা অপরিসীম। নারীর পূর্ণাঙ্গ মর্যাদায় জাতি-ধর্ম-বর্ণ-পেশা-শ্রেণি নির্বিশেষে সবার গণতান্ত্রিক সমঅধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সমাজে নারীরা পাবে প্রাপ্য সম্মান-অধিকার। অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে নারী, পাশে থাকবে সমাজ-রাষ্ট্র এটাই কাম্য। নারী সে যে আগুন দিয়ে তৈরি এক অগ্নিকন্যা, অন্যায়ের বিরুদ্ধের এক বলিষ্ঠ প্রতিবাদী কণ্ঠ।

সাফা আক্তার নোলক
শিক্ষার্থী, দর্শন বিভাগ

নারীর প্রতিটি মুহূর্ত হোক নিরাপদ

স্বাধীনতার দীর্ঘ সময় পরও নারীরা আজ নিরাপদ নয়। প্রতিদিন পত্রিকা খুললেই দেখা যায় ধর্ষণ, খুন, নারীর প্রতি সহিংসতা কতটা বেড়ে গেছে। প্রায়ই শোনা যায় রাস্তাঘাটে এমনকি ক্যাম্পাসেও উত্ত্যক্ত হচ্ছে নারীরা। এমনকি মাঝরাতেও বখাটের দ্বারা হেনস্তা হয়েছে। প্রশাসনের পরিচয়ে নারীর ফোন ছিনতাই হয়েছে। এমনকি উপজাতিদের দ্বারাও হেনস্তা হয়েছে নারীরা। কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণেই বখাটেরা নারীর দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে এসব কুকর্ম করে যাচ্ছে। সবকিছু দেখেও আমাদের চুপ করে থাকাটা অন্যায়কে প্রশয় দেওয়া ছাড়া আর কিছুই নয়। আমাদের মনুষ্যত্ব ও বিবেকের জোরে নারীর প্রতি এমন অন্যায়কে প্রতিহত করতে হবে। কঠোর আইন প্রণয়ন করে প্রতিটি মুহূর্তে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে যেন নারী হয় স্বাধীন, পায় চলার পূর্ণ স্বাধীনতা। নারীকে নারী হিসেবে নয়, মানুষ হিসেবে ভাবতে হবে। এক্ষেত্রে সরকার, সমাজ, প্রশাসন ও জনসমাজ সবাইকে একযোগে সচেতন ভূমিকা পালন করতে হবে।

মাহরুমা আক্তার শিফা
শিক্ষার্থী, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগ

বীরত্বের সহিত নারীর পথচলা

পুরুষতন্ত্র নারীকে যুগ যুগ ধরে যন্ত্রের মতো ব্যবহার করেছে। নারীর চিন্তা, সুখ-দুঃখ বা স্বাধীনতা নিয়ে ভাবেনি কেউ। তবুও পুরুষতান্ত্রিক বা সামাজিক কোনো নিয়ম, দুঃশাসন, অবিচার দাবিয়ে রাখতে পারেনি তাদের। নারী বসন্তের কচি কিশলয় হয়ে শীতের রুক্ষতাকে জয় করতে শুরু করেছে, ফুল হয়ে ফুটছে বিস্তীর্ণ বিরান ভূমিতে। যে সাহিত্য-সংস্কৃতি একসময় শেক্সপিয়ার, জন কিটস কিংবা রবীন্দ্রনাথেই সীমাবদ্ধ ছিল সেখানে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে ভার্জিনিয়া উলফ, টনি মরিসন, বেগম রোকেয়ার মতো নারীরা। নারী শক্তিতে এগিয়ে চলছে বিশ্ব। এ ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ সব পদে নারীরা এখন দর্পের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। নারীদের সুশাসনে ভেঙে খান-খান হয়ে যাচ্ছে পুরুষতন্ত্রের দুঃশাসন। নারী অধিকার আদায় একটা যুদ্ধ। এই যুদ্ধে জয় তখনই সম্ভব যখন নারীরা নিজেদেরকে পরিপূর্ণ শিক্ষায় শিক্ষিত করতে পারবে।

শতাব্দী রায়
শিক্ষার্থী, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ

নারীর সব অধিকার পূর্ণতা পাক

সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে নারীরা আজ পৌঁছে গেছে বিমানের ককপিট থেকে পর্বতশৃঙ্গে। দশভুজা নারী ঘরে-বাইরে নিজেকে আলোকিত করছেন প্রজ্ঞা আর মেধায়। নারী স্বাধীনতার মূল বিষয়গুলো শুধু গ্রন্থেই বন্দী হয়ে থাকার জন্য নয়, জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই তার প্রতিফলন জরুরি। বিভিন্ন সভা-সমাবেশে আমরা অনেকেই উঁচু গলায় নারী স্বাধীনতার কথা বলে থাকি, কিন্তু আমরা আসলে নারী স্বাধীনতার প্রকৃত অর্থ বুঝি না। সমাজকে এ ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন হতে হবে। এ কথা ভুলে গেলে চলবে না যে, নারীর প্রথম পরিচয় হচ্ছে সে মানুষ। তাই নারী জ্ঞান অর্জন, আত্মসংযম, শ্রমনিষ্ঠা, সেবা, দৃঢ়তা, প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের মাধ্যমে মানসিক দাসত্বের কঠিন শৃঙ্খল ভেঙে এগিয়ে চলতে হবে। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে নির্যাতিত সবার আত্মসম্মানবোধের চেতনা জাগ্রত হোক, মানুষ হিসেবে সবাই সম্মানিত হোক, সবার অধিকার পূর্ণতা পাক।

মিথিলা দেবনাথ ঝিলিক
শিক্ষার্থী, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ

পূর্ণতা পাক নারীর অধিকার

নারী স্বাধীনতার মূল বিষয়গুলো শুধু গ্রন্থেই বন্দী হয়ে থাকার জন্য নয়, জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই তার প্রতিফলন জরুরি। বিভিন্ন সভা-সমাবেশে আমরা গলা উঁচু করে নির্দ্বিধায় নারী স্বাধীনতার কথা বলে থাকি, কিন্তু আমরা আসলে নারী স্বাধীনতার প্রকৃত অর্থ বুঝি না। নারী পরাধীনহেতু সমাজ ও পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গিকে দায়ী করা হলেও নিজেদের দুর্বলতাও কম দায়ী নয়। নিজের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে তাকে অবশ্যই সংযম হতে হবে। আমাদের সমাজকেও এ ব্যাপারে যথেষ্ঠ সচেতন হতে হবে। নারীকে নারীর মতো করেই বাঁচতে দেওয়া উচিত। এ কথা ভুলে গেলে চলবে না যে, নারীর প্রথম পরিচয় হচ্ছে সে মানুষ। তাই নারী জ্ঞান অর্জন, আত্মসংযম, শ্রমনিষ্ঠা, সেবা, দৃঢ়তা, প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের মাধ্যমে মানসিক দাসত্বের কঠিন শৃঙ্খল ভেঙে এগিয়ে চলতে হবে। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে নির্যাতিত সবার আত্মসম্মানবোধের চেতনা জাগ্রত হোক, মানুষ হিসেবে সবাই সম্মানিত হোক, সবার অধিকার পূর্ণতা পাক।

ইকরা ফুরকান ড্যাফোডিল
শিক্ষার্থী, আইন বিভাগ

স্বাধীনতার পূর্ণ স্বাদ পাক নারীরা

নারীরা স্বাধীন দেশের পরাধীন নাগরিক। সোশ্যাল মিডিয়া, টিভি খুললেই দেখা যায় নারী নির্যাতন, ধর্ষণের মতো হৃদয়বিদারক সংবাদ। যেই নারী তাদের জন্ম দেয় সেই নারী জাতিকেই অসম্মান করতে তারা বিন্দুমাত্র দ্বিধাবোধ করে না। উল্টো আরও নারীর চলাফেরা, পোশাকে তারা সমস্যার কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে তুলে ধরে। আফসোস যে নারী জতি এত কষ্ট করে জন্ম দেন একটি ফুটফুটে বাচ্চা, আলো দেখান এই সুন্দর পৃথিবীর আজ তারাই নিরাপদভাবে চলাফেরা করতে পারে না। কর্মক্ষেত্র, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমনকি বাসায়ও নিরাপদ নয় নারীরা। আমাদের স্বাধীন রাষ্ট্র আছে অথচ নারীর স্বাধীনতা নেই, শুধুমাত্র নামেই পালিত হয় নারী দিবস এই দিনটি। কী হবে নারী দিবস পালন করে যদি নারীর স্বাধীনতাই না থাকে। নারীদের সব ক্ষেত্রে কাজ করার সমান সুযোগ-সুবিধা লাভ, মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা দিতে হবে। সবার উচিত শুধুমাত্র নারী দিবসে নারীদের সম্মান না করে নারীরা যেন স্বাধীনভাবে স্বাধীন দেশের সুনাগরিক হয়ে মাথা উঁচু করে বাঁচতে পারে সে ব্যবস্থা করা।

পাপড়ি রাণী
শিক্ষার্থী, নৃবিজ্ঞান বিভাগ

সর্বস্তরে নারীরা প্রাধান্য পাক

বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতেই যেখানে নারীদের পদযাত্রায় বারবার হোঁচট খেতে হয়, সেখানে তৃতীয় বিশ্বের একটি উন্নয়নশীল দেশের নারী হিসেবে বাঙালি নারীদের প্রতিটি পদক্ষেপে অনেক বেশি প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হয়। অশিক্ষা, কুসংস্কার, ধর্মীয় গোঁড়ামি, পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা নারী উন্নয়নের প্রধান অন্তরায়। অথচ সময় পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে নারীরা আজ শুধু রান্নাঘরেই সীমাবদ্ধ নেই, নারীরা পৌঁছে গেছেন বিমানের ককপিট থেকে পর্বতশৃঙ্গে। দেশে এখন প্রধান দুটি রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন দুজন নারী। বর্তমানে সবক্ষেত্রেই রয়েছে নারীর পদচারণা। নারীর সমাধিকার ও নারীমুক্তির কথা যতই বলা হোক না কেন- উন্নত, অনুন্নত, উন্নয়নশীল সব দেশেই নারীরা কম-বেশি সহিংসতা ও বৈষম্যের শিকার। তাই নারীর নিজের অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা, নারীর প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ও নারী-পুরুষ উভয়ের অন্তর্ভুক্তিতেই উন্নয়নের দেখা পাওয়া সম্ভব। এভাবেই নারীরা এগিয়ে যাবেন, তাদের ভবিষ্যৎ হবে কণ্টকমুক্ত।

শ্রেয়সী সিকদার
শিক্ষার্থী, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ

নারীদের সম্মানে সবাই হোক সোচ্চার

নারীর প্রতি সম্মান, শ্রদ্ধা প্রদর্শন, ও নারীর অধিকার রক্ষায় প্রতিবছর বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী ৮ মার্চ নারী দিবস পালন করা হয়। গত দশকগুলোর তুলনায় নারীর অবস্থার কিছুটা পরিবর্তন হলেও খতিয়ে দেখলে দেখা যাবে সমাজে নারীরা আজও নানাভাবে অবহেলিত। নারীরা শিক্ষা ও আত্মোন্নয়নে এগিয়ে যাওয়ায় নিম্নবিত্ত অনেক নারীর নির্যাতন, অবহেলা সবার অগোচরে। শহরের পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলেও ধর্ষণের ঘটনা আমরা শুনতে পাই। শহরে এই বিষয়টি আইনের আশ্রয় পেলেও গ্রামাঞ্চলে নানাভাবে বিষয়টিকে চাপা দিয়ে রাখা হয়। ভাবতে অবাক লাগে নারীরা আজ নিজের ঘরেও নিরাপদ না। যদিও তারা এখন বুক ফুলিয়ে বাঁচতে শিখেছে। আশপাশে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো শুনলে যেন গা শিউরে উঠে। এসব কিছুর পরেও বিশ্বে নারীরা আজ থেমে নেই, লড়াই করেই যাচ্ছে নানা প্রতিকূলতার মুখোমুখি হয়ে। তাই এই নারী দিবসে নারীর অধিকার, সম্মান রক্ষায় সবাই হোক সোচ্চার।

আকিনা ইসলাম
শিক্ষার্থী, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ

নারীত্ব হোক অহংকার

প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম নারীর সবক্ষেত্রে অংশগ্রহণ বাড়লেও ক্ষমতায়ন, অধিকার নিশ্চায়ন এখনো বাড়েনি। প্রতিবছর নারী দিবস নিয়ে কাজ করা হলেও প্রান্তিক পর্যায়ের নারীরা এ দিবস কী বা এর গুরুত্ব কী এসব সম্পর্কে এখনো অবগত নয়। যে কারণে তারা অবহেলিত। যেদিন নারীরা তার নিজস্ব অধিকার ও মর্যাদা নিয়ে বাঁচতে শিখবে, তাদের প্রতি সব ধরনের বৈষম্যের বিলোপ সাধিত হবে, অত্যাচার-নির্যাতন থেকে নারী মুক্তি পাবে, আর্থসামাজিক ও উন্নয়ন খাতে নারীর মতামতকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হবে, সেদিন পৃথিবী এক নতুন স্বর্ণযুগে পা দেবে। নারীরা যেন নির্যাতন বা বৈষম্যের স্বীকার না হয় সেজন্য হলেও নারীর প্রতি ইতিবাচক সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি ও আইনের বাস্তবায়ন জরুরি। তাই কোনো নির্দিষ্ট দিনে নয়, প্রতিটি দিনই হোক নারীর জন্য সম্মানের দিন। সব নারী সগৌরবে বলুক, নারীত্ব আমার অহংকার। ভালো থাকুক সমাজ, ভালো থাকুক নারীরা!

সাদিয়া আফরোজ
শিক্ষার্থী, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ

সমানতালে এগিয়ে যাচ্ছে নারীরা

বর্তমানে নারী সমাজের যে অগ্রগতি তা নারী আন্দোলনের ফসল। আমরা আমাদের চারপাশে লক্ষ্য করলে দেখতে পাই নারীর প্রতি সমাজের বিরূপ দৃষ্টিভঙ্গি। একবিংশ শতাব্দীতে এসেও এমন দৃশ্য দেখতে পাওয়াটা লজ্জাজনক। এটি থেকে বের হয়ে আসার জন্য সর্বপ্রথম প্রয়োজন দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন। এ ছাড়া পারিবারিক শিক্ষা, প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা এবং মানসিকতার পরিবর্তন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটা নারীরই নিজস্ব পরিচয় থাকা উচিত। নিজের মতো করে বাঁচা, স্বাধীন জীবনযাপন করাটা প্রতিটি নারীর অধিকার। আধুনিক যুগে এসেও সমাজে নানাভাবে নারীরা বঞ্চিত হচ্ছে, নানারকম সহিংসতার শিকার হচ্ছে। তবে প্রত্যশা করব খুব দ্রুতই নারীর ক্ষমতায়নে সুস্থ-সুন্দর বিশ্ব গড়ে উঠবে। সমাজের প্রতিটি স্তরে নারীর বীরত্বগাথা লেখা থাকবে। নারী-পুরুষ সমতায় রঙিন হবে স্বপ্নের পৃথিবী। ছেলেদের সঙ্গে সমানতালে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করছে, পাশাপাশি এগিয়েও যাচ্ছে নারীরা।

ফাওজিয়া আফিয়া জিনিয়া
শিক্ষার্থী, পরিসংখ্যান বিভাগ

সমাজে লিঙ্গসমতা প্রতিষ্ঠা করা জরুরি

নারী আন্দোলনের দীর্ঘ পথপরিক্রমায় নারী সমাজের অনেকটা অগ্রগতি ঘটেছে। নারীরা আজ প্রতিটি ক্ষেত্রে অনেকটাই এগিয়ে। তবে এখনো অনেক জায়গা রয়েছে, যেখানে নারীদের বিচরণ ঠিকভাবে হয়নি। সেসব জায়গায় পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করলে হয়তো নারীদের বিচরণ শুরু হবে। লিঙ্গসমতা নিয়ে এখনো সমাজে যে বিরূপ দৃশ্য দেখা যায় তা উন্নত রাষ্ট্র গঠনের অন্তরায়। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করে বাস্তবায়ন করার জন্য সমাজের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। আমাদের শিক্ষিত পরিবারগুলোতে এই ব্যাপারে কিছুটা উন্নতি দেখা গেলেও সেই অর্থে গ্রামের পরিবারগুলোতে কোনো প্রভাব নেই বললেই চলে। তথ্যপ্রযুক্তির ছোঁয়া প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে সেভাবে না পড়ায় লিঙ্গ সমতা ব্যাপারটা এখনো তাদের কাছে অজানা। সমাজের রীতিনীতি অমান্যকারীদের কঠোর বিচার তো দূরে থাক বরং পক্ষে কথা বলা লোকের অভাব নাই। এই কালো অধ্যায়ের অবসান ঘটে নতুন দিনের সূচনা হোক- এটাই নারী দিবসে প্রত্যাশা। তাহলেই কেবল নারী দিবসের সার্থকতা বজায় থাকবে।

আঁখি আক্তার বন্যা
শিক্ষার্থী, ইতিহাস বিভাগ

এক নারী হাজার অ্যাখ্যায়ন

শুধু একটি শব্দই হাজার মতের প্রকাশ, এক নারী হাজার রূপ। নারী কখনো মেয়ে, কখনো বোন, কখনো মা, কখনো কর্মজীবী, কখনো শত্রুর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো দেবী। কিন্তু আজও আমাদের মুখোশধারী সুশীল সমাজের বেশিরভাগ পুরুষ নারীকে শুধু নারী হিসেবেই পরিচয় দিতে সাচ্ছন্দ্যবোধ মনে করে, গর্ববোধ করে। তারা চায় নারীরা পড়ে থাক তাদের বাধাধরা গণ্ডির মধ্যে। নারীরাও আজ একইসঙ্গে ঘর সামলিয়ে বাইরের করপোরেট জগতে সমানভাবে এগিয়ে চলছে। নারীরা তাদের বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়ে সংসারের সংবিধান থেকে রাষ্ট্রের সংবিধানে নিজেদের পারদর্শিতার পরিচয় দিয়ে পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র, বিশ্ব প্রতিটা ক্ষেত্রে সমানতালে নিজেদের অবদান রেখে চলেছে। নারীদের ছোট না করে, তাদের চলার পথে বাধা না হয়ে, বরং একসঙ্গে চলার প্রতিজ্ঞা করুন। কেননা নারী যা পারে আপনি তা পারবেন না। নারীকে শুধু নারী না ভেবে মানুষ ভাবুন, শ্রদ্ধা করুন।

আফরোজা আক্তার
শিক্ষার্থী, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ

প্রয়োজন দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন

মানব সভ্যতার উষালগ্ন থেকে নারী-পুরুষ অসমতা বিদ্যমান যা আজ অবধিও আছে। এই অসমতার জন্য একমাত্র দায়ী হচ্ছে সমাজ। সচরাচর দেখা যায়, গ্রাম্য এলাকায় সাধারণত মহিলারাই কেবল বাড়ির যাবতীয় কাজসহ সন্তান লালন-পালন করে থাকেন আর পুরুষেরা ঘরের বাইরের কাজগুলো করে থাকেন। কিন্তু এই করোনার দীর্ঘ ছুটিতে একটু উল্টো চিত্র দেখা যাচ্ছে গ্রামীণ এলাকায়। তন্মধ্যে পুরুষেরা তাদের বাড়ির মহিলাদের কাজে অনেক রকম সহযোগিতা করাসহ সন্তানের লালন-পালনেও তারা বেশ সচেতন হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সাধারণ দিনগুলোর থেকে মহিলাদের কাজের চাপ বর্তমানে বহুগুণে বেড়েছে। প্রতিনিয়ত তাদের আগের থেকে আরও বেশি স্বাস্থ্য সম্মতভাবে জীবনযাপন নিশ্চিত করতে হচ্ছে এবং এটার সঙ্গে মানসিক বিপর্যয় তো আছেই। এবারের নারী দিবসে আমাদের প্রত্যাশা হোক এটাই যেন শুধুমাত্র সংকটময় মুহূর্তেই নয়, সব পেশার পুরুষেরা তাদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন করে নারীদের পাশে সব সময় যেন এমনি করেই থাকেন।

ইরা রানী
শিক্ষার্থী, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ

পরিবারের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন প্রয়োজন

‘নারীর স্বাধীনতা’ কথাটি বিশ্লেষণ করলে দাঁড়ায় একজন নারীর স্ব-অধীনতা। তবে স্ব-অধীনতা বলতে আমি অবশ্যই যা ইচ্ছে তা করা কিংবা উগ্রতা বুঝাচ্ছি না। একজন নারীরও অধিকার আছে নিজের স্বপ্নের পথে নির্বিঘ্নে এগিয়ে যাওয়ার, পরিবার কিংবা রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় নিজের মতামতটুকু প্রকাশ করার এবং নির্দিষ্ট বয়সের পর নিজের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিজে নেওয়ার। এসব ক্ষেত্রে অহেতুক অন্যের হস্তক্ষেপ না করাটাই নারীর স্বাধীনতা। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে বেশিরভাগ পরিবারেই ছেলে শিশু ও মেয়ে শিশুর মধ্যে করা হয় হাজারো বৈষম্য, করা হয় না নারীদের সঠিক মূল্যায়ন যা পরিবারের ছেলে শিশুদের উপর প্রভাব ফেলে এবং সে ছেলেটিও বড় হয়ে একই আচরণ করে। তাই আমি বলব, সমাজে নারীর অধিকার ও স্বাধীনতা পূর্ণাঙ্গরূপে প্রতিষ্ঠা করতে প্রথমে প্রয়োজন পরিবারের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন।

ফারজানা ইয়াসমিন জীবন
শিক্ষার্থী, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ

আমরা নারী, আমরাও পারি

প্রতিবছর একেক দেশে একেক রকম লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে নারী দিবস উদযাপিত হয়ে থাকে। কোথাও নারীর প্রতি সাধারণ সম্মান ও শ্রদ্ধাবোধ প্রাধান্য পায় আবার কোথাও নারীর আর্থিক, সামাজিক, রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠা বেশি গুরুত্ব পায়। নারী-পুরুষের সমতা সৃষ্টি, বৈষম্য হ্রাস, বাল্যবিবাহ রোধ, নারীর ক্ষমতায়ন ও নারীর প্রতি সব ধরনের সহিংসতা বন্ধে আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ব্যানার, ফেস্টুন, টকশোর আয়োজন করা হয়। সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে নারী দিবস পালন করা হলেও দেশের নারীসমাজ আজও তাদের প্রতিভার বিকাশ ঘটাতে পারছে না, স্বাধীনভাবে চলাচল করতে পারছে না, প্রতিনিয়ত ধর্ষণের শিকার হয়ে অনেক নারীর সাজানো স্বপ্ন অঙ্কুরে বিনষ্ট হচ্ছে। নারী উন্নয়নের প্রধান অন্তরায় হলো পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা। প্রতিটি পুরুষ যদি নারীকে শুধু ভোগের সামগ্রী মনে না করে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেয় তাহলে ঘরের কোণে অনাদরে-অবহেলায় পরে থাকা নারীরাও তাদের মনের গহীনে লালন করা স্বপ্ন পূরণে অগ্রসর হতে পারবে।

বিথী রানী মন্ডল
শিক্ষার্থী, নাট্যকলা বিভাগ

এসজি

Header Ad
Header Ad

পাকিস্তানিদের বিশেষ ভিসা সুবিধা বাতিল, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ভারত ছাড়ার নির্দেশ

ছবি: সংগৃহীত

ভারত-নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে প্রাণঘাতী সন্ত্রাসী হামলার পর পাকিস্তানিদের জন্য ‘সার্ক ভিসা ছাড়’ সুবিধা বাতিল করেছে ভারত। সেই সঙ্গে ভারতে অবস্থানরত পাকিস্তানি নাগরিকদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দেশ ছাড়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। বুধবার (২৩ এপ্রিল) ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত দেশটির মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটির জরুরি বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে ভারত:

সিদ্ধান্তগুলো হলো:

১. সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত ঘোষণা। ভারত বলছে, পাকিস্তান যতদিন সীমান্তে সন্ত্রাস বন্ধ না করবে এবং সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন ত্যাগ না করবে ততদিন এটি স্থগিত থাকবে। ১৯৬০ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর করাচিতে তৎকালীন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু ও পাকিস্তানি প্রেসিডেন্ট ফিল্ড মার্শাল আইয়ূব খান সিন্ধু পানি বণ্টন চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন। বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় বহুল আলোচিত এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল।

২. অবিলম্বে আটারি-ওয়াঘা সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হবে। যাদের বৈধ নথি রয়েছে তারা ১ মে এর আগে সীমান্ত অতিক্রম করতে পারবেন।

৩. সার্ক ভিসা এক্সেম্পশন স্কিম (এসভিইএস) এর আওতায় পাকিস্তানি নাগরিকদের ভারতে ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া হবে না। পাকিস্তানি নাগরিকদের অতীতে জারি করা যেকোনো এসভিইএস ভিসা বাতিল বলে গণ্য হবে। এসভিইএস ভিসায় বর্তমানে ভারতে থাকা পাকিস্তানি নাগরিকদেরও ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ভারত ছাড়তে বলা হয়েছে।

৪. নয়াদিল্লিতে পাকিস্তানি হাইকমিশনের সামরিক, নৌ ও বিমান উপদেষ্টাদের ‘পার্সোনা নন গ্রাটা’ ঘোষণা করা হয়েছে। ভারত ছাড়ার জন্য এক সপ্তাহ সময় পাবেন তারা। ইসলামাবাদের ভারতীয় হাইকমিশন থেকে প্রতিরক্ষা, নৌ ও বিমান উপদেষ্টাদের প্রত্যাহার করে নিচ্ছে ভারত। সংশ্লিষ্ট হাইকমিশনের এই পদগুলো বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। উভয় হাইকমিশন থেকে সার্ভিস অ্যাডভাইজারের পাঁচজন সাপোর্ট স্টাফকেও প্রত্যাহার করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

৫. হাইকমিশনের সামগ্রিক জনশক্তি ৫৫ থেকে কমিয়ে ৩০ জনে নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। যা ১ মে এর মধ্যে কার্যকর হবে।

মঙ্গলবার বিকালে কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা হয়। অস্ত্রধারীরা জঙ্গল থেকে বের হয়ে পর্যটকদের ওপর গুলি চালাতে থাকেন। হামলায় ঠিক কতজন নিহত হয়েছেন, তা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি। তবে নিরাপত্তা বাহিনীর সূত্র বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছে, নিহত ব্যক্তির সংখ্যা অন্তত ২৬।

পাকিস্তানভিত্তিক নিষিদ্ধ সংগঠন লস্কর–ই–তৈয়েবার সহযোগী সংগঠন দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) মঙ্গলবার বিকালের হামলার দায় স্বীকার করেছে।

এদিকে এ ঘটনায় পাকিস্তানের পক্ষ থেকেও নিন্দা প্রকাশ করা হয়েছে। দেশটির গণমাধ্যম জিও নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘অবৈধভাবে দখলকৃত জম্মু-কাশ্মীর’র পেহেলগামে হামলার ঘটনায় পাকিস্তান উদ্বিগ্ন। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানিয়েছেন, পেহেলগামে হামলায় ২৬ জন নিহতের ঘটনায় পাকিস্তান নিন্দা প্রকাশ করছে। নিহতের পরিবারের প্রতিও সমবেদনা প্রকাশ করছে পাকিস্তান।

এ হামলাকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ আখ্যা দিয়ে এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উদ্দেশে বার্তা দিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বার্তায় তিনি বলেন, কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণহানির ঘটনায় আমার গভীর সমবেদনা গ্রহণ করুন। আমরা এ জঘন্য হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা আবারও নিশ্চিত করছি যে, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের অবস্থান সবসময় দৃঢ়।

Header Ad
Header Ad

বিএনপি সরকার গঠন করলে শিক্ষিত বেকারদের জন্য চালু হবে ভাতা: তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত

দেশে সরকার পরিবর্তন হলে শিক্ষিত বেকারদের জন্য বিশেষ ভাতা চালু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি জানিয়েছেন, সরকার গঠনের পর যারা চাকরি খুঁজেও পাচ্ছেন না, তাদের জন্য এক বছরের ‘শিক্ষিত বেকার ভাতা’ চালু করার বিষয়টি বিবেচনায় রয়েছে। এ সময়ের মধ্যেই তাদের কর্মসংস্থানে সহায়তা করবে সরকার।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) বিকেলে রংপুর, নীলফামারী ও সৈয়দপুর জেলা বিএনপির নেতাদের অংশগ্রহণে আয়োজিত এক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তিনি। বিএনপির ৩১ দফা রাষ্ট্রকাঠামো মেরামত পরিকল্পনা নিয়ে কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়।

তারেক রহমান বলেন, “আমরা একটি পরিকল্পনা করছি—যাতে যারা এখনো চাকরি পাননি, তারা যেন সরকারের সহযোগিতায় একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সহায়তা পান। এই সময়টিতে সরকার ও ব্যক্তিগত পর্যায়ে উভয়ের উদ্যোগেই কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা হবে।”

তিনি আরও অভিযোগ করেন, বিগত সময়ে সরকারি ও আধা-সরকারি চাকরিতে ব্যাপক দলীয়করণ হয়েছে। বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলের অনেক তরুণ নেতাকর্মী, যাঁরা আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন, তারা বয়স পার করে ফেললেও কোনো চাকরি পাননি। “শুধু ছাত্রদল নয়, আরও অনেক সাধারণ মানুষ আছেন যারা সরকারের অনুগত না হওয়ায় চাকরির সুযোগ হারিয়েছেন। এ বাস্তবতা বিবেচনায় নিতে হবে,” বলেন তারেক।

বাংলাদেশে সর্বজনীন স্বাস্থ্যবিমা চালু করার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তারেক রহমান বলেন, “২০ কোটির বেশি মানুষের জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা বিশাল বাজেট ও কাঠামোগত পরিকল্পনা দাবি করে। এটা অব্যবস্থাপনার জায়গা নয়, এটা করতে হলে বাস্তবতা মাথায় রেখে ধাপে ধাপে এগোতে হবে।”

তিস্তা নদী ঘিরে রংপুর অঞ্চলের মানুষদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণে বিএনপির পরিকল্পনার কথা জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, “তিস্তা শুধু নদী নয়, রংপুর বিভাগের অর্থনীতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। অতীতে তিস্তাকে কেন্দ্র করে রাজনীতি হয়েছে, কিন্তু মানুষের জীবনে কোনো পরিবর্তন আসেনি। বিএনপি সরকারে গেলে তিস্তা সমস্যা সমাধানে বাস্তব ভিত্তিক ও জনগণকেন্দ্রিক প্রকল্প গ্রহণ করবে।”

বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণবিষয়ক কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত এ প্রশিক্ষণ কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন রংপুর জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতারা। কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শামসুজ্জামান সামু এবং উদ্বোধনী বক্তব্য দেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু। সঞ্চালনায় ছিলেন নির্বাহী কমিটির সদস্য আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী।

Header Ad
Header Ad

এস আলমের ৪০৭ কোটি টাকার ১৫৯ একর জমি ক্রোকের নির্দেশ

ছবি: সংগৃহীত

এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলমের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা ১৫৯ একর জমি ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। জমিগুলোর আনুমানিক বাজারমূল্য ৪০৭ কোটি টাকা বলে জানিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এসব জমি ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসেন এই আদেশ দেন। আদালতে দুদকের পক্ষে আবেদন করেন উপপরিচালক তাহাসিন মুনাবীল হক। শুনানি শেষে আদালত আবেদন মঞ্জুর করেন। বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম।

দুদকের আবেদনে বলা হয়, এস আলম ও তার ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে চলমান তদন্তে দেখা যায়, তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে বিপুল পরিমাণ জমি ও স্থাবর সম্পদ রয়েছে। এসব সম্পদ তারা অন্যত্র বিক্রি বা হস্তান্তরের চেষ্টা করছে বলে গোপন সূত্রে জানা যায়। ফলে তদন্ত সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার স্বার্থে এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ সুরক্ষায় এসব জমি ক্রোকের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়।

জমিগুলো যেসব প্রতিষ্ঠানের নামে রয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে ক্রিস্টাল ক্লিয়ার ট্রেড লিংক, ইভেন্ট টাইটান ইন্টারন্যাশনাল, পাইথন ট্রেডিং কর্নার, ইসলাম ট্রেডার্স, ডায়মন্ড বিজনেস হাউস, এএইচ সেন্টারসহ আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। দুদকের ভাষ্য অনুযায়ী, এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মোহাম্মদ সাইফুল আলমের সরাসরি আর্থিক ও ব্যবসায়িক সম্পর্ক রয়েছে।

এর আগেও এস আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে একাধিক দফায় আদালত সম্পদ ও শেয়ার অবরুদ্ধ এবং দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। গত বছরের অক্টোবর থেকে শুরু করে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে তার ও তার ঘনিষ্ঠজনদের নামে থাকা শেয়ার, জমি ও ব্যাংক হিসাব পর্যায়ক্রমে অবরুদ্ধ ও ক্রোক করে আদালত।

এস আলমের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে এখন পর্যন্ত ১৩০০-এর বেশি ব্যাংক হিসাব, হাজার একরের বেশি জমি এবং কয়েক হাজার কোটি টাকার শেয়ার নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। দুদক জানিয়েছে, তদন্তে আরও নতুন সম্পদের তথ্য পাওয়া যেতে পারে।

দুদক বলছে, মানি লন্ডারিং ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে এই তদন্ত চলমান রয়েছে এবং প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

পাকিস্তানিদের বিশেষ ভিসা সুবিধা বাতিল, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ভারত ছাড়ার নির্দেশ
বিএনপি সরকার গঠন করলে শিক্ষিত বেকারদের জন্য চালু হবে ভাতা: তারেক রহমান
এস আলমের ৪০৭ কোটি টাকার ১৫৯ একর জমি ক্রোকের নির্দেশ
সীমান্তের সব ভিডিও সত্য নয়, আবার সবটা যে মিথ্যা তাও নয়: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
আন্দোলনের নামে রাস্তা অবরোধ না করার অনুরোধ ডিএমপির
টাঙ্গাইলে বেড়েছে গরমের তীব্রতা, বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ
সরকার সরিয়ে না দিলে পদত্যাগ করব না: কুয়েট ভিসি
বিরামপুরে ছিনতাইকালে পুলিশের হাতে 'ভুয়া সেনাসদস্য' আটক
হাসিনাকে যারা খুনি হতে সাহায্য করেছে, তাদেরও বিচার করতে হবে: সারজিস আলম
কুয়েটের ৩৭ শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার, খুললো আবাসিক হল
কাশ্মীরে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’, মসজিদে ঘোষণার পর বিক্ষোভ শুরু
ইতিহাস গড়ল জিম্বাবুয়ে, ঘরের মাঠে লজ্জার হার বাংলাদেশের
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের 'এ' ইউনিটে প্রথম আব্দুল্লাহ
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র পারভেজ হত্যা: প্রধান আসামি মেহরাজ গ্রেপ্তার
তুরস্কের ইস্তানবুলে একের পর এক ভূমিকম্প
এবার সেই গৃহকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করলেন পরীমণি
দ্রুত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন না হলে পুরো অঞ্চল অস্থিতিশীল হয়ে উঠবে: প্রধান উপদেষ্টা
আমরা সংস্কারও চাই, নির্বাচনও চাই: মির্জা আব্বাস
কাশ্মীরের হামলা ‘সাজানো’ দাবি পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমের
ভাইরাল ভিডিও সমন্বয়ক রুবাইয়ার নয়, দাবি এনসিপি নেতার