নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে গাছে গাছে শোভা ছড়াচ্ছে আমের মুকুল
তীব্র শীতের রিক্ততা উড়িয়ে প্রকৃতিতে এসেছে বসন্ত, বইছে ফাগুন হাওয়া। বসন্তে মুগ্ধ হয়ে কবি আবদুর রহমান লিখেছিলেন, ‘আম গাছে ধরল মুকুল নতুন শাখে শাখে, ফাগুন তাকে সাজিয়েছে নতুন কনের সাঝে, কত মাছি আসে ছুটে, কত মধু নেয় যে চুষে, কত পাখি গাইল গান, মুকুলের মন সজীব চঞ্চল, আমের মুকুল বাতাসেতে দোলখায় যখন, স্বর্গের দৃশ্যটা দেখি আমি তখন।’
কবির ভাষার মতোই বসন্তের আগমনে গাছে গাছে ফুটেছে আমের মুকুল। মুকুলে মুকুলে ছেয়ে গেছে প্রতিটি আম গাছ। ফাগুন হাওয়ায় চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ছে মুকুলের পাগল করা ঘ্রাণ। মৌমাছির গুঞ্জন আর মুকুলের ঘ্রাণে মুগ্ধ করেছে প্রকৃতিপ্রেমীদের। জানান দিচ্ছে মধুমাসের আগমনী বার্তার। হলুদ রঙের আমের মুকুলের মনকাড়া ঘ্রাণ। ছোট পাখিরাও মুকুলে বসেছে মনের আনন্দে। প্রকৃতির পালাবদলের সঙ্গে সঙ্গে এমন দৃশ্যের দেখা মিলেছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়েও।
প্রকৃতিতে শীতের প্রকোপ এবার কিছুটা কম থাকায় বেশ আগেভাগেই মুকুলে মুকুলে ছেয়ে গেছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আমগাছগুলো। থোকা থোকা মুকুলের ভারে ঝুলে পড়েছে আম গাছের ডালপালা। কোনো কোনো গাছে আমের মুকুল থেকে বেরিয়েছে ছোট ছোট আম গুটি।
ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবন, শিক্ষক ক্লাব, শিক্ষক ডরমিটরি, কেন্দ্রীয় মসজিদ, অগ্নিবীণা হল, দোলন-চাঁপা হল, কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ এলাকাসহ ক্যাম্পাসের সব আমগাছে ফুটেছে মুকুল। চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে সুগন্ধ। মুকুলে ভিড় করছে প্রজাপতি-মৌমাছি। মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে মাতোয়ারা পুরো ক্যাম্পাস। মৌমাছির গুঞ্জন আর মুকুলের ঘ্রাণ মুগ্ধ করছে শিক্ষার্থী ও দর্শনার্থীদের।
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নয়ন বলেন, ‘শীতের রুক্ষ্মতাকে ছাড়িয়ে প্রকৃতিতে এসেছে বসন্ত। এই আমের মুকুল সেই বসন্তেরই আগমনী বার্তা দিচ্ছে আমাদের। মুকুলের ঘ্রান আমায় মুগ্ধ করে। যখন এই মুকুলগুলোর দিকে চাই চোখ যেন জুড়িয়ে যায়।’
স্থানীয় সরকার ও নগর উন্নয়ন বিভাগের শিক্ষার্থী আলমগীর হোসেন বলেন, ‘প্রতি বছরের তুলনায় এ বছর আমাদের ক্যাম্পাসে আমগাছগুলোতে অনেক বেশি মুকুল এসেছে। এই মুকুলগুলো ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে। এই আমের মুকুল দেখে মনে পড়ে যায় গ্রামের আমবাগানের কথা। মনে পড়ে যায় শৈশবের হাজারো স্মৃতি।’
পপুলেশন সায়েন্স বিভাগের শিক্ষার্থী সাগর কুমার সরকার বলেন, ’ক্যাম্পাসের গাছগুলোতে প্রত্যেকবার অনেক আম এলেও পরিপক্ব হওয়ার আগেই সেগুলো শেষ হয়ে যায়। আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করব এই আমগুলো যেন পরিপক্ব হওয়ার আগে যেন না পাড়া হয় তার ব্যবস্থা করতে। এতে আমাদের ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য অনেকদিন থাকবে।’
এসএন